বিষয়বস্তুতে চলুন

কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর

দুর্গাপুর বিমানবন্দর
কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
বিমানবন্দরের ধরনবেসামরিক ও বেসরকরি
পরিচালকবিএপিএল
পরিষেবাপ্রাপ্ত এলাকাদুর্গাপুর, আসানসোল
অবস্থানঅন্ডাল, দুর্গাপুর, পশ্চিমবঙ্গ
চালু১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩
এএমএসএল উচ্চতা২৮৯ ফুট / ৮৮ মি
ওয়েবসাইটwww.sujalaamskycity.com
মানচিত্র
কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর ভারত বিমানবন্দর-এ অবস্থিত
কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর
কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর
ভারতে অবস্থান
রানওয়ে
দিক দৈর্ঘ্য পৃষ্ঠতল
মি ফুট
১৬/৩৪ ২,৮০০ ৯,১৮৬ আস্ফাল্ট
পরিসংখ্যান (এপ্রিল ২০২১ - মার্চ ২০২২)
বিএপিএল
চাঙ্গি বিমানবন্দর গ্রুপ
যাত্রী সংখ্যা৪,৯২,০২০ (বৃদ্ধি)
উড়ান সংখ্যা২,২৭৬ (বৃদ্ধি)
পণ্যসম্ভার (টন)৪৩৮

কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর হল পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর শহরে অবস্থিত একটি বেসরকারি বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর দুর্গাপুর বিমানবন্দর নামেও পরিচিত। এই বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত দুর্গাপুর বিমাননগরী (দুর্গাপুর এয়াট্রোপোলিশ) হল ভারতের প্রথম বিমাননগরী। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টস ইন্টারন্যাশানাল (সিএআই)-এর সহযোগিতায় বেঙ্গল এয়াট্রোপোলিশ লিমিটেড (বিএপিএল)-এর মাধ্যমে এই বিমাননগরীটি নির্মিত হচ্ছে। বাঙালি কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে এই বিমানবন্দরটির নামকরণ করা হয়েছে।[] বিমানবন্দরটি আসানসোলদুর্গাপুরের শিল্প এলাকার শহরগুলোতে বিমান পরিষেবা প্রদান করে। বিমানবন্দরটি দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এবং পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহানগর আসানসোলের সিটি বাস টার্মিনাস থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বিমানবন্দরের পরিষেবা প্রদানকারী এলাকা গুলি হল বর্ধমান, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, পুরুলিয়া, সাঁইথিয়া, সিউরি, বোলপুর, রামপুরহাট এবং ঝাড়খণ্ডের ধানবাদবোকারো শহরগুলি। এটি দেশের প্রথম বেসরকারী সেক্টর এরিয়া প্লাজার অংশ, যা বেঙ্গল এরিট্লোলোসিস প্রজেক্টস লিমিটেড (বিএপিএল) দ্বারা তৈরি হচ্ছে। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এয়ারপোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ২০১৮-২০১৯ সালের যাত্রী পরিবহনের হিসাবে দুর্গাপুর বিমানবন্দর হল পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় ও ভারতের ৫৪ তম ব্যস্ত বিমানবন্দর।[] এপ্রিল ২০২২ - মার্চ ২০২৩ সালে বিমানবন্দরটির মাধ্যমে ৪,৯২,০২০ জন যাত্রী চলাচল করেছেন।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

বামফ্রন্ট সরকারের সময় ২০০৬-০৭ সালে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের মাধ্যমে রাজ্য সরকারেরও ১.২৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সিঙ্গাপুরের সিঙ্গাপুর চাঙ্গি বিমানবন্দর (সিএআই) এর ৩৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিএপিএল- এর মধ্যে। এই প্রকল্পের অন্যান্য ভারতীয় প্রোমোটারগুলি হল আইএল ও এফএস, প্রগতি সোশ্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, প্রগতি ৪৭, লন্ড লিজ কোম্পানি ইন্ডিয়া এবং সিটিস্টর ইনফ্রাস্ট্রাকচার।  ৬০০ কোটি (ইউএস$ ৭৩.৩৪ মিলিয়ন) টাকার বিনিয়গে ৬৫০ একর জমিতে বিমানবন্দরটি নির্মিত হয়েছে। []

২৪ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে এয়ারলাইন্সের নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ থেকে বিমানবন্দরটি চূড়ান্ত কার্যকরী অনুমোদন পায়। [] ১০ ই জুন ২০১৫ তারিখে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দর থেকে তাদের বাণিজ্যিক সেবা শুরু করার আগেই ভারতীয় বিমান বাহিনী বোয়িং ৭৩৭ ভিআইপি বিমানের উপর দিল্লিতে পৌঁছানোর পর নতুন বিমানবন্দরটি ব্যবহার করার জন্য প্রথম যাত্রী হন। [] ১৮ মে ২০১৫ তারিখে নির্ধারিত বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। [] অন্য একটি বিমান সংস্থা জুম এয়ার দিল্লি কলকাতা-দুর্গাপুর রুটে উড়ান শুরু করে, তবে যাত্রী অভাবের কারণে তিন মাস পর যাত্রা বন্ধ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দর ২০১৮ সালে দিল্লি ও ২০১৯ সালে হায়দ্রাবাদ সংযোগ দ্বারা জনপ্রিয়তা লাভ করে।

পরিকাঠামো

[সম্পাদনা]
দুর্গাপুরের অন্ডালে অবস্থিত কেএনআই বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্টোলার অফিস।

টার্মিনাল

[সম্পাদনা]

বিমানবন্দরের ৫,৭৫০ বর্গমিটার যাত্রী টার্মিনাল ভবনে প্রতি বছরে ১ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহনের দক্ষতা রয়েছে এবং ভবিষ্যতে ২.৫ মিলিয়ন প্রতি বছর একটি ক্ষমতা প্রসারিত করা যেতে পারে। প্রস্থান লাউঞ্জে এবং অপেক্ষার ঘর, দুটি ব্যাগ পরিবাহক বেল্ট মধ্যে প্রচলিত ব্যবহারীর টার্মিনাল সরঞ্জাম (সিইউটিই) সঙ্গে ছয় চেক-ইন কাউন্টার আছে। টার্মিনালটি খুচরা এবং এফ এবং বি আউটলেট, এটিএম, একটি ক্লিনিক এবং ফার্মেসি, একটি শিশুর যত্নক্ষেত্র, ওয়াই-ফাই সেবা, হোটেল বুকিং কাউন্টার, সুবিধা স্টোর এবং স্পা ব্র্যান্ড প্রভৃতির ব্যবস্থা রয়েছে। [১০]

রানওয়ে

[সম্পাদনা]

বিমানবন্দরের ২৮০০ মিটার রানওয়েটি একটি ক্যাট ১ যন্ত্রের ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) দিয়ে সজ্জিত এবং এয়ারবাস এ৩২০ এবং বোয়িং ৭৩৭ এর মতো বৃহত্তর বিমান পরিচালনা করতে পারে। এয়ারপোর্ট এপ্রনের চারটি পার্কিং বে এবং একটি হেলিপ্যাড রয়েছে। এয়ারপোর্টটি বিভাগের ছয়টি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে থাকে। [১০]

বিমান এবং গন্তব্যস্থান

[সম্পাদনা]
এয়ার ইন্ডিয়া দ্বারা পরিচালিত দিল্লি থেকে আগত একটি উড়ান
বিমান সংস্থাগন্তব্যস্থলতথ্যসূত্র
ইন্ডিগো বেঙ্গালুরু, মুম্বাই, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই ভুবনেশ্বর, শিলিগুড়ি, গৌহাটি[১১]

যোগাযোগ

[সম্পাদনা]

কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরটি দুর্গাপুরআসানসোলের সাথে সুবিধাজনকভাবে সংযুক্ত। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর জন্য ও বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য নিবেদিত পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে।

রেলপথ

[সম্পাদনা]

কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল অণ্ডাল জংশন

পরিসংখ্যান

[সম্পাদনা]

২০২১–২০২২ অর্থবছরের হিসাবে, কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরটি যাত্রীর সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের ৫৬তম-ব্যস্ত বিমানবন্দর ছিল। বিমানবন্দরটি ওই সময়ের মধ্যে ২,৪৯,৯৭৫ জন যাত্রী পরিবহন করেছিল, যা আগের বছরের থেকে ২৮৮.৭৮% বৃদ্ধি পেয়েছে।[১২] বিমানবন্দর থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে উড়ান সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৩০০.৯৪% বিধি বৃদ্ধি পেয়ে ১,৯২৬ টি হয়।[১৩]

বছর যাত্রী সংখ্যা যাত্রী সংখ্যার শতকরা (%) পরিবর্তন উড়ান সংখ্যা উড়ান সংখ্যার শতকরা (%) পরিবর্তন
২০২১–২০২২ ২,৪৯,৯৭৫[১২] বৃদ্ধি২৮৮.৭৮% ১,৯২৬[১৪] বৃদ্ধি৩০০.৯৪%
২০২০–২০২১ ৮৬,৫৬১ হ্রাস ৬৪০ হ্রাস
২০১৯–২০২০ ১,৭১,১৫৫[১৫] বৃদ্ধি২৭২.৮%[১৫] ১,৫২৩[১৬] বৃদ্ধি২৩৯.২%[১৬]
২০১৮–২০১৯ ৪৫,৯০৭[১৫] বৃদ্ধি৮৪৬.৪৭% ৩৮৫ বৃদ্ধি৬৩.১%
২০১৭–২০১৮ ৫,৩৭৭ হ্রাস-৬.৯%[] বৃদ্ধি[১৭]
২০১৬–২০১৭ ৫,৯৫০[১৮] হ্রাস-৩০.১% ২৩৬[১৯] হ্রাস-৫৩.৪%
২০১৫–২০১৬ ৮,৫১৫[১৮] ৫০৬[১৯]

গন্তব্যস্থানের মানচিত্র

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Annexure III - Passenger Data" (পিডিএফ)www.aai.aero। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ 
  2. "Annexure II - Aircraft Movement Data" (পিডিএফ)www.aai.aero। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ 
  3. "Annexure IV - Freight Movement Data" (পিডিএফ)www.aai.aero। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ 
  4. "Mamata proposes to name new airport as Kazi Nazrul Islam international airport - Times Of India"। Articles.timesofindia.indiatimes.com। ২০১৩-০৫-২৫। ২০১৩-০৯-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৯-২০ 
  5. "Traffic News for the month of March 2020: Annexure-III" (পিডিএফ)Airports Authority of India। ২১ মে ২০২০। পৃষ্ঠা 3। ১ মে ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০২০ 
  6. "Rechristened Bengal aerotropolis unveiled"Business Standard। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৪ 
  7. "Bengal Aerotropolis Projects gets DGCA nod for airport"Business Standard। ২৭ এপ্রিল ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৫ 
  8. "Narendra Modi first passenger to use Andal airport"The Economic Times। ১১ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৫ 
  9. Mishra, Mihir (১৮ মে ২০১৫)। "Air India operates inaugural flight between Durgapur & Kolkata"। Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৫ 
  10. "Aerotropolis to bank on service, not size"The Times of India। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৪ 
  11. "Indigo to operate 22 new domestic flights from 28 March"www.livemint.com। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  12. "Traffic News for the month of March 2022: Annexure-III" (পিডিএফ)www.aai.aero। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২২ 
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; aai২ নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. "Traffic News for the month of March 2022: Annexure-II" (পিডিএফ)www.aai.aero। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২২ 
  15. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; knowindia.net নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  16. https://www.aai.aero/sites/default/files/traffic-news/Nov2k19Annex2.pdf [অনাবৃত ইউআরএল পিডিএফ]
  17. "Traffic News for the month of March 2019: Annexure-II" (পিডিএফ)Airports Authority of India। ১ মে ২০১৯। পৃষ্ঠা 3। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২২ 
  18. "Traffic News for the month of March 2017: Annexure-III" (পিডিএফ)Airports Authority of India। পৃষ্ঠা 3–4। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২২ 
  19. "Traffic News for the month of March 2017: Annexure-II" (পিডিএফ)Airports Authority of India। পৃষ্ঠা 3–4। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২২ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]