শহীদ স্মৃতিসৌধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শহীদ স্মৃতিসৌধ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
Shahid Monument, architectures of Islamic University, Bangladesh.jpg
শহীদ স্মৃতিসৌধ, ইবি
সাধারণ তথ্য
স্থাপত্য রীতিআধুনিক স্থাপত্য
অবস্থানইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কুষ্টিয়া জেলা
দেশবাংলাদেশ
নির্মাণ শুরু হয়েছে৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৯
উদ্বোধন২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০০১
ব্যয়৭০ লক্ষ টাকা
স্বত্বাধিকারীইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
উচ্চতা৭১ ফুট (২১.৬৪ মিটার)
কারিগরী বিবরণ
পদার্থলাল ইট, পাথর, সিমেন্ট
নকশা এবং নির্মাণ
স্থপতিহাশেম খান, মুনতাসীর মামুন ও স্থপতি রবিউল ইসলাম
যে কারণে পরিচিতবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ

শহীদ স্মৃতিসৌধ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের সম্মান ও স্মৃতি স্মরনার্থে নির্মিত একটি স্থাপত্য।[১] ভাস্কর্যটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে ২০০১ সালে নির্মাণ করা হয়। চিত্রশিল্পী হাশেম খান, লেখক মুনতাসীর মামুন ও স্থপতি রবিউল ইসলাম কর্তৃক প্রণীত মডেল ও স্থাপনা কর্মের ভিত্তিকে এটি নির্মিত করা হয়।[২][৩][৪] এই স্মৃতিসৌধটি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে উচু শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ।[৫]

অবস্থান[সম্পাদনা]

স্থাপত্যটি কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানায় অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করেই হাতের বাম দিকে অবস্থিত, শহীদ স্মৃতিসৌধের পাশেই অবস্থিত একটি ঝর্ণা ও তার পাশে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার[৬][৭]

আকার[সম্পাদনা]

স্থাপত্যটির মূল বেদী ৩ ফুট ৯ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি পর্যন্ত রয়েছে। এর উপরে ৭১ ফুট উঁচু লাল রঙের ইটের খিলানের মত করে চত্বর রয়েছে। মূল বেদির উপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন হয়ে থাকে।[৮] মূল বেদির মাঝখানে ২১ ফুট উচ্চতার জাতীয় পতাকার দণ্ড রয়েছে। স্থাপত্যের দুই পাশে ১০ ফুট উচ্চতার, ৩৮ ফুট ৬ ইঞ্চি প্রশস্ত নিয়ে দেয়ালচিত্র রয়েছে।[২]

স্থাপত্য তাৎপর্য[সম্পাদনা]

১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তিতে ২০০১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক এর শুভ উদ্বোধন করা হয়। ভাস্কর্যটি নির্মাণে সেই সময়ে ৭০ লক্ষ টাকা লেগেছিলো। ভাস্কর্যটি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মূলধারার যত আন্দোলন হয়েছে, সেইসব স্মৃতিচারণ ও সেই সকল বিপ্লবীদের স্মরণ করতে নির্মিত হয়েছে। স্থাপত্যটির দেয়াল চিত্রে মুক্তিকামি মানুষদের বিদ্রোহী বাক্যলাপ গুণী ব্যাক্তিদের কণ্ঠে বর্ণিত হয়েছে।[৪][৯] আর দেয়ালদুটিতে মাছ, পাখি, একতারা, শাপলাসহ বিভিন্ন ফুল ও পাতার নকশা দেয়ালচিত্রে অঙ্কিত রয়েছে যা এদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে।[১০]

দেয়াল চিত্র[সম্পাদনা]

দেয়ালচিত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, লালন শাহ, মীর মশাররফ হোসেন, পাগলা কানাইশেখ মুজিবুর রহমানের বাণী সংযোজন স্মৃতিসৌধটির গুরুত্ব আরও অর্থবহ করে তুলেছে।

বাংলার মানুষ বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছে তারা বীরের জাতি।

তারা নিজেদের অধিকার অর্জন করে মানুষের মত বাঁচতে জানে

 
— ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
তোমরা ভয় দেখিয়ে করছ শাসন, জয় দেখিয়ে নয়,

সেই জয়ের টুটিই ধরব টিপে, করব তারে লয়

 
— কাজী নজরুল ইসলাম
সব লোকে কয়-লালন কি জাত সংসারে,

লালন বলে জাতের কি রূপ দেখলাম না এ নজরে

 
শত রঙ্গের দেখিরে গাভী, এবা রঙ্গের দুধ গো দেখি।

তবে কেন ত্রিজগতে মানবিচ করত্যাচি

 
বাংলা ভাষায় যাহার ভক্তি নাই, সে মানুষ নহে
 

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "কুষ্টিয়া জেলা- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া"সরকারী ওয়েবসাইট 
  2. "স্থাপত্য শিল্পের অনন্য নিদর্শন ইবি'র শহীদ স্মৃতিসৌধ"www.bd24live.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১ 
  3. it, Build। "ইবির ভাস্কর্যে ৭১'র স্মৃতি"Voice Television। ২০২২-০৭-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১ 
  4. https://www.risingbd.com। "চেতনার প্রতীক ইবির স্মৃতিসৌধ"Risingbd Online Bangla News Portal (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১ 
  5. "টেমপ্লেট:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভাস্কর্য"উইকিপিডিয়া। ২০২১-০৪-০৬। 
  6. "ইবি'তে ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ"Barta24 (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১ 
  7. "ইবি'র শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধ সড়কের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন"campuslive24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. "ইবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. "ইবিতে ঝিমিয়ে পড়েছে ছাত্র রাজনীতি"SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১ 
  10. "ইবির ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ"jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২১