উত্তরপ্রদেশ
উত্তরপ্রদেশ उत्तर प्रदेश ااتر پردیش | |
---|---|
রাজ্য | |
ভারতের মানচিত্রে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অবস্থান (লাল রঙে) | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°৫১′ উত্তর ৮০°৫৫′ পূর্ব / ২৬.৮৫° উত্তর ৮০.৯১° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
অঞ্চল | অবধ, রোহেলখণ্ড, ব্রজ, বুন্দেলখণ্ড, দোয়াব, পূর্বাঞ্চল, রোহিলখণ্ড |
প্রতিষ্ঠা | আধুনিক: ১৮০৫ (সমর্পিত ও বিজিত প্রদেশসমূহ হিসেবে) |
ইতিহাস | সারসংক্ষেপ
|
রাজধানী | লখনউ |
জেলা | ৭৫টি[১] |
সরকার | |
• শাসক | উত্তরপ্রদেশ সরকার |
• রাজ্যপাল | রাম নাইক[২] |
• মুখমন্ত্রী | যোগী আদিত্যনাথ (বিজেপি) |
• বিধানসভা |
|
• হাইকোর্ট | এলাহাবাদ হাইকোর্ট |
আয়তন | |
• মোট | ২,৪৩,২৮৬ বর্গকিমি (৯৩,৯৩৩ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ৪র্থ |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ১৯,৯৫,৮১,৪৭৭ |
• ক্রম | ১ম |
• জনঘনত্ব | ৮২০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | উত্তরপ্রদেশী |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
UN/LOCODE | IN-UP |
যানবাহন নিবন্ধন | UP 01—XX |
মানব উন্নয়ন সূচক | ০.৩৮০ (low) |
মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী স্থান | ১৮শ (২০০৭-০৮) |
সাক্ষরতা |
|
সরকারি ভাষা | |
ওয়েবসাইট | UP.gov.in |
উত্তরপ্রদেশ (হিন্দি: उत्तर प्रदेश, উর্দু: ااتر پردیش; /ˌʊtər
উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের পশ্চিম দিকে ভারতের রাজস্থান রাজ্য; উত্তরপশ্চিমে হরিয়ানা ও দিল্লি; উত্তর দিকে উত্তরাখণ্ড রাজ্য ও নেপাল রাষ্ট্র; পূর্ব দিকে বিহার রাজ্য; দক্ষিণপূর্বে ঝাড়খণ্ড রাজ্য; দক্ষিণ দিকে গাজিয়াবাদ এবং দক্ষিণপশ্চিমে মধ্যপ্রদেশ রাজ্য। উত্তরপ্রদেশের আয়তন ২,৪৩,২৯০ বর্গকিলোমিটার (৯৩,৯৩৩ মা২); যা ভারতের মোট ভূখণ্ডের ৬.৮৮%। এটি আয়তনের দিক থেকে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রাজ্য। রাজ্যের জনসংখ্যা ২০ কোটিরও বেশি। জনসংখ্যার দিক থেকে উত্তরপ্রদেশ ভারতের বৃহত্তম রাজ্য এবং বিশ্বের বৃহত্তম প্রাদেশিক রাজনৈতিক বিভাগ। উত্তরপ্রদেশ ৭৫টি জেলায় বিভক্ত। হিন্দি প্রত্যেকটি জেলারই প্রধান ভাষা তথা রাজ্যের সরকারি ভাষা। উত্তরপ্রদেশ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি। এই রাজ্যের মোট আভ্যন্তরিণ উৎপাদন ₹ ৯,৭৬৩ বিলিয়ন (ইউএস$ ১১৯.৩৪ বিলিয়ন)। কৃষি ও চাকুরিক্ষেত্র এই রাজ্যের অর্থনীতির বৃহত্তম অংশ। চাকুরিক্ষেত্রের মধ্যে পর্যটন, হোটেল ব্যবসা, রিয়েল এস্টেট, ফাইনানসিওর ও ফাইনান্সিয়াল কনসাল্টেন্সি অন্তর্ভুক্ত।
প্রাচীন ও মধ্যযুগে উত্তরপ্রদেশ ভূখণ্ড ছিল কয়েকটি শক্তিশালী সাম্রাজ্যের কেন্দ্র। এর মধ্যে হর্যঙ্ক, নন্দ, মৌর্য, শুঙ্গ, কুষাণ, গুপ্ত, গুর্জর, রাষ্ট্রকূট, পাল ও মুঘল সাম্রাজ্য প্রধান। রাজ্যের দুই প্রধান নদী গঙ্গা ও যমুনা প্রয়াগরাজে এসে মিশেছে এবং তারপর গঙ্গা নামে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে। এই রাজ্যে অনেক ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র আছে। আগ্রা, বারাণসী, পিপরাওয়াল, কানপুর, বালিয়া, শ্রাবস্তী, কুশীনগর, লখনউ, ঝাঁসি, এলাহাবাদ, বুদাউন, মিরাট, মথুরা ও জৌনপুর উল্লেখযোগ্য।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রাগৈতিহাসিক যুগ
[সম্পাদনা]প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে জানা গিয়েছে, আধুনিক উত্তরপ্রদেশ ভূখণ্ডে ৮৫ থেকে ৭৩ হাজার বছর আগে[৪] প্রস্তরযুগেহোমো সেপিয়েন্স শিকারী-সংগ্রহকারীরা বাস করত।[৫][৬][৭] প্রতাপগড়ের কাছে ২১ থেকে ৩১ হাজার বছরের পুরনো মধ্য ও প্রাচীন প্রস্তরযুগের[৮] এবং খ্রিস্টপূর্ব ১০৫৫০-৯৫৫০ মেসোলিথিক (পুরনো ও নতুন প্রস্তরযুগের মধ্যবর্তী সময়ের)/মাইক্রোলিথিক যুগের জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ অব্দের গোড়ার দিকে এই অঞ্চলের গ্রামগুলিতে ভেড়া, ছাগল প্রভৃতি গবাদি পশুপালন ও কৃষিকার্য শুরু হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ থেকে ১৫০০০ অব্দে সিন্ধু সভ্যতা ও হরপ্পা সংস্কৃতি থেকে লৌহযুগীয় বৈদিক সভ্যতার সূচনাকালে পশুপালন ও কৃষিকাজ আরও বিকাশ লাভ করে।[৯][১০][১১]
প্রাচীন যুগ
[সম্পাদনা]ষোড়শ মহাজনপদের অন্যতম কোশল আধুনিক উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের সীমার মধ্যে অবস্থিত ছিল।[১৫] হিন্দু কিংবদন্তি অনুসারে, রামায়ণের নায়ক তথা বিষ্ণুর অবতার রামচন্দ্র ছিলেন কোশলের রাজধানী অযোধ্যার রাজা।[১৬] অপর এক হিন্দু কিংবদন্তি অনুসারে, মহাভারতের অন্যতম প্রধান চরিত্র তথা বিষ্ণুর অপর অবতার (অন্য মতে, স্বয়ং ভগবান) কৃষ্ণ উত্তরপ্রদেশের মথুরা শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[১৫] মহাভারতে উল্লিখিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ উত্তরপ্রদেশের উচ্চ দোয়াব ও দিল্লি অঞ্চলের (যা কুরু মহাজনপদের অংশ ছিল) মধ্যবর্তী এলাকায় সংঘটিত হয়। এর পর পাণ্ডব যুধিষ্ঠির এখানকার রাজা হন। খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ অব্দে উত্তরপশ্চিম ভারতের লৌহযুগের সূচনালগ্নে কুরু অঞ্চলে কালো ও লাল মৃৎপাত্র ও চিত্রিত ধূসর মৃৎপাত্র সংস্কৃতির অস্তিত্ব ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।[১৫]
দক্ষিণ ভারত থেকে উত্তর ভারতে আগত অধিকাংশ অণুপ্রবেশকারীরা আধুনিক উত্তরাখণ্ডের গাঙ্গেয় সমভূমির মাধ্যমে অণুপ্রবেশ করেছিল। ভারতের প্রত্যেক প্রধান সাম্রাজ্যের কাছে শক্তিমত্তা ও সাম্রাজ্যের স্থায়িত্বের জন্য এই অঞ্চলের উপর আধিপত্য বিস্তারের প্রয়োজন ছিল। এই সাম্রাজ্যগুলির মধ্যে মৌর্য (খ্রিস্টপূর্ব ৩২০-২০০ অব্দ), কুষাণ (১০০-২৫০ খ্রিষ্টাব্দ), গুপ্ত (৩৫০-৬০০ খ্রিষ্টাব্দ) ও গুর্জর-প্রতিহার সাম্রাজ্য (৬৫০-১০৩৬ খ্রিষ্টাব্দ) উল্লেখযোগ্য।[১৭] হুন আক্রমণের পর গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চলে কনৌজের রাজশক্তির উত্থান ঘটে।[১৮] হর্ষবর্ধনের (৫৯০-৬৪৭ খ্রিষ্টাব্দ) রাজত্বকালে কনৌজ সাম্রাজ্যের সর্বাধিক বিস্তার ঘটেছিল।[১৮] তার রাজত্বকালে কনৌজ সাম্রাজ্য উত্তরে পাঞ্জাব, পূর্বে বঙ্গদেশ, পশ্চিমে গুজরাত ও দক্ষিণে ওড়িশা পর্যন্ত প্রসার লাভ করে।[১৫] নর্মদা নদীর উত্তরে মধ্য ভারতের কিছু অঞ্চল সহ সমগ্র সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি ছিল এই সাম্রাজ্যের অধিভুক্ত।[১৯] ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসী অনেক গোষ্ঠী নিজেদের কনৌজের আদি বাসিন্দা বলে দাবি করেন।[২০] হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর অল্পকাল পরেই তার সাম্রাজ্য অনেকগুলি ছোটো ছোটো রাজ্যে ভেঙে পড়ে। এই সময় গুর্জর-প্রতিহার সম্রাটরা এই রাজ্যগুলিকে দখল করে নেন। এই অঞ্চলের অধিকার নিয়ে গুর্জর-প্রতিহারদের সঙ্গে বঙ্গদেশের পাল সম্রাটদের বিরোধ বেধেছিল।[১৯] খ্রিস্টীয় ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যে অনেকবার দক্ষিণ ভারতের রাষ্ট্রকূট সম্রাটরা কনৌজ অভিযান চালিয়েছিলেন।[২১][২২]
মধ্যযুগ
[সম্পাদনা]১৬শ শতাব্দীতে বাবর নামে তৈমুরের তিমুরিদ বংশ ও চেঙ্গিস খানের বংশের এক উত্তরসূরি ফেরগনা উপত্যকা (অধুনা উজবেকিস্তান) থেকে খাইবার গিরিপথ পার হয়ে ভারতে এসে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই সাম্রাজ্য অধুনা ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে প্রসারিত ছিল।[২৩] মুঘলরা ছিলেন পারস্যীকৃত মধ্য এশীয় তুর্কি (এঁদের বংশে যথেষ্ট মোঙ্গল রক্তের সংমিশ্রণ ঘটে)। মুঘল যুগে অধুনা উত্তরপ্রদেশ ভূখণ্ড ছিল উক্ত সাম্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র।[২০] মুঘল সম্রাট বাবর ও হুমায়ুন দিল্লি থেকে রাজ্যশাসন করতেন।[২৪][২৫] ১৫৪০ খ্রিষ্টাব্দে শের শাহ সুরি নামে জনৈক আফগান মুঘল সম্রাট হুমায়ুনকে পরাজিত করে উত্তরপ্রদেশ অঞ্চলের শাসনভার তার থেকে কেড়ে নেন।[২৬] শের শাহ ও তার পুত্র ইসলাম শাহ তাদের রাজধানী গোয়ালিয়র থেকে উত্তরপ্রদেশ শাসন করতেন।[২৭] ইসলাম শাহ সুরির মৃত্যুর পর তার প্রধানমন্ত্রী হেমু উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রকৃত শাসকে পরিণত হন। দিল্লির পুরনো কেল্লায় তার রাজ্যাভিষেকের সময় তাকে ‘হেমচন্দ্র বিক্রমাদিত্য’ (‘বিক্রমাদিত্য’ বৈদিক যুগ থেকে হিন্দু শাসকদের উপাধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে) উপাধি দেওয়া হয়। পানিপতের দ্বিতীয় যুদ্ধে হেমু আকবরের কাছে পরাজিত ও নিহত হন। এরপর উত্তরপ্রদেশে আকবরের শাসনে আবার মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।[২৮] আকবর আগ্রা ও ফতেপুর সিক্রি থেকে রাজ্যশাসন করতেন।[২৯] ১৮শ শতাব্দীতে মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর সেই স্থানে মারাঠা সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটে। এই শতাব্দীর মধ্যভাগে মারাঠা সেনাবাহিনী উত্তরপ্রদেশ অভিযান করে। এর ফলে রোহিল রাজবংশ রোহিলখণ্ডের অধিকার হারান। এই অঞ্চল মারাঠা শাসক রঘুনাথ রাও ও মলহ রাও হোলকরের শাসনাধীনে আসে। ১৭৮৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নাজিবুদ্দৌলার পৌত্র গুলাম কাদির গ্রেফতার হলে রোহিল ও মারাঠাদের যুদ্ধ শেষ হয়। মারাঠা সেনাপতি মহাদাজি সিন্ধিয়া গুলাম কাদিরকে পরাজিত করেছিলেন। ১৮০৩ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধে মারাঠারা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হলে উত্তরপ্রদেশের অধিকাংশ অঞ্চল ব্রিটিশদের অধিকারে চলে আসে।[৩০]
ব্রিটিশ শাসন
[সম্পাদনা]১৮শ শতাব্দীর মধ্যভাগে বাংলায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সূত্রপাত হয়। এরপর উত্তর ভারতে বেশ কয়েকটি যুদ্ধের পর উত্তরপ্রদেশ ভূখণ্ড ব্রিটিশদের অধীনে আসে।[৩১] আজমির ও জয়পুর এই উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং এর নামকরণ করা হয় (আগ্রার) ‘উত্তরপশ্চিম প্রদেশ’। পরবর্তীকালে উত্তরপ্রদেশ ভূখণ্ডে ব্রিটিশ ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম প্রদেশটি গঠিত হলেও সেই সময় ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যে আগ্রার উত্তরপশ্চিম প্রদেশ ছিল ক্ষুদ্রতম প্রদেশ।[৩২] এই প্রদেশের রাজধানী দুবার আগ্রা ও এলাহাবাদের মধ্যে পরিবর্তিত হয়।[৩৩]
উত্তর ভারতে ব্রিটিশ শাসনে অসন্তুষ্ট হয়ে একাধিক বিদ্রোহ দানা বাঁধে। মিরাট ক্যান্টনমেন্টে নিযুক্ত বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেপাই মঙ্গল পাণ্ডেকে এই বিদ্রোহের সূচনা ঘটানোর কৃতিত্ব দেওয়া হয়।[৩৪] পরবর্তীকালে এই বিদ্রোহ সিপাহি বিদ্রোহ নামে পরিচিত হয়। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর ব্রিটিশরা সর্বাধিক বিদ্রোহী-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিকে বিভাজিত করে একটি প্রশাসনিক সীমানা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে। এই সময় আগ্রার উত্তরপশ্চিম প্রদেশ থেকে দিল্লিকে বিচ্ছিন্ন করে পাঞ্জাবের সঙ্গে এবং আজমির-মারওয়ারকে রাজপুতানার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। অন্যদিকে অবধকে এই প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। নতুন রাজ্যের নামকরণ হয় ‘আগ্রা ও অবধের উত্তরপশ্চিম প্রদেশ’। ১৯০২ সালে এই রাজ্যের নাম বদলে রাখা হয় ‘আগ্রা ও অবধের যুক্তপ্রদেশ’।[৩৫] সাধারণত এটিকে ‘যুক্তপ্রদেশ’ নামেই ডাকা হত।[৩৬][৩৭]
১৯২০ সালে এই প্রদেশের রাজধানী এলাহাবাদ থেকে লখনউতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। হাইকোর্টটি এলাহাবাদেই থেকে যায়, তবে লখনউতে তার একটি শাখা স্থাপিত হয়। এলাহাবাদ এখনও উত্তরপ্রদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্র। কারণ, অনেক প্রশাসনিক সদর এই শহরে অবস্থিত।[৩৮] ভারতীয় রাজনীতিতে উত্তরপ্রদেশ কেন্দ্রীয় ভূমিকা গ্রহণ করতে শুরু করে এই সময় থেকেই। এই রাজ্য ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ও দারুল উলুম দেওবন্দের মতো কিছু আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই রাজ্যে অবস্থিত। উত্তরপ্রদেশের যে সব বাসিন্দারা স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন চন্দ্রশেখর আজাদ, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা মতিলাল নেহেরু, জওহরলাল নেহেরু, মদনমোহন মালব্য ও গোবিন্দবল্লভ পন্ত প্রমুখ। ১৯৩৬ সালের ১১ এপ্রিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের লখনউ অধিবেশনে সারা ভারত কৃষক সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট জাতীয়তাবাদী স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী ছিলেন এই সভার প্রথম প্রেসিডেন্ট।[৩৯] কৃষকসভার উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের দীর্ঘকালীন দুরবস্থার জন্য জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধে তাদের সংগঠিত করে তোলা। কৃষকসভার আন্দোলনের ফলে ভারতে চাষিরা জমিদারদে অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করে।[৪০] ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় বালিয়া জেলা ঔপনিবেশিক শাসন উৎখাত করে একটি স্বাধীন প্রশাসন গঠন করতে সক্ষম হয়েছিল। এই প্রশাসন গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন চিত্তু পাণ্ডে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদানের জন্য বালিয়াকে বলা হয় ‘বাঘী বালিয়া’ (বিদ্রোহী বালিয়া)।[৪১]
স্বাধীনোত্তর যুগ
[সম্পাদনা]ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৫০ সালে যুক্তপ্রদেশের নাম পালটে ‘উত্তরপ্রদেশ’ রাখা হয়।[৪২] এই রাজ্য থেকে সাত জন ব্যক্তি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ভারতীয় সংসদের লোকসভায় এই রাজ্যের প্রতিনিধিসংখ্যা সর্বাধিক। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব সত্ত্বেও, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রশাসন পরিচালনার কাজে এই রাজ্যের গতি শ্লথ। সংগঠিত অপরাধের আধিক্য ও ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি এই রাজ্যকে ভারতের পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম করে তুলেছে। জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাও এই রাজ্যে বেশি ঘটে।[৪৩] ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে সন্ত্রাসী হিন্দু আন্দোলনকারীরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয়। এরপরই সারা ভারতে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।[৪৪] ১৯৯৯ সালে উত্তরপ্রদেশের উত্তরাংশের জেলাগুলি নিয়ে উত্তরাখণ্ড রাজ্য গঠিত হয়।[৪৫]
ভূগোল
[সম্পাদনা]উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের আয়তন ২,৪৩,২৯০ বর্গকিলোমিটার (৯৩,৯৩৫ মা২)। আয়তনের দিক থেকে এটি ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রাজ্য। এই রাজ্যটি ভারতের উত্তরাংশে নেপাল রাষ্ট্রের সীমানা বরাবর অবস্থিত। রাজ্যের উত্তর সীমায় হিমালয় পর্বতমালা অবস্থিত।[৪৬] কিন্তু রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চলই সমভূমিতে অবস্থিত।[৪৭] রাজ্যের উত্তরাংশে বৃহত্তর গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চল অবস্থিত। গঙ্গা-যমুনা দোয়াব, ঘাঘরা সমভূমি, গাঙ্গেয় সমভূমি ও তরাই এই সমভূমির অন্তর্গত।[৪৮] রাজ্যের দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বতমালা ও মালভূমি অঞ্চল অবস্থিত।[৪৯] পার্বত্য অঞ্চল, সমভূমি, উপত্যকা ও মালভূমি অঞ্চলের ভৌগোলিক প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হয়। ভাভর অঞ্চল থেকে তরাই অঞ্চলে বড়ো বড়ো ঘাস জন্মায়। এই অঞ্চল গভীর বনাঞ্চল ও জলাভূমিতে আকীর্ণ।[৫০] ভাভর অঞ্চলের শ্লথগতির নদীগুলি এই অঞ্চলে যথেষ্ট গভীর। ভাভরের পাশেই সংকীর্ণ আকারে তরাই ভূখণ্ড অবস্থিত। সমগ্র পলিগঠিত সমভূমি অঞ্চলটি তিন ভাগে বিভক্ত।[৫০] প্রথমটি হল পূর্ব উত্তরপ্রদেশ। ১৪টি জেলা নিয়ে গঠিত এই অঞ্চলে খরা ও বন্যা ঘনঘন দেখা দেয়। তাই এটিকে অভাবগ্রস্থ এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এই জেলাগুলিতে জনঘনত্ব সর্বাধিক। তাই মাথাপিছু জমির পরিমাণ এখানে বেশ কম। অন্যদুটি অঞ্চল মধ্য ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ তুলনামূলকভাবে উন্নত সেচব্যবস্থা সমৃদ্ধ অঞ্চল।[৫০] এই অঞ্চলে জল জমার সমস্যা খুব বেশি।[৫০] অন্যদিকে এই অঞ্চলটি তুলনামূলকভাবে শুষ্ক। উত্তরপ্রদেশে ৩২টি বড়ো ও ছোটো নদী আছে। এগুলির মধ্যে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী, সরযূ, বেতোয়া ও ঘর্ঘরা প্রধান এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র নদী বলে স্বীকৃত।[৫১]
উত্তরপ্রদেশে ভূমিকর্ষণ প্রথা যথেষ্ট প্রচলিত।[৫২] উপত্যকা অঞ্চলগুলিতে উর্বর ও সমৃদ্ধ মাটি পাওয়া যায়। ধাপযুক্ত পাহাড়ি ঢালগুলিতে ভূমিকর্ষণ করা হয়, কিন্তু সেচের সুবিধে পাওয়া যায় না।[৫৩] হিমালয়ের দক্ষিণ পাদদেশে শিবালিক পর্বতমালায় ‘ভাধর’ নামে বড়ো বড়ো পাথরের স্তর দেখা যায়।[৫৪] রাজ্যের দৈর্ঘ্য বরাবর পার্বত্য ও সমতল এলাকার মধ্যবর্তী অঞ্চলটি তরাই ও ভাভর নামে পরিচিত। এখানে গভীর বনাঞ্চল দেখা যায়। এই বনাঞ্চল ভেদ করে অনেক ছোটো ছোটো নদী প্রবাহিত। বর্ষাকালে এই নদীগুলি খরস্রোতা হয়ে ওঠে।[৫৫]
জলবায়ু
[সম্পাদনা]উত্তরপ্রদেশের জলবায়ু আর্দ্র উপক্রান্তীয় ধরনের। এই রাজ্যে চারটি ঋতু দেখা যায়।[৫৬] জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে শীতের পর মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল এবং জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল দেখা যায়।[৫৭] গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে। এই সময় অঞ্চল ভেদে এই রাজ্যের তাপমাত্রা ০° সেন্টিগ্রেট থেকে ৫০° সেন্টিগ্রেটের মধ্যে থাকে।[৫৮] গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলটি অর্ধশুষ্ক থেকে অর্ধ-আর্দ্র থাকে।[৫৭] রাজ্যের দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৫০ মিলিমিটার। অন্যদিকে পূর্ব ও উত্তরপূর্ব অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০০ মিলিমিটার।[৫৯] মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখা এই রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের জন্য দায়ী। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এই রাজ্যে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত ঘটায়। যদিও পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ও সামান্য বৃষ্টিপাতের জন্য উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুও কিছুটা দায়ী।[৫৬][৬০]
