উত্তর গোলার্ধে ফেব্রুয়ারি হচ্ছে শীতের তৃতীয় মাস আর দক্ষিণ গোলার্ধে এটি অনেকটা উত্তর গোলার্ধে আগস্ট মাসের সমতুল্য (অর্থাৎ গ্রীষ্মের তৃতীয় মাস)
সাধারণ বছরে ফেব্রুয়ারি, মার্চ আর নভেম্বর মাসের প্রথম তারিখ একই বার থাকে। সেসময় এই মাস আর জানুয়ারির শেষ দিন এক বার পড়ে। অধিবর্ষের সময় ফেব্রুয়ারি আর আগস্ট মাস একই বার দিয়ে শুরু হয়। এই মাসের একটি মজার দিক হচ্ছে অধিবর্ষ হোক আর নাই হোক, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন যে বার থাকে, অক্টোবর মাসের শেষ দিন সেই একই বার থাকে।
রোমান ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি ঠাঁই পেয়েছিল ফেব্রুয়ারিয়াস নামে। এই ফেব্রুয়ারিয়াস শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ ফেব্রুয়াম থেকে, যার অর্থ বিশুদ্ধতা।
জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাস দুটি রোমান বর্ষপঞ্জিতে সবার শেষে যুক্ত হয়েছিলো। জানা যায় ৭১৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নিউমা পম্পিলিয়াস এই মাস দুটি যুক্ত করেন। সেসময় ফেব্রুয়ারি ছিল বছরের শেষ মাস। পরবর্তীতে ডেসিমভার্সের সময়কালে (প্রায় ৪৫০ খ্রি.পূ.) এটিকে বছরের দ্বিতীয় মাস করা হয় এবং আজ পর্যন্ত এই মাসটি সেই স্থানেই রয়ে গেছে। শুরুর দিকে ফেব্রুয়ারির দিনসংখ্যায় নানা পরিবর্তন হয়েছে। কখনো এর দিনসংখ্যা ধরা হয়েছে ২৩ দিন, কখনো ২৪ দিন আবার কখনোবা ২৭ দিন। বেশ পরে যখন জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে সংশোধনী আনা হয় এবং নিয়মিতভাবে অধিবর্ষ গণনা শুরু হয় তখন ফেব্রুয়ারি তার পরিচিত ২৮ দিনের রূপটি লাভ করে।
প্রাচীন ইংরেজিতে ফেব্রুয়ারিকে ডাকা হত সোলমোনাথ (কাদার মাস) বা কেলমোনাথ (বাঁধাকপির মাস)।
ফিনিশ ভাষায় এমাসকে বলা হত হেলমিক্যু বা মুক্তার মাস। শীতের দেশে এমাসে দিনে বরফ গলে পাতার ডগায় বিন্দু বিন্দু শিশির জমে। রাতের বেলা এই শিশির যখন ঠাণ্ডায় শক্ত হয়ে যায়, তখন তা দেখতে মুক্তার মতো লাগে, এজন্যই এমন নাম।
পোলিশ ভাষায় এই মাসের নাম ছিল ল্যুটি বা বরফের মাস।
ক্রোয়েশিয়ায় এই মাসকে বলা হত ভেলজ্যাকা। এই শব্দটির মানে জানা যায় না। সম্ভবত এটি বৃদ্ধি থেকে উদ্ভূত। সেক্ষেত্রে ব্যাখ্যা হতে পারে প্রতি ৪ বছর পর পর ফেব্রুয়ারির দিন সংখ্যা এক বেড়ে যায় বলে হয়ত একে ভেলজ্যাকা বলা হত।