আলবার্ট আইনস্টাইন
পদার্থবিজ্ঞান |
---|
পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাস |
আলবার্ট আইনস্টাইন (জার্মান: Albert Einstein আল্বেয়াট্ আয়ন্শ্টায়ন্, অনুবাদ 'Albert Einstein german.ogg' [ˈalbɛʁt ˈʔaɪnʃtaɪn] () (১৪ মার্চ ১৮৭৯ - ১৮ এপ্রিল ১৯৫৫) )জার্মানিতে জন্মগ্রহণকারী একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি মূলত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব (আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের দুটি স্তম্ভের একটি) এবং ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র, E = mc2 ( যাকে "বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমীকরণ" হিসেবে খেতাব দেওয়া হয়েছে ) আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। তিনি ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
আইনস্টাইন জার্মান সাম্রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা একটি তড়িৎরাসায়নিক কারখানা পরিচালনা করতেন। তবে আইনস্টাইন ১৮৯৫ সালে সুইজারল্যান্ডে চলে আসেন এবং পরের বছর জার্মান নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে বিশেষায়িত হওয়ায় ১৯০০ সালে জ্যুরিখের ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল থেকে একাডেমিক শিক্ষা ডিপ্লোমা অর্জন করেন। পরের বছর তিনি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব অর্জন করেছিলেন, যা তিনি আর ত্যাগ করেন নি। প্রাথমিকভাবে কাজ সন্ধানের জন্য সংগ্রাম করতে হলেও ১৯০২ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত বার্নের সুইজারল্যান্ডীয় পেটেন্ট অফিসে পেটেন্ট পরীক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা করেছেন এবং নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারে তার অবদান অনেক। সবচেয়ে বিখ্যাত অবদান আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব (যা বলবিজ্ঞান ও তড়িচ্চৌম্বকত্বকে একীভূত করেছিল) এবং আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব (যা অসম গতির ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নতুন মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছিল)। তার অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে আপেক্ষিকতাভিত্তিক বিশ্বতত্ত্ব, কৈশিক ক্রিয়া, ক্রান্তিক উপলবৎ বর্ণময়তা, পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ও কোয়ান্টাম তত্ত্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান যা তাকে অণুর ব্রাউনীয় গতি ব্যাখ্যা করার দিকে পরিচালিত করেছিল, আণবিক ক্রান্তিকের সম্ভ্যাব্যতা, এক-আণবিক গ্যাসের কোয়ান্টাম তত্ত্ব, নিম্ন বিকিরণ ঘনত্বে আলোর তাপীয় ধর্ম (বিকিরণের একটি তত্ত্ব যা ফোটন তত্ত্বের ভিত্তি রচনা করেছিল), একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্বের প্রথম ধারণা দিয়েছিলেন এবং পদার্থবিজ্ঞানের জ্যামিতিকীকরণ করেছিলেন।
১৯৩৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকাকালীন সময়ে এডলফ হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় আসে। ইহুদী হওয়ার কারণে আইনস্টাইন আর জার্মানিতে ফিরে যান নি। আমেরিকাতেই তিনি থিতু হোন এবং ১৯৪০ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান।[৩] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে আগে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি জার্মান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচী সম্পর্কে সতর্ক করেন এবং আমেরিকাকেও একই ধরনের গবেষণা শুরুর তাগিদ দেন। তার এই চিঠির মাধ্যমেই ম্যানহাটন প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়। আইনস্টাইন মিত্রবাহিনীকে সমর্থন করলেও পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিলেন। পরে ব্রিটিশ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল সঙ্গে মিলে পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদের কথা তুলে ধরে রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার রচনা করেন। ১৯৫৫ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর এডভান্সড স্টাডির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আইনস্টাইন ৩০০টিরও অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং ১৫০টির বেশি বিজ্ঞান-বহির্ভূত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।[৪] ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে "শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি" হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীদের একটি ভোটের মাধ্যমে জানা গেছে, তাকে প্রায় সকলেই সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।[৫] দৈনন্দিন জীবনে মেধাবী এবং প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন কাউকে প্রায়শই "আইনস্টাইন" বলে সম্বোধন করা হয়। অর্থাৎ এটি প্রতিভা শব্দের সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।[৬] ইউজিন উইগনার তাকে তাঁর সমসাময়িকদের সাথে তুলনা করতে গিয়ে লিখেছিলেন যে "জেনসি ভন নিউম্যানের চেয়ে আইনস্টাইনের বোধশক্তি আরও বেশি প্রখর ছিল। তার চিন্তাশক্তি নিউম্যানের চেয়ে ভেদ্য এবং বাস্তবিক ছিল।" [৭]
জীবনী
[সম্পাদনা]বাল্যকাল ও প্রাথমিক শিক্ষা
[সম্পাদনা]আইনস্টাইন ১৮৭৯ সালের (ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বিখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল-এর মৃত্যুর বছর) ১৪ মার্চ উল্ম শহরে জন্মগ্রহণ করেন।[৮] তার শৈশব কাটে মিউনিখে। আইনস্টাইনের বাবা-মা ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ মধ্যবিত্ত ইহুদি। বাবা হেরমান আইনস্টাইন মূলত পাখির পালকের বেড তৈরি ও বাজারজাত করতেন। পরবর্তীতে তাদের পরিবার মিউনিখে চলে এলে হেরমান তার ভাই জ্যাকবের সাথে একমুখী বিদ্যুৎ নির্ভর বৈদ্যুতিক যন্ত্র নির্মাণের একটি কারখানা স্থাপন করে মোটামুটি সফলতা পান।
তার মা পলিন কখ পরিবারের অভ্যন্তরীণ সব দায়িত্ব পালন করতেন। তার এক বোন ছিল যার নাম মাজা। আইনস্টাইনের জন্মের দুই বছর পরই তার জন্ম হয়। ছোটবেলায় দুইটি জিনিস তার মনে অপার বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল, প্রথমত পাঁচ বছর বয়সে একটি কম্পাস হাতে পান এবং তার ব্যবহার দেখে বিস্মিত হন। অদৃশ্য শক্তির কারণে কীভাবে কম্পাসের কাঁটা দিক পরিবর্তন করছে? তখন থেকে আজীবন অদৃশ্য শক্তির প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল।[৯] এরপর ১২ বছর বয়সে তিনি জ্যামিতির একটি বইয়ের সাথে পরিচিত হন। এই বইটি অধ্যয়ন করে এত মজা পেয়েছিলেন যে একে আজীবন "পবিত্র ছোট্ট জ্যামিতির বই" বলে সম্বোধন করেছেন।[১০] আসলে বইটি ছিল ইউক্লিডের এলিমেন্ট্স। আইনস্টাইন ৫ বছর বয়সে ক্যাথলিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ৩বছর সেখানেই পড়াশোনা করেন। তার কথা বলার ক্ষমতা খুব একটা ছিল না, তথাপি স্কুলে বেশ ভালো ফলাফল করেছিলেন।[১১] এরপর ৮ বছর বয়সে তাকে লুইটপোল্ড জিমনেসিয়ামে (বর্তমানে আলবার্ট আইনস্টাইন জিমনেসিয়াম নামে পরিচিত) স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে তিনি উন্নত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। সেখানে ৭বছর পড়াশোনা করা শেষে তিনি জার্মান সাম্রাজ্য ত্যাগ করেন।
১০ বছর বয়সে তার উপর মাক্স টালমুড নামক চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক ছাত্রের বিশেষ প্রভাব পড়েছিল। তাদের বাসায় সে মাঝে মাঝেই নিমন্ত্রণ খেতে যেতো। এভাবে এক সময় সে আইনস্টাইনের অঘোষিত প্রশিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।[১০] টালমুড তাকে উচ্চতর গণিত ও দর্শন বিষয়ে শিক্ষা দিত। টালমুড তাকে অ্যারন বার্নস্টাইন লিখিত শিশু বিজ্ঞান সিরিজের (Naturwissenschaftliche Volksbucher, ১৮৬৭-৬৮) সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এই বইয়ে লেখক বিদ্যুতের সাথে ভ্রমণ তথা একটি টেলিগ্রাফ তারের ভিতর দিয়ে চলাচলের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। আইনস্টাইন তখন নিজেকে প্রশ্ন করেন, এভাবে যদি আলোর সাথে ভ্রমণ করা যেত তাহলে কি ঘটত? এই প্রশ্নটি পরবর্তী ১০ বছর তার মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। তিনি ভেবে দেখেন, আলোর সাথে একই গতিতে ভ্রমণ করলে আলোকে স্থির দেখা যাবে, ঠিক যেন জমাটবদ্ধ তরঙ্গ। আলো যেহেতু তরঙ্গ দিয়ে গঠিত সেহেতু তখন স্থির আলোক তরঙ্গের দেখা দিবে। কিন্তু স্থির আলোক তরঙ্গ কখনও দেখা যায়নি বা দেখা সম্ভব নয়। এখানেই একটি হেয়ালির জন্ম হয় যা তাকে ভাবিয়ে তোলে। ১৩ বছর বয়সে যখন তিনি দর্শন (এবং সঙ্গীতের) প্রতি আরও গুরুতর আগ্রহী হয়েছিলেন টালমুডই তাকে ইউক্লিডের এলিমেন্টস এবং ইমানুয়েল কান্টের ক্রিটিক অফ পিউর রিজন বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এরপরেই কান্ট তার প্রিয় দার্শনিক হয়ে ওঠেন। এলিমেন্ট্স পড়ে আইনস্টাইন অবরোহী কারণ অনুসন্ধান প্রক্রিয়া জানতে পারেন। স্কুল পর্যায়ে ইউক্লিডীয় জ্যামিতি আয়ত্ত করার পর তিনি ক্যালকুলাসের প্রতি মনোযোগী হন। দুই বছরের মাথায় তিনি দাবি করেন যে তিনি সমাকলন এবং অন্তরকলন ক্যালকুলাস আয়ত্ত করে ফেলেছেন।
১২ বছর বয়সে আইনস্টাইন হঠাৎ বেশ ধার্মিক হয়ে উঠেছিলেন। স্রষ্টারগুণকীর্তণ করে বিভিন্ন গান ও পঙ্ক্তি আয়ত্ত করেছিলেন স্কুলে। কিন্তু বিজ্ঞান বিষয়ক বই পড়ার পর থেকে তার ধর্মীয় চেতনা কমে যেতে থাকে। কারণ বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের সাথে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধ লেগে যাচ্ছিলো। আর বিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো ছিল নিশ্চিতরূপে প্রমাণিত। এহেন অবস্থায় তৎকালীন ইহুদি নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায়তনের কর্তৃপক্ষ তার উপর বিশেষ সন্তুষ্ট ছিল না। মায়ের আগ্রহে মাত্র ৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন বেহালা হাতে নেন। বেহালা বাজানো খুব একটা পছন্দ করেন নি তিনি, তাই তখন তা ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি মোৎসার্টের বেহালার সুরের প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি এ সময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিজে নিজে তৈরি করে অন্যদের দেখাতেন। এ সময় থেকেই গণিতের প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ ও মেধার পরিচয় পাওয়া যায়।
আইনস্টাইনের বয়স যখন ১৫ তখন তার বাবা প্রতিনিয়ত ব্যবসায় ক্ষতির শিকার হতে থাকেন। ১৮৯৪ সালে হেরমান এবং জ্যাকবের কোম্পানি মিউনিখ শহরে বৈদ্যুতিক আলো সরবরাহের একটি চুক্তি হেরে যায় কারণ তাদের সরঞ্জামগুলিকে একমুখী বিদ্যুতের (ডিসি) মানদণ্ড থেকে আরও দক্ষ পরিবর্তী বিদ্যুতের (এসি) মানদণ্ডে রূপান্তর করার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট মূলধন ছিল না।[১২] এই ক্ষতির কারণে তারা মিউনিখের কারখানা বিক্রি করতে বাধ্য হন। অগত্যা হেরমান সপরিবারে ইতালির মিলানে পাড়ি জমান। সেখানে এক আত্মীয়ের সাথে কাজ শুরু করেন। মিলানের পর কয়েক মাস তারা পাভিয়া-তে থাকেন। তার বাবা পড়াশোনার জন্য তাকে মিউনিখে একটি বোর্ডিং হাউজে রেখে গিয়েছিলেন। তার বাবা চেয়েছিলেন ছেলে তড়িৎ প্রকৌশলী হবে, কিন্তু তিনি বিশুদ্ধ জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। সে সময়েই আইনস্টাইন জীবনের প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখেন যার নাম "চৌম্বক ক্ষেত্রে ইথারের অবস্থা সংক্রান্ত অনুসন্ধান" (The Investigation of the State of Aether in Magnetic Fields)। [১৩]
