ডাকাতিয়া নদী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডাকাতিয়া নদী
দেশ বাংলাদেশ
অঞ্চল চট্টগ্রাম বিভাগ
জেলাসমূহ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা চাঁদপুর জেলা, কুমিল্লা জেলা বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন
উৎস ত্রিপুরা
মোহনা মেঘনা নদী
দৈর্ঘ্য ১৪১ কিলোমিটার (৮৮ মাইল)

ডাকাতিয়া নদী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী[১] নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চাঁদপুর ও কুমিল্লা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪১ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬৭ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ডাকাতিয়া নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ০৭।[২]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

ডাকাতিয়া নদী মেঘনার উপনদী। নদীটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লা জেলার বাগসারা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং পরবর্তীতে চাঁদপুরলক্ষ্মীপুর জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি কুমিল্লা-লাকসাম চাঁদপুর হয়ে মেঘনা নদীতে মিশেছে। যা লক্ষ্মীপুরের হাজিমারা পর্যন্ত বিস্তৃত। দৈর্ঘ্য-250 কিলোমিটার। মেঘনা নোয়াখালীতে প্রবেশের পর ডাকাতিয়া নাম ধারণ করেছে। যার দক্ষিণের অংশ নোয়াখালী খাল হিসেবে প্রবাহিত।[৩] চাঁদপুর থেকে এই ডাকাতিয়া নদী যোগ হয়েছে কুমিল্লার গোমতীর সঙ্গে ইহা ২৩০.২০ অক্ষাংশে এবং ৯১০.৩১ দ্রাঘিমা বিস্তৃত। যা বামদিকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে ফেনী নদীতে মিশেছে।[৩]

নামকরণের ইতিহাস[সম্পাদনা]

সম্ভবত এই নদী দিয়ে মগ-ফিরিঙ্গি জলদস্যুরা নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলায় প্রবেশ করতো। এই নদীতে তাদের মাধ্যমেই ডাকাতি হতো। ডাকাতির উপদ্রবের কারণে নদীটির নাম ডাকাতিয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তৎকালীন কলকাতাস্থ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাউন্সিলের পক্ষে কোর্ট অব ডিরেক্টর সভার কাছে ১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারি পেশকৃত একটি চিঠির মাধ্যমে জলদস্যুদের উপদ্রবের চিত্র পাওয়া যায়। সেখানে লেখা হয়:

ডাকাতিয়া নদীর নামকরণ নিয়ে লোকমুখে আরেকটি মতামত শোনা যায়, একসময় ডাকাতিয়া নদী তীব্র খরস্রোতা ছিল। মেঘনার এই শাখা নদী ডাকাতিয়ায় মেঘনার উত্তাল রূপ ফুটে উঠত। ফলে ডাকাতিয়ার করালগ্রাসে নদীর দুই পাড়ের মানুষ সর্বস্ব হারাত। ডাকাতিয়া পাড়ি দিতে গিয়ে বহু মানুষের সলিল সমাধিও ঘটেছে। ডাকাতের মতো সর্বগ্রাসী বলেই এর নাম হয়েছে ডাকাতিয়া।[৪]

যোগাযোগ[সম্পাদনা]

একসময় এই নদীর উপর দিয়ে বরিশাল, ভোলা, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মালামাল পরিবহন করা হতো।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "আন্তঃসীমান্ত_নদী"বাংলাপিডিয়া। ১৬ জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৪ 
  2. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ২৯৯-৩০০। আইএসবিএন 984-70120-0436-4 
  3. [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. বাংলাদেশের নদীঃ মোকাররম হোসেন; পৃষ্ঠা ১১৬ ও ১১৭; কথাপ্রকাশ; দ্বিতীয় সংস্করণঃ আগস্ট ২০১৪