বিষয়বস্তুতে চলুন

হিরোডোটাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(হেরোডোটাস থেকে পুনর্নির্দেশিত)
হিরোডোটাস (Herodotus)
হিরোডোটাস এর মূর্তি
জন্মখ্রিস্টপূর্ব ৪৮৪
হ্যালিকারনাসাস, ক্যারিয়া, এশিয়া মাইনর, আচেমেনিড সাম্রাজ্য
মৃত্যুখ্রিস্টপূর্ব ৪২৫
থুরি, ক্যালাব্রিয়া বা পেল্লা, ম্যাসেডন
পেশাইতিহাসবেত্তাকারি
উল্লেখযোগ্য কর্ম
ইতিহাস
পিতা-মাতা
  • লেক্সেস(Lyxes) (পিতা)
  • ডারইউটাম (Dryotus) (মাতা)
আত্মীয়
  • থিওডোরাস (ভাই)
  • পেনিয়াসিস (চাচা অথবা চাচাতো ভাই)

হিরোডোটাস (/hɪˈrɒdətəs/; প্রাচীন গ্রিকἩρόδοτος, Hēródotos, গ্রিক উচ্চারণ: [hɛː.ró.do.tos]; ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসবিদ। তিনি পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের (বর্তমানে, আধুনিক তুর্কি) হেলির্কানাসাস (বর্তমানে, আধুনিক তুরস্কে) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ‘The Histories’ বইটি লেখার জন্য জনপ্রিয়, যা তার গ্রিকো-পার্সিয়ান যুদ্ধগুলোর উপর গবেষণার একটি বিশদ নথি। তাকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয় যিনি ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর উপর একটি বিশেষ পদ্ধতির অনুসন্ধান করেন, যেখানে তিনি ঐতিহাসিক ধাতুসমুহ সংগ্রহ করেন এবং ইতিহাস লিখনধারা অনুযায়ী সাজান। এ কারণে তাকে ইতিহাসের জনক বা “The Father of History” হিসেবে গণ্য করা হয়। এই সম্মান তাকে সর্বপ্রথম খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকের রোমান ওরেটর, সিসারো প্রদান করেন।[]

তার ঐতিহাসিক গুরুত্বের পরও তার নিজস্ব জীবন সম্পর্কে তেমন জানা যায় নি। তার লেখা ইতিহাসগুলোর অধিকাংশরই বিষয় ছিল ক্রোসাস, সাইরাস, কেমবাইসেস, এসমারডিস, মহান দারিয়াস। দারিয়াস এবং যারযেস এর জীবন এবং ম্যারাথনের যুদ্ধ, থের্মোপিলাইয়ের যুদ্ধ, আর্টেমিজিয়ামের যুদ্ধ সালামিসের যুদ্ধ, প্লাটায়য়ার যুদ্ধ, মিকিলির যুদ্ধ। তার নৃকুলবিদ্যা, ভূগল, ইতিহাস লেখনধারা সংক্রান্ত বিষয়ের উপর লেখাগুলো “দ্যা হিসটোরিস” -এর একটি সংজ্ঞায়িত এবং জরুরি অংশ এবং প্রচুর তথ্য বহন করে। তার বইগুলোতে অনেক নিশ্চিত অসত্য এবং কাল্পনিক ঘটনা থাকায় তাকে সমালোচিতও হতে হয়েছে। পঞ্চম শতাব্দির শেষের দিকের সময়কার ইতিহাসবিদ, থুসিডাইডিস থেকে শুরু করে অনেক লেখক তাকে বিনোদনের জন্য কাহিনী তৈরি করার অভিযোগ করেছে। যদিও হিরোডোটাস বলেছেন যে তিনি যা দেখেছেন বা তাকে যা বলা হয়েছে তিনি তা খুব কমই লেখেন এবং অনেক সময় তিনি নিজের লেখা ঘটনা বিশ্বাস করেন না। তার দেওয়া অনেক তথ্য ইতিহাসবিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।

আধুনিক গবেষকগণ সাধারণত হিরোডোটাস এর জীবন সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য লাভ করতে তার লেখার দিকে মনোযোগ প্রদান করে থাকেন।[] এছাড়াও তারা “Byzantine”, “Suda” সহ প্রচীন কিন্তু আরো পরের উৎসগুলোর দিকেও মনোযোগ দেন।

তথ্যের পরিমাণ এত কম যে সেগুলো খুবই পরে অল্প নির্ভরযোগ্যতা পেয়েছে। এই তথ্যগুলো দিয়ে একটি জীবনী তৈরি করা তাসের বাড়ি তৈরি করার মতো ব্যাপার, যা প্রথম সমালোচনা হিসেবে সামনে আসে। তারপরও কিছু সমস্যা সমাধান হয়ে যেতে পারে। -জর্জ রোলিনসন[]|source=}}

আধুনিক তথ্যনুযায়ী, তার জীবনকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়: হিরোডোটাস হেলিকার্নাসাস এ খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৫ এর কাছাকাছি সময়ে জন্মগ্রহণ করেন। “সুদা” থেকে প্রাপ্ত তার পরিবার সম্পর্কিত তথ্য অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এই তথ্যগুলো হলো: তার পরিবার প্রভাবশালী ছিল, লুক্সেস এবং ড্রইও এর পুত্র ছিলেন এবং থিওডোরাস এর ভাই ছিলেন। এছাড়াও তিনি একজন মহান কবি, পেনিয়াসিস এর ভাই ছিলেন।[][]

সেই শহরটি তখন পারসিয়ার অধীনে থাকায় তাকে একজন পারসিয়ান হিসেবে গণ্য করা হয়।[][] তিনি অনেক ছোট থাকতেই কার্টেমিসিয়া অধীনে থাকা বহর সহ গ্রিস দখলের জন্য পারসিয়ানদের প্রস্তুতির বিভিন্ন অংশের এবং সম্রাজ্যের ভিতরের বিভিন্ন ঘটনার স্থানীয় প্রতোক্ষদর্শীদের কথা শোনেন।

হেলিকার্নাসাস এ সাম্প্রতিক আবিস্কৃত লিপিসমূহ থেকে পাওয়া যায় যে তার নাতি লিগদামিস একটি জনসমাবেশে ক্ষমতা ঠিক মতো ধরে রাখার বিরোধ সমাধানের জন্য আলোচনা করেন, যা একজন চাপে থাকা স্বেচ্ছাচারীর সাথে সংগতিপূর্ণ হয়েছে। পরবর্তীতে তার নাম অ্যাথেনীয় “ডেলাইয়ান লীগ” এর শ্রদ্ধা তালিকায় উল্লেখ করা হয় নি, যা নির্দেশ করে যে ৪৫৪ খ্রিষ্টপূর্বের কিছু সময় পূর্বে তার বিরুদ্ধে একটি সফল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।

হিরোডোটাস এর এক আত্মীয়, মহান কবি পেনিয়াসিস একটি ব্যর্থ বিদ্রোহে অংশ নেন। হিরোডোটাস সামোস দ্বীপের প্রতি অনুরাগ দেখিয়েছেন (III, ৩৯-৬০), যা নির্দেশ করে যে সে হয়তো তার যৌবনে সেখানে বসবাস করতেন। এ কারণে, এটি সম্ভব যে তার পরিবার লিগদামিস এর বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহে জড়িত ছিলেন, যে কারণে তাদের সামোস এ বহিস্কার করা হয়ছিল এবং পরবর্তীতে শাসকের পতনে তাদের ব্যক্তিগত হাত ছিল।

The statue of Herodotus in his hometown of Halicarnassus, modern Bodrum, Turkey

হিরোডোটাস তার “Histories” আইয়োনীয় উপভাষায় লিখেছেন, যদিও তিনি হেলিকার্নাসাস এ জন্মগ্রহণ করেন, যা তখন দোরিয়ানদের অধীনে থাকা একটি স্থান ছিল। সুদা অনুযায়ী, তিনি এ ভাষা সামোস এ একজন বাল্যকালে শিখেছিলেন, যেখানে তিনি তার পরিবারের সাথে লিগদামিস এর অত্যাচার এবং হেরিকার্নাসাস এর শাসক এবং আর্টেমিসিয়া এর থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

সুদা থেকে আরো পাওয়া যায় যে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং শাসককে পতন ঘটানোর বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। হেলিকার্নাসাস থেকে সাম্প্রতিককালে প্রাপ্ত হিরোডোটাস এর সময়ের লিপিসমুহ থেকে জানা যায় যে হেলিকার্নাসাস এ কিছু দাপ্তরিক নথিতে আইয়োনীয় উপভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল। তাই এটি মনে করার কোনো কারণ নেই যে তিনি এ ভাষা অন্য কোনো স্থান থেকে শিখেছিলেন।[] Further, the Suda is the only source which we have for the role played by Herodotus as the heroic liberator of his birthplace. That itself is a good reason to doubt such a romantic account.[] এছাড়াও, আমাদের কাছে থাকা সুদা হচ্ছে একমাত্র উৎস যেখানে হিরোডোটাস এর তার জন্ম স্থান করার ঘটনা রয়েছে। যা নিজেই এই ঘটনা সন্দেহ করার একটি ভালো কারণ হতে পারে।

ভ্রমণের শুরু

[সম্পাদনা]

হিরোডোটাস এর মতে, হেলিকার্নাসাস একটি দোরীয় শহর থাকা সত্ত্বেও শহরটি একটি সীমাহীন বিবাদের পর সেটির পাশ্ববর্তী দোরীয়দের সাথে সম্পর্ক শেষ করে দেয় (I, 144) এবং মিশরের সাথে গ্রিকদের বাণিজ্যের ভিত্তি গড়তে সাহায্য করে। এটি একটি বহিঃমুখী আন্তর্জাতিক মানসিকতা সম্পন্ন সুযোগ ‍ছিল এবং হয়তো হিরোডোটাস এর পরিবারের পারস্য সম্রাজ্যের অধীনে থাকা অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ ছিল। এ কারণে হিরোডোটাস ভ্রমণ এবং গবেষণার সুযোগ পান।

৪৬০-৪৫৪ খ্রিষ্টপূর্বের মধ্যে একটি অ্যাথেনীয় বহর সেই পারস্যের শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সহায়তা করে। প্রতোক্ষপদর্শীদের মতে, তারপর ৪৫৪ খ্রিষ্টপূর্বের পূর্বে অথবা পরে তিনি মিশর ভ্রমণে যান। তারপর তিনি তায়ার এবং পরে ফোরাত থেকে ব্যাবিলন ভ্রমণে যান। কোনো কারণে, সম্ভব স্থানীয় রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত কোনো বিষয়ের কারণে সে পরবর্তীকালে হেলির্কানাসাস এর মানুষের কাছে অপ্রিয় হয়ে যায়। তারপর তিনি পেরিক্লিয়ান অ্যাথেনস এ চলে যান এবং তিনি এ শহরের মানুষ এবং গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলোর প্রকাশ্যে প্রশংসা করেন। এছাড়াও তিনি সেখানে তিনি স্থানীয় টোগ্রাফি সম্পর্কে জানেন এবং তার লেখায় প্রায়ই উল্লেখিত দল, অ্যাল্কমিওনিড সহ সেখানকার অগ্রসর মানুষদের সাথে পরিচিত হন।

প্লুতার্ক[১০] এবং ইজুবাস[১১] এর মতে হিরোডোটাসকে অ্যাথেনীয় সভা থেকে তার কীর্তির স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে অথনৈতিক পুরস্কার প্রদান করা হয়। এটি এজন্য হতে পারে কারণ তিনি অ্যাথেনীয় নাগরিকত্ব চেয়েছিলেন, যা ৪৫১ সালের পর থেকে দুর্লভ সম্মান হয়ে দাড়ায় এবং তা লাভ করতে সভায় অনেকের উপস্থিত থাকা অবস্থায় দুটি ভিন্ন নির্বাচন প্রয়োজন হয়।যে কারনে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন।

পরবর্তী জীবন

[সম্পাদনা]

পরবর্তী জীবনে তিনি অ্যাথেনীয়দের অর্থায়নে থাকা অঞ্চল থুরিয়াম এ চলে যান। এরিস্টটল “থুরিয়াম এর হিরোডোটাস” এর লেখা “দ্যা হিসটোরিজ” একটি ভার্সনকে নির্দেশ করেছিলেন এবং তার হিরোডোটাস এর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দক্ষিণ ইতালি সম্পর্কে লেখার প্রমাণ হিসেবে হিসেবে “দ্যা হিসটোরিজ” এর কিছু রচনাংশকে ব্যাখ্যা করা হয়। পেলোপোনেসিয়ান যুদ্ধের প্রথম বছরের কিছু ঘটনা সম্পর্কে হিরোডোটাস এর অন্তরঙ্গ জ্ঞান নির্দেশ করে যে, তিনি হয়তো অ্যাথেনস এ ফিরে আসেন এবং এক্ষত্রে তিনি সেখানে একটি মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারেন। অথবা তিনি মেসিডোনিয়ায় আদালতের তিনি পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করার পর মৃত্যুবরণ করেন। অথবা, তিনি হয়তো থুরিয়ামেই মৃত্যুবরণ করতে পারেন। “দ্যা হিসটোরিজ” -এ ৪৩০ খ্রিষ্টপূর্বের পরে নিশ্চয়তা সহ কোনো তথ্য নেই। সাধারণত ধরে নেওয়া হয় তিনি এর পর খুব বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারেন নি।

লেখক এবং ওরাটর

[সম্পাদনা]

হিরোডোটাস তার গবেষণাগুলোকে মানুষের সামনে মৌখিক আবৃতি করে বৃহত্তর পৃথিবীকে জানাতেন। জন ম্যারিনকোলা “The Histories” এর Penguin edition ভূমিকায় লিখেছেন যে, হিরোডোটাস এর প্রথম দিকের বইগুলোতে কিছু শনাক্তযোগ্য অংশ আছে যাদের "performance pieces" বলা যেতে পারে। গবেষণার এই অংশগুলো স্বাধীন ধরে নেওয়া হয় এবং এগুলো প্রায় বিচ্ছিন্ন, আর তাই তারা লেখকের সাথে মৌখিকভাবে যুক্ত হতে পারে। পঞ্চম শতাব্দির মহান বুদ্ধিজীবী, মেরিনকোলা বিভিন্ন দার্শনিকের নাটকীয়ভাবে তাদের কর্মের এসব বিচ্ছিন্ন অংশের মৌখিক আবৃত্তিগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন। এসব আবৃত্তির উদ্দেশ্য ছিল যে, পূববর্তী বিতর্কের সমালোচনা করা এবং জোর দিয়ে এবং উৎসাহের সাথে নিজের য়ুক্তি দেওয়া।[১২]

হিরোডোটাস দিবসে এ কারণে লেখকরা তাদের কর্ম প্রচলিতভাবে আবৃত্তির মাধ্যমে প্রকাশ করেন। লুসিয়ান এর মতে, হিরোডোটাস তার সমাপ্ত কর্ম আনাতুলিয়া থেকে অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নিয়ে যান এবং সেখানে বসে তিনি উপস্থিত দর্শকদের সামনে সম্পূর্ণ “The Histories” পড়ে শোনান এবং শেষে তিনি মানুষের সমর্থন লাভ করেন।[১৩] একজন প্রাচীন ভাষাবিদের মতে, হিরোডোটাস অলেম্পিয়ার এই উৎসবে মেঘের একটু ছায়া পাওয়া পর্যন্ত “The Histories” পড়া শুরু করতে চাননি।[১৪] যে কারণে দর্শকেরা বিক্ষিপ্ত হয়ে যায় ("Herodotus and his shade") -প্রবাদমুলক বাক্যটি দ্বারা তাই এমন কাউকে নির্দেশ করা হয় যে দেরির কারণে কোনো সুযোগ হারিয়েছেন)। হিরোডোটাস এর অলেম্পিয়ায় আবৃত্তি প্রাচীন লেখকদের কাছে একটি পছন্দনীয় বিষয় ছিল। সুদাতে এ কাহিনী ঘটনা সম্পর্কে আরেকটি ভিন্নতা পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়েছে যে, ফোটিয়াস[১৫], যেসযেটস[১৬] এবং অল্প বয়সী থুসিডিডিস তার পিতার সাথে সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং আবৃত্তির সময় তারা কেঁদে ফেলেন। হিরোডোটাস ফোটিয়াস এর পিতার দিকে ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণভাবে তাকিয়ে বলেন, “তোমার পুত্রের আত্মা জ্ঞান আকাঙ্খা করে।”

মার্সেলিনাস তার “Life of Thucydides” -এ লিখেছেন, পরবর্তীতে তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠতা অর্জন করেন, যে কারণে তাদের উভয়কেই অ্যাথেনস অবস্থিত থুসিডিডিস এর সমাধিতে দুজনকেই সমাধি দেওয়া হয়। কিন্তু সুদার মতে তাকে ম্যাসেডোনিয়ার পেল্লায় সমাধি দেওয়া হয় (থুরিয়াম এর আগোরায়)।[১৭] According to the Suda, he was buried in Macedonian Pella and in the agora in Thurium.[১৮]

ইতিহাসে স্থান

[সম্পাদনা]

হিরোডোটাস তার কর্মের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য প্রকাশ করেন।[]

“এখানে হেলিকার্নাসাস এর হিরোডোটাস এর গবেষণার ফলাফল রয়েছে। মানুষের ঘটনাসমুহের চিহ্ন সময় দ্বারা মুছে যাওয়া থেকে রক্ষা করা এবং গ্রিক ও অন্যান্যদের স্মরণীয় অর্জণগুলোর খ্যাতি সংরক্ষণ করা এর উদ্দেশ্য; এতে থাকা বিষয়বস্তুর মধ্যে গ্রিকদের সাথে অন্যান্যদের শত্রুতার কারণ বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।”

-হিরোডোটাস, The Histories
রোবিন ওয়াটারফিল্ড এর অনুবাদ (২০০৮)

পূর্বসূরীগণ

[সম্পাদনা]

তার অন্যদের অর্জনের নতিসমুহ নিজেই একটি অর্জন, যদিও সেটির বিস্তার বিতর্কিত। ইতিহাসে হিরোডোটাস এর স্থান এবং গুরুত্ব তিনি যে ঐতিহ্যের মধ্যে কাজ করেছেন তা অনুযায়ী বোধ করা যায়। সম্পূর্ণ অক্ষত থাকা সবচেয়ে পুরানো গ্রিক গদ্যটি তার একটি কর্ম। হিরোডোটাস এর সপ্তস পূর্বসূর ছিলেন অগোস্টান রোম এর বড় সমালোচক, হেলিকার্নাসাস এর । তিনি তাদের কর্মগুলোকে সাধারণ, অনলংকৃত তাদের নিজেদের এবং অন্যান্য শহর এবং মানুষের ঘটনাসমুহ, জনপ্রিয় কাল্পনিক কাহিনী যুক্ত, অতি নাটকীয় এবং বোধগোম্যতাহীন, কখনো মুগ্ধকর -সকল বৈশিষ্ট্য যা হিরোডোটাস এর কাজে পাওয়া যায় সেগুলো দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন।[২০]

আধুনিক ইতিহাসবিদগণ কালানুক্রম সম্পর্কে নিশ্চিত না কিন্তু প্রাচীন উৎস থেকে জানা যায় যে, হিরোডোটাস এর পূর্বসূরীদের মধ্যে ছিলেন: মিলিটাস এর ডিওনিসিয়াস, ল্যাম্পসাকাস এর ক্যারোন, লেসবোস এর হেলেনিসাস, লিদিয়া এর যানডাস এবং তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সত্যায়িত মিলেটাস এর হেকাটিয়াস। এই তথ্যের সত্যতা বিতর্কিত এবং এদের মধ্যে শুধু হেকাটিয়াস এর কাজের অসম্পূর্ণ অংশ অক্ষত রয়েছে। তারপরও, তারপর এ নামের তালিকা থেকে হিরাডোটাস কোন ধরনের ঐতিহ্যের মধ্যে তার “The Histories” লিখেছিলেন তা বোঝা যায়।[২১]

সমসাময়িক এবং আধূনিক সমালোচনা

[সম্পাদনা]

অনেক আশ্চর্যজনক এবং প্রচলিত কাহিনী অন্তর্ভুক্ত করায় সমালোচকগণ তাকে “মিথ্যার জনক” বলেছেন।"[২২][২৩] এমনকি তার সময়ের মানুষেরা তার অর্জন নিয়ে উপহাস করার কারণ পেয়েছিল। একজন আধুনিক বিশেষজ্ঞ হিরোডোটাস এর আনাতুলিয়ায় তার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে তার দেশের মানুয়ের তার কাজ নিয়ে উপহাস করাকে সন্দেহ করেন।[২৪] এমনই একটি ঘটনার নির্দেশনা পাওয়া যায় একটি সমাধিস্তম্ভ-লিপি থেকে, যা থুরিয়া নামক হিরোডোটাস এর তিনটির মধ্যে একটি সম্ভাব্য সমাধিতে নিবেদিত করা হয়েছিল বলে কথিত আছে। সেটিতে লেখা ছিল:

“হিরোডোটাস, স্ফিনক্স এর পুত্র আয়োনিক ইতিহাসে সমকক্ষহীনভাবে শুয়ে আসেন একজন জন্মগত ডোরিয়ান, যিনি সমালোচকের নিন্দা থেকে পালিয়েছেন এবং থুরিয়াকে তার নতুন দেশ করে নেন”[২৫]

অ্যাথেনস এ তার সবচেয়ে বড় সমসাময়িক সমালোচনা পাওয়া যায়। অনেক বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন যে, তিনি ৪২৫ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে হিরোডোটাস মৃত্যুবরণ করেন। অ্যাথেনীয় হাস্য নাট্যকর অ্যারিস্টোফেনস The Acharnians তৈরি করেন, যেখানে তিনি পেলোপোনিয়ান যুদ্ধের কারণ হিসেবে কিছু পতিতার অপহরণকে উপস্থাপন করেছেন, যা দ্বারা পারস্যের মানুষদের কাল্পনিক নায়িকা লো, ইউরোপা, ইউরোপা, মেডিয়া এবং হেলেনকে ধর্ষণের কারণে গ্রিস এর সাথে তাদের যুদ্ধ শুরু হয় এই মত সংযুক্ত করার জন্য হিরোডোটাস এর প্রতি উপহাসের সাথে নির্দেশ করেছেন।[২৬][২৭]

এছাড়াও অ্যাথেনীয় ইতিহাসবিদ, থুসিডাইডিস হিরোডোটাসকে “logos-writer” (গল্পকার) বলে এড়িয়ে যান।[২৮] তিনি বক্তব্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন কিন্তু তিনি একজন লেখক হিসেবে তার বিষয়বস্তুর নিয়ন্ত্রণের জন্য দৃঢ়ভাবে চেষ্টা করেন, যেখানে তিনি তার মূল বিষয়ের বহির্ভূত বিষয়, হিরোডোটাসকে অন্তর্ভুক্ত করে তার লেখার নিয়ন্ত্রণ নষ্ট করে ফেলেন, আর এই নিয়ন্ত্রণ রক্ষার চেষ্টার জন্য পরবর্তী গদ্য লেখকদের আদর্শ হয়ে ওঠেন।[২৯] এছাড়াও থুসিডাইডিস একটি গ্রিকদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একটি বিষয় তৈরি করেন। যেখানে তিনি মূল বিষয় হিসেবে পলিস শহর-রাজ্যেকে কেন্দ করেছেন। সভ্যতার পারস্পরিক ক্রিয়া আনাতুলিয়ায় বসবাসরত গ্রিকদের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেমন, হিরোডোটাস এর কাছে অন্য সভ্যতায় জীবনযাপন করা একটি সাম্প্রতিক স্মৃতি ছিল।[২৮]

পারস্যে দুরবস্থার পূর্বে ইতিহাস গ্রিকদের নিকট শুধু স্থানীয় বা পারিবারিক ঐতিহ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হতো। হিরোডোটাস “Wars of Liberation” (স্বাধীনতার যুদ্ধগুলো) থেকে একজন গ্রিক হিসেবে প্রথম ঐতিহাসিক অনুপ্রেরণা লাভ করেন। এই যুদ্ধগুলো তাকে দেখিয়েছে সমন্বিত জীবনের অস্তিত্ব, যা শহরের যেসব ঘটনা প্রকাশিত তার চেয়ে উচ্চ। এগুলো তিনি তার পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যকার সংঘর্ষের নাটকের বিষয় হিসেবে ব্যবহার করেন। হিরোডোটাস এর মাধ্যমে গ্রিস এ ইতিহাসের উদ্দীপনা জন্ম নেয়। তার কাজকে নয় মিউজের উপর ভিত্তি করে ক্লিও এর বাণী বলা হতো।

— -রিচার্ড ক্লেভারহাউজ জেফ[৩০]

সমালোচনামূলক সংস্করণ

[সম্পাদনা]
  • সি. হিউড (ইডি.) Herodoti Historiae. Tomvs prior: Libros I–IV continens. (অক্সফোর্ড ১৯০৮)
  • সি. হিউড (ইডি.) Herodoti Historiae. Tomvs alter: Libri V–IX continens. (অক্সফোর্ড ১৯০৮)
  • এইচ. বি. রোজেন (ইডি.) Herodoti Historiae. Vol. I: Libros I–IV continens. (লেইপজিং ১৯৮৭)
  • এইচ. বি. রোজেন (ইডি.) Herodoti Historiae. Vol. II: Libros V–IX continens indicibus criticis adiectis (স্টাটগার্ট ১৯৯৭)
  • এন. জি. উইলসন (ইডি) Herodoti Historiae. Tomvs prior: Libros I–IV continens. (অক্সফোর্ড ২০১৫)
  • এন. জি. উইলসন (ইডি) Herodoti Historiae. Tomvs alter: Libri V–IX continens. (অক্সফোর্ড ২০১৫)

অনুবাদ

[সম্পাদনা]

হিরোডোটাস এর লেখাগুলোর বেশ কিছু ইংরেজি অনুবাদ সহজেই পাওয়া যায়। নিম্নে উল্লেখিত অনুবাদকদের অনুবাদগুলো সবচেয়ে সহজলভ্য:

  1. For the past several hundred years, the title of Herodotus's work has been translated rather roughly as The Histories or The History. The original title can be translated from the Greek as "researches" or "inquiries".[১৯]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. T. James Luce, The Greek Historians, 2002, p. 26.
  2. Burn (1972), পৃ. 7
  3. Rawlinson (1859), পৃ. 1
  4. Rawlinson (1859), Introduction
  5. Burn (1972), Introduction
  6. Dandamaev, M. A. (১৯৮৯)। A Political History of the Achaemenid Empire। Brill। পৃষ্ঠা 153। আইএসবিএন 978-90-04-09172-6The ‘Father of History’, Herodotus, was born at Halicarnassus, and before his emigration to mainland Greece was a subject of the Persian empire. 
  7. Kia, Mehrdad (২০১৬)। The Persian Empire: A Historical Encyclopedia। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 161। আইএসবিএন 978-1-61069-391-2At the time of Herodotus’ birth southwestern Asia Minor, including Halicarnassus, was under Persian Achaemenid rule. 
  8. Burn (1972), পৃ. 11
  9. Rawlinson (1859), পৃ. 11
  10. Plutarch De Malign. Herod. II p. 862 A, cited by Rawlinson (1859), Introduction
  11. Eusebius Chron. Can. Pars. II p. 339, 01.83.4, cited by Rawlinson (1859), Introduction
  12. The Histories। Introduction and Notes by John Marincola; Trans. by Aubrey de Selincourt। Penguin Books। ২০০৩। পৃষ্ঠা xii। 
  13. Rawlinson (1859), পৃ. 14
  14. Montfaucon’s Bibliothec. Coisl. Cod. clxxvii p. 609, cited by Rawlinson (1859), পৃ. 14
  15. Photius Bibliothec. Cod. lx p. 59, cited by Rawlinson (1859), পৃ. 15
  16. Tzetzes Chil. 1.19, cited by Rawlinson (1859), পৃ. 15
  17. Marcellinus, in Vita. Thucyd. p. ix, cited by Rawlinson (1859), পৃ. 25
  18. Rawlinson (1859), পৃ. 25
  19. "Herodotus" Encyclopedia of World Biography. The Gale Group. Retrieved March 11, 2018.
  20. Burn (1972), পৃ. 23, citing Dionysius On Thucydides
  21. Burn (1972), পৃ. 27
  22. Burn (1972), পৃ. 10
  23. David Pipes। "Herodotus: Father of History, Father of Lies"। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০০৯ 
  24. Rawlinson (1859)
  25. Burn (1972), পৃ. 13
  26. Lawrence A. Tritle. (2004). The Peloponnesian War. Greenwood Publishing Group. pp. 147–148
  27. John Hart. (1982). Herodotus and Greek History. Taylor and Francis. p. 174
  28. Murray (1986), পৃ. 191
  29. Waterfield, Robin (trans.) and Dewald, Carolyn (ed.). (1998). The Histories by Herodotus. University of Oxford Press. “Introduction”, p. xviii
  30. Richard C. Jebb, The Genius of Sophocles, section 7

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]