বোর্ডিং হাউজে একা একা তার জীবন দুঃসহ হয়ে উঠে। একে স্কুলের একঘেয়ে পড়াশোনা তার উপর ১৬ বছর বয়স হয়ে যাওয়ায় সামরিক দায়িত্ব পালনের চাপ তাকে হাপিয়ে তোলে। এছাড়া আইনস্টাইন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন এবং বিদ্যালয়ের নিয়ম ও শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে বিরক্তি প্রকাশ করেন। প্রুশীয় ধরনের শিক্ষার প্রতি তিনি উদাসীন হয়ে যান। তার মতে সেই শিক্ষা সৃজনশীলতা ও মৌলিকত্ব নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। এক শিক্ষক অবশ্য আইনস্টাইনকে বলেই বসেছিলেন যে তাকে দিয়ে মহৎ কিছু হবে না। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মাত্র ৬ মাস পরেই তাই মিউনিখ ছেড়ে পাভিয়াতে তার বাবা-মার কাছে চলে যান। হঠাৎ একদিন দরজায় আলবার্টকে দেখে তারা বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন। তার উপর স্কুলের চাপের বিষয়টি বাবা-মা বুঝতে পারেন। ইতালিতে তাকে কোন স্কুলে ভর্তি করাননি তারা। তাই মুক্ত জীবন কাটাতে থাকেন আইনস্টাইন। তার যোগ্যতা খুব একটা আশাব্যঞ্জক বলে কারও মনে হয়নি। ডাক্তারের চিকিৎসাপত্রের অজুহাত দেখিয়ে তিনি স্কুল থেকে চলে এসেছিলেন।
জুরিখের দিনগুলি
[সম্পাদনা]১৮৯৫ সালে ১৬ বছর বয়সে তিনি জুরিখের সুইজারল্যান্ডীয় ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল (১৯০৯ সালে একে বিবর্ধিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিণত করা হয়েছিল এবং ১৯১১ সালে নাম পরিবর্তন করে Eidgenössische Technische Hochschule রাখা হয়েছিল) থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ফরাসি ভাষা, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ে অকৃতকার্য হলেও [১৪] পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে তার অর্জিত গ্রেড অতুলনীয় ছিল। [১৫] ১৮৯৫ সালে ইটিএইচ এর প্রধান শিক্ষকের উপদেশে তার মাধ্যমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করতে তাকে সুইজারল্যান্ডের আরাইতে জোস্ট উইন্টেলার কর্তৃক পরিচালিত একটি বিশেষ ধরনের স্কুল আরগোভিয়ান ক্যান্টনাল স্কুলে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মূলত ম্যাক্সওয়েলের তাড়িতচৌম্বক তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। প্রফেসর জোস্ট উইন্টেলারের পরিবারের সাথে থাকার সময় তিনি উইন্টেলারের মেয়ে সোফিয়া মেরি-জিন আমান্ডা উইন্টেলার (ডাকনাম মেরি) এর প্রেমে পড়ে যান। তার ছোট বোন মাজা উইন্টেলারের ছেলে পলকে বিয়ে করেছিল[১৬] এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিশেল বেসো তাদের বড় মেয়ে আনাকে বিয়ে করেছিল। জুরিখের দিনগুলি তার খুব সুখে কেটেছিল। ১৮৯৬ সালের জানুয়ারিতে তার বাবার অনুমোদন সহকারে আইনস্টাইন সামরিক পরিষেবা এড়ানোর জন্য জার্মান কিংস্টম অফ উরটেমবার্গের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন। [১৭] এরপর প্রায় ৫ বছর তিনি কোন দেশেরই নাগরিক ছিলেন না। ১৯০১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব লাভ করেন যা তিনি কখনই ত্যাগ করেননি।[১৮]
১৮৯৬ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ১-৬ স্কেলের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান এবং গাণিতিক বিষয়ে শীর্ষ গ্রেড ৬ সহ বেশিরভাগ বিষয়েই ভাল গ্রেড সহ সুইজারল্যান্ডীয় মতুরা (মাধ্যমিক পরীক্ষা) পাস করেন।[১৯] ১৭ বছর বয়সে তিনি জুরিখ পলিটেকনিক স্কুলের চার বছরব্যাপী গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকতা ডিপ্লোমায় ভর্তি হন। মেরি উইন্টেলার শিক্ষকতার জন্য সুইজারল্যান্ডের অলসবার্গে চলে যান।[২০] জুরিখে তিনি অনেক বন্ধুর সাথে পরিচিত হন যাদের সাথে তার ভাল সময়ে কেটেছে। যেমন গণিতজ্ঞ মার্সেল গ্রসম্যান এবং বেসো যার সাথে তিনি স্থান-কাল নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করতেন। সেখানেই তার সাথে মিলেভা মেরিকের দেখা হয়।
