অসহযোগ আন্দোলন (১৯৭১)

এটি একটি ভালো নিবন্ধ। আরও তথ্যের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(১৯৭১ অসহযোগ আন্দোলন থেকে পুনর্নির্দেশিত)

অসহযোগ আন্দোলন ১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তানের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগপূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ কর্তৃক পরিচালিত একটি ঐতিহাসিক আন্দোলন। ১ মার্চে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণার পর জনগণের স্বতস্ফুর্ত আন্দোলন শুরু হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে ২ মার্চে[১] অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়ে ২৫ মার্চ পর্যন্ত চলমান থাকে। মোট ২৫ দিন স্থায়ী হয় এই আন্দোলন।[২] আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার থেকে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা।[৩][৪] এই সময়কালে ক্রমশ পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসনের উপর থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আন্দোলনের একপর্যায়ে সেনানিবাসের বাইরে পুরো পূর্ব পাকিস্তান কার্যত শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে চলছিল।[১][৫]

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজন

১৯৪০ সালে পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সম্মেলনে আবুল কাশেম ফজলুল হক লাহোর প্রস্তাব তুলে ধরেন। লাহোর প্রস্তাবের তৃতীয় অনুচ্ছেদে ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে অঞ্চল হিসেবে স্থানসমূহের সীমানা সামঞ্জস্য করে নির্দিষ্টভাবে পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে একাধিক স্বাধীন ও সার্বভৌম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র সৃষ্টি করার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। মুসলিম লীগ অনুচ্ছেদটি বাস্তবায়ন করেনি বরং ১৯৪৬ সালের দিল্লি প্রস্তাবে লাহোর প্রস্তাব সংশোধন করার মাধ্যমে[৬] সকল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে একটি অদ্বিতীয় মুসলিম রাষ্ট্র তৈরি করে।[৭] ভারত বিভাজনের সময় বঙ্গ প্রদেশকে ধর্মের ভিত্তিতে দুই ভাগে ভাগ করে হিন্দু অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলকে ভারতে এবং মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গ অঞ্চলকে পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৫৫ সালে পূর্ববঙ্গ প্রদেশের নাম পরিবর্তিত হয়ে পূর্ব পাকিস্তান হয়।[৮]

পূর্ব পাকিস্তান এক ইউনিট ব্যবস্থার অধীনে পাকিস্তানের একটি অঞ্চল হিসেবে শাসিত হলেও রাজনৈতিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও সামরিক দিক থেকে অঞ্চলটি বৈষম্যের শিকার হয়েছিল।[৯] পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পরে ছয় দফা আন্দোলনের অন্যতম দফা হিসেবে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রে ফেডারেশন ব্যবস্থা কার্যকরের দাবি করেছিল যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে প্রশাসনিক অঞ্চলগুলো স্বাধীন থাকতে পারবে।[৭]

১৯৬৬ সাল থেকে চার বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন।[১০]

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে দেশটির জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ সংরক্ষিত নারী আসনসহ ৩১৩ টি আসনের মধ্যে ১৬৭ টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।[১১] আওয়ামী লীগের এই বিজয়ে ফলে ৬ দফা বাস্তবায়ন অবশ্যম্ভাবী বুঝতে পেরে পিপিপি সহ পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা ভীত হয়ে পড়ে।[১২] শাসকগোষ্ঠী মনে করেছিল যে ছয় দফা বাস্তবায়িত হলে পাকিস্তানের ঐক্য বিনষ্ট হবে।[১৩]

১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন।[১২] তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দুই দফা আলোচনা করেন। এই আলোচনা সম্পর্কে শেখ মুজিবুর রহমান জানান:

পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান

একইভাবে পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান সাংবাদিকদের বলেন,

পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে তিনি লারকানায় জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাসভবনে গিয়ে জেনারেলদের সাথে গোপন বৈঠক করেন।[১৬]

তারপর জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে দলের অন্যান্য নেতাদের সাথে ঢাকায় এসে ২৭, ২৮ ও ২৯ তারিখে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য শীর্ষনেতাদের সাথে জুলফিকার আলী ভুট্টো কয়েক দফা বৈঠক করেন।[১৭] বৈঠকে ভুট্টো জোটবদ্ধ হয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগি করার প্রস্তাব দিলে শেখ মুজিবুর রহমান তা প্রত্যাখ্যান করেন।[১৮] বৈঠক শেষে শেখ মুজিবুর রহমান ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় পরিষদের বৈঠক আয়োজন করে ছয় দফার ওপর ভিত্তি করে শাসনতন্ত্র রচনা করার ইচ্ছা পোষণ করলেও জুলফিকার আলী ভুট্টো আরও আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মতামত ব্যক্ত করেন।[১৯]

তিনি মার্চ মাসের শেষ দিকে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আয়োজন করার প্রস্তাব করেন। তবে রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান মার্চের ৩ তারিখে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারিতে জুলফিকার আলী ভুট্টো ঘোষণা করেন, আওয়ামী লীগ তাদের ৬ দফার ব্যাপারে আপস না করলে কিংবা এটি পরিবর্তন না করলে তিনি এবং তার দল কোনওভাবেই অধিবেশনে যোগদান করবে না।[১৯]

পাকিস্তান পিপলস পার্টি নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো

৪ দিন পর ১৯ ফ্রেব্রুয়ারিতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে ইয়াহিয়া খানের আলোচনা হয়। বৈঠকের পর ভুট্টো পুনরায় একই দাবি করেন। আওয়ামী লীগ তার দেওয়া শর্ত না মানলে তিনি অধিবেশনে যোগদান না করার ব্যাপারে অনড় থাকেন।[১৪] ২৮ ফেব্রুয়ারিতে তিনি তার দলকে ছাড়া অধিবেশন শুরু করলে আন্দোলন শুরু করবেন বলে সতর্ক করেন। এছাড়াও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকায় যোগ দিতে চাওয়া গণপরিষদের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন।[২০]

শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পারেন, পশ্চিম পাকিস্তানিরা নির্বাচনের ফলাফল বানচালের পরিকল্পনা করছে। তাই তিনি দিন দিন কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন। ভুট্টোর সাথে আলোচনা করে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ তারিখে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করেন। ফলে বাংলার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে; শুরু হয় আন্দোলন।[১৪]

প্রারম্ভিক পর্যায় (১–৭ মার্চ)[সম্পাদনা]

১ মার্চ[সম্পাদনা]

১ মার্চের ঘটনা সংবলিত দৈনিক ইত্তেফাক যা পরের দিন প্রকাশিত হয়

তৎকালীন পাকিস্তানের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর হুমকির পরে জেনারেল ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে ১৯৭১ সালের ১ মার্চের দুপুর ১টা ৫ মিনিটে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণা করেন।[১৯]

এই ঘোষণা চলাকালে ঢাকা স্টেডিয়ামে চলমান আন্তর্জাতিক একাদশ বনাম বিসিসিপির মধ্যকার ক্রিকেট ম্যাচটি জনগণের বিক্ষোভের মুখে বন্ধ হয়ে যায়।[২১] ছাত্র-জনতা শেখ মুজিবুর রহমানের কোনও নির্দেশনা ছাড়াই স্বতস্ফুর্ত আন্দোলনে নেমে পড়ে। ছাত্ররা প্রথমে দলে দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জড়ো হয়ে পল্টন ময়দানে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সেদিন শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সদস্যরা হোটেল পূর্বাণীতে ৬ দফার উপর ভিত্তি করে শাসনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়নের কাজে ব্যস্ত থাকায় বিক্ষুব্ধ জনতা হোটেল পূর্বাণীর সামনে জড়ো হয়। সেখানে জনতা পাকিস্তানের পতাকা এবং মুহম্মদ আলী জিন্নাহর ছবি পোড়ায়।[২২] শেখ মুজিবুর রহমান তখন সংবাদ সম্মেলন করে সকলকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন জোরদার করার পরামর্শ দেন। তিনি একই সাথে ২ ও ৩ মার্চে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতালের ঘোষণা[১৪] দেওয়ার পাশাপাশি ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে জনসভা করার সিদ্ধান্ত জানান।[২২] সেদিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহাম্মদ ইকবাল হল ও মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ হলের নাম বদলে যথাক্রমে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সূর্যসেন হল রাখা হয়।[১৭] শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে নূরে আলম সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ, আ. স. ম. আবদুর রবআব্দুল কুদ্দুস মাখন গোপন বৈঠকের পর বিকালে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন।[২৩]

২ মার্চ[সম্পাদনা]

তৎকালীন ডাকসু ভিপি এবং সর্বপ্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনকারী আ. স. ম. আব্দুর রব

এদিন ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযয়ের তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ.স.ম. আব্দুর রবের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করে।[২৪] লে. জে. ইয়াকুব খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভনর নিযুক্ত হয়। সামরিক আইন এবং জারি এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কারফিউ থাকার পরেও ব্যাপক আন্দোলন হতে থাকে। ঢাকায় দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালিত হয়। আন্দোলনে গুলি চালানো হয়। পল্টন ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমান ৩ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশ ব্যাপি হরতালের ডাক দেন এবং সাত মার্চে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার সিদ্ধান্ত সবাইকে জানান।[২৫] তিনি এও জানান যে ভাষণে স্বাধীকার অর্জনের উদ্দেশ্যে আন্দোলনের কর্মসূচি তুলে ধরা হবে।[২৬][ক]

পূর্ববাংলা শ্রমিক আন্দোলন শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার আহবান সংবলিত প্রচারপত্র বিলি করে। সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের করাচি শাখায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় বসে। পাকিস্তানের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির উদ্দেশ্যে করা এই আলোচনায় পিপিপি অনুপস্থিত ছিল। বৈঠকে ৭ই মার্চের মধ্যে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত করার দাবি করে।[২৭]

পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট লুটপাটের খবর পাওয়া যায়। জনগণ লুটতরাজদের প্রতিরোধ করে লুট করা মাল পুড়িয়ে দেয়।[২৮] রাতে বেতার ঘোষণার মাধ্যমে ঢাকায় কারফিউ জারি করা হয়। ছাত্র-জনতা রাতেই কারফিউ ভেঙে মিছিল বের করলে শহরের বিভিন্ন স্থানে তাদের উপর গুলি চালানো হয়।[২৫]

৩ মার্চ[সম্পাদনা]

পল্টনের সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমান

এদিন পল্টন ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে তৎকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ইশতেহার’ ঘোষণা করেন।[২৯] এতে পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত করার ঘোষণা করা পাশাপাশি এর লক্ষ্যগুলো[খ] নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও এতে শেখ মুজিবুর রহমানকে সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করা হয়।[৩১]

পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস-প্রতিষ্ঠান, সচিবালয়, হাইকোর্টসহ অন্যান্য আদালত, পিআইএ, রেলওয়েসহ অন্যান্য সবধরণের যোগাযোগ মাধ্যম, শিল্প-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ দেশে সবজায়গায় হরতাল পালিত হয় এবং মিটিং-মিছিল চলে। আগের রাতে গুলিতে নিহত বেশ কয়েকজনের মৃতদেহ নিয়ে এদিন মিছিল হয়।[৩২] পূর্ব পাকিস্তানের অনেক স্থানে এসব মিছিলে গুলিবর্ষণ হন। ফলে ঢাকা শহরে ২৩ জন ছাড়াও চট্টগ্রামে ৭৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।[৩৩] ঢাকা, রংপুর এবং সিলেটে কারফিউ জারি করা হয়।

ইয়াহিয়া খান এদিন ১০ মার্চে ঢাকায় নেতৃবৃন্দের সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন এবং এই সম্মেলনের দুই সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন শুরু হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো এতে সম্মত হলেও শেখ মুজিবুর রহমান তা প্রত্যাখ্যান করেন।[৩৪] শেখ মুজিবুর রহমান ভুট্টোর উদ্দেশ্যে বলেন যে যদি ভুট্টোরা গণতান্ত্রিকভাবে রচিত শাসনতন্ত্র মেনে নিতে না চান তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক শাসনতন্ত্র রচনা করা হবে।[৩৫]

রাতে এমভি সোয়াত জাহাজ থেকে সেনা ও মালামাল চট্টগ্রাম বন্দরে নামতে গেলে সেনাবাহিনী ও বিক্ষোভকারী নাবিকদের মাঝে সংঘর্ষ ঘটে। বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালাতে অস্বীকার করলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৭ জন সেনা সদস্যকে কোর্ট মার্শালে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।[৩৬]

৪ মার্চ[সম্পাদনা]

২ থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের দ্বায়িত্ব পালন করা সাহেবজাদা ইয়াকুব খান

প্রাদেশিক রাজধানী থেকে কারফিউ তুলে নেয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম জেলাপার্বত্য চট্টগ্রামে ১১৩ নং সামরিক আইন জারি করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের শিল্পী ও সাংবাদিকেরা আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন। এদিন ন্যাপ-এর সভাপতি মওলানা ভাসানী ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে এদেশের মানুষের অধিকার দাবি করেন। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক সাহেবজাদা ইয়াকুব খান পদত্যাগ করেন।[৩]

নুরুল আমিন ইয়াহিয়া খানের প্রতি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকার আহবান করেন।[৩৭] করাচির একটি প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের ঐক্যবদ্ধতা টিকিয়ে রাখতে আসগর খান আওয়ামী লীগকে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা প্রদান করতে আহবান জানান।[৩৮]

রেডিও পাকিস্তান ও সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্র[গ] তাদের নাম বদলে যথাক্রমে ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’ ও ‘ঢাকা টেলিভিশন’ হিসেবে সম্প্রচার শুরু করে। এদিন থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত শেখ মুজিবের নির্দেশে সকাল ছয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত হরতাল পালন করা হয়।[৩৯]

৫ মার্চ[সম্পাদনা]

আন্দোলন অব্যাহত থাকে। বর্তমান গাজীপুরের টঙ্গীতে গুলিতে ৪ জন নিহত হন এবং আহত হন ২৫ জন। চট্টগ্রামে গুলিবর্ষণের ফলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৮ হয়। রংপুর এবং রাজশাহীতে পুনরায় কারফিউ জারি করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন।[৩৩]

শেখ মুজিবের নির্দেশে হরতালের দিনগুলোতে শুধু জরুরি প্রয়োজনে ও কর্মচারীদের বেতন প্রদানের লক্ষ্যে সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক, রেশনের দোকান দুপুর আড়াইটা থেকে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে।[৪০]

রাওয়ালপিন্ডিতে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে ভুট্টোসহ পিপলস পার্টির অন্যান্য নেতাদের মধ্যে দীর্ঘ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে দলের মুখপাত্র আবদুল হাফিজ পীরজাদা জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত রাখার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়াকে অবাঞ্ছিত ও যুক্তিহীন বলেন।

পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরে পূর্ব পাকিস্তানে চলমান আন্দোলনে নিহতদের গায়েবানা জানাজা আয়োজন করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন মসজিদে এদিন জুম্মার নামাজের পর নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।[৪১]

৬ মার্চ[সম্পাদনা]

জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ২৫ মার্চে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসার ঘোষণা দেন।[৪২] টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। ভারতের আকাশ সীমা দিয়ে পাকিস্তানের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি রাখা হয়।

ইয়াহিয়া খানের ভাষণের পর পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও পূর্ব শাখার কার্যকরী কমিটির জরুরি যৌথ বৈঠক হয়। কয়েক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে শেখ মুজিবুর রহমান "শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে" ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনায় যেতে অস্বীকৃতি জানান।[৪৩]

রাজশাহীতে১৪ জন আহত এবং ১ জন নিহত হন।[৪৩] খুলনাতে ৮৬ জন আহত এবং ১৮ জন নিহত হন। অন্যদিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের গেট ভেঙে ৩৪১ জন কয়েদি পালিয়ে যায়।[৩৩]

৭ মার্চ[সম্পাদনা]

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ

এদিন শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জাতির উদ্দেশ্যে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন ৪টি শর্ত পূরণ হলে তিনি অধিবেশনে যোগ দিবেন। সেগুলো হল :

  1. অবিলম্বে মার্শাল ল' (সামরিক আইন) উইথড্র (প্রত্যাহার) করতে হবে।
  2. সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফিরে যেতে হবে
  3. গণহত্যার তদন্ত করতে হবে
  4. গণপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

তিনি বাংলার মানুষকে খাজনা-ট্যাক্স দিতে নিষেধ করেন। সচিবালয়সহ অন্যান্য সরকারি-আধা সরকারি অফিস, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টসহ পূর্ব পাকিস্তানের সব কোর্ট বন্ধ রাখতে বলেন। তবে দৈনিক মাত্র ২ ঘণ্টা ব্যাংক খোলা রাখার অনুমতি দেন। সামরিক বাহিনী ছাড়া অন্যান্য সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য সব ধরনের বাস-ট্রাক, রিক্সা, ট্যাক্সি চলাচলের অনুমতি দেন।[৪৪]

এই ভাষণ প্রচার না করায় বাঙালি কর্মীদের প্রতিবাদে ঢাকা বেতার সেদিন বন্ধ হয়ে যায় সন্ধ্যা সাতটায় বেতার ভবনের সামনে বিক্ষুব্ধ জনতা বোমা ফেলে।

সেদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজীসহ পাঁচজন সামরিক অফিসারকে সহকারী সামরিক প্রশাসক নিযুক্ত করে।[৩৩]

মধ্যম পর্যায় (৮–১৫ মার্চ)[সম্পাদনা]

৮ মার্চ[সম্পাদনা]

ন্যাপ নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী

শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের পরেই অসহযোগ আন্দোলন নতুন রূপ নেয়। এই ভাষণের সাথে ছাত্রনেতারা একাত্মতা ঘোষণা করেন। ভাষণ প্রচার করা হবে– এই শর্তে বেতার কর্মীরা কাজে যোগ দেন। ছাত্রলীগ নেতারা এদিন ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করার প্রস্তাব করে।[৩] আগের দিন ৭ই মার্চের ভাষণ প্রচার না করলেও পরিস্থিতির চাপে এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বেতার থেকে এই ভাষণ সম্প্রচার করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের অন্যান্য বেতার কেন্দ্র থেকেও এটি রিলে করে প্রচার হয়।[৪৫]

একটি সরকারি প্রেসনোটে দাবি করা হয়, চলমান আন্দোলনে ১৭২ জন নিহত ও আহত ৩৫৮ জন আহত হয়েছেন কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ সামরিক কর্তৃপক্ষের এই প্রেসনোটের প্রতিবাদ করে সেখানে হতাহতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমিয়ে বলার অভিযোগ করেন।[৪৫]

শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের নির্দেশ মতে সকল সরকারি অফিসের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়তে শুরু করে। টিক্কা খান এদিন পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক গভর্নরের দায়িত্ব পালন করতে ঢাকায় আসেন।[৪৬]

রাতে তাজউদ্দিন আহমদ এক বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে ঘোষিত বিভিন্ন নির্দেশের ব্যাখা দেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়:

  • সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে। এছাড়া পোস্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক খোলা রাখার কথা বলা হয়। নির্দেশনা অনুসারে ব্যাংকগুলোকে কেবল বাংলাদেশের (প্রকৃতপক্ষে পূর্ব পাকিস্তান) অভ্যন্তরে লেনদেনের অনুমতি দেওয়া হয়। এছাড়া গ্রাহকদের সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত প্রদানের অনুমতি দেওয়া হয়।[৪৫]
  • বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও সার সরবরাহ এবং পাওয়ার পাম্পের ডিজেল সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলো চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।[৪৭]

এছাড়াও এদিন করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের পূর্ব পাকিস্তান ভিত্তিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মূল্যের দ্রুত পতন হয়।[৪৮]

৯ মার্চ[সম্পাদনা]

তাজউদ্দীন আহমদ
আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ

এদিন পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসনের উপর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারে নিয়ন্ত্রণ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। ফলে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ বেসামরিক প্রশাসন পরিচালনার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৬ দফা নির্দেশনা জারি করেন। পাকিস্তান জাতীয় লীগের নেতা আতাউর রহমান খান[৪৯] ও ছাত্রলীগ নেতারা এদিন শেখ মুজিবুর রহমানকে "বাংলাদেশ জাতীয় সরকার" গঠনের পরামর্শ দেয়।[৫০]

এইদিন ন্যাপ নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীশেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। সেদিন বিকালে পল্টন ময়দানের এক ভাষণে মওলানা ভাসানী শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে একত্রে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন।[৫১] এছাড়াও তিনি ইয়াহিয়া খানকে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা মেনে নিতে বলেন। পাশাপাশি ২৫ মার্চের মধ্যে সরকার কোনও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে তিনি ১৯৫২ সালের মতো একযোগে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।[৫২]

টিক্কা খান

টিক্কা খানকে এদিন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি বদরুদ্দীন আহমদ সিদ্দিকী তাকে শপথ করাতে অপারগতার কথা জানিয়ে দেন।[৩]

এদিন সামরিক কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য রাজশাহী শহরে রাত ৯টা থেকে পরবর্তী ৮ ঘণ্টা ব্যাপি কারফিউ জারি করে।[৫৩]

ঢাকাতে থাকা অন্যান্য দেশের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে ঢাকায় তাদের দেশের বিমান অবতরণ করে। জাতিসংঘের মহাসচিব প্রয়োজনে তাদের কর্মীদের ঢাকা থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন।[৩৩] একই দিনে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি যুদ্ধ করে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করতে জনগণকে আহবান করে।[৫৪]

১০ মার্চ[সম্পাদনা]

এদিন দেশের অভিনেতা ও অন্যান্য শিল্পীরা মিলে কবি গোলাম মোস্তফাখান আতাউর রহমানের নেতৃত্বে ‘বিক্ষুদ্ধ শিল্পী সমাজ’ নামক ব্যানারে বিক্ষোভ প্রকাশ করে। পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের দ্বিতীয় শ্রেণির বাঙালি কর্মচারীরা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আন্দোলনের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেন।[৩]

প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।[৫৫] সরকারি ও বেসরকারি অফিস ভবন, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, বিভিন্ন থানা এবং ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বাড়িতেও কালো পতাকা তোলা হয়।[৫৬]

রাজশাহী শহরে জারিকৃত অনির্দিষ্টকালের জন্য নৈশ কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়।

পশ্চিম পাকিস্থান থেকে সমরাস্ত্রবাহী জাহাজ ‘এম এল সোয়াত’ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে নোঙর করে। কিন্তু বন্দরে কর্মরত শ্রমিকেরা অস্ত্রগুলো জাহাজ থেকে নামাতে অস্বীকৃতি জানায়। সামরিক বাহিনী অস্ত্রগুলো নামানোর উদ্যোগ নিলেও উপস্থিত জনতা তা সফলভাবে প্রতিরোধ করে।[৫৬]

এই দিনে জুলফিকার আলী ভুট্টো শেখ মুজিবুর রহমানকে একটি টেলিগ্রাম বার্তায় রাষ্ট্রকে রক্ষা করার আবেদন করে তার সাথে দেখা করার প্রস্তাব দেন।[৫৭]

১১ মার্চ[সম্পাদনা]

শেখ মুজিবুর রহমানের নিকট পিপিপির নেতা ভুট্টো একটি তারবার্তা দিয়ে ঢাকায় এসে সমঝোতা করতে রাজি হওয়ার কথা জানান।[৫৮] ১লা মার্চ থেকে খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের কাগজ পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠানো বন্ধ হওয়ায় নিউজপ্রিন্টের অভাবে এদিন থেকে ডন পত্রিকা সহ সেখানকার বিভিন্ন সংবাদপত্রের কলেবর ব্যাপক হ্রাস পায়।[৩৩]

স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এক বিবৃতিতে সরকার প্রদত্ত খেতাব ও পদক বর্জনের জন্য আহবান জানানো হয়।[৫৯] দেশের প্রশাসনিক কাঠামো এক কথায় অচল হয়ে পড়ে। তাই এদিন জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব উথান্ট পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত তাদের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন।[৩]

বেসামরিক প্রশাসন পরিচালনার জন্য এদিন তাজউদ্দীন আহমদ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্য ১৪ দফা নির্দেশনা প্রকাশ করেন। এছাড়াও এদিন পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন দলের প্রতিনিধি শেখ মুজিবের সাথে বৈঠক করেন।[৬০]

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩২ হাজার টন গম নিয়ে ‘ভিনটেজ হরাইজন’ নামের একটি জাহাজ পূর্ব পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে আসছিল। কিন্তু পাকিস্তান সরকার এদিন জাহাজটিকে করাচি বন্দরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।[৬০]

১২ মার্চ[সম্পাদনা]

এদিন আওয়ামী লীগ প্রদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করার আদেশ দেয়। পূর্ব পকিস্তানে কর্মরত বাঙালি সিএসপি ও ইপিসিএস অফিসার, সরকারি এবং আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা এই আন্দোলনে সমর্থন দেন। সিএসপি অফিসারেরা এদিন আওয়ামী লীগের তহবিলে তাদের একদিনের বেতন অনুদান দেন। অনির্দিষ্ট কালের জন্য মালিকেরা পূর্ব পাকিস্তানের সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধের ঘোষণা দেন।[৩] তারা আন্দোলনের পক্ষে আওয়ামী লীগের সাহায্য তহবিলে তৎকালীন পাকিস্তানি মুদ্রায় ১৩ হাজার ২৫০ টাকা অনুদান দেন।[৬১]

চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে ২৩ মার্চে পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিতব্য সশস্ত্র বাহিনীর কুচকাওয়াজ, খেতাব প্রদানসহ পূর্বনির্ধারিত সকল অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতা এম মনসুর আলী এদিন পূর্ব পাকিস্তনের উদ্দেশ্যে পাঠানো মার্কিন খাদ্যবোঝাই জাহাজটির গতিপথ বদলে চট্টগ্রামের বদলে করাচির দিকে পাঠানোয় গভীর উৎকণ্ঠা ও নিন্দা জানান। মওলানা ভাসানী ময়মনসিংহের একটি জনসভায় আওয়ামী লীগের পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।[৬২]

বগুড়া কারাগার ভেঙে ২৭ জন কয়েদি পলায়ন করে। রক্ষীদের গুলিতে পলায়নকালে ১ জন কয়েদি নিহত ও ১৫ জন আহত হয়।[৬১]

১৩ মার্চ[সম্পাদনা]

প্রতিরক্ষা খাত থেকে বেতনপ্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৫ মার্চ সকালে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। আদেশ না মানলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। এই সিদ্ধান্তকে উস্কানিমূলক আখ্যা দিয়ে এর তীব্র বিরোধিতা করেন শেখ মুজিবুর রহমান[৩]

পশ্চিম জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কানাডা, ফ্রান্স এবং জাতিসংঘের ২৬৫ জন কর্মকর্তাকে ঢাকা থেকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।[৬৩]

পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন বিরোধী দল তথা কাউন্সিল মুসলিম লীগ, কনভেনশন মুসলিম লীগ, জমিয়তে ঊলামায়ে ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তানের নেতারা চলমান পরিস্থিতির ব্যাপারে বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে পিপিপি ও মুসলিম লীগ (কাইয়ুম) অনুপস্থিত ছিল। বৈঠক শেষে তারা পাকিস্তানের অনিবার্য ভাঙন রোধে অতিসত্বর আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানায়। আব্দুল হেকিম চৌধুরী ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন আন্দোলনের সমর্থনে তাদের খেতাব বর্জন করেন।[৬৩]

১৪ মার্চ[সম্পাদনা]

জুলফিকার আলী ভুট্টো এদিন ইয়াহিয়া খানকে পূর্ব পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগকে এবং পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পিপিপি-কে, অর্থাৎ দুই পাকিস্তানে দুই দলকে ক্ষমতা দেওয়ার ফর্মুলা প্রদান করেন। মুসলিম লীগের আব্দুল কাইয়ুম ছাড়া তৎকালীন পাকিস্তানের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতারা এই হঠকারী ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন।

অসহযোগ আন্দোলনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিমা শিল্পপতিরা শেখ মুজিবুর রহমানের চার দফা মেনে নেওয়ার জন্য সামরিক সরকারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।[৩৩]

আন্দোলন করার ব্যাপারে শেখ মুজিবুর রহমান একটি নির্দেশনাবলী প্রকাশ করেন যেখানে ৩৫টি নির্দেশ ছিল। এই নির্দেশনাবলীর উদ্দেশ্য ছিল দেশের অর্থনীতির ক্ষতি না করে কীভাবে আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে তা জানানো।[৬৪]

১৫ মার্চ[সম্পাদনা]

শুধুমাত্র সেনাবাহিনী ছাড়া সর্ব ক্ষেত্রে শেখ মুজিবুর রহমান তথা আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে এদিন ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন।[৬৫] তার সফরসূচিতে ছিল গোপনীয়তা। সাংবাদিকদের সাথে বিমানবন্দরে কোন কথা বলেননি। ভুট্টোর দুই পাকিস্তানের দুই দলকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য দলের নেতারা তার এই সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে এর তীব্র বিরোধিতা করেন।[৬৬]

চূড়ান্ত পর্যায় (১৬–২৫ মার্চ)[সম্পাদনা]

১৬ মার্চ[সম্পাদনা]

জয়নুল আবেদিনসুফিয়া কামালের নেতৃত্বে ১৬ মার্চে একটি মিছিল

এদিন নিউজউইক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে ৭ই মার্চের ভাষণে তিনি আসলে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন।

শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইয়াহিয়া খানের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। স্থানীয় নেতাদের সাথে আলোচনা করে তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনে যান। বৈঠকে যাওয়ার সময় শেখ মুজিবুর রহমান সামনে কালো পতাকা লাগানো এবং উইন্ডো শিল্ডে বাংলাদেশের মানচিত্র রাখা একটি সাদা গাড়িতে চড়ে যান।[৩৩]

বৈঠকে ইয়াহিয়া খান পূর্বে ঘটা ঘটনাগুলোর জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে রাজনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান করার ইচ্ছা পোষণ করেন। তখন তিনি আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত ক্ষমতা হস্তান্তরের ৪ দফা শর্ত মেনে নেন বলে জানান। শর্তগুলো ছিল – সামরিক শাসন প্রত্যাহার করে গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতা প্রদান করা, প্রতিটি প্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমতা হস্তান্তর, কেন্দ্রীয় সরকারের পরিচালনাকারী হিসেবে ইয়াহিয়া খানের রাষ্ট্রপতি পদে বহাল এবং জাতীয় পরিষদের দুই পাকিস্তানের সদস্যদের পৃথকভাবে বৈঠকে মিলিত হওয়া।[৭]

১৭ মার্চ[সম্পাদনা]

এদিন শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইয়াহিয়া খানের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা চলে। তবে এই আলোচনা সম্পর্কে সামরিক সরকার বা আওয়ামী লীগ– কোনপক্ষই বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেনি।

এদিন চট্টগ্রামের এক জনসভায় ন্যাপ-এর সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ২৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসের পরিবর্তে সেই দিনটিকে ‘স্বাধীন পূর্ববাংলা দিবস’ হিসেবে পালনের আহবান করেন।

১ মার্চ থেকে চলমান হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য সরকার পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।[৩] তবে সেই তদন্ত কমিটি শেখ মুজিবুর রহমান প্রত্যাখ্যান করেন।[৬৭] একই দিনে ইয়াহিয়া খান খাদিম হুসেন রাজাকে চূড়ান্তভাবে অপারেশন সার্চলাইট বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দেন।[৬৮]

১৮ মার্চ[সম্পাদনা]

এদিন শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইয়াহিয়া খানের মধ্যে কোনো বৈঠক হয়নি। পূর্বোক্ত তদন্ত কমিটিকে আওয়ামী লীগ এদিন প্রত্যাখ্যান করে। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ খন্দকার মোশতাক আহমেদ, আবিদুর রেজা এবং ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীর সমন্বয়ে অন্য একটি ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।[৩]

১৯ মার্চ[সম্পাদনা]

শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইয়াহিয়া খানের মধ্যে চতুর্থ দফায় বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়ছিল, পরদিন শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইয়াহিয়া খান দুজনই তাদের উপদেষ্টাসহ আলোচনা করবেন। তাই এদিন আলাদা-আলাদা ভাবে উপদেষ্টামন্ডলীর মধ্যে বৈঠক হয়। ইয়াহিয়া খানের পক্ষে গুল হাসান খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস. জি. এম. এম পীরজাদা ও আলভিন রবার্ট কর্নেলিয়াস এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে তাজউদ্দিন আহমদ, ড. কামাল হোসেন এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম অংশ নেন। তারা পরদিনের আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বৈঠক করেন কিন্তু আলোচনা চলাকালে রংপুর, সৈয়দপুর এবং জয়দেবপুরে পাকবাহিনী জনতার উপর গুলি চলায়। জয়দেবপুরে বাঙালিরা পাকবাহিনীর প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।[৩] শেখ মুজিবুর রহমান জানান সেনাবাহিনী কর্তৃক গণহত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত না হলে তিনি সংসদে যোগ দিবেন না।[৬৯]

২০ মার্চ[সম্পাদনা]

শেখ মুজিবুর রহমান এদিন আওয়ামী লীগের ৬ জন প্রতিনিধি (শীর্ষস্থানীয় নেতা) সৈয়দ নজরুল ইসলাম, খন্দকার মোশতাক আহমেদ, তাজউদ্দিন আহমদ, ড. কামাল হোসেন, এম. মনসুর আলীএ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। অন্যদিকে ইয়াহিয়া খানের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস. জি. এম. এম পীরজাদা, এ আর কার্নেলিয়াস, ও কর্নেল হাসান। উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে দুবার বৈঠক হয়। বৈঠকের পর শেখ মুজিবুর রহমান আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতির কথা জানান। এছাড়াও তিনি জানান যে তিনি এবং তার উপদেষ্টারা পরদিন রাষ্ট্রপতি ও তার উপদেষ্টাদের সাথে বৈঠক করবেন। এদিন সরকার দেশের সব বেসামরিক জনগণকে তাদের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিকটস্থ থানায় জমা দিতে বলে।[৩]

২১ মার্চ[সম্পাদনা]

এদিন শেখ মুজিবুর রহমান ও ইয়াহিয়া খানের মধ্যকার বৈঠকে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ শেখ মুজিবুর রহমানকে আলোচনায় সহায়তা করেন। আলোচনায় যোগদান করতে এদিন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ১২ জন উপদেষ্টাসহ ঢাকায় আসেন। মওলানা ভাসানী এদিন চট্টগ্রামে সবাইকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আন্দোলনের যোগদানের আহ্বান করেন।[৩]

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এই দিনে পাকিস্তান দিবসকে "প্রতিরোধ দিবস" হিসেবে পালনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন তাদের প্রস্তাবকে সমর্থন প্রদান করে। পাকিস্তান দিবস থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ পশ্চিম পাকিস্তানি পণ্য বর্জনের ডাক দেয়।[৭০]

২২ মার্চ[সম্পাদনা]

মার্শাল ল' প্রত্যাহার না করলে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদান না করার ব্যাপারে শেখ মুজিবুর রহমান অনমনীয় থাকায় এদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পুনরায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন।

শেখ মুজিবুর রহমান, ইয়াহিয়া খানজুলফিকার আলী ভুট্টোর মধ্যে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হয়। এছাড়াও এদিন ইয়াহিয়া খানের চারজন উপদেষ্টা এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির পাঁচ জন আইনবিদের মধ্যে আলোচনা হয়। আইনগত জটিলতার যুক্তি দিয়ে তারা অধিবেশনের আগেই মার্শাল ল' প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা দেয়ার তীব্র বিরোধিতা করে। এছাড়াও এদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য নেতাদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করেন।[৩]

জুলফিকার আলী ভুট্টো আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সামরিক শাসন বাতিল ও গণতান্ত্রিক সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবির বিরোধিতা করে বলেন যে আওয়ামী লীগের দাবি বাস্তবায়ন করলে সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়ে রাষ্ট্রপতির নির্দেশ আইনি বৈধতা হারাবে।[৭১] তবে এদিন একটি লিখিত বিবৃতিতে এ. কে. ব্রোহি জানান যে ক্ষমতা হস্তান্তরে ৪ দফা শর্ত আইনের দিক থেকে সাংঘর্ষিক নয়।[৭]

২৩ মার্চ[সম্পাদনা]

এদিন প্রেসিডেন্ট ভবন, সেনানিবাস, বিমানবন্দর ও গভর্নর হাউস ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র পাকিস্তানের পতাকার বদলে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমান তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে এই পতাকা উত্তোলন করেন। তার পূর্ব-ঘোষিত নির্দেশনা অনুযায়ী এদিন সারাদেশে সাধারণ ছুটি পালিত হয়। মওলানা ভাসানীর ন্যাপ দিনটিকে পাকিস্তান দিবসের পরিবর্তে ‘স্বাধীন পূর্ববঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করে।[৭২]

এদিন ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের কুটনৈতিক অফিসগুলোতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ব্রিটিশ উপহাইকমিশন ও সোভিয়েত কনস্যুলেটে সকালেই স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। পাকিস্তানের তৎকালীন মিত্র চীন, ইন্দোনেশিয়া, ইরাননেপালের উপদূতাবাসে প্রথমে পাকিস্তানের পতাকা তোলা হলেও পরে ছাত্র-জনতা সেগুলো নামিয়ে মানচিত্র-খচিত বাংলাদেশের পতাকা ওড়ায়। তবে ঢাকাস্থ মার্কিন কনস্যুলেটে এদিন কোনেও পতাকাই উত্তোলন করা হয়নি।[৭৩]

দেশের অস্থিতিশীল অবস্থার কারণে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান প্রজাতন্ত্র দিবসের নির্ধারিত ভাষণ বাতিল করে লিখিত বাণী প্রকাশ করেন।

এদিন শেখ মুজিবুর রহমান ও ইয়াহিয়া খানের মধ্যে কোনও আলোচনা না হলেও আওয়ামী লীগ এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের উপদেষ্টাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা এদিন ৬ দফা ভিত্তিক শাসনতন্ত্রের খসড়া প্রস্তাব পেশ করেন। সন্ধ্যায় শাসনতন্ত্রের অর্থনৈতিক বিষয়াবলী নিয়ে পুনরায় আলোচনা হয়।[৩]

জুলফিকার আলী ভুট্টো এদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও তার মুখ্যসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদার সাথে বৈঠক করেন। এছাড়াও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ঢাকায় এসে এদিন ইয়াহিয়া খানের সাথে বৈঠকে মিলিত হন।[৭৩]

পূর্ব পাকিস্তানের একাধিক স্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উস্কানিতে বাঙালি ও মুহাজিরদের মধ্যে দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। দাঙ্গার সময় সেনাবাহিনীর গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।[৭৪]

২৪ মার্চ[সম্পাদনা]

২৩ তারিখে প্রস্তাবিত খসড়া শাসনতন্ত্রের অর্থনৈতিক বিভাগ গুলো নিয়ে এদিন সকাল-সন্ধ্যা দুইবার আওয়ামী লীগ এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এবং তার উপদেষ্টামণ্ডলীর মধ্যে আলোচনা হয়। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা খসড়া শাসনতন্ত্রে ফেডারেশনের বদলে কনফেডারেশন প্রস্তাব করে। কিন্তু এটি আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় সরকার এর প্রতিবাদ করে।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে বৈঠক হয় কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতারা পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করেন।

শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন আরো জোরদার করার পরামর্শ দেন। তাজউদ্দীন আহমদ এদিন অতি শীঘ্রই রাষ্ট্রপতির ঘোষণার দাবি জানান।[৩]

ঢাকার মিরপুরে মুহাজির অধিবাসীরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দাদের সাহায্য নিয়ে সেখানকার বাঙালিদের বাড়ির ছাদ থেকে বাংলাদেশের পতাকা ও কালো পতাকা নামিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয় এবং এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে। চট্টগ্রাম বন্দরের এম ভি সোয়াত থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অস্ত্র খালাস করার সময় পঞ্চাশ হাজার মানুষের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে।[৭৫]

২৫ মার্চ[সম্পাদনা]

এদিন সকালে ইয়াহিয়া খানের সাথে ভুট্টো ৪৫ মিনিট ধরে আলোচনা করেন।[৭৬] আলোচনা শেষে প্রস্তাবিত পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভুট্টো বলেন যে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত স্বায়ত্তশাসন প্রকৃত নয় বরং তা প্রায় সার্বভৌমত্বের কাছাকাছি।[৭৭]

শেখ মুজিবুর রহমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্দেশনাবলীতে থাকা নির্দেশনাগুলোয় পরিবর্তন আনায় ঘোষণা দেন এবং আরো একটি নতুন নির্দেশনা যুক্ত করা হয়।[৭৮] এছাড়া আওয়ামী লীগ একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করে যেখানে দলটি দাবি করে যে তাদের দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে ইয়াহিয়া খান রাজি হয়েছেন এবং তারা আশা করে যে রাষ্ট্রপতি এই বিষয়ে একটি ঘোষণা দিবেন।[৭৯]

সোয়াত জাহাজ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র খালাসের সময় সাধারণ জনতা এতে বাধা দেয়। বাধা এড়াতে পাক বাহিনী গুলি চালায়। এরপরে সারাদেশে চরম বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে কারফিউ বা সান্ধ্য আইন জারি করা হয়।[৩]

জয়দেবপুর, রংপুরসৈয়দপুরে সাধারন জনতার উপর পাকবাহিনী গুলি চালিয়ে ১১০ জন হত্যা করার প্রতিবাদে[৮০] এদিন আওয়ামী লীগ ২৭ মার্চ সারাদেশে হরতাল ডাকে। এদিন খসড়া শাসনতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের কাছে উত্থাপন করার কথা থাকলেও সেই বৈঠক হয়নি। এদিন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান গোপনে বিকাল ৪:৪৫ মিনিটে[৮১] ঢাকা ত্যাগ করেন।[৩]

ইয়াহিয়া খানের পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগের খবর পেয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টো ২৬ মার্চ তারিখে করাচি ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ইয়াহিয়া খানের ঢাকা ত্যাগ করার খবর পাওয়ার এক ঘন্টা পরে নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত রাত ৯টার সভায় শেখ মুজিবুর রহমান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন যে তাকে মেরে ফেলা হতে পারে এবং ইয়াহিয়া খান অস্ত্রের জোরে সমস্যার সমাধান করতে চান। তবে তিনি তখন আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন দেশের সৃষ্টি হবে।[৮২]

সমাপ্তি ও ফলাফল[সম্পাদনা]

২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইটের অংশ হিসেবে ঢাকায় পাকিস্তানি লক্ষ্যবস্তুর অবস্থান।

পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার কারণ দেখিয়ে ও চলমান অসহযোগ আন্দোলন থামাতে ২৫ মার্চের রাত ১১:৩০টা থেকে[৮৩] টিক্কা খান, রাও ফরমান আলীখাদিম হুসেন রাজার[৮৪] নেতৃত্বে মধ্যরাত থেকে পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকার নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। সেই রাতেই (২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে) শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করলে আনুষ্ঠানিকভাবে অসহযোগ আন্দোলন শেষ হয়।[৩][ঘ]

২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বেতারে দেওয়া ভাষণে ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করে দলটিকে নিষিদ্ধ করেন। এর পাশাপাশি সরকার আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্ত করে। শেখ মুজিবুর রহমান ও কামাল হোসেনকে বন্দী করা হলেও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা সরকারের কাছ থেকে পালাতে সক্ষম হন। এমন পরিস্থিতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে শুরু করে[৮৫] এবং এই আন্দোলনের পরিণামে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়।[৮৬]

প্রভাব[সম্পাদনা]

সংবাদপত্র ও বেতারের কল্যাণে অসহযোগ আন্দোলনের খবর দ্রুত পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল।[৮৭] আন্দোলনের সময় পূর্ব পাকিস্তানের সংবাদপত্রগুলোতে আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিবুর রহমান ও ইয়াহিয়া খান সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকাশিত খবরাখবর এটাই প্রমাণ করে যে সেসময় গণমাধ্যমগুলো আন্দোলনের পক্ষে ছিল।[৮৮]

অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের মতে ১ মার্চ তারিখ থেকেই এই আন্দোলনের সূচনা হয় যার কোন নজির পাকিস্তানের ইতিহাসে নেই। পাকিস্তান সেনাবাহিনী আশা করেনি যে পূর্ব পাকিস্তানে এরকম কোন আন্দোলন শুরু হবে।[২৬]

দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় শরাফত হোসেন লিখেছেন যে শেখ মুজিবুর রহমান সুভাষচন্দ্র বসুর ন্যায় সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী হলেও রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে তিনি অসহযোগ নামক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেন। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী পরাধীন ভারতে নিজের অসহযোগ আন্দোলন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করলেও শেখ মুজিবুর রহমান প্রয়োজনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।[৮৯] অসহযোগ আন্দোলনের প্রভাব সম্পর্কে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির নেতা আবদুল ওয়ালী খান বলেন, "গান্ধী এই সাফল্য দেখে অভিভূত হতেন"।[৯০]

রেহমান সোবহান এই আন্দোলন সম্পর্কে বলেন যে এই আন্দোলনের সূচনা থেকেই পূর্ববঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের অস্তিত্ব রাজনৈতিকভাবে বিলীন হয়ে যায়। ২৬ মার্চের পর সরকার তার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালালে সেটাকে এখানকার জনগণ বিদেশীদের হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখেছিল। তার মতে এই আন্দোলন সফলতা পায় এবং পলাশীর যুদ্ধের ২১৩ বছর পর বাংলাদেশ তার শাসন করার ক্ষমতা ফিরে পায়।[১৭]

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান এই আন্দোলনকে একটি অভূতপূর্ব গণআন্দোলন বলেছেন যার জন্মের কারণ হিসেবে তিনি ইয়াহিয়া খানের পাকিস্তান গণপরিষদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক স্থগিত করাকে মনে করেন৷ তার মতে এই আন্দোলনের সময় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ নিজেদেরকে একটি নতুন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে গণ্য করতে শুরু করেছিল। তিনি আরো মনে করেন যে এই আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ ও তাদের স্বাধীন হওয়ার আকাঙ্খা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সাধারণ ইচ্ছা সৃষ্টি করেছিল।[১০]

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জিল্লুর রহমান খানের মতে এই আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান এই অঞ্চলে একটি পৃথক কার্যত সরকার গঠন করে। পাকিস্তানের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে জনসমর্থন আদায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের ফলস্বরূপ বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়।[৯১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের মতে পূর্ব পাকিস্তানের জনতা শেখ মুজিবুর রহমানকে অঞ্চলের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার জন্য চাপ দিলেও তিনি তা করতে চাননি।[২৬]
  2. তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সেগুলো হলো: স্বাধীন বাঙালি রাষ্ট্র "বাংলাদেশ" সৃষ্টি করা, স্বাধীন দেশে বৈষম্য নিরসনে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করা এবং স্বাধীন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।[৩০]
  3. বর্তমানে যথাক্রমে বাংলাদেশ বেতারবাংলাদেশ টেলিভিশন নামে পরিচিত।
  4. জুলফিকার আলী ভুট্টো নিজের আত্মজীবনী দ্য গ্রেট ট্র‍্যাজেডি বইতে দাবি করেন যে ২৫ মার্চ তারিখে অপারেশন সার্চলাইট সম্পন্ন না করা হলে আওয়ামী লীগ ২৬ মার্চে যোহরের পর প্রদেশটির স্বাধীনতা ঘোষণা করতো।[৫৭]

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

  1. হোসেন, সেলিনা (১৬ ডিসেম্বর ২০২০)। "অসহযোগের উত্তাল দিন"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  2. শাহজাহান, মোহাম্মদ (২৮ মার্চ ২০২২)। "বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলন"যুগান্তর। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  3. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন এবং এ.টি.এম যায়েদ হোসেন (২০১২)। "অসহযোগ আন্দোলন ১৯৭১"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  4. "Bangabandhu's clarion call" [বঙ্গবন্ধুর ডাক]। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ মার্চ ২০১০। ২০২০-০৬-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০২০ 
  5. মাসকারেনহাস, পৃ. ৯৮।
  6. মাসকারেনহাস, পৃ. ২০।
  7. সৈয়দ আবুল মকসুদ (৪ মে ২০২১)। "মুক্তিকামী বাঙালির অসহযোগ আন্দোলন"প্রথম আলো। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  8. চট্টোপাধ্যায়, জয়া (২০০৭)। The Spoils of Partition: Bengal and India, 1947–1967 [দেশভাগের লুণ্ঠন: বঙ্গ ও ভারত, ১৯৪৭-১৯৬৭] (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ৪৫। আইএসবিএন 978-1139468305। ২৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০২০ 
  9. বিশ্বাস, পৃ. ৭।
  10. জাহান, রওনক (৯ আগস্ট ২০১৫)। "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান :জীবন ও কর্ম"সমকাল। ২৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০২২ 
  11. সিরাজুল ইসলাম (২০১২)। "নির্বাচন"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  12. শামসুদ্দিন, একেএম (১৭ মার্চ ২০২০)। "বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ইয়াহিয়ার প্রহসনমূলক বৈঠক"যুগান্তর। ৩০ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  13. চৌধুরী, পৃ. ৮।
  14. "অসহযোগ আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা"albd.orgবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১১ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০২০ 
  15. আহমেদ, তোফায়েল (২৬ মার্চ ২০১৯)। "ছয় দফাই ছিল স্বাধীনতার বীজমন্ত্র"যুগান্তর। ৩০ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০২২ 
  16. খান, মাসুদ হাসান (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "ভুট্টো যেভাবে পাকিস্তানে ক্ষমতার ভাগ চেয়েছিলেন"বিবিসি বাংলা। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  17. "অসহযোগের দিনগুলো"আমাদের সময়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  18. আহসান, সৈয়দ বদরুল (২৬ মার্চ ২০২২)। "Countdown to Bangladesh 1971" [বাংলাদেশের কাউন্টডাউন ১৯৭১]। টিবিএসনিউজ.নেট (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  19. ইশতিয়াক, আহমাদ (১ মার্চ ২০২২)। "১ মার্চ ১৯৭১: জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত"দ্য ডেইলি স্টার। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  20. হায়দার, পৃ. ১৫।
  21. হক, সাজিদুল (১ মার্চ ২০২১)। "১ মার্চ ১৯৭১: ইয়াহিয়ার কূটচাল, প্রতিবাদে উত্তাল বাংলা"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  22. ইমাম, পৃ. ১০।
  23. বিশ্বাস, পৃ. ১২।
  24. ইশতিয়াক, আহমাদ (২ মার্চ ২০২১)। "২ মার্চ জাতীয় পতাকা দিবস"দ্য ডেইলি স্টার। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  25. হক, সাজিদুল (২ মার্চ ২০২১)। "২ মার্চ ১৯৭১: মানচিত্র খচিত প্রথম পতাকা উড্ডীন"বিডিনিউজ২৪.কম। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  26. মাসকারেনহাস, পৃ. ৯০।
  27. বিশ্বাস, পৃ. ১৫।
  28. সুকুমার, পৃ. ১১৪।
  29. হক, সাজিদুল (৩ মার্চ ২০২১)। "৩ মার্চ ১৯৭১: এল স্বাধীনতা সংগ্রামের রূপরেখা"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  30. হায়দার, পৃ. ৩০।
  31. আহমেদ, তোফায়েল (৩ মার্চ ২০১৮)। "বঙ্গবন্ধুকে সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা"যুগান্তর। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  32. ইমাম, পৃ. ১৪।
  33. "১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চের ঘটনাপ্রবাহ"বাংলাট্রিবিউন.কমবাংলা ট্রিবিউন। ১২ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০২০ 
  34. "হরতালে দেশ অচল, গুলি-হত্যা, প্রতিবাদ"প্রথম আলো। ৩ মার্চ ২০২১। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  35. বিশ্বাস, পৃ. ১৭।
  36. মাসকারেনহাস, পৃ. ৯১।
  37. বিশ্বাস, পৃ. ১৯।
  38. সুকুমার, পৃ. ১১৭।
  39. হক, সাজিদুল (৪ মার্চ ২০২১)। "৪ মার্চ ১৯৭১: বদলে গেল রেডিও-টিভির নাম"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  40. ইমাম, পৃ. ১৬।
  41. হক, সাজিদুল (৫ মার্চ ২০২১)। "৫ মার্চ ১৯৭১: 'জয় বাংলার' জয়"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  42. হক, সাজিদুল (৬ মার্চ ২০২১)। "০৬ মার্চ ১৯৭১: উত্তপ্ত বাংলা, অধিবেশন ডাকলেন ইয়াহিয়া"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  43. "লাগাতার হরতালের মধ্যে অধিবেশন ডাকলেন ইয়াহিয়া"প্রথম আলো। ৬ মার্চ ২০২১। ২৩ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  44. "বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ"কালের কণ্ঠ। ২৪ নভেম্বর ২০১৭। ২০ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০২০ 
  45. হক, সাজিদুল (৮ মার্চ ২০২১)। "৮ মার্চ ১৯৭১: সর্বাত্মক অসহযোগ পৌঁছায় দ্বিতীয় পর্যায়ে"বিডিনিউজ২৪.কম। ১০ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  46. এ কে এম মাহবুব হাসান (২৭ মার্চ ২০২১)। "পূর্ব বাংলার স্বাধীনতার পথে উত্তাল-তরঙ্গের দিনগুলি- শেষ পর্ব"বাংলানিউজ২৪.কম। ১৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  47. "দিকে দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সমর্থন"যুগান্তর। ৮ মার্চ ২০২২। ২২ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  48. মাসকারেনহাস, পৃ. ৯৯।
  49. বিশ্বাস, পৃ. ৩৩।
  50. চৌধুরী, ইফতেখার উদ্দিন (৩ মার্চ ২০২২)। "জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করাই হয়েছিল শাপে বর"যুগান্তর। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  51. "বেগবান হচ্ছে অসহযোগ আন্দোলন"যুগান্তর। ৯ মার্চ ২০২২। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  52. "স্বাধীনতা মেনে নিন, ইয়াহিয়াকে ভাসানী"প্রথম আলো। ৯ মার্চ ২০২১। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  53. হক, সাজিদুল (৯ মার্চ ২০২১)। "৯ মার্চ ১৯৭১: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে সমর্থন মাওলানা ভাসানীর"বিডিনিউজ২৪.কম। ১০ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  54. বিশ্বাস, পৃ. ৩৪।
  55. হক, সাজিদুল (১০ মার্চ ২০২১)। "১০ মার্চ ১৯৭১: বাংলার ঘরে ঘরে উড্ডীন পতাকা"বিডিনিউজ২৪.কম। ১০ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  56. "দেশজুড়ে কালো পতাকা, কর্মচারীদের কাজ বর্জন"প্রথম আলো। ১০ মার্চ ২০২১। ১১ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  57. শাহেদ, সৈয়দ মোহাম্মদ (১১ মে ২০২১)। "ভুট্টোর বয়ানে অসহযোগ আন্দোলন"প্রথম আলো। ২ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২২ 
  58. হক, সাজিদুল (১১ মার্চ ২০২১)। "১১ মার্চ ১৯৭১: সমঝোতার চেষ্টায় বঙ্গবন্ধুকে ভুট্টোর তারবার্তা"বিডিনিউজ২৪.কম। ১৬ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  59. বিশ্বাস, পৃ. ৩৯।
  60. "আন্দোলনরত জনতাকে তাজউদ্দীনের নির্দেশ"প্রথম আলো। ১১ মার্চ ২০২১। ১১ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  61. হক, সাজিদুল। "১২ মার্চ ১৯৭১: পাকিস্তান দিবসের কর্মসূচি বাতিল ঘোষণা"bdnews24। ২০২১-০৩-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-০৫ 
  62. ডেস্ক, প্রথম আলো। "প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল"চিরন্তন ১৯৭১ | প্রথম আলো। ২০২২-১০-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-০৫ 
  63. হক, সাজিদুল (১৩ মার্চ ২০২১)। "১৩ মার্চ ১৯৭১: পাকিস্তানি শাসকদের নতুন সামরিক ফরমান"বিডিনিউজ২৪.কম। ১৬ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০২২ 
  64. রহমান, আতিউর (১০ মার্চ ২০২১)। "অসহযোগ আন্দোলনের শেষ দিনগুলো ও স্বাধীনতার ঘোষণা"দৈনিক আমাদের সময়। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  65. হক, সাজিদুল (১৫ মার্চ ২০২১)। "১৫ মার্চ ১৯৭১: ঢাকায় এলেন ইয়াহিয়া, ভবনে ভবনে কালো পতাকা"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  66. "ভুট্টোর নতুন দাবি, ইয়াহিয়া ঢাকায়"প্রথম আলো। ১৫ মার্চ ২০২১। ১১ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  67. হায়দার, পৃ. ৭৪।
  68. হায়দার, পৃ. ৭৫।
  69. হায়দার, পৃ. ৭৬।
  70. হক, সাজিদুল (২১ মার্চ ২০২১)। "২১ মার্চ ১৯৭১: নীতির প্রশ্নে আপস নেই, জানিয়ে দিলেন বঙ্গবন্ধু"বিডিনিউজ২৪.কম। ২২ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০২২ 
  71. চৌধুরী, পৃ. ৫১।
  72. হক, সাজিদুল (২৩ মার্চ ২০২১)। "২৩ মার্চ ১৯৭১: 'পাকিস্তান দিবস' মুছে গেল প্রতিরোধের পতাকায়"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৪ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  73. "পাকিস্তান দিবসে ওড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা"প্রথম আলো। ২৩ মার্চ ২০২১। ১১ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  74. সুকুমার, পৃ. ২৬৪-২৬৫।
  75. "২৪ মার্চ, ১৯৭১: আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই"বাংলা ট্রিবিউন। ২৪ মার্চ ২০২১। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০২২ 
  76. হায়দার, পৃ. ৯৪।
  77. হায়দার, পৃ. ৯৫।
  78. চৌধুরী, পৃ. ৫৫।
  79. মাসকারেনহাস, পৃ. ৯৪।
  80. সুকুমার, পৃ. ২৭০।
  81. সুকুমার, পৃ. ২৭৭।
  82. বিশ্বাস, পৃ. ৭৭।
  83. বিশ্বাস, পৃ. ৭৮।
  84. ইসলাম, পৃ. ৫৭।
  85. চৌধুরী, পৃ. ৫৮।
  86. হোসেন, আকবর (৭ ডিসেম্বর ২০২০)। "স্বাধীনতার ৫০ বছর: যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল"বিবিসি বাংলা। ২৬ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  87. মৈত্র, রণেশ (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যম"ভোরের কাগজ। ৫ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২২ 
  88. "স্বাধীনতার ৫০ বছর: একাত্তরের যুদ্ধের খবর পূর্ব পাকিস্তানের সংবাদপত্রে কতটা ছাপা হতো?"বিবিসি বাংলা। ২২ ডিসেম্বর ২০২১। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২২ 
  89. হোসেন, শরাফত (২৮ অক্টোবর ২০২১)। "বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির অনন্য কৌশল: যুগপৎ অসহযোগ আন্দোলন ও সশস্ত্র সংগ্রাম"দৈনিক ইত্তেফাক। ২ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২২ 
  90. হায়দার, পৃ. ৪২।
  91. দাশগুপ্ত, অজয় (১৭ মার্চ ২০২২)। "লক্ষ্য স্বাধীনতা: বঙ্গবন্ধুর অনন্য অসহযোগ আন্দোলন"নিউজবাংলা২৪.কম। ১৭ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২২ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • হায়দার, রশীদ (১৯৮৯) [প্রথম প্রকাশ: ১৯৮৫]। অসহযোগ আন্দোলন: একাত্তরঢাকা: বাংলা একাডেমি 
  • ইসলাম, রফিকুল (২০১৪) [প্রথম প্রকাশ: ১৯৭৪]। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে। ঢাকা: অনন্যা। আইএসবিএন 984-412-033-0 
  • ইমাম, জাহানারা (২০১৯)। একাত্তরের দিনগুলি। ঢাকা: চারুলিপি প্রকাশনী। আইএসবিএন 9789845982306 
  • মাসকারেনহাস, অ্যান্থনি (২০১১)। দ্য রেইপ অব বাংলাদেশ। রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী কর্তৃক অনূদিত। ঢাকা: পপুলার পাবলিশার্স। 
  • বিশ্বাস, অমিত কুমার (২০১৭)। অসহযোগ আন্দোলন ১৯৭১ ক্রমপঞ্জি। ঢাকা: বলাকা প্রকাশন। আইএসবিএন 9789849261216 
  • চৌধুরী, আফসান (২০২১)। ১৯৭১: অসহযোগ আন্দোলন ও প্রতিরোধ। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। আইএসবিএন 9789845101332 
  • বিশ্বাস, সুকুমার (২০২১)। অসহযোগ আন্দোলন '৭১ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। ঢাকা: আগামী প্রকাশনী। আইএসবিএন 9789840419968 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]