টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে দুইবার ৫ উইকেট লাভকারী ক্রিকেটারদের তালিকা
যখন একজন বোলার কোন একটি ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক ব্যাটসম্যানকে আউট করতে সক্ষম হন, তখন ক্রিকেটের পরিভাষায় তা ‘পাঁচ-উইকেট অর্জন’ নামে পরিচিতি পায়। পাঁচ-উইকেট অর্জনকে ‘ফাইভ-ফর’ বা ‘ফিফার’ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।[১] টেস্ট ক্রিকেট খেলায় এটি একটি অন্যতম সম্পর্কযুক্ত বিষয় কিন্তু অসাধারণ অর্জন হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।[২] সেপ্টেম্বর, ২০২০ সাল পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে বিশ্বের ১৫৬জন ক্রিকেটার পাঁচ-উইকেট অর্জন করতে পেরেছেন।[৩] তন্মধ্যে নয়জন ক্রিকেটার টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে দুইবার ৫ উইকেট লাভ করেছেন। ইংল্যান্ডের চারজন, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের দুইজন এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের একজন এ সম্মাননার অধিকারী।
ইংল্যান্ডের বামহাতি মিডিয়াম পেস বোলার ফ্রেডরিক মার্টিন প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তার অভিষেক টেস্টে দুইবার পাঁচ-উইকেট লাভের বিরল কীর্তিগাথা রচনা করেন। ১৮৯০ সালের অ্যাশেজ সিরিজে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওভালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ৬/৫০ ও ৬/৫২ পান।[৪] মার্টিনের এ অর্জনের তিন বছর পর একই দলের বিপক্ষে অভিষেক দুইবার পাঁচ-উইকেট তুলে নেন টম রিচার্ডসন। ১৮৯৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তিনি ৫/৪৯ ও ৫/১০৭ লাভ করেন।
প্রথম অস্ট্রেলীয় হিসেবে ক্ল্যারি গ্রিমেট তার অভিষেক টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুইবার পাঁচ-উইকেট পান। ১৯২৪-২৫ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত পঞ্চম টেস্টে তিনি ৫/৪৫ ও ৬/৩৭ পান।[৫] তৃতীয় ইংরেজ খেলোয়াড় হিসেবে চার্লস ম্যারিয়ট অভিষেক টেস্টে জোড়া ফিফার লাভ করেন। ১৯৩৩ সালে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১/৯৬ (৫/৩৭ ও ৬/৫৯) পেয়েছিলেন তিনি।[৬] তার এ অবিস্মরণীয় সাফল্য স্বত্ত্বেও আর কখনো টেস্ট ক্রিকেটে তাকে দেখা যায়নি।[৭]
১৯৩৪ সালের অ্যাশেজ সিরিজে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কেন ফার্নেস দুইবার পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। তাস্বত্ত্বেও ইংল্যান্ড দল পরাজিত হয়েছিল।[৮] ১৯৪৮ সালে অ্যাশেজ প্রতিযোগিতার বাইরে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডানহাতি ফাস্ট বোলার হাইঞ্জ জনসন এ কৃতিত্বের অধিকারী। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাবিনা পার্কে ৫/৪১ ও ৫/৫৫ পেয়েছিলেন তিনি।[৯][১০] দক্ষিণ আফ্রিকান মিডিয়াম-ফাস্ট বোলার সিডনি বার্ক সপ্তম খেলোয়াড় হিসেবে জোড়া পাঁচ-উইকেট তুলেন নেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে তিনি এ সফলতা পান।[১১][১২]
সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারতের স্পিন বোলার নরেন্দ্র হিরওয়ানি সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে অভিষেকে দুইবার পাঁচ-উইকেট লাভের কীর্তিগাথা রচনা করেন। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে ৮/৬১ ও ৮/৭৫ বোলিং পরিসংখ্যান করেন।[১৩] এছাড়াও তার এ বোলিং পরিসংখ্যান অদ্যাবধি টেস্টে অভিষেকে সেরা বোলিং পরিসংখ্যানরূপে বিবেচিত হয়ে আসছে।[১৪]
নির্দেশিকা
[সম্পাদনা]প্রতীক | অর্থ |
---|---|
তারিখ | টেস্ট খেলা আয়োজন বা শুরুর তারিখ |
ওভার | ঐ ইনিংসে বোলিংকৃত ওভার সংখ্যা |
রান | রান প্রদান |
উইকেট | উইকেট লাভের সংখ্যা |
ইকোনোমি | বোলিং ইকোনোমি রেট (ওভারপ্রতি গড় রান) |
ব্যাটসম্যান | পাঁচ-উইকেট লাভে ব্যাটসম্যানদের তালিকা |
ফলাফল | ঐ খেলায় বোলারের দলের ফলাফল |
বোলারকে প্রদেয় "ম্যান অব দ্য ম্যাচ" | |
ড্র | খেলাটি ড্র হয়েছিল |
টীকা: নিচের পরিসংখ্যানে শীর্ষে প্রথম ও নিচে দ্বিতীয় ইনিংসের বোলিং পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছে।
অভিষেক টেস্টে দুইবার পাঁচ-উইকেট প্রাপ্তি
[সম্পাদনা]নং | বোলার | তারিখ | মাঠ | প্রতিপক্ষ | ওভার | রান | উইকেট | ইকো. | ব্যাটসম্যান | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | ফ্রেডরিক মার্টিন | ১১ আগস্ট ১৮৯০ | দি ওভাল, লন্ডন, যুক্তরাজ্য | অস্ট্রেলিয়া | ২৭[ক] | ৫০ | ৬ | ২.২২ | জয়[৪] | |
৩০.২[ক] | ৫২ | ৬ | ২.০৫ | |||||||
২ | টম রিচার্ডসন | ২৪ আগস্ট ১৮৯৩ | ওল্ড ট্রাফোর্ড, ম্যানচেস্টার, যুক্তরাজ্য | অস্ট্রেলিয়া | ২৩.৪[ক] | ৪৯ | ৫ | ২.৪৭ | ড্র[১৫] | |
৪৪[ক] | ১০৭ | ৫ | ২.৯১ | |||||||
৩ | ক্ল্যারি গ্রিমেট | ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯২৫ | সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া | ইংল্যান্ড | ১১.৭[খ] | ৪৫ | ৫ | ২.৮৪ | জয়[৫] | |
১৯.৪[খ] | ৩৭ | ৬ | ১.৪২ | |||||||
৪ | চার্লস ম্যারিয়ট | ১২ আগস্ট ১৯৩৩ | দি ওভাল, লন্ডন, যুক্তরাজ্য | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১১.৫ | ৩৭ | ৫ | ৩.১২ | জয়[৬] | |
২৯.২ | ৫৯ | ৬ | ২.০১ | |||||||
৫ | কেন ফার্নেস | ৮ জুন ১৯৩৪ | ট্রেন্ট ব্রিজ, নটিংহাম, যুক্তরাজ্য | অস্ট্রেলিয়া | ৪০.২ | ১০২ | ৫ | ২.৫২ | পরাজয়[৮] | |
২৫ | ৭৭ | ৫ | ৩.০৮ | |||||||
৬ | হাইঞ্জ জনসন | ২৭ মার্চ ১৯৪৮ | সাবিনা পার্ক, কিংস্টন, জ্যামাইকা | ইংল্যান্ড | ৩৪.৫ | ৪১ | ৫ | ২.৫২ | জয়[৯] | |
৩১ | ৫৫ | ৫ | ১.৭৭ | |||||||
৭ | সিডনি বার্ক | ১ জানুয়ারি ১৯৬২ | নিউল্যান্ডস, কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা | নিউজিল্যান্ড | ৫৩.৫ | ১২৮ | ৬ | ২.৩৭ | পরাজয়[১১] | |
২৭.১ | ৬৮ | ৫ | ২.৫৫ | |||||||
৮ | বব ম্যাসি | ২২ জুন ১৯৭২ | লর্ডস, লন্ডন, যুক্তরাজ্য | ইংল্যান্ড | ৩২.৫ | ৮৪ | ৮ | ২.৫৫ | জয়[১৬] | |
২৭.২ | ৫৩ | ৮ | ২.৩৮ | |||||||
৯ | নরেন্দ্র হিরওয়ানি | ১১ জানুয়ারি ১৯৮৮ | এম. এ. চিদাম্বরম স্টেডিয়াম, মাদ্রাজ, ভারত | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১৮.৩ | ৬১ | ৮ | ৩.২৯ | জয়[১৩] | |
১৫.২ | ৭৫ | ৮ | ৪.৮৯ | |||||||
উৎস:[১৭] ১১ জুন, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত |
পাদটীকা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Swinging it for the Auld Enemy – An interview with Ryan Sidebottom"। The Scotsman। ১৭ আগস্ট ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০০৯।
... I'd rather take fifers (five wickets) for England ...
- ↑ Pervez, M. A. (২০০১)। A Dictionary of Cricket। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 31। আইএসবিএন 978-81-7370-184-9।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Overall figures"। ESPNcricinfo। ৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ ক খ "Australia tour of England, 2nd Test: England v Australia at The Oval, Aug 11–12, 1890"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ "England tour of Australia, 5th Test: Australia v England at Sydney, Feb 27 – Mar 4, 1925"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ "West Indies tour of England, 3rd Test: England v West Indies at The Oval, Aug 12–15, 1933"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Charles Marriott"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ ক খ "Australia tour of England, 1st Test: England v Australia at Nottingham, Jun 8–12, 1934"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ "England tour of West Indies, 4th Test: West Indies v England at Kingston, Mar 27 – Apr 1, 1948"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Hines Johnson"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ ক খ "New Zealand tour of South Africa, 3rd Test: South Africa v New Zealand at Cape Town, Jan 1–4, 1962"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Sydney Burke"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ ক খ "West Indies tour of India, 1987/88 – 4th Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/Overall figures (best bowling performance in a match on Test debut)"। ESPNcricinfo। ২৭ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Australia tour of England, 3rd Test: England v Australia at Manchester, Aug 24–26, 1893"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Australia tour of England and Scotland, 2nd Test: England v Australia at Lord's, Jun 22–26, 1972"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Players Taking 5 Wickets in Innings in Debut Match"। HowSTAT!। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১৬।