ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক

স্থানাঙ্ক: ২২°৩০′৩১″ উত্তর ৮৮°১৫′১২″ পূর্ব / ২২.৫০৮৬২১০° উত্তর ৮৮.২৫৩২১৮২° পূর্ব / 22.5086210; 88.2532182
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঠাকুরপুকুর মহেশতলা
সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক
স্থানাঙ্ক: ২২°৩০′৩১″ উত্তর ৮৮°১৫′১২″ পূর্ব / ২২.৫০৮৬২১০° উত্তর ৮৮.২৫৩২১৮২° পূর্ব / 22.5086210; 88.2532182
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
মহকুমাআলিপুর সদর
আয়তন
 • মোট৬৩.০৮ বর্গকিমি (২৪.৩৬ বর্গমাইল)
উচ্চতা৯ মিটার (৩০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১,৭৬,২০৩
 • জনঘনত্ব২,৮০০/বর্গকিমি (৭,২০০/বর্গমাইল)
ভাষা
 • সরকারিবাংলা[১][২]
 • অতিরিক্ত সরকারিইংরেজি[১]
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫.৩০)
পিন কোড৭০০১৪১
টেলিফোন কোড+৯১ ৩৩
যানবাহন নিবন্ধনডব্লিউবি-১৯ থেকে ডব্লিউবি-২২, ডব্লিউবি-৯৫ থেকে ডব্লিউবি-৯৯
লোকসভা কেন্দ্রডায়মন্ড হারবার
বিধানসভা কেন্দ্রবিষ্ণুপুর (তফসিলি জাতি)
ওয়েবসাইটwww.s24pgs.gov.in

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক হল ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার আলিপুর সদর মহকুমার একটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক। এই ব্লকের সদর বেহালায় অবস্থিত।[৩]

ভূগোল[সম্পাদনা]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকটি ২২°৩০′৩১″ উত্তর ৮৮°১৫′১২″ পূর্ব / ২২.৫০৮৬২১০° উত্তর ৮৮.২৫৩২১৮২° পূর্ব / 22.5086210; 88.2532182 অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই ব্লকটির গড় উচ্চতা ৯ মিটার (৩০ ফু)। এই ব্লকের উত্তর দিকে কলকাতার বড়িশা অঞ্চল, পূর্ব দিকে কলকাতারই বেহালা অঞ্চলের কিয়দংশ ও বারুইপুর মহকুমার অন্তর্গত সোনারপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, দক্ষিণ দিকে আলিপুর সদর মহকুমার অন্তর্গত বিষ্ণুপুর ১বিষ্ণুপুর ২ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক এবং পশ্চিম দিকে উক্ত মহকুমারই বজবজ ১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক অবস্থিত।[৪][৫]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের আয়তন ৬৩.০৮ বর্গ কিলোমিটার। ডিস্ট্রিক্ট স্ট্যাটিস্টিক্যাল হ্যান্ডবুক, সাউথ টোয়েন্টি-ফোর পরগনাস-এ উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, এই ব্লকটি একটি পঞ্চায়েত সমিতি, চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৮০টি গ্রাম সংসদ, ৩৯টি মৌজা এবং ৩৩টি জনবসতিপূর্ণ গ্রাম নিয়ে গঠিত। ব্লকটি মহেশতলা, বিষ্ণুপুররবীন্দ্রনগর থানার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার অধীনস্থ।[৬]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক/পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি হল: অসুতি ১, অসুতি ২, চট্টা ও রসপুঞ্জ।[৭] জোকা ১ ও জোকা ২ বর্তমানে কলকাতা পৌরসংস্থার এলাকাভুক্ত হয়েছে।[৬]

জনপরিসংখ্যান[সম্পাদনা]

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মোট জনসংখ্যা ১৭৬,২০৩; যার মধ্যে গ্রামীণ জনসংখ্যা ৯০,১৮০ এবং নগরাঞ্চলীয় জনসংখ্যা ৮৬,০২৩। এই ব্লকে পুরুষ জনসংখ্যা ৮৯,১৫২ (৫১ শতাংশ) এবং মহিলা জনসংখ্যা ৮৭,০৫১ (৪৯ শতাংশ)। অনূর্ধ্ব ছয় বছর বয়সীদের মোট সংখ্যা ১৮,০৭৯। তফসিলি জাতি তালিকাভুক্তদের সংখ্যা ৬০,৩৭২ (৩৪.২৬ শতাংশ এবং তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্তদের সংখ্যা ৫০৫ (০.২৯ শতাংশ)।[৮]

