উল্লাপাড়া উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৪°১৯′১০″ উত্তর ৮৯°৩৪′৮″ পূর্ব / ২৪.৩১৯৪৪° উত্তর ৮৯.৫৬৮৮৯° পূর্ব / 24.31944; 89.56889
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা Mostofa Rohman (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৮:৩০, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (→‎শিক্ষা)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

উল্লাপাড়া
উপজেলা
উল্লাপাড়া উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৯′১০″ উত্তর ৮৯°৩৪′৮″ পূর্ব / ২৪.৩১৯৪৪° উত্তর ৮৯.৫৬৮৮৯° পূর্ব / 24.31944; 89.56889 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাচৌহালী উপজেলা
একক৬৪ সিরাজগঞ্জ ৪
আয়তন
 • মোট৪১৪.৮৩ বর্গকিমি (১৬০.১৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট৫,৪০,১৫৬
 • জনঘনত্ব১,৩০০/বর্গকিমি (৩,৪০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৬৭৬০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৮৮ ৯৪
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

উল্লাপাড়া উপজেলা বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা[২]

অবস্থান

উল্লাপাড়া উপজেলা পদ্মা, যমুনা এবং এদের উপনদী দ্বারা বাহিত পলল দ্বারা সৃষ্ট জেলায় অবস্থিত। এ উপজেলা ২৪°১২' উত্তর সিরাজগঞ্জ অক্ষাংশ থেকে ২৪°২৬' উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং ৮৯°২৫' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯°৩৫' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত। উল্লাপাড়া উপজেলার উত্তরে রায়গঞ্জতাড়াশ, পশ্চিমে তাড়াশ ও পাবনা জেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলা ও শাহজাদপুর উপজেলা এবং পূর্বে বেলকুচিকামারখন্দ উপজেলা। উল্লাপাড়া একটি বৃহৎ উপজেলা যার আয়তন ৪১৪.৪৪ বর্গ কিলোমিটারসমুদ্র সমতল থেকে এর উচ্চতা ১০/১২ ফুট। প্রতি বছর বর্ষার সময় এর অধিকাংশ অঞ্চল প্লাবিত হয়। এ অঞ্চলে কোনো পাহাড় বা মালভূমি নেই। উল্লাপাড়ার পশ্চিমাংশে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি জলাভূমি ও ২৪ টি বিল রয়েছে। এ উপজেলার উপর দিয়ে করতোয়া, ফুলজোর, জপজাপিয়া, কমলা দরগাদহ ইত্যাদি নদী প্রবাহিত হচ্ছে।

প্রশাসনিক এলাকা

উপজেলা

উল্লাপাড়া থানা (বর্তমানে উপজেলা) ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। উপজেলাটি ১টি পৌরসভা, ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ, ২৬৩টি মৌজা এবং ৪৩৩টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।[৩] ইউনিয়ন তালিকাঃ

  1. উল্লাপাড়া সদর
  2. পূর্নিমাগাঁতী
  3. উধুনিয়া
  4. বড় পাঙ্গাসী
  5. হাটিকুমরুল
  6. পন্ঞ্চক্রোশী
  7. সলপ
  8. কয়ড়া
  9. লাহিড়ি মোহনপুর
  10. দুর্গানগর
  11. বড়হর
  12. সলঙ্গা
  13. রামকৃষ্ণ পুর
  14. বাঙ্গালা

পৌরসভা

উল্লাপাড়া পৌর শহর ৯টি ওয়ার্ড ও ২৫টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। ১৯৯৪ সালে এটি পৌরসভায় উন্নীত হয়। পৌরসভার আয়তন ১২.৭০ বর্গ কিলোমিটার। পৌর এলাকায় মোট জনসংখ্যা ৩৬৭৬৬ (পুরুষ ৫২.৩১%, মহিলা ৪৭.৬৯%) এবং ঘনত্ব প্রতি কিলোমিটারে ২৮৯৫ জন। শহর এলাকায় শিক্ষার হার ৪৬.৩৩%। শহরটিতে ২টি ডাকবাংলো রয়েছে।[৩]

ইতিহাস

উল্লাপাড়া অঞ্চল কখন গড়ে উঠেছে তার সঠিক কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি । তবে ভূ-তত্ত্ববিদগণের মতে এবং বিভিন্ন পরিব্রাজকদের বর্ণনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, প্রায় ৪৫০০ খ্রিস্টপূর্বে জয়পুরহাট,দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহীর অংশ এবং পাবনার পশ্চিমাংশ নিয়ে বরেন্দ্রভূমি গড়ে উঠে। এর বহু শতাব্দী পরে বিভিন্ন নদীবাহিত পলল সঞ্চিত হয়ে সিরাজগঞ্জ,টাঙ্গাইল,ময়মনসিংহ,মুন্সিগঞ্জ,পাবনা প্রভৃতি জেলা গড়ে ওঠে । তখন যমুনা নদীর অস্তিত্ব ছিল না এবং সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল ছিল ময়মনসিংহের অংশ । চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এর মতে সপ্তম শতাব্দীর পর থেকে সিরাজগঞ্জ জেলায় জনবসতি গড়ে ওঠে । ঐ সময় নবগঠিত এ অঞ্চল বছরের প্রায় আট/নয় মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকত । হিউয়েন সাং এর বর্ণনা থেকে আরো জানা যায় যে, করতোয়া নদীর পশ্চিমাঞ্চল ছিল পুণ্ড্রবর্ধন রাজ্যের অন্তর্গত । ধারণা করা হচ্ছে উল্লাপাড়াও এই রাজ্যের অন্তর্গত ছিল । পরবর্তীতে নদীবাহিত পলি সঞ্চায়নের মাধ্যমে উল্লাপাড়া প্লাবন সমভূমিতে পরিণত হয় । মুসলিম শাসনকাল(১২০৪‌‌-১৭৫৭) এবং ব্রিটিশ আমলে(১৭৫৭-১৯৪৭) নৌ-পথে ও স্থলপথে উল্লাপাড়ার সাথে যোগাযোগ স্থাপন হয় এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্র গড়ে ওঠে ।

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০১১ সালের আদমশুমারীর হিসেব অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৫,৪০,১৫৬ জন এবং ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৩০৩ জন। উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী উল্লাপাড়া পৌরসভার জনসংখ্যা ৩৬,৭৩৭ জন।[৪] নিচে ছকের মাধ্যমে উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন আদমশুমারীর পরিসংখ্যান তুলে ধরা হল-

আদমশুমারী মোট জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিলোমিটারে)
২০১১ ৫৪০১৫৬ ১৩০৩
২০০১ ৪৪৯২৪৩ ১০৮৪
১৯৯১ ৩৯৯০৭৪ ৯৬৩

শিক্ষা

উল্লাপাড়া উপজেলার শিক্ষার হার ৩২.২২%। উল্লাপাড়ায় বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে কলেজ ২০টি, উচ্চ বিদ্যালয় ৫৪টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫টি, মাদ্রাসা ৯০টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৬টি, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৬টি। এছাড়াও বেশকিছু কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সঙ্গীত বিদ্যালয়, স্যাটেলাইট স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন রয়েছে।

অর্থনীতি

উল্লাপাড়ার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। উপজেলার মোট ৪৩.৩৪% কৃষিকাজে জড়িত। প্রধাণ অর্থকারী ফসলের মধ্যে বয়েছে - ধান, পাট, গম, সরিষা ইত্যাদি ।[৩]

প্রত্নতত্ত্বিক নিদর্শন

উল্লাপাড়া উপজেলার প্রত্নতাত্বিক স্থাপনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু নিদর্শন হচ্ছে[৩] -

  • পনের শতকের প্রাচীণ মাক্কাউলিয়া মসজিদ (দারোগাপাড়া)
  • হযরত বাগদাদী (রহঃ)'র মাজার (গয়হাট্টা)
  • পাঁচ পীরের মাজার (আঙ্গারু)
  • চৌদ্দ শতকের নবরত্ন মন্দির (হাটিকুমরুল)
  • উপজেলার সলপ ইউনিয়নে রয়েছে হিন্দু জমিদার বাড়ি ও পুকুর।

ঐতিহাসিক ঘটনা

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন, ২০শে এপ্রিল, ১৯৭১ সালে উল্লাপাড়া উপজেলার ঘাটিনা রেলওয়ে ব্রীজের নিকটে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর লড়াই সংগঠিত হয় এবং লড়াইয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২০জন সৈন্য নিহত হয়।[৩]

কৃতি ব্যক্তিত্ব

বিবিধ

উল্লাপাড়ার বেতকান্দী গ্রামের বাজারে, যা সলপ স্টেশন নামে পরিচিত, সেখানে নিয়মিত সুস্বাদু ঘোল যা উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ট্র ঘোল বলে লোকমুখে প্রচারিত। প্রতিবছর এখানে ঘোল উৎসব পালিত হয়।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে উল্লাপাড়া উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. সিরাজগঞ্জ জেলা তথ্য বাতায়ন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], পরিদর্শনের তারিখ: ১৪ মার্চ ২০১২।
  3. "বাংলাপিডিয়া"। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১২ 
  4. "বাংলাদেশের জেলা-উপজেলার জনসংখ্যা উপাত্ত ১৯৯১-২০১১"। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১২ 
  5. দি ডেইলি সান পত্রিকার প্রতিবেদন, প্রকাশকাল: ২৭ নভেম্বর ২০১১; পরিদর্শনের তারিখ: ১৪ মার্চ ২০১২।

বহিঃসংযোগ