পলাশ
পলাশ | |
---|---|
![]() | |
ভারতের বেঙ্গালুরুতে | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
(শ্রেণীবিহীন): | Angiosperms |
(শ্রেণীবিহীন): | Eudicots |
(শ্রেণীবিহীন): | Rosids |
বর্গ: | Fabales |
পরিবার: | Fabaceae |
গণ: | Butea |
প্রজাতি: | B. monosperma |
দ্বিপদী নাম | |
Butea monosperma (Lam.) Taub. | |
প্রতিশব্দ | |
Butea frondosa Roxb. ex Willd. |
পলাশ মাঝারি আকারের পর্ণমোচী বৃক্ষ। এটির বৈজ্ঞানিক নাম Butea monosperma। বৃক্ষটি Fabaceae পরিবারের সদস্য। তবে পলাশ গাছ তার ফুলের জন্যই সবচেয়ে বেশি পরিচিত।[২]
সংস্কৃততে এটি কিংশুক এবং মনিপুরী ভাষায় পাঙ গোঙ নামে পরিচিত।
বর্ণনা[সম্পাদনা]
পলাশ গাছ সর্বোচ্চ ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। শীতে গাছের পাতা ঝরে যায়। এর বাকল ধূসর। শাখা-প্রশাখা ও কাণ্ড আঁকাবাঁকা। নতুন পাতা রেশমের মতো সূক্ষ্ম। গাঢ় সবুজ পাতা ত্রিপত্রী, দেখতে অনেকটা মান্দার গাছের পাতার মতো হলেও আকারে বড়।
বসন্তে এ গাছে ফুল ফোটে। টকটকে লাল ছাড়াও হলুদ ও লালচে কমলা রঙের পলাশ ফুলও দেখা যায়। পলাশ ফুল ছোট, ফুল ২ থেকে ৪ সেঃ মিঃ লম্বা হয়।[৩]
পলাশের ফল দেখতে অনেকটা শিমের মতো। বাংলাদেশে প্রায় সব জায়গাতে কমবেশি পলাশ গাছ দেখতে পাওয়া যায়।[২]
বিস্তৃতি[সম্পাদনা]
ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।
সাহিত্যে পলাশ ফুল[সম্পাদনা]
বাংলা সাহিত্যে পলাশ ফুলের প্রসঙ্গ এসেছে নানাভাবে। কবি নজরুল তার একটি গানে লিখেছেন-
“ | হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল
এনে দে এনে দে নইলে বাঁধব না, বাঁধব না চুল... |
” |
এছাড়াও বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি দেশাত্মবোধক গানে এর উল্লেখ পাওয়া যায়- [২]
“ | আমায় গেঁথে দাও না মাগো
একটি পলাশ ফুলের মালা... |
” |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক কবিতা ও গানেও পলাশ ফুলের উল্লেখ আছে। যেমন - দোলের গান, ওরে গৃহবাসীতে "রাঙা হাসি রাশি রাশি, অশোকে পলাশে' বা ফাগুন হাওয়ায় হওয়ায় গানে "তোমার অশোকে কিংশুকে, অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে"।
ঋতুচক্রে পলাশ[সম্পাদনা]
ফাল্গুন মাসে একটা জৈবিক উপযোগিতা আছে। প্রকৃতির ঋতুচক্রে এই সময় শীতঋতু শেষ হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন ঘটে। জলবায়ু ও আবহাওয়ার রদবদল ঘটে। শীতের পাতাঝরা গাছের ডালে ডালে নতুন কচি পাতা, মুকুল আসে। আকস্মিক ঋতু পরিবর্তনের জন্য মানবশরীর ভারসাম্যে অভ্যস্ত হওয়ার আগেই জ্বর, সর্দি, কাশি, গা ব্যথা, গলা খুসখুসজনিত ইনফেকশনে আক্রান্ত হতে থাকে। [৪]
ঔষুধি গুন[সম্পাদনা]
পলাশ আয়ুর্বেদিক তথা ভেষজ এই গাছের কুসুম, গুল্ম থেকে সনাতনী প্রথায় রস নিংড়ে গায়ে লেপন করলে ভাল ফল পাওয়া যেত। এক সময় এগুলো ব্যবহৃত হতো মহামারি বসন্তরোগের প্রতিরোধক হিসেবেও। [৪]
বিলুপ্তপ্রায়[সম্পাদনা]
বিলুপ্তি হওয়ার কারণ নির্বিচারে ধ্বংস ও ইট ভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার। তাছাড়া নেই নতুন করে এ গাছ সৃজনের উদ্যোগ। টিকে থাকা অবশিষ্ট গাছগুলোরও হচ্ছে না যথাযথ পরিচর্যা ও সংরক্ষণ। [৪]
চিত্রশালা[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "Butea monosperma (Lam.) Taub."। Germplasm Resources Information Network। United States Department of Agriculture। ২০০৬-০৫-১৮। ২০০৯-০৫-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-২৪।
- ↑ ক খ গ ফাগুনের লাল পলাশ - দৈনিক যুগান্তর (মার্চ ৭, ২০১৫)
- ↑ আওয়াল, শেখ আব্দুল (২০১৯-০৩-১২)। "অরণ্যে অগ্নিশিখা ফোটে বসন্তে লম্বা মঞ্জরি"। দৈনিক জনকণ্ঠ। ঢাকা: এম এ খান মাসুদ। ২০১৯-১০-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৬।
- ↑ ক খ গ মনোনেশ দাস (২০১৭-০৩-০৯)। "পলাশ-শিমুল রক্ষার দাবি পরিবেশবিদদের"। DhakaTimes24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে পলাশ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |