বিষয়বস্তুতে চলুন

কুষ্টিয়ার ইতিহাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

১৭২৫ সালে কুষ্টিয়া নাটোর জমিদারীর অধীনে ছিল এবং এর পরিচিতি আসে কান্ডানগর পরগণার রাজশাহী ফৌজদারীর সিভিল প্রশাসনের অন্তর্ভূক্তিতে। পরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৭৬ সালে কুষ্টিয়াকে যশোর জেলার অন্তর্ভূক্ত করে। কিন্তু ১৮২৮ সালে এটি পাবনা জেলার অন্তর্ভূক্ত হয়। ১৮৬১ সালে নীল বিদ্রোহের কারণে কুষ্টিয়া মহকুমা প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ১৮৭১ সালে কুমারখালী ও খোকসা থানা নিয়ে কুষ্টিয়া মহকুমা নদীয়ার অর্ন্তগত হয়। ভারত উপমহাদেশ বিভক্তির পূর্বে কুষ্টিয়া নদীয়া জেলার আওতায় একটি মহকুমা ছিল। ১৯৪৭ সালে কুষ্টিয়া জেলার অভ্যুদয় ঘটে। তখন কুষ্টিয়া জেলা ৩ টি মহকুমা নিয়ে গঠিত হয়ছছিল। এগুলো হলো কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা এবং মেহেরপুর। এরপর ১৯৮৪ সালে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর আলাদা জেলা হিসেবে পৃথক হয়ে গেলে কুষ্টিয়া মহকুমার ৬ টি থানা নিয়ে বর্তমান কুষ্টিয়া জেলা গঠিত হয়।[]

নামকরণের ইতিহাস

[সম্পাদনা]

কুষ্টিয়া বহুপূর্ব থেকেই বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে এর অবিসংবাদিত পরিচিতি রয়েছে। তবে কুষ্টিয়া নামটি কীভাবে এলো, তা নিয়ে ইতিহাসকারদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। সবচেয়ে সমর্থিত মতটি ১৮২০ প্রকাশিত হেমিলটনসের গেজেট-এর সূত্রে পাওয়া যায়। সেটি হলো, কুষ্টিয়াতে এক সময় প্রচুর পরিমাণে পাট উৎপাদিত হতো। পাটকে স্থানীয় ভাষায় কোষ্টা (এখনো বলা হয়) বা কুষ্টি বলতো, যার থেকে কুষ্টিয়া নামটি এসেছে। কারো মতে ফার্সি ভাষার শব্দ ‘কুশতহ’ থেকে কুষ্টিয়ার নামকরণ হয়েছে যার অর্থ ছাই দ্বীপ। আবার ৫ম মুঘল সম্রাট শাহ জাহানের সময় কুষ্টি বন্দরকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া শহরের উৎপত্তি হয় বলেও একটি মত রয়েছে।[][]

মুঘল আমল

[সম্পাদনা]

মুঘল আমলে বাদশাহ শাহ জাহানের (১৬২৭-১৬৫৭) পুত্র বাংলার সুবাদার (১৬৩৯-৫৯) শাহ সুজার সময় বাংলাকে ৩৪টি সরকারে বিভক্ত করে প্রত্যেকটিকে একেকজন ফৌজদারের শাসনাধীনে রাখা হয়। এ সময় দক্ষিণ-মধ্যবঙ্গে মাহমুদাবাদ সরকারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, তার মহল (রাজস্ব সম্পর্কিত বিভাজন) সংখ্যা ছিল ৮৮টি এবং স্থানটি ছিল মধুমতি নদীর তীরে মাহমুদপুর (বর্তমান মহম্মদপুর) বলে একটি এলাকায়। কুষ্টিয়া অঞ্চল তখন এই সরকারের অধীনে ছিল। ১৭২২ সালে নবাব মুর্শিদকুলী খাঁ (১৭১৩-১৭২৫) বাংলাকে সরকারের পরিবর্তে ১৩টি চাকলায় বিভক্ত করেন। তখন সরকার মাহমুদাবাদ তথা কুষ্টিয়া অঞ্চল ভুষণা চাকলার অধীন হয়ে যায়।[] সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে এখানে কুষ্টি নদীবন্দর স্থাপিত হয়।[]