উত্তরপ্রদেশ-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২৯.৯ (৮৫.৮) |
৩১.৯ (৮৯.৪) |
৩৫.৪ (৯৫.৭) |
৩৭.৭ (৯৯.৯) |
৩৬.৯ (৯৮.৪) |
৩১.৭ (৮৯.১) |
২৮.৪ (৮৩.১) |
২৭.৪ (৮১.৩) |
২৯.৪ (৮৪.৯) |
৩১.৪ (৮৮.৫) |
৩০.১ (৮৬.২) |
২৮.৯ (৮৪.০) |
৩১.৬ (৮৮.৯) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ১১.০ (৫১.৮) |
১২.১ (৫৩.৮) |
১৫.৮ (৬০.৪) |
১৯.৯ (৬৭.৮) |
২২.৪ (৭২.৩) |
২২.৯ (৭৩.২) |
২২.২ (৭২.০) |
২১.৬ (৭০.৯) |
২০.৮ (৬৯.৪) |
১৮.৫ (৬৫.৩) |
১৪.৪ (৫৭.৯) |
১১.৫ (৫২.৭) |
১৭.৮ (৬৪.০) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ০ (০) |
৩ (০.১) |
২ (০.১) |
১১ (০.৪) |
৪০ (১.৬) |
১৩৮ (৫.৪) |
১৬৩ (৬.৪) |
১২৯ (৫.১) |
১৫৫ (৬.১) |
৬৮ (২.৭) |
২৮ (১.১) |
৪ (০.২) |
৭৪১ (২৯.২) |
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড় | ০.১ | ০.৩ | ০.৩ | ১.১ | ৩.৩ | ১০.৯ | ১৭.০ | ১৬.২ | ১০.৯ | ৫.০ | ২.৪ | ০.৩ | ৬৭.৮ |
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় | ২৯১.৪ | ২৮২.৮ | ৩০০.৭ | ৩০৩.০ | ৩১৬.২ | ১৮৬.০ | ১২০.৯ | ১১১.৬ | ১৭৭.০ | ২৪৮.৪৪ | ২৭০.০ | ২৮৮.৩ | ২,৮৯৬.৩৪ |
উৎস: [৬১] |
উত্তরপ্রদেশের গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (শহর অনুযায়ী) | ||||||||||||
শহর | জানুয়ারি | ফেব্রুয়ারি | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | অগস্ট | সেপ্টেম্বর | অক্টোবর | নভেম্বর | ডিসেম্বর |
লখনউ[৬২] | 73/44 | 79/49 | 90/58 | 101/69 | 105/76 | 102/81 | 92/79 | 90/78 | 92/76 | 91/66 | 79/53 | 75/45 |
কানপুর[৬৩] | 91/71 | 92/72 | 92/75 | 93/78 | 92/78 | 85/74 | 84/73 | 84/72 | 88/78 | 88/74 | 89/74 | 90/71 |
গাজিয়াবাদ[৬৪] | 70/45 | 73/50 | 84/59 | 97/70 | 102/79 | 100/82 | 93/81 | 91/79 | 93/75 | 91/66 | 82/55 | 73/46 |
এলাহাবাদ[৬৫] | 74/47 | 81/52 | 92/62 | 103/73 | 108/80 | 104/83 | 93/79 | 91/78 | 92/77 | 92/69 | 86/57 | 77/49 |
আগ্রা[৬৬] | 72/45 | 75/51 | 90/60 | 101/72 | 107/80 | 105/84 | 95/79 | 91/78 | 93/76 | 93/67 | 85/55 | 75/47 |
বারাণসী[৬৭] | 74/47 | 80/52 | 92/61 | 102/72 | 106/80 | 102/83 | 92/79 | 91/794 | 91/77 | 90/69 | 85/57 | 76/49 |
গোরখপুর[৬৮] | 74/49 | 80/53 | 91/72 | 103/77 | 99/79 | 92/78 | 91/78 | 91/76 | 91/70 | 85/59 | 76/51 | 76/49 |
বরেইলি[৬৯] | 71/47 | 77/57 | 88/60 | 99/70 | 105/77 | 102/81 | 93/79 | 91/78 | 92/76 | 90/67 | 83/56 | 74/48 |
উত্তরপ্রদেশে বৃষ্টির পরিমাণ সাধারণত বছরে ১৭০ মিলিমিটার (পার্বত্য অঞ্চলে) থেকে ৮৪ মিলিমিটারের (পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ) মধ্যে থাকে।[৫৬] বর্ষার চার মাসে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে বন্যা এবং কম বৃষ্টির ফলে খরা দেখা দেয়। উত্তরপ্রদেশে খরা ও বন্যা প্রায়ই দেখা যায়। বিন্ধ্য পর্বতমালা ও মালভূমির জলবায়ু উপক্রান্তীয় প্রকৃতির। এখানে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০০ থেকে ১২০০ মিলিমিটার। এই বৃষ্টিরও অধিকাংশ বর্ষাকালে হয়।[৫৭] মার্চ থেকে জুন গ্রীষ্মকাল। এই সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৮ °সে (৮৬ থেকে ১০০ °ফা)-এর মধ্যে থাকে। আপেক্ষিক আদ্রতা সাধারণত কম (২০%-এর কাছাঁকাছি) থাকে। সারা বছরই ধুলোর ঝড় উঠতে দেখা যায়। বর্ষাকালে লু নামে গরম হাওয়া সারা উত্তরপ্রদেশে প্রবাহিত হয়।[৫৬]
জীবজগৎ
[সম্পাদনা]রাষ্ট্রীয় পশু | বারশিঙ্গা | |
রাষ্ট্রীয় পাখি | দেশি সারস | |
রাষ্ট্রীয় বৃক্ষ | অশোক | |
রাষ্ট্রীয় ফুল | পলাশ | |
রাষ্ট্রীয় নৃত্য | কথক | |
রাষ্ট্রীয় খেলা | ফিল্ড হকি |
উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের জৈবসম্পদ বৈচিত্র্যপূর্ণ।[৭১] ২০১১ সালের হিসেব অনুসারে, এই রাজ্যের বনাঞ্চলের মোট আয়তন ১৬,৫৮৩ কিমি২ (৬,৪০৩ মা২)। যা রাজ্যের মোট ভৌগোলিক আয়তনের ৬.৮৮%।[৭২] ব্যাপক হারে বনাঞ্চল ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও এই রাজ্যেও প্রাণীজ ও উদ্ভিজ্জ্জ সম্পদের বৈচিত্র্য নষ্ট হয়নি। উদ্ভিদ, বড়ো ও ছোটো স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ ও কীটপতঙ্গের বিভিন্ন প্রজাতির দেখা মেলে এই রাজ্যের নাতিশীতোষ্ণ উচ্চ পার্বত্য বনভূমিগুলিতে। বনাঞ্চলে[৭৩] এবং বাগিচাগুলিতে ভেষজ উদ্ভিদও পাওয়া যায়। তরাই-ডুয়ার্স সাভানা ও তৃণভূমি অঞ্চলে পশুপালন করা হয়। উচ্চ গাঙ্গেয় সমভূমির নদীতটগুলিতে পর্ণমোচী বৃক্ষ দেখা যায়। সমভূমি অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও পশুপাখির দেখা পাওয়া যায়। গঙ্গা ও তার শাখানদীগুলি বিভিন্ন ধরনের ছোটো ও বড়ো সরীসৃপ, উভচর, মিষ্টি-জলের মাছ ও কাঁকড়ার বাসথান। বাবুল জাতীয় শ্রাবল্যান্ড বৃক্ষ ও চিঙ্কারা প্রভৃতি পশুর দেখা মেলে আর্দ্র বিন্ধ্য অঞ্চলে।[৭৪][৭৫]
ক্রান্তীয় শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য দেখা যায় রাজ্যের সমভূমি অঞ্চলে। যেহেতু এই রাজ্যের মাটিতে যথেষ্ট সূর্যালোক পৌঁছায়, সেহেতু এখানে ঝোপ ও তৃণভূমিও অনেক দেখা যায়।[৭৬] এই সব বনাঞ্চলের একটি বড়ো অংশ কৃষিকাজের জন্য কেটে ফেলা হয়েছে। ক্রান্তীয় কাঁটাবন রাজ্যের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে দেখা যায়। এই বনে প্রধানত বাবুল গাছ দেখা যায়।[৭৭] যেসব অঞ্চলের বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম (৫০-৭০ মিলিমিটার গড়), বার্ষিক তাপমাত্রার গড় ২৫৬-২৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট এবং আর্দ্রতা কম, সেখানেই এই বনাঞ্চল দেখা যায়।
উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও দেখা যায়।[৭৮] সাধারণ পাখির মধ্যে পায়রা, ময়ূর, বনমোরগ, ব্ল্যাক প্যাট্রিজ, পাতি চড়ুই, সংবার্ড, ব্লু জে, প্যারাকিট, কোয়েল, বুলবুল, নাকতা হাঁস, মাছরাঙ্গা, কাঠঠোকরা, কাদাখোঁচা ও টিয়াপাখি উল্লেখযোগ্য। রাজ্যের পাখিরালয়গুলি হল বাখিরা অভয়ারণ্য, জাতীয় চম্বল অভয়ারণ্য, চন্দ্রপ্রভা অভয়ারণ্য, হস্তিনাপুর অভয়ারণ্য, কাইমুর অভয়ারণ্য ও ওখলা অভয়ারণ্য।[৭৯]
রাজ্যের অন্যান্য প্রাণীসম্পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গিরগিটি, কোবরা, ক্রেইট ও ঘড়িয়াল। বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে মহাশোল ও ট্রাউট উল্লেখযোগ্য। উত্তরপ্রদেশের কিছু বন্যপ্রাণী প্রজাতি সম্প্রতি বিলুপ্ত ঘোষিত হয়েছে। অন্যদিকে গাঙ্গেয় সমভূমির সিংহ ও তরাই অঞ্চলের গণ্ডার বিপন্ন প্রজাতি ঘোষিত হয়েছে।[৮০] উত্তরপ্রদেশ সরকার আইন করে কিছু প্রাণী রক্ষার চেষ্টা করলেও অনেক প্রজাতিই বর্তমানে বিপন্ন।[৮১]
বিভাগ, জেলা ও শহর
[সম্পাদনা]উত্তরপ্রদেশ রাজ্যটি ১৮টি বিভাগের অন্তর্গত ৭৫টি জেলায় বিভক্ত |[৮২] উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনিক বিভাগগুলি হল :
|
|
নিচে সারা ভারতে স্থান অনুসারে উত্তরপ্রদেশের প্রথম পাঁচটি জনবহুল জেলার তালিকা দেওয়া হল।[৮৩]
স্থান | জেলা | জনসংখ্যা | বৃদ্ধির হার | লিঙ্গানুপাত | সাক্ষরতা | প্রতি কিলোমিটারে জনঘনত্ব |
---|---|---|---|---|---|---|
১৩ | এলাহাবাদ | ৫,৯৫৯,৭৮৯ | ২০.৭৪ | ৯০২ | ৭৪.৪১ | ১০৮৭ |
২৬ | মোরাদাবাদ | ৪,৭৭৩,১৩৮ | ২৫.২৫ | ৯০৩ | ৫৮.৬৭ | ১২৮৪ |
২৭ | গাজিয়াবাদ | ৪,৬৮১,৫২৫ | ৪১.৬৬ | ৮৭৮ | ৮৫.০০ | ৩৯৬৭ |
৩০ | আজমগড় | ৪,৬১৬,৫০৯ | ১৭.১৭ | ১০১৭ | ৭২.৬৯ | ১১৩৯ |
৩১ | লখনউ | ৪,৫৮৯,৩৩৮ | ১৪.৪৪ | ৯৬০ | ৭৯.০৪ | ৬৩৬ |
৩২ | কানপুর নগর | ৪,৫৮১,২৬৮ | ১৯.৪৯ | ৯৫৮ | ৮২.৫৫ | ১৭৫৩ |
প্রত্যেকটি জেলা একজন জেলা কালেক্টর বা জেলাশাসক কর্তৃকশাসিত হয়। ইনি ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস বা উত্তরপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নিযুক্ত হন।[৮৪] জেলাগুলি একাধিক মহকুমায় বিভক্ত। মহকুমাগুলি শাসন করেন মহকুমা শাসক। মহকুমাগুলি আবার সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে বিভক্ত। ব্লকগুলি আবার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভাপুরসভায় বিভক্ত।[৮৫] উত্তরপ্রদেশে্র ব্লকগুলি সেন্সাস টাউন নামে শহরপুঞ্জ ও গ্রাম পঞ্চায়েত নামে গ্রামপুঞ্জ নিয়ে গঠিত।[৮৪]
