ভাপা পিঠা
অন্যান্য নাম | ভাঁপাপিঠে, ধুকি পিঠা |
---|---|
প্রকার | হালকা নাস্তা |
উৎপত্তিস্থল | বাংলাদেশ |
সংশ্লিষ্ট জাতীয় রন্ধনশৈলী | বাংলাদেশ, ভারত |
পরিবেশন | গরম গরম পরিবেশন করা হয় |
প্রধান উপকরণ | চালের গুঁড়ো, গুড়, নারকেল। |
ভাপা পিঠা বাংলাদেশ ও ভারতের একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা[১][২][৩] যা প্রধানত শীত কালে প্রস্তুত করা হয় ও খাওয়া হয়। এটি প্রধানত চালের গুঁড়া দিয়ে জলীয় বাষ্পের আঁচে তৈরী করা হয়। মিষ্টি করার জন্য দেয়া হয় গুড়। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য নারকেলের শাঁস দেয়া হয়। ঐতিহ্যগতভাবে এটি একটি গ্রামীণ নাস্তা হলেও বিংশ শতকের শেষভাগে প্রধানত শহরে আসা গ্রামীণ মানুষদের খাদ্য হিসাবে এটি শহরে বহুল প্রচলিত হয়েছে। রাস্তাঘাটে এমনকী রেস্তোরাঁতে আজকাল ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। এই পিঠা অনেক অঞ্চলে ধুপি নামেও পরিচিত। এর ধরনের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি ভাপা ও ঝাল ভাপা।
ভাপা পিঠে প্রকৃতপক্ষে জলীয় বাষ্প দিয়ে সেদ্ধ করা পিঠে। এই ধরনের পিঠের আদি সংস্করণ হল গড়গড়িয়া বা গড়গড়ে পিঠে। এই গড়গড়ে পিঠে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর জেলায় ব্যাপক পরিমাণে শীতকালে বাড়িতে বাড়িতে প্রস্তুত করা হয়। উৎকল ব্রাহ্মণ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে গড়গড়ে পিঠের প্রচলন বেশি। উৎকৃষ্ট মানের পুষ্টিকর গড়গড়ে পিঠে তৈরি হয় বাঁকুড়া জেলার সিমলাপাল এলাকায়।[৪]এই পিঠে তৈরির মূল উপাদান চালের গুড়ো এবং পুর। চালের গুড়ো জল দিয়ে সেদ্ধ করে খইল তৈরি করা হয়। খইল ছোট্ট বাটির মতো করে তাতে নারকেলপুর বা চাছিপুর বা ছানাপুর ভরে মুড়ে দেওয়া হয়। তারপর জলীয় বাষ্পে সেদ্ধ করা হয়।[৫]
প্রস্তুত প্রণালী
[সম্পাদনা]উপকরণ
[সম্পাদনা]চালের গুঁড়া এক কেজি, খেজুরের গুড় আধা কেজি, নারিকেল কোরানো চার বাটি, লবণ স্বাদ মতো ও পানি পরিমাণ মতো।
প্রস্তুতি
[সম্পাদনা]চালের গুঁড়ায় সামান্য লবণ ও পানি মিশিয়ে মেখে নিতে হয়। তারপর একটি বাঁশের বা প্লাস্টিকের চালুনি দিয়ে মাখানো চালের গুঁড়াগুলো চেলে নিতে হয়। এরপর নারিকেলের চাঁছা ও গুড় মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে শুকনা করে পাকিয়ে নিতে হবে।
কৌশল
[সম্পাদনা]ভাপা পিঠা তৈরী করা কৌশলের ব্যাপার কেননা এটির জন্য পৃথক ব্যবস্থা লাগে জলীয় বাষ্পের আঁচে এটি তৈরী করতে হয়। এজন্যে একটি মাটির পাতিল আধা ইঞ্চি গোল ফুটো করে আঠা দিয়ে পাতিলের মুখে আটকে নিতে হয়। পাতিলের অর্ধেক পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে পানি ফুটাতে হয়। ছোট একটি বাটিতে প্রথমে মাখানো চালের গুঁড়া ও মাঝখানে নারিকেল পাকানো দিয়ে বাটি ভর্তি করে বাটির মুখ পাতলা কাপড় দিয়ে মুড়ে ফুটন্ত হাঁড়ির ছিদ্রতে বসিয়ে ভাপা পিঠা দুই মিনিট সেদ্ধ করতে হয়। তারপর গরম গরম খেতে হয়। সেদ্ধ হওয়ার সময় গুড় গলে বাইরে বেরিয়ে আসলে সাদা চালের গুঁড়ার ফাঁকে ফাঁকে গুড়ের উঁকি মনোরম দেখায়।[৬]
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "পিঠা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জাতীয় পিঠা উৎসব শুরু"। ১৫ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "পিঠা উৎসবে ঐতিহ্যের ছোঁয়া"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৮।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ভূমিলক্ষ্মী|আনন্দবাজার পত্রিকা|২৪ ডিসেম্বর,১৯৭৬
- ↑ "শীতের পিঠা"। সমকাল। ২০২১-০১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৩।
- ↑ "ভাপা পিঠা তৈরির সহজ রেসিপি"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৩।