রাজবাড়ী সরকারি কলেজ

স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৫′৫১″ উত্তর ৮৯°৩৮′২৮″ পূর্ব / ২৩.৭৬৪২° উত্তর ৮৯.৬৪১০° পূর্ব / 23.7642; 89.6410
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাজবাড়ী সরকারি কলেজ
রাজবাড়ী সরকারি কলেজের লোগো
নীতিবাক্যজ্ঞানই শক্তি
ধরনসরকারি
স্থাপিত২৩ জুন ১৯৬১ (1961-06-23)
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
অধ্যক্ষপ্রফেসর হোসনেয়ারা খাতুন[১]
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
১৬
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ
৬৫+
শিক্ষার্থী১০,০০০+
ঠিকানা
কলেজ পাড়া, বিনোদপুর রাজবাড়ি সদর উপজেলা
,
রাজবাড়ী
,
৭৭০০
,
বাংলাদেশ

২৩°৪৫′৫১″ উত্তর ৮৯°৩৮′২৮″ পূর্ব / ২৩.৭৬৪২° উত্তর ৮৯.৬৪১০° পূর্ব / 23.7642; 89.6410
শিক্ষাঙ্গনশহুরে-গ্রামীণ, ৫.৭ হেক্টর (১৪ একর)
ক্রীড়াক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন
ওয়েবসাইটrajbarigovtcollege.edu.bd
মানচিত্র

রাজবাড়ী সরকারি কলেজ বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৬১ সালের ২৩শে জুন কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ১৪ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এ কলেজটি। ১৯৮০ সালে এটি সরকারি করা হয়। বর্তমানে কলেজটির শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

তৎকালীন রাজবাড়ী জেলা অবহেলিত অনুন্নত এলাকা বলে চিহ্নিত ছিল। এলাকার বহু মেধাবী ছাত্র পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ, কুষ্টিয়া কলেজ, মাগুরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ-সহ দেশের দূর-দুরান্তের কলেজে পড়তে যেত। বিষয়টি এলাকার মানুষের মনে তীব্রভাবে নাড়া দেয়। পরে ডা. একেএম আসজাদ, ডা, এসএম ইয়াহিয়া, ফজলুল হক মুক্তার, অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম মৃধা, অ্যাডভোকেট আব্দুল জলিল মিয়া, ডা. জলিলুর রহমান, মরগুব আহম্মেদ, ডা. আজাহার উদ্দিন, আঃ হানিফ মোল্লা (গোয়ালন্দ) সহ এলাকার অনেক গণ্যমান্য ও বিত্তশালী ব্যক্তি বিশেষভাবে স্থানীয় পর্যায়ে কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

এরমধ্যে রাজবাড়ীতে মহকুমা প্রশাসক নিযুক্ত হয়ে আসেন কাজী আজহার আলী। কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনি বিপুল উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসেন। তখন কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ, সম্পত্তি, ছাত্র থেকে শুরু করে অনুমোদন পাওয়া ছিল এক দুরুহ ব্যাপার। কাজী আজহার আলী স্থানীয় বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের নিয়ে এগিয়ে আসেন কলেজ প্রতিষ্ঠাকল্পে। এ উদ্দেশ্যে কমিটি গঠিত হয়। কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন কাজী আজহার আলী, সম্পাদক মামুনুর রশিদ (সেকেন্ড অফিসার), যুগ্ম সম্পাদক ডা. একেএম আসজাদ, সদস্য ছিলেন কাজী হেদায়েত হোসেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল জলিল মিয়া, অ্যাডভোকেট আবু হেনা, ফজলুল মুক্তার।

রাজবাড়ী স্টেশন থেকে আধা কিলোমিটার পশ্চিমে ব্যাপ্টিস্ট মিশনের শত বৎসরের ঐতিহ্যবাহী দোতালা বিল্ডিং ৪৭ শতাংশ জমি-সহ ব্যাপ্টিস্ট মিশনের পক্ষে শিমশন চৌধুরী আতাইকোলা, গভর্নিং বোর্ডের পক্ষে রেজিস্ট্রি করে দেন। পরবর্তীতে আশে পাশের অনেক জমি ক্রয় ও দানের মাধ্যম বর্তমান কলেজের জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ একরের উপর। ১৯৬১ সালে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আযম খান। ১৯৬১ সালের ২৩ জুন কলেজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক কাজী আজাহার আলী। প্রথম বৎসরে বর্তমান লাইব্রেরির সামনের চৌ-চালা টিনের ঘরটি ক্লাশ রুম হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং বর্তমান অধ্যক্ষের কক্ষ এবং অফিস ভবনটিই অধ্যক্ষের কক্ষ এবং অফিস কক্ষ ছিল।