কুষ্টিয়াতে মুঘল আমলে তৈরি অনেকগুলো মসজিদের নিদর্শন পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-

ঝাউদিয়া শাহী মসজিদের ভিতরের দৃশ্য

ব্রিটিশ আমল

[সম্পাদনা]

নীল বিদ্রোহ

[সম্পাদনা]

অবকাঠামো ও শিল্প উন্নয়ন

[সম্পাদনা]

ব্রিটিশ আমলে কুষ্টিয়া জেলার অনেক উন্নতি হয়। ১৮৬০ সালে ব্রিটিশরা বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন[] জগতি রেলওয়ে স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে কলকাতার সাথে সরাসরি কুষ্টিয়া জেলার রেললাইন স্থাপিত হয়।

বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন জগতি রেলওয়ে স্টেশন

পরবর্তীতে এই রেললাইন গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় এবং ঢাকার সাথে যোগাযোগ সহজ হয়ে ওঠ। একারণে ব্রিটিশদের কাছে এই অঞ্চল শিল্প-কারখানার জন্য আদর্শ স্থান বলে তখন বিবেচিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড (১৮৯৬), মোহিনী মিল (১৯০৮) প্রতিষ্ঠিত হয়।[] ১৮৬৯ সালে কুষ্টিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সম্রাট শাহজাহানের আমলে প্রতিষ্ঠিত কুষ্টি নদী বন্দর ব্যবহার করত‌। কিন্তু কুষ্টিয়াতে নীলচাষী ও নীলকরদের আগমনের পরেই নগরায়ন শুরু হয়।[] ১৮৬১ সালে নীল বিদ্রোহের কারণে কুষ্টিয়া মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৮৭১ সালে কুমারখালীখোকসা থানা নিয়ে কুষ্টিয়া মহকুমা নদিয়া জেলার অন্তর্গত হয়‌।[]

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন

[সম্পাদনা]

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাঙালি নেতা ছিলেন বাঘা যতীন (যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় )। তিনি কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষাব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

জগন্নাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে (১৮৪৪) কুষ্টিয়ার সবচেয়ে পুরাতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে মনে করা হয়। এর পরে আসে কুমারখালী এম.এন. পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় যা শ্রী যুক্ত বাবু মথুরানাথ কুন্ডু ১৮৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত করেন।

কুষ্টিয়ার গ্রামীণ পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জগন্নাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গোস্বামী দুর্গাপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় অন্যতম। জগন্নাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সম্পর্কে তেমন তথ্য পাওয়া যায় না। ১৮৬০ সালে নাদিয়া জেলার তৎকালীন শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা রায় বাহাদুর রাধিকা প্রসন্ন মুখার্জি গোস্বামী দুর্গাপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন।

১৮৬১ সালে কুষ্টিয়া শহরে কুষ্টিয়া হাই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৬৩ সালে কুমারখালী সরকারি পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন হরিনাথ মজুমদার। ১৯৪৭ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

ব্রিটিল আমলে প্রতিষ্ঠিত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-

রবীন্দ্রনাথ ও কুষ্টিয়া

[সম্পাদনা]

শিলাইদহ কুঠিবাড়ি

[সম্পাদনা]
শিলাইদহ কুঠিবাড়ি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে নদিয়া (নদিয়ার উক্ত অংশটি অধুনা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলা), পাবনারাজশাহী জেলা এবং উড়িষ্যার জমিদারিগুলির তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ।[] কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছিলেন। জমিদার রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে "পদ্মা" নামে একটি বিলাসবহুল পারিবারিক বজরায় চড়ে প্রজাবর্গের কাছে খাজনা আদায় ও আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে যেতেন। গ্রামবাসীরাও তার সম্মানে ভোজসভার আয়োজন করত।[]

শিলাইদহ কাছারি বাড়ি

[সম্পাদনা]

১৮৯২ সালে ৯.৯১৮ একর (০.০৪০১৪ কিমি) জমির উপর দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট কাছারি বাড়িটি নির্মিত হয়। জমি থেকে প্রাপ্ত খাজনা ব্যবস্থাপনা এই কাছারি বাড়ি থেকে পরিচালিত হতো। উল্লেখ্য যে ঠাকুর পরিবার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি বসবাসের জন্য ব্যবহার করলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কুঠিবাড়িতে বসেই জমিদারি পরিচালনা করতেন। তিনি বিশেষ কারণ ছাড়া কাছারি বাড়িতে যেতেন না।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি গ্রহনের পূর্বে কাছারি বাড়ির প্রজা সমাবেশে হিন্দুমুসলমানের বসার ব্যবস্থা পৃথক ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই প্রথা বাতিল করেন। জমিদারির খাজনা আদায় ছাড়াও এই ভবনের মাঠে মেলা অনুষ্ঠিত হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই মেলা পরিদর্শন করতেন।

ভবনটি কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের অধীনে ছিল। ২০২০ সালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর করে। ভবনটি বেশকিছু দিন শিলাইদহ ইউনিয়নের ভূমি কার্যালয় ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে বর্তমানে ভবনটি পরিত্যক্ত। ২০২৩ সালে মে মাস থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ভবনটি সংস্কারের কাজ শুরু করে।[১০]

টেগর লজ

[সম্পাদনা]

কুষ্টিয়ার মিল পাড়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ব্যবসায়িক কাজের উদ্দেশ্যে ১৮৯৫ সালে টেগর লজ স্থাপন করেছিলেন।[১১] এটি বর্তমানে কুষ্টিয়া কুঠিবাড়ি নামেও সমাদৃত ও জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

পাকিস্তান আমল

[সম্পাদনা]

১৯৪৭-এ ব্রিটিশ ভারত ভাগের সময় কুষ্টিয়া নদিয়া জেলা থেকে পৃথক হয়ে পূর্ব-পাকিস্তানের জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।[১২] এর মহকুমাসমূহ ছিল বর্তমানের কুষ্টিয়া জেলা, চুয়াডাঙ্গা জেলামেহেরপুর জেলা। তৎকালীন এস.ডি.ও মৌলভি আব্দুল বারী বিশ্বাসকে প্রধান করে ১৯৫৪ সালে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের সদর দপ্তর কুষ্টিয়া জেলায় স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া আরো বেশ কিছু সরকারি অফিস কুষ্টিয়ায় স্থাপনের পরে শহরটিতে পুনরায় উন্নয়ন শুরু হয়। ১৯৬১ সালে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৩] ১৯৬২ সালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল স্থাপিত এবং ১৯৬৩ সালে চালু হয়।[১৪] কুষ্টিয়ার সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৫] গভ. কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট, কুষ্টিয়া যার বর্তমান নাম কুষ্টিয়া সরকারি সেন্ট্রাল কলেজ ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া জেলা কারাগার ১৯৬৮ সালে স্থাপিত হয়।[১৬]

ভাষা আন্দোলনে কুষ্টিয়া

[সম্পাদনা]
ভাষা শহীদদের স্মরণে কুষ্টিয়াতে নির্মিত শহীদ মিনার (কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে)

ভাষা আন্দোলনের তীব্র ঢেউ লেগেছিল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ কুষ্টিয়াতেও। বাংলা ভাষার ওপর আকস্মিক আঘাত মেনে নিতে পারেননি কুষ্টিয়ার সাধারণ জনগণ। যদিও ১৯৪৮ সালের প্রথম পর্বের ভাষা আন্দোলনের তেমন হাওয়া লাগেনি কুষ্টিয়াতে। ১৯৪৮-এর ভাষা আন্দোলনে কুষ্টিয়াতে কিছুটা তৎপরতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তবে তা কুষ্টিয়া জুড়ে তেমন একটা আলোড়ন সৃষ্টি করেনি।[১৭]

স্বাধীনতা যুদ্ধে কুষ্টিয়া

[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কুষ্টিয়া জেলা ০৮ নং সেক্টরের অধীনে ছিল।‌ পাকিস্তানি সেনারা কুষ্টিয়া জিলা স্কুলকে তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিল।[১৮] কুষ্টিয়ার কোহিনুর ভিলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার প্রমাণ পাওয়া যায়।

কুষ্টিয়া জেলার বধ্যভূমির তালিকা-[১৯] -

কুষ্টিয়া জেলায় ২৯০৭ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।[২০] ২০০৪ সালের প্রদত্ত গেজেট অনুযায়ী কুষ্টিয়া জেলায় ০৯ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে।[২১]

নং গেজেট নম্বর (২০০৪) নাম গ্রাম উপজেলা প্রতীক
০১ খেতাবপ্রাপ্ত-৫৩ আবু তালেব জগতি কুষ্টিয়া বীর উত্তম
০২ খেতাবপ্রাপ্ত- শরফুদ্দীন আহমেদ সুলতানপুর কুমারখালী
০৩ খেতাপ্রাপ্ত-২৩৭ খালেদ সাইফুদ্দীন কাটদহ কুষ্টিয়া বীর বিক্রম
০৪ খেতাবপ্রাপ্ত-৬২৩ হাবিবুর রহমান শেরপুর দৌলতপুর বীর প্রতীক
০৫ খেতাবপ্রাপ্ত-৬২৮ শামসুদ্দীন আহমেদ মহিষখোলা মিরপুর
০৬ খেতাবপ্রাপ্ত-৬৩০ কে এম রফিকুল ইসলাম গোলাপনগর ভেড়ামারা
০৭ খেতাবপ্রাপ্ত-৬৩১ শেখ দিদার আলী আড়ুয়াড়া কুষ্টিয়া
০৮ খেতাবপ্রাপ্ত-৬৩৩ আবদুল আলিম সাহাপুর
০৯ খেতাবপ্রাপ্ত- মোহাম্মদ এজাজুল হক খান গোয়ালগ্রাম দৌলতপুর

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশের প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় স্থাপন করা হয়।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়-এর প্রধান ফটক

১৯৮৪ সালে ০১ মার্চ রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্দেশে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা ভেঙে তিনটি জেলায় রূপান্তর করা হয়। এগুলো হলো কুষ্টিয়া জেলা, মেহেরপুর জেলাচুয়াডাঙ্গা জেলা‌

২০২৪-এ কোটা বিরোধী আন্দোলন

[সম্পাদনা]

অন্যান্য শহরের মতো কুষ্টিয়াতেও কোটা বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। কুষ্টিয়ার শহরের মজমপুর গট, চৌড়হাঁস মোড়, মুজিব চত্বর (শাপলা চত্বর), স্বাধীনতা চত্বর (থানার মোড়), হাসপাতাল মোড়ে ছাত্রদল গণমিছিল বের করে।

১৭ই জুলাই

১৭ই জুলাই থেকে কুষ্টিয়াতে আন্দোলন জোড়ালো ভাবে শুরু হয়। এই দিনে ছাত্রদলের গণমিছিল বের হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের উপর হামলা করে।[২২]

কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য –

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাংবাদিকদের বক্তব্য –

১৮ই জুলাই

বিকাল ৩টার সময় আন্দোলনকারীরা মজুমপুরে জড়ো হন। তাদের প্রতিহত করতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও জড়ো হয় কুষ্টিয়া পৌরসভা‌ কার্যালয়ের বিজয় উল্লাস ভাস্কর্যের সামনে। আন্দোলন মিছিল চৌড়হাঁস মোড়ে গিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই দিন ৮টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে দেয়।[২৩]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "জেলা হিসেবে অভ্যুদয়"জাতীয় তথ্য বাতায়ন - কুষ্টিয়া জেলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২০ 
  2. শাহজাহান আমান (২০২১-১০-১৫)। "ইতিহাসের পাতাজুড়ে যার গৌরব-ঐতিহ্য"বনিক বার্তা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৭ 
  3. "কুষ্টিয়া নামকরণ"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন-কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৭ 
  4. আনোয়ার আলী (মার্চ ২০১৯)। কুষ্টিয়া পৌরসভা কার্যালয়-এ লিখিত। মিলন সরকার; মোঃ মনিরুল ইসলাম, সম্পাদকগণ। সার্ধশতবর্শ স্মারকগ্রন্থ ১৮৬৯-২০১৯ [SARDHOSHATOBARSHO SMARAKGRANTHO 1869-2019] (পিডিএফ)। কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া পৌরসভা। পৃষ্ঠা ১৮। আইএসবিএন 978-984-34608-1-3। ২০২৪-০৯-১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-৩১ 
  5. "কুষ্টিয়া জেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"সংগ্রামের নোটবুক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২০ 
  6. এস.এম. জামাল (২০২১-১১-১৫)। "বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন জগতে রেলওয়ে স্টেশন"বার্তা ২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৯ 
  7. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "শিল্প প্রতিষ্ঠান"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৪ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৪ 
  8. শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ, প্রমথনাথ বিশী, মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ১৩৯৫ সংস্করণ, পৃ. ১৮
  9. Dutta ও Robinson 1995, পৃ. 109–111
  10. প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া (২০২৩-০৫-০৫)। "শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত কাচারী বাড়ির সংস্কার কাজ শুরু"যমুনা টেলিভিশন। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-২৮ 
  11. "টেগর লজ"জাতীয় তথ্য বাতায়ন - কুষ্টিয়া জেলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২০ 
  12. "ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক রাজধানী কুষ্টিয়া"। দৈনিক সংগ্রাম। ৯ জুলাই ২০১২। ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৪ 
  13. "বিদ্যালয়ের ইতিহাস"কুষ্টিয়া জিলা স্কুল। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৪ 
  14. "এক নজরে" (পিডিএফ)বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন - কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৪ 
  15. "এক নজরে কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগ"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন - সড়ক ও জনপথ বিভাগ, কুষ্টিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৪ 
  16. "এক নজরে কুষ্টিয়া জেলা কারাগার"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন - কুষ্টিয়া জেলা কারাগার। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৪ 
  17. আহমদ ইশতিয়াক (২০২৩-০২-০৯)। "ভাষা আন্দোলনে কুষ্টিয়া"The Daily Star - বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২০ 
  18. আবু ওসমান চৌধুরী (২০২০-০২-১২)। "মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে কুষ্টিয়ায় প্রতিরোধ যুদ্ধ"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  19. আবু সাঈদ (২০১৯-১২-২১)। "একাত্তরে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরে পাকিস্তান বাহিনীর গণহত্যা ছিল ভয়াবহ"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  20. "বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকা - কুষ্টিয়া জেলা"মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২০ 
  21. "খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা" (পিডিএফ)বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২০ 
  22. কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (২০২৪-০৭-১৭)। "কুষ্টিয়ায় কোটা আন্দোলন কারীদের সাথে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া"সময়ের আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৫ 
  23. কুষ্টিয়া প্রতিনিধি (২০২৪-০৭-১৮)। "কুষ্টিয়ায় কোটা সংস্কারের আন্দোলনে ৮ মোটরসাইকেলে আগুন, গুলিবিদ্ধ ১"নাগরিক ভাবনা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৫ 

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]
  • মোঃ রেজাউল করিম (ডিসেম্বর ২০২৩)। কুষ্টিয়ার প্রত্ননিদর্শন। ৩৮/২ক বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০: গতিধারা। আইএসবিএন 978-984-8950-41-8 
  • ড. মুহাম্মদ এমদাদ হাসনায়েন; ড. সারিয়া সুলতানা (২০২০)। ধর্মীয় ইতিহাস স্থাপত্যে কুষ্টিয়া। ৭/৩খ. সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন সড়ক, কুষ্টিয়া ৭০০০: কন্ঠধ্বনি প্রকাশনী। আইএসবিএন 978-984-94435-0-6 
  • আনোয়ার আলী (মার্চ ২০১৯)। কুষ্টিয়া পৌরসভা কার্যালয়-এ লিখিত। মিলন সরকার; মোঃ মনিরুল ইসলাম, সম্পাদকগণ। সার্ধশতবর্শ স্মারকগ্রন্থ ১৮৬৯-২০১৯ [SARDHOSHATOBARSHO SMARAKGRANTHO 1869-2019] (পিডিএফ)। কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া পৌরসভাআইএসবিএন 978-984-34608-1-3। ২০২৪-০৯-১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-৩১