ভারতের সর্বাধিক সংখ্যক মহানগর উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত।[৮৬][৮৭] এই রাজ্যের শহরাঞ্চলীয় জনসংখ্যা ৪ কোটি ৪৪ লক্ষ; যা ভারতের মোট শহরাঞ্চলীয় জনসংখ্যার ১.৮% এবং ভারতে দ্বিতীয় সর্বাধিক।[৮৮] ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, এই রাজ্যে ১৫টি মহানগর রয়েছে, যেগুলির জনসংখ্যা ৫ লক্ষের বেশি।[৮৯] রাজ্যে ১৪টি পৌরসংস্থা রয়েছে। নইডা একটি বিশেষ বিধিবদ্ধ প্রশাসনিক সংস্থা দ্বারা শাসিত হয়।[৯০]
২০১১ সালে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের আঠাশ, সাত, তেইশ ও সতেরোটি জেলা নিয়ে যথাক্রমে পূর্বাঞ্চল, বুন্দেলখণ্ড, অবধপ্রদেশ ও পশ্চিমপ্রদেশে রাজ্যটিকে চার ভাগে বিভক্ত করা হবে। কিন্তু ২০১২ সালের নির্বাচনে মুলায়ম সিং যাদব নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টির সরকার গঠিত হলে এই প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়।[৯১]
জনপরিসংখ্যান
[সম্পাদনা]জনসংখ্যা বৃদ্ধি | |||
---|---|---|---|
আদমশুমারি | জনসংখ্যা | %± | |
১৯৫১ | ৬,০২,৭৪,০০০ | — | |
১৯৬১ | ৭,০১,৪৪,০০০ | ১৬.৪% | |
১৯৭১ | ৮,৩৮,৪৯,০০০ | ১৯.৫% | |
১৯৮১ | ১০,৫১,৩৭,০০০ | ২৫.৪% | |
১৯৯১ | ১৩,২০,৬২,০০০ | ২৫.৬% | |
২০০১ | ১৬,৬১,৯৮,০০০ | ২৫.৮% | |
২০১১ | ১৯,৯৫,৮১,৪৭৭ | ২০.১% | |
সূত্র:ভারতের জনগণনা |
উত্তরপ্রদেশ একটি জনবহুল রাজ্য এবং এই রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও বেশি। ১৯৯১-২০০১ দশকে এই রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২৬% বৃদ্ধি পায়।[৯৩] ২০১১ সালের ১ মার্চের হিসেব অনুসারে, উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যা ১৯৯,৫৮১,৪৭৭। জনসংখ্যার দিক থেকে এটি ভারতের বৃহত্তম রাজ্য।[৯৪] ভারতের সামগ্রিক জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে এই রাজ্যের অবদান ১৬.১৬%। রাজ্যের জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮২৮ জন। এটি ভারতের সর্বাধিক জনঘনত্ব-বিশিষ্ট রাজ্যগুলির অন্যতম।[১]
২০১১ সালের হিসেব অনুসারে, রাজ্যের লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯০৮ জন নারী। এটি জাতীয় লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৩৩ জন নারীর তুলনায় কম।[১] ২০০১-২০১১ দশকে রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার (উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হিসেব সমেত) ২০.০৯%। এটি জাতীয় হার ১৭.৬৪ শতাংশের চেয়ে বেশি।[৯৫][৯৬] উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের একটি বড়ো অংশের মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে।[৯৭] ২০০৯-১০ সালের পরিকল্পনা কমিশনের আনুমানিক সমীক্ষা অনুসারে, উত্তরপ্রদেশের ৫ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। এই সংখ্যাটি ভারতের সমস্ত রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক।[৯৭][৯৮]
২০১১ সালের ভারতের জনগণনা অনুসারে, উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যার ৭৯% হিন্দু। মুসলমান জনসংখ্যা ২০%। মুসলমানরাই রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী ও বৃহত্তম সংখ্যালঘু।[৯৯] জনসংখ্যার অবশিষ্ঠাংশরা হল শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও জৈন।[১০০]
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, রাজ্যের সাক্ষরতার হার ৭০%। এটি জাতীয় গড় ৭৪ শতাংশের চেয়ে কম।[১০১][১০২] পুরুষ সাক্ষরতার হার ৭৯% ও মহিলা সাক্ষরতার হার ৫৯%। ২০০১ সালে উত্তরপ্রদেশের সাক্ষরতার হারছিল ৫৬.২৭%। সেই সময় রাজ্যের পুরুষ সাক্ষরতার হার ছিল ৬৭% এবং মহিলা সাক্ষরতার হার ছিল ৪৩%।[১০৩]
হিন্দি ও উর্দু হল উত্তরপ্রদেশের সরকারি ভাষা।[৩] উত্তরপ্রদেশের অধিবাসীরা তাদের ভাষাকে তাদের সংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ মনে করেন।[৫০] রাজ্যের ৭৯% অধিবাসীর প্রথম ভাষা হল হিন্দি। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের ২০% অধিবাসীর (সকল মুসলমান জনগোষ্ঠীর) ভাষা হল উর্দু।[১০৪] উত্তরপ্রদেশের অধিকাংশ ব্যক্তিই হিন্দুস্তানি ভাষার কোনো উপভাষায় কথা কথা বলেন। এই ভাষা লেখার হরফের তারতম্য অনুসারে উর্দু বা হিন্দি ভাষা বলে কথিত হয়।[১০৫][১০৬]
উত্তরপ্রদেশে একাধিক উপভাষা প্রচলিত। পাঁচটি আঞ্চলিক উপভাষাকে চিহ্নিত করা হয়। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, রোহিলখণ্ড ও উচ্চ দোয়াব অঞ্চলে খরি বোলি বা প্রামাণ্য হিন্দি ও প্রামাণ্য উর্দুর উপভাষা প্রচলিত। নিম্ন দোয়াব বা ব্রজভূমি অঞ্চলে ব্রজ ভাষা প্রচলিত। আরও দক্ষিণে বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলে বুন্দেলখণ্ডি উপভাষা প্রচলিত। মধ্য উত্তরপ্রদেশে অবধি উপভাষা ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশে ভোজপুরি প্রচলিত আছে। ভোজপুরি ভাষাভাষীদের সঙ্গে প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের সংস্কৃতির মিল আছে। ভারতীয় রাজ্যগুলি স্থানীয় ভাষার ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে। যদিও উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন ভাষা ও জাতিগোষ্ঠী একসঙ্গে বসবাস করে থাকে।[১০৭][১০৮]
জনসংখ্যা অনুসারে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বৃহত্তম শহর (২০১১ জনগণনা) | |||
---|---|---|---|
নাম | বিভাগ | জনসংখ্যা | |
কানপুর | কানপুর | ২,৯২০,০৬৭ | |
লখনউ | লখনউ | ২,৯০১,৪৭৪ | |
গাজিয়াবাদ | মিরাট | ২,৩৫৮,৫২৫ | |
আগ্রা | আগ্রা | ১,৭৪৬,৪৬৭ | |
বারাণসী | বারাণসী | ১,৪৩৫,১১৩ | |
মিরাট | মিরাট | ১,৪২৪,৯০৮ | |
এলাহাবাদ | এলাহাবাদ | ১,২১৬,৭১৯ | |
বরেইলি | বরেইলি | ৯৭৯,৯৩৩ | |
আলিগড় | আলিগড় | ৯০৯,৫৫৯ | |
মোরাদাবাদ | মোরাদাবাদ | ৮৮৯,৮১০ | |
সাহারানপুর | সাহারানপুর | ৭০৩,৩৪৫ | |
গোরখপুর | গোরখপুর | ৬৯২,৫১৯ | |
নইডা | মিরাট | ৬৪২,৩৮১ | |
ফিরোজাবাদ | আগ্রা | ৬০৩,৭৯৭ | |
ঝাঁসি | ঝাঁসি | ৫৪৯,৩৯১ | |
মুজফফরনগর | সাহারানপুর | ৪৯৪,৭৯২ |
সরকার ব্যবস্থা ও রাজনীতি
[সম্পাদনা]ভারতের সংসদে যেহেতু উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের প্রতিনিধি সংখ্যা সর্বাধিক, সেহেতু এই রাজ্যটিকে ভারতের জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য মনে করা হয়।[১০৯] সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এই রাজ্যের প্রতিনিধির সংখ্যা ৩১। অন্যদিকে সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় এই রাজ্য থেকে ৮০ জন সদস্য নির্বাচিত হন।[১১০][১১১][১১২][১১৩] উত্তরপ্রদেশ থেকে ভারতের ৮ জন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। সেই জন্য উত্তরপ্রদেশকে ভারতের ‘আন্ডার-অ্যাচিভার’ বলা হয়। যদিও, তা সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশ একটি দরিদ্র রাজ্য।[১১৪]
উত্তরপ্রদেশের রাজ্য আইনসভা দ্বিকক্ষীয়। এই আইনসভার উচ্চকক্ষের নাম উত্তরপ্রদেশ বিধান পরিষদ[১১৫] এবং নিম্নকক্ষের নাম উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা।[১১৬] ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো উত্তরপ্রদেশেও সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রচলিত। রাজ্যের আনুষ্ঠানিক প্রধান হলেন রাজ্যপাল। ভারতের রাষ্ট্রপতি রাজ্যপালকে নিয়োগ করেন। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতাকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ ক্রমে রাজ্যপাল মন্ত্রিসভা গঠন করেন। ২০১২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২২৪টি আসন জয় করে সমাজবাদী পার্টি এই রাজ্যে সরকার গঠন করে।[১১৭] স্থানীয় স্তরে অন্যান্য রাজ্যের মতো উত্তরপ্রদেশও একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে বিভক্ত। প্রতিটি জেলা শাসন করেন জেলাশাসক। ইনি ভারতীয় প্রশাসন কৃত্যকের সদস্য। অন্যান্য রাজ্য সরকারি আধিকারিকরা তাকে সাহায্য করেন।[১১৮]
বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা রক্ষার জন্য কঠোর বিধি অনুসারে বিচারপতি ও বিচারবিভাগীয় আধিকারিকরা অরাজনৈতিক উপায়ে নিযুক্ত হন।[৫০] তাত্ত্বিকভাবে এই বিধি অনুসারে, বিচারবিভাগ ভারতের সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের ব্যাখ্যা অন্য কোনোরকম প্রভাব ছাড়াই দিতে পারে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বিভাগের প্রধান পুলিশ প্রধান। ইনি ভারতীয় পুলিশ কৃত্যকের সদস্য। রাজ্য পুলিশ বিভাগের সদস্যরা তাকে সাহায্য করেন। রাজ্য পুলিশ রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত।[৫০] ভারতীয় বন কৃত্যক উপ-বনসংরক্ষকও সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক।[৫০] পূর্ত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, প্রাণীসম্পদ বিকাশ প্রভৃতি বিভাগগুলির জন্য প্রতিটি জেলায় একজন জেলাপ্রধান নিযুক্ত থাকেন।[১১৮]
এলাহাবাদ হাইকোর্ট, এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ, এটাওয়া জেলা আদালত, কানপুর দেহাত জেলা আদালত এবং প্রতিটি জেলার জেলা আদালত ও প্রতিটি জেলা বা দায়রা আদালত ও মহকুমা আদালত নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিচারবিভাগ গঠিত।[১১৯] ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপালের পরামর্শক্রমে ভারতের রাষ্ট্রপতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতিকে নিয়োগ করেন।[৫০] মুখ্য বিচারপতির পরামর্শপ্রমে উত্তরপ্রদেশ বিচারবিভাগ অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়োগ করে।[১১৯][১২০] ‘উপ-বিচারবিভাগীয় কৃত্যক’ উত্তরপ্রদেশের বিচারব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। উপ-বিচারবিভাগ বা উত্তরপ্রদেশ জন বিচারবিভাগীয় কৃত্যক উত্তরপ্রদেশ উচ্চ বিচারবাভীয় কৃত্যক নামে দুটি বিভাগে বিভক্ত জেলা আদালত নিয়ে গঠিত।[৫০] উত্তরপ্রদেশ জন বিচারবিভাগীয় কৃত্যক জন বিচারপতি (নিম্ন বিভাগ)/ বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ও জন বিচারপতি (উচ্চ বিভাগ/মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে গঠিত। উত্তরপ্রদেশ উচ্চ বিচারবিভাগীয় কৃত্যক দেওয়ানি ও দায়রা বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত। জেলা বিচারপতি উত্তরপ্রদেশ উপ-বিচারবিভাগীয় কৃত্যক পরিচালনা করেন।[৫০] এটাওয়া ও কানপুর দেহাতের জেলা আদালত রাজ্যের উপ-বিচারবিভাগীয় কৃত্যক হিসেবে কাজ করে।[১২১]
অপরাধ
[সম্পাদনা]ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর হিসেব অনুসারে, ভারতের সমস্ত রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশেই অপরাধের হার সর্বাধিক। তবে অত্যধিক জনবহুল রাজ্য হওয়ায় এই রাজ্যের মাথাপিছু অপরাধের হার কম।[১২২] এই কারণে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর মতে, উত্তরপ্রদেশ ভারতের তৃতীয় নিরাপদ ও বসবাসযোগ্য রাজ্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মানব উন্নয়ন সূচকের মাত্রাও ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।[১২৩][১২৪] উত্তরপ্রদেশের পুলিশ বাহিনী ভারতে দ্বিতীয় বৃহত্তম। এই বাহিনীতে ১০৭,৮৪০ জন সদস্য আছেন। ভারতের সামগ্রিক অসামরিক পুলিশের ৯.৫% এই রাজ্যের পুলিশ বাহিনী।[১২৫][১২৬]
জঙ্গি হানা
[সম্পাদনা]২০০৬ সালের পর থেকে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের প্রধান প্রধান ধর্মস্থান, একটি আদালত ও একটি মন্দির চত্বরে বেশ কয়েকটি জঙ্গি হানার ঘটনা ঘটেছে। ২০০৬ বারাণসী বোমা বিস্ফোরণের ২০০৬ সালের ৭ মার্চ ঘটনায় হিন্দুধর্মের পবিত্র তীর্থস্থান বারাণসী শহরে একাধিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় ২৮ জন নিহত এবং ১০১ জন আহত হন।[১২৭] সন্ধ্যা ছটার কিছু পরেই এই বিস্ফোরণগুলি ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে ৬টা ২০ মিনিটে কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দিরে।[১২৮][১২৮] অন্যান্য বিস্ফোরণগুলি ঘটে বারাণসী ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনের ভ্রমণ কার্যালয়ের পাশে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের কাছে। আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটেছিল দিল্লি-গামী শিবগঙ্গা এক্সপ্রেসের ভিতর।[১২৯]
২০০৭ সালের ২৩ নভেম্বর ২৫ মিনিটের মধ্যে লখনউ, বারাণসী ও ফৈজাবাদ আদালতে পরপর বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণগুলিতে ২৮ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।[১৩০] জৈস-এ-মোহাম্মদ জঙ্গিরা রাহুল গান্ধীকে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী সেই জঙ্গিদের গ্রেফতার করার পরই এই বিস্ফোরণের ঘটনাগুলি ঘটে। বিস্ফোরণের পাঁচ মিনিট আগে টিভি স্টেশনগুলিতে ই-মেল করে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গিরা এই বিস্ফোরণগুলির দায় স্বীকার করেছিল।[১৩১][১৩২] প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে বারাণসী দেওয়ানি আদালত ও কালেক্টরয়েটে দুপুর ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৭ মিনিটের মধ্যে। এরপর দুপুর ১টা ১২ মিনিট থেকে ১টা ১৫ মিনিটের মধ্যে ফৈজাবাদ আদালতে এবং ১টা ৩২ মিনিটে লখনউ আদালতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের উদ্দেশ্য ছিল আদালতে কর্মরত আইনজীবীদের হত্যা করা।[১৩৩]
২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর বারাণসীর দশাশ্বমেধ ঘাটের পার্শ্ববর্তী শীতলা ঘাটে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণে ৩৮ জন নিহত এবং বেশ কয়েক জন আহত হন।[১৩৪] ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীর পরদিন এই বিস্ফোরণ ঘটে। উল্লেখ্য, অযোধ্যা শহরে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেওয়ার পর দেশ জুড়ে যে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা বেধেছিল তাতে ২০০০ জন নিহত হয়েছিলেন।[১৩৫]
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]এই রাজ্য স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এ ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে ৩য়। পরিমাণ ২২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা গ্রিস দেশের সমতুল্য। কিন্তু জনসংখ্যা অনুপাতে তা খুব কম ও ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে ২য় সর্বনিম্ন।
শ্রমশক্তি অংশগ্রহণের হার-এ এই রাজ্য ভারতের দ্বিতীয় সর্বনিম্ম স্থানে রয়েছে। ১৫-২৯ বর্ষীয়দের ৩১.১% এবং সামগ্রিকভাবে ৪৩.২% অংশগ্রহণ রয়েছে মাত্র । এখানে কর্মসংস্থান ভালো না হওয়ায় বহু তরুণ তরুনী পার্শবর্তী দিল্লিতে পাড়ি জমান। প্রায় ৯ কোটি লোক ভিন রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন।
২০১৫-১৬ সালের হিসেব অনুযায়ী চাল উৎপাদনে এই রাজ্য ভারতে ২য়। প্রায় ১২.৫ মিলিয়ন টন চাল উৎপাদন হয় যা মায়ানমারের মোট উৎপাদনের সমতুল্য । [১৩৬]
২০১৫-১৬ সালের হিসেব অনুযায়ী গম উৎপাদনে এই রাজ্য ভারতে ১ম । প্রায় ২৬.৮৭ মিলিয়ন টন গম উৎপাদন হয় যা অস্ট্রেলিয়ার মোট উৎপাদনের সমতুল্য ।[১৩৭]
শিক্ষা
[সম্পাদনা]উত্তরপ্রদেশ ৪টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ২০টি রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়, ৮টি গণ্য বিশ্ববিদ্যালয়, ২টি আইআইটি লক্ষ্মৌ, ১টি আইআইএম এলাহাবাদ এবং বিভিন্ন পলিটেকনিক, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সহ ৩০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
রাজ্যের এলাহাবাদ-এ একটি ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এই রাজ্যে ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বাধিক আয়ুর্বিজ্ঞান স্নাতক শিক্ষার আসন (৭,৫২৫ টি ) রয়েছে। যদিও এই সংখ্যা রাজ্যের জন সংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। সাম্প্রতিক কালে ২টি অখিল ভারতীয় আয়ুর্বিজ্ঞান সংস্থান খোলা হয়েছে।
সঞ্জয় গান্ধী পিজি মেডিকেল
রাম মোহন লোহিয়া মেডিকেল
ভারতীয় প্রযুক্তিক প্রতিষ্ঠান বারাণসী
পরিবহন ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশেই রেলপথের দৈর্ঘ্য সর্বাধিক। এই রাজ্যের রেলপথের ঘনত্ব সারা দেশে ষষ্ঠ উচ্চতম। ২০১১ সালের হিসেব অনুসারে, রাজ্যের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৮,৫৪৬ কিমি (৫,৩১০ মা)।[১৩৮] এলাহাবাদ উত্তর মধ্য রেলের প্রধান কার্যালয়।[১৩৯] অন্যদিকে গোরখপুর উত্তর পূর্ব রেলের প্রধান কার্যালয়।[১৪০][১৪১] এলাহাবাদ ও গোরখপুরে রেলের আঞ্চলিক প্রধান কার্যালয় ছাড়াও লখনউ ও মোরাদাবাদে উত্তর রেল বিভাগের দুটি বিভাগীয় প্রধান কার্যালয় রয়েছে। দেশের দ্রুততম শতাব্দী এক্সপ্রেস লখনউ স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লি ও লখনউ শহরের মধ্যে চলাচল করে। এটিই ভারতের প্রথম ট্রেন যেটিতে নতুন জার্মান এলএইচবি কোচ যুক্ত হয়েছে।[১৪২] লখনউ এনআর, কানপুর মধ্য, বারাণসী জংশন, আগ্রা কান্টনমেন্ট, গোরখপুর ও মথুরা জংশন ভারতীয় রেলের ৫০টি বিশ্বমানের রেল স্টেশনের অন্যতম।[১৪৩]
উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে একটি দীর্ঘ ও বহুমুখী পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে এই রাজ্যের সড়ক পরিবহন নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে বৃহত্তম।[১৪৪] জাতীয় সড়কগুলির মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ শুধুমাত্র প্রতিবেশী নয়টি রাজ্যের সঙ্গেই নয়, বরং প্রায় সারা দেশের সঙ্গেই ভালভাবে যুক্ত রয়েছে। এই রাজ্যে ৪২টি জাতীয় সড়ক রয়েছে। এগুলির দৈর্ঘ্য ৪,৯৪২ কিলোমিটার (ভারতের জাতীয় সড়কগুলির সামগ্রিক দৈর্ঘ্যের ৯.৬%)। ১৯৭২ সালে স্থাপিত উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সড়ক পরিবহন সংস্থা রাজ্যের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মসৃণ রাখার দায়িত্ব পালন করে।[১৪৫] এটি সারা দেশের একমাত্র রাজ্য পরিবহন সংস্থা ব্যবসায়িক দিক থেকে সফল। রাজ্যের প্রত্যেকটি শহর রাজ্য সড়কগুলির মাধ্যমে যুক্ত। অন্যান্য জেলা সড়ক ও গ্রামীণ সড়কগুলি গ্রামগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষা করে চলেছে। এই রাস্তাগুলির মাধ্যমে গ্রামের কৃষিপণ্য নিকটবর্তী বাজারে পৌঁছে যায়। প্রধান জেলা সড়কগুলি প্রধান সড়ক ও গ্রামীণ সড়কগুলির মধ্যে যোগাযোগও রক্ষা করে।[১৪৬] উত্তরপ্রদেশের সড়কপথের ঘনত্ব সারা দেশে সপ্তম উচ্চতম (১,০২৭ কিলোমিটার প্রতি ১০০০ বর্গকিলোমিটারে)। এছাড়া এই রাজ্যের শহরাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহনের দৈর্ঘ্য দেশের বৃহত্তম (৫০,৭২১ কিলোমিটার)।[১৪৫]
বিমানপথ
[সম্পাদনা]উত্তরপ্রদেশের বিমান পরিবহন ব্যবস্থাও যথেষ্ট উন্নত। রাজ্যে দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে। এগুলি হল লখনউতে চৌধুরী চরণ সিং বিমানবন্দর ও বারাণসীতে লালবাহাদুর শাস্ত্রী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।[১৪৭] আগ্রা, এলাহাবাদ, গোরখপুর ও কানপুরে চারটি আভ্যন্তরিণ বিমানবন্দরও রয়েছে। লখনউ বিমানবন্দর নতুন দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরেই উত্তর ভারতের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর। ফিরোজাবাদ জেলার তুন্ডলার হিরনগাঁওয়ের কাছে কুরিকুপায় তাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।[১৪৮][১৪৯] কুশীনগরেও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।[১৫০]
খেলাধুলা
[সম্পাদনা]ক্রিকেট এই রাজ্যের জনপ্রিয় খেলা। আয়তনের তুলনায় রাজ্যে ক্রীড়া পরিকাঠামো অপ্রতুল।
পর্যটন
[সম্পাদনা]উত্তরপ্রদেশ ৭১ মিলিয়নের বেশি পর্যটক আগমনের মাধ্যমে প্রথম স্থানে রয়েছে। রাজ্যে সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্রময় ভূসংস্থান, স্পন্দনশীল সংস্কৃতি , উৎসব, মিনার এবং প্রাচীন মন্দির রয়েছে।
সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]ভাষা ও সাহিত্য
[সম্পাদনা]বৈদিক সাহিত্যের একাধিক ধর্মগ্রন্থ উত্তরপ্রদেশ ভূখণ্ডে রচিত হয়েছিল। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, গুরুপূর্ণিমা বা ব্যাসপূর্ণিমা তিথিতে ব্যাস এই অঞ্চলেই বেদ চার ভাগে বিভক্ত করেছিলেন। গুরুপূর্ণিমাকে হিন্দুরা ব্যাসের জন্মতিথিও মনে করেন।[১৫১] এই রাজ্যের একটি দীর্ঘ সাহিত্য ও লৌকিক হিন্দি ভাষার প্রথা রয়েছে। ১৯শ ও ২০শ শতাব্দীতে জয়শঙ্কর প্রসাদ, মৈথিলীশরণ গুপ্ত, মুন্সি প্রেমচন্দ, সূর্যকান্ত ত্রিপাঠী নিরালা, বাবু গুলাবরাই, সচ্চিদানন্দ বাৎস্যায়ন, রাহুল সাংকৃত্যায়ন, হরিবংশ রাই বচ্চন, ধরমবীর ভারতী, সুভদ্রা কুমারী চৌহান, মহাবীর প্রসাদ দ্বিবেদী, স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী, দোষ্যন্ত কুমার, হাজারিপ্রসাদ দ্বিবেদী, কুবেরনাথ রাই, ভারতেন্দু হরিশ্চন্দ্র ও বিভূতি নারায়ণ রাই প্রমুখ সাহিত্যিকের হাত ধরে হিন্দি সাহিত্যের আধুনিকীকরণ ঘটে।[১৫২]
উত্তরপ্রদেশ রাজ্যটিকে ‘ভারতের হিন্দিবলয়ের কেন্দ্র’ বলা হয়।[১৫৩] ১৯৫১ সালের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যভাষা আইন অনুসারে হিন্দিকে এই রাজ্যের সরকারি ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৮৯ সালে এই আইনে একটি সংশোধনী এনে রাজ্যের অন্যতম ভাষা উর্দুকেও সরকারি ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়।[১৫৪] ভাষাতাত্ত্বিক দিক থেকে এই রাজ্য ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠীর মধ্য, পূর্ব-মধ্য ও পূর্ব অঞ্চলে পড়ে। এই রাজ্যের প্রধান স্থানীয় ভাষাগুলি হল অবধি, ভোজপুরি, বুন্দেলি, ব্রজ ভাষা, কনৌজি ও খড়িবোলির কথ্যরূপ।[১৫৫]
সঙ্গীত ও নৃত্যকলা
[সম্পাদনা]অণুপ জালোটা, বাবা সেহগল, গিরিজা দেবী, গোপাল শঙ্কর মিশ্র, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, কিশান মহারাজ, বিকাশ মহারাজ,[১৫৬] নৌশাদ আলি, রবি শঙ্কর, শুভা মুদ্গল, সিদ্ধেশ্বরী দেবী, তালাত মাহমুদ ও উস্তাদ বিসমিল্লা খাঁ প্রমুখ সঙ্গীতজ্ঞেরা উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন। গজল গায়িকা বেগম আখতারও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন। উত্তরপ্রদেশের ব্রজ অঞ্চলে রাসিয়া নামে এক ধরনের সঙ্গীত খুব জনপ্রিয়। এই গানের মূল বিষয় হল রাধা ও কৃষ্ণের প্রেম। রাজ্যের অন্যান্য জনপ্রিয় সঙ্গীতধারাগুলি হল কাজরি, সোহর, কাওয়ালি, ঠুংরি, বিরহা, চৈতি ও সাওয়ানি। লখনউয়ের ভাতখণদে মিউজিক ইনস্টিটিউশন বিশ্ববিদ্যালয়ে শাস্ত্রীয় নৃত্য ও সঙ্গীত শেখানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি সঙ্গীতজ্ঞ পণ্ডিত বিষ্ণুনারায়ণ ভাতখণ্ডের নামাঙ্কিত।[১৫৭]
শাস্ত্রীয় নৃত্য কত্থকের উৎপত্তি উত্তরপ্রদেশ ভূখণ্ডে।[১৫৮] এই নৃত্যশৈলীটি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবলা ও পাখোয়াজের সংগতে এটি উপস্থাপনা করা হয়।[১৫৯] উত্তরপ্রদেশে কত্থকের দুটি ঘরানা রয়েছে। এগুলি হল লখনউ ঘরানা ও বারাণসী ঘরানা।[১৬০][১৬১]
উৎসব ও মেলা
[সম্পাদনা]দেওয়ালি (মধ্য-অক্টোবর থেকে মধ্য-ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত) ও রামনবমী উত্তরপ্রদেশের জনপ্রিয় উৎসব। প্রতি তিন বছর অন্তর মাঘ মাসে ফেব্রুয়ারি-মার্চ) যথাক্রমে এলাহাবাদ, হরিদ্বার ও উজ্জয়িনীতে গঙ্গার তীরে এবং নাসিকে গোদাবরীর তীরে কুম্ভমেলা আয়োজিত হয়। এলাহাবাদের কুম্ভমেলা উত্তরপ্রদেশের একটি বিখ্যাত মেলা।[১৬২] দোল উৎসবের দিন লাথ মার হোলি এই রাজ্যের একটি স্থানীয় হিন্দু উৎসব। হোলি উৎসবের আগে মথুরার কাছে বরসনাতে এই উৎসব পালিত হয়। তাজ মহোৎসব হল আগ্রার একটি বার্ষিক উৎসব। এটি ব্রজ এলাকার সংস্কৃতির একটি বর্ণময় প্রদর্শনী।[১৬৩] বুদ্ধপূর্ণিমা বা গৌতম বুদ্ধের জন্মদিন একটি প্রধান হিন্দু ও বৌদ্ধ উৎসব। অন্যদিকে সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে বড়দিন একটি প্রধান উৎসব। অন্যান্য উৎসবের মধ্যে বিজয়াদশমী, মকর সংক্রান্তি, বসন্ত পঞ্চমী, আয়ূধ পূজা, গঙ্গা মহোৎসব, জন্মাষ্টমী, সারধানা খ্রিস্টান মেলা, শিবরাত্রি, মহরম, বারহ্ ওয়াফাত, ঈদুলফিতর, ঈদুজ্জোহা, ছটপূজা, লখনউ মহোৎসব, কাবোব ও হনুমান জয়ন্তী উল্লেখযোগ্য।[১৬৪]
গণমাধ্যম
[সম্পাদনা]উত্তরপ্রদেশ থেকে হিন্দি, ইংরেজি ও উর্দুতে একাধিক সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র প্রকাশিত হয়। ১৮৫৫ সালে জর্জ অ্যালেন এলাহাবাদেদ্য পায়োনিয়ার পত্রিকাটি চালু করেন।[১৬৫] অমর উজালা, দৈনিক ভাস্কর, দৈনিক জাগরণ ও হিন্দুস্তান দৈনিক এই রাজ্যের জনপ্রিয় সংবাদপত্র। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে এই সংবাদপত্রগুলির সংস্করণ প্রকাশিত হয়। যে সকল ইংরেজি সংবাদপত্র এই রাজ্য থেকে প্রকাশিত হয় এবং ব্যাপক হারে বিক্রীত হয় সেগুলি হল দ্য টেলিগ্রাফ, দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য হিন্দু, দ্য স্টেটসম্যান, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এশিয়ান এজ। দি ইকোনমিক টাইমস, দ্য ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, বিজনেস লাইনস ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এই রাজ্যের কয়েকটি বহুল প্রচারিত অর্থনৈতিক দৈনিক পত্রিকা। হিন্দি, নেপালি, গুজরাতি, ওড়িয়া, উর্দু ও পাঞ্জাবি ভাষার কিছু সংবাদপত্রেরও পাঠক এই রাজ্যে বাস করেন।
দূরদর্শন এই রাজ্যের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। মাল্টি সিস্টেম অপারেটরেরা কেবলের মাধ্যমে হিন্দি, ইংরেজি, বাংলা, নেপালি ও আন্তর্জাতিক চ্যানেলগুলি সম্প্রচার করে থাকে। হিন্দি ২৪-ঘণ্টার টেলিভিশন সংবাদ চ্যানেলগুলি হল এনডিটিভি ইন্ডিয়া, ডিডি নিউজ, জি নিউজ উত্তরপ্রদেশ, জান টিভি, আইবিএন-৭, ও এবিপি নিউজ। অল ইন্ডিয়া রেডিও হল সরকারি রেডিও চ্যানেল। লখনউ, কানপুর, বারাণসী, এলাহাবাদ, আগ্রা ও নইডার মতো প্রধান শহরগুলিতে ৩২টি বেসরকারি এফএম স্টেশন আছে।[১৬৬][১৬৭]
ভোদাফোন এসার, ভারতী এয়ারটেল, বিএসএনএল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস, উইনিনর, এয়ারসেল,টাটা ইন্ডিকম, আইডিয়া সেলুলার, ও টাটা ডোকোমো সেলফোন পরিষেবা দেয়। নির্বাচিত কিছু শহরে সরকারি বিএসএনএল ও বেসরকারি সংস্থাগুলির মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়।[১৬৮] বিএসএনএল ও অন্যান্য সূত্র থেকে ডায়াল-আপ সংযোগ পাওয়া যায়।[১৬৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ "Statistics of Uttar Pradesh"। Census of India 2011। UP Government। ১ মার্চ ২০১১। ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Centre in a hurry, but Governors won't quit"। Hindu। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৪।
- ↑ ক খ গ "Report of the Commissioner for linguistic minorities: 50th report (July 2012 to June 2013)" (পিডিএফ)। Commissioner for Linguistic Minorities, Ministry of Minority Affairs, Government of India। পৃষ্ঠা 49। ৮ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল (pdf) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ Confidence limits for the age are 85 (±11) and 72 (±8) thousand years ago.
- ↑ Virendra N. Misra, Peter Bellwood (১৯৮৫)। Recent Advances in Indo-Pacific Prehistory: proceedings of the international symposium held at Poona। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 90-04-07512-7। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ Bridget Allchin, Frank Raymond Allchin (২৯ জুলাই ১৯৮২)। The Rise of Civilization in India and Pakistan। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 58। আইএসবিএন 0-521-28550-X। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ Hasmukhlal Dhirajlal Sankalia, Shantaram Bhalchandra Deo, Madhukar Keshav Dhavalikar (১৯৮৫)। Studies in Indian Archaeology। Popular Prakashan। পৃষ্ঠা 96। আইএসবিএন 0-86132-088-3। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ Gibling, Sinha; Sinha, Roy; Roy, Tandon; Tandon, Jain; Jain, M (২০০৮)। "Quaternary fluvial and eolian deposits on the Belan river, India: paleoclimatic setting of Paleolithic to Neolithic archeological sites over the past 85,000 years"। Quaternary Science Reviews। 27 (3–4): 391। ডিওআই:10.1016/j.quascirev.2007.11.001।
- ↑ Kenneth A. R. Kennedy (২০০০)। God-apes and Fossil Men। University of Michigan Press। পৃষ্ঠা 263। আইএসবিএন 0-472-11013-6। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ Bridget Allchin, Frank Raymond Allchin (১৯৮২)। The Rise of Civilization in India and Pakistan। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 119। আইএসবিএন 0-521-28550-X। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Prehistoric human colonization of India" (PDF)। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১২।
- ↑ "indianexpress"। indianexpress।
- ↑ "hindustantimes"। ১৪ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "timesofindia"।
- ↑ ক খ গ ঘ Sailendra Nath Sen (১ জানুয়ারি ১৯৯৯)। Ancient Indian History And Civilization। New Age International। পৃষ্ঠা 105–106। আইএসবিএন 978-81-224-1198-0। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ William Buck (১ জানুয়ারি ২০০০)। Ramayana। Motilal Banarsidass Publ.। আইএসবিএন 978-81-208-1720-3। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ Richard White (৮ নভেম্বর ২০১০)। The Middle Ground: Indians, Empires, and Republics in the Great Lakes Region, 1650-1815। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-1-107-00562-4। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ ক খ Marshall Cavendish Corporation (সেপ্টেম্বর ২০০৭)। World and Its Peoples: Eastern and Southern Asia। Marshall Cavendish। পৃষ্ঠা 331–335। আইএসবিএন 978-0-7614-7631-3। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ ক খ Pran Nath Chopra (১ ডিসেম্বর ২০০৩)। A Comprehensive History of Ancient India। Sterling Publishers Pvt. Ltd। পৃষ্ঠা 196। আইএসবিএন 978-81-207-2503-4। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ ক খ John Stewart Bowman (২০০০)। Columbia Chronologies of Asian History and Culture। Columbia University Press। পৃষ্ঠা 273। আইএসবিএন 978-0-231-11004-4। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১২।
- ↑ The History of India by Kenneth Pletcher p.102
- ↑ The City in South Asia by James Heitzman p.37
- ↑ "The Islamic World to 1600: Rise of the Great Islamic Empires (The Mughal Empire)"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Annemarie Schimmel (৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৪)। The Empire of the Great Mughals: History, Art and Culture। Reaktion Books। আইএসবিএন 978-1-86189-185-3। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ Babur (Emperor of Hindustan); Dilip Hiro (১ মার্চ ২০০৬)। Babur Nama: Journal of Emperor Babur। Penguin Books India। আইএসবিএন 978-0-14-400149-1। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ Carlos Ramirez-Faria (১ জানুয়ারি ২০০৭)। Concise Encyclopeida Of World History। Atlantic Publishers & Dist। পৃষ্ঠা 171। আইএসবিএন 978-81-269-0775-5। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১২।
- ↑ Stronge, Susan (১৬ অক্টোবর ২০১২)। Mughal Hindustan is renowned for its opulence। London: The Arts of the Sikh Kingdoms (V&A 1999)। পৃষ্ঠা 255। আইএসবিএন 9788174366962। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ Ashvini Agrawal (১ জানুয়ারি ১৯৮৩)। Studies In Mughal History। Motilal Banarsidass Publ.। পৃষ্ঠা 30–46। আইএসবিএন 978-81-208-2326-6। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১২।
- ↑ Fergus Nicoll, Shah Jahan: The Rise and Fall of the Mughal Emperor (2009)
- ↑ Mayaram, Shail (২০০৩)। Against history, against state: counterperspectives from the margins Cultures of history। Columbia University Press, 2003। আইএসবিএন 978-0-231-12731-8।
- ↑ Gyanesh Kudaisya (১৯৯৪)। Region, nation, "heartland": Uttar Pradesh in India's body-politiqEPgvENHg2MC&pg=PA126। LIT Verlag Münster। পৃষ্ঠা 126–376। আইএসবিএন 978-3-8258-2097-8।
- ↑ K. Sivaramakrishnan (৩ ডিসেম্বর ১৯৯৯)। Modern Forests: Statemaking and Environmental Change in Colonial Eastern India। Stanford University Press। পৃষ্ঠা 240–276। আইএসবিএন 978-0-8047-4556-7। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ Claude Markovits (২০০২)। A History of Modern India, 1480-1950। Anthem Press। পৃষ্ঠা 586–593। আইএসবিএন 978-1-84331-004-4। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ Rudrangshu Mukherjee (১ জুন ২০০৫)। Mangal Pandey: brave martyr or accidental hero?। Penguin Books। আইএসবিএন 978-0-14-303256-4। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ United Provinces of Agra and Oudh (India); D.L. Drake-Brockman (১৯৩৪)। District Gazetteers of the United Provinces of Agra and Oudh: supp.D.Pilibhit District। Supdt., Government Press, United Provinces। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ Dilip K. Chakrabarti (১ জুন ১৯৯৭)। Colonial Indology: sociopolitics of the ancient Indian past। Michigan: Munshiram Manoharlal Publishers Pvt. Ltd.। পৃষ্ঠা 257। আইএসবিএন 978-81-215-0750-9। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ Bernard S. Cohn (১৯ আগস্ট ১৯৯৬)। Colonialism and Its Forms of Knowledge: The British in India। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 189। আইএসবিএন 978-0-691-00043-5। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ K. Balasankaran Nair (১ জানুয়ারি ২০০৪)। Law Of Contempt Of Court In India। Atlantic Publishers & Dist। পৃষ্ঠা 320। আইএসবিএন 978-81-269-0359-7। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ Śekhara, Bandyopādhyāya (২০০৪)। From Plassey to Partition: A History of Modern India। Orient Longman। পৃষ্ঠা 407। আইএসবিএন 978-81-250-2596-2।
- ↑ Bandyopādhyāya, Śekhara (২০০৪)। From Plassey to Partition: A History of Modern India। Orient Longman। পৃষ্ঠা 406। আইএসবিএন 978-81-250-2596-2।
- ↑ Bankim Chandra Chatterji (১৫ জানুয়ারি ২০০৬)। Anandamath। Orient Paperbacks। পৃষ্ঠা 168। আইএসবিএন 978-81-222-0130-7। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Uttar Pradesh - States and Union Territories"। Know India: National Portal of India। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "Communal violence"। Business Standard। Ananda Publishers। Kotak Mahindra Bank। আগস্ট ৬, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ communal violence, in uttar pradesh। "Communal conflicts in state"। Tehalka। ১২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ Uttarakhand: Past, Present,, and Future (১৯৯৫)। separation of uttarakhand। Concept Publishing Company। পৃষ্ঠা 391।
- ↑ "Most critical factors"। Uttar Pradesh climate department। ১৫ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Uttar Pradesh Geography"। Uttar Pradesh State Profile। ২৩ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "The larger Gangetic Plain" (পিডিএফ)। Gecafs। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Gangetic Plains and Vindhya Hills and plateau."। Zee news। ৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট Gopal K. Bhargava; Shankarlal C. Bhatt (২০০৫)। Land and people of Indian states and union territories. 28. Uttar Pradesh। Gyan Publishing House। পৃষ্ঠা 31–33। আইএসবিএন 978-81-7835-384-5। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Rivers of Uttar Pradesh"। The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "The Glossary of Meteorology"। Allen Press Inc.। ৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Potential Creation and Utilisation"। Irrigation department U.P। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Purports to define every important meteorological term likely to be found in the literature today."। Allen Press,Inc.। ১২ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ Vir Singh। Mountain Ecosystems: A Scenario of Unsustainability। Indus Publishing। পৃষ্ঠা 102–264। আইএসবিএন 978-81-7387-081-1। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১২।
- ↑ ক খ গ ঘ Upkar Prakashan - Editorial Board (২০০৮)। Uttar Pradesh General Knowledge। Upkar Prakashan। পৃষ্ঠা 26–। আইএসবিএন 978-81-7482-408-0। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১১।
- ↑ ক খ গ "Climate change impacts"। Uttar Pradesh climate department। ১৫ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Climate"। Uttar Prades:Land. Suni System (P) Ltd.। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১২।
- ↑ Government of Uttar Pradesh, Lucknow, Irrigation Department Uttar Pradesh। "Average rainfall pattern of Uttar Pradesh"। Irrigation Department Uttar Pradesh। ২৪ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ Sethi, Nitin (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৭)। "Met dept blames it on 'western disturbance'"। The Times of India। ১১ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১১।
- ↑ "Local Weather Report"। Local Weather Report and Forecast Department। ২১ মে ২০১২। ১ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Lucknow"। India Meteorological Department। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Kanpur"। India Meteorological Department। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Ghaziabad"। India Meteorological Department। ১৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Allahabaad"। India Meteorological Department। ৩১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Agra"। India Meteorological Department। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Varanasi"। India Meteorological Department। ৯ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Gorakhpur"। India Meteorological Department। ৯ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Weather Report & Forecast for Bareilly"। India Meteorological Department। ৩ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "State Animal, Bird, Tree and Flower"। pannatigerreserve.in। Panna Tiger Reserve। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ "Uttar Pradesh Forest Corporation"। Forest department uttar pradesh। ২০ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Forest and tree resources in states and union territories: Uttar Pradesh" (পিডিএফ)। India state of forest report 2009। Forest Survey of India, Ministry of Environment & Forests, Government of India। ৭ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Aegyptica"। Bsienvis.nic.in। ৬ মে ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯।
- ↑ "Bird Sanctuary"। U.P tourism। ৪ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Sanctuary Park in U.P"। U.P tourism। ১৮ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Few patches of natural forest"। State government of Uttar Pradesh। ২০ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ The Forests and biodiversity, in UP are important in many ways। "Miscellaneous Statistics"। Ministry of Environment and Forests। ১৫ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Conservation of the Avifauna" (পিডিএফ)। Dudhwa National Park। ২২ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১২।
