ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার
ইবি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
Central Shaheed Minar.jpg
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ইবি
সাধারণ তথ্য
ধরনস্তম্ভ, শহীদ মিনার
স্থাপত্য রীতিআধুনিক
অবস্থানপ্রধান ফটক, ইবি ক্যাম্পাস
ঠিকানাকুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
উদ্বোধন২০১১
ব্যয়১ কোটি টাকা
স্বত্বাধিকারীইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
উচ্চতা১৩.৭১ মিটার (৪৫ ফুট)
কারিগরী বিবরণ
পদার্থইট, পাথর, বালু, সিরামিক
যে কারণে পরিচিত
  • বাংলাদেশের ২য় সর্বোচ্চ শহীদ মিনার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ শহীদ মিনার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম শহীদ মিনার[১]দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম শহীদ মিনার।[২][৩] এই শহীদ মিনারটি ২০১১ সালে নির্মান করা হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিতে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে শহীদ মিনারটি স্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রমতে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে নির্মান করতে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিলো।[৪] শহীদ মিনারটির উচ্চতা ৪৫ ফুট।[১]

অবস্থান[সম্পাদনা]

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার কুষ্টিয়া জেলায় অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে প্রবেশ করতেই বাম পার্শ্বে অবস্থিত। এই শহীদ মিনারের পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সততা ঝর্ণা এবং তার পার্শ্বে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতিসৌধ। শহীদ মিনার থেকে প্রধান ফটক পর্যন্ত প্রশস্ত রাস্তা রয়েছে যাতায়াতের জন্য।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৬-১৯৯০ সাল পর্যন্ত গাজীপুরের বোর্ড বাজারে স্থাপিত ছিলো। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শহীদ মিনার বানানোর দাবী জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা। ১৯৮৭ সালে প্রথমবার মোঃ শাহজাহান আলম সাজুসহ অনন্যরা শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য আন্দোলন করে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শহীদ মিনার স্থাপনে বাঁধা দেওয়া হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে ইট, বালু, সিমেন্ট দিয়ে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এই শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন ভাষা সৈনিক গাজীউল হক[৫]

১৯৯০ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার শান্তিডাঙ্গায় স্থানান্তর করা হয়। এই ক্যাম্পাসে ১৯৯১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠের সামনে, মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলামের ভিক্তি প্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে রাস্তার ধারে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। তবে এই শহীদ মিনার বাংলাদেশের জাতীয় শহীদ মিনারের আকৃতিতে ছিলোনা, বরং একটি খুটি-দেয়ালের মত ছিলো ও দেয়ালের সামনে কিছু জায়গা ছিলো। এই শহীদ মিনার ২০০০ সালে উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা[৫] মূল শহীদ মিনার নির্মান হওয়ার পরে, এই শহীদ মিনারটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল ধারার কোন শহীদ মিনার না থাকায়, শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালে তৎকালীন উপাচার্য মুক্তিযোদ্ধা এম আলাউদ্দিন শহীদ মিনার নির্মাণের ঘোষণা দেন। ফলস্বরূপ ২০১১ সালে বর্তমান শহীদ মিনারটি স্থাপন করা হয়।[২]

স্থাপত্যশৈলী[সম্পাদনা]

শহীদ মিনারটি মাটির উপর থেকে মূল বেদি ৯ ফুট উপরে অবস্থিত এবং মূল বেদি থেকে ১১৬ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৭৫ ফুট প্রস্থে অবস্থিত। শহীদ মিনারটির পিলারের মাঝে স্টিলের এসএস নল দিয়ে যুক্ত আছে। শহীদ মিনারের তিন পাশেই উঠার জন্য সুন্দর কারুকার্য খচিত সিরামিক ইট দিয়ে তৈরি সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও মূল বেদিতে পঙ্গু ও প্রতিবন্ধীদের উঠার জন্য ঢালু রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।[১] শহীদ মিনারটির মূল আয়তন ৪০০/২০০ বর্গফুট। মূল এছাড়াও মূল আয়তনের চতুর্দিকে দিয়ে স্থায়ীভাবে বিভিন্ন রকমের ফুলের বাগান, বক্স লাইটিং ও সার্চ লাইটিংয়ের ব্যবস্থা আছে।[৬]

স্থাপত্য তাৎপর্য[সম্পাদনা]

এই স্থাপত্যটি মূলত ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসরূপ নির্মিত হয়েছে। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অঞ্চলের মানুষের ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভুথান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান ছিলো। এই অঞ্চলের মানুষের স্বীকৃতি স্বরূপ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তচিন্তা চর্চার জন্য এই শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়।

আর‌ও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. কুমার, কাঞ্চন। "৩৫ বছর পর ইবিতে শহীদ মিনার"Risingbd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৯ 
  2. প্রতিবেদক, বিশ্ববিদ্যালয় (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "বাঁধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে শহীদ মিনার পায় ইবি"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৮ 
  3. "প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ৪২ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়"Bangladesh Journal Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৯ 
  4. সংবাদদাতা, ইবি। "সবচেয়ে বড় শহীদ মিনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে"দৈনিক জনকন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৮ 
  5. শাহজাহান, আলম সাজু (ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের স্মৃতি"আগামী নিউজ ডট কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৯ 
  6. "ফুলে ফুলে সুশোভিত ইবি ক্যাম্পাস"Odhikar। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৯