ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ | |
---|---|
মহানগর | |
ময়মনসিংহের স্কাইলাইন বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু ২ বড় মসজিদ জয়নুল আবেদীন পার্ক | |
ডাকনাম: মোমেনশাহী, মোমিসিং, মইশিং, নাসিরাবাদ। | |
ময়মনসিংহর অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৫′১৪″ উত্তর ৯০°২৪′১১″ পূর্ব / ২৪.৭৫৩৮৯° উত্তর ৯০.৪০৩০৬° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
জেলা | ময়মনসিংহ জেলা |
প্রতিষ্ঠা | ১৭৮৭ |
সরকার | |
• ধরন | মেয়র - কাউন্সিলর |
• শাসক | ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন |
আয়তন | |
• স্থলভাগ | ৯১.৩১৫ বর্গকিমি (৩৫.২৫৭ বর্গমাইল) |
• মহানগর | ৯১.৩১৫ বর্গকিমি (৩৫.২৫৭ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১৯ মিটার (৬২ ফুট) |
জনসংখ্যা | |
• মহানগর | জনসংখ্যা : ৫,৭৬,৭২২ জন (ডিজিটাল জনশুমারী ও গৃহগণনা−২,০২২) |
সময় অঞ্চল | বাংলাদেশ মান সময় (ইউটিসি+৬) |
পোস্টাল কোড | ২২০০, ২২০১, ২২০২, ২২০৩, ২২০৪, ২২০৫, ২২০৬, ২২০৭, ২২০৮ |
এলাকা কোড | ২২০০, ২২০১, ২২০২, ২২০৩, ২২০৪, ২২০৫, ২২০৬, ২২০৭, ২২০৮ |
টেলিফোন কোড | +৮৮০৯১ |

ময়মনসিংহ বাংলাদেশের অষ্টম বিভাগীয় শহর ও ১২ তম সিটি কর্পোরেশন। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন আয়তনে দেশের ৭ম এবং জনসংখ্যায় ৮ম বৃহত্তম মহানগর। ২০২২ সালের ডিজিটাল জনশুমারী ও গৃহগণনা অনুযায়ী ময়মনসিংহ মহানগরের স্থায়ী জনসংখ্যা ৫,৭৬,৭২২ জন।

ভৌগোলিক পরিচিতি

ময়মনসিংহ জেলা ২৪°০২'০৩" থেকে ২৫°২৫'৫৬" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৯'০০" থেকে ৯১°১৫'৩৫" পূর্ব দ্রাঘিমাংশের অবস্থিত। সর্বশেষ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ (১৯৭১) অনুযায়ী এটি ৫,০৩৯.৭৬ বর্গ মাইল (১৩,০৫২.৯২ বর্গ কিলোমিটার) ব্যাপী একটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত।
ময়মনসিংহ শহর তার উত্তর বরাবর প্রবাহিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী দ্বারা পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত। ব্রহ্মপুত্র নদটি এই বিভাগের প্রধান নদী, যা ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের প্রভাবে নদের তলদেশ উত্থিত হয়ে এখন মৃত প্রায়।
নামকরণ
ময়মনসিংহ জেলার নামকরণ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। আর ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তার পুত্র সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহ'র জন্য এ অঞ্চলে একটি নতুন রাজ্য গঠন করেছিলেন, সেই থেকেই নসরতশাহী বা নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি। মুসলিম যুগের উৎস হিসেবে নাসিরাবাদ নামটিও আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কোথাও উল্লেখ করা হচ্ছে না। ১৭৭৯-তে প্রকাশিত রেনেল এর ম্যাপে মোমেসিং নামটি বর্তমান 'ময়মনসিংহ' অঞ্চলকেই নির্দেশ করে। তার আগে আইন-ই-আকবরীতে 'মিহমানশাহী' এবং 'মনমনিসিংহ' সরকার বাজুহার পরগনা হিসাবে লিখিত আছে; যা বর্তমান ময়মনসিংহকেই ধরা যায়। এসব বিবেচনায় বলা যায় সম্রাট আকবরের রাজত্ব কালের পূর্ব থেকেই ময়মনসিংহ নামটি প্রচলিত ছিলো। ব্রিটিশ আমলে জেলা পত্তন কালে ময়মনসিংহ অঞ্চলের সমৃদ্ধ জমিদারগণ সরকারের কাছে জেলার নাম 'ময়মনসিংহ' রাখার আবেদন করলে সরকার তা গ্রহণ করে নেন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আবার অনেকে মনে করেন, ময়মনসিংহ নামকরণ করা হয় সম্রাট আকবরের প্রধান সেনাপতি মান সিংহের নাম অনুসারে। সেনাপতি মান সিংহকে সম্রাট আকবর এ অঞ্চলে পাঠান বার ভূইয়ার প্রধান ঈশা খাঁ-কে পরাজিত করার জন্য। সেনাপতি মান সিংহ ময়মনসিংহে ঘাঁটি স্থাপন করে। পরবর্তীতে ঈশা খাঁর কাছে মান সিংহ পরাজিত হয়। আরও একটি মতবাদ প্রচলিত আছে যে, তুর্কী ইসলাম প্রচারক শাহ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী (শাহ সুলতান রুমী) তাঁর এক শিষ্য মোমেন শাহকে এই অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব দেন। অনেকের ধারণা এই নাম থেকেই মোমেনশাহী ও পরে ময়মনসিংহ নামকরণ হয়ে থাকতে পারে। এর যুক্তিতে ১০৫৩ খ্রিস্টাব্দে শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমীর আগমনের কথা উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে এখানে মুসলিম বিজয় ও শাসনের গোড়াপত্তন হয়।
ইতিহাস
১ মে, ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলা গঠিত হয় যার প্রথম কালেক্টর ছিলেন মি. এফ লি গ্রোস। এর আগে খাগডহর ইউনিয়নের বেগুনবাড়ীর কোম্পানির কুঠিসহ বিভিন্ন জায়গায় কাচারী বসত ছিল। কুঠি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হলে শহরের উত্তর অংশে খাগডহরে কাচারী স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনের কারণে সেই উদ্যোগও ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুরের দক্ষিণে কাওনা নদীর তীরে 'দগদগা' নামক প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্রে জেলা শহর স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঐ অঞ্চলের জমিদাররা এই সিন্ধান্তের বিরোধিতা করে। কর্তৃপক্ষ তাই ১৭৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেহড়া মৌজায় নাসিরাবাদ নাম দিয়ে জেলা শহরের পত্তন হয়। শহর স্থাপিত হওয়ার পর ৮ই এপ্রিল, ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে পৌরসভা গঠিত হয় নাসিরবাদ মিউনিসিপ্যালিটি। বঙ্গদেশে এটি প্রথম এবং উপমহাদেশে এটি ছিল দ্বিতীয় পৌরসভা। মি. আরপর্চা ছিলেন পৌরসভার প্রথম অফিসিয়াল চেয়ারম্যান। প্রথম নন অফিশিয়াল চেয়ারম্যান ছিলেন চন্দ্রকান্ত ঘোষ।[১] কালেক্টরেট ভবন ছিল ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রবিন্দু। ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে সরকারী ডাক ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়। ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে জেলা বোর্ড গঠন করা হয়। প্রথম সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করা হয় ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে। ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রথম মুদ্রিত পুস্তক প্রকাশিত হয় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে। ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রথম ইংরেজি স্কুল। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে। জেলার প্রথম আদম শুমারী পরিচালিত হয় ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে। টেলিগ্রাফ অফিস স্থাপন ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে॥ ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ চালু ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে, এবং ময়মনসিংহ-জগন্নাথগঞ্জ রেলপথ চালু হয় ১৮৬৫ সনে। ১৯০৫ সালে নাসিরবাদ নাম বদলে ময়মনসিংহ পৌরসভা নামকরণ হয়। ১৯১০ সালে পৌরসভার একতলা পাকা ভবন নির্মাণ হয় যেটি এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে।[১]
১৯৭১-এর ২৫ মার্চে ঢাকা শহরে গণহত্যা শুরুর অব্যবহিত পরে ময়মনসিংহের সংগ্রামী জনতা খাগডহর তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প ঘেরাও করে এবং বাঙ্গালী ইপিআর সদস্যদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এ যুদ্ধে ইপিআর সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের ড্রাইভার পুত্র আবু তাহের মুকুল শাহাদাৎ বরণ করেন। মূলতঃ এই যুদ্ধের পর পরই ময়মনসিংহের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত সীমান্ত ফাঁড়িগুলি বাঙ্গালী বিডিআর-দের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। নিহত পাক সেনাদের লাশ নিয়ে ময়মনসিংহবাসী বিজয় মিছিল করতে থাকে ও ধৃত অন্যান্য পাকসেনাদের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলখানায় প্রেরণ করা হয়। যুদ্ধ চলাকালে এক সকালে পুরাতন বিডিআর ভবনের ৩য় তলার শীর্ষে হাজার হাজার লোকের জয় বাংলা ধ্বনির মধ্যে বাংলাদেশের নকশা খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়।
প্রশাসন
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের আটটি প্রশাসনিক বিভাগের একটির সদর দপ্তর। বিভাগীয় কমিশনার, যিনি ময়মনসিংহ বিভাগের প্রশাসনিক প্রধান, ময়মনসিংহ বিভাগের ডিআইজি এবং অন্যান্য বিভাগীয় বেসামরিক কর্মচারীদের শহরে নিজস্ব অফিস রয়েছে, যা সরকারি প্রশাসনিক কাঠামোর অংশ হিসেবে কাজ করে। ময়মনসিংহ জেলার প্রশাসনিক প্রধান ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), সিভিল সার্জন এবং অন্যান্য জেলা পর্যায়ের বেসামরিক কর্মচারীদের শহরে তাদের অফিস রয়েছে।

একজন মেয়র এবং ওয়ার্ড কমিশনার সরাসরি ভোটের মাধ্যমে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন শহর পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত প্রশাসনিক কাজের জন্য দায়ী।

জনসংখ্যা
২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে ১,৩৫,৪৯৫টি পরিবার এবং ৫,৭৭,০০০ জন জনসংখ্যা ছিল। জনসংখ্যার ১৬.৬৫% ছিল ১০ বছরের কম বয়সী। ৭ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য ময়মনসিংহে সাক্ষরতার হার ৮৪.৪১% এবং লিঙ্গ অনুপাত ছিল প্রতি ১০০ জন মহিলার জন্য ১০৩.৬১ জন পুরুষ।
বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯৯১ | ১,৮৮,৭১৩ | — |
২০০১ | ২,২৭,২০১ | +২০.৪% |
২০১১ | ২,৫৮,০৪০ | +১৩.৬% |
২০২২ | ৫,৭৭,০০০ | +১২৩.৬% |
sources:citypopulation.de |
আবহাওয়া ও জলবায়ু
ময়মনসিংহের জলবায়ু ঢাকার তুলনায় সামান্য ঠান্ডা, কারণ এটি হিমালয়ের কাছাকাছি, এবং বাংলাদেশের আরও দক্ষিণে পাওয়া গ্রীষ্মমন্ডলীয় সাভানা বা গ্রীষ্মমন্ডলীয় মৌসুমি জলবায়ুর পরিবর্তে বর্ষা-প্রভাবিত আর্দ্র উপ-ক্রান্তীয় জলবায়ু (কোপেন সিডব্লিউএ) হওয়ার জন্য যথেষ্ট। বর্ষাকাল মে বা জুন মাসে শুরু হয় এবং আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং কখনও কখনও দিন এবং সপ্তাহ ধরে। বর্ষাকালে, তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩১ °C (৭৭.০ এবং ৮৭.৮ °F) এর মধ্যে পরিবর্তিত হয়। শীতকালে তাপমাত্রা ১৫ °C (৫৯ °F) এর নিচে নেমে যায় যা ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি জুড়ে বিস্তৃত থাকে এবং নভেম্বর এবং ফেব্রুয়ারি পর্যন্তও হতে পারে। এপ্রিল-মে সময়কালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অনুভূত হয়, যেখানে এটি ৪০ °C (১০৪ °F) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এই সময়কালে উচ্চ আর্দ্রতা প্রচুর ঘাম সৃষ্টি করে। পশ্চিমা ভ্রমণকারীদের জন্য, ভ্রমণের সেরা সময় হল নভেম্বর এবং ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি।

অর্থনীতি
ঐতিহাসিকভাবে, ময়মনসিংহ জেলা পাট উৎপাদনের জন্য পরিচিত ছিল যাকে 'সোনালী আঁশ' বলা হত কারণ এটি অর্থকরী ফসল হিসেবে আয় করত। পলিথিন ব্যাগের উচ্চ চাহিদা এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কারণে, পাট শিল্প উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ময়মনসিংহ ময়মনসিংহ বিভাগের রাজধানী হওয়ায়, শহরের কর্মীদের একটি বড় অংশ সরকারি কর্মচারীদের। ময়মনসিংহে অদক্ষ এবং আধা-দক্ষ শ্রমিকদের একটি বিশাল সংখ্যাও রয়েছে, যারা মূলত হকার, রিকশাচালক, ট্যাক্সি ড্রাইভার, মেকানিক এবং অন্যান্য এই জাতীয় পেশার মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষি হল জিডিপিতে অবদান রাখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র, তারপরে শহরের ক্রমবর্ধমান পরিষেবা খাত। স্থানীয় এবং বিশ্ব বাজারে মাছের ক্রমবর্ধমান চাহিদা স্থানীয় জেলেদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের জন্য ময়মনসিংহে মাছ ধরার সুযোগ তৈরি করেছে এবং আজ এটি অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসংখ্যার বেশিরভাগই তাদের ধানের ক্ষেত পুকুরে পরিণত করেছে এবং মাছ চাষ করছে। শীতকালে খুব বড় আকারে পৌঁছানো চিংড়ি, ময়মনসিংহে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়।
দুর্গাবাড়ি রোড এবং মহারাজা রোডের মধ্যবর্তী পুরো এলাকাটি ঐতিহ্যবাহী শপিং এলাকা নিয়ে গঠিত। এই এলাকার মধ্যে গাঙ্গিনারপাড়, বড় বাজার, ছোট বাজার, মেচুয়া বাজারের মতো জায়গা রয়েছে। জিলাপি প্যাটির মতো জায়গা রয়েছে যেখানে জিলাপি তৈরি এবং বিক্রি করা হয়। নতুনবাজার থেকে রেলস্টেশন এবং সি.কে. ঘোষ রোড থেকে চরপাড়া যাওয়ার প্রধান রাস্তায় উৎপাদিত পণ্য এবং পোশাকের বেশ কিছু দোকান রয়েছে।

জনসাধারণের জন্য উপযোগী পরিষেবা
বিদ্যুৎ
বিভাগ-পূর্ব ভারতে প্রতিষ্ঠিত এই শহরের নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা ছিল। বাতিরকল নামক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জেলা আদালতের কাছে অবস্থিত ছিল এবং পেট্রোলিয়াম ব্যবহার করে ডিসি বিদ্যুৎ উৎপাদন করত। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে, ময়মনসিংহ কেওয়াটখালীতে একটি বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ গ্রিডের সাথে সংযুক্ত ছিল। এখানে আর ডিসি বিদ্যুৎ নেই। ২২০ ভোল্টেজের এসি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ২০ শতকের গোড়ার দিকে ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশনের নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা ছিল যা ১৯৭০-এর দশকে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এখন, কেওয়াটখালীতে একটি ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
সম্প্রতি রুরাল পাওয়ার কোং লিমিটেড শম্ভুগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদীর পাশে ২১০ মেগাওয়াট (৪টি গ্যাস টারবাইন ৩৫ মেগাওয়াট এবং একটি ৭০ মেগাওয়াট স্টিম টারবাইন) কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে।
পানি সরবরাহ
মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য ময়মনসিংহ ওয়াটার ওয়ার্কস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা শহরের প্রথম জল সরবরাহ ব্যবস্থা। তিনি তাঁর স্ত্রী রাজ রাজেশ্বরী দেবীর স্মরণে এই ওভারহেড ওয়াটার ওয়ার্কসটি নির্মাণ করেছিলেন। রাধাসুন্দরী স্কুলের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এখনও বিশুদ্ধকরণ এবং পরিশোধন ব্যবস্থা সহ ওয়াটার ওয়ার্কসের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। গাঙ্গিনারপার ক্রসিংয়ে এখনও একটি ওভারহেড ওয়াটার রিজার্ভার রয়েছে। পরবর্তীকালে একটি ভূগর্ভস্থ জল বিতরণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছিল। এছাড়াও, পথচারীদের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন স্থানে হাইড্রেন্ট স্থাপন করা হয়েছিল। তবে, ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত পৃথক বাড়িতে সংযোগ না থাকায় হাইড্রেন্টগুলি সকলের জন্য বিশুদ্ধ জলের উৎস ছিল। ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত অনেক মানুষ স্নানের জন্য নিকটবর্তী পুকুরে যেত এবং অনেক বাড়িতে ভূগর্ভস্থ জল সংগ্রহের জন্য কূপ ডুবে যেত।
রাজ রাজেশ্বরী ওয়াটার ওয়ার্কস, যা উন্মুক্ত বায়ু জল শোধনাগার ছিল, এখন একটি ঐতিহ্যবাহী ভূমি চাষীদের দ্বারা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এই প্ল্যান্টের পরিচালনার বর্তমান সম্ভাবনাও হারিয়ে ফেলেছে। তবে বর্তমানে শহরে সিটি করপোরেশনের অধীন বেশ কিছু পানির ট্যাংক রয়েছে।
বিচার বিভাগ
বিচার বিভাগের প্রধান মামলা হলো জমি সংক্রান্ত মামলা। জেলা জজ আদালত এবং এর অধীনস্থ আদালতগুলি ন্যায়বিচার প্রদান করে। জেলা জজ হলেন জেলা বিচার বিভাগের প্রধান। অন্নদা শঙ্কর রায় ১৪ জানুয়ারী ১৯৪৬ থেকে ৩ অক্টোবর ১৯৪৬ পর্যন্ত ময়মনসিংহের ৩২তম জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জেলা কালেক্টরেটের আশেপাশে আদালতগুলি অবস্থিত। বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান, অর্থাৎ জেলা প্রশাসক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলি তাঁর তত্ত্বাবধানে থাকে। ২০০৮ সালে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলিকে জেলা জজের নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করা হয়। এটা লক্ষ্য করা মজার যে সরকার চায়নি যে বিচারকরা সামাজিকভাবে মেলামেশা করুন এবং এর ফলে প্রভাবিত হন। তাদের চলাচল সীমিত করার জন্য, তাদের মোটর গাড়ি দেওয়া হয়নি যদিও পদমর্যাদার দিক থেকে তারা জেলার শীর্ষ আমলা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চেয়ে কম ছিলেন না। এমনকি ১৯৫০-এর দশকেও জেলা জজ পুলিশ লাইনের কাছে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তার বাসভবন থেকে সাইকেল চালিয়ে আদালতে আসতেন। ১৯৮০-এর দশকে রাষ্ট্রপতি এরশাদের সরকার জেলা জজদের জন্য একটি গাড়ি অনুমোদন করে।
ডাক পরিষেবা
প্রধান ডাকঘরটি আদালত ভবনের কাছে অবস্থিত। স্বদেশী বাজারের কাছে একটি রাতের ডাকঘর রয়েছে। বহির্গামী ডাক জিনিসপত্র পরিচালনা করে রেলওয়ে ডাক পরিষেবা, সংক্ষেপে আরএমএস, যা ময়মনসিংহ জংশনের ঠিক বাইরে অবস্থিত একটি ডাকঘর। ডাকপিয়ন খাকি পোশাক পরে এবং চামড়ার ব্যাগে চিঠি বহন করে। সে ঘরে ঘরে ঘুরে বেড়ায়। বাড়িগুলিতে হয় কোনও নম্বর নেই অথবা নম্বরগুলি ধারাবাহিকভাবে সাজানো নেই। বেশিরভাগ বাড়িতে কোনও চিঠির বাক্স নেই। ডাকপিয়ন দরজায় কড়া নাড়ে এবং হাতে-কলমে জিনিসপত্র পৌঁছে দেয়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ময়মনসিংহ শহরে কিছু পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও সুনাম রয়েছে।
ময়মনসিংহের উল্লেখযোগ্য স্কুল সমূহ:
- ময়মনসিংহ জিলা স্কুল
- বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরী হাই স্কুল, ময়মনসিংহ
- ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়, মোমেনশাহী সেনানিবাস
- মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
- প্রগ্রেসিভ মডেল স্কুল
- নাসিরাবাদ কলেজিয়েট স্কুল
- পুলিশ লাইন হাই স্কুল
- ময়মনসিংহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মোমেনশাহী ক্যান্টনমেন্ট
ময়মনসিংহের উল্লেখযোগ্য স্কুল এন্ড কলেজ সমূহ:
- ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, মোমেনশাহী
- ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ
- মুসলিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ
- বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, ময়মনসিংহ
- মহাকালী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ
- কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের উল্লেখযোগ্য কলেজ সমূহ:
- আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ
- মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ
- ময়মনসিংহ সরকারি কলেজ
- শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ
- নটরডেম কলেজ ময়মনসিংহ
- নাসিরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
- আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজ
- কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
- ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- হাজী কাশেম আলী কলেজ
- ময়মনসিংহ কমার্স কলেজ
- ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয়
- এডভান্সড রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ
- ময়মনসিংহ মহিলা ডিগ্রি কলেজ
- ব্রহ্মপুত্র রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ
- ফ্লোরেস কলেজ, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ:
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ
- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
- ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ


সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
এখানে উদীচী, নজরুল একাডেমি, শিল্পকলা একডেমী সহ আরও বেশ কিছু সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও তারুণ্যভিত্তিক সংগঠন হিসেবে ময়মনসিংহে কাজ করছে "জয় বাংলা ইয়ুথ এওয়ার্ড ২০২১" বিজয়ী প্রতিষ্ঠান প্রজন্ম।
দর্শনীয় স্থানসমূহ


দর্শনীয় স্থাপত্যসমূহ:
- শশী লজ (মহারাজা শশীকান্ত আচার্য্য চৌধুরির বাসভবন)
- গৌরিপুর লজ (সোনালি ব্যাংক হেড অফিস সাবেক গৌরিপুরের জমিদারদের বাসভবন)
- বড় মসজিদ, ময়মনসিংহ (স্থাপিত- ১৮৫০/১৮৫২ সাল)
- ময়মনসিংহ জাদুঘর (প্রত্নতত্ত্ব)
- হাসান মঞ্জিল (ধনবাড়ি জমিদারদের শহরের বাড়ি)
- মাথাভাঙ্গা মঠ, ময়মনসিংহ শহর ( ১৮ শতক)
- শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা
- আলেকজান্ডার ক্যাসেল (লোহার কুটি), ময়মনসিংহ শহর
- স্বাধীনতা স্তম্ভ বা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ
- মদিনা মসজিদ, চর খরিচা, ময়মনসিংহ
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
- বাংলাদেশ মৎস্য জাদুঘর, বাকৃবি, ময়মনসিংহ
- কৃষি জাদুঘর, বাকৃবি, ময়মনসিংহ
- মুক্তা গবেষণা ইন্সটিটিউট, বাকৃবি, ময়মনসিংহ
- জার্মপ্লাজম সেন্টার, বাকৃবি, ময়মনসিংহ
- কেওয়াটখালী দ্বিতল রেললাইন, ময়মনসিংহ
- আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ (১৯০৮)
- এস কে হাসপাতাল (মহারাজা সূর্যকান্ত কালাজ্বর গবেষণা কেন্দ্র)
- তালজাঙ্গা হাউজ (তালজাঙ্গা জমিদারের শহরের বাসা বর্তমানে মিন্টু কলেজ, ), ময়মনসিংহ শহর
- চাকলাদার হাউজ (বর্তমান সেহরা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ), ময়মনসিংহ শহর
- রামগোপাল জমিদারের শহরের বাড়ি , কালিবাড়ি রোড, ময়মনসিংহ শহর
- বুধা বাবুর জমিদার বাড়ি( বর্তমানে খামার বাড়ি) ,মহারাজা রোড, ময়মনসিংহ শহর
- জমিদার মদন বাবুর বাড়ি (সাবেক ময়মনসিংহ প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর), ময়মনসিংহ শহর
- মসুয়ার জমিদারের শহরের বাড়ি, হরিকিশোর রায় রোড, ময়মনসিংহ
- দূর্গাবাড়ি মন্দির (১৮৬৭), ময়মনসিংহ
- নাটোর জমিদারের শহরের বাড়ি, মৃত্যুঞ্জয় স্কুল সংলগ্ন, ময়মনসিংহ শহর
- করোটিয়া জমিদারের শহরের বাড়ি, খান বাহাদুর ঈসমাইল রোড, ময়মনসিংহ শহর
- নারায়নডহের জমিদারের শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- গাঙ্গাটিয়া জমিদারের শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- বৈলর জমিদারের শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- আঠারোবাড়ি বিল্ডিং, আঠারোবাড়ি জমিদারের শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- অঘোর বন্ধু গুহের বাড়ি (ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয়), ময়মনসিংহ শহর
- আমবাড়িয়া স্টেট জমিদারের শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- সুসং দূর্গাপুরের রাজার শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- ডোহাখলা জমিদারের শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- গোলকপুর জমিদারের শহরের বাড়ি, ময়মনসিংহ শহর
- ধিৎপুর জমিদারের শহরের বাসভবন , ময়মনসিংহ
- ময়মনসিংহ চিড়িয়াখানা
- ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার (১৭৯২)
- বিজিবি পার্ক, ময়মনসিংহ
- বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু (ব্রহ্মপুত্র সেতু)
- সুতিয়াখালী সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র, ময়মনসিংহ
- বড় কালীবাড়ি মন্দির।
দর্শনীয় উদ্যানসমূহ:
- শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যান
- বোটানিক্যাল গার্ডেন, বাকৃবি
- বিপিন পার্ক (২০০ বছরের পুরোনো)
- ঐতিহাসিজ সার্কিট হাউস ময়দান (আয়তন ১৬ একর)
- আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দান
উপসনালয়
সমগ্র শহর জুরেই আছে মসজিদ, মন্দির, গির্জা। বড় মসজিদ, ভাটি কাশর মসজিদ, মদিনা মসজিদ,(চরখরিচ), পাঁচবাগ জামে মসজিদ,(ময়মনসিংহ সদর) ভাটি কাশর মসজিদ,খাগডহর শাহী মসজিদ,কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,বি.জি.বি মসজিদ,গলগন্ডা মসজিদ,কাজিবাড়ি জামে মসজিদ,কাঁচি ঝুলি জবেদ আলী রোড জামে মসজিদ,টাউন হল মোর জামে মসজিদ,বাঘমারা জামে মসজিদ,কৃষ্টপুর মদিনা মসজিদ,দারুস সালাম জামে মসজিদ,সেহড়া ডি.বি. রোড জামে মসজিদ,ময়মনসিংহ মারকাজ মসজিদ,উজান বাড়েরা বায়তুন নূর জামে মসজিদ,শাহী জামে মসজিদ,হাক্কানি আঞ্জুমান মসজিদ,বইলর ঈদগাহ জামে মসজিদ,ত্রিশাল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ,তারাকান্দা নদীর পার মসজিদ,হালুয়া ঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠ,ভালুকা থানা জামে মসজিদ, ছোট কালীবাড়ি মন্দির, বড় কালীবাড়ি মন্দির, দশভুজা বাড়ি মন্দির, বিশ্বনাথ মন্দির, শিব বাড়ি মন্দির, দুর্গা বাড়ি মন্দির, অনন্তময়ী মন্দির, অনুকূল ঠাকুরের মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, লোকনাথের আশ্রম, মাসকান্দা পাদ্রি মিশন গির্জা, গুরুদুয়ারা শিখ, ব্রাহ্ম মন্দির প্রভৃতি রয়েছে এখানে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
শহরটি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে সুসংযুক্ত। তবে, বেশিরভাগ রাস্তাই সরু এবং গাড়ি চালানো কঠিন। ১৯৬০-এর দশকে নির্মিত কংক্রিটের রাস্তাগুলি পরবর্তী চল্লিশ বছর ধরে টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট প্রমাণিত হয়েছে। তবে অন্যান্য রাস্তাগুলি আলকাতরা দিয়ে ঢাকা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে, ভারী বৃষ্টিপাতের সাথে সাথে গর্ত এবং খাদ একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। শহরের রাস্তাগুলি পৌরসভার মালিকানাধীন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। শহরের মেরুদণ্ডের রাস্তাটি টাউন হল এলাকা থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি প্রাথমিক পরিস্থিতি ছিল কিন্তু শহরটি ধীরে ধীরে বড় হওয়ার সাথে সাথে ব্যস্ত রাস্তার দৈর্ঘ্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহর পরিষেবা চালু থাকলেও শহরের জনসংখ্যা কখনও বাসে ওঠার সুযোগ পায় না কারণ বাসের সংখ্যা অপ্রতুল এবং বাস আসলে পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলির মধ্যে চলে।
ময়মনসিংহ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে রয়েছে ট্রেন যোগাযোগ। রয়েছে আন্তঃনগর এবং মেইল ট্রেন উভয়ই।
- আন্তঃনগর ট্রেনসমূহ হলো: তিস্তা এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস , বিজয় এক্সপ্রেস (ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ, ভৈরব বাজার, কুমিল্লা-চট্টগ্রাম), হাওড় এক্সপ্রেস (নেত্রকোণা- ময়মনসিংহ -ঢাকা), মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস (মোহনগঞ্জ [নেত্রকোণা]- ময়মনসিংহ -ঢাকা।
- মেইল ট্রেনসমূহ হলো: ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস, ভাওয়াল এক্সপ্রস, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস , ঈশাখা এক্সপ্রেস , মহুয়া এক্সপ্রেস, জামালপুর কমিউটার, দেওয়ানগঞ্জ এক্সপ্রেস।[২]
এছাড়া সড়ক ও জলপথেও যাতায়াত করা যায় ময়মনসিংহে। সড়কপথে ঢাকা টু ময়মনসিংহ দূরত্ব ১২০ কি.মি। ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে এনা, শৌখিন, আলম এশিয়া পরিবহনের বাসে সরাসরি ময়মনসিংহের মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড আসা যায় মাত্র দু থেকে আড়াই ঘণ্টায়।


বাজার-ঘাট
খাগডহর বাজার, নতুন বাজার, সানকি পাড়া বাজার, স্বদেশী বাজার, বড় বাজার, ছোট বাজার, মেছুয়া বাজার, কাচিঝুলি বাজার রয়েছে ময়মনসিংহে। এছাড়া সি.কে. ঘোষ রোড এবং মিন্টু কলেজ মোড়েও রয়েছে বাজার। এগুলি সবই মূলত অনেক পুরাতন। যেমন স্বদেশী বাজারের নামকরণ হয়েছে স্বদেশী আন্দোলনের সময়।
জনজীবন, জীবিকা
ময়মনসিংহের মানুষের জীবন জীবিকা খুবই সাধারণ। এ অঞ্চলের লোকজন বেশিরভাগই কৃষিকাজের সাথে যুক্ত। দারিদ্রতার হার ৩৯%। কৃষি ও শিল্পের দিক দিয়ে ময়মনসিংহ অনেক উন্নত।

বাৎসরিক অনুষ্ঠানাদি
- স্বাধীনতা দিবস
- বিজয় দিবস
- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস (টাউন হল মোড়)
- পহেলা বৈশাখ (জয়নুল আবেদিন উদ্যান)
- ময়মনসিংহ মুক্তি দিবস, ১০ ডিসেম্বর


গণমাধ্যম
- দৈনিক জাহান (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক আজকের বাংলাদেশ (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক স্বদেশ সংবাদ (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক স্বজন (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক মাটি ও মানুষ (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক আজকের ময়মনসিংহ (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক কালের আলো (দৈনিক পত্রিকা)
- দৈনিক লোক লোকান্তর (দৈনিক পত্রিকা)
- আলোকিত ময়মনসিংহ (দৈনিক পত্রিকা)
- প্রতিদিনের ময়মনসিংহ (দৈনিক পত্রিকা)
খেলাধুলা
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য ক্রিকেটার উঠে এসেছেন এই শহর থেকে। তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য :
বিখ্যাত ব্যক্তিগণ
- শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামঃ জন্ম ১৯২৫, মৃত্যু ৩ নভেম্বর ১৯৭৫।
- আনন্দ মোহন বসুঃ জন্ম ২৩ সেপ্টেম্বর ১৮৪৭, মৃত্যু ২০ আগস্ট ১৯০৬
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ "ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক জনপদ ময়মনসিংহ"। dailysangram.com। দৈনিক সংগ্রাম। অক্টোবর ১৬, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ বাংলাদেশ রেলওয়ে ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ মার্চ ২০১৩ তারিখে, www.railway.gov.bd; সংগ্রহের তারিখ: ২৪ মার্চ ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
বহিঃসংযোগ
- বাংলাপিডিয়ায় ময়মনসিংহ
- ময়মনসিংহ জেলার সরকারি ওয়েবসাইট জেলা তথ্য বাতায়ন।