সরকারি তোলারাম কলেজ
নীতিবাক্য | জ্ঞানই আলো, সত্যই লক্ষ্য |
---|---|
ধরন | সরকারি |
স্থাপিত | ১৯৩৭ |
প্রতিষ্ঠাতা | খগেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী |
অধ্যক্ষ | অধ্যাপক বিমল চন্দ্র দাস |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ২০০+ |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ১০০+ |
শিক্ষার্থী | ২৫,০০০ |
স্নাতক | বিএ, বিবিএ, বিএসসি, বিএসএস |
স্নাতকোত্তর | এমএ, এমবিএ, এমএসসি, এমএসএস |
ঠিকানা | আল্লামা ইকবাল রোড, নারায়ণগঞ্জ , , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে |
সংক্ষিপ্ত নাম | সতোক |
অধিভুক্তি | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ওয়েবসাইট | www.tolaramcollege.edu.bd |
সরকারি তোলারাম কলেজ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান; যেটি ১৯৩৭ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত। কলেজটিতে কলা ভবন (শহিদ জননী জাহানারা ইমাম ভবন), রসায়ন ভবন, বিজ্ঞান ভবন, মূল ভবন, একাডেমিক ভবন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাডেমিক কাম এক্সামিনেশন ভবন এবং নবমির্মিত ব্যবসায় শিক্ষা ভবন আছে। কলেজটিতে ১৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
১৯৩৭ সালে নারায়ণগঞ্জের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ খগেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী তোলারাম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে তিনি মাত্র পাঁচ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস শুরু করেছিলেন। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য খগেন্দ্র নাথ বৃহত্তর ময়মনসিংহের বর্তমান টাংগাইল জেলার মির্জাপুরের দানবীর ‘রনদা প্রসাদ সাহার’ দারস্থ হ । বিদ্যা-সম্পর্কিত পরিকল্পনার কথা শুনে তিনি রণদা প্রসাদ তাঁকে পঁচিশ হাজার টাকা দান করেন। এরপর নারায়ণগঞ্জের পাট ব্যবসায়ী তোলারাম বসরাজের ছেলে ‘মদন লাল সারোগী’ ও কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য পঁচিশ হাজার টাকা দান করেন। এই অর্থ খগেন্দ্র নাথ গড়ে তোলেন ‘নারায়াণগঞ্জ উইমেন্স কলেজ’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বালিকা কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়।
যুদ্ধোত্তর কালে খগেন্দ্র নাথ আবার কলেজ চালু করতে উদ্যোগ নেন। এই কাজে তিনি শিখানুরাগী ও দাতা পাট ব্যবসায়ী ‘তোলারাম বসরাজ’কে সাথে পান। তোলারাম তিনি কলেজ নির্মাণ করার জন্য এক লক্ষ টাকা দান করেন। দাতার নামানুসারে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ব্যায়ামাগারে শুরু হয় ‘তোলারাম কলেজ’। ১৯৫৬ সালে ‘আল্লামা ইকবাল সড়কে’ জমি ক্রয় করে এক তলা ভবন নির্মাণের পর পাঠদান শুরু হয়। ভবনটি উদ্বোধন করেন পুর্ববঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ‘আবু হোসেন সরকার’। কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা এবং অধ্যক্ষ ছিলেন খগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। বর্তমান কলেজের মূল বহুতল ভবনটি তৈরি হয় ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে। আর পি সাহার (রণদাপ্রসাদ সাহা) দেড় লাখ টাকার অনুদানে তৈরি হয় তোলারাম কলেজের বিজ্ঞান গবেষণাগার এবং ক্রয় করা হয় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি।
তোলারাম কলেজ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার বাইরে সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন লাভ করে। ষাটের দশক থেকেই চাকুরীজীবি ও কর্মজিবি শিক্ষার্থীদের জন্য তোলারাম কলেজ এ নৈশ বিভাগ চালু ছিল। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে নৈশ বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম থেকেই এই কলেজের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফলও ছিল সন্তোষজনক
১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে ‘তোলারাম কলেজের’ শিক্ষার্থীরা পাক-ভারত সফর করেছিল। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘ডায়মন্ড সিনেমা হলে’ মঞ্চস্থ করেছিল ‘শাহজাহান’ এবং ‘মহুয়া’ নাটক। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের ‘ছাত্রসংসদ’ দেয়ালিকা এবং বার্ষিক ম্যাগাজিন প্রকাশ করে সুনাম অর্জন করেছিল। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে এই কলেজে আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হন তোলারাম কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র আব্দুল আওয়াল।
১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ১ মার্চ এই কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়। তোলারাম কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং সাবেক সংসদ সদস্য জনাব এ. কে. এম শামীম ওসমানের প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় ১৯৯৬-৯৭ সেশনে সরকারি তোলারাম কলেজে ১২টি বিষয়ে অনার্স এবং ০৫টি বিষয়ে এম.এ কোর্স খোলা হয়। তাঁর ঘোষণায় কলেজের কলা ভবনের নামকরণ করা হয় ”শহিদ জননী জাহানারা ইমাম ভবন”। বর্তমানে কলেজটিতে এইচ এস সি, বি এ (পাস), ১৪টি বিষয়ে অনার্স, ০৫টি বিষয়ে এম,এ প্রথমপর্ব এবং ১৪টি বিষয়ে এম, এ শেষপর্ব চালু রয়েছে। বর্তমানে ‘সরকারি তোলারাম কলেজ’- এ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ১৮০০০ জন।
সরকারি তোলারাম কলেজের’ সহশিক্ষা কার্যক্রমও রয়েছে। এই কলেজে ইনডোর গেইম, আউটডোর গেইম, বার্ষিক মিলাদ, বার্ষিক বনভোজন এবং শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়। কলেজের রোভার স্কাউট, বিএনসিসি এবং গার্লসিং রোভাররা বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে। ভাল ফলাফলের কারণে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে সরকারি তোলারাম কলেজ জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজরূপে পুরস্কৃত হয়।
বিভাগ সমূহ[সম্পাদনা]
এই কলেজে মোট ১৪টি বিভাগ রয়েছে;[২] এগুলো হলঃ
- বাংলা বিভাগ,
- ইংরেজি বিভাগ,
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ,
- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ,
- দর্শন বিভাগ,
- অর্থনীতি বিভাগ,
- সমাজকর্ম বিভাগ,
- হিসাববিজ্ঞান বিভাগ,
- ব্যবস্থাপনা বিভাগ,
- পদার্থবিদ্যা বিভাগ,
- রসায়ন বিভাগ,
- গণিত বিভাগ,
- প্রাণিবিদ্যা বিভাগ এবং
- উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "About Govt Tolaram College"। সরকারি তোলারাম কলেজ। ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Department"। সরকারি তোলারাম কলেজ। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০১৫।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- সরকারি তোলারাম কলেজ - নিজস্ব ওয়েবসাইট।