দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
Tanay barisha (আলোচনা | অবদান) অ →আরও পড়ুন: সংশোধন |
Tanay barisha (আলোচনা | অবদান) অ →প্রাচীন ইতিহাস: তথ্যসূত্র যোগ/সংশোধন |
||
১১০ নং লাইন: | ১১০ নং লাইন: | ||
এই অঞ্চল সরাসরি [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত সাম্রাজ্যের]] অংশ না হলে ছিলো যথেষ্ট৷ |
এই অঞ্চল সরাসরি [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত সাম্রাজ্যের]] অংশ না হলে ছিলো যথেষ্ট৷ |
||
তবে এই অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত পৌরানিক ব্রাক্ষ্মন্যবাদ সংক্রান্ত পুরাবস্তু থেকে এই অঞ্চলে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সাংস্কৃৃতিক প্রভাব সম্বন্ধে ধারনা করা যায়।<!--হডড় ২০০৯--> |
তবে এই অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত পৌরানিক ব্রাক্ষ্মন্যবাদ সংক্রান্ত পুরাবস্তু থেকে এই অঞ্চলে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সাংস্কৃৃতিক প্রভাব সম্বন্ধে ধারনা করা যায়।<!--হডড় ২০০৯--> |
||
[[বিদ্যাধরী নদী]] সংলগ্ন এই প্রত্নস্থলটির সঙ্গে জলপথে প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল বিশেষত রোমের বাণিজ্যিক যোগসূত্রের সুনিশ্চিত প্রমাণ মিলেছে।<ref name=দে>{{harvnb|দে|২০১৩|p=}}</ref> |
[[বিদ্যাধরী নদী]] সংলগ্ন এই প্রত্নস্থলটির সঙ্গে জলপথে প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল বিশেষত রোমের বাণিজ্যিক যোগসূত্রের সুনিশ্চিত প্রমাণ মিলেছে।<ref name=দে>{{harvnb|দে|দে|২০১৩|p=}}</ref> |
||
গৌড় বংশীয় [[শশাঙ্ক]] এই অঞ্চলে শাসন কায়েম করতে পারেনি। |
গৌড় বংশীয় [[শশাঙ্ক]] এই অঞ্চলে শাসন কায়েম করতে পারেনি। |
||
পাল বংশের রাজা গোপাল দ্বিতীয় এবং বিগ্রহপাল দ্বিতীয়ের সময়কালে এই অংশ পালেদের হাত থেকে চন্দ্র বংশের হাতে চলে যায়। |
পাল বংশের রাজা গোপাল দ্বিতীয় এবং বিগ্রহপাল দ্বিতীয়ের সময়কালে এই অংশ পালেদের হাত থেকে চন্দ্র বংশের হাতে চলে যায়। |
||
মথুরাপুরের উত্তর জটা গ্রামের জটার দেউল মন্দিরটি ৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে চন্দ্র বংশের রাজা জয়চন্দ্রের দ্বারা নির্মিত।<!--হডড় ২০০৯--> |
মথুরাপুরের উত্তর জটা গ্রামের জটার দেউল মন্দিরটি ৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে চন্দ্র বংশের রাজা জয়চন্দ্রের দ্বারা নির্মিত।<!--হডড় ২০০৯--> |
||
এছাড়াও সেন যুগের বহু |
এছাড়াও সেন যুগের বহু দেব-দেবীর মূর্তি জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আবিস্কৃত হয়েছে। |
||
=== মধ্য যুগ === |
=== মধ্য যুগ === |
১৪:৫৪, ২০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা হল ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের প্রেসিডেন্সি বিভাগের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রশাসনিক জেলা। এই জেলার সদর আলিপুরে অবস্থিত। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার উত্তর দিকে কলকাতা ও উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা, পূর্ব দিকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র, পশ্চিম দিকে হুগলি নদী ও দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। এই জেলাটি আয়তনের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম ও জনসংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। জনসংখ্যার নিরিখে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে এই জেলার স্থান ষষ্ঠ। এই জেলার এক দিকে কলকাতা মহানগরীর একাংশ এবং অপর দিকে সুন্দরবন অঞ্চলের বনাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী গ্রামগুলির অবস্থান।[১] ১৯৮৬ সালের ১ মার্চ চব্বিশ পরগনা জেলা বিভাজিত করে এই জেলাটি গঠন করা হয়।[২]
৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করা[৩] সুন্দরবনের কিছু অংশ, যার নামকরণ করা হয়েছে সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, এই জেলায় অবস্থিত। এই উদ্যানটি একটি জাতীয় উদ্যান, ব্যাঘ্র প্রকল্প ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। এখানকার সজনেখালিতে, লুথিয়ান দ্বীপে ও হ্যালিডে দ্বীপে বর্তমানে আরও তিনটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। এছাড়া, পাথরপ্রতিমার কাছে ভরতপুর কুমির প্রকল্প এবং সজনেখালিতে পাখিরালয় রয়েছে। ১৯৮৯ সালে সুন্দরবনের এই ভারতীয় অংশকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ ঘোষণা করা হয়।
নামকরণ
পরগনা শব্দটি এসেছে ফারসি থেকে। দিল্লি সালতানাতের রাজস্ব-সংক্রান্ত বিভাগ হিসাবে প্রথম এই শব্দটির ব্যবহার পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে মুঘল এবং ব্রিটিশদের সময়েও এই শব্দটির ব্যবহার হয় একই অর্থে। লর্ড কর্নওয়ালিস ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলবৎ করার পর পরগনা ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে যায়।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কলিকাতা জমিদারির অন্তর্গত চব্বিশটি "পরগনা" নিয়ে অবিভক্ত চব্বিশ পরগনা জেলা গঠিত হয়েছিল। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর এক সন্ধির শর্ত অনুযায়ী বাংলার তৎকালীন নবাব মীর জাফর ইংরেজদের এই চব্বিশটি পরগনা অর্পণ করেছিলেন। পরগনাগুলির নাম হল: (১) আকবরপুর, (২) আজিমাবাদ, (৩) বলিয়া, (৪) বরিধারি, (৫) বাসনন্ধরি, (৬) কলিকাতা, (৭) আমিরপুর, (৮) দখিন সাগর, (৯) গড়, (১০) হাতিগড়, (১১) ইখতিয়ারপুর, (১২) খারিজুড়ি, (১৩) খাসপুর, (১৪) মৈদানমল বা মেদনিমল, (১৫) মগুরা, (১৬) মনপুর, (১৭) মৈদা, (১৮) মুড়াগাছা, (১৯) পাইকান, (২০) পিছাকুলি, (২১) সতল, (২২) শাহনগর, (২৩) শাহপুর ও (২৪) উত্তর পরগনা।[৪] ১৯৮৬ সালের ১ মার্চ চব্বিশ পরগনা জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে গঠিত জেলাটি পরিচিত হয় "দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা" নামে।
ইতিহাস
ইতিহাসের উৎস
বিভিন্ন প্রাচীন সাহিত্যে এই অঞ্চলের উল্লেখ পাওয়া যায়। রামায়ণে আদিকাণ্ডে পুর্ব সমুদ্রতীরে সাগরদ্বীপ বা সমুদ্র আশ্রিত নিম্নবঙ্গের উল্লেখ আছে পাতাল বা রসাতল বলে। মৎস ও বায়ু পুরাণেও কপিল মুনির আশ্রমের ঐ একই অবস্থানের কথা বলা হয়েছে।[৫] রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ ছাড়াও খ্রিস্টপুর্ব ৪থ শতক থেকে খ্রিস্টাব্দ ২য় শতক পর্যন্ত সম্ভবত এই নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চলের জনবস্তির কিছু পরিচয় পাওয়া যায় গ্রিক ও রোমান লেখকের রচনায়। গ্রিক ও লাতিন সাহিত্যে গঙ্গারিদি বা ঐ সংশ্লিষ্ট যে নামগুলির উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলির মূল ভারতীয় নাম ছিল গঙ্গারিদি, গ্রিক ভাষায় কর্তৃকারকের বহু বচনে যার রূপান্তর হত গঙ্গারিদাই।[৬] এই অঞ্চলের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১ম খ্রিস্টপূর্বের দিওদোরাস সিকুলাসের লেখা বিব্লিওথেকে ইস্তোরিকে গ্রন্থে।[৭] খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে গ্রিক ভুগোলবিদ টলেমির তার গেওগ্রাফিকে উ্যফেগেসিস গ্রন্থে গঙ্গারিডি বা গঙ্গারিদাই নামক একটি অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে, যার বিস্তার গঙ্গার নদীমুখের সমগ্র অঞ্চলজুড়ে ছিল।[৮]
এছাড়াও এই অঞ্চলের বিভিন্ন প্রত্নস্থল থেকে প্রস্তর যুগের প্রত্ন নিদর্শন পাওয়া যায়। এগুলি হলো : ডায়মন্ড হারবার অঞ্চলের দেউলপোতা, কুলপি অঞ্চলের হরিনারায়ণপুর, সাগরদ্বীপ, সোনারপুর অঞ্চলের বোড়াল এবং দক্ষিণ গোবিন্দপুর, বারুইপুর অঞ্চলের মল্লিকপুর-হরিহরপুর এবং আটঘরা এবং পাথরপ্রতিমা অঞ্চলের গোবর্ধনপুর। বিভিন্ন প্রত্নস্থল থেকে প্রাপ্ত জনবসতির চিহ্ন, প্রাচীন কূপ, জলাশয়, পাকা গৃহভিত্তি, মঠমন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, বিভিন্ন সময়ের মৃৎশিল্প প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষের বসবাসের নিদর্শন।
প্রাচীন ইতিহাস
এই অঞ্চলে প্রথম বসতির প্রমান হিসাবে প্রস্তরযুগের মানুষের ব্যবহৃত নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে ডায়মন্ড মহকুমার দেউলপোতা ও হরিনারায়ণপুরে। এ ছাড়াও প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে পরবর্তী বিভিন্ন যুগের বহু পুরাবস্তু এই জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জৈবিক নমুনা সংগ্রহ করে কার্বন-১৪ পরীক্ষার মাধ্যমে ২৪ পরগনার জঙ্গলের গাছগুলির আবির্ভাবের সময়কাল মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ বছরের আভাস দিয়েছেন।[৯] তবে প্রস্তরযুগের পরবর্তী তাম্রাশ্মীয় বা চ্যাল্কোলিথিক যুগের কোন নিদর্শন আবিষ্কৃত হয় নি।[৯]
প্রাক-মৌর্যযুগ থেকে কুষাণ, শুঙ্গ, গুপ্তযুগ এবং গুপ্ত-পরবর্তী পাল-সেন যুগের অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংলগ্ন অঞ্চলসমূহ থেকে মিলেছে। উত্তর চব্বিশ পরগনার দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপার অন্তর্গত প্রত্নস্থল চন্দ্রকেতুগড় এই ঐতিহাসিক রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী এবং রাজধানী ছিল বলে মনে করা হয়। ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ববিদদের উদ্দ্যোগে এই অঞ্চল খনন করে পাওয়া বস্তুসমূহ প্রমাণ করে এই অঞ্চল সরাসরি গুপ্ত সাম্রাজ্যের অংশ না হলে ছিলো যথেষ্ট৷ তবে এই অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত পৌরানিক ব্রাক্ষ্মন্যবাদ সংক্রান্ত পুরাবস্তু থেকে এই অঞ্চলে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সাংস্কৃৃতিক প্রভাব সম্বন্ধে ধারনা করা যায়। বিদ্যাধরী নদী সংলগ্ন এই প্রত্নস্থলটির সঙ্গে জলপথে প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল বিশেষত রোমের বাণিজ্যিক যোগসূত্রের সুনিশ্চিত প্রমাণ মিলেছে।[১০] গৌড় বংশীয় শশাঙ্ক এই অঞ্চলে শাসন কায়েম করতে পারেনি। পাল বংশের রাজা গোপাল দ্বিতীয় এবং বিগ্রহপাল দ্বিতীয়ের সময়কালে এই অংশ পালেদের হাত থেকে চন্দ্র বংশের হাতে চলে যায়। মথুরাপুরের উত্তর জটা গ্রামের জটার দেউল মন্দিরটি ৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে চন্দ্র বংশের রাজা জয়চন্দ্রের দ্বারা নির্মিত। এছাড়াও সেন যুগের বহু দেব-দেবীর মূর্তি জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আবিস্কৃত হয়েছে।
মধ্য যুগ
প্রাচীনকাল থেকে ষোড়শ শতক অবধি আদি ভাগিরথীর পারে কালিঘাট, বোড়াল, রাজপুর, মহিনগর, বারুইপুর, জয়নগর, মজিলপুর, ছত্রভোগের মত জনপদ গড়ে উঠেছিল। বিপ্রদাস পিপলাইয়ের মনসাবিজয় থেকে এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ গ্রাম এবং নগরের তালিকা পাওয়া যায়। শ্রী চৈতন্যদেব ভাগিরথীর পার ধরে পুরি যাওয়ার পথে বারুইপুরের কাছে আটসিরাতে এবং সর্বশেষ মথুরাপুরের ছত্রভোগে থেমেছিলেন।
১৫৩৮ সালে পর্তুগীজরা গৌরের শেষ ইলিয়াস শাহি সুলতান গিয়াসুদ্দিন মাহমুদের থেকে সরস্বতী এবং ভাগিরথী-হুগলির সংযোগস্থলে অবস্থিত সাতগাঁওতে বসতি গড়ার অনুমতি পায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গড়িয়ায় পূর্বে বিদ্যাধরী নদীর তীরে তার্দা বন্দরে ১৫৯০ খ্রিস্টাব্দে পর্তুগীজরা প্রথম ঘাঁটি গাড়ে। এরপর এই সময়ে বাংলায় মুঘলদের বিরুদ্ধে বারো ভুইয়াঁদের মিত্রশক্তি হয়ে ওঠে পর্তুগীজরা এবং নদী তিরবর্তী অঞ্চলে তাদের জলদস্যুতা বজায় রাখতে থাকে। পরবর্তি ১০০ বছর তাদের আধিপত্য বজায় ছিল উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন অঞ্চলে। এর ফলে এই অঞ্চলে অনেক সমৃদ্ধশালী জনপদ জনশূন্য হয়ে যায়। ১৭ শতাব্দীর শুরুতে বাংলার বারো ভুঁইয়ার (১১ ভুঁইয়া ও ১ মুঘল সম্রাট) একজন যশোররাজ প্রতাপাদিত্য যশোর, খুলনা, বরিশাল সহ গোটা ২৪ পরগনা জেলার অধিপতি ছিলেন। প্রতাপাদিত্য পর্তুগিজ জলদস্যুদের সঙ্গে বারবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলেন। তিনি সাগরদ্বীপ, সরসুনা, জগদ্দল প্রভৃতি অঞ্চলে দুর্গ বানিয়ে এদের আটকাবার চেষ্টা করেন ও বিতাড়িত করতে সক্ষম হন৷ ১৮৯০ সালে সুন্দরবন সফরকারী এক ইংরেজ সাহেব রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজপুরীর ধ্বংসাবশেষ দেখতে পান।[১১]
১৬১০ সালে সলকা ও মগরাহাটের যুদ্ধে মুঘল সেনাপতি মান সিংহের হাতে প্রতাপাদিত্য পরাজিত হন। মান সিংহ ছিলেন কামদেব ব্রহ্মচারীর শিষ্য। কামদেবের বংশধর হালিশহরের জায়গিরদার লক্ষীকান্ত মজুমদারকে ১৬১০ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীর মাগুরা, পাইকান, আনোয়ারপুর, কলকাতা ইত্যাদি একুশটি অঞ্চলের জমিদারি স্বত্ত্ব দেন। প্রতাপাদিত্য যখন রাজা বসন্ত রায়কে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন তখন থেকে প্রতাপাদিত্যের সংস্রব ত্যাগ করেছিলেন লক্ষ্মীকান্ত। লক্ষ্মীকান্ত মজুমদারের নাতি কেশবচন্দ্র মজুমদার মুর্শিদকুলি খাঁর আমলে বর্তমানের দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও খুলনা অঞ্চলের জমিদার নিযুক্ত হন।
১৭২২ সালে মুর্শিদকুলি খাঁর সময়ে মোগল আমলের শেষ জরিপে ওই পরগনাগুলিকে হুগলি চাকলার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। পলাশীর যুদ্ধের ছয় মাস পরে ১৭৫৭ সালে ২০শে ডিসেম্বর মীরজাফর ইংরেজদের কলকাতা সহ দক্ষিণে কুলপী পর্যন্ত ২৪টি পরগনাকে কলকাতার জমিদারি বা ২৪ পরগনার জমিদারির নামে ৮৮২ বর্গমাইল এলাকা দান করেছিলেন।[১২]
১৭৫৯ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লর্ড ক্লাইভকে এই ২৪টি পরগনা ব্যক্তিগত জায়গীর হিসাবে দেয়। এই সময়ে সুন্দরবনের এক বিস্তৃত অংশ ২৪ পরগনার মধ্যে ছিল না। ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম জঙ্গল কেটে সুন্দরবন অঞ্চলে বসতি ও চাষ শুরু হয়। ১৭৭৪ সালে লর্ড ক্লাইভের মৃত্যুর পর এই অঞ্চলটি আবার কোম্পানির হাতে চলে আসে। ১৭৯৩ সালে লর্ড কনওয়ালিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পর উন্নয়নের স্বার্থে সুন্দরবনকে ২৪ পরগনার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ১৮২২ থেকে ১৮২৩ সালের মধ্যে বসতি ও চাষের জন্য সুন্দরবনকে লট ও প্লটে ভাগ করা হয়। নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে ১৮৫৫ সালের মহাকুমার ধারণাকে নিয়ে আসা হয় ও সমগ্র জেলাকে আটটি মহাকুমায় ভাগ করা হয়। নতুন মহাকুমার সৃষ্টি বা অদলবদলও এরপরে ঘটে। ১৮৭১ সালে কলকাতা ২৪ পরগনা জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভারতের রাজধানীতে পরিণত হয়।[৬]
