জহুরুল ইসলাম (উদ্যোক্তা)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জহুরুল ইসলাম
জন্ম(১৯২৮-০৮-০১)১ আগস্ট ১৯২৮
মৃত্যু১৯ অক্টোবর ১৯৯৫(1995-10-19) (বয়স ৬৭)
সিঙ্গাপুর সিটি, সিঙ্গাপুর

জহুরুল ইসলাম (১ আগস্ট ১৯২৮ - ১৯ অক্টোবর ১৯৯৫) ছিলেন একজন বাংলাদেশী উদ্যোক্তা।[১] তিনি ছিলেন "ইসলাম গ্রুপ" এর প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

১৯২৮ সালের ১ আগস্ট কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার অন্তর্গত ভাগলপুর গ্রামে তার জন্ম। তিনি সরারচর উচ্চ বিদ্যালয় এবং বাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। কলকাতা যাওয়ার পর রিপন হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন।  উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে প্রবল আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও দারিদ্র্যতার কারণে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি। ১৯৪৮ সালে তিনি তৎকালীন সিএন্ডবি-তে স্বল্প বেতনে কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন।[২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

জহুরুল ইসলাম সিএন্ডবিতে অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেন এবং সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ক্ষুদ্র ঠিকাদারি ব্যবসায় শুরু করেন। ১৯৬৫-এ তিনি ইষ্টার্ন হাউজিং লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। জহুরুল ইসলাম ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে কিশোরগঞ্জে খুলেছিলেন দুই শত লঙ্গরখানা। এসব লঙ্গরখানায় সকল দরিদ্র অভুক্ত মানুষের জন্য ৫ মাস ব্যাপী খাদ্য নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিডিসি)। এ কর্পোরেশন বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠান যা মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্মাণ ব্যবসা শুরু করে। তার কোম্পানী বাংলাদেশ সংসদ ভবনের আঙ্গিনা, বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন, বাংলাদেশ হাইকোর্ট ভবন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বিল্ডিং, এমপি হোস্টেল, এবং বাংলাদেশের প্রধান প্রধান মহাসড়কসমূহ নির্মাণ করে। তিনি পাট ও আসবাবপত্র কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। মধ্যপ্রাচ্যে এই প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য ব্যবসার মধ্যে রয়েছে নতুন প্রযুক্তিতে আবুধাবিতে ৫০০০ বাড়ি নির্মাণ, ইরাকইয়েমেনে উপশহর নির্মাণ ইত্যাদি। এই সকল কাজের মাধ্যমে তিনি দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ।[২] বাংলাদেশের অন্যতম সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি কিংবদন্তি। ১৯৮৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ।[৩]

মৃত্যু এবং উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

১৯৯৫ সালের ১৯শে অক্টোবর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন।[২] তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।[৪] তার একমাত্র পুত্র মঞ্জুরুল ইসলাম বর্তমানে ইসলাম গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। [৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Death Anniversary"The Daily Star। অক্টোবর ১৯, ২০১১। জুলাই ৯, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৭, ২০১৫ 
  2. সৈয়দ মাহমুদুল আজিজ (২০১২)। "ইসলাম, জহুরুল"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  3. Official site of Jahurul Islam Medical College and Hospital 
  4. "Jahurul Islam’s 22nd death anniv today"m.thedailynewnation.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০২-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৬ 
  5. "Mr. Manzurul Islam - LafargeHolcim Bangladesh Limited"LafargeHolcim Bangladesh Limited (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০২-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-২৬