১৯৬১ সালে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ খোলা হয় এবং ১৯৬২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ খোলা হয়। ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত ক্লাস ভবন নির্মাণ না হওয়ায় এবং ছাত্র-ছাত্রীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৬৩ সালে বর্তমান জেলা স্কুলে (তখন গোয়লন্দ মডেল হাই স্কুল) ক্লাস নেওয়া হত। কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নে বর্তমান সজ্জনকান্দা (কাজী বাড়ির পার্শে)। অধ্যাক্ষের জন্য বাসা হিসেবে প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত হয়। এরমধ্যে অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়ে আসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ওসমান গণি। ১৯৬২ সালে কলেজের সম্মুখে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এতে ভূমিকা পালন করেন চিত্তরঞ্জন গুহ, নজিবর রহমান, লতিফ বিশ্বাস, আমজাদ হোসেন-সহ রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অনেক ছাত্র-ছাত্রী। উক্ত শহীদ মিনার ছিল অতীতে রাজবাড়ীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।[২]

শিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]

কলজে শিক্ষক সংখ্যা ৬৫ জন। ৩টি বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক সহ ১৬টি বিষয়ে অনার্স এবং ৬টি বিষয়ে মাস্টার্স খোলা রয়েছে।

কলেজটিতে রয়েছে গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান ল্যাবরেটরি, ৪৮টি কম্পিউটারের ২টি আইটি ল্যাবরেটরি, ১০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ। কলেজের ৪ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে একটি পুকুর এবং অন্য পাশে খেলার মাঠ ও নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবাস। এছাড়া রয়েছে একটি প্রশাসনিক ভবন, দুইটি পাঁচতলা একাডেমিক ভবন, একটি বিজ্ঞান ভবন, একটি বাণিজ্য ভবন, একটি গ্রন্থাগার ও মিলনায়তন ভবন, একটি শিক্ষকদের ডরমিটরি, একটি মসজিদ, একটি শহিদ মিনার, একটি মুক্ত মঞ্চ, তিনটি ছাত্রাবাস ও দুটি টিনের ভবন (পুরাতন ছাত্রসংসদ ভবন, পুরুষ ও মহিলা কমন রুম)। নির্মাণাধীন রয়েছে একটি নতুন প্রশাসনিক ভবন এবং একটি আধুনিক ক্যন্টিন।[২]

ছাত্রাবাস[সম্পাদনা]

কলেজে ছাত্রাবাস কলেজ প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সময়ে তৈরি করা হয়। রাজবাড়ী সরকারি কলেজে চারটি ছাত্রাবাস রয়েছে। দুটি ছাত্রবাস ছাত্রদের জন্য, একটি শিক্ষকদের এবং অন্যটি ছাত্রীদের জন্য। ছাত্রদের হলটি কলেজের পশ্চাৎ অংশে অবস্থিত।ইহা ইংরেজি "L" আকৃতির এবং দুটি অংশে বিভক্ত। এর পূর্বাংশে হিন্দু ছাত্রদের জন্য (বিদ্যাসাগর ছাত্রাবাস হল) এবং সাথে শিক্ষক ছাত্রাবাস ও পশ্চিমাংশে মুসলিম ছাত্রদের জন্য (মীর মশারফ হোসেন হল) এবং বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবাস নামে আরেকটি ছাত্রাবাস রয়েছে। [৩] হিন্দু ছাত্রাবাসে ৬০ জন বসবাসের ব্যবস্থা আছে এবং মুসলিম ছাত্রাবাসে ১২০ জন বসবাসের ব্যবস্থা আছে। ছাত্রাবাসে দুইজন বাবুর্চি, একজন মেট, একজন দিবাকালীন প্রহরী ও একজন নৈশকালীন প্রহরী নিযুক্ত আছে। মেয়েদের ছাত্রীনিবাসটি (বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রীনিবাস) সজ্জনকান্দা অবস্থিত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Welcome Rajbari College"www.nubd.info 
  2. "Rajbari Govt Collage Website" 
  3. "রাজবাড়ী সরকারী কলেজে বঙ্গবন্ধুর নামে ছাত্রাবাসের উদ্বোধন"www.ekushey-tv.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-২৬