- ↑ Books Llc (২৬ জুলাই ২০১০)। Bird Sanctuaries of Uttar Pradesh: Okhla Sanctuary, Sandi Bird Sanctuary, Bakhira Sanctuary, Lakh Bahosi Sanctuary, Patna Bird Sanctuary। General Books LLC। পৃষ্ঠা 26। আইএসবিএন 978-1-157-17165-2। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১২।
- ↑ S. K. Agarwal। Environment Biotechnology। APH Publishing। পৃষ্ঠা 61। আইএসবিএন 978-81-313-0294-1। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Processing of manuscripts of Fauna" (পিডিএফ)। Indian Government। ৫ মে ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "State division of Uttar Pradesh"। Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Indian Districts by population"। 2011 Census of India। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ ক খ "Administration of block" (পিডিএফ)। Panchayati Raj Department। ১২ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Directory of district, sub division, panchayat samiti/ block and gram panchayats in Uttar Pradesh" (পিডিএফ)। Panchayati Raj Department। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Development of 13 metropolitan cities in Uttar Pradesh"। The Indian Express। ৩০ আগস্ট ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "The area and density of metropolitan cities" (পিডিএফ)। The Ministry of Urban Development। ১৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Provisional population totals, Census of India 2011" (PDF)। Census of India 2011। পৃষ্ঠা 19। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Provisional population totals paper 1 of 2011 : Uttar Pradesh"। Census of India 2011। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "The Uttar Pradesh municipal corporation" (পিডিএফ)। Municipal corporation of Uttar Pradesh। ২৪ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ Khan, Atiq (১৬ নভেম্বর ২০১১)। "Maya splits U.P. poll scene wide open"। Lucknow: The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০১৩।
- ↑ "Census of India – Socio-cultural aspects"। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১১।
- ↑ "The density of population in U.P."। Environment and Related Issues Department U.P। ১৫ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Provisional population totals" (পিডিএফ)। Census of India 2011। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Decennil growth of population by census" (পিডিএফ)। Census of India (2011)। ১০ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Decennial growth rate and density for 2011 at a glance for Uttar Pradesh and the districts: provisional population totals paper 1 of 2011"। Census of India(2011)। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ ক খ "The state with large no. of people living below poverty line"। Government of India। Press Information Bureau। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Number and Percentage of Population below poverty line by states - 2011-12" (পিডিএফ)। planningcommission.nic.in। Press Note on Poverty Estimates, 2011-12 , Government of India। ২৮ জুন ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ "A snapshot of population size, distribution, growth and socio economic characteristics of religious communities from Census 2001" (পিডিএফ)। Census of India। ৯ আগস্ট ২০০৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ "Census Reference Tables, C-Series Population by religious communities"। Census of India। Office of the Registrar General & Census Commissioner, India। ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০০৮।
- ↑ "Uttar Pradesh Profile" (পিডিএফ)। Census of India 2011। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ "A comparison of the literacy rates" (পিডিএফ)। censusmp.gov.in। ১৭ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ "Literacy rate in Uttar Pradesh"। Census of India 2011। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ "The real classical language"। Columbia University। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ Compliance of the constitutional and legal provisions। "Functions of the department of official language"। Department of Official Language। ১৫ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১১।
- ↑ "Official language - Constitutional/Statutory Provisions"। The National Portal of India। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "The story of an Awadhi"। YouTube। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Awadhi diaect"। Ethnologue-Languages of the world। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১২।
- ↑ Four other states seen as barometer of support for federal government.। "Legislative elections in Uttar Pradesh"। Al Jazeera। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৪ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Verinder Grover। Legislative Council in State Legislatures। Deep & Deep Publications। পৃষ্ঠা 37–255। আইএসবিএন 978-81-7100-193-4। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Composition of Rajya Sabha" (পিডিএফ)। Rajya Sabha। New Delhi: Rajya Sabha Secretariat। পৃষ্ঠা 24–25। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ "UP: the nerve centre of politics"। Zee news। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "UP vidhan parishad"। Government of India। ১৭ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "UP vidhan sabha structure"। Government of India। ১৭ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Uttar Pradesh 2012 Election Result"। Zee News। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১২।
- ↑ ক খ "Judiciary in the state"। Allahabad Nagar Nigam। ১ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
- ↑ ক খ "Uttar Pradesh judiciary"। Maps of India। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ "Constitutional setup"। Government of Uttar Pradesh। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ "Subordinate Civil Judiciary in Uttar Pradesh" (পিডিএফ)। Allahabad High Court। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ Pervez Iqbal Siddiqui (৩০ অক্টোবর ২০১১)। "UP tops in crime, low on 'criminality'"। Times of India। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Uttar Pradesh Human Development Report"। Uttar Pradesh Human Development। ২২ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০০৭।
- ↑ "Impressive growth in UP"। Times of India। ২২ অক্টোবর ২০১১। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০১১।
- ↑ Shafi, Alam। "The strength of Armed Police in Uttar Pradesh" (পিডিএফ)। National Crime Records Bureau। ১০ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Highlight of criminal statistics" (পিডিএফ)। Ministry of statics and progra implementation। ২০ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "A powerful bomb placed in"। Zee news। ২০ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১২।
- ↑ ক খ "Sankat Mochan Hanuman temple blast"। 'Rediff.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Varanasi railway station blast"। Rediff.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Uttar Pradesh blasts, RDX use confirmed"। Web India। ২৫ নভেম্বর ২০০৭। ২৪ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১২।
- ↑ "Varanasi blast"। NDTV। ৭ ডিসেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১২।
- ↑ Swami, Praveen (২৫ নভেম্বর ২০০৭)। "Uttar Pradesh bombings mark new phase"। The Hindu। ২৬ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১২।
- ↑ Swami, Praveen (২৬ ডিসেম্বর ২০০৭)। "Wiretap warning on Uttar Pradesh bombings went in vain"। The Hindu। ৪ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Massive terror attacks"। The Sunday Indian। ২৫ নভেম্বর ২০১১। ৬ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Chronology of recent terror attacks"। Yahoo। ১৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১১।
- ↑ "Rice Production"।
- ↑ "Wheat Production"।
- ↑ "total railway route length uttar pradesh"। Northern Railways Lucknow Division। ১৪ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "North Central Railway-The Allahabad Division"। Indian Railways Portal CMS Team। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
- ↑ "the Portal of Indian Railways"। Indian Railways। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ "Equipment arrives for integrated security system"। Times of india। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Lucknow New Delhi Shatabdi Express"। The Times of India। ২ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Introducing the Railway Budget 2011-12" (পিডিএফ)। Indian Railways। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Investment Promotion & Infrastructure Development Cell" (পিডিএফ)। Department of Industrial policy and promotion। ২৪ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানু ২০১২।
- ↑ ক খ "Road network" (পিডিএফ)। India Brand Equity Foundation। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ Roads in India are divided into the categories, For the purpose of management and administration,। "One of the largest road networks in the Country" (পিডিএফ)। Department of Industrial policy and promotion। ২৪ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "contributing to economic growth and prosperity of the nation"। Airports Authority of India। ১৩ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২।
- ↑ "UP to seek DGCA nod for Taj airport"। Hindustantimes.com। ২০১৩-০৬-২১। ২০১৫-০৪-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-২৯।
- ↑ "Hindustan Times e-Paper"। Paper.hindustantimes.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-২৯।
- ↑ "Kushinagar international airport to get ready for take-off"। Virendra Singh Rawat। জানুয়ারি ৭, ২০১৩।
- ↑ Awakening Indians to India। Chinmaya Mission। ২০০৮। পৃষ্ঠা 167। আইএসবিএন 81-7597-434-6। ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১২।
- ↑ "Three indian children to attend J8 summit in Rome.:. newkerala.com Online News"। New kerala। ১৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯।
- ↑ "Uttar Pradesh Legislature"। U.P assembly। ১৯ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯।
- ↑ "Ethnologue report for language code: bfy"। Ethnologue। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯।
- ↑ "Varanasi District"। varanasi.nic.in। ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Bhatkhande music institute"। Uttar Pradesh Education Department। ১০ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Uttar Pradesh Folk Music on Harmonica"। YouTube। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১২।
- ↑ "North Indian: Kathak" (পিডিএফ)। Dance style loacator। ৮ মে ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১২।
- ↑ "Lucknow gharana, developed with Kathak."। Hindustani classical music। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Benaras Gharana, traditional style and way of teaching and performing Indian classical music."। Benares music academy। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১২।
- ↑ "Kumbh Mela - India"। YouTube। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১২।
- ↑ "The Braj Holi: Legend in real life"। Hindustan Times। ১৯ মার্চ ২০১১। ২২ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১২।
- ↑ "The glorious traditions and mythological legacy"। Department of tourism U.P। ২৯ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১২।
- ↑ Das Gupta, Uma (১৯৭৭)। "The Indian Press 1870–1880: A Small World of Journalism" (see pages 233–234)। Modern Asian Studies। 11 (2): 213–235। জেস্টোর 311549। ডিওআই:10.1017/S0026749X00015092।
- ↑ "Radio Stations in Uttar Pradesh, India"। Asiawaves। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Indian FM Stations Statewise"। Bharatiya mobile। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Uttar Pradesh (East)"। India cellular phone industry। ৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।
- ↑ "Internet Service Provider"। Data Infocom Limited। ২৫ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১২।