জীবননগর উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৩°২৪′৫৯″ উত্তর ৮৮°৪৯′১০″ পূর্ব / ২৩.৪১৬৩৯° উত্তর ৮৮.৮১৯৪৪° পূর্ব / 23.41639; 88.81944
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জীবননগর
উপজেলা
মানচিত্রে জীবননগর উপজেলা
মানচিত্রে জীবননগর উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৩°২৪′৫৯″ উত্তর ৮৮°৪৯′১০″ পূর্ব / ২৩.৪১৬৩৯° উত্তর ৮৮.৮১৯৪৪° পূর্ব / 23.41639; 88.81944 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
জেলাচুয়াডাঙ্গা জেলা
আয়তন
 • মোট২০০ বর্গকিমি (৮০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট১,৭৯,৫৮১
 • জনঘনত্ব৯০০/বর্গকিমি (২,৩০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৯৭%[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৪০ ১৮ ৫৫
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

জীবননগর উপজেলা বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

জীবননগর উপজেলাটি খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্তর্ভুক্ত। ২৩°২২´ থেকে ২৩°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৫´ থেকে ৮৮°৫৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশতে এটি অবস্থিত। এর উত্তরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা, পূর্বে কোটচাঁদপুর উপজেলা, দক্ষিণে মহেশপুর উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ[২] ভৌগোলিকভাবে কর্কটক্রান্তিরেখা সর্বপ্রথম জীবননগর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷[৩]

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

১৯৯.৩২ বর্গ কিমি ব্যাপ্ত এই উপজেলার প্রশাসনিক এলাকা। এর অবস্থান: ২৩°২২´ থেকে ২৩°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৫´ থেকে ৮৮°৫৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ।

  • পৌরসভাঃ ১ টি - জীবননগর পৌরসভা (আয়তনঃ ১২.৪০ বর্গ কি.মি.);
  • ইউনিয়নঃ ০৮ টি -
  1. আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন
  2. উথলী ইউনিয়ন
  3. কেডিকে ইউনিয়ন
  4. বাঁকা ইউনিয়ন
  5. মনোহরপুর ইউনিয়ন
  6. রায়পুর ইউনিয়ন
  7. সীমান্ত ইউনিয়ন
  8. হাসাদাহ ইউনিয়ন

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৬৩ সালে জীবননগর থানা গঠিত হওয়ার পূর্বে এই অঞ্চল দৌলতগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। এখনো উপজেলা শহরের অভ্যন্তরে দৌলতগঞ্জ মৌজা অবস্থিত। ১৭১১ খৃস্টাব্দে দৌলত খাঁ নামের এক মোগল সেনানায়কের ক্যাম্প ও বাসস্থান ছিল এই স্থানে। তার নাম অনুসারেই এই স্থানের নাম দৌলতগঞ্জ হয়।।[৪]

দৌলতগঞ্জ প্রত্নঢিবি আবিষ্কারের ফলে এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ অতীত সম্পর্কে অনুমান করা যায়। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রত্নতত্ত্ব ও ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে তিনটি স্থান চিহ্নিত করে তার মধ্যে দৌলতগঞ্জ প্রত্নঢিবি একটি। অতীতে দৌলতগঞ্জ সমৃদ্ধ জনপদ ছিল। ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত এই শহর ছিল অন্যতম প্রধান বাণিজ্যপথ। চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মহেশপুর, নদীয়া প্রভৃতি স্থানের মধ্যে যোগাযোগের জন্য এই স্থান ব্যবহার করতে হত। বৃটিশ ভারতে এখানকার কাঁসা-পিতলের শিল্পের কদর ছিল সব জায়গায়।[৫] কৃষিপণ্যের মধ্যে এখানকার উৎপাদিত গুড়চিনি ছিল বিখ্যাত। ১৮২০ সালে এখানকার ব্যবসায়ী রাম সেন চিনির ব্যবসায়ে ইংরেজ ব্যাবসায়ীদেরও পিছনে ফেলে দেন।

১৯৪৭ এ দেশবিভাগের পর জীবননগর কুষ্টিয়া মহকুমার অংশ হয়ে বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়। বৃটিশ শাসনামলে ১৯২৩ সালে জীবননগরকে থানা হিসাবে এবং বাংলাদেশ আমলে ১৯৮৩ সালে উপজেলা হিসেবে উন্নীত করা হয়।[৬] পূর্বে এখানে জীবন বাবু নামে এক জমিদার বসবাস করতেন। তার নামানুসারেই এই এলাকার নাম জীবননগর হয় বলে অনুমিত।[৭]

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১ এর তথ্যমতে উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১৭৯৫৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮৯,৮৩৯ জন এবং মহিলা ৮৯,৭৪২ জন। বার্ষিক জন্মহার ০.৮৯%। [৮]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

জীবননগরে শিক্ষার মান উন্নয়নশীল। জীবননগর পৌরসভার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোট ১২টি। তার মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩টি ও কলেজ ২টি। এখানকার বার্ষিক পাশের হার ৯৪%।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

  • নিধিকুন্ড-বাড়ান্দি দাখিল মাদ্রাসা
  • বি সি কে এম পি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • হাসাদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • জীবননগর আলিয়া মাদ্রাসা
  • হাসাদাহ ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা
  • মাধবপুর দাখিল মাদ্রাসা
  • শাপলাকলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • জীবননগর সরকারী মহিলা ডিগ্রী কলেজ
  • জীবননগর ডিগ্রী কলেজ
  • জীবননগর পাইলট গার্লস স্কুল
  • জীবননগর পাইলট হাই স্কুল
  • জীবননগর পৌর কিন্ডারগার্টেন এন্ড হাইস্কুল
  • আন্দুলবাড়িয়া কলেজ
  • উথলী মহাবিদ্যালয়
  • আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয়
  • আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়
  • গয়েশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • ধোপাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মনোহরপুর ইউনিয়ন, জীবননগর
  • হাসাদাহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়
  • আলিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সীমান্ত ইউনিয়ন, জীবননগর।
  • মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মনোহরপুর ইউনিয়ন, জীবননগর।
  • খয়েরহুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেডিকে ‍ইউনিয়ন, জীবননগর।
  • খয়েরহুদা প্রতিবন্ধি স্কুল, কেডিকে ‍ইউনিয়ন, জীবননগর।
  • জীবননগর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, জীবননগর।
  • রেইনবো গ্রামার স্কুল,জীবননগর।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র[সম্পাদনা]

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নাম সংখ্যা
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (Upazila Health Complex) ১ টি(৫১শয্যা)
পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র (Family Planning Centre) - টি
উপগ্রহ ক্লিনিক (Satellite Clinic) - টি
বেসরকারী ক্লিনিক (Private Clinic) - টি

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

অর্থনীতি দিক দিয়ে জীবননগর বাংলাদেশের একটি অন্যতম সমৃদ্ধ উপজেলা। এখানে প্রধান অর্থকরী ফসল পাট, ধান, আলু প্রচুর পরিমানে জন্মে। এছাড়াও এখানে প্রচুর পানক্ষেত ও খেজুর গাছ আছে। এখানকার খেজুরের রস অনেক বিখ্যাত। এছাড়াও এখানে কিছু ছোট কারখানাও আছে। আর এই জন্য এ শহরকে চুয়াডাঙ্গার বাণিজ্যেকেন্দ্র বলা হয়।

নদ-নদী[সম্পাদনা]

জীবননগর উপজেলায় অনেকগুলো নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে ভৈরব নদভৈরব-কপোতাক্ষ নদ[৯][১০]

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

১. মুক্তিযোদ্ধা গণ কবর ধোপাখালী ।মনোহরপুর ইউনিয়ন

২. শরৎচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত- কাশীপুর জমিদার বাড়ী

৩. রাখাল শাহ এর মাজার

৪. প্রস্তাবিত দৌলৎগজ্ঞ-মাজদিয়া স্থলবন্দর

৫.রায়পুর কালা দুয়া ও জয়দিয়া বাওড়

৬.দত্তনগর কৃষি খামার

৭.মারূফদাহ বাওড় ৮. খয়েরহুদা ঈদগাহ ময়দান ও বড় জামে মসজিদ। ৯. সাত পুকুর।

এ ছাড়াও আরও অনেক

পত্রপত্রিকা[সম্পাদনা]

১. সাপ্তাহিক জীবননগর বার্তা

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে জীবননগর উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারী ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "জীবননগর উপজেলা"banglapedia.org 
  3. ম্যাপ "ওপেনস্ট্রিট ম্যাপ" |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) 
  4. ফাহিম ফিরোজ (১৫ অক্টোবর ২০১৬)। "দৌলতগঞ্জ প্রত্মঢিবি"দৈনিক ইনকিলাব(সংবাদপত্র)]]। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২৩ 
  5. পত্রিকা সংকলন আর্থিক উন্নতি, শ্রী বিনয় কুমার সরকার কর্তৃক প্রকাশিত, পৃষ্ঠা ১৩৩৪
  6. "Chuadanga District - চুয়াডাঙ্গা জেলা"dcchuadanga.gov.bd [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. Population and Housing Census-2011, Bangladesh Bureau of Statistics by Ministry of Planning- Bangladesh, Page 23
  8. সমীক্ষা বাংলাদেশের আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১, পৃষ্ঠা ২৪
  9. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৯০, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯
  10. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬১৩। আইএসবিএন 984-70120-0436-4 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]