২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৩৬,৮৬৬; যার মধ্যে পুরুষ জনসংখ্যা ছিল ৭০,৪২০ এবং মহিলা জনসংখ্যা ছিল ৬৬,৪৪৬। ১৯৯১-২০০১ দশকে এই ব্লকের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩৫.০৯ শতাংশ; যেখানে সমগ্র দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দশকীয় বৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ২০.৮৯ শতাংশ ও ১৭.৮৪ শতাংশ।[৯][১০][১১]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত জনগণনা নগরগুলি হল (বন্ধনীর মধ্যে ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জনসংখ্যা দেওয়া হল): জোকা (৯,৩০২), চটা কালিকাপুর (২৪,৯৮৫), গন্যে গঙ্গাধরপুর (৫,২১০), রামেশ্বরপুর (৭,২০০), অসুতি (৬,২৭২), হাঁসপুকুরিয়া (৩,৮৮৭), কালুয়া (১৫,৭৩৫), রামচন্দ্রপুর (৫,২৭২) ও সামালি (৭,১৮০).[৮]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত অন্যূন ৪০০০ জনসংখ্যা-বিশিষ্ট বড়ো গ্রামগুলি হল (বন্ধনীর মধ্যে ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জনসংখ্যা দেওয়া হল): খানবেড়িয়া (৪,৬৮২), রসপুঞ্জ (৮,০৩৬), বনগ্রাম (৪,০৯৮), চক রাজুমোল্লা (৫,৩০৮), সরসুনা (৫,৫৬৩), পূর্ব বড়িশা (৫,৯৬৫) ও চক ঠাকুরানি (৫,৮৯১)।[৮]

সাক্ষরতা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মোট সাক্ষর জনসংখ্যা হল ১৩২,০৯৭ (অন্যূন ৬ বছর বয়সী জনসংখ্যার ৮৩.৫৪ শতাংশ)। মোট সাক্ষর পুরুষের সংখ্যা ৭০,৩০০ (অন্যূন ৬ বছর বয়সী জনসংখ্যার ৮৭.৯৫ শতাংশ) এবং মোট সাক্ষর মহিলার সংখ্যা ৬১,৭৯৭ (অন্যূন ৬ বছর বয়সী জনসংখ্যার ৭৯.০৩ শতাংশ)। এই ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্যের (মহিলা ও পুরুষ সাক্ষরতার হারের পার্থক্য) ছিল ৮.৯২ শতাংশ।[৮]

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় সাক্ষরতার হার ৭৭.৫১ শতাংশ,[১২] যেখানে পশ্চিমবঙ্গে সাক্ষরতার হার ৭৭.০৮ শতাংশ[১৩] এবং ভারতে সাক্ষরতার হার ৭৪.০৪ শতাংশ।[১৩]

২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে সাক্ষরতার হার ছিল ৭৪.৮০ শতাংশ, পুরুষ সাক্ষরতার হার ছিল ৮২.০০ শতাংশ ও মহিলা সাক্ষরতার হার ছিল ৬৭.১০ শতাংশ। উক্ত জনগণনা অনুযায়ী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় সাক্ষরতার হার ছিল ৬৯.৪৫ শতাংশ, পুরুষ সাক্ষরতার হার ছিল ৭৯.১৯ শতাংশ ও মহিলা সাক্ষরতার হার ছিল ৫৯.০১ শতাংশ।[৯]

টেমপ্লেট:দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকগুলিতে সাক্ষরতা

ভাষা ও ধর্ম[সম্পাদনা]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ধর্মবিশ্বাস
হিন্দু
  
৬৭.৩২%
মুসলমান
  
২৬.৬৪%
অন্যান্য
  
৬.০৪%

২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মোট জনংখ্যার ৯৭.৯ শতাংশের মাতৃভাষা বাংলা; ১.৫ শতাংশের মাতৃভাষা হিন্দি, ০.৩ শতাংশের মাতৃভাষা উর্দু এবং ওড়িয়াতেলুগু-ভাষী লোকের সংখ্যা ০.১ শতাংশ করে।[১৪]

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে হিন্দুদের মোট সংখ্যা ১১৮,৬১৫, যা মোট জনসংখ্যার ৬৭.৩২ শতাংশ। মুসলমানের সংখ্যা ৪৬,৯৪৫ (মোট জনসংখ্যার ২৬.৬৪ শতাংশ) এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ১০,৬৪৩ (মোট জনসংখ্যার ৬.০৪ শতাংশ)। এই অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা ৯,৯৫৪।[১৫]

গ্রামীণ দারিদ্র্য[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে প্রকাশিত দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মানবোন্নয়ন প্রতিবেদন অনুসারে, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারী পরিবারের হার ৬.৪৪ শতাংশ, যা জেলার সকল সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মধ্যে নিম্নতম। ২০০৫ সালে একটি গ্রামীণ গৃহস্থালী সমীক্ষায় জানা যায়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মোট জনসংখ্যার ৩৪.১১ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে, যা রাজ্য ও জাতীয় দারিদ্র্য অনুপাতের অনেক উপরে। উল্লেখ্য, সুন্দরবনের জনবসতি এলাকায় অবস্থিত তেরোটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের নথিবদ্ধ দারিদ্র্য অনুপাত নিম্ন দারিদ্র্যসীমায় অবস্থানকারী জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের উপরে এবং আটটি ব্লকের ক্ষেত্রে এই হার ৪০ শতাংশের উপরে।[১৬]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

জীবিকা[সম্পাদনা]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে
জীবিকা

  কৃষক (৩.৪১%)
  কৃষিশ্রমিক (৪.২৬%)
  কুটিরশিল্প (৬.০০%)
  অন্যান্য শ্রমিক (৮৬.৩৩%)

২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে মোট শ্রমজীবীর মধ্যে কৃষকদের সংখ্যা ২,৩২০ (মোট শ্রমজীবীদের ৩.৪১ শতাংশ), কৃষিশ্রমিকের সংখ্যা ২,৮৯৪ (মোট শ্রমজীবীদের ৪.২৬ শতাংশ), কুটিরশিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের সংখ্যা ৪,০৮০ (মোট শ্রমজীবীদের ২.২৬ শতাংশ) এবং অন্যান্য শ্রমিকের সংখ্যা ৫৮,৬৮৭ (মোট শ্রমজীবীদের ৮৬.৩৩ শতাংশ)।[১৭] এই সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে মোট শ্রমজীবীর সংখ্যা ৬৭,৯৮১, যা মোট জনসংখ্যার ৩৮.৫৮ শতাংশ এবং অ-শ্রমজীবীর সংখ্যা ১০৮,২২২, যা মোট জনসংখ্যার ৬১.৪২ শতাংশ।[১৮]

পরিকাঠামো[সম্পাদনা]

ডিস্ট্রিক্ট সেন্সাস হ্যান্ডবুক, সাউথ টোয়েন্টি-ফোর পরগনাস, ২০১১-এ প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ৩৩টি জনবসতিপূর্ণ গ্রাম রয়েছে। ১০০ শতাংশ গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। ৩২টি গ্রামে (৯৬.৯৭ শতাংশ) পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। চারটি গ্রামে (১২.১২ শতাংশ) ডাকঘর রয়েছে। ৩৩টি গ্রামেই (১০০ শতাংশ) টেলিফোন সংযোগ (ল্যান্ডলাইন, সরকারি কল অফিস ও মোবাইল ফোন-সহ) রয়েছে। ২০টি গ্রামের (৬০.৬১ শতাংশ) রাস্তা পাকা এবং ১২টি গ্রাম পরিবহন মাধ্যমের (বাস পরিষেবা, রেল সংযোগ ও নাব্য জলপথ) সঙ্গে যুক্ত। একটি গ্রামে (৩.০৩ শতাংশ) একটি কৃষি ঋণ সংস্থা রয়েছে এবং পাঁচটি গ্রামে (১৫.১৫ শতাংশ) ব্যাংক রয়েছে।[১৯]

কৃষি[সম্পাদনা]

১৯৪৬ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে শুরু হওয়া তেভাগা আন্দোলনে বৃহত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। এরপর কৃষকদের ভূম্যধিকার রক্ষার তাগিদে অপারেশন বর্গা কর্মসূচি গৃহীত হয়। ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ৯৮.৯৬ একর জমি অধিগৃহীত এবং তার স্থায়ী অধিকার অর্পিত হয়। অর্পিত জমির ১৯.২০ একর বা ১৯.৪০ শতাংশ বণ্টিত হয়েছিল। মোট ৪৭ জন জমির পাট্টা অর্থাৎ নথিপত্র পেয়েছিলেন।[২০]

২০১৩-১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ৮টি ফার্টিলাইজার ডিপো, ৭টি সিড স্টোর ও ২৪টি রেশন দোকান আছে।[২১]

২০১৩-১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ৬২৪ হেক্টর জমি থেকে ১,০১৮ টন আমন ধান (প্রধান শীতকালীন ফসল), এবং ৩৭৬ হেক্টর জমি ১,১৭৯ টন বোড়ো ধান (গ্রীষ্মকালীন ফসল) উৎপাদিত হয়।[২১]

মৎস্যচাষ[সম্পাদনা]

২০১৩-১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের ১৮৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে কার্যকরীভাবে মৎসচাষ করা হয়। মোট ১,৫৫০ জন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত এবং এই চাষে বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ১৬,০৮০ কুইন্টাল।[২১]

মৎস্যচাষ সমগ্র দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলারই জীবিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ২০০১ সালের হিসাব অনুযায়ী, সাড়ে চার লক্ষেরও বেশি লোক এই জেলায় মৎস্যচাষের সঙ্গে যুক্ত। এদের মধ্যে ২.৫৭ লক্ষ মানুষের বাস সুন্দরবন বসতি অঞ্চলের তেরোটি ব্লকে।[২২]

ব্যাংক পরিষেবা[সম্পাদনা]

২০১৩-১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ২৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আটটি গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যালয় অবস্থিত।[২১]

অনুন্নত অঞ্চল অনুদান তহবিল[সম্পাদনা]

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা অনুন্নত অঞ্চলের তালিকাভুক্ত। এই জেলাটি অনুন্নত অঞ্চল অনুদান তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য লাভ করে। ভারত সরকার সৃষ্ট এই তহবিল গঠনের উদ্দেশ্য ছিল উন্নয়নের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশের মোট ২৭২টি জেলা এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের এগারোটি জেলা রয়েছে।[২৩][২৪]

পরিবহণ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে তেরোটি প্রান্তিক বাস রুট রয়েছে।[২১]

শিক্ষাব্যবস্থা[সম্পাদনা]

২০১৩-১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মোট ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬,৬৬৮ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে, একটি মধ্য বিদ্যালয়ের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১০৯, সাতটি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ২,১৫২ জন এবং এগারোটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৮,৮৫৩। এছাড়া এই ব্লকে একটি প্রযুক্তিগত/পেশাগত প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেটির ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৯৪৮ এবং বিশেষ ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে স্থাপিত ২০৯টি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে মোট ১০,২৯২ জন ছাত্রছাত্রী। সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের বাইরে মহেশতলা পুরসভা এলাকায় ২টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে পড়াশোনা করে ১,৮৫৫ জন ছাত্রছাত্রী।[২১]

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের ৩৩টি জনবসতিপূর্ণ গ্রামের মধ্যে দু’টি গ্রামে কোনও বিদ্যালয় নেই, তেরোটি গ্রামে দুই বা ততোধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, এগারোটি গ্রামে অন্তত একটি প্রাথমিক ও একটি মধ্য বিদ্যালয় আছে এবং দশটি গ্রামে অন্তত একটি মধ্য ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[২৫]

স্বাস্থ্য পরিষেবা[সম্পাদনা]

২০১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে একটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সাতটি বেসরকারি নার্সিং হোম আছে। সারা ব্লকের চিকিৎসাকেন্দ্রগুলির মোট শয্যাসংখ্যা ২১৯ এবং চিকিৎসকের সংখ্যা ৩২ (বেসরকারি বাদে)। ব্লকে মোট ১৯টি পরিবার কল্যাণ উপকেন্দ্র রয়েছে। সারা ব্লকের হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপকেন্দ্রগুলিতে অন্তর্বিভাগে ১৫৪ জন এবং বহির্বিভাগে ২৯,৯৪২ জন রোগী চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে।[২১]

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের একটি গ্রামে সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দু’টি গ্রামে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দশটি গ্রামে প্রাথমিক স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, দু’টি গ্রামে মাতৃ ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র, বারোটি গ্রামে ওষুধের দোকান রয়েছে এবং তেত্রিশটি গ্রামের মধ্যে নয়টি গ্রামে কোনও রকম স্বাস্থ্য পরিষেবা লভ্য নয়।[২৬]

সরসুনায় অবস্থিত সরসুনা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ঠাকুরপুকুর মহেশতলা সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের প্রধান সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শয্যাসংখ্যা পনেরো।[২৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Fact and Figures"Wb.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯ 
  2. "52nd REPORT OF THE COMMISSIONER FOR LINGUISTIC MINORITIES IN INDIA" (পিডিএফ)Nclm.nic.inMinistry of Minority Affairs। পৃষ্ঠা 85। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯ 
  3. "BDO Offices under South 24 Parganas District"। West Bengal Public Library Network, Government of West Bengal। ৩ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৯ 
  4. "District Census Handbook: South 24 Parganas, Series 20, Part XII B" (পিডিএফ)Map of South 24 Parganas with CD block HQs and Police Stations (on the fourth page)। Directorate of Census Operations, West Bengal, 2011। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৯ 
  5. "South Twenty-four Parganas"CD block/ tehsil map। Maps of India। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৯ 
  6. "District Statistical Handbook 2014 South 24 Parganas"Table No. 2.1, 2.2। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৯ 
  7. "Blocks and Gram Panchayats in South 24 Parganas"। South 24 Parganas District Administration। ২৫ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৬ 
  8. "C.D. Block Wise Primary Census Abstract Data(PCA)"2011 census: West Bengal – District-wise CD Blocks। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৬ 
  9. "District Statistical Handbook – 2010-11 – South 24 Parganas"South 24 Parganas at a glance, Tables 2.2, 2.4 (b), 4.5। Bureau of Applied Economics and Statistics, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৬ 
  10. "Provisional Population Totals, West Bengal. Table 4"Census of India 2001 – South 24 Parganas। Census Commission of India। সেপ্টেম্বর ২৭, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-২০ 
  11. "Provisional Population Totals, West Bengal. Table 4"Census of India 2001। Census Commission of India। সেপ্টেম্বর ২৭, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-২০ 
  12. "District Census 2011"। Population Census 2011। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ 
  13. "Provisional population tables and annexures" (পিডিএফ)Census 2011:Table 2(3) Literates and Literacy rates by sex। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  14. "Census of India 2011, West Bengal, District Census Handbook, South Twentyfour Parganas, Series – 20, Part XII-A, Village and Town Directory" (পিডিএফ)Page 53, Table 11: Population by Mother-tongue in South 24 Parganas district 1961-2001। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  15. "C1 Population by Religious Community"West Bengal। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৬ 
  16. "District Human Development Report: South 24 Parganas"Pages 42-43, Chapter 3.8: Poverty Scenario in South 24 Parganas। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  17. "District Census Handbook South Twentyfour Parganas, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)Table 33: Distribution of Workers by Sex in Four Categories of Economic Activity in Sub-district 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  18. "District Census Handbook South Twentyfour Parganas, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)Table 30: Number and percentage of Main workers, Marginal workers and Non workers by Sex, in Sub-districts, 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  19. "District Census Handbook, South Twentyfour Parganas, 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)Page 111, Table 36: Distribution of villages according to availability of different amenities, 2011। Directorate of Operations, West Bengal.। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  20. "District Human Development Report: South 24 Parganas"(1) Chapter 1.2, South 24 Parganas in Historical Perspective, pages 7-9 (2) Chapter 3.4, Land reforms, pages 32-33। Development & Planning Department, Government of West Bengal, 2009। ২০১৬-১০-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৯ 
  21. "District Statistical Handbook 2014 South 24 Parganas"Table No. 16.1, 18.1, 18.3, 20.1, 21.2, 4.4, 3.1, 3.2, 3.3 – arranged as per use। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  22. "District Human Development Report: South 24 Parganas"Pages 76 , Chapter 4.5.2: Non-agriculture, (i) Pisciculture। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  23. "Backward Regions Grant Funds: Programme Guidelines" (পিডিএফ)। Ministry of Panchayati Raj, Government of India। ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  24. "Backward Regions Grant Fund"Press Release, 14 June 2012। Press Information Bureau, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  25. "District Census Handbook, South 24 Parganas, 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)Page 931-932, Appendix I A: Villages by number of Primary Schools and Appendix I B: Villages by Primary, Middle and Secondary Schools। Directorate of Census Operations, West Bengal.। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০১৯ 
  26. "District Census Handbook, South Twentyfour Parganas, 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)Pages 927-929, Appendix I: Summary showing total number of villages having Educational, Medical and other amenities – CD block level। Directorate of Census Operations, West Bengal.। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৯ 
  27. "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)Health Statistics – Block Primary Health Centres। Government of West Bengal। ১৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৯