বিষয়বস্তুতে চলুন

নোয়েল ম্যাকগ্রিগর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নোয়েল ম্যাকগ্রিগর
১৯৬১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে নোয়েল ম্যাকগ্রিগর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
স্পেন্সার নোয়েল ম্যাকগ্রিগর
জন্ম(১৯৩১-১২-১৮)১৮ ডিসেম্বর ১৯৩১
ডুনেডিন, ওতাগো, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু২১ নভেম্বর ২০০৭(2007-11-21) (বয়স ৭৫)
ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬৯)
১১ মার্চ ১৯৫৫ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৯ জানুয়ারি ১৯৬৫ বনাম পাকিস্তান
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৫ ১৪৮
রানের সংখ্যা ৮৯২ ৬,৫৭৩
ব্যাটিং গড় ১৯.৮২ ২৫.৪৭
১০০/৫০ ১/৩ ৫/৩৮
সর্বোচ্চ রান ১১১ ১১৪*
বল করেছে ৩২১
উইকেট
বোলিং গড় ৪৭.৩৩
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৯/– ৭৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২০ এপ্রিল ২০২০

স্পেন্সার নোয়েল ম্যাকগ্রিগর (ইংরেজি: Noel McGregor; জন্ম: ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৩১ - মৃত্যু: ২১ নভেম্বর, ২০০৭) ওতাগোর ডুনেডিন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৫ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওতাগো দলের প্রতিনিধিত্ব করেন নোয়েল ম্যাকগ্রিগর। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৪৭-৪৮ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত নোয়েল ম্যাকগ্রিগরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। বিনোদনধর্মী ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন নোয়েল ম্যাকগ্রিগর। দুই দশকের অধিক সময় তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান ছিল।

ডুনেডিনে জন্মগ্রহণকারী নোয়েল ম্যাকগ্রিগর ওতাগোর পক্ষে খেলতেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন তিনি ও স্ট্রোক মারার দিকেই তার অধিক ঝোঁক ছিল। প্লাঙ্কেট শীল্ড প্রতিযোগিতায় ১৭ বছর বয়সে খেলতে নেমে প্রথম বলেই চার মেরে যাত্রা শুরু করেন। এরপর, টম বার্টের ঐ একই ওভার থেকে আরও দুইটি বাউন্ডারি মেরেছিলেন তিনি।[] ১৯৬৮ সালে নিউজিল্যান্ড অ্যালমেনাক কর্তৃক বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের সম্মাননায় ভূষিত হন।

১৯৪৭-৪৮ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত ওতাগোর পক্ষে ৯০টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২৭.৬৫ গড়ে ৪,২৫৯ রান তুলেন। সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে পাঁচটি শতরানের ইনিংস খেলতে সমর্থ হন। তন্মধ্যে, ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ১১৪ রানের ইনিংস খেলে ওতাগোকে সাত উইকেটের ব্যবধানে জয় এনে দেন। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতে নোয়েল ম্যাকগ্রিগর।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পঁচিশটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন নোয়েল ম্যাকগ্রিগর। ১১ মার্চ, ১৯৫৫ তারিখে ডুনেডিনে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৯ জানুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে অকল্যান্ডে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। এ পর্যায়ে দলটি মাত্র ২৬ রানে গুটিয়ে যায়। এ সংগ্রহটি দলীয় পর্যায়ে সর্বনিম্ন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তবে, পরের মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ নেন। এরফলে, নিউজিল্যান্ড দল প্রথমবারের মতো টেস্টে জয় পায়।[]

দীর্ঘদিন টেস্ট ক্রিকেট আঙ্গিনায় সরব থাকলেও মাত্র একটি শতরান করতে পেরেছিলেন। ১৯৫৫ সালে নিউজিল্যান্ড দলের সাথে পাকিস্তান গমন করেন। লাহোর টেস্টে চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ক্রিজ আঁকড়ে ছিলেন। তাসত্ত্বেও তার দল স্বাগতিকদের কাছে পরাজয়ের শিকার হয়। এছাড়াও, এ ইনিংসটি তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের একমাত্র শতরান ছিল।[] ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে ভারত ও পাকিস্তান গমনে ২৫ গড়ে ৩০০ রান তুলেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন

[সম্পাদনা]

১৯৬১-৬২ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। এ সিরিজে তিনি তিনটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। ড্র হওয়া ঐ সিরিজে ২৪ গড়ে ২৪২ রান তুলেছিলেন। সব মিলিয়ে ঐ সফরের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়ে ৭০৯ রান তুলেছিলেন নোয়েল ম্যাকগ্রিগর। কেপ টাউনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন তিনি। ৬৮ ও ২০ রান তুলে বিদেশে নিউজিল্যান্ডের প্রথম বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নিজ দেশে টেস্ট জয়ের পাঁচ মৌসুম পর দলটি প্রথম জয় দেখে। এ সময়ে দলটি মিশ্রতায় পূর্ণ সময় অতিবাহিত করছিল।

পোর্ট এলিজাবেথে সিরিজের পঞ্চম টেস্টে তার ভূমিকা নগণ্য ছিল। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ ও ২৫ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও, নিউজিল্যান্ড দল আবারও জয়ের সন্ধান পায়। জন রিডজ্যাক অ্যালাব্যাস্টারের সাথে তিনি নিউজিল্যান্ডের প্রথম তিন টেস্ট জয়ে অংশ নিয়েছিলেন।[]

১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিন টেস্ট খেলার জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পদার্পণ ঘটে। তিন টেস্টের সবকটিতে অংশ নিয়ে ২৮.০০ গড়ে ১৬৮ রান তুলেন। প্রায় দশ বছর পর সফররত দক্ষিণ আফ্রিকানদের বিপক্ষে এ গড়কে ২৮-এ নিয়ে যান। তন্মধ্যে, অকল্যান্ড টেস্টে ৬৮ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। কেবলমাত্র ব্যারি সিনক্লেয়ার রান সংগ্রহ ও গড়ের দিক দিয়ে তারচেয়ে এগিয়েছিলেন।[] ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই টেস্টে অংশ নেন তিনি।

মূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

বার্ট সাটক্লিফ তার ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে মন্তব্য করেন যে, হাল্কাভাবে দেখলে তার পাগুলো নৃত্যরত ও প্রায় শটে পূর্ণ ছিল।[] ডিক ব্রিটেনডেন ১৯৬১ সালে তার সম্পর্কে লিখেছিলেন যে, তিনি প্রায়শঃই আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন ও স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছোটাতেন। বোলারদের মাথাব্যথার কারণ ছিলেন। তবে, প্রায়শঃই তিনি তার প্রতিভাকে বিকশিত হতে দেননি।[]

১৯৬১-৬২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে দলীয় ব্যবস্থাপক গর্ডন লেগাট তার সম্পর্কে বলেন যে, দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। এক পর্যায়ে তাকে মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেই শতরানের ইনিংস খেলবেন বলে ধারণা করা হলেও সকালের নাস্তার পূর্বেই তাকে ফিরে আসতে দেখা যেতো।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

দীর্ঘদিন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার পর অবসর নিয়ে ৫৮ বছর বয়সেও ক্লাব ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। এছাড়াও, শীর্ষস্থানীয় আঞ্চলিক বোলস প্রশাসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হন। ২১ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় নোয়েল ম্যাকগ্রিগরের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. R.T. Brittenden, New Zealand Cricketers, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1961, p. 110.
  2. Cameron, Don (১৪ ডিসেম্বর ২০০৮)। "McGregor catches Weekes"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৯ 
  3. Wisden 1957, p. 819.
  4. Geoffrey Chettle, "New Zealand in South Africa, 1961-62", Wisden 1963, pp. 899–912.
  5. "South Africa in Australia and New Zealand, 1963-64", Wisden 1965, pp. 818–842.
  6. Wisden 2008, p. 1567.
  7. Brittenden, p. 111.
  8. R. S. Whitington, John Reid's Kiwis, Whitcombe & Tombs, Christchurch, 1962, p. 162.

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]