আধুনিক যুগ
১৮৭১ সালে কলকাতা ২৪ পরগনা জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভারতের রাজধানীতে পরিণত হয়।[৬] ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার আগে পূর্ব পাকিস্তান হবার পর যশোর জেলার বনগাঁ ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে চলে আসে এবং সুন্দরবনের বৃহত্তম অংশ খুলনা ও বাখরগঞ্জের মধ্যে চলে আসে।
১৯৮৩ সালে ডঃ অশোক মিত্রের প্রসাসনিক সংস্কার কমিটি এই জেলাকে বিভাজনের সুপারিশ করে। ১৯৮৬ সালে ১লা মার্চ জেলাটিকে উত্তর ২৪ পরগণা জেলা ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা নামে দুটি জেলায় ভাগ করা হয়। দুটি জেলাই প্রেসিডেন্সি বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।
ভূ-পরিচয়
এই জেলাটি ২২° ১২' ১৩" ও ২২° ৪৬' ৫৫" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭° ৫৮' ৪৫" ও ৮৮° ২২' ১০" পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত এবং এর মোট আয়তন ৯,৯৬০ বর্গ কিলোমিটার।[১৩]
উত্তর ২৪টি পরগনা ও দক্ষিণ ২৪টি পরগনা জেলার প্রায় পুরোটাই পলিগঠিত সমভূমি, উত্তর থেকে দক্ষিণে সামান্য ঢালু। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা দুটি স্বতন্ত্র প্রাকৃতিক অঞ্চলে বিভক্ত। কলকাতা এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার সীমানা জেলার উত্তর অংশটি সামুদ্রিক-নদীমাতৃক বদ্বীপের অংশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার দক্ষিণাংশ এবং উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণ পূর্বাংশ সুন্দরবন সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চলের অন্তর্গত। এখানে বদ্বীপ গঠনের কাজ এখনোও চলছে। সমুদ্রতল থেকে এই অঞ্চলের গড় উচ্চতা মাত্র ৩-৪ মিটার হওয়ায় এর অনেকটাই সমুদ্রজলের জোয়ারে ঢেকে যায়। সুন্দরবন অঞ্চলটি পশ্চিমবঙ্গের ১০২ টি ছোটো দ্বীপ নিয়ে গঠিত যার মধ্যে ৪৮টি দ্বীপে মানুষের বসতি রয়েছে। এই অঞ্চল এর মাটি লবনাক্ত ও কাদা প্রকৃতির এবং শ্বাসমূল ও ঠেসমূলযুক্ত ম্যানগ্রোভ অরণ্য গড়ে উঠেছে। এই কর্দমাক্ত সিক্ত বনাঞ্চল "বাদাবন" নামে পরিচিত। গরাণ, গেঁওয়া, সুঁদরি, গর্জন, হেতাঁল, গোলপাতা, কেওড়া, ধোন্দল, পশুর, বাইন, কাদড়া, ওড়া, আমুড়, হদো, বেলাসুন্দরী, গিলে, বাকঝাকা ইত্যাদি সুন্দরবনের গাছপালা। এছাড়া, শিঙ্গড়া, ভাদাল, গড়ে, খলসী, হিঙ্গে, গোলদাদ, হোগলা ইত্যাদি আগাছা এবং নানাবিধ বনৌষধি পাওয়া যায়।[১৪]
১৮৩০ সালে ড্যাম্পিয়ার ও হজেস নামে দুই জন সার্ভে অফিসার সুন্দরবনের ব-দ্বীপ অঞ্চলের উত্তর সীমা নির্ধারণ করেন। এই রেখার নাম হয় ড্যাম্পিয়ার-হজেস রেখা।
দক্ষিণ ২৪টি পরগনা জেলার নদীগুলির মধ্যে হুগলি, বিদ্যাধরী, পিয়ালী, মাতলা, ইছামতী ও যমুনা প্রধান। হুগলি নদী এই জেলার পশ্চিম সীমানা ঘেঁষে প্রবাহিত। বাকি নদীগুলি গঙ্গা ও পদ্মার শাখা নদী।
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
১৯২৩ সালে বারুইপুরের দু'মাইল উত্তর-পশ্চিমে গোবিন্দপুর গ্রামে দ্বাদশ শতাব্দীর সেনবংশীয় রাজা লক্ষ্মণসেনের গ্রামদানের একটি তাম্রশাসন পাওয়া যায় (দ্রষ্টব্য খাড়ি গ্রাম)। এই গ্রামে পুরানো একটি পুকুরপাড়ে (হেদোপুকুর নামে পরিচিত) কারুকাজ করা ইটের একটি স্তুপ দেখা যায়। গোবিন্দপুরের মাইলখানেক দক্ষিণে বেড়াল-বৈকুণ্ঠপুরে প্রাচীন একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায় এবং আরও দক্ষিণে কল্যাণপুর গ্রামে প্রাচীন একটি জীর্ণ মন্দিরে একটি শিবলিঙ্গ আছে যাঁকে 'রায়মঙ্গল' কাব্যের 'কল্যাণ-মাধব' বলে চিহ্নিত করা হয়।
বারুইপুরের পাঁচমাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে কুলদিয়া গ্রামে বেশ সুন্দর একটি সূর্যমূর্তি (১ ফুট ১০ ইঞ্চি উঁচু ও ১ ফুট চওড়া) এবং সঙ্গে বেলেপাথরের নৃসিংহের একটি প্লাক পাওয়া গিয়েছে। জয়নগর থানার মধ্যে দক্ষিণ বারাসাত গ্রামে বিষ্ণু, নৃসিংহের একাধিক পাথরের মূর্তি, বিষ্ণুচক্র, স্তম্ভ ইত্যাদি পাওয়া গেছে। এখানকার সেনপাড়ায় পুকুর খননের সময় মাথায় নিখুঁত বহুগুণাবিশিষ্ট সর্পছত্রযুক্ত জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের একটি নগ্নমূর্তির সন্ধান মিলেছিল। দক্ষিণ বারাসাতের দুই মাইল দক্ষিণে বড়ুক্ষেত্র বা বহড়ু গ্রামেও ছ'ফুট উঁচু সুন্দর একটি সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে, গ্রামের লোক 'পঞ্চানন' বলে এর পূজা করেন। ময়দাগ্রামে পুকুর খুঁড়তে গিয়ে প্রায় দেড়ফুট উঁচু নৃত্যরত চমৎকার একটি গণেশমূর্তি পাওয়া যায়।
জয়নগরেও সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে; মথুরাপুরে ভূমিস্পর্শমুদ্রাযুক্ত একটি ভাঙা বুদ্ধমূর্তি এবং সূর্যমূর্তি পাওয়া গেছে। মথুরাপুরের দুই মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ঘটেশ্বর গ্রামে বিংশ শতকের প্রথম দিকে পুকুর খননের সময় তিনটি জৈনমূর্তি পাওয়া যায়, তার মধ্যে একটি মূর্তি কুসংস্কারবশত জলে ফেলে দেওয়া হয়, একটি বেদখল হয়ে যায়, আর একটি মজিলপুরের কালিদাস দত্ত নিজের সংগ্রহে নিয়ে এসে রাখেন। কাঁটাবেনিয়া গ্রামেও অনুরূপ বিষ্ণুমূর্তি, বাসুদেবমূর্তি, গণেশমূর্তি, মন্দিরের দ্বারফলক, বড় বড় প্রস্তরস্তম্ভ এবং একটি বৃহৎ জৈন পার্শ্বনাথের নিখুঁত মূর্তি পাওয়া গেছে, এটি বর্তমানে বিশালাক্ষি দেবীর সঙ্গে গ্রামদেবতা 'পঞ্চানন'রূপে পূজিত হন।
জয়নগরের তিন মাইল দক্ষিণে উত্তরপাড়ার জমিদারদের একটি পুরানো কাছারিবাড়ির কাছে পুকুর সংস্কারের সময় তিনটি সুন্দর বিষ্ণুমূর্তি ও একটি দশভূজা দুর্গামূর্তি পাওয়া যায়; মূর্তিগুলো জমিদাররা তাদের উত্তরপাড়া লাইব্রেরিতে নিয়ে যান৷ ছত্রভোগে একটি কুবেরের মূর্তি, বিষ্ণু ও দশভূজা দুর্গামূর্তি, ব্রোঞ্জের গণেশ ও নৃসিংহমূর্তি পাওয়া গেছে। আটঘরা থেকে তাম্রমুদ্রা, মৃৎপাত্রের টুকরো, পোড়ামাটির মেষমূর্তি, যক্ষ্মিণীমূর্তি, শীলমোহর,তৈজসপত্র, পাথরের বিষ্ণুমূর্তি ইত্যাদি মিলেছে।
১৮৬০-এর দশকে মথুরাপুর থানার মধ্যে, লট নং ১১৬, পুরানো আদিগঙ্গার খাত থেকে এখানকার গভীর জঙ্গল পরিষ্কারের সময় 'জটার দেউল' নামে একটি মন্দির আবিষ্কৃত হয়। অনেকের মতে, এখানে জটাধারী নামে এক শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত ছিল; আবার কারোর মতে, জটাধারী বড় বড় বাঘ এখানে ঘুরে বেড়াত। অধিকাংশ প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, জটার দেউলের স্থাপত্যশৈলীর সাথে ভুবনেশ্বরের দেউল স্থাপত্যের মিল আছে এবং সেদিক থেকে ও অন্যান্য আবিষ্কৃত নিদর্শন বিচার করে এর নির্মাণকাল আনুমানিক দ্বাদশ শতাব্দী।
১৯১৮ সালে জঙ্গল সাফ করার সময় জটার দেউলের ছ'মাইল দূরে দেউলবাড়ি নামক স্থানে (লট নং ১২২) এই ধরনের আরও একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় (এখন বিলুপ্ত)। এই স্থানের আধমাইল পূর্বে কমবেশি একবিঘা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ দেখা গিয়েছিল। ১৯২১-২২ সালে জটার দেউলের বারো-তেরো মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে জগদ্দল গাঙের কাছে আরও একটি মন্দিরের অবশেষের হদিশ মিলেছিল। মাটি খোঁড়ার সময় এখানে (বনশ্যামনগর) ইটের ঘর, প্রচুর ইট মৃৎপাত্রের টুকরো এবং মানুষের অস্থি-কঙ্কাল ইত্যাদি পাওয়া যায়।
