চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার লাইন | |
---|---|
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
ধরন | বাংলাদেশের রেললাইন |
অবস্থা | সক্রিয় |
অঞ্চল | ![]() |
বিরতিস্থল | |
ক্রিয়াকলাপ | |
উদ্বোধন |
|
মালিক | বাংলাদেশ রেলওয়ে |
পরিচালক | পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে |
প্রযুক্তিগত | |
ট্র্যাক গেজ |
|
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার লাইন বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি রেলপথ। এই লাইনটি পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।[১] যাত্রাপথে কখনো চোখে পড়বে নদীর সৌন্দর্য। মুগ্ধ করবে টিলা–পাহাড়ি এলাকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। যেতে যেতে কখনো দুই ধারে দেখা মিলবে বিস্তীর্ণ ধানখেতের নয়নাভিরাম দৃশ্য।চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলতি পথের এই মনোরম পরিবেশ দেখার সুযোগ করে দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই রেলপথ পর্যটন খাত ছাড়াও কক্সবাজারের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ, লবণ, রবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ পণ্য পরিবহনব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি চট্টগ্রাম-ষোলশহর লাইন ১৯২৯ সালে, ষোলশহর-নাজিরহাট লাইন ১৯৩০ সালে, ষোলশহর এবং দোহাজারী লাইন ১৯৩১ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে।[২] ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্প নেওয়ার সময় ২০১৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। তা বাড়িয়ে করা হয় ২০১৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় ২০১৭ সালে।[৩] চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন ২০২২ সালে সারা দেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে আশা করছে সরকার।[৪]
প্রকল্পের উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]
পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করা। পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা। তবে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ আপাতত হচ্ছে না।[৫] কক্সবাজারের মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প অঞ্চলসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে নানা প্রকল্পের কাজ চলছে। চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ ও দ্রুত করার জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে চলছে টানেলের নির্মাণকাজ। এর পাশাপাশি রেললাইন স্থাপিত হলে কক্সবাজারে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে।
প্রকল্পের ব্যয়, সময়কাল ও ঠিকাদার[সম্পাদনা]
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে কাজটি করছে। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।[৬] প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।[৭]
প্রকল্প নেওয়ার সময় ২০১৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। তা বাড়িয়ে করা হয় ২০১৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় ২০১৭ সালে। তখন প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ঠিক করা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ২০২৩ সালের জুনে চালু হতে পারে নতুন এই রেলপথ।[৮]
স্টেশন তালিকা[সম্পাদনা]
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল পথের মধ্যে কক্সবাজার অংশের নির্মিত ঝিনুকাকৃতির আইকনিক ভবনটি দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন। ২৯ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা রেলস্টেশন ভবনটি ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৭ বর্গফুটের।[৯] চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে থাকা রেলওয়ে স্টেশন গুলোর তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
- চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন
- চট্টগ্রাম জংশন রেলওয়ে স্টেশন
- ঝাউতলা রেলওয়ে স্টেশন
- চট্টগ্রাম পলিটেকনিক রেলওয়ে স্টেশন
- ষোলশহর জংশন রেলওয়ে স্টেশন
- জান আলীর হাট রেলওয়ে স্টেশন
- গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন
- বেঙ্গুরা রেলওয়ে স্টেশন
- ধলঘাট রেলওয়ে স্টেশন
- খানমোহনা রেলওয়ে স্টেশন
- পটিয়া রেলওয়ে স্টেশন
- চক্রশালা রেলওয়ে স্টেশন
- খরনা রেলওয়ে স্টেশন
- কাঞ্চননগর রেলওয়ে স্টেশন
- খানহাট রেলওয়ে স্টেশন
- হাশিমপুর রেলওয়ে স্টেশন
- দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন
- সাতকানিয়া রেলওয়ে স্টেশন
- লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশন
- হারবাং রেলওয়ে স্টেশন
- চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশন
- ডুলাহাজরা রেলওয়ে স্টেশন
- ইসলামাবাদ রেলওয়ে স্টেশন
- রামু রেলওয়ে স্টেশন
- কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন।
শাখা লাইন[সম্পাদনা]
ষোলশহর-নাজিরহাট ঘাট লাইন[সম্পাদনা]
আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ষোলশহর থেকে নাজিরহাটের হালদা নদীর ঘাট পর্যন্ত একটি মিটারগেজ রেললাইন তৈরি করে ১৯৩০ সালে৷
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "দৃশ্যমান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২০।
- ↑ "রেলওয়ে - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২০।
- ↑ হোসেন, আনোয়ার। "চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল: স্টেশনে লাগেজ রেখেই ছুটতে পারবেন পর্যটকেরা"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৯।
- ↑ "কক্সবাজারে চলবে ট্রেন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-২০।
- ↑ হোসেন, আনোয়ার। "চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল: স্টেশনে লাগেজ রেখেই ছুটতে পারবেন পর্যটকেরা"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৯।
- ↑ হোসেন, আনোয়ার। "চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল: স্টেশনে লাগেজ রেখেই ছুটতে পারবেন পর্যটকেরা"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৯।
- ↑ "চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব"। dhakapost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৯।
- ↑ হোসেন, আনোয়ার। "চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল: স্টেশনে লাগেজ রেখেই ছুটতে পারবেন পর্যটকেরা"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৯।
- ↑ কুদ্দুস, আব্দুল। "কক্সবাজারে দৃশ্যমান আইকনিক রেলস্টেশন"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-০৬।