আতাউর রহমান খান
আতাউর রহমান খান | |
|---|---|
| বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী | |
| কাজের মেয়াদ ৩০ মার্চ ১৯৮৪ – ৯ জুলাই ১৯৮৬ | |
| রাষ্ট্রপতি | হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ |
| পূর্বসূরী | শাহ আজিজুর রহমান |
| উত্তরসূরী | মিজানুর রহমান চৌধুরী |
| ৫ম পূর্ব পাকিস্তান মূখ্যমন্ত্রী | |
| কাজের মেয়াদ ১ সেপ্টেমবর ১৯৫৬ – মার্চ ১৯৫৮ | |
| গভর্নর | আমির উদ্দিন আহমেদ |
| পূর্বসূরী | আবু হুসাইন সরকার |
| উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত |
| ব্যক্তিগত বিবরণ | |
| জন্ম | ১লা জুলাই, ১৯০৭ ঢাকা জেলা |
| মৃত্যু | ৭ ডিসেম্বর ১৯৯১ (বয়স ৮৪) |
| রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয় লীগ |
| প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
| ধর্ম | ইসলাম |
আতাউর রহমান খান (১ জুলাই ১৯০৭ - ৭ ডিসেম্বর ১৯৯১) ছিলেন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং লেখক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে বাঙালি স্বাধিকার আন্দোলনে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকলেও এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের কারণে তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন। তার পুত্র ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১][২]
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]আতাউর রহমান খান ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৪ সালে ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, ১৯২৭ সালে জগন্নাথ কলেজ বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হতে এফ.এ. এবং ১৯৩০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ. অনার্স পাস করেন। ১৯৩৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এল. ডিগ্রী লাভ করেন।[৩]
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]আতাউর রহমান খান ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ গঠনের সময় তিনি সহ-সভাপতির (১৯৪৯ - ১৯৬৪) দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালের ৩০শে জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ এর অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মনোনয়নে পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং একই বছরে পূর্ববং সরকারের বেসামরিক সরবারহ দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবেও নিযুক্তি লাভ করেন। এরপর যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা (৩০শে মে, ১৯৫৪) ভেঙে দেয়া হলে ১৯৫৫ সালে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্যদের ভোটে গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। সদস্য থাকাকালীন আতাউর রহমান খান বিরোধী দলের নেতা এবং উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে সামরিক শাসন জারির (৬ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬) পূর্ব পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। শেখ মুজিব খানের চেয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মীদের কাছে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন।[৪] তাঁর সরকার ১৯৫৮ সালের মার্চ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ১৯৫৮ সালের ৩১ মার্চ গভর্নর এ কে ফজলুল হক খানকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে আবু হোসেন সরকারকে নিয়োগ দেন।[৫] এক বছরে তিনবার তাঁকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে পুনর্বহাল করা হয়েছিল।[৬] সোহরাওয়ার্দীর কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের বামপন্থী অংশের নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং আওয়ামী লীগের জাতীয়তাবাদী অংশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সমর্থনপুষ্ট অংশ।[৭]
১৯৬২ সালে হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর সাথে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠন করে গণতন্ত্র পুনর্বহালের জন্য আন্দোলন করতে থাকেন। ১৯৬৩ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্থলাভিষিক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।[৮] শেখ মুজিবের সাথে দ্বন্দ্বের জেরে ১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই তার নেতৃত্বে জাতীয় লীগ গঠিত হয়।[৯] আতাউর রহমান খান ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে ঢাকা-৩ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা করে পরাজিত হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে গ্রামের বাড়ি থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন। সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা-১৯ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাকশাল-এ যোগ দিয়ে এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর বাকশালের বিলুপ্তি হলে তিনি জাতীয় লীগ পুনরায় সংগঠিত করেন। ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে (১৮ই ফেব্রুয়ারি) ঢাকা-২১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ - ১৯৮৪ সাত দলীয় জোটের অন্যতম সদস্য হিসেবে এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও পরবর্তীকালে মত পরিবর্তন করে এরশাদ সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন এবং ১৯৮৪ সালের ৩০শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন। এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন ১৯৮৫ সালের ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত।[৩][১০]
রচিত গ্রন্থাবলী
[সম্পাদনা]- ওজারতির দুই বছর (১৯৬৩)
- স্বৈরাচারের দশ বছর (১৯৬৯)
- প্রধান মন্ত্রিত্বের দশ মাস (১৯৮৭)
- অবরুদ্ধ নয় মাস (১৯৯০)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "খান, আতাউর রহমান - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "আজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের মৃত্যুবার্ষিকী"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৯।
- 1 2 "আপন পরিচয়ে আতাউর রহমান খান | কালের কণ্ঠ"। Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ Awana, Ram Singh (১৯৮৮)। Pressure Politics in Congress Party: A Study of the Congress Forum for Socialist Action (ইংরেজি ভাষায়)। Northern Book Centre। পৃ. ২৩৮। আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৮৫১১৯-৪৩-৪।
- ↑ Hashmi, Taj (২২ এপ্রিল ২০২২)। Fifty Years of Bangladesh, 1971-2021: Crises of Culture, Development, Governance, and Identity (ইংরেজি ভাষায়)। Springer Nature। পৃ. ৬৪। আইএসবিএন ৯৭৮-৩-০৩০-৯৭১৫৮-৮।
- ↑ Graça, J. Da; Graça, John Da (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। Heads of State and Government (ইংরেজি ভাষায়)। Springer। পৃ. ১২৩। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৩৪৯-৬৫৭৭১-১।
- ↑ Nabī, Nūruna (২০১০)। Bullets of '71: A Freedom Fighter's Story (ইংরেজি ভাষায়)। AuthorHouse। পৃ. ১২৭। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৫২০-৪৩৭৭-৭।
- ↑ Rahman, Syedur (২৭ এপ্রিল ২০১০)। Historical Dictionary of Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। Scarecrow Press। পৃ. ৩১। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮১০৮-৭৪৫৩-৪।
- ↑ Chakrabarti, Kunal; Chakrabarti, Shubhra (২২ আগস্ট ২০১৩)। Historical Dictionary of the Bengalis (ইংরেজি ভাষায়)। Scarecrow Press। পৃ. ২৫৭। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮১০৮-৮০২৪-৫।
- ↑ "স্মরণ : আতাউর রহমান খান"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "Muhammod Ataur Rahman Khan Books: মুহাম্মদ আতাউর রহমান খান এর বই সমূহ | Rokomari.com"। www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "আতাউর রহমান খান | ataur rahmn khan"। www.prothoma.com। ২৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]| পূর্বসূরী: শাহ আজিজুর রহমান |
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মার্চ ৩০, ১৯৮৪ - জানুয়ারী ১, ১৯৮৫ |
উত্তরসূরী: মিজানুর রহমান চৌধুরী |
- ১৯০৭-এ জন্ম
- ১৯৯১-এ মৃত্যু
- বাংলাদেশী পুরুষ লেখক
- জাতীয় পার্টির রাজনীতিবিদ
- ঢাকা জেলার রাজনীতিবিদ
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িত ব্যক্তি
- প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য
- কৃষক শ্রমিক পার্টির রাজনীতিবিদ
- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক রাজনীতিবিদ
- জগন্নাথ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- এরশাদের মন্ত্রিসভার সদস্য
- বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য
- পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী
- পোগোজ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
- ১৯০৫-এ জন্ম
- পূর্ব পাকিস্তানের ব্যক্তি
- ঢাকা জেলার ব্যক্তি
- পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য ১৯৫৫-১৯৫৮
- ২০শ শতাব্দীর বাঙালি
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ
- পূর্ববঙ্গ আইনসভার সদস্য ১৯৫৪-১৯৫৮
- পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি
