বিষয়বস্তুতে চলুন

ধর্ম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিভিন্ন ধর্মের প্রতীক (বাম থেকে ডানে, উপর থেকে নিচে): খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম, হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, ইহুদি ধর্ম, বাহাই ধর্ম, ইক্যাংকার, শিখধর্ম, জৈনধর্ম, উইকা, একক সর্বজনীনতাবাদ, শিন্তৌ ধর্ম, তাওবাদ, থেলিমা, তেনরিকিঔ ও জরথুস্ত্রবাদ

ধর্ম (বাংলা উচ্চারণ: [dʱɔɾmo] ধর্‌মো) হলো একাধিক অর্থবাচক একটি শব্দ; সাধারণত এটি দ্বারা সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার একটি পরিসরকে বোঝায়, যার মধ্যে রয়েছে মনোনীত আচরণ ও অনুশীলন, নৈতিকতা, বিশ্বাস, বিশ্বদর্শন, পাঠ্য, পবিত্র স্থান, ভবিষ্যদ্বাণী, নীতিশাস্ত্র বা সংগঠন, যা সাধারণত মানবতাকে অতিপ্রাকৃত, অতীন্দ্রিয় ও আধ্যাত্মিক উপাদানের সাথে সম্পর্কিত করে[]—যদিও ধর্ম সুনির্দিষ্টভাবে কীসের সমন্বয়ে গঠিত হয় তা নিয়ে পণ্ডিতদের মাঝে কোনো ঐক্যমত নেই।[][] তবে ভারতীয় দর্শনে, ধর্ম বলতে সাধারণত প্রাকৃতিক ও মহাজাগতিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আইন, শৃঙ্খলা, আচরণ, নৈতিক গুণাবলি ও কর্তব্য, অনুশীলন এবং জীবনযাত্রাকে বোঝায়।[][][] বিভিন্ন ধর্মে ঐশ্বরিকতা,[] পবিত্রতা,[] আধ্যাত্মিক বিশ্বাস[] ও এক বা একাধিক অতিপ্রাকৃতিক সত্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপাদান থাকতে পারে বা নাও থাকতে পারে।[১০]

ধর্মীয় অনুশীলনের মধ্যে থাকতে পারে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান, উপদেশ, স্মরণ বা উপাসনা (দেবতা বা সাধুদের), বলিদান, উৎসব, ভোজন, সমাধি, দীক্ষা, বিবাহশেষকৃত্য, ধ্যান, প্রার্থনা, সঙ্গীত, শিল্পকলা, নৃত্য বা জনসেবামূলক কাজ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। বিভিন্ন ধর্মের পবিত্র ইতিহাস ও আখ্যান রয়েছে, যা পবিত্র গ্রন্থ, প্রতীক ও পবিত্র স্থানগুলোতে সংরক্ষিত হতে পারে, যার প্রাথমিকভাবে উদ্দেশ্য জীবনের অর্থ প্রদান। ধর্মে প্রতীকী গল্প থাকতে পারে যা হয়ত চেষ্টা করে জীবনের উৎপত্তি, মহাবিশ্ব ও অন্যান্য ঘটনা ব্যাখ্যা করতে; এ সকল ধর্মের কিছু অনুসারী এগুলোকে সত্য গল্প বলে বিশ্বাস করে; অন্যরা এগুলোকে পৌরাণিক কাহিনি হিসেবে বিবেচনা করে। ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস ও যুক্তি উভয়কেই ধর্মীয় বিশ্বাসের উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১১]

বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১০,০০০ টি স্বতন্ত্র ধর্ম রয়েছে,[১২] যদিও তন্মধ্যে প্রায় প্রত্যেকটি ধর্মই অঞ্চল ভিত্তিক, যেগুলোর অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র অনুসারী রয়েছে। চারটি ধর্ম—খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম, হিন্দুধর্মবৌদ্ধধর্ম—বিশ্বের জনসংখ্যার ৭৭% মানুষ অনুসরণ করে এবং বিশ্বের ৯২% মানুষ হয় এই চারটি ধর্মের যেকোনো একটি অনুসরণ করে নতুবা নিজেদের ধর্মহীন হিসেবে পরিচয় দেয়,[১৩] অর্থাৎ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮% বাকি ৯,০০০+ বিশ্বাস অনুসরণ করে। ধর্মীয়ভাবে অসংলগ্ন লোকেদের মাঝে রয়েছে যাঁরা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন না, নাস্তিকঅজ্ঞেয়বাদীরা, যদিও এদের অনেকেই তবু্ও বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী।[১৪]

অনেক বৈশ্বিক ধর্মসমূহ সংগঠিত ধর্মও বটে, যার মধ্যে রয়েছে খ্রিস্টান, ইসলাম ও ইহুদি ধর্মের মতো ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহ, যেখানে অন্যান্য ধর্মগুলো যৌক্তিকভাবে স্বল্প সংগঠিত, বিশেষ করে লোকধর্ম, আদিবাসী ধর্ম এবং কিছু প্রাচ্য ধর্ম। বিশ্বের জনসংখ্যার একটি অংশ নতুন ধর্মীয় আন্দোলনের অনুসারী।[১৫] পণ্ডিতরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ধর্মীয় দেশগুলোর সাধারণত উচ্চ জন্মহারের কারণে বিশ্বব্যাপী ধার্মিকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।[১৬]

ধর্মের অধ্যয়নে ধর্মতত্ত্ব, ধর্মের দর্শন, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব ও সামাজিক বৈজ্ঞানিক অধ্যয়নসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শাখা রয়েছে। ধর্মের তত্ত্বসমূহ ধর্মীয় সত্তা ও বিশ্বাসের সত্তাতত্ত্বের ভিত্তিসহ এর উৎস ও কাজের জন্য বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করে।[১৭]

ব্যুৎপত্তি ও ধারণাটির বিকাশ

[সম্পাদনা]

ব্যুৎপত্তি

[সম্পাদনা]
ব্রাহ্মী লিপিতে প্রাকৃত শব্দ "ধ-ঙ-ম"/𑀥𑀁𑀫 (সংস্কৃত: धर्म ধর্ম), অশোকের অনুশাসনে (খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতক) সম্রাট অশোক কর্তৃক খোদাইকৃত। বাংলা ধর্ম শব্দটি এখান থেকেই এসেছে।

বাংলায় ব্যবহৃত ধর্ম শব্দটি একটি তৎসম তথা সংস্কৃত শব্দ, এর উৎপত্তি √ধৃ ধাতু হতে, যার অর্থ "ধারণ" বা "বহন"।[১৮] সংস্কৃত ধর্ম শব্দটিও প্রচলিত অর্থে ধর্মকে নির্দেশ করে,[১৯] তবে এই দিক থেকে, এর অর্থ দাঁড়ায় "যা প্রতিষ্ঠিত বা দৃঢ়", অতএব এর অর্থ "আইন"। এটি একটি পুরাতন বৈদিক সংস্কৃত শব্দ ধর্মন্‌- (-ন্‌ কান্ডযুক্ত), যার আক্ষরিক অর্থ "ধারক, বাহক", এটি ধর্মীয় দৃষ্টিতে ঋতের একটি দিক হিসেবে কল্পিত হয়।[২০]

সংস্কৃত ধর্ম

[সম্পাদনা]

ধর্ম শব্দটি ঐতিহাসিক বৈদিক ধর্মের সময় থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে এবং এর অর্থ ও ধারণা বেশ কয়েক সহস্রাব্দ যাবত বিবর্তিত হয়েছে। ঋগ্বেদে, শব্দটি -ন্‌ কান্ডযুক্ত ধর্মন্‌ হিসেবে আবির্ভূত হয়, যার অর্থের একটি পরিসরের মাঝে রয়েছে "প্রতিষ্ঠিত বা দৃঢ় কিছু" (আক্ষরিক অর্থে শঙ্কু বা খুঁটি, রূপকার্থে "টেকসই" ও (দেবতাদের) "বাহক")।[২১] শাস্ত্রীয় সংস্কৃত ও অথর্ববেদের বৈদিক সংস্কৃতে শব্দটির শেষে -ন্‌ কান্ডের ব্যবহার বিষয়ভিত্তিক: ধর্ম (দেবনাগরী: धर्म)। প্রাকৃত ও পালি ভাষায় একে ধম্ম হিসেবে লেখা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকে মৌর্য সম্রাট অশোক ধর্ম শব্দকে গ্রিক ও আরামীয় ভাষায় অনুবাদ করেন এবং তিনি কান্দাহার দ্বিভাষিক প্রস্তর শিলালিপি ও কান্দাহার গ্রিক অনুশাসনে ধর্ম-এর জন্য গ্রিক শব্দ ইউসেবিয়া (εὐσέβεια, ভক্তি, আধ্যাত্মিক পরিপক্কতা বা দেবানুগত্য) ব্যবহার করেন।[২২] কান্দাহার দ্বিভাষিক প্রস্তর শিলালিপিতে তিনি আরামীয় শব্দ קשיטא (qšyṭ'; সত্য, ন্যায়পরায়ণতা) ব্যবহার করেন।[২৩]

বৈশিষ্ট্য অর্থে

[সম্পাদনা]

ধর্ম বলতে কখনো কখনো কোনো প্রাণী বা বস্তুর বৈশিষ্ট্যকে বোঝায়। তবে এর ব্যবহার বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র পর্যন্তই সীমাবদ্ধ, যেমন: মৌলের পর্যায়বৃত্ত ধর্ম

"ধর্ম" ধারণাটির ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ধর্ম একটি আধুনিক ধারণা।[২৪] ধর্মের আধুনিক ও বৈশ্বিক ধারণাটি ইউরোপীয়দের নিকট থেকে উদ্ভুত হয়েছে। তবে ইউরোপীয়দের মাঝেও ধারণাটি সাম্প্রতিককালের।প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের সময় খ্রিস্টীয় বিশ্বের বিভক্তি ও আবিষ্কারের যুগে বিশ্বায়নের মতো ঘটনার কারণে ১৭ শতকের ইউরোপীয় পাঠ্যগুলোতে "ধর্ম" শব্দটির আধুনিক ব্যবহার পাওয়া যায়, যা অ-ইউরোপীয়দের সাথে অসংখ্য বিদেশী সংস্কৃতির সাথে যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট ছিল।[২৫][২৬][২৭] কেউ কেউ যুক্তি দেন যে এর সংজ্ঞা যাই হোক না কেন, অ-পশ্চিমা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ধর্ম শব্দটি প্রয়োগ করা উপযুক্ত নয়,[২৮][২৯] যেখানে বিভিন্ন ধর্মের কিছু অনুসারী তাঁদের নিজস্ব বিশ্বাস ব্যবস্থাকে বর্ণনা করার জন্য শব্দটি ব্যবহার করে তিরস্কার করেন।[৩০]

"প্রাচীন ধর্ম" এর ধারণাটি অনুশীলনের একটি পরিসরের আধুনিক ব্যাখ্যা থেকে উদ্ভূত যা ধর্মের একটি আধুনিক ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যা আধুনিক ও ১৯ শতকের প্রথম দিকের খ্রিস্টীয় বক্তৃতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।[৩১] ধর্মের ধারণাটি ১৬ ও ১৭ শতকে গঠিত হয়েছিল,[৩২][৩৩] যদিও বাইবেল, কুরআন ও অন্যান্য প্রাচীন পবিত্র গ্রন্থের মূল ভাষাগুলোতে ধর্মের জন্য কোনো শব্দ বা এমনকি এর কোনো ধারণাও ছিল না এবং যে সংস্কৃতি ও মানুষের মাঝে এই পবিত্র গ্রন্থগুলো লেখা হয়েছিল তাঁদের মাঝেও ধর্মের কোনো ধারণা ছিল না।[৩৪][৩৫] উদাহরণস্বরূপ, হিব্রুতে ধর্ম শব্দটির কোনো সুনির্দিষ্ট সমতুল্য নেই এবং ইহুদি ধর্মে ধর্ম, বর্ণ, জাতি বা জনগোষ্ঠী পরিচয়ের মধ্যে স্পষ্টভাবে পার্থক্য করা হয় না।[৩৬][৩৭][৩৮] ইহুদিদের কেন্দ্রীয় ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো হালাখা, যার অর্থ হাঁটা বা পথ কখনো কখনো আইন হিসেবেও অনূদিত হয়, যা ধর্মীয় অনুশীলন ও বিশ্বাস এবং দৈনন্দিন জীবনের অনেক দিক নির্দেশ করে।[৩৯] যদিও ইহুদি ধর্মের বিশ্বাস ও ঐতিহ্যগুলো প্রাচীন বিশ্বে পাওয়া যায়, প্রাচীন ইহুদিরা তাঁদের ইহুদি পরিচয়কে একটি জাতিগত বা জাতীয় পরিচয় হিসেবে দেখতো এবং তাঁদের সংস্কৃতিতে একটি বাধ্যতামূলক বিশ্বাস ব্যবস্থা বা নিয়ন্ত্রিত আচার-অনুষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হয় নি।[৪০] খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে, জোসেফাস গ্রিক শব্দ ioudaismos (ইহুদি ধর্ম)-কে একটি জাতিগত শব্দ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন এবং এটি ধর্মের আধুনিক বিমূর্ত ধারণা অথবা বিশ্বাসের একটি গুচ্ছে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না।[] "ইহুদি ধর্ম"-এর ধারণাটি খ্রিস্টীয় চার্চ কর্তৃক উদ্ভাবিত হয়েছিল[৪১] এবং ১৯ শতকে ইহুদিরা তাঁদের পূর্বপুরুষদের সংস্কৃতিকে খ্রিস্টধর্মের অনুরূপ একটি ধর্ম হিসেবে দেখতে শুরু করে।[৪০] গ্রিক শব্দ threskeia, যা হেরোডোটাস ও জোসেফাসের মতো গ্রীক লেখকরা ব্যবহার করেছিলেন, বাইবেলের নতুন নিয়মে পাওয়া যায়। আজকের অনুবাদে threskeia কখনো কখনো "ধর্ম" হিসেবে অনূদিত হয়, তবে শব্দটি মধ্যযুগে সাধারণত "উপাসনা" হিসেবে অনূদিত হত।[] কুরআনে আরবি শব্দ দ্বীনকে প্রায়ই আধুনিক অনুবাদে ধর্ম হিসেবে অনূদিত হয়, কিন্তু ১৬০০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত অনুবাদকরা দ্বীনকে "আইন" হিসেবে অনুবাদ করতেন।[]

তদ্রূপ সংস্কৃত শব্দ ধর্মকেও কখনো কখনো আধুনিক অর্থে ধর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হয়,[১৯] এর অন্যতম অর্থ আইন। ধ্রুপদী যুগের দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ধর্মশাস্ত্রে প্রায়শ্চিত্তআচারের মতো ধারণাও ছিল। মধ্যযুগীয় জাপানে প্রথমে রাজকীয় আইন ও সার্বজনীন বা বৌদ্ধ আইনের মধ্যে একটি অনুরূপ সংযুক্তি তৈরি হয়, কিন্তু পরবর্তীতে এসব ক্ষমতার স্বাধীন উৎস হয়ে উঠে।[৪২][৪৩]

যদিও প্রথা, পবিত্র গ্রন্থ ও অনুশীলনগুলো যুগব্যাপী বিদ্যমান ছিল, বেশিরভাগ সংস্কৃতি ধর্মের পাশ্চাত্য ধারণার সাথে সারিবদ্ধ ছিল না কারণ তারা পবিত্রতা থেকে দৈনন্দিন জীবনকে পৃথক করেনি। ১৮ ও ১৯ শতকে বৌদ্ধধর্ম, হিন্দুধর্ম, তাওবাদ, কনফুসীয়বাদ ও বিশ্বধর্ম শব্দগুলো প্রথম ইংরেজি ভাষায় প্রবেশ করে।[৪৪][৪৫][৪৬] নেটিভ আমেরিকানদেরও মনে করা হত যে, তাঁদের কোনো ধর্ম নেই এবং তাঁদের ভাষায়ও ধর্মের জন্য কোনো অনুরূপ শব্দ ছিল না।[৪৫][৪৭] ১৮০০-এর আগে কেউ একজন হিন্দু বা বৌদ্ধ বা অন্যান্য অনুরূপ নামে স্ব-পরিচয় পায়নি।[৪৮] "হিন্দু" শব্দটি ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের আদিবাসীদের জন্য ভৌগলিক, সাংস্কৃতিক ও পরবর্তীতে ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য শনাক্তকারী শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।[৪৯][৫০] জাপানের সুদীর্ঘ ইতিহাসে ধর্মের কোনো ধারণা ছিল না যেহেতু ধর্মের অনুরূপ কোনো জাপানি শব্দ ছিল না বা এর অর্থের কাছাকাছি কিছু ছিল না, কিন্তু ১৮৫৩ সালে যখন মার্কিন যুদ্ধজাহাজ জাপানের উপকূলে উপস্থিত হয়েছিল এবং জাপান সরকারকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ধর্মের স্বাধীনতার দাবিতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিল, তখন দেশটির এই ধারণাটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছিল।[৫১][৫২]

১৯ শতকের সাংস্কৃতিক ভাষাতাত্ত্বিক ম্যাক্স মুলারের মতে ইংরেজি শব্দ religion লাতিন ক্রিয়ামূল religiō মূলত ঈশ্বর বা দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধা, ঐশ্বরিক জিনিসের যত্নশীল চিন্তাভাবনা, ধার্মিকতা বোঝাতে ব্যবহৃত হতো (যার থেকে সিসারো পরিশ্রম অর্থে আরও উদ্ভুত করেছেন)।[৫৩][৫৪] মুলার মিশর, পারস্য ও ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য অনেক সংস্কৃতিকে ইতিহাসের এই বিষয়ে একই রকম অনুক্রমের বৈশিষ্ট্যযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেন। আজ যাকে প্রাচীন ধর্ম বলা হয়, তাঁরা কেবল তাকে আইন বলতো।[৫৫]

সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

পণ্ডিতগণ ধর্মের সংজ্ঞা নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে, দুটি সাধারণ সংজ্ঞা ব্যবস্থা রয়েছে: সমাজতাত্ত্বিক/কার্যকরী এবং ঘটনাগত/দার্শনিক।[৫৬][৫৭][৫৮][৫৯][৬০]

আধুনিক পাশ্চাত্য মতবাদ

[সম্পাদনা]

ধর্মের ধারণার উৎপত্তি আধুনিক যুগে পাশ্চাত্য সভ্যতায়।[২৯]

বিভিন্ন দিক

[সম্পাদনা]

বিশ্বাস

[সম্পাদনা]

ধর্মীয় বিশ্বাসের উৎপত্তি একটি মুক্ত প্রশ্ন, যার সম্ভাব্য ব্যাখ্যাসমূহের মাঝে রয়েছে ব্যক্তিমৃত্যুর সচেতনতা, সাম্প্রদায়িক চেতনা ও স্বপ্ন।[৬১] ঐতিহ্যগতভাবে, যুক্তির পাশাপাশি আধ্যাত্মিক বিশ্বাসও ধর্মীয় বিশ্বাসের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বিশ্বাস ও যুক্তির মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিপাদন হিসেবে এদের ব্যবহার দার্শনিক ও ধর্মতাত্ত্বিকদের আগ্রহের বিষয়।

পৌরাণিক কাহিনি

[সম্পাদনা]
হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতে চিত্তাকর্ষক কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের চিত্রিত একটি পাণ্ডুলিপি। মহাভারত হলো এখন পর্যন্ত জানা দীর্ঘতম মহাকাব্য এবং হিন্দু পুরাণের মূল উৎস।

পুরাণ শব্দের বিভিন্ন অর্থ রয়েছে:

  1. দৃশ্যত ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহের একটি ঐতিহ্যবাহী গল্প যা একজন মানুষের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির একটি অংশকে উন্মোচন করে অথবা একটি অনুশীলন, বিশ্বাস বা প্রাকৃতিক ঘটনা ব্যাখ্যা করে;
  2. একজন ব্যক্তি বা একটি বস্তু যার কেবল একটি কাল্পনিক বা যাচাই-অযোগ্য অস্তিত্ব রয়েছে; বা
  3. মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক সম্ভাবনার জন্য একটি রূপক।[৬২]

প্রাচীন বহু-ঈশ্বরবাদী ধর্মসমূহ যেমন গ্রিস, রোমস্ক্যান্ডিনেভিয়ার ধর্মসমূহকে সাধারণত পৌরাণিক কাহিনি শিরোনামে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। একইভাবে প্রাক-শিল্প জনগণের ধর্ম, বা উন্নত অর্থে সংস্কৃতিকে, ধর্মের নৃবিজ্ঞানে পুরাণ বলা হয়। পুরণ শব্দটি ধার্মিক ও অ-ধর্মীয় উভয় সম্প্রদায় কর্তৃক নিন্দনীয় অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। কেউ অন্য ব্যক্তির ধর্মীয় গল্প ও বিশ্বাসকে পৌরাণিক কাহিনি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে বোঝাতে চায় যে সেগুলো তাঁর নিজের ধর্মীয় গল্প ও বিশ্বাসের চেয়ে কম বাস্তব বা সত্য। জোসেফ ক্যাম্পবেল মন্তব্য করেছেন, "পৌরাণিক কাহিনিকে প্রায়শই অন্যান্য মানুষের ধর্ম হিসেবে মনে হয়, এবং ধর্মকে ভুল ব্যাখ্যাকৃত পৌরাণিক কাহিনি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।"[৬৩]

তবে সমাজবিজ্ঞানে, পুরাণ শব্দটির একটি অ-নিন্দনীয় অর্থ রয়েছে। সেখানে পুরাণকে একটি গল্প হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা কোনো সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তা বস্তুনিষ্ঠ বা প্রমাণিত সত্য হোক বা না হোক।[৬৪] উদাহরণের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্টানদের নিকট তাঁদের বাস্তব প্রতিষ্ঠাতা যিশুর পুনরুত্থান, যেখানে তাদের পাপ থেকে মুক্তির উপায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, এটি মৃত্যুর উপর জীবনের শক্তির প্রতীকী এবং এটিকে তাঁরা একটি ঐতিহাসিক ঘটনাও বিবেচনা করে। কিন্তু একটি পৌরাণিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে, ঘটনাটি আসলে ঘটেছিল কিনা তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। পরিবর্তে, একটি পুরোনো জীবনের মৃত্যু এবং একটি নতুন জীবনের শুরুর প্রতীকীতা সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। ধর্মীয় বিশ্বাসীরা এই ধরনের প্রতীকী ব্যাখ্যা গ্রহণ করতেও পারে বা নাও করতে পারে।

অনুশীলন

[সম্পাদনা]

একটি ধর্মের অনুশীলনের মধ্যে রয়েছে আচার-অনুষ্ঠান, উপদেশ, কোনো উপাস্যের (দেবতা বা দেবীর) স্মরণ বা পূজা, বলিদান, উৎসব, ভোজ, সমাধি, দীক্ষা, অন্তেষ্টিক্রিয়া, বিবাহ, ধ্যান, প্রার্থনা, ধর্মীয় সঙ্গীত, ধর্মীয় শিল্পকলা, পবিত্র নৃত্য, জনসেবা, বা মানব সংস্কৃতির অন্যান্য দিক।[৬৫]

সামাজিক সংগঠন

[সম্পাদনা]

অনুসারী বা সংঘ গঠনের জন্য ধর্মের একটি সামাজিক ভিত্তি ও একটি সংজ্ঞা রয়েছে, হয় একটি জীবন্ত ঐতিহ্য হিসেবে সাধারণ ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা বাহিত হয়, অথবা একটি সংগঠিত পন্ডিতদের দ্বারা বাহিত হয়।

শ্রেণিবিভাগ

[সম্পাদনা]
বিশ্বের প্রধান সম্প্রদায় ও ধর্মসমূহের একটি মানচিত্র

১৯ ও ২০ শতকে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের প্রাতিষ্ঠানিক অনুশীলনে ধর্মীয় বিশ্বাসকে দার্শনিকভাবে সংজ্ঞায়িত শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয় যাকে বৈশ্বিক ধর্ম বলে। এই বিষয়ে অধ্যয়নরত কিছু শিক্ষাবিদ ধর্মকে তিনটি বিস্তৃত ভাগে ভাগ করেছেন:

  1. বিশ্বধর্ম, একটি শব্দ যা বহুসংস্কৃতিব্যাপী, আন্তর্জাতিক ধর্মকে বোঝায়;
  2. আদিবাসী ধর্ম, যা ছোট, সংস্কৃতি-নির্দিষ্ট বা জাতি-নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীকে বোঝায়; এবং
  3. নতুন ধর্মীয় আন্দোলন, যা সাম্প্রতিক বিকশিত ধর্মগুলোকে বোঝায়।[৬৬]

সাম্প্রতিক কিছু বিদ্যাবত্তা যুক্তি দেখিয়েছে যে সকল ধরনের ধর্মকে অবশ্যই পারস্পরিক বিশেষিত দর্শন দ্বারা পৃথক করা হয় না এবং উপরন্তু উল্লেখ করে যে একটি অনুশীলনকে একটি নির্দিষ্ট দর্শন হিসেবে বর্ণনা করার উপযোগিতা সীমিত, এমনকি একটি প্রদত্ত অনুশীলনকে সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বা সামাজিক ক্ষেত্রে ধর্মীয় বলার পরিবর্তে।[৬৭][৬৮][৬৯] ধর্মীয়তার প্রকৃতি সম্পর্কে মনস্তাত্ত্বিক অধ্যয়নের বর্তমান অবস্থায় ধারণা করা হয় যে ধর্মকে একটি বহুলাংশে অপরিবর্তনীয় ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করাই উত্তম যা সাংস্কৃতিক নিয়ম থেকে পৃথক হওয়া উচিত।[৭০]

রূপতাত্ত্বিক প্রকারভেদ

[সম্পাদনা]

কিছু ধর্মতত্ত্ববিদ ধর্মসমূহকে হয় সর্বজনীন ধর্ম হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেন যেগুলো বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা চায় এবং সক্রিয়ভাবে নতুন ধর্মান্তরিতদের গ্রহণ করে, যেমন বাহাই ধর্ম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইসলাম ও জৈন ধর্ম, যেখানে জাতিগত ধর্মগুলো একটি নির্দিষ্ট জাতিগত গোষ্ঠীর সাথে সংশ্লিষ্ট এবং ধর্মান্তরিতদের গ্রহণ করে না যেমন ইহুদি ধর্ম।[৭১][৭২] অন্যরা এই ধরনের পার্থক্য প্রত্যাখ্যান করে, এই বলে যে সকল ধর্মীয় অনুশীলনই জাতিগত, তাঁদের দার্শনিক উৎস যাই হোক না কেন, কারণ তারা একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতি থেকে উদ্ভুত।[৭৩][৭৪][৭৫]

জনসাংখ্যিক প্রকারভেদ

[সম্পাদনা]
জনপ্রিয় ও বৈশ্বিক ধর্মসমূহের অনুসারীদের উদাহরণ, উপরে বাম থেকে: খ্রিস্টানরা, মুসলিমরা, হিন্দুরা, বৌদ্ধরা, শিখরাইহুদিরা

বিশ্বের জনসংখ্যা অনুসারে পাঁচটি বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠী, যাদের আনুমানিক ৫৮০ কোটি মানুষ অনুসরণ এবং বিশ্বের জনসংখ্যার ৮৪%, হলো খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম, বৌদ্ধধর্ম, হিন্দুধর্ম (বৌদ্ধধর্ম ও হিন্দুধর্মের জন্য আপেক্ষিক সংখ্যাসমূহ সমন্বয়বাদের পরিমাণের উপর নির্ভর করে) এবং ঐতিহ্যগত লোকধর্ম।

পাঁচটি বৃহত্তম ধর্ম ২০১৫ (কোটি)[৭৬] ২০১৫ (%) সংখ্যা
খ্রিস্টধর্ম ২৩০ ৩১% দেশ অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম
ইসলাম ১৮০ ২৪% দেশ অনুযায়ী ইসলাম
হিন্দুধর্ম ১১০ ১৫% দেশ অনুযায়ী হিন্দুধর্ম
বৌদ্ধধর্ম ৫০ ৬.৯% দেশ অনুযায়ী বৌদ্ধধর্ম
লোকধর্ম ৪০ ৫.৭%
মোট ৬১০ ৮৩%
বিশ্বাস ব্যবস্থা অনুযায়ী বিশ্বের মোটামুটি একটি বিভাজন: গোলাপিতে ইব্রাহিমীয় এবং হলুদে ভারতীয়

২০১২ সালে একটি বৈশ্বিক জরিপে ৫৭ টি দেশে সমীক্ষা করা হয় এবং প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে বিশ্বের জনসংখ্যার ৫৯% ধার্মিক, ২৩% ধার্মিক নন ও ১৩% প্রতীত নাস্তিক হিসেবে পরিচয় দেন এবং মানুষকে ধার্মিক হিসেবে পরিচয় প্রদান করার মাত্রা ২০০৫ সালের ৩৯ টি দেশের গড় হিসাবের তুলনায় ৯% হ্রাস পেয়েছে।[৭৭] ২০১৫ সালে একটি ফলো-আপ জরিপে পাওয়া গেছে যে বিশ্বের ৬৩% ধার্মিক, ২২% ধার্মিক নন এবং ১১% প্রতীত নাস্তিক হিসেবে হিসেবে পরিচয় দেন।[৭৮] গড়ে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অধিক ধার্মিক।[৭৯] কিছু মানুষ একই সময়ে একাধিক ধর্ম বা একাধিক ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করেন, ঐতিহ্যগতভাবে তাঁরা যে ধর্মীয় রীতিনীতিগুলো অনুসরণ করে তা নির্বিশেষে সমন্বয়বাদের অনুমতি দিক বা না দিক৷[৮০][৮১][৮২] জন্মহারের পার্থক্যের কারণে ধর্মীয়ভাবে অসংশ্লিষ্ট জনসংখ্যা হ্রাস পাবে বলে অনুমান করা হয়, এমনকি বিসম্বন্ধের হার বিবেচনায় নেওয়া হলেও।[৮৩][৮৪]

বিশেষজ্ঞরা ইঙ্গিত করেছেন যে ধর্মীয় দেশগুলোতে উচ্চ জন্মহারের কারণে বৈশ্বিক ধার্মিকতা বৃদ্ধি পেতে পারে।[৮৫]

ধর্মের ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ধর্মের ইতিহাস বিভিন্ন ধর্মমতে ভিন্ন ভিন্ন, তবে বর্তমান পৃথিবীর প্রধান তিনটি ধর্ম অর্থ্যাৎ খ্রিস্টান, ইসলাম ও ইহুদি ধর্মমতে পৃথিবীর সকল মানুষ একজন পিতা ও একজন মাতা থেকে জন্ম গ্রহণ করেছে। এই দুইজন আদি পিতা আদম (Adam) ও মাতা হাওয়া (Eve) এর মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্ম। এই তিন ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ যথাক্রমে বাইবেল (নিউ টেস্টামেন্ট), কুরআন মাজিদ ও তাওরাহ (ওল্ড টেস্টামেন্ট) থেকে এই ঘটনার সুত্র পাওয়া যায়। মানব্জাতির সৃষ্টির পর থেকেই মুলত মানুষের ধর্মের সুত্রপাত। ইসলাম ধর্মমতে আদম (আলাইহিস সালাম) পৃথিবীতে আগমনের পর তার প্রাথমিক কাজ ছিল কীভাবে পৃথিবীতে জীবন ধারণ করতে হবে তা প্রতিপালন করা এবং এক্ষেত্রে ফেরেশতা জিবরাইল (আলাইহিস সালাম) (Gabrial) আদম (আলাইহিস সালাম) কে সহযোগিতা করেছেন। কীভাবে ঘর নির্মাণ করতে হবে, খাবার তৈরী করতে হবে, শিকার করতে হবে এসকল জিনিস ছিল তার প্রাথমিক ধর্ম। পরবর্তিতে আদম (আলাইহিস সালাম) ও হাওয়া (আলাইহিস সালাম) এর সন্তানসন্ততি জন্মগ্রহণ করলে তখনো তাদের জীবনধারণ করাটাই ছিল তাদের ধর্মের মূল বিধিবিধান।

ধর্মীয় ধারণাগুলোর প্রাচীনতম প্রমাণ পাওয়া যায় কয়েক হাজার বছর আগে মধ্য ও নিম্ন প্যালিলিথিক যুগে। প্রত্নতাত্ত্বিকগণ প্রায় ৩০০,০০০ বছর আগে ধর্মীয় ধারণার প্রমাণ হিসাবে হোমো স্যাপিয়েনদের কবরস্থানের কথা উল্লেখ করেছেন। ধর্মীয় ধারণার অন্যান্য প্রমাণ আফ্রিকায় পাওয়া যায়, যার মধ্যে মধ্য পাথর যুগে হস্তনির্মিত বিভিন্ন প্রতীকী অন্তর্ভুক্ত। যাইহোক, প্রাথমিক প্যালিলিথিক যুগের হস্তনির্মিত বিভিন্ন প্রতীকীর ব্যাখ্যা, যা কীভাবে ধর্মীয় ধারণা সম্পর্কিত, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ের প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ কিছুটা কম বিতর্কিত। বিজ্ঞানীরা সাধারণত ধর্মীয় ধারণার প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে উর্ধ-প্যালোলিথিক (৫০,০০০-১৩,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) যুগ থেকে পাওয়া বেশ কয়েকটি প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয় ব্যাখ্যা করে থাকেন। সেই যুগের ধর্মীয় বিশ্বাসগুলোর সাথে সম্পর্কিত উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে সিংহের মত দেখতে মানুষ, শুক্রের মূর্তি, চাউট গুহার সমাধি, গুহা চিত্র ইত্যাদি।

উনিশ শতকের গবেষকগণ ধর্মের উৎস সম্পর্কিত বিভিন্ন তত্ত্ব প্রস্তাব করেছিলেন, যেটি খ্রিস্টান মতবাদকে বিতর্কিত করেছিলো। উদারতার আগে দাবিগুলো চ্যালেঞ্জ করেছিল। প্রারম্ভিক তত্ত্ববিদ এডওয়ার্ড বার্নেট টাইলর (১৮৩২-১৯১৭) এবং হার্বার্ট স্পেন্সার (১৮২০-১৯০৩) অ্যানিমিজমের ধারণা প্রস্তাব করেছিলেন। আর প্রত্নতত্ত্ববিদ জন লুবক (১৮৩৪-১৯১৩) শব্দটিকে "প্রতিমাবাদ" বলেন। এদিকে ধর্মীয় পণ্ডিত ম্যাক মুলার (১৮২৩-১৯০০) বলেন ধর্ম শুরু হয় হেডোনিজম থেকে। ফোকলোরিস্ট উইলহেলম মানহার্ড (১৯৩১-১৮৮০) বলেছিলেন, ধর্ম "প্রাকৃতিকতা" থেকে শুরু হয়েছিল, যার দ্বারা তিনি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর পৌরাণিক ব্যাখ্যা বোঝাতে চেয়েছিলেন।[৮৬] এই সব তত্ত্বগুলো ব্যাপকভাবে সমালোচনা করা হয়েছে। ধর্মের উৎপত্তি সংক্রান্ত কোন বিস্তৃত ঐক্যমত্য নেই।

প্রাক-মৃৎপাত্র নিওলিথিক এ (পিপিএনএ) গোবেকলি তেপে, যা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাচীনতম ধর্মীয় স্থান।[৮৭] এর মধ্যে রয়েছে বিশাল টি-আকৃতির প্রস্তর স্তম্ভ, যা বিশ্বের প্রাচীনতম মেগালিথ হিসেবে পরিচিত। [৮৮] এটি বিমূর্ত চিত্র, চিত্রগ্রন্থ এবং পশু ভাস্কর্য ইত্যাদি দ্বারা সজ্জিত। এটি তথাকথিত নিউলিথিক বিপ্লবের আগে নির্মিত হয়েছিল, যেমনঃ ৯০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কৃষি ও পশুপালন শুরু হয়েছিলো। কিন্তু গোবেকলি তেপের নির্মাণে একটি উন্নত সংগঠন বুঝায়, যা এখন পর্যন্ত প্যালিওলিথিক, পিপিএনএ বা পিপিএনবি সমাজগুলোর সাথে সম্পর্কিত নয়। জায়গাটি প্রথম কৃষি সমাজের শুরুতে প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে যায়। জায়গাটি এখনও খনন এবং বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এভাবে এই অঞ্চলের পুরনো সম্প্রদায়ের জন্য, সেইসাথে ধর্মের সাধারণ ইতিহাসের জন্য উল্লেখযোগ্য বিষয় সম্পর্কে জানা যাবে।

ধর্মের উপকারিতা

[সম্পাদনা]

সংগঠিত ধর্ম নিম্নলিখিত উপায়ে বৃহত্তর জনসংখ্যার সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রদানের মাধ্যম হিসাবে উত্থাপিত হয়েছেঃ

  • সংগঠিত ধর্ম একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে ন্যায্যতা প্রদান করে, যার ফলে রাষ্ট্রকে সামাজিক ও নিরাপত্তা পরিষেবা প্রদানের জন্য কর আদায় করার অধিকার লাভ করে। ভারত এবং মেসোপটেমিয়ার ধর্মশাসনে বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানগণ,রাজা, এবং সম্রাট রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে ভূমিকা পালন করতেন।[৮৯] বিশ্বব্যাপী সমস্ত রাষ্ট্রীয় সমাজে অনুরূপ রাজনৈতিক কাঠামো রয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ঐশ্বরিক অনুমোদন দ্বারা ন্যায্যতা পায়।
  • সংগঠিত ধর্ম সম্পর্কহীন ব্যক্তিদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার উপায় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলো। তবে রাষ্ট্র ও দেশগুলোতে হাজার হাজার বা কোটি কোটি মানুষ পরস্পরের সাথে সাথে সম্পর্কহীন ছিলো। জারেড ডায়মন্ড যুক্তি দেখান যে, সংগঠিত ধর্ম অন্য কোনও সম্পর্কহীন ব্যক্তিদের মধ্যে বন্ধন তৈরী করে। অন্যথায় সেখানে শত্রুতার প্রবণতা প্রকাশ পাবে। কারণ হিসেবে তিনি যুক্তি দেন যে, ব্যান্ড ও উপজাতীয় সমাজের মধ্যে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হত্যাকাণ্ড। [৯০]

বিভিন্ন ধর্ম

[সম্পাদনা]
এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখুন, বিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের তালিকা

ইব্রাহামীয় ধর্মসমূহ

[সম্পাদনা]

ভারতীয় ধর্মসমূহ

[সম্পাদনা]

পূর্ব এশীয় ধর্মসমূহ

[সম্পাদনা]

পার্সি (ইরানীয়) ধর্মসমূহ

[সম্পাদনা]

অন্যন্যা ধর্মসমূহ

[সম্পাদনা]

বিলুপ্ত ধর্ম

[সম্পাদনা]

ধর্মের সমালোচনা

[সম্পাদনা]

ধর্মের সমালোচনা হল রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব সহ ধর্মের ধারণা, সত্য বা অনুশীলনের সমালোচনা।[৯১]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Religion – Definition of Religion by Merriam-Webster"। ১২ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  2. Morreall, John; Sonn, Tamara (২০১৩)। "Myth 1: All Societies Have Religions"। 50 Great Myths of ReligionWiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 12–17। আইএসবিএন 978-0-470-67350-8 
  3. Nongbri, Brent (২০১৩)। Before Religion: A History of a Modern Concept। Yale University Press। আইএসবিএন 978-0-300-15416-0 
  4. "Dharma", The Columbia Encyclopedia, 6th Ed. (2013), Columbia University Press, Gale, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৮৭৬-৫০১৫-৫
  5. Steven Rosen (2006), Essential Hinduism, Praeger, আইএসবিএন ০-২৭৫-৯৯০০৬-০, Chapter 3.
  6. "Dharma | Encyclopedia.com"The Oxford Dictionary of World Religions 
  7. James 1902, পৃ. 31।
  8. Durkheim 1915
  9. Tillich, P. (1957) Dynamics of faith. Harper Perennial; (p. 1).
  10. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; vergote নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  11. Swindal, James (এপ্রিল ২০১০)। "Faith and Reason" (ইংরেজি ভাষায়)। Internet Encyclopedia of Philosophy। ৩১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  12. African Studies Association; University of Michigan (২০০৫)। History in Africa32। পৃষ্ঠা 119। 
  13. "The Global Religious Landscape"। ১৮ ডিসেম্বর ২০১২। ১৯ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১২ 
  14. "Religiously Unaffiliated"The Global Religious LandscapePew Research Center: Religion & Public Life। ১৮ ডিসেম্বর ২০১২। ৩০ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২The religiously unaffiliated include atheists, agnostics and people who do not identify with any particular religion in surveys. However, many of the religiously unaffiliated have some religious beliefs. 
  15. Eileen Barker, 1999, "New Religious Movements: their incidence and significance", New Religious Movements: challenge and response, Bryan Wilson and Jamie Cresswell editors, Routledge আইএসবিএন ০-৪১৫-২০০৫০-৪
  16. Zuckerman, Phil (২০০৬)। "3 – Atheism: Contemporary Numbers and Patterns"। Martin, Michael। The Cambridge Companion to Atheism। পৃষ্ঠা 47–66। আইএসবিএন 978-1-13900-118-2ডিওআই:10.1017/CCOL0521842700.004 
  17. James, Paul (২০১৮)। "What Does It Mean Ontologically to Be Religious?"। Stephen Ames; Ian Barns; John Hinkson; Paul James; Gordon Preece; Geoff Sharp। Religion in a Secular Age: The Struggle for Meaning in an Abstracted World। Arena Publications। পৃষ্ঠা 56–100। ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৮ 
  18. Chambers Dictionary of Etymology, Barnhart, R. K., editor (1998).
  19. "14.1A: The Nature of Religion"Social Sci LibreTexts (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ আগস্ট ২০১৮। ১২ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০২১ 
  20. Day 1982, পৃ. 42–45।
  21. Brereton, Joel P. (ডিসেম্বর ২০০৪)। "Dhárman In The Rgveda"। Journal of Indian Philosophy (ইংরেজি ভাষায়)। 32 (5–6): 449–489। আইএসএসএন 0022-1791এসটুসিআইডি 170807380ডিওআই:10.1007/s10781-004-8631-8 
  22. "How did the 'Ramayana' and 'Mahabharata' come to be (and what has 'dharma' got to do with it)?" 
  23. Hiltebeitel, Alf (২০১১)। Dharma: Its Early History in Law, Religion, and Narrative (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press, USA। পৃষ্ঠা 36–37। আইএসবিএন 978-0-19-539423-8 
  24. Pasquier, Michael (২০২৩)। Religion in America: The Basics। Routledge। পৃষ্ঠা 2–3। আইএসবিএন 978-0367691806Religion is a modern concept. It is an idea with a history that developed, most scholars would agree, out of the social and cultural disruptions of Renaissance and Reformation Europe. From the fourteenth to the seventeenth century, at a time of unprecedented political transformation and scientific innovation, it became possible for people to differentiate between things religious and things not religious. Such a dualistic understanding of the world was simply not available in such clear terms to ancient and medieval Europeans, to say nothing of people from the continents of North America, South America, Africa, and Asia. 
  25. Harrison, Peter (২০১৫)। The Territories of Science and Religion। University of Chicago Press। আইএসবিএন 978-0-226-18448-7 
  26. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Roberts Jon নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  27. Harrison, Peter (১৯৯০)। 'Religion' and the Religions in the English Enlightenment। Cambridge: Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-89293-3 
  28. Dubuisson, Daniel (২০০৭)। The Western Construction of Religion: Myths, Knowledge, and Ideology। Baltimore, Md.: Johns Hopkins University Press। আইএসবিএন 978-0-8018-8756-7 
  29. Fitzgerald, Timothy (২০০৭)। Discourse on Civility and Barbarityসীমিত পরীক্ষা সাপেক্ষে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার, সাধারণত সদস্যতা প্রয়োজন। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 45–46। আইএসবিএন 978-0-19-530009-3 
  30. Smith, Wilfred Cantwell (১৯৬৩)। The Meaning and End of Religion। New York: MacMillan। পৃষ্ঠা 125–126। 
  31. Rüpke, Jörg (২০১৩)। Religion: Antiquity and its Legacy। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 7–8। আইএসবিএন 9780195380774 
  32. Nongbri, Brent (২০১৩)। Before Religion: A History of a Modern Concept। Yale University Press। পৃষ্ঠা 152আইএসবিএন 978-0-300-15416-0Although the Greeks, Romans, Mesopotamians, and many other peoples have long histories, the stories of their respective religions are of recent pedigree. The formation of ancient religions as objects of study coincided with the formation of religion itself as a concept of the sixteenth and seventeenth centuries. 
  33. Harrison, Peter (১৯৯০)। 'Religion' and the Religions in the English Enlightenmentসীমিত পরীক্ষা সাপেক্ষে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার, সাধারণত সদস্যতা প্রয়োজন। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 1আইএসবিএন 978-0-521-89293-3That there exist in the world such entities as 'the religions' is an uncontroversial claim...However, it was not always so. The concepts 'religion' and 'the religions', as we presently understand them, emerged quite late in Western thought, during the Enlightenment. Between them, these two notions provided a new framework for classifying particular aspects of human life. 
  34. Nongbri, Brent (২০১৩)। "2. Lost in Translation: Inserting "Religion" into Ancient Texts"। Before Religion: A History of a Modern Concept। Yale University Press। আইএসবিএন 978-0-300-15416-0 
  35. Morreall, John; Sonn, Tamara (২০১৩)। 50 Great Myths about Religions। Wiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 13। আইএসবিএন 978-0-470-67350-8Many languages do not even have a word equivalent to our word 'religion'; nor is such a word found in either the Bible or the Qur'an. 
  36. Pluralism Project, Harvard University (২০১৫)। Judaism - Introductory Profiles (পিডিএফ)। Harvard University। পৃষ্ঠা 2। In the English-speaking Western world, “Judaism” is often considered a “religion," but there are no equivalent words for “Judaism” or for “religion” in Hebrew; there are words for “faith,” “law,” or “custom” but not for “religion” if one thinks of the term as meaning solely the beliefs and practices associated with a relationship with God or a vision of transcendence. 
  37. "God, Torah, and Israel"Pluralism Project - Judaism (ইংরেজি ভাষায়)। Harvard University। 
  38. Hershel Edelheit, Abraham J. Edelheit, History of Zionism: A Handbook and Dictionary ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ জুন ২০১১ তারিখে, p. 3, citing Solomon Zeitlin, The Jews. Race, Nation, or Religion? (Philadelphia: Dropsie College Press, 1936).
  39. Whiteford, Linda M.; Trotter II, Robert T. (২০০৮)। Ethics for Anthropological Research and Practice। Waveland Press। পৃষ্ঠা 22। আইএসবিএন 978-1-4786-1059-5। ১০ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৫ 
  40. Burns, Joshua Ezra (২০১৫)। "3. Jewish ideologies of Peace and Peacemaking"। Omar, Irfan; Duffey, Michael। Peacemaking and the Challenge of Violence in World Religions। Wiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 86–87। আইএসবিএন 978-1-118-95342-6 
  41. Boyarin, Daniel (২০১৯)। Judaism: The Genealogy of a Modern Notion। Rutgers University Press। আইএসবিএন 978-0-8135-7161-4 
  42. Kuroda, Toshio (১৯৯৬)। Jacqueline I. Stone কর্তৃক অনূদিত। "The Imperial Law and the Buddhist Law" (পিডিএফ)Japanese Journal of Religious Studies: 23.3–4। ২৩ মার্চ ২০০৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১০ 
  43. Neil McMullin. Buddhism and the State in Sixteenth-Century Japan. Princeton, N.J. : Princeton University Press, 1984.
  44. Harrison, Peter (২০১৫)। The Territories of Science and Religion। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 101। আইএসবিএন 978-0-226-18448-7The first recorded use of "Boudhism" was 1801, followed by "Hindooism" (1829), "Taouism" (1838), and "Confucianism" (1862) (see figure 6). By the middle of the nineteenth century these terms had secured their place in the English lexicon, and the putative objects to which they referred became permanent features of our understanding of the world. 
  45. Josephson, Jason Ananda (২০১২)। The Invention of Religion in Japan। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 12। আইএসবিএন 978-0-226-41234-4The early nineteenth century saw the emergence of much of this terminology, including the formation of the terms Boudhism (1801), Hindooism (1829), Taouism (1839), Zoroastri-anism (1854), and Confucianism (1862). This construction of "religions" was not merely the production of European translation terms, but the reification of systems of thought in a way strikingly divorced from their original cultural milieu. The original discovery of religions in different cultures was rooted in the assumption that each people had its own divine "revelation," or at least its own parallel to Christianity. In the same period, however, European and American explorers often suggested that specific African or Native American tribes lacked religion altogether. Instead these groups were reputed to have only superstitions and as such they were seen as less than human. 
  46. Morreall, John; Sonn, Tamara (২০১৩)। 50 Great Myths about Religions। Wiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 12। আইএসবিএন 978-0-470-67350-8The phrase "World Religions" came into use when the first Parliament of the World's Religions was held in Chicago in 1893. Representation at the Parliament was not comprehensive. Naturally, Christians dominated the meeting, and Jews were represented. Muslims were represented by a single American Muslim. The enormously diverse traditions of India were represented by a single teacher, while three teachers represented the arguably more homogenous strains of Buddhist thought. The indigenous religions of the Americas and Africa were not represented. Nevertheless, since the convening of the Parliament, Judaism, Christianity, Islam, Hinduism, Buddhism, Confucianism, and Taoism have been commonly identified as World Religions. They are sometimes called the "Big Seven" in Religious Studies textbooks, and many generalizations about religion have been derived from them. 
  47. Rhodes, John (জানুয়ারি ১৯৯১)। "An American Tradition: The Religious Persecution of Native Americans"। Montana Law Review52 (1): 13–72। In their traditional languages, Native Americans have no word for religion. This absence is very revealing. 
  48. Morreall, John; Sonn, Tamara (২০১৩)। 50 Great Myths about Religions। Wiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 14। আইএসবিএন 978-0-470-67350-8Before the British colonized India, for example, the people there had no concept "religion" and no concept "Hinduism." There was no word "Hindu" in classical India, and no one spoke of "Hinduism" until the 1800s. Until the introduction of that term, Indians identified themselves by any number of criteria—family, trade or profession, or social level, and perhaps the scriptures they followed or the particular deity or deities upon whose care they relied in various contexts or to whom they were devoted. But these diverse identities were united, each an integral part of life; no part existed in a separate sphere identified as "religious." Nor were the diverse traditions lumped together under the term "Hinduism" unified by sharing such common features of religion as a single founder, creed, theology, or institutional organization. 
  49. Pennington, Brian K. (২০০৫), Was Hinduism Invented?: Britons, Indians, and the Colonial Construction of Religion, Oxford University Press, পৃষ্ঠা 111–118, আইএসবিএন 978-0-19-803729-3, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৮ 
  50. Lloyd Ridgeon (২০০৩)। Major World Religions: From Their Origins to the Present। Routledge। পৃষ্ঠা 10–11। আইএসবিএন 978-1-134-42935-6It is often said that Hinduism is very ancient, and in a sense this is true ... . It was formed by adding the English suffix -ism, of Greek origin, to the word Hindu, of Persian origin; it was about the same time that the word Hindu, without the suffix -ism, came to be used mainly as a religious term. ... The name Hindu was first a geographical name, not a religious one, and it originated in the languages of Iran, not of India. ... They referred to the non-Muslim majority, together with their culture, as 'Hindu'. ... Since the people called Hindu differed from Muslims most notably in religion, the word came to have religious implications, and to denote a group of people who were identifiable by their Hindu religion. ... However, it is a religious term that the word Hindu is now used in English, and Hinduism is the name of a religion, although, as we have seen, we should beware of any false impression of uniformity that this might give us. 
  51. Josephson, Jason Ananda (২০১২)। The Invention of Religion in Japan। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 1, 11–12। আইএসবিএন 978-0-226-41234-4 
  52. Zuckerman, Phil; Galen, Luke; Pasquale, Frank (২০১৬)। "2. Secularity around the World"। The Nonreligious: Understanding Secular People and Societies। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 39–40। আইএসবিএন 978-0-19-992494-3It was only in response to Western cultural contact in the late nineteenth century that a Japanese word for religion (shukyo) came into use. It tends to be associated with foreign, founded, or formally organized traditions, particularly Christianity and other monotheisms, but also Buddhism and new religious sects. 
  53. Max Müller, Natural Religion, p. 33, 1889
  54. "Lewis & Short, A Latin Dictionary"। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  55. Max Müller (১৮৭০)। Introduction to the Science of Religion: Four Lectures Delivered at the Royal Institution with Two Essays on False Analogies, and the Philosophy of Mythology। পৃষ্ঠা 28। 
  56. Vgl. Johann Figl: Handbuch Religionswissenschaft: Religionen und ihre zentralen Themen. Vandenhoeck & Ruprecht, 2003, আইএসবিএন ৩-৭০২২-২৫০৮-০, S. 65.
  57. Julia Haslinger: Die Evolution der Religionen und der Religiosität, s. Literatur Religionsgeschichte, S. 3–4, 8.
  58. Johann Figl: Handbuch Religionswissenschaft: Religionen und ihre zentralen Themen. Vandenhoeck & Ruprecht, 2003, আইএসবিএন ৩-৭০২২-২৫০৮-০, S. 67.
  59. In: Friedrich Schleichermacher: Der christliche Glaube nach den Grundsätzen der evangelischen Kirche. Berlin 1821/22. Neuausg. Berlin 1984, § 3/4. Zit. nach: Walter Burkert: Kulte des Altertums. Biologische Grundlagen der Religion. 2. Auflage. C.H. Beck, München 2009, আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৪০৬-৪৩৩৫৫-৯, S. 102.
  60. Peter Antes: Religion, religionswissenschaftlich. In: EKL Bd. 3, Sp. 1543. S. 98.
  61. Zeigler, David (জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "Religious Belief from Dreams?"। Skeptical Inquirer। খণ্ড 44 নং 1। Amherst, NY: Center for Inquiry। পৃষ্ঠা 51–54। 
  62. Joseph Campbell, The Power of Myth, p. 22 আইএসবিএন ০-৩৮৫-২৪৭৭৪-৫
  63. Joseph Campbell, Thou Art That: Transforming Religious Metaphor. Ed. Eugene Kennedy. New World Library আইএসবিএন ১-৫৭৭৩১-২০২-৩.
  64. "myth"Encyclopædia Britannica। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৬ 
  65. Oxford Dictionaries ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে mythology, retrieved 9 September 2012
  66. Harvey, Graham (2000). Indigenous Religions: A Companion. (Ed: Graham Harvey). London and New York: Cassell. p. 6.
  67. Brian Kemble Pennington Was Hinduism Invented? New York: Oxford University Press US, 2005. আইএসবিএন ০-১৯-৫১৬৬৫৫-৮
  68. Russell T. McCutcheon. Critics Not Caretakers: Redescribing the Public Study of Religion. Albany: SUNY Press, 2001.
  69. Nicholas Lash. The beginning and the end of 'religion'. Cambridge University Press, 1996. আইএসবিএন ০-৫২১-৫৬৬৩৫-৫
  70. Joseph Bulbulia. "Are There Any Religions? An Evolutionary Explanation." Method & Theory in the Study of Religion 17.2 (2005), pp. 71–100
  71. Park, Chris (২০০৫)। "Religion and Geography"। Hinnells, John R.। The Routledge companion to the study of religion। Routledge। পৃষ্ঠা 439–440। আইএসবিএন 978-0-415-33311-5। ৯ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  72. Flügel, Peter (২০০৫)। "The Invention of Jainism: A Short History of Jaina Studies" (পিডিএফ)International Journal of Jaina Studies1 (1): 1–14। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১৯ 
  73. Timothy Fitzgerald. The Ideology of Religious Studies. New York: Oxford University Press US, 2000.
  74. Craig R. Prentiss. Religion and the Creation of Race and Ethnicity. New York: NYU Press, 2003. আইএসবিএন ০-৮১৪৭-৬৭০১-X
  75. Tomoko Masuzawa. The Invention of World Religions, or, How European Universalism Was Preserved in the Language of Pluralism. Chicago: University of Chicago Press, 2005. আইএসবিএন ০-২২৬-৫০৯৮৮-৫
  76. "Christians are the largest religious group in 2015"Pew Research Center। ৮ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০২২ 
  77. "Global Index of Religiosity and Atheism" (পিডিএফ)। WIN-Gallup International। ২৭ জুলাই ২০১২। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১২ 
  78. "Losing our Religion? Two-Thirds of People Still Claim to be Religious" (পিডিএফ)WIN/Gallup International। ১৩ এপ্রিল ২০১৫। ৩০ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  79. "Women More Religious Than Men"Live Science। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। ৮ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৩ 
  80. Soul Searching: The Religious and Spiritual Lives of American Teenagers – p. 77, Christian Smith, Melina Lundquist Denton – 2005
  81. "Christ in Japanese Culture: Theological Themes" in Shusaku Endo's Literary Works, Emi Mase-Hasegawa – 2008
  82. New poll reveals how churchgoers mix eastern new age beliefs ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে retrieved 26 July 2013
  83. "Islam set to become world's largest religion by 2075, study suggests"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ এপ্রিল ২০১৭। ১৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২১ 
  84. "The Changing Global Religious Landscape"Pew Research Center's Religion & Public Life Project। ৫ এপ্রিল ২০১৭। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২১ 
  85. Zuckerman, Phil (২০০৬)। "3 - Atheism: Contemporary Numbers and Patterns"। Martin, Michael। The Cambridge Companion to Atheism। পৃষ্ঠা 47–66। আইএসবিএন 978-1139001182ডিওআই:10.1017/CCOL0521842700.004 
  86. "Religion". Encyclopedia Universal Ilustrada Europeo-Americana, 70 vols. Madrid. 1907-1930.
  87. "The World's First Temple"Archaeology magazine। নভে–ডিসে ২০০৮। পৃষ্ঠা 23। 
  88. Sagona, Claudia। The Archaeology of Malta (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 47। আইএসবিএন 9781107006690। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৬ 
  89. Shermer, Michael। The Science of Good and Evilআইএসবিএন 0-8050-7520-8 
  90. Compare: Diamond, Jared। "chapter 14, From Egalitarianism to Kleptocracy"। Guns, Germs, and Steel: The Fates of Human Societiesআইএসবিএন 9780393609295 
  91. Beckford, James A. (২০০৩)। Social Theory and Religionসীমিত পরীক্ষা সাপেক্ষে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার, সাধারণত সদস্যতা প্রয়োজন। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 2আইএসবিএন 978-0-521-77431-4 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]