পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু | |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২৩°২৬′৩৯″ উত্তর ৯০°১৫′৪০″ পূর্ব / ২৩.৪৪৪৩° উত্তর ৯০.২৬১০° পূর্ব |
বহন করে | যানবাহন, ট্রেন |
অতিক্রম করে | পদ্মা নদী |
স্থান | মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা |
রক্ষণাবেক্ষক | বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ |
ওয়েবসাইট | www |
বৈশিষ্ট্য | |
নকশা | এইসিওএম |
উপাদান | কংক্রিট, স্টিল |
মোট দৈর্ঘ্য | ৬.১৫ কিলোমিটার (২০,১৮০ ফুট) |
প্রস্থ | ১৮.১৮ মিটার (৫৯.৬৫ ফুট) |
ইতিহাস | |
নকশাকার | এইসিওএম |
নির্মাণকারী | চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিঃ |
নির্মাণ শুরু | ২৬ নভেম্বর ২০১৪ |
নির্মাণ শেষ | ২৩ জুন ২০২২ |
নির্মাণ ব্যয় | ৳৩০,১৯৩ কোটি ৩৯ লক্ষ[১][২] |
উদ্বোধন হয় | ২৫ জুন ২০২২ |
চালু | ২৬ জুন ২০২২ |
অবস্থান | |
পদ্মা সেতু বা পদ্মা বহুমুখী সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই দিন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহণ করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।[৩]
পদ্মা সেতুটি বাংলাদেশ সম্পূর্ণ নিজের অর্থে তৈরি করেছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। দুই স্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।[৪] পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় তৈরি সেতুটি ৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০.১২ মিটার (৪৯২.৫ ফুট) এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার (৭৪ ফুট)। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল)।[৫][৬][৭][৮][৯][১০] এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু, স্প্যান সংখ্যা ও মোট দৈর্ঘ্য উভয়ের দিক থেকে গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত দীর্ঘতম সেতু এবং ১২৮ মিটার (৪২০ ফুট) গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু।[১১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী জাপান থেকে আগত জরিপ বিশেষজ্ঞদের একটি দল পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) নিকট ঢাকা–ফরিদপুর সড়ক নির্মাণের জন্য একটি সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন জমা দেয়। সড়কটি নির্মাণের অংশ হিসেবে তারা পদ্মা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেন।[১২] বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিলেও তার মৃত্যুর কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি।[১৩]
১৯৯৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকার রাজধানী ঢাকা ও দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা-খুলনা মহাসড়কে পদ্মা নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য ৩,৬৪৩.৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করে। ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৮.১০ মিটার চওড়া উক্ত সেতুটিকে দেশের সম্ভাব্য দীর্ঘতম সেতু হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। প্রস্তাবে ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০০৪ সালের জুনে শেষ করার কথা জানানো হয়। নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত টাকার ২৬৯৩.৫০ কোটি টাকা বিদেশী উৎস থেকে এবং ৭৫০ কোটি টাকা জাতীয় উৎস থেকে জোগান দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।[১৪] পরে ১৯৯৯ সালের মে মাসে উক্ত সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই পরীক্ষা শুরু হয়। ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।[৩] ৮ম সাধারণ নির্বাচনের পর পরবর্তী সরকারের পরামর্শক কমিটি পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া পয়েন্ট, দোহার-চরভদ্রাসন পয়েন্ট, মাওয়া-জাজিরা পয়েন্ট এবং চাঁদপুর-ভেদরগঞ্জ পয়েন্টে প্রাক-বাস্তবায়নযোগ্যতার সমীক্ষা করায়। ২০০৪ সালে জাইকা (জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা) নিয়োজিত পরামর্শক নিপ্পন কোয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণকল্পে বিস্তারিত সমীক্ষা পরিচালনার পর আগের নির্ধারিত মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টেই সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেয়।[১৫]
২০০৬-২০০৭ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।[১৬] তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ সেতু নির্মাণের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তা পাবার জন্য আলোচনা শুরু করে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ২০০৭ সালের ২০ অগাস্ট তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার একনেকের বৈঠকে ১০,১৬১ কোটি টাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।[৩] তখন ২০১৫ সালের মধ্যে সেতুটি নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এই জন্য সেই বছর পদ্মা সেতুর বিশদ নকশা প্রণয়নে দরপত্রও আহ্বান করা হয়।[৩]
২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। তখন ২০১১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা জানানো হয়। এই জন্য ২০০৯ সালে নকশা প্রণয়নের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয় ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়।[৩] সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাইকা ও ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক অর্থ যোগান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ২০০৯ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশ ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে।[৩]
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বাসেক) ২০১০ সালের এপ্রিলে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্পের জন্য প্রাকযোগ্যতা দরপত্র আহ্বান করে। প্রথম পরিকল্পনা অনুসারে ২০১১ সালের শুরুর দিকে সেতুর নির্মাণ কাজ আরম্ভ হওয়ার কথা ছিল[১৭] এবং ২০১৩ সালের মধ্যে প্রধান কাজগুলো শেষ হওয়ার কথা ছিল।[১৮] পরিকল্পনা অনুসারে প্রকল্পটি তিনটি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করবে: মুন্সীগঞ্জ (মাওয়া পয়েন্ট/উত্তর পাড়), শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর (জঞ্জিরা/দক্ষিণ পাড়)। এটির জন্য প্রয়োজনীয় এবং অধিগ্রহণকৃত মোট জমির পরিমাণ ৯১৮ হেক্টর।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্প পাস করলেও আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ও ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। তখন এর ব্যয় ধরা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। পরে পদ্মা সেতুর ব্যয় আরও আট হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়। ফলে তখন পদ্মা সেতুর ব্যয় দাঁড়ায় সর্বমোট ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।[১৯]
২০১১ সালের এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি হয়। একই বছরের ১৮ মে জাইকার সঙ্গে সরকারের ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং ৬ জুন এডিবির সঙ্গে ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঋণচুক্তি হয়। ২০১১ সালের ১০ অক্টোবরে দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমানের নামও দুর্নীতির অভিযোগের সাথে যুক্ত হয়। ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে বদলি করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয় ও ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
২০১২ সালের ২৯ জুন সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দরপত্রে অংশ নেওয়া এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তিটি বাতিল করে।[২০] পরে অন্য দাতা সংস্থাগুলোও তার প্রতিশ্রুত ঋণচুক্তি বাতিল করে। ২০১২ সালের ৪ জুলাই জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করার কথা বলেন এবং ৮ জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ পরিকল্পনা সংসদে পেশ করেন। ২০১২ সালের ৯ জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। বিশ্বব্যাংকের শর্তের কারণে ২৩ জুলাই তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়[২১] ও ২৪ জুলাই সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে ওএসডি করা হয়। সরকারের অনুরোধে ২০ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাংক প্রকল্পে পুনরায় সম্পৃক্ত হতে রাজি হলেও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থায়ন করতে অসম্মতি জানায়। ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান আসামি করে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ২৬ ডিসেম্বর রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় দুদক। গ্রেপ্তার করা হয় আরও দুজনকে। ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্ত হন তিনি।
২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ আর নেওয়া হবে না – সরকার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ২০১৩ সালের ২৬ জুন আবার দরপত্র আহ্বান করা হয়।[২২]
২০১৪ সালের ১৭ জুন পদ্মা বহুমুখী সেতুটি নির্মাণে চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে সেতু বিভাগ। ২০১৪ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর দুদক জানায় পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। ২৬ অক্টোবর পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলার অবসান হয়। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নকশা ও কর্ম পরিকল্পনা
[সম্পাদনা]পদ্মা বহুমুখী সেতুর সম্পূর্ণ নকশা এইসিওএমের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শকদের নিয়ে গঠিত একটি দল তৈরি হয়। বাংলাদেশের প্রথম বৃহৎ সেতু প্রকল্প যমুনা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরি করা হয়। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে ১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভাপতি নিযুক্ত করা হয়। এ প্যানেল সেতুর নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে প্রকল্প কর্মকর্তা, নকশা পরামর্শক ও উন্নয়ন সহযোগীদের বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদান করে।[২৩]
পদ্মা সেতুর ভৌত কাজকে মূলত পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়: মূল সেতু, নদী শাসন, জাজিরা সংযোগকারী সড়ক ও টোল প্লাজা। মাওয়া সংযোগকারী সড়ক, টোল প্লাজা ইত্যাদি এবং মাওয়া ও জাজিরা সার্ভিস এলাকা। প্রকল্পে নিয়োজিত নকশা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘মনসেল-এইকম’ ভৌত কাজের ঠিকাদার নিয়োগের প্রাক-যোগ্যতা দরের নথি প্রস্তুত, টেন্ডার আহ্বানের পর টেন্ডার নথি মূল্যায়ন, টেন্ডার কমিটিকে সহায়তাসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেল নকশা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারক করত। ভৌত কাজের বিভিন্ন প্যাকেজের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি।
পাইলিংয়ের সমস্যা
[সম্পাদনা]প্রথম দিকে সেতু নির্মাণকারী প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের পদ্মা নদীর তলদেশের মাটি খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়। তলদেশে স্বাভাবিক মাটি পাওয়া যায়নি। সেতুর পাইলিং কাজ শুরুর পরে সমস্যা দেখা যায়। প্রকৌশলীরা নদীর তলদেশে স্ক্রিন গ্রাউটিং পদ্ধতিতে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় মাটির বদলে নতুন মাটি তৈরি করে পিলার গাঁথার চেষ্টা করে। এ প্রক্রিয়ায় উপর থেকে পাইপের ছিদ্র দিয়ে রাসায়নিক নদীর তলদেশে পাঠিয়ে মাটির শক্তিমত্তা বাড়ানো হয়। তারপর ওই মাটিতে পিলার গেঁথে দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিতে পাইলের সঙ্গে স্টিলের ছোট ছোট পাইপ ওয়েল্ডিং করে দেওয়া হয়। পাইপের ভেতর দিয়ে এক ধরনের কেমিক্যাল পাঠিয়ে দেওয়া হয় নদীর তলদেশের মাটিতে। রাসায়নিকের প্রভাবে তখন তলদেশের সেই মাটি শক্ত রূপ ধারণ করে। এক পর্যায়ে সেই মাটি পাইলের লোড বহনে সক্ষম হয়ে উঠে, তখন আর পাইল বসাতে কোনো বাধা থাকে না।[২৪]
নির্মাণব্যয়
[সম্পাদনা]পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি। বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।[৬]
ক্রমিক ব্যয়বৃদ্ধি
[সম্পাদনা]২০০৫ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রাথমিক প্রাক্কলন ধরা হয়েছিল ১২,০০০ কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় পৃথিবীর অন্যান্য তুলনীয় সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের নিরিখে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সর্বমোট নির্মাণ ব্যয় ১০,০০০ কোটি টাকায় সীমিত রাখার পরামর্শ প্রদান করেন।
২০০৭ সালের আগস্ট মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একনেক-এর সভায় পদ্মা সেতুর চূড়ান্ত প্রাক্কলন ১০,১৬১ কোটি অনুমোদন করা হয়।
পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে প্রাক্কলন বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ অনুমোদিত প্রাক্কলনের পরিমাণ ৩০,১৯৩ কোটি টাকা, যা মূল প্রাক্কলনের চেয়ে ২০,০৩২ কোটি টাকা বেশি। বলা হয়েছে বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়াই প্রকল্প ব্যয় এতো বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ।[২৫]
মার্কিন ডলারের হিসাবে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সড়ক-রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় এগারো বছরে ১.৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩.৫৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। চীনের ৬.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ উফেনসাং ইয়াংজি সড়ক-রেল সেতু ২০২০ সালের ডিসেম্বরে চালু করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে তুলনীয় এই সেতুর নির্মাণে ৪ বছর লেগেছে এবং ব্যয় হয়েছে ১.০৫ বিলিয়ন ডলার, যা পদ্মা সেতুর এক-তৃতীয়াংশের চেয়েও কম।[২৬]
নির্মাণের সময়ক্রম
[সম্পাদনা]মূল সেতুর জন্য চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনকে নিযুক্ত করা হয়। চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন নদী শাসনের কাজ করে। বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেডকে দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণের চুক্তি দেওয়া হয়। অক্টোবর ২০১৭ সালে মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
- ২০১৭
- ৩০ সেপ্টেম্বর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পদ্মা সেতুতে পিলারের ওপর বসানো হয় প্রথম স্প্যান। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে এই স্প্যান বসানো হয়।[২৭]
- ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান।
- ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়।
- ২৯ জুন সেতুর পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়।
- ২০১৮
- জানুয়ারি মাসে জাজিরা প্রান্তের তীরের দিকের ষষ্ঠ শেষ স্প্যান বসে।
- ২৮ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান ৭বি সুপার স্ট্রাকচার বসানো হয়। প্রথম স্প্যান বসানোর প্রায় চার মাস পর জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে তিন হাজার ১৫০ টন ধারণ ক্ষমতার এ স্প্যান বসানো হয়।
- মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসে সপ্তম স্প্যান।
- ২০১৯
- ২০ ফেব্রুয়ারি জাজিরা প্রান্তে ৩৬ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর অষ্টম স্প্যান বসানো হয়।
- ২২ মার্চ সেতুর ৩৫ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর বসে নবম স্প্যানটি।
- ১০ এপ্রিল মাওয়া প্রান্তে ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারের ওপর দশম স্প্যান।
- ২৩ এপ্রিল শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর ১১তম স্প্যান বসে।
- ১৭ মে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের মাঝামাঝি স্থানে ২০ ও ২১ নম্বর পিলারের ওপর ১২তম স্প্যান বসানো হয়।
- ২৫ মে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের ওপর ১৩তম স্প্যান ৩বি বসানো হয়।
- ২৯ জুন ১৪তম স্প্যান বসানো হয়।
- ২২ অক্টোবর জাজিরা প্রান্তে ২৪ ও ২৫ নম্বর পিলারের ওপর পদ্মা সেতুর ১৫তম স্প্যান বসানো হয়।
- ২৭ নভেম্বর মাওয়া প্রান্তে ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারের ওপর ১৬তম স্পানটি বসানো হয়।
- ২০১৯ সালেল ৫ ডিসেম্বর পিলার ২২ ও ২৩–এর ওপর মূল সেতুর ১৭তম স্প্যানটি বসানো হয়।
- ১১ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ১৮তম স্প্যান বসানো হয়।
- ১৮ ডিসেম্বর বসানো হয় ১৯তম স্প্যান।
- ৩১ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারের উপরে বসানো হয় পদ্মা সেতুর ২০তম স্প্যান। ধূসর রঙের ‘৩-এফ’ নম্বরের স্প্যানটি খুঁটির উপরে বসানো হয়।
- ২০২০
- ১৪ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ২১তম স্প্যান।
- ২৩ জানুয়ারি মাওয়া প্রান্তের ৫ ও ৬ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ২২তম স্প্যান।
- ২ ফেব্রুয়ারি বসেছে ২৩তম স্প্যান।
- ১১ ফেব্রুয়ারি বসেছে ২৪তম স্প্যান।
- ২১ ফেব্রুয়ারি ২৫তম স্প্যান বসানো হয়।
- ১০ মার্চ পদ্মা সেতুর ২৬তম স্প্যান বসানো হয়। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২৮ ও ২৯ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় এই স্প্যান।
- ২০ এপ্রিল ২৭তম স্প্যানটি পিলার-২৭ ও ২৮-এর ওপর বসানো হয়।
- ১১ এপ্রিল জাজিরা প্রান্তে বসানো হয় ২৮তম স্প্যান।
- ৪ মে মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১৯ ও ২০তম পিলারের ওপর ‘৪এ’ আইডি নম্বরে সেতুর ২৯তম স্প্যান বসানো হয়।
- ৩০ মে জাজিরা প্রান্তে সেতুর ২৬ ও ২৭ নম্বর পিলারের (খুঁটি) ওপর বসানো হয় ৩০তম স্প্যান।
- ১০ জুন পদ্মা সেতুর ৩১তম স্প্যান বসানো হয়। সেতুর ২৫ ও ২৬ নম্বর পিয়ারে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৫-এ স্প্যান বসানো হয়।
- ১১ অক্টোবর পদ্মা সেতুর ৩২তম স্প্যানটি বসানো হয়। পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে প্রথম দিন বসানো সম্ভব না হলেও প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় দ্বিতীয় দিনে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। বন্যা ও পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে স্প্যানটি বসানো হয় চার মাস পর।
- ২০ অক্টোবর বসানো হয় সেতুর ৩৩তম স্প্যান।
- ২৫ অক্টোবর ৩৪তম স্প্যান বসানো হয় সেতুর মাওয়া প্রান্তে ৭ ও ৮ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান ২-এ।
- ৩১ অক্টোবর ৩৫তম স্প্যান বসানো হয় মাওয়া প্রান্তে ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান ২-বিতে।
- ৬ নভেম্বর পদ্মা সেতুর ৩৬তম স্প্যান বসানো হয় সেতুর মাওয়া প্রান্তের ২ ও ৩ নম্বর পিলারের ওপর।
- ১৩ নভেম্বর ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’ মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ৯ ও ১০নং পিলারের ওপর বসানো হয়।
- ২১ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১ ও ২ নম্বর খুঁটির ওপর ৩৮তম স্প্যানটি সফলভাবে বসানো হয়।
- ২৭ নভেম্বর ৩৯ তম স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়। স্প্যানটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১০ ও ১১ নম্বর পিলারের ওপর ‘২-ডি’ স্প্যানটি বসানো হয়।
- ৪ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ৪০তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় সেতুর ছয় হাজার মিটার।
- ১০ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ তম পিলারে ৪১তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পুরো পদ্মা সেতু।[২৮]
- ২০২১
- ২৩ আগস্ট সর্বশেষ সড়ক স্ল্যাব বসানো হয়।[২৯]
- ২০২২
চুক্তিবদ্ধ সংস্থা
[সম্পাদনা]২০১৪ সালের ১৭ জুন পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চীনের কোম্পানিটি পদ্মাসেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায়। পদ্মা সেতু নির্মাণে ২০১০ সালে প্রথম দরপত্র আহবান করা হলে সেখানে প্রাক-যোগ্যত অর্জনের জন্য ৪০টি কোম্পানি অংশ নেয়। বিশ্বব্যাংক, জাইকা ও এডিবির তত্বাবধানে এদের মধ্যে ৫টি কোম্পানিকে বাছাই করা হয়। পরে বিশ্বব্যাংকের আপত্তির কারণে একটি কোম্পানি বাদ পড়ে যায়। আর্থিক প্রস্তাব আহ্বান করলে শুধুমাত্র চীনের এই কোম্পানিটি আর্থিক প্রস্তাব জমা দেয়।[৩২] কোম্পানিটি চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের অধীনস্থ।[৩৩]
২০২২ সালের এপ্রিলে সেতু বিভাগের অধীনে, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পদ্মা বহুমুখী সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন ও চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৩৪]
উদ্বোধন
[সম্পাদনা]২০২২ সালের ২৫ জুন সেতুটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন ও পরের দিন থেকে এটি সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।[৩৫] উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।[৩৬] উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান ও জঙ্গী হেলিকপ্টার অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে ও ফ্লাইপাস প্রদর্শন করে।[৩৭] সেতুটির উদ্বোধন উপলক্ষে পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান,[৩৮] চীন,[৩৯] রাশিয়া,[৪০] ডেনমার্কসহ[৪১] পৃথিবীর অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রদূত অভিনন্দন বার্তা পাঠায়। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধিও বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানান।[৪২][৪৩]
উদ্বোধনের পর জনসাধারণের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।[৪৪][৪৫] উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রথম দিনই গতিসীমা অমান্য করে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন মৃত্যুবরণ করে।[৪৬] ফলশ্রুতিতে সেতুতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাসদস্যরা টহল কার্যক্রম জোরদার করেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত সেতুতে অভিযান পরিচালনায় নামে, পাশাপাশি সেতুতে যানবাহন থামানো, পার্কিং, পায়ে হেঁটে পার হওয়া ও মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।[৪৭][৪৮]
টোল ও আয়
[সম্পাদনা]২৮ এপ্রিল ২০২২ সালে সেতু মন্ত্রণালয় পদ্মা সেতুর জন্য টোলের হার প্রস্তাব করে ও তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠায়। ১৭ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিবহনের জন্য আলাদা আলাদা টোলের হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।[৪৯] পদ্মা সেতুর টোল আদায়ে সহায়তা করছে যমুনা ব্যাংক।[৫০]
পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। অনুমান করা হচ্ছে,২০২২ সালে এই সেতু দিয়ে বাংলাদেশের ২৩ জেলায় প্রতিদিন ২১,৩০০টি যানবাহন চলাচল করবে, যা ২০২৫ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়াবে ৪১,৬০০। এদের সবার থেকে টোল বাবদ যে আয় হবে, তা দিয়ে সেতুর ব্যয় উঠে আসতে সাড়ে ৯ বছর সময় লাগবে। বিশ্বব্যাংকের বরাতে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা জানায়, আগামী ৩১ বছরে যোগাযোগ খাতে পদ্মা সেতু থেকে আয় হবে ১৮.৫ বিলিয়ন ডলার (নির্মাণ খরচের ৫.৫ গুণ)। এছাড়া সামাজিক অগ্রগতি ও অর্থনীতিতে ২৫ বিলিয়ন ডলার যোগ করবে। দুই পারে নদী শাসনের মাধ্যমে যে জমি রক্ষা হয়েছে তার মূল্য প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সেতুর মাধ্যমে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ইন্টারনেট লাইন গিয়ে সাশ্রয় করবে ২,৪০০ কোটি টাকা। ফেরি চলাচল না হওয়ায় খরচ সাশ্রয় হবে ৩,৬০০ কোটি টাকা। চুক্তি অনুযায়ী সেতু কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩৫ বছরে ৩৬ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টোল থেকে আদায়কৃত অর্থের অধিকাংশ দিয়ে ঋণ পরিশোধ করা হবে এবং বাকি অর্থ দিয়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।[৫১]
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
[সম্পাদনা]পদ্মা বহুমুখী সেতুর মাওয়া-জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে নির্দিষ্ট পথের মাধ্যমে বাংলাদেশের কেন্দ্রের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সরাসরি সংযোগ তৈরি হয়। এই সেতুটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। প্রকল্পটির ফলে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪৪,০০০ বর্গ কি.মি. (১৭,০০০ বর্গ মাইল) বা বাংলাদেশের মোট এলাকার ২৯% অঞ্চলজুড়ে ৩ কোটিরও অধিক জনগণ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে। ফলে প্রকল্পটি দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। সেতুটিতে ভবিষ্যতে রেল, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন এবং ফাইবার অপটিক কেবল সম্প্রসারণের ব্যবস্থা রয়েছে। এই সেতুটি নির্মানের ফলে বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।[৫২]
বিতর্ক ও গুজব
[সম্পাদনা]২০১৯ সালের জুলাই মাসে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা প্রয়োজন বলে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অপহরণকারী ধারণা করে অনেক মানসিক ভারসাম্যহীনদের মারধর ও গণপিটুনির ঘটনা ঘটে; এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। পরে এ তথ্যকে গুজব ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে ৯ জুলাই ২০১৯ তারিখে সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো বন্ধে গবেষকরা সেতু কর্তৃপক্ষকে সেতুটি নির্মাণের খুঁটিনাটি সকল তথ্য জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন।[৫৩][৫৪]
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
২০১৯ সালে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু
-
২০১৯ সালে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু
-
২০২০ সালে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু
-
২০১৯ সালে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু
-
২০২১ সালের নভেম্বরে পদ্মা সেতু
-
২০২২ সালের পদ্মা সেতুর চূড়ান্ত কাঠামো
-
সেতুর নিচের অংশ
-
সেতু উপর সড়ক
-
সেতু দিয়ে একটি বাস যাচ্ছে
-
রাতের বেলায় দূর থেকে সেতু
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- ঢাকা-যশোর রেলপথ
- পদ্মা সেতু ঘুষ কেলেঙ্কারি
- শেখ রাসেল সেনানিবাস, পদ্মা সেতুর কাছাকাছি অবস্থিত সেনানিবাস
- বঙ্গবন্ধু সেতু
- বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পের তালিকা
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "প্রথম বছরে আয়ের লক্ষ্য পৌনে ৫০০ কোটি টাকা"। প্রথম আলো। ১৬ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০২২।
- ↑ "এক নজরে পদ্মা সেতু"। ডেইলি স্টার। ২০২২-০৫-২৫। ২০২২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২৫।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "পদ্মা সেতু উদ্বোধন করলেন শেখ হাসিনা, ঢাকার সাথে সড়কপথে যুক্ত হল এক তৃতীয়াংশ বাংলাদেশ"। বিবিসি বাংলা। ২৫ জুন ২০২২। ১৯ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০২২।
- ↑ সুলতানা মুনিমা (১৪ অক্টোবর ২০১৪)। "Korean co gets Pawdda bridge supervision work"। দা ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস। ঢাকা। ৭ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ প্রথম আলো (৮ ডিসেম্বর ২০১৪)। "বাস্তবের পথে পদ্মা সেতু"। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ ক খ "পদ্মা সেতুতে বসেছে সর্বশেষ স্প্যান, গাড়ি চলবে কবে?"। বিবিসি বাংলা। ২০২০-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১০।
- ↑ "পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ২৫ জুন"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২০২২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২৫।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন"। প্রথম আলো। ২০২২-০৫-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২৫।
- ↑ "'শেখ হাসিনা সেতু' নয়, পদ্মা সেতু নামেই শুরু হবে যাত্রা, উদ্বোধন ২৫ জুন"। হিন্দুস্তান টাইমস। ২০২২-০৫-২৫। ২০২২-০৫-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Padma Multipurpose Bridge Project, Volume II: Environmental Assessment" [পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প , খন্ড ২ : পরিবেশগত মূল্যায়ন]। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ "৩ বিশ্ব রেকর্ড করল পদ্মা সেতু"। যুগান্তর। ২৮ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "ঢাকা–ফরিদপুর সড়ক প্রকল্প নতুন যুগের সূচনা করতে পারে"। দৈনিক পূর্বদেশ (ইন্টারনেট আর্কাইভ)। ১৯ জানুয়ারি ১৯৭১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২২।
- ↑ আহমেদ, রাকিবুজ্জামান (২২ জুন ২০২২)। "পদ্মা সেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখিয়েছে"। যুগান্তর। ১৫ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২২।
- ↑ "পাক্ষিক আহ্মদী - নব পর্যায় ৬১বর্ষ | ৬ষ্ঠ সংখ্যা | ৩০শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ইং"। আহমদীয়া মুসলিম জামাত, বাংলাদেশ। ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮: ৪০। ১৫ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০২২।
- ↑ সৈয়দ আবুল হোসেন। "যেভাবে বাস্তবে রূপ নিল পদ্মা সেতু"। বণিক বার্তা। ১২ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২২।
- ↑ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি। পরিকল্পনা কমিশন, বাংলাদেশ সরকার। ২০০৬। পৃষ্ঠা ৬২৩। ১৫ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০২২।
- ↑ "Funds for Pawdda Bridge Arranged"। Bangladesh News। ৪ ডিসেম্বর ২০১০। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ "ADB Approves Loan for Bangladesh Bridge Project"। roadtraffic-technology.com। ৩০ নভেম্বর ২০১০। ২৯ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "২০১৯ সালে শেষ হবে পদ্মা সেতু"। প্রথম আলো। ৩০ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০২১।
- ↑ "পদ্মা সেতুর দুর্নীতির গুজব সৃষ্টিকারীদের খুঁজতে তদন্ত কমিশন গঠন কতদূর?"। বাংলা ট্রিবিউন। ১৯ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২২।
- ↑ "পদ্মা সেতুতে ২০১৩ সালেই গাড়ি চলত"। সমকাল। ১৯ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২২।
- ↑ "পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীকে সাহস জুগিয়েছে মোনেম পরিবার"। দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ। ২৭ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২২।
- ↑ "ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর প্রয়াণ ও পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে কিছু কথা"। বণিকবার্তা। ২০২২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১০।
- ↑ "পদ্মার তলে মাটি বদলে যেভাবে দাঁড়ালো পিলার, জানালেন জামিলুর রেজা"। সারাবাংলা। ২০২০-০১-১৭। ২০২০-০২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১০।
- ↑ Hossain, Anowar। "Padma bridge: Time and cost both increasing"। দৈনিক প্রথম আলো (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০৮।
- ↑ "An Investigating Report on Padma Bridge"। The Lawyers & Jurists। ২০২০-১১-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০৮।
- ↑ হোসেন, আনোয়ার। "পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর কাজ চলছে"। প্রথম আলো। ২০২০-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১০।
- ↑ "পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের অন্যতম বড় এই সেতুতে বসেছে সর্বশেষ স্প্যান, গাড়ি চলবে কবে?"। বিবিসি বাংলা। ১০ ডিসেম্বর ২০২০। ১০ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর (আগস্ট ২৩, ২০২১)। "পদ্মা সেতুতে বসল শেষ স্ল্যাব, বাকি শুধু পিচ ঢালাই"। bdnews24.com। ২০২১-০৮-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-৩০।
- ↑ "আলোকিত পুরো পদ্মা সেতু, জ্বলল ৪১৫ বাতি"। যুগান্তর। ১৪ জুন ২০২২। ১৬ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০২২।
- ↑ প্রতিনিধি, বিশেষ। "পদ্মা সেতুতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি"। প্রথম আলো। ২০২২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০৮।
- ↑ "পদ্মা সেতু নির্মাণে চীনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর"। বিবিসি বাংলা। ২০১৪-০৬-১৭। ২০২১-০৪-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০।
- ↑ ডয়েচ ভেলে (২০১৭-০৯-৩০)। "দৃশ্যমান পদ্মা সেতু"। ২০১৭-১২-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজ পেল চীনা ও কোরীয় কম্পানি"। কালের কণ্ঠ। ৭ এপ্রিল ২০২২। ২২ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২২।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন"। প্রথম আলো। ২০২২-০৭-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী"। নয়া দিগন্ত। ২০২২-০৬-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মার আকাশে লাল-সবুজের বর্ণিল আয়োজন উপভোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী"। jagonews24.com। ২০২২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতুর জন্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীকে"। desh.tv। ২০২২-০৬-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতু নিয়ে ভিডিও বার্তা চীনা রাষ্ট্রদূতের, যা বললেন"। যুগান্তর। ২০২২-০৮-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতু উদ্বোধন: অভিনন্দন জানালো রাশিয়া"। desh.tv। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে ডেনমার্কের অভিনন্দন"। মানবজমিন। ২০২২-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে যা বললেন বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি"। যুগান্তর। ২০২২-০৬-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "অর্থায়নে পিছু হটা বিশ্বব্যাংক অভিনন্দন জানালো বাংলাদেশকে"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতুতে গাড়ি থামিয়ে টিকটক ভিডিও বানাচ্ছেন তারা"। সমকাল। ২০২২-০৬-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে টিকটকে ভিডিও, সেই যুবক আটক"। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। ২০২২-০৬-২৬। ২০২২-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই বন্ধুর মৃত্যু"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতুতে বসছে ভ্রাম্যমাণ আদালত"। যুগান্তর। ২০২২-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা সেতুতে মোটর বাইক ওঠা নিষিদ্ধ হল"। bangla.bdnews24.com। ২০২২-০৬-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-২৭।
- ↑ "পদ্মা পাড়ি দিতে কত খরচ হবে, জানাল সরকার"। প্রথম আলো। ১৭ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২২।
- ↑ "পদ্মা সেতুর একক টোল আদায়ে যমুনা ব্যাংক"। ঢাকা মেইল। ৮ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "পদ্মা সেতুর খরচ উঠতে কতদিন লাগবে?"। যুগান্তর। ২৫ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০২২।
- ↑ "Gains from Padma Bridge to cross $10b, hope experts" [পদ্মা সেতু থেকে লাভ ১০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে, আশা বিশেষজ্ঞদের]। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ জুন ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৩।
- ↑ "গুজবের জবাব দিলো পদ্মাসেতু"। দৈনিক প্রথম আলো। ১১ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগার গুজব কেন ছড়ালো?"। বিবিসি বাংলা। ১০ জুলাই ২০১৯। ২৯ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৯।