এর আটমাইল উত্তর-পশ্চিমে (লট নং ১১৪) এসময় জঙ্গলের মধ্যে বেশ একটি বড় ইটের স্তুপ খুঁড়ে নিচে একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়, গর্ভগৃহ ছাড়া এই মন্দিরের আর কোন অংশের চিহ্ন ছিল না। খননকালে চারটি বিষ্ণুমূর্তি (একটি ৪ ফুট উঁচু, দুটি ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং আরেকটি ৩ ফুট ২ ইঞ্চি উঁচু) ও একটি নটরাজমূর্তি (মূর্তিটি ৩ ফুট ১ ইঞ্চি উঁচু, দশহাতযুক্ত; গলায় আজানুলম্বিত একটি মালা আছে, মালার নিচে দশটি নরমুণ্ড ঝোলানো।)। এছাড়া, পাথরপ্রতিমা, রাক্ষসখালি প্রভৃতি অঞ্চলেও অষ্টধাতুর বুদ্ধমূর্তি , অন্যান্য পাথর ও পোড়ামাটির মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে।[১৫]
প্রশাসনিক বিভাগ
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা অতীতের সাতগাঁ বা সপ্তগ্রাম বৃহদাঞ্চলের একটি অংশ। চব্বিশ পরগনা তৈরি হওয়ার আগে দক্ষিণবঙ্গের এই অঞ্চল সেন বংশের সময়কালে বাংলাদেশ রাঢ়, বাগড়ী, বরেন্দ্র, বঙ্গ ও মিথিলা বিভাগে বিভক্ত ছিল। এইগুলির মধ্যে বঙ্গ বিভাগ লক্ষনৌতি, সাতগাঁ বা সপ্তগ্রাম এবং সোনারগাঁ অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। আকবরের সময়ে বাংলার প্রথম জরিপে বাংলাকে ১৯টি সরকারে এবং ৫৩টি মহলে ভাগ করা হয়। এগুলির মধ্যে সপ্তগ্রামের সরকারের বিস্তৃতি ছিল উত্তরে পলাশী, পূর্বে কপোতাক্ষ, দক্ষিণে সাগরদ্বীপের হাতিয়ারগড় এবং পশ্চিমে হুগলি নদী পর্যন্ত। ১৭২২ সালে মুর্শিদকুলী খাঁয়ের সময়ে এই পরগনাগুলিকে চাকলা হুগলীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৮৬১ সালে সমগ্র জেলাকে ৮টি মহকুমায় ভাগ করা হয়। এই মহকুমাগুলি হলো ১) আলিপুর, ২) ডায়মন্ড হারবার, ৩) বারাসাত, ৪) ব্যারাকপুর, ৫) দম দম, ৬) বারুইপুর, ৭) বসিরহাট এবং ৮) সাতক্ষিরা।[১৬] ১৯৮৬ সালে চব্বিশ পরগনাকে উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বিভক্ত করা হয়।[৬]
বর্তমানে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পাঁচটি মহকুমায় বিভক্ত: আলিপুর সদর, বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং ও কাকদ্বীপ।[১৭]
এই জেলার সদর আলিপুরে অবস্থিত। জেলায় মোট ৩৩টি থানা, ২৯টি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, ৭টি পুরসভা ও ৩১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে।[১৭][১৮] দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার অন্তর্গত সুন্দরবন অঞ্চল বারোটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক জুড়ে অবস্থিত: সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, কুলতলি, মথুরাপুর ১, মথুরাপুর ২, জয়নগর ২, ক্যানিং, ক্যানিং ২, বাসন্তী ও গোসাবা।[১৮] জেলায় মোট ৩৭টি দ্বীপ আছে।[১৮]
পুরসভা এলাকাগুলি ছাড়া দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রত্যেকটি মহকুমার অন্তর্গত সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকগুলি আবার গ্রামীণ অঞ্চল ও জনগণনা নগরে বিভক্ত। জেলায় মোট ১১৮টি নগরাঞ্চল রয়েছে: সাতটি পুরসভা ও ১১১টি জনগণনা নগর।[১৮][১৯]
মহকুমা | সদর | আয়তন কিলোমিটার২ |
জনসংখ্যা (২০১১) |
নগরাঞ্চলীয় জনসংখ্যা % (২০১১) |
গ্রামীণ জনসংখ্যা % (২০১১) |
---|---|---|---|---|---|
আলিপুর সদর | আলিপুর | ৪২৭.৪৩ | ১৪,৯০,৩৪২ | ৫৯.৮৫ | ৪০.১৫ |
বারুইপুর | বারুইপুর | ১,৩৫৫.৪৪ | ২৩,৯৬,৬৪৩ | ৩১.০৫ | ৬৮.৯৫ |
ক্যানিং | ক্যানিং | ১,১০৩.৭৩ | ১১,৪০,৫৬২ | ১২.৩৭ | ৮৭.৬৩ |
ডায়মন্ড হারবার | ডায়মন্ড হারবার | ১,২৬৪.৬৮ | ২১,২৫,৭৫৮ | ১৪.৬১ | ৮৫.৩৯ |
কাকদ্বীপ | কাকদ্বীপ | ১,৩৮৯.৯৩ | ১,০০৮,৬৫৩ | ০ | ১০০ |
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা | আলিপুর | ৯৯,৬০,০০ | ৮১,৬১,৯৬১ | ২৫.৫৮ | ৭৪.৪২ |
আলিপুর সদর মহকুমা
আলিপুর সদর মহকুমার অন্তর্গত এলাকাগুলি হল:[১৭]
- কলকাতা পৌরসংস্থার অন্তর্গত নিম্নলিখিত অঞ্চলসমূহ: বালিগঞ্জ, আলিপুর, ভবানীপুর, কালীঘাট, অজয়নগর, ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাট, চারু মার্কেট, টালিগঞ্জ, চেতলা, নাকতলা, যোধপুর পার্ক, গলফগ্রিন, রিজেন্ট পার্ক, যাদবপুর, গড়ফা, কালিকাপুর, হালতু, নন্দীবাগান, সন্তোষপুর, বাঘাযতীন, চক গড়িয়া, নিউ গড়িয়া, গড়িয়া, কামালগাজি, নরেন্দ্রপুর, রানিকুঠি, বাঁশদ্রোণী, কুঁদঘাট, ঢালাই ব্রিজ, মডেল টাউন, নেতাজিনগর, পাঁচপোতা, টেকনো সিটি, তেঁতুলবেড়িয়া, বৈষ্ণবঘাটা পাটুলি, একবালপুর, হরিদেবপুর, হেস্টিংস, রাজাবাগান, ওয়াটগঞ্জ, গার্ডেনরিচ, খিদিরপুর, মেটিয়াবুরুজ, তারাতলা, বড়তলা, বিএনআর কলোনি, বেহালা, সরসুনা, জোকা, বড়িশা, পর্ণশ্রী পল্লি ও ঠাকুরপুকুর।
- তিনটি পুরসভা: মহেশতলা, বজবজ ও পূজালি।
- বিষ্ণুপুর ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা এগারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও চারটি জনগণনা নগর (দৌলতপুর, ভাসা, বিষ্ণুপুর ও কন্যানগর) নিয়ে গঠিত।
- বিষ্ণুপুর ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা এগারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও এগারোটি জনগণনা নগর (নহাজারি, নাদাভাঙা, কঙ্গনবেড়িয়া, বোড়া গগনগোহালিয়া, চন্দনদহ, বড়কালিকাপুর, পাথরবেড়িয়া, রামকৃষ্ণপুর, আমতলা, কৃপারামপুর ও চক এনায়েতনগর) নিয়ে গঠিত।
- বজবজ ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং সাতটি জনগণনা নগর (উত্তর রায়পুর, বলরামপুর, বুইটা, বেনজানহারি আচারিয়াল, অভিরামপুর, নিশ্চিন্তপুর ও বিড়লাপুর) নিয়ে গঠিত।
- বজবজ ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা এগারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পাঁচটি জনগণনা নগর (চক কাশীপুর, চক আলমপুর, বোওয়ালি, দক্ষিণ রায়পুর ও পোয়ালি) নিয়ে গঠিত।
- ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও নয়টি জনগণনা নগর (জোকা, চটা কালিকাপুর, গন্যে গঙ্গাধরপুর, রামেশ্বরপুর, অসুতি, হাঁসপুকুরিয়া, কালুয়া, রামচন্দ্রপুর ও সামালি।
কাকদ্বীপ মহকুমা
কাকদ্বীপ মহকুমা নিম্নলিখিত অঞ্চলগুলি নিয়ে গঠিত:[১৭]
- কাকদ্বীপ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা শুধুমাত্র এগারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
- নামখানা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা শুধুমাত্র সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
- পাথরপ্রতিমা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা শুধুমাত্র পনেরোটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
- সাগর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা শুধুমাত্র নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
ক্যানিং মহকুমা
ক্যানিং মহকুমা নিম্নলিখিত অঞ্চলগুলি নিয়ে গঠিত:[১৭]
- বাসন্তী সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা তেরোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাসন্তী জনগণনা নগর নিয়ে গঠিত।
- ক্যানিং ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও আটটি জনগণনা নগর (কালারিয়া, গৌরদহ, বাঁশড়া, রাজাপুর, তালদি, বয়ারসিং, মাতলা ও দিঘিরপাড়) নিয়ে গঠিত।
- ক্যানিং ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও মাখালতলা জনগণনা নগর নিয়ে গঠিত।
- গোসাবা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা শুধুমাত্র চোদ্দোটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
ডায়মন্ড হারবার মহকুমা
ডায়মন্ড হারবার মহকুমা নিম্নলিখিত অঞ্চলগুলি নিয়ে গঠিত:[১৭]
- একটি পুরসভা: ডায়মন্ড হারবার
- ডায়মন্ড হারবার ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও চারটি জনগণনা নগর (মাসাত, সংগ্রামপুর, মোহনপুর ও দুর্গানগর) নিয়ে গঠিত।
- ডায়মন্ড হারবার ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পটদহ জনগণনা নগর নিয়ে গঠিত।
- ফলতা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা তেরোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও চারটি জনগণনা নগর (হাসিমনগর, বাণেশ্বরপুর, চাঁদপালা অনন্তপথপুর ও ফতেপুর) নিয়ে গঠিত।
- কুলপি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা চোদ্দোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও দু’টি জনগণনা নগর (বেরান্দারি বাগারিয়া ও ধোলা) নিয়ে গঠিত।
- মগরাহাট ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা এগারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও নয়টি জনগণনা নগর (অযোধ্যানগর, শিরাকোল, উত্তর বিষ্ণুপুর, ঘোলা নোয়াপাড়া, উস্থি, বারিজপুর, উত্তর কুসুম, কালিকাপোতা ও বামনা) নিয়ে গঠিত।
- মগরহাট ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা চোদ্দোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও আটটি জনগণনা নগর (ধামুয়া, শ্যামপুর, নৈনান, উত্তর কলস, ডিহি কলস, সংগ্রামপুর, বিলান্দাপুর ও মগরাহাট) নিয়ে গঠিত।
- মন্দিরবাজার সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও তিনটি জনগণনা নগর (চাঁদপুর, বংশীধরপুর ও পূর্ব বিষ্ণুপুর) নিয়ে গঠিত।
- মথুরাপির ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও চারটি জনগণনা নগর (পূর্ব রানাঘাট, লালপুর, কৃষ্ণচন্দ্রপুর ও মথুরাপুর) নিয়ে গঠিত।
- মথুরাপুর ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা শুধুমাত্র এগারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
বারুইপুর মহকুমা
বারুইপুর মহকুমা নিম্নলিখিত অঞ্চলগুলি নিয়ে গঠিত:[১৭]
- তিনটি পুরসভা: রাজপুর সোনারপুর, বারুইপুর ও জয়নগর মজিলপুর।[১৮]
- বারুইপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা উনিশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বারোটি জনগণনা নগর (পেটুয়া, গড়িয়া, পাঁচঘড়া, মল্লিকপুর, হরিহরপুর, চম্পাহাটি, সোলগোহালিয়া, নারিদানা, বারুইপুর, সালিপুর, খোদার বাজার ও কোমারহাট) নিয়ে গঠিত।
- ভাঙড় ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও তিনটি জনগণনা নগর (মরিচা, ভাঙর রঘুনাথপুর ও গোবিন্দপুর) নিয়ে গঠিত।
- ভাঙড় ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা শুধুমাত্র দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
- জয়নগর ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা বারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ছয়টি জনগণনা নগর (রায়নগর, কালিকাপুর বারাসাত, বহড়ু, উত্তরপারাঞ্জি, আলিপুর ও উত্তর দুর্গাপুর) নিয়ে গঠিত।
- জয়নগর ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও দু’টি জনগণনা নগর (নিমপীঠ ও তুলসীঘাটা) নিয়ে গঠিত।
- কুলতলি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, শুধুমাত্র নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত।
- সোনারপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা এগারোটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও সাতটি জনগণনা নগর (রাধানগর, দাংগা, রামচন্দ্রপুর, বিদ্যাধরপুর, কালিকাপুর, চক বেড়িয়া ও সাহেবপুর) নিয়ে গঠিত।
জনপরিসংখ্যান
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মোট জনসংখ্যা ৮,১৬১,৯৬১,[১] যা হন্ডুরাস রাষ্ট্র[২১] অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় সমান।[২২] ভারতের মোট ৬৪০টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যার নিরিখে এই জেলার স্থান ষষ্ঠ।[১] জেলার জনঘনত্ব ৮১৯ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,১২০ জন/বর্গমাইল)।[১] ২০০১-২০১১ দশকে এই জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১৮.০৫ শতাংশ।[১] দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার লিঙ্গানুপাতের হার হল প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৪৯ জন মহিলা[১] এবং সাক্ষরতার হার ৭৮.৫৭ শতাংশ।[১]
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার নিম্নলিখিত পুরসভা ও জনগণনা নগরগুলি ২০১১ সালের জনগণনার প্রতিবেদন অনুযায়ী কলকাতা মহানগরীয় অঞ্চলের অন্তর্গত (পুরসভা ও জনগণনা নগরগুলি বন্ধনীর মধ্যে যথাক্রমে "পু." ও "জ. ন." হিসাবে উল্লিখিত): জোকা (জ. ন.), চটা কালিকাপুর (জ. ন.), গন্যে গঙ্গাধরপুর (জ. ন.), রামেশ্বরপুর (জ. ন.), অসুতি (জ. ন.), হাঁসপুকুরিয়া (জ. ন.), কালুয়া (জ. ন.), রামচন্দ্রপুর (জ. ন.), সামালি (জ. ন.), মহেশতলা (পু.), উত্তর রায়পুর (জ. ন.), বলরামপুর (জ. ন.), বুইটা (জ. ন.), বেনজানহারি আচারিয়াল (জ. ন.), অভিরামপুর (জ. ন.), নিশ্চিন্তপুর (জ. ন.), বিড়লাপুর (জ. ন.), চক কাশীপুর (জ. ন.), চক আলমপুর (জ. ন.), বোওয়ালি (জ. ন.), দক্ষিণ রায়পুর (জ. ন.), পোয়ালি (জ. ন.), পূজালি (পু.), বজবজ (পু.), দৌলতপুর (জ. ন.), ভাসা (জ. ন.), বিষ্ণুপুর (জ. ন.), কন্যানগর (জ. ন.), নহাজারি (জ. ন.), নাদাভাঙা (জ. ন.), কঙ্গনবেড়িয়া (জ. ন.), বোড়া গগনগোহালিয়া (জ. ন.), চন্দনদহ (জ. ন.), বড়কালিকাপুর (জ. ন.), পাথরবেড়িয়া (জ. ন.), রামকৃষ্ণপুর (জ. ন.), আমতলা (জ. ন.), কৃপারামপুর (জ. ন.), চক এনায়েতনগর (জ. ন.), মরিচা (জ. ন.), ভাঙর রঘুনাথপুর (জ. ন.), গোবিন্দপুর (জ. ন.), রাধানগর (জ. ন.), দাংগা (জ. ন.), রামচন্দ্রপুর (জ. ন.), বিদ্যাধরপুর (জ. ন.), কালিকাপুর (জ. ন.), চক বেড়িয়া (জ. ন.), সাহেবপুর (জ. ন.), রাজপুর সোনারপুর (পু.), পেটুয়া (জ. ন.), গড়িয়া (জ. ন.), পাঁচঘড়া (জ. ন.), মল্লিকপুর (জ. ন.), হরিহরপুর (জ. ন.), চম্পাহাটি (জ. ন.), সোলগোহালিয়া (জ. ন.), নারিদানা (জ. ন.), সালিপুর (জ. ন.), খোদার বাজার (জ. ন.), কোমারহাট (জ. ন.), বারুইপুর (পু.), রায়নগর (জ. ন.), কালিকাপুর বারাসাত (জ. ন.), বহড়ু (জ. ন.), উত্তরপারাঞ্জি (জ. ন.), আলিপুর (জ. ন.), উত্তর দুর্গাপুর (জ. ন.) ও জয়নগর মজিলপুর (পু.).[২৩]
ভাষা
২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মোট জনংখ্যার ৯৭.৯ শতাংশের মাতৃভাষা বাংলা; ১.৫ শতাংশের মাতৃভাষা হিন্দি, ০.৩ শতাংশের মাতৃভাষা উর্দু এবং ওড়িয়া ও তেলুগু-ভাষী লোকের সংখ্যা ০.১ শতাংশ করে।[২৬]
ধর্ম
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় ১৯৬১ সালে হিন্দু জনসংখ্যার হার ছিল ৭৬.০ শতাংশ; ২০১১ সালে তা কমে হয় ৬৩.২ শতাংশ। একই সময়কালে জেলার মুসলমান জনসংখ্যার হার ২৩.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয় ৩৫.৬ শতাংশ। ২০১১ সালে জেলায় খ্রিস্টান জনসংখ্যার হার ছিল ০.৮ শতাংশ।[২৭]
শিক্ষাব্যবস্থা
২০১১ সালের জনগণনার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় সাক্ষরতার হার ৭৭.৫১ শতাংশ। আলিপুর সদর মহকুমায় সাক্ষরতার হার ৮১.১৪ শতাংশ, বারুইপুর মহকুমায় ৭৭.৪৫ শতাংশ, ক্যানিং মহকুমায় ৭০.৯৮ শতাংশ, ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় ৭৬.২৬ শতাংশ এবং কাকদ্বীপ মহকুমায় সাক্ষরতার হার ৮২.০৪ শতাংশ।[২৮]
নিচের সারণিতে ২০১৩-১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার শিক্ষাব্যবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হল (তথ্যপরিসংখ্যান সংখ্যায় প্রদত্ত হয়েছে):[২৮]
মহকুমা | প্রাথমিক বিদ্যালয় |
মধ্য বিদ্যালয় |
উচ্চ বিদ্যালয় |
উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
সাধারণ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় |
প্রযুক্তি / পেশাকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান |
অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ছাত্রছাত্রী | শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ছাত্রছাত্রী | শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ছাত্রছাত্রী | শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ছাত্রছাত্রী | শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ছাত্রছাত্রী | শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ছাত্রছাত্রী | শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ছাত্রছাত্রী | |
আলিপুর সদর | ৫৩১ | ৫৩,৭১৯ | ৩৪ | ৪,৪৫৫ | ৫০ | ১৬,৪৭১ | ৯১ | ৬৬,৮১৩ | ৫ | ৮,১২২ | ৬ | ৩,০৯৪ | ১,৩৭৯ | ৫৩,৪২৯ |
বারুইপুর | ৮৮৩ | ১৩২,৬৪৯ | ৬৫ | ৮,৯৫৪ | ৫০ | ২৬,৪৪৩ | ১২৮ | ১২৯,১৯৫ | ৮ | ২৭,৬৫৭ | ৭ | ৬,৭৩৫ | ৩,১১৬ | ১৩৮,৫০৭ |
ক্যানিং | ৫৩২ | ৮১,৬৯৭ | ৫৯ | ৯,১৮১ | ২৯ | ১০,৫১৫ | ৫৫ | ৫৭,৯২১ | ৪ | ৫,৪৯০ | ১ | অজ্ঞাত | ২,১০৫ | ৯৬,৬২২ |
ডায়মন্ড হারবার | ১,২১২ | ১১৬,৪০৭ | ৬১ | ৬,৬৮০ | ৯৮ | ৩৮,৪৭০ | ১৪৫ | ১১৩,১৪৭ | ৭ | ২০,০৬১ | ৫ | ১,৭৭৪ | ৩,১৪০ | ১৩৭,৩৭৮ |
কাকদ্বীপ | ৫৯৮ | ৫৩,০৫৮ | ৪৫ | ৫,৬৫৪ | ৪৮ | ২০,৩৮৩ | ৮২ | ৫৬,১৯২ | ৩ | ৫,৪২০ | ১ | ১০০ | ১,৮৪৪ | ৭৮,৮৯৭ |
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা* | ৩,৭৫৬ | ৪৩৭,৫৩০ | ২৬৪ | ৩৪,৯২৪ | ২৭৫ | ১১৮,২৮২ | ৫০১ | ৪২৩,২৬৮ | ২৭ | ৬৬,৭৫০ | ২০ | ১১,৭০৩ | ১১,৫৮৪ | ৫০৪,৮৩৩ |
* দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার যে অংশগুলি কলকাতা পৌরসংস্থার অন্তর্ভুক্ত সেখানকার তথ্য সংযোজিত হয়নি।
স্বাস্থ্য পরিষেবা
নিচের সারণিতে (সকল তথ্য সংখ্যায় দেওয়া হল) ২০১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সকল হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে লভ্য চিকিৎসা পরিষেবার বিবরণ দেওয়া হল:[২৯]
মহকুমা | স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ | অন্যান্য রাজ্য সরকারি বিভাগ |
স্থানীয় সংস্থা |
কেন্দ্রীয় সরকারি বিভাগ/ পিএসইউ |
এনজিও / বেসরকারি নার্সিং হোম |
মোট | মোট শয্যাসংখ্যা |
মোট চিকিৎসকের সংখ্যা |
অন্তর্বিভাগীয় রোগী |
বহির্বিভাগীয় রোগী | |||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
হাসপাতাল |
গ্রামীণ হাসপাতাল |
ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র |
প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র | ||||||||||
আলিপুর সদর | - | ৩ | ৩ | ৭ | ১ | ৩ | - | ৪৮ | ৬৫ | ১,১৫৯ | ১৯৯ | ৩৩,৪৯৮ | ৬৩৩,২৩৩ |
বারুইপুর | ১ | ৬ | ১ | ১৮ | - | ২ | - | ৬৬ | ৯৪ | ১,০৪৫ | ২০১ | ৪৮,১১৪ | ১,২৬৬,২৪৪ |
ক্যানিং | ১ | ৩ | ১ | ৬ | - | - | - | ১৫ | ২৬ | ৩৫১ | ৪৯ | ২২,৪৬৭ | ৬৬৬,৩৭৭ |
ডায়মন্ড হারবার মহকুমা | ১ | ৬ | ৩ | ১৭ | - | - | - | ৬৮ | ৯৫ | ১০৭৭ | ১৬৯ | ৬৫,০৫১ | ১,৩২৫,৫৩৫ |
কাকদ্বীপ | ১ | ৩ | ১ | ১১ | - | - | - | ২০ | ৩৬ | ৪৫৮ | ৭৩ | ২৮,৭০৭ | ৪০৫,৫০১ |
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা | ৪ | ২১ | ৯ | ৫৯ | ১ | ৫ | - | ২১৭ | ৩১৬ | ৪,০৯০ | ৬৯১ | ১৯৭,৮৩৭ | ৪,৩৯৭,৮৯০ |
দ্র: জেলাওয়াড়ি তথ্যের মধ্যে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার যে অংশগুলি কলকাতা পৌরসংস্থার অন্তর্গত সেখানকার তথ্য সংযোজিত হয়নি। চিকিৎসকদের সংখ্যা বেসরকারি বাদে দেখানো হয়েছে।
অর্থনীতি
গ্রামীণ দারিদ্র্য
২০০৫ সালে একটি গ্রামীণ গৃহস্থালী সমীক্ষায় জানা যায়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মোট জনসংখ্যার ৩৪.১১ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে, যা রাজ্য ও জাতীয় দারিদ্র্য অনুপাতের অনেক উপরে। উল্লেখ্য, সুন্দরবনের জনবসতি এলাকায় অবস্থিত তেরোটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের নথিবদ্ধ দারিদ্র্য অনুপাত নিম্ন দারিদ্র্যসীমায় অবস্থানকারী জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের উপরে এবং আটটি ব্লকের ক্ষেত্রে এই হার ৪০ শতাংশের উপরে।[৩০]
অনুন্নত অঞ্চল অনুদান তহবিল
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা অনুন্নত অঞ্চলের তালিকাভুক্ত। এই জেলাটি অনুন্নত অঞ্চল অনুদান তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য লাভ করে। ভারত সরকার সৃষ্ট এই তহবিল গঠনের উদ্দেশ্য ছিল উন্নয়নের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশের মোট ২৭২টি জেলা এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের এগারোটি জেলা রয়েছে।[৩১][৩২]
যোগাযোগ
কৃষি
মৎস্যচাষ
মৎস্যচাষ সমগ্র দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার জীবিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ২০০১ সালের হিসাব অনুযায়ী, সাড়ে চার লক্ষেরও বেশি লোক এই জেলায় মৎস্যচাষের সঙ্গে যুক্ত। এদের মধ্যে ২.৫৭ লক্ষ মানুষের বাস সুন্দরবন বসতি অঞ্চলের তেরোটি ব্লকে।[৩৩]
শিল্প
- কাকদ্বীপ
- সাগর দ্বীপ
- ক্যানিং
মেলা
পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলার মতো দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাতেও অসংখ্য মেলা আয়োজিত হয়। এগুলির মধ্যে প্রধান মেলাগুলি হল: গঙ্গাসাগর মেলা, জয়নগরের দোল উৎসবের মেলা, বহড়ু গ্রামে শ্যামসুন্দরের মেলা, বড়িশার চণ্ডীমেলা ও আছিপুরের চীনা মন্দিরের মেলা।
গঙ্গাসাগর মেলা
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তি (পৌষ সংক্রান্তি) উপলক্ষ্যে সাগর দ্বীপের দক্ষিণে গঙ্গাসাগরের কপিল মুনি মন্দিরে পূজা ও মেলা আয়োজিত হয়। সারা ভারত থেকে সাধুসন্ন্যাসী ও তীর্থযাত্রীরা এই মেলা উপলক্ষ্যে গঙ্গাসাগরে আসেন এবং সাগরসঙ্গমে (গঙ্গা নদীর মোহনা) স্নান করেন। বর্তমান কপিল মুনি মন্দিরটি নির্মিত হয় ১৮৯৯ সালে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রম সংঘের মতো ধর্মীয় সংস্থাগুলি তীর্থযাত্রীদের সহযোগিতা করে থাকে। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে গঙ্গাসাগরে তিন দিন স্নানের বিধি রয়েছে। সংক্রান্তির আগের দিন "বাউনি", সংক্রান্তির স্নান এবং পরদিন অর্থাৎ পয়লা মাঘ উত্তরায়ণ স্নান। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, উত্তরায়নের দিন গঙ্গার পুত্র ভীষ্ম দেহত্যাগ করেছিলেন। মেলাও এই তিন দিনই চলে। মেলায় চাল, ডাল, চিড়ে, মুড়ি, তরিতরকারি, নানা রকম খাদ্যদ্রব্য, কাঠের জিনিস, পাথরের বাসনপত্র, লোহার জিনিসপত্র ইত্যাদি বিক্রি হয়।[৩৪]
জয়নগরের দোল উৎসবের মেলা
প্রতি বছর দোল পূর্ণিমায় জয়নগরে দুর্গাপুর গ্রামের আরাধ্য দেবতা শ্যামসুন্দরের মন্দিরে পক্ষকাল ব্যাপী উৎসব ও মেলা আয়োজিত হয়। কথিত আছে, ষোড়শ শতাব্দীতে সুন্দরবন অঞ্চলের তদনীন্তন শাসক প্রতাপাদিত্য রায়ের আত্মীয় বসন্ত রায় আদিগঙ্গার তীরে খাড়ি ছত্রভোগের জঙ্গলের মধ্যে এক বৈষ্ণব মন্দিরে রাধাবল্লভ, মদনমোহন ও শ্যামসুন্দর নামে তিনটি কৃষ্ণবিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। একবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে জলস্ফীতি ও ভূমিকম্পের ফলে এই স্থান সম্পূর্ণ জনশূন্য হয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর থেকে এক তান্ত্রিক জঙ্গলে এসে মূর্তিগুলি দেখতে পান এবং সেগুলিকে উদ্ধার করে জয়নগরের জমিদারকে প্রদান করেন। তারপর থেকেই এই দোল উৎসব ও মেলার সূচনা হয়।[৩৫]
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব
- রামচন্দ্র তর্কালঙ্কার (দ্বিজ রামচন্দ্র) (১৭৯৩ - ১৮৪৫) – প্রাক-আধুনিক বাঙালি কবি। পৈত্রিক নিবাস তথা জন্মস্থান দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার হরিনাভি।[৩৬]
- আনন্দচন্দ্র বেদান্তবাগীশ (১৮১৯ – ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৫) – বেদান্তবিদ ও ব্রাহ্মসমাজের সহ-সম্পাদক ও আচার্য।[৩৭]
- দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ (১৮১৯ – ২৩ অগস্ট, ১৮৮৬) – ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ও পরে সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক, সাপ্তাহিক সোমপ্রকাশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ও পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। পারিবারিক সম্পর্কে তিনি ছিলেন শিবনাথ শাস্ত্রীর মামা। তাঁর পৈত্রিক নিবাস অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার চাংড়িপোতা গ্রাম।[৩৮]
- গিরিশচন্দ্র বিদ্যারত্ন (২৬ সেপ্টেম্বর, ১৮২২ – ৩ ডিসেম্বর, ১৯০৩) – সংস্কৃত কলেজের গ্রন্থাধ্যক্ষ ও পরে অধ্যাপক। সংস্কৃত-বাংলা অভিধান সহ বিভিন্ন গ্রন্থের রচয়িতা ও সম্পাদক এবং বিধবাবিবাহ আন্দোলনকর্মী। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহপাঠী ও পরে সহযোগী। পৈত্রিক নিবাস দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রাজপুরে।[৩৯]
- রাজনারায়ণ বসু (৭ সেপ্টেম্বর, ১৮২৬ – ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৯) – ব্রাহ্ম নেতা, শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ। তাঁর আদি নিবাস ছিল অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বোড়ালে।[৪০]
- রামনারায়ণ তর্করত্ন (নাটুকে রামনারায়ণ) (২৬ ডিসেম্বর, ১৮২২ - ১৮৮৬) – সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক এবং বাংলা ভাষায় প্রথম বিধিবদ্ধভাবে নাটকের রচয়িতা। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার হরিনাভিতে।[৪১]
- নীলমণি ন্যায়ালঙ্কার, ন্যায়ালঙ্কার, সি.আই.ই. (৮ ডিসেম্বর, ১৮৪০ – ২৬ মে, ১৯০৮) – কবি, সাহিত্যিক, অনুবাদক, ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক। সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ও পরে অধ্যক্ষ হন। সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় অনেক পুস্তক রচনা করেন। এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত কূর্মপুরাণ গ্রন্থের একটি সংস্করণের সম্পাদনা করেন। পৈত্রিক নিবাস দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মাহিনগর।[৪২]
- উমেশচন্দ্র দত্ত (১৬ ডিসেম্বর, ১৮৪০ – ১৯ জুন, ১৯০৭) – সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সম্পাদক ও সভাপতি, শিক্ষাবিদ, কলকাতায় মূকবধির বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্ত্রীশিক্ষার প্রচারক। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মজিলপুরে।[৪৩]
- প্রিয়নাথ কর (১৮৪৬ - ?) – সমাজ সংস্কারক। পৈত্রিক নিবাস তথা জন্মস্থান দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার রাজপুর।[৪৪]
- শিবনাথ শাস্ত্রী (৩১ জানুয়ারি, ১৮৪৭ – ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯১৯) – সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা, সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর লেখা আত্মচরিত ও রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ সমকালীন সমাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পুস্তক। শিবনাথ শাস্ত্রীর পৈত্রিক নিবাস ছিল অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মজিলপুরে।[৪৫]
- জানকীনাথ বসু (২৮ মে, ১৮৬০ – নভেম্বর, ১৯৩৪) – কটক জেলা আদালতের আইনজীবী, পরবর্তীকালে কটক পুরসভার চেয়ারম্যান এবং বাংলার শাসনপরিষদের সদস্য হন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর পুত্র। বসু পরিবারের আদি নিবাস তথা জানকীনাথ বসুর জন্ম অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার হরিনাভির নিকট কোদালিয়ায় (অধুনা সুভাষগ্রাম)।[৪৬]
- চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য (২৯ জুন, ১৮৮৩ – ২৬ অগস্ট, ১৯৬১) – প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানবিষয়ক গ্রন্থ রচয়িতা এবং বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ প্রকাশিত রবীন্দ্র রচনাবলী ও বিশ্ববিদ্যাসংগ্রহ সংগ্রহ গ্রন্থমালার প্রকাশক। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার হরিনাভিতে।[৪৭]
- কানাইলাল ভট্টাচার্য (১৯০৯ - ২৭ জুলাই, ১৯৩১) – ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী। বিপ্লবী দীনেশগুপ্ত ও রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের মৃত্যুদণ্ডাদেশকারী বিচারক গার্লিককে হত্যা করেন এবং প্রহরী সার্জেন্টের গুলিতে নিজেও নিহত হন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মজিলপুরে।[৪৮]
- হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (১৬ জুন, ১৯২০ – ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯) – সংগীতশিল্পী, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। রবীন্দ্রসংগীত, বাংলা আধুনিক গান এবং বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্র সংগীতের বিশিষ্ট শিল্পী। তাঁর জন্ম ও পৈত্রিক নিবাস অধুনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহড়ু গ্রাম।[৪৯]
- তারাকুমার কবিরত্ন (১৮৪৩-১৯৩৫)
- হেরম্বচন্দ্র তত্ত্বরত্ন (১৮৩৭-১৯০৯)
- হরিশচন্দ্র কবিরত্ন (১৮৪৮-১৯৩৮)
- কালীকৃষ্ণ ভট্টাচার্য(১৮৪৯-১৯২৯)
- ডাঃ শ্রীনাথ বিদ্যানিধি (১৮৫০-১৯০৮)
- অঘোরনাথ চক্রবর্তী (১৮৫২-১৯১৫)
- শরচ্চন্দ্র দেব (১৮৫৮-?)
- ডাঃ চুনীলাল বসু (১৮৬১-১৯৩০)
- লীলাবতী মিত্র (১৮৬৪-১৯২৪)
- সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যারত্ন (১৮৭১-১৯৫৮)
- সতীশচন্দ্র ভট্টাচার্য (১৮৯৪-১৯৭৪)
- লজ্জাবতী বসু (১৮৭৪-১৯৪২)
- ডঃ কার্তিকচন্দ্র বসু ( ১৮৭৩-১৯৫৫)
- হরিমোহন ভট্টাচার্য (১৮৮০-১৯৬৭)
- নরেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯০-১৯৬৪)
- মনীন্দ্রলাল বসু ১৮৯৭-১৯৮৬)
- মতিলাল বসু
- পঙ্কজ দত্ত(১৯১৫-১৯৮৭)
- পূর্ণেন্দু বসু (১৯১৬-১৯৯৩)
- সমরেন্দ্রনাথ সেন (১৯১৮-১৯৯২)
- সুবোধচন্দ্র ব্যানার্জী (১৯১৮-১৯৭৪)
- নিরঞ্জন ধর (১৯১৯-২০০২)
- বেলা মিত্র (১৯২০-১৯৫২)
- অমরপ্রসাদ চক্রবর্তী (১৯২১-১৯৮৫)
- মানবেন্দ্র নাথ রায় (নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য) (১৮৮৭-১৯৫৪)
- হরিকুমার চক্রবর্তী (১৮৮২-১৯৬৩)
- সাতকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৮৯-১৯৩৭)
- জগদানন্দ মুখার্জী (১৯১০-১৯৭৩)
- শৈলেশ্বর বসু (১৮৮৬-১৯২৮)
- কালীচরণ ঘোষ (১৮৯৫-১৯৮৪)
- বিজয় দত্ত (১৯০৩-১৯৯১)
- প্রবোধচন্দ্র ভট্টাচার্য(১৯০৯-১৯৯৭)
- সলিল চৌধুরী
- সৌরভ গাঙ্গুলী
- মনোরঞ্জন ব্যাপারী
আকর গ্রন্থ
- আদি গঙ্গার তীরে-ডঃ প্রতিসকুমার রায়চৌধুরী-মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ, কলকাতা।
- চব্বিশ পরগনার আঞ্চলিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি-গোকুল চন্দ্র দাস-প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স কলকাতা
- পশ্চিমবঙ্গ-জেলা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা সংখ্যা
- পশ্চিমবঙ্গ-শিবনাথ শাস্ত্রী সংখ্যা
- দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার অতীত-কালিদাস দত্ত
- রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ-শিবনাথ শাস্ত্রী
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "District Census 2011"। Registrar General and Census Commissioner, India। ২০১১। ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১৩।
- ↑ মণ্ডল, অসিম কুমার (২০০৩)। Google books preview from The Sundarbans of India: A Development Analysis। ইন্ডাস পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ১৬৮–১৬৯। আইএসবিএন 81-7387-143-4। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৪।
- ↑ "Sundarbans National Park" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ সমরেন্দ্রনাথ চন্দ (সংকলিত), গল্পে গাথায় ছন্দে বাংলা স্থাননাম, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০৮ সংস্করণ, ২০১০ মুদ্রণ, পৃ. ৭১
- ↑ দত্ত ১৯৮৯, পৃ. ২৫-২৬
- ↑ ক খ গ ঘ ঘোষ ও মন্ডল ২০০০, পৃ. ২৩-৫৪, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও প্রত্নতত্ত্ব : একটি রূপরেখা, সাগর চট্টোপাধ্যায়।
- ↑ A. B. Bosworth 1996, পৃ. ১৮৮-১৮৯।
- ↑ Dineschandra Sircar 1971, পৃ. ১৭১-১৭২।
- ↑ ক খ ঘোষ ও মন্ডল ২০০০, পৃ. ৫৮-৫৯, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রস্তরযুগ, প্রকাশচন্দ্র মাইতি
- ↑ দে ও দে ২০১৩
- ↑ ঘোষ ১৯৮০, পৃ. ২৭৪
- ↑ Samuel Charles Hill (১৯০৫)। Bengal in 1756-57, a selection of public and private papers dealing with the affairs of the British in Bengal during the reign of Siraj-Uddaula; with notes and an historical introduction। II। পৃষ্ঠা 215–217।
- ↑ "District Census Handbook South Twenty Four Parganas, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Directorate of Census Operations, West Bengal। পৃষ্ঠা ১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ ঘোষ ১৯৫৭, পৃ. ২৭২
- ↑ ঘোষ ১৯৫৭, পৃ. ১৫২-১৫৫
- ↑ "District Census Handbook South Twenty Four Parganas, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Directorate of Census Operations, West Bengal। পৃষ্ঠা ৭। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "Directory of District, Sub division, Panchayat Samiti/ Block and Gram Panchayats in West Bengal"। National Informatics Centre, India। ১৯ মার্চ ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০০৮।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "District Profile"। Official website of South 24 Parganas district। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০০৮।
- ↑ "Population, Decadal Growth Rate, Density and General Sex Ratio by Residence and Sex, West Bengal/ District/ Sub District, 1991 and 2001"। West Bengal। Directorate of census operations। ১৯ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০০৮।
- ↑ "C-1 Population By Religious Community"। Census। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৯।
- ↑ US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১১।
Honduras 8,143,564
- ↑ "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ১৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১।
Virginia 8,001,024
- ↑ "Provisional Population Totals, Census of India 2011" (পিডিএফ)। Constituents of Urban Agglomeration Having Population Above 1 Lakh। Census of India 2011। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৬।
- ↑ http://www.censusindia.gov.in/2011census/C-16.html
- ↑ "DISTRIBUTION OF THE 22 SCHEDULED LANGUAGES-INDIA/STATES/UNION TERRITORIES - 2011 CENSUS" (পিডিএফ)।
- ↑ "Census of India 2011, West Bengal, District Census Handbook, South Twentyfour Parganas, Series – 20, Part XII-A, Village and Town Directory" (পিডিএফ)। Page 53, Table 11: Population by Mother-tongue in South 24 Parganas district 1961-2001। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "District Census Handbook South Twentfour Parganas, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Pages 52-53: Religion। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ ক খ "District Statistical Handbook 2014 South Twety-four Parganas"। Basic data: Table 4.4, 4.5, Clarifications: other related tables। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "District Statistical Handbook 2014 South Twety-four Parganas"। Table 3.1, 3.3। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "District Human Development Report: South 24 Parganas"। Pages 42-43, Chapter 3.8: Poverty Scenario in South 24 Parganas। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Backward Regions Grant Funds: Programme Guidelines" (পিডিএফ)। Ministry of Panchayati Raj, Government of India। ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Backward Regions Grant Fund"। Press Release, 14 June 2012। Press Information Bureau, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "District Human Development Report: South 24 Parganas"। Pages 76 , Chapter 4.5.2: Non-agriculture, (i) Pisciculture। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ মিত্র ২০১৩, পৃ. ৩১-৩৩
- ↑ মিত্র ২০১৩, পৃ. ২৮
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৪৮১
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৪৩
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ২২৩
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ১৩১
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৪৬৭-৪৬৮
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৪৮৫
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ২৭২-২৭৩
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৭০-৭১
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৩১৭
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৫২২-৫২৩
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ১৭৩-১৭৪
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ১৫৫
- ↑ সেনগুপ্ত ও বসু ১৯৯৮, পৃ. ৮১
- ↑ বসু ১৯৯৮, পৃ. ৪১৩
আরও পড়ুন
- গ্রন্থ
- ঘোষ, তারাপদ; মন্ডল, অজিত, সম্পাদকগণ (২০০০)। পশ্চিমবঙ্গ : দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা সংখ্যা। কলকাতা: তথ্য অধিকর্তা, তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
- ঘোষ, বিনয় (১৯৮০)। পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি। ৩য় (১ম সংস্করণ)। কলকাতা: প্রকাশ ভবন।
- মিত্র, অনুপম (২০১৩) [২০১৮]। বাংলার মেলা। কলকাতা: রক্তকরবী।
- সেনগুপ্ত, সুবোধচন্দ্র; বসু, অঞ্জলি, সম্পাদকগণ (১৯৯৮) [২০০২]। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ১ম। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ।
- বসু, অঞ্জলি, সম্পাদক (১৯৯৮) [২০০২]। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। ২য়। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ।
- বসু, গোপেন্দ্রকৃষ্ণ (২০১৫)। বাংলার লৌকিক দেবতা। কলকাতা: দেজ পাবলিশিং।
- চট্টোপাধ্যায়, সাগর (২০০৫)। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার পুরাকীর্তি। কলকাতা: প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় অধিকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
- দাস, জয়দেব (২০১৫)। অজানা সুন্দরবন। কলকাতা।
- অধিকারী, পবিত্র (২০১৪)। বৃহত্তর বেহালা জনপদের ইতিবৃত্ত (২য় সংস্করণ)। কলকাতা: প্রগতি লেখক সংঘ।
- দে, গৌরীশঙ্কর; দে, শুভ্রদীপ (২০১৩)। প্রসঙ্গ: প্রত্ন-প্রান্তর চন্দ্রকেতুগড়। কলকাতা: স্কলার পাবলিকেশনস্। আইএসবিএন 978-93-82435-00-6।
- দত্ত, কালিদাস (১৯৮৯)। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার অতীত। বারুইপুর।
- মুখোপাধ্যায়, সুধাংশু (২০০৩) [২০১১]। বৃহত্তর গড়িয়ার ইতিবৃত্ত। কলকাতা: শিশুমেলা।
- A. B. Bosworth (১৯৯৬)। Alexander and the East। Clarendon। পৃষ্ঠা 192। আইএসবিএন 978-0-19-158945-4।
- Dineschandra Sircar (১৯৭১)। Studies in the Geography of Ancient and Medieval India। Motilal Banarsidass। আইএসবিএন 978-81-208-0690-0।
বহিঃসংযোগ
- দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
- পশ্চিমবঙ্গের জেলাসমূহের মানচিত্র
- পশ্চিমবঙ্গের জেলাসমূহ প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |