রংপুর সরকারি কলেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রংপুর সরকারি কলেজ, রংপুর
প্রধান ফটকের ব্যানার
প্রাক্তন নাম
কৈলাশ রঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়
ধরনসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
স্থাপিত১৯৬৩
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩ - বর্তমান)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৩-১৯৯২)
অধ্যক্ষমোশারফ হোসেন[১]
উপাধ্যক্ষফিরোজুর রহমান
অবস্থান
রাধাবল্লভ, রংপুর
,
শিক্ষাঙ্গনশহুরে (৫.২৬ একর)
ওয়েবসাইটwww.rgc.gov.bd
মানচিত্র

রংপুর সরকারি কলেজ, রংপুর বাংলাদেশের রংপুর শহরের একটি সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।[২] এটি ১৯৬৩ সালে ২৫ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[৩] যা শহরের কেন্দ্র থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে রাদাবল্লভে অবস্থিত ।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ভাষা-আন্দোলনের ফলে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার যে জাগরণ ঘটে তারই প্রতিক্রিয়া সাধারণ মানুষের মধ্যে শিক্ষার প্রতি অনুরাগ বৃদ্ধি পায়। ফলে সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন স্তরে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলেও এর ব্যতিক্রম ঘটে নি। এ অঞ্চলে পূর্ব থেকে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ছিল, সে প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চমাধ্যামিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। তাই নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সময়ের দাবীতে পরিণত হয়। সময়ের সেই দাবীকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েই প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমদ (পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি) ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং প্রফেসর ফুলে হোসেন, ডিসি ও এম কার্ণি, এডিসি আব্দুস সাত্তার, জেলা শিক্ষা অফিসার তাহেমেদুর রহমান (টি রহমান), এ্যাডভোকেট আবুল খাঁ, আমিন হোসেন, আবু সালেক, আবুল হোসেন, মঈন উদ্দিন সরকার এমপি ও জেলার অনেক বিত্তবান ব্যক্তির সহযোগিতায় কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তাছাড়া এলাকার অনেকেই অর্থ ও জমি দান করে এগিয়ে আসেন। অতঃপর ১৯৬৩ সালের ২৫ জুলাই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রফেসর এমাজউদ্দিনকে অধ্যক্ষ ও প্রফেসর ফুলে হোসেনকে উপাধ্যক্ষ করে নৈশ্য কলেজ হিসেবে কৈলাশ রঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয় এবং ডে কলেজ হিসেবে রাম বাবুর জমিদার বাড়িতে (কালিধাম, বর্তমানে এটি মুসলিম উদ্দীন ছাত্রাবাস নামে পরিচিত) কলেজটির যাত্রা শুরু।[৪]

একাডেমিক কার্যক্রম[সম্পাদনা]

রংপুর সরকারি কলেজ

কলেজটির যাত্রা লগ্ন থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। প্রথম দিকে আই.এ. ক্লাশ খোলার অনুমতি দিলেও কলেজটির শিক্ষার মানের উপর ভিত্তি করে ১৯৬৫ সালে বি.এ. ক্লাশ খোলার অনুমতি দেয়। ১৯৬৭ সালে কলেজটিকে নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়। ডে কলেজ হিসেবে চালু থাকা কালিধামের জমিদার বাড়িটি ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯৭০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বি.এস-সি. খোলার অনুমতি দেয়। ১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বর কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। এই কলেজটি সরকারি হয়ে গেলে পূর্বের তুলনায় ছাত্র-ছাত্রী প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। ১৯৯৩ সালে কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স কোর্স খোলার অনুমতি দেয়।[৫]

বর্তমানে কলেজটিতে এইচএসসি, ডিগ্রি পাস কোর্স এবং ১২ টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। এ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রী (পাস) এবং বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে।[৬]

অবকাঠামো[সম্পাদনা]

বর্তমানে রংপুর সরকারি কলেজের নিজস্ব জমির পরিমাণ ৫.২৬ একর। এটি রংপুর স্টেডিয়ামের পাশে অবস্থিত।

সহঃকার্যক্রম[সম্পাদনা]

ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা[সম্পাদনা]

  • উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী: ২৪০০ জন (একাদশ-১২০০ + দ্বাদশ-১২০০)
  • ডিগ্রী (পাস) শ্রেণী: ৫৬০০ জন (১ম বর্ষ, ২য় বর্ষ ও ৩য় বর্ষ)
  • অনার্স শ্রেণী: ৩৩৫০ জন
  • মোট ছাত্র-ছাত্রী : ১৪৪০০ জন, নিয়মিত: ১১৩৫০ এবং অনিয়মিত- ৩০৫০

অর্জন[সম্পাদনা]

  • উত্তরবঙ্গের শীর্ষ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
  • ২০২০-২০২২ টানা ৩ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বোর্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফলধারী
  • ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বোর্ডের মধ্যে যথাক্রমে ৪র্থ, ৩য়, ৫ম, ২য়, ৪র্থ, ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করে।
  • ২০০১ - সালে আন্তঃজেলা বিতর্কে অংশগ্রহণ করে রংপুর সরকারি কলেজ রানার আপ এবং ২০০৫ সালে আন্তঃজেলা বিতর্কে অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
  • ২০০৬, ২০০৭ - "ভাষা প্রতিযোগ ২০০৬' ও "ভাষা প্রতিযোগ ২০০৭' এ অংশ গ্রহণ করে পরপর দুবার সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
  • ২০০৭ - সলে টিআইবি ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কর্তৃক আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আমাদের বিতর্ক দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
  • ২০০৯ - এই কলেজের চারজন শিক্ষার্থী রানার-আপ হয় এবং আলীফ আল সেফায়েত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
  • ২০১০ - সালের ভাষা প্রতিযোগ প্রতিযোগিতায় রংপুর সরকারি কলেজ আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়নসহ ৯টি পুরস্কার লাভ করে এবং জাতীয় পর্যায়ে ১ম ও দ্বিতীয় রানার-আপসহ ৫টি পুরস্কার লাভ করে।
  • ২০১১ - টিইবি আয়োজিত আন্তজেলা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রংপুর সরকারি কলেজ চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
  • ২০১১ - সালের বিভাগীয় পর্যায়ের ভাষা প্রতিযোগিতায় রংপুর সরকারি কলেজ চ্যাম্পিয়ানসহ ৮টি পুরস্কার লাভ করে এবং চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় সারা বাংলাদেশে দুইটি বিশেষ পুরস্কারসহ দ্বিতীয স্থান অধিকার করে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Principal"Rangpur Government College (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০২-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২৩ 
  2. "রংপুর সরকারি কলেজ, রংপুর"। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৬ 
  3. "Home"Rangpur Government College (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৫-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৬ 
  4. "National University :: College Details"www.nubd.info। ২০২৩-১২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-২৭ 
  5. "রংপুর সরকারি কলেজ । - CampusLive24.com"। ২১ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৬ 
  6. "দেশের সেরা ৫টি কলেজ নির্বাচিত"NTV Online। ১৪ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৬ 
  7. "রংপুর সরকারি কলেজে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন - উত্তর বাংলা ডট কম"উত্তর বাংলা ডট কম। ৭ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]