মেরিক ছিল তার পদার্থবিজ্ঞানের সহপাঠী। প্রকৃতপক্ষে মিলেভা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র ছাত্রী। পরের কয়েক বছরে আইনস্টাইন এবং মেরিকের বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয় এবং তারা উভয়েরই আগ্রহের বিষয় পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে বিতর্ক করে এবং বই পড়ে অগণিত সময় একে অপরের সাথে কাটিয়েছিল। আইনস্টাইন মেরিককে চিঠি পাঠিয়ে লিখেছিলেন যে তিনি তাঁর সাথে পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন।[২১] ১৯০০ সালে আইনস্টাইন গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।[২২] বহু বছরের প্রত্যক্ষদর্শী প্রমাণ এবং বেশ কয়েকটি চিঠি রয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে মেরিক সম্ভবত ১৯০৫ সালে তার প্রবন্ধ Annus Mirabilis এর প্রকাশে সহযোগিতা করেছিলেন[২১] এবং এর কিছু ধারণা তারা একসাথে বিকশিত করেছিলেন। যদিও কিছু ঐতিহাসিক পদার্থবিদ, যারা এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন তারা এই ব্যাপারে সহমত নয় যে মেরিকের এই ব্যাপারে কোনো উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল।[২৩][২৪]
বিবাহ এবং দাম্পত্য জীবন
[সম্পাদনা]আইনস্টাইন এবং মিলেভার বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় এবং এই মিলেভাকেই তিনি পরবর্তীকালে বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্কটি শুধুমাত্র আবেগকেন্দ্রিক ছিলনা, তাতে যথেষ্ট পরিমাণ বুদ্ধিবৃত্তিক অংশীদারত্বের উপাদান মিশে ছিল॥ তাই পরবর্তীকালে তিনি মিলেভা সম্বন্ধে বলেছিলেন, "মিলেভা এমন এক সৃষ্টি যে আমার সমান এবং আমার মতই শক্তিশালী ও স্বাধীন"। তাদের ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়। আইনস্টাইনের মা অবশ্য চেহারা বেশি ভাল না থাকা, অ-ইহুদি এবং বয়স্ক হওয়ার কারণে মিলেভাকে প্রথমে পছন্দ করেননি। ১৯৮৭ সালে আইনস্টাইন এবং মেরিকের সম্পর্কের প্রথম দিকে আদানপ্রদানকৃত চিঠিপত্রগুলি আবিষ্কৃত হয় যা তাদের একটি কন্যা সন্তানের তথ্য প্রকাশ করে। মেয়েটির নাম ছিল লিসেল এবং তার জন্ম হয়েছিল ১৯০২ সালে যখন মেরিক তার বাবা মায়ের সাথে নোভি সাদে ছিল। মেরিক শিশুটিকে ছাড়াই সুইজারল্যান্ডে ফিরে আসেন, যার আসল নাম এবং পরিণতি অজানা। ১৯০৩ সালের সেপ্টেম্বরে মেরিককে লেখা আইনস্টাইনের চিঠির বিষয়বস্তু থেকে বোঝা যায় যে মেয়েটি হয় কাউকে দত্তক দেওয়া হয়েছিল বা শৈশবকালে আরক্ত জ্বরে মারা গিয়েছিল। [২৫][২৬][২৭] এ সময় মিশেল বেসো তাকে আর্নস্ট মাখ-এর লেখার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এর পর পরই তার গবেষণাপত্র Annalen der Physik প্রকাশিত হয় যার বিষয় ছিল নলের মধ্য দিয়ে কৈশিক বল।
আইনস্টাইন এবং মেরিক ১৯০৩ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেছিলেন। ১৯০৪ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের বার্নে তাদের ছেলে হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইন জন্ম নেয়। এবং তাদের ছেলে এডুয়ার্ড ১৯১০ সালের জুলাই মাসে জুরিখে জন্মগ্রহণ করেছিল। তারা সকলে ১৯১৪ সালে তারা বার্লিনে চলে আসলেও মেরিক কিছুদিন পরেই ছেলেদের নিয়ে জুরিখে ফিরে আসে। এর কারণ তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও [২৮] আইনস্টাইন তার চাচাতো বোন এলসার প্রেমে পরে গিয়েছিল। [২৮] পাঁচ বছর আলাদা থাকার পরে ১৯১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। [২৯][৩০] ২০ বছর বয়সে এডুয়ার্ডের শরীর খারাপ হয় এবং তার সিজোফ্রিনিয়া ধরা পরে। তার মা তার যত্ন নিতো এবং তাকে প্রায়ই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হতো। তার মায়ের মৃত্যুর পর তাকে স্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। [৩১]
২০১৫ সালে আইনস্টাইন তার প্রথম প্রেম মেরি উইন্টেলারকে লেখা কিছু চিঠি প্রকাশিত হয়। চিঠিগুলোতে তাঁর বিবাহ এবং তার প্রতি আইনস্টাইনের দৃঢ় অনুভূতি সম্পর্কে লিখেছিলেন। ১৯১০ সালে যখন তার স্ত্রী দ্বিতীয়বার গর্ভবতি হন তখন আইনস্টাইন লিখেছিলেন, "আমি তোমার কথা প্রতি মুহুর্তে চিন্তা করি এবং একজন মানুষ যতটা অসুখী হতে পারে আমি ঠিক ততোটাই অসুখী।" তিনি মেরির প্রতি তার ভালবাসার সম্পর্কে "বিপথগামী ভালবাসা" এবং "হারিয়ে ফেলা জীবন" বলে উল্লেখ করেছেন। [৩২]
১৯১২ সাল থেকে লম্বা সম্পর্কের পর ১৯১৯ সালে আইনস্টাইন এলসা লভেন্থালকে বিয়ে করেন। [৩৩] তিনি জন্মের দিক থেকে আইনস্টাইনের প্রথম এবং পৈতৃকভাবেভাবে দ্বিতীয় চাচাতো বোন ছিলেন। [৩৩] ১৯৩৩ সালে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। ১৯৩৩ সালে এলসার হার্ট ও কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে এবং ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি মারা যান। [৩৪]
১৯২৩ সালে আইনস্টাইন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হ্যান্স মুহসামের ভাগ্নী বেটি নিউম্যান নামে এক সচিবের প্রেমে পড়েন।[৩৫][৩৬][৩৭][৩৮] ২০০৬ সালে জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত কিছু চিঠিতে [৩৯] আইনস্টাইন ছয়জন নারীর কথা বর্ণনা করেছেন যাদের সাথে তিনি এলসার সাথে বিবাহিত থাকা অবস্থায় সময় কাটিয়েছেন এবং তাদের থেকে উপহার গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে এস্টেলা কাটজেনেলেনবোজেন (ধনী ফুল ব্যবসায়ী), টনি মেন্ডেল (একজন ধনী ইহুদি বিধবা) এবং এথেল মিশানোভস্কিও (বার্লিনের একজন সমাজসেবী) ছিলেন। [৪০][৪১] দ্বিতীয় স্ত্রী এলসার মৃত্যুর পরে আইনস্টাইন মার্গারিটা কোনেনকোভার সাথে সংক্ষিপ্ত সম্পর্কের মধ্যে ছিলেন। [৪২] কোনেনকোভা ছিলেন একজন রাশিয়ান গুপ্তচর, যিনি বিখ্যাত রাশিয়ান ভাস্কর সের্গেই কোনেনকভের (যিনি প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে আইনস্টাইনের ব্রোঞ্জ মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন) সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন।[৪৩][৪৪]
বন্ধুবান্ধব
[সম্পাদনা]আইনস্টাইনের সুপরিচিত বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন মিশেল বেসো, পল এরেনফেস্ট, মার্সেল গ্রসম্যান, জ্যানোস প্ল্যাশ, ড্যানিয়েল পসিন, মরিস সলোভাইন এবং স্টিফেন স্যামুয়েল ওয়াইজ।
পেটেন্ট অফিস
[সম্পাদনা]স্নাতক হবার পর আইনস্টাইন শিক্ষকতার কোন চাকরি খুঁজে পাননি। প্রায় ২ বছর চাকরির জন্য ঘোরাঘুরি করেন। তিনি ১৯০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব অর্জন করেছিলেন, তবে চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণে তাকে কোথাও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু ২ বছর ঘোরাঘুরির পর তার প্রাক্তন এক সহপাঠীর বাবা তাকে বার্নে ফেডারেল অফিস ফর ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি নামক একটি পেটেন্ট অফিসে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। [৪৫][৪৬] তার চাকরি ছিল সহকারী পরীক্ষকের। [৪৭][৪৮][৪৯]
নুড়ি বাছাইকরণ যন্ত্র, বৈদ্যুতিন টাইপরাইটারসহ আগত বিভিন্ন ধরনের পেটেন্ট মুল্যায়ন করাই আইনস্টাইনের কাজ ছিল। ১৯০৩ সালে সুইস পেটেন্ট অফিসে তার এই চাকরি স্থায়ী হয়ে যায়। অবশ্য যন্ত্রের কলা-কৌশল সম্পর্কে পূর্ণ দক্ষতা অর্জন না করা পর্যন্ত তার পদোন্নতি হবেনা বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল।[৫০]
আইনস্টাইনের কলেজ সহপাঠী মিশেল বেসোও এই পেটেন্ট অফিসে কাজ করতো। তারা দুজন অন্য বন্ধুদের সাথে বার্নের এক জায়াগায় নিয়মিত মিলিত হতেন। তাদের মিলিত হবার উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান এবং দর্শন বিষয়ে আলোচনা করা, এবং এভাবেই একটি ক্লাবের জন্ম হয়। কৌতুকভরে তারা এই ক্লাবের নাম দিয়েছিলেন "দ্য অলিম্পিয়া একাডেমি"। এদের সাথে প্রায়ই মিলেভা যুক্ত হতো, তবে সে শুধু মনোযোগ দিয়ে শুনতোই কিন্তু অংশ নিতো না। [৫১] সেখানে তারা সবচেয়ে বেশি যাদের লেখা পড়তেন তারা হলেন, অঁরি পয়েনকেয়ার, আর্নস্ট মাখ এবং ডেভিড হিউম। এরাই মূলত আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক চিন্তাধারায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিল।[৫২]
সাধারণ বিশেষজ্ঞ এবং ইতিহাসবিদরা মনে করেন পেটেন্ট অফিসের দিনগুলিতে আইনস্টাইনের মেধার অপচয় হয়েছে। কারণ পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে তার আগ্রহের সাথে এই চাকরির কোন সংযোগ ছিলনা এবং এ সময়ে তিনি অনেক এগিয়ে যেতে পারতেন।[৫৩] কিন্তু বিজ্ঞান ইতিহাসবিদ পিটার গ্যালিসন এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তার মতে, সেখানে অবস্থানকালীন কাজকর্মের সাথে আইনস্টাইনের পরবর্তী জীবনের আগ্রহের বিষয়গুলোর যোগসূত্র রয়েছে। যেমন, পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তিনি বৈদ্যুতিক সংকেতের সঞ্চালন এবং সময়ের বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক সামঞ্জস্য বিধান বিষয়ে কিছু গবেষণা করেছিলেন। তখন সঙ্কালিক সময় বিষয়ক চিন্তাধারায় দুটি প্রধান কৌশলগত সমস্যা ছিল। এই সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করতে গিয়েই সে সময়ে তিনি আলোর প্রকৃতি এবং স্থান ও কালের মধ্যে মৌলিক যোগসূত্র বুঝতে পেরেছিলেন।[৫০][৫২]
প্রথম বৈজ্ঞানিক পেটেন্ট
[সম্পাদনা]১৯০০ সালে Annalen der Physik জার্নালে আন্তঃআণবিক শক্তির উপর আইনস্টাইনের প্রথম গবেষণাপত্র "Folgerungen aus den Capillaritätserscheinungen" প্রকাশিত হয়। [৫৪][৫৫] ১৯০৫ সালের ৩০ এপ্রিল আইনস্টাইন পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনারের তত্ত্বাবধানে তার থিসিস সম্পন্ন করেন। [৫৬] ফলস্বরূপ "A New Determination of Molecular Dimensions" প্রবন্ধের জন্য আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। [৫৬][৫৭]
অ্যানাস মিরাবিলিস
[সম্পাদনা]মূল নিবন্ধ
→ অ্যানাস মিরাবিলিস
১৯০৫ সালে পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকলিন সময়ে আইনস্টাইন Annalen der Physik নামক জার্মান বিজ্ঞান সাময়িকীতে যুগান্তকারী চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তখনও তিনি পেটেন্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন। জার্মানির নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রগুলোকে ইতিহাসে অ্যানাস মিরাবিলিস গবেষণাপত্রসমূহ নামে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে। গবেষণাপত্র চারটির বিষয় ছিল:
- আলোক তড়িৎ ক্রিয়া প্রতিপাদন।
- ব্রাউনীয় গতি - আণবিক তত্ত্বের সমর্থন।
- আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব আবিষ্কার।
- ভর-শক্তি সমতা - বিখ্যাত E = mc2 সূত্র প্রতিপাদন।
চারটি গবেষণাপত্র বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত এবং এগুলোর কারণেই ১৯০৫ সালকে আইনস্টাইনের জীবনের "চমৎকার বছর" হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য সে সময় তার গবেষণাপত্রের অনেকগুলো তত্ত্বই প্রমাণিত হয়নি এবং অনেক বিজ্ঞানী কয়েকটি আবিষ্কারকে ভ্রান্ত বলে উড়িয়ে দেন। যেমন আলোর কোয়ান্টা বিষয়ে তার মতবাদ অনেক বছর ধরে বিতর্কিত ছিল।[৫৮] ২৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার উপদেষ্টা ছিলেন পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনার। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের নাম ছিল, "আ নিউ ডিটারমিনেশন অফ মলিক্যুলার ডাইমেনশন্স" তথা আণবিক মাত্রা বিষয়ে একটি নতুন নিরুপণ।(Einstein 1905b)
পদোন্নতি ও অধ্যাপনা শুরু
[সম্পাদনা]১৯০৬ সালে পেটেন্ট অফিস আইনস্টাইনকে টেকনিক্যাল পরীক্ষকের পদে উন্নীত করে। কিন্তু তিনি তখনও পড়াশোনার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯০৮ সালে বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।[৫৯] পরের বছর, তিনি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িৎচুম্বকত্ব এবং আপেক্ষিকতা নীতির উপর একটি বক্তৃতা দেওয়ার পরে আলফ্রেড ক্লাইনার তাকে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে সদ্য সৃষ্ট প্রোফেসর পদের জন্য অনুষদে সুপারিশ করেছিলেন। এরপর আইনস্টাইন ১৯০৯ সালে জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন॥ [৬০]
অবশ্য ১৯১১ সালের এপ্রিলে চার্লস ইউনিভার্সিটি অফ প্রাগে পূর্ণ অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। তখন অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অধিনে অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।[৬১][৬২] প্রাগে অবস্থানকালে তিনি ১১ টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখেছিলেন, এর মধ্যে পাঁচটি বিকিরণ গণিত এবং কঠিন বস্তুর কোয়ান্টাম তত্ত্বের উপর। ১৯১২ সালের জুলাইয়ে তিনি জুরিখে তার মাতৃশিক্ষায়নে ফিরে আসেন। ১৯১২ সাল থেকে ১৯১৪ অবধি তিনি ইটিএইচ জুরিখের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক ছিলেন, যেখানে তিনি বিশ্লেষণাত্মক বলবিদ্যা এবং তাপগতিবিদ্যা বিষয়ে পড়িয়েছিলেন। তিনি কন্টিনিউয়াম বলবিদ্যা, তাপের আণবিক তত্ত্ব অধ্যয়ন করেছিলেন এবং মহাকর্ষের একটি সমস্যা নিয়ে, যার গণিতবিদ এবং তার বন্ধু মার্সেল গ্রোসমানের সাথে কাজ করেছিলেন। [৬৩]
১৯১০ সালে তিনি ক্রান্তীয় অনচ্ছতা বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র লেখেন। এতে পরিবেশে একক অণু কর্তৃক বিচ্ছুরিত আলোর ক্রমপুঞ্জিত প্রভাব বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমেই আকাশ কেন নীল দেখায় তার রহস্য উন্মোচিত হয়।[৬৪] ১৯০৯ সালে আরও দুটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। প্রথমটিতে তিনি বলেন, ম্যাক্স প্লাংকের শক্তি-কোয়ান্টার অবশ্যই সুনির্দিষ্ট ভরবেগ থাকতে হবে এবং তা একটি স্বাধীন বিন্দুবৎ কণার মতো আচরণ করবে। এই গবেষণাপত্রেই ফোটন ধারণাটির জন্ম হয়। অবশ্য ফোটন শব্দটি ১৯২৬ সালে গিলবার্ট এন লুইস প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। তবে আইনস্টাইনের গবেষণাতেই ফোটনের প্রকৃত অর্থ বোঝা যায় এবং এর ফলে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা বিষয়ক ধারণার উৎপত্তি ঘটে। তার অন্য গবেষণাপত্রের নাম ছিল "Über die Entwicklung unserer Anschauungen über das Wesen und die Konstitution der Strahlung" (বিকিরণের গাঠনিক রূপ এবং আবশ্যকীয়তা সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়ন) যা আলোর কোয়ান্টায়ন বিষয়ে রচিত হয়। আলোর উপর মহাকর্ষের প্রভাব বিশেষত মহাকর্ষীয় লাল সরণ এবং আলোর মহাকর্ষীয় বিচ্যুতি বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র লেখেন। এর মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যগ্রহণের (Solar eclipse) সময় আলোর বিচ্যুতির কারণ খুঁজে পান।[৬৫] এ সময় জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী Erwin Freundlich বিজ্ঞানীদের প্রতি আইনস্টাইনের চ্যালেঞ্জগুলো প্রচার করতে শুরু করেন।
১৯১৩ সালের ৩ জুলাই তিনি বার্লিনের প্রুশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ সদস্যপদের জন্য নির্বাচিত হন। পরের সপ্তাহে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এবং ভালটার নের্ন্স্