বরমা ডিগ্রি কলেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বরমা ডিগ্রি কলেজ
Barama Degree College
ধরনবেসরকারি
স্থাপিত১৯৮৪
অধিভুক্তিজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষার্থী৩০০০
অবস্থান,
৪৩৮৩
ক্রীড়াফুটবল, ক্রিকেট

বরমা ডিগ্রি কলেজ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার চট্টগ্রাম-বরকল মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত।[১]

অবস্থান[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে চট্টগ্রাম-বাশঁখালী মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বরকল ব্রিজের পরে চন্দনাইশ থানার বরমা ইউনিয়ন গ্রামের ২.৬৪ একর জমির উপর অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে এ কলেজের অবস্থান।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। সৃষ্টির আদিকাল থেকে সভ্যতার উন্মেষ ঘটাতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অনস্বীকার্য। এই লক্ষ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামস্থ চন্দনাইশ উপজেলার বরমা এলাকার শিক্ষানুরাগী সুধীজন, বিভিন্ন পেশাজীবী ও জ্ঞান তাপসের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৮৪ সালে বরমা ডিগ্রি কলেজে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। নিজস্ব জমিতে অনুষদভিত্তিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, দ্বিতল বিশিষ্ট গ্রন্থাগার ভবন ও প্রশস্ত মাঠসহ সবুজে ঘেরা নান্দনিক পরিবেশে নতুন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়। বর্তমানে এ কলেজ বৃহত্তর দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি স্বনামধন্য সরকারি কলেজ হিসেবে সুপরিচিত।

অবকাঠামো[সম্পাদনা]

কলেজের নতুন ক্যাম্পাসের বিরাট এলাকা জুড়ে রয়েছে সুসজ্জিত চারটি বৃহৎ ভবন। এগুলো হলো প্রশাসনিক ভবন, বাণিজ্য ভবন, কলাভবন ও বিজ্ঞান ভবন। এছাড়াও রয়েছে দ্বিতল গ্রন্থাগার ভবন, শিক্ষকদের জন্য একটি নতুন ডরমেটরী ও পাম্প হাউজ। পুরনো ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের জন্য একটি ডরমেটরী ও ছাত্রাবাস অবস্থিত।

  • সেমিনার: অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য সুসজ্জিত সেমিনার কক্ষ রয়েছে। সেমিনার মূলবান বই এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিনপত্রিকায় সমৃদ্ধ।
  • গবেষণাগার: বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি বিভাগে রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ গবেষণাগার। এতদঞ্চলে খুব কম সংখ্যক কলেজে এ রকম গবেষণাগার আছে।
  • কম্পিউটার ল্যাব: কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্যে কলেজে বেশ কয়েকটি কম্পিউটার আছে। তাছাড়া আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দানের জন্য আধুনিক ল্যাব রয়েছে।[৩]

অনুষদসমূহ[সম্পাদনা]

  • কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (পাশ) শ্রেনিতে কলা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে পাঠদান করা হচ্ছে। সহশিক্ষা কার্যক্রমও কলেজের একটি উল্লেখযোগ্য দিক।

অনার্স বিষয়: বর্তমানে অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ১৮০টি এবং অর্থনীতি বিষয়ে ১২০টি করে আসন রয়েছে। ভবিষ্যতে আসন সংখ্যা দ্বিগুন করার পরিকল্পনা আছে।

প্রস্তাবিত অনার্স বিষয়/মাস্টার্স কোর্স: এ কলেজের ৭টি বিষয়ে অনার্স চালু করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন আছে। বিষয়গুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, ইসলামি ইতিহাস ও সাংস্কৃতি, দর্শন, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিত। অনার্স বিষয়গুলোর বিভাগে মাস্টার্স কোর্স চালু করা প্রক্রিয়াধীন।[৪]

সহশিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]

কলেজ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আছে একটি বিস্তৃত খেলার মাঠ। এতে ছাত্ররা ফুটবল, ক্রিকেট এবং ব্যাডমিন্টনসহ সকল বহিরঙ্গন ক্রীডায় অংশগ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রী মিলনায়তনে অভ্যন্তরীণ খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং অন্তরঙ্গণ ও বহিরঙ্গণ ক্রিড়ানুষ্ঠান কলেজের পাঠ্যক্রমে বহির্ভূত কার্যক্রমের একটা উল্লেখ্যযোগ্য দিক।

  • রোভার-স্কাউট: লেখাপড়ার পাশাপাশি একজন ছাত্রকে আদর্শ, চরিত্রবান, কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রোভার স্কাউটের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। এ ছাড়াও বিনামূল্যে রোভার পোশাকসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্কাউটের পক্ষ হতে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

বিবিধ[সম্পাদনা]

  • ক্লাসে উপস্থিতি: ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে উপস্থিতির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাবোর্ডের বিধি বিধান কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে উপস্থিতি থাকা বাধ্যতামূলক।
  • পরিদর্শক দল: সপ্তাহের প্রতিদিন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেনীকার্যক্রম তদারকি করার জন্যে অধ্যাপকের সমন্বয়ে পরিদর্শক দল কার্যকর রয়েছে।
  • আর্থিক সাহায্য: কলেজে অধ্যয়নরত গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের দরিদ্র তহবিল থেকে স্টাইপেন্ড প্রদান করা হয়।
  • পরীক্ষা: সাময়িক, বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষাসমূহে ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। পরীক্ষার ফলাফল অভিভাবকদের নিকট পাঠানো হয়। টিউটোরিয়াল ও ক্লাস টেস্ট এ কলেজের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
  • নির্ধারিত পোশাক: ডিগ্রী পাস ও অনার্স কোর্সের ছাত্রদের হালকা নীল (আকাশী) শার্ট ও কালো ফুল প্যান্ট এবং ছাত্রীদের সাদা এপ্রোণ ও আকাশী স্কার্ফ পরা বাধ্যতামূলক।
  • অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের প্রস্তাবিত বাসভবন: অত্র কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের বাসভবন তৈরীর প্রস্তাব মন্ত্রাণালয়ে সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।
  • গভীর টিউবওয়েল: ছাত্র-ছাত্রীদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে একটি গভীর টিউবওয়েল আছে।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]