সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান

স্থানাঙ্ক: ২১°৫০′১৭″ উত্তর ৮৮°৫৩′০৭″ পূর্ব / ২১.৮৩৮০° উত্তর ৮৮.৮৮৫২° পূর্ব / 21.8380; 88.8852
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের বাঘ
মানচিত্র সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের অবস্থান দেখাচ্ছে
মানচিত্র সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের অবস্থান দেখাচ্ছে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এর অবস্থান
মানচিত্র সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের অবস্থান দেখাচ্ছে
মানচিত্র সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের অবস্থান দেখাচ্ছে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এর অবস্থান
অবস্থানদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা, পশ্চিমবঙ্গ,  ভারত
নিকটবর্তী শহরকলকাতা, গোসাবা, ক্যানিং, সন্দেশখালি
স্থানাঙ্ক২১°৫০′১৭″ উত্তর ৮৮°৫৩′০৭″ পূর্ব / ২১.৮৩৮০° উত্তর ৮৮.৮৮৫২° পূর্ব / 21.8380; 88.8852
আয়তন১,৩৩০.১২ বর্গকিলোমিটার (৩,২৮,৬৮০ একর)
স্থাপিত১৯৮৪
কর্তৃপক্ষভারত সরকার
ধরনপ্রাকৃতিক
মানকix, x
অন্তর্ভুক্তির তারিখ১৯৮৭ (১১তম সেশন)
রেফারেন্স নং452
রাষ্ট্রীয় দলভারত
অঞ্চলএশিয়া-প্যাসিফিক
সুন্দরবনে হরিণ

সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার একটি জাতীয় উদ্যান, ব্যাঘ্র প্রকল্পবায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। বৃহত্তর সুন্দরবন সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি হিসেবে অখণ্ড বন যা বিশ্বে সর্ববৃহৎ[১]। অববাহিকার সমুদ্রমুখী সীমানা এই বনভূমি গঙ্গাব্রহ্মপুত্রের মোহনায় অবস্থিত এবং বাংলাদেশভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের প্রায় ৬,৫১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে[২]। বঙ্গোপসাগরের ৭৫ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত জোয়ার এখানে সবসময়ই দেখতে পাওয়া যায়। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনের বর্তমান ভারতীয় অংশটির সংরক্ষণের কাজ আরম্ভ হয়। ১৯৭৩ সালে মূল এলাকাটি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প হিসাবে ঘোষিত হয়। ১৯৭৭ সালে ২,৫৮,৫০০ হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ১৩৩,০০০ হেক্টর মূল এলাকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের মর্যাদা পায়। ১৯৮৪ সালের ৪ মে’তে এটি জাতীয় উদ্যান হিসাবে ঘোষিত হয়। ১৯৮৭ সালে (ix) এবং (x) শ্রেণীতে প্রাকৃতিক সম্পত্তি হিসাবে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষিত হয়। [৩] এখানকার সজনেখালিতে, লুথিয়ান দ্বীপেহ্যালিডে দ্বীপে বর্তমানে আরও তিনটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। এছাড়া, পাথরপ্রতিমার

ভগবৎপুরে কুমির প্রকল্প এবং সজনেখালিতে পাখিরালয় রয়েছে। ১৯৮৯ সালে সুন্দরবনের এই ভারতীয় অংশকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ ঘোষণা করা হয়।

বৃহত্তর সুন্দরবনের ভারতীয় ও বাংলাদেশের অংশ একই নিরবচ্ছিন্ন ভূমিরূপের অংশ হলেও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের সূচিতে ভিন্ন ভিন্ন নামে সূচিবদ্ধ হয়েছে যথাক্রমে সুন্দরবনসুন্দরবন জাতীয় উদ্যান নামে। গোটা সুন্দরবনকে জালের মত জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ছোট ছোট দ্বীপ। বনভূমিটি, স্বনামে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানান ধরনের পাখি, চিত্রা হরিণ, লোনা জলের কুমির, কেটো কচ্ছপ, স্বাদু জলের কুমির ও সাপ সহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। [৪]

নামকরণ[সম্পাদনা]

বাংলায় সুন্দরবন-এর আক্ষরিক অর্থ সুন্দর জঙ্গল বা সুন্দর বনভূমিসুন্দরী গাছ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ হয়ে থাকতে পারে, যা সেখানে প্রচুর জন্মায়। অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাখ্যা এরকম হতে পারে যে, এর নামকরণ হয়তো হয়েছে "সমুদ্র বন" বা "চন্দ্র-বান্ধে (বাঁধে)" (প্রাচীন আদিবাসী) থেকে। তবে সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে সুন্দরী গাছ থেকেই সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

সুন্দরবনে শিকারের খোঁজে ক্ষুধার্ত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার

মুঘল আমলে (১২০৩-১৫৩৮) স্থানীয় এক রাজা পুরো সুন্দরবনের ইজারা নেন। ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই অঞ্চলের নদীপথে পর্তুগিজ জলদস্যুদের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। এই সময় পর্তুগিজ জলদস্যুদের অত্যাচারে সুন্দরবনের অনেক সমৃদ্ধশালী জনপদ জনশূন্য হয়ে যায়। হাসনাবাদ থেকে অথবা বাসন্তী-গোসাবা থেকে এখানকার নদীপথে যেতে যেতে অনেক জায়গায় জীর্ণ বাড়িঘরের, এক-আধটা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।

১৭ শতাব্দীর শুরুতে বারো ভুঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্য যশোর,খুলনা, বরিশালসহ গোটা ২৪ পরগনা জেলার অধিপতি ছিলেন। যশোররাজ প্রতাপাদিত্য পর্তুগিজ জলদস্যুদের সঙ্গে বারবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলেন। তিনি সাগর দ্বীপ, সরসুনা, জগদ্দল প্রভৃতি অঞ্চলে দুর্গ বানিয়ে এদের আটকাবার চেষ্টা করেন। ১৮৯০ সালে সুন্দরবন সফরকারী এক ইংরেজ সাহেব রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজপুরীর ধ্বংসাবশেষ দেখতে পান; যা সেসময় 'The Statesman' পত্রিকায় 'The Ruined City of the Sunderbans' নামে প্রকাশিত হয়েছিল।

সেনরাজা লক্ষ্মণসেন-এর সুন্দরবনলিপি থেকে জানা যায়, দ্বাদশ শতকের শেষে (১১৯৬ খ্রিষ্টাব্দ) অযোধ্যা থেকে আগত পালবংশের 'মহারাজাধিরাজ' উপাধিধারী শ্রীমদ্ ডোম্মনপাল নামে এক সামন্ত রাজা উত্তর-পশ্চিম সুন্দরবনের 'পূর্বখাড়ি'তে (বর্তমান খাড়ি গ্রাম) স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেন।[৫]

কুলপি থানার ঘাটেশ্বরা গ্রামে পুকুর খোঁড়ার সময় একটি আদিনাথের জৈনমূর্তি পাওয়া গিয়েছিল। কাঁটাবেনিয়ার রায়মঙ্গল নদী-গাঙ থেকে পার্শ্বনাথের একটি বৃহৎ মূর্তি উদ্ধার হয়। করঞ্জলি, পাথরপ্রতিমা, রাক্ষসখালি প্রভৃতি অঞ্চলেও দ্বারফলক, স্তম্ভ, অষ্টধাতুর বুদ্ধমূর্তি, অন্যান্য পাথরের ও পোড়ামাটির মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে। এছাড়া, জটার দেউল, দেউলবাড়ি প্রভৃতি স্থাপনা এখানকার অতীতের জৈন, বৌদ্ধ ও হিন্দু সভ্যতাকেন্দ্রের ইতিহাসের কথা স্মরণ করায়।

কলকাতার শিয়ালদহের কাছে পুকুর খুঁড়ে প্রায় ৩০ ফুট নিচে সুন্দরী গাছের অনেক গুড়ি পাওয়া গিয়েছিল। মাতলার কাছে ১০-১২ ফুট মাটি খুঁড়ে একসময় দেখা গিয়েছে যে, একাধিক সুন্দরী গাছ কঙ্কালের মতো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ থেকে বোঝা যায়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে এ অঞ্চলের মাটি বসে গিয়েছে; সেজন্য ঘরবাড়ি, মন্দির, মূর্তি, রাজপ্রাসাদ ইত্যাদি কোন চিহ্ন এখানে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, তার অধিকাংশই মাটির তলায় সমাধিস্থ।[৬]

ঐতিহাসিক আইনি পরিবর্তনগুলোয় কাঙ্ক্ষিত যেসব মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের প্রথম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক তত্ত্বাবধানের অধীনে আসা। ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আলমগীর এর কাছ থেকে স্বত্বাধিকার পাওয়ার পরপরই সুন্দরবন এলাকার মানচিত্র তৈরি করা হয়। বনাঞ্চলটি সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আসে ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ভারতের তৎকালীন বাংলা প্রদেশে বন বিভাগ স্থাপনের পর থেকে।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনের আয়তন বর্তমানের প্রায় দ্বিগুণ ছিল। বনের উপর মানুষের অধিক চাপ ক্রমান্বয়ে এর আয়তন সংকুচিত করেছে। ১৮২৮ সালে ব্রিটিশ সরকার সুন্দরবনের স্বত্ত্বাধীকার অর্জন করে। এল. টি হজেস ১৮২৯ সালে সুন্দরবনের প্রথম জরীপ কার্য পরিচালনা করেন। ১৮৩০ সালে ড্যাম্পিয়ার ও হজেস এই দু'জন সার্ভে অফিসার সুন্দরবনের ব-দ্বীপ অঞ্চলের উত্তর সীমা নির্ধারন করেন। এই রেখার নাম হয় ড্যাম্পিয়ার-হজেস রেখা।

১৮৭৮ সালে সমগ্র সুন্দরবন এলাকাকে সংরক্ষিত বন হিসাবে ঘোষণা দেয়া হয় এবং ১৮৭৯ সালে সমগ্র সুন্দরবনের দায় দায়িত্ব বন বিভাগের উপর ন্যস্ত করা হয়। সুন্দরবনের প্রথম বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নাম এম. ইউ. গ্রীন। তিনি ১৮৮৪ সালে সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে পড়ে।

সুন্দরবনের উপর প্রথম বন ব্যবস্থাপনা বিভাগের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬৯ সালে। সুন্দরবনের একটি বড় অংশকে সংরক্ষিত বনভূমি হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয় ১৮৭৫-৭৬ সালে। পরবর্তী বছরের মধ্যেই বাকি অংশও সংরক্ষিত বনভূমির স্বীকৃতি পায়। এর ফলে দূরবর্তী বেসামরিক জেলা প্রশাসনের কর্তৃত্ব থেকে তা চলে যায় বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে। পরবর্তীতে ১৮৭৯ সালে বন ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসনিক একক হিসেবে বন বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়, যার সদর দপ্তর ছিল খুলনায়। সুন্দরবনের জন্য ১৮৯৩-৯৮ সময়কালে প্রথম বন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণীত হয়[৭][৮]

১৯১১ সালে সুন্দরবনকে ট্র্যাক্ট আফ ওয়াস্ট ল্যান্ড হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়, যা না তো কখনো জরিপ করা হয়েছে আর না তো কোনদিন শুমারির অধীনে এসেছে। তখন হুগলী নদীর মোহনা থেকে মেঘনা নদীর মোহনা পর্যন্ত প্রায় ১৬৫ মাইল (২৬৬ কি.মি.) এলাকা জুড়ে এর সীমানা নির্ধারিত হয়। একই সাথে চব্বিশ পরগনা, খুলনা ও বাকেরগঞ্জ এই তিনটি জেলা অনুযায়ী এর আন্তঃসীমা নির্ধারণ করা হয়। জলাধারসহ পুরো এলাকার আয়তন হিসেব করা হয় ৬,৫২৬ বর্গমাইল (১৬,৯০২ কি.মি)। জলাবহুল সুন্দর বন ছিল বাঘ ও অন্যান্য বন্য জন্তুতে পরিপূর্ণ। ফলে জরিপ করার প্রচেষ্টা খুব একটা সফল হতে পারেনি। সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে খুব সম্ভবত এর প্রধান বিশেষ গাছ সুন্দরীর (Heritiera fomes) নাম থেকেই। এ থেকে পাওয়া শক্ত কাঠ নৌকা, আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন জিনিস তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। সুন্দরবন সর্বত্রই নদী, খাল, ও খাঁড়ি দ্বারা বিভক্ত, যাদের মধ্যে কয়েকটি স্টিমার ও স্থানীয় নৌকা উভয়ের চলাচল উপযোগী নৌপথ হিসেবে ব্যবহৃত হত কলকাতা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার মধ্যে যোগাযোগের জন্য।

প্রশাসন[সম্পাদনা]

Map of the protected areas of the Indian Sunderban, showing the boundaries of the Tiger Reserve, the National Park and the three Wildlife Sanctuaries, conservation and lodging centres, subsistence towns, and access points. The entire forested (dark green) area constitutes the Biosphere Reserve, with the remaining forests outside the national park and wildlife sanctuaries being given the status of a Reserve Forest.

ভূগোল[সম্পাদনা]

মাটি[সম্পাদনা]

এই অঞ্চলের নদীর জোয়ারের জলে সিক্ত লবণাক্ত মাটি গাছের প্রয়োজনীয় জল শোষণ করতে পারে না, তাই একে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা বলা হয়।

জলবায়ু[সম্পাদনা]

  গড় তাপমাত্রা‍‍‌‍‍:- ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
  আপেক্ষিক তাপমাত্রা:- ৭০% - ৮৮%
  গড় বৃষ্টিপাত:- ১৮০ মিমি.

উদ্ভিদ[সম্পাদনা]

গরাণ, গেঁওয়া সুঁন্দরী, গর্জন, হেতাঁল, গোলপাতা, কেওড়া, ধোন্দল, পশুর, বাইন, কাদড়া, ওড়া, আমুড়, হদো, বেলাসুন্দরী, গিলে, বাকঝাকা ইত্যাদি সুন্দরবনের গাছপালা। এছাড়া, শিঙ্গড়া, ভাদাল, গড়ে, খলসী, হিঙ্গে, গোলদাদ, হোগলা ইত্যাদি আগাছা এবং নানাবিধ বনৌষধি পাওয়া যায়। এরাই একত্রে ম্যানগ্রোভ বনভূমি গঠন করেছে। লবণাক্ত মাটিতে শ্বাসগ্রহণের অসুবিধার কারণে এদের শ্বাসমূল তৈরি হয়েছে।[৯]

জীবজন্তু[সম্পাদনা]

রয়েল বেঙ্গল টাইগার (স্থানীয়ভাবে লোকমুখে 'বড়ো শেয়াল' বা 'বড়ো মিঞা' নামেও পরিচিত) ছাড়াও রাজহাঁসের মতো বড়-বড় গাড়াপোলা, মদনটাক, বাঁশকুয়াল, চিল, কুল্যা, ঝাঁকড়, শামখোল, মাণিক, গয়াল, করমকুলি, বনহাঁস, বালিহাঁস, পানকৌড়ি, টিয়া, হড়েল, শ্বেতকাক, দোয়েল, কালোমাথা কাস্তেচরার, ফিঙে, দুধরাজ, রক্তরাজ, ভীমরাজ, বিলবাচ্চু, রামশালিক, হাট্টিমাটিম ইত্যাদি নানান ধরনের পাখি; চিত্রা হরিণ, সজারু, বনবিড়াল, মেছো বিড়াল, লাল বান্দর, দেশি বন শুকর, ভোঁদড়, গুই সাপ, লোনা জলের কুমির, জলপাইরঙা সাগর কাছিম, কেটো কচ্ছপ, হাঙর, চিংড়ি, মাছ ও সাপ সহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত।

এছাড়া রয়েছে মৌমাছি ও জঙ্গলে গাছে গাছে তাদের বানানো মৌচাক। চৈত্র-বৈশাখ মাসে সুন্দরবনের বাসিন্দা মধু-সংগ্রাহকরা ('মৌয়াল') জীবিকার তাগিদে গভীর জঙ্গলে ঢুকে মধু আহরণ করে।[৯]

সরীসৃপ[সম্পাদনা]

সুন্দরবনের কুমীর

অতিকায় বোড়া সাপ, হরিণবোড়া, কালনাগিনী, রুদ্রকাল মহাকাল, শঙ্খরাজ, বাকাল ইত্যাদি বিষধর সাপ এখানকার জঙ্গলে থাকে।[৯] এছাড়া, গুই সাপ, লোনা জলের কুমির, জলপাইরঙা সাগর কাছিম, কেটো কচ্ছপ, স্বাদু জলের কুমির এখানকার প্রধান সরীসৃপ।

বিপদাপন্ন প্রজাতি[সম্পাদনা]

সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প[সম্পাদনা]

বাস্তুঅঞ্চল-সম্পর্কিত তথ্য[সম্পাদনা]

দোবাকি অভয়ারন্যের প্রবেশ পথ
সুধন্যখালি ফেরি ঘাট

ঘূর্ণীঝড় আয়লার ফলে ক্ষতি[সম্পাদনা]

Cyclonic Storm Aila on May 24, 2009 - Image by NASA

বিভিন্ন সমস্যা এবং গৃহীত পদক্ষেপ[সম্পাদনা]

বিপুলহারে বৃক্ষছেদন, কাঠ চোরাচালান, চাষআবাদ, চিংড়ি মীনের চাষ; তাছাড়া ভূমিক্ষয়, নদীর নাব্যতা হ্রাস, বন্যা প্রভৃতি এখানকার বাস্তুঅঞ্চলকে বিপন্ন করে তুলছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Pasha, Mostafa Kamal; Siddiqui, Neaz Ahmad (২০০৩), "Sundarbans", Islam, Sirajul, Banglapedia: national encyclopedia of Bangladesh, Dhaka: Asiatic Society of Bangladesh, আইএসবিএন 9843205766, ১৬ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ 
  2. Sundarbans Tiger Project[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Sundarbans National Park" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬ 
  4. "Sundarbans National Park"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬ 
  5. ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ২৬১-২৬৪
  6. ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ১৫৫-১৫৭
  7. Hussain, Z. and G. Acharya, 1994. (Eds.) Mangroves of the Sundarbans. Volume two : Bangladesh. IUCN, Bangkok, Thailand. 257 p.
  8. UNDP, 1998. Integrated resource development of the Sundarbans Reserved Forests, Bangladesh. Volume I Project BGD/84/056, United Nations Development Programme, Food and Agriculture Organization of the United Nations, Dhaka, The People’s Republic of Bangladesh. 323 p.
  9. ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ২৬৮-২৭১

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]