কলিসন্তরণোপনিষদ্‌

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কলিসন্তরণোপনিষদ্‌
কলিসন্তরণোপনিষদে উল্লিখিত ষোড়শোক্ষরী কৃষ্ণমন্ত্র
দেবনাগরীकलिसन्तरण
নামের অর্থকলিযুগের কুপ্রভাব অপসারণ
সম্পর্কিত বেদকৃষ্ণ যজুর্বেদ[১]
শ্লোকসংখ্যা
মূল দর্শনবৈষ্ণব[২]

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে।

কলিসন্তরণোপনিষদ্‌ (সংস্কৃত: कलिसन्तरणोपनिषद्) বা কলি-সন্তরণ উপনিষদ হল হিন্দুধর্মের ১০৮ টি উপনিষদ এর মধ্যে একটি ছোট উপনিষদ।

কৃষ্ণ যজুর্বেদের অন্তর্গত এই উপনিষদে ‘যথা নামে তথা গুণে’ এই উক্তির বর্ণনায় ‘কলিযুগ’ এর দূষ্প্রভাব থেকে ‘তর’ (পার হওয়ার) জন্য অতি সহজ উপায় বর্ণিত হয়েছে। ‘হরি’ নামের মহিমা বর্ননার জন্য একে হরিনামোপনিষদ্ও বলা হয়ে থাকে।নারদ এবং ব্রহ্মার প্রশ্নোত্তর রূপের অবতারণায় এই উপনিষদ্ এর উৎপত্তি। খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে চৈতন্য মহাপ্রভু এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন।[৩] এই ছোটো গ্রন্থটিতে তিনটি মাত্র শ্লোক আছে। এই "হরে কৃষ্ণ" মন্ত্রকে 'মহামন্ত্র’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মন্ত্রে "হরে" দ্বারা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অন্তরঙ্গা শক্তি "শ্রীমতি রাধারানী" কে বুঝানো হয়েছে এবং ৮ বার উচ্চারিত হয়েছে। সেই সঙ্গে ভগবান কৃষ্ণরামের নাম চারবার করে উচ্চারিত হয়েছে। এই গ্রন্থের মতে, এই মন্ত্রটি সজোরে উচ্চারণ করলে কলিযুগের সকল কুপ্রভাব কেটে যায়।

নামকরণ[সম্পাদনা]

হিন্দু বিশ্বতত্ত্ব অনুসারে, চার যুগের মধ্যে বর্তমান যুগটি হল কলি যুগ বা কলি। [৪] ‘সন্তরণ’ শব্দের অর্থ ‘সাঁতার কাটা’।[৫] গ্রন্থটির নামের অর্থ তাই, যে জ্ঞানের দ্বারা বর্তমান যুগকে সাঁতরে পার হওয়া যায়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

এই ছোট উপনিষদে মাত্র ৩ টি মন্ত্র রয়েছে। নারদ এবং ব্রহ্মার প্রশ্নোত্তর রূপের অবতারণায় এই উপনিষদ্ এর উৎপত্তি। যাতে ‘কলিসন্তরণ’ (কলি যুগের দূষ্প্রভাব হতে বাঁচতে) সহজ উপায়ে ভগবান এর স্মরণ নেওয়া হয়েছে। এই উপনিষদের মূল বিষয় হল ব্রহ্ম (আত্মা) এর উপর যে মায়া নামক আবরণ থাকে, যে মায়ার প্রভাবে ব্রহ্ম সাক্ষাৎকার এর পথে বাঁধা হয়, সেখানে ১৬ নামের মন্ত্র উক্ত মায়াকে দূর করতে সক্ষম। যে মায়া দূর হলে সাধক নিজেকে সেই ব্রহ্ম স্বরূপ জানতে পারে। যেমন মেঘাচ্ছন্ন ‘সূর্য’ বায়ু দ্বারা মেঘ অপসারিত হলে স্বমহিমায় প্রকাশিত হয়ে প্রকট হয়। উপনিষদের শেষে নাম জপের মহিমার সুন্দর বিবরণ দেওয়া হয়েছে যার সাথেই উপনিষদের পরিসমাপ্তিও হয়েছে।[৩]

মুক্তিকোপনিষদ্‌ গ্রন্থে ১০৮টি উপনিষদের তালিকায় এই উপনিষদ্‌টির ক্রমসংখ্যা ১০৩।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Deussen, Bedekar এবং Palsule 1997, পৃ. 556–57।
  2. Aiyar, K. Narayanasvami। "Kali Santarana Upanishad"। Vedanta Spiritual Library। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৬ 
  3. Bryant 2013, পৃ. 42-43।
  4. kali ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে, Sanskrit English Dictionary, Koeln University, Germany (2011)
  5. santarana[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], Sanskrit English Dictionary, Koeln University, Germany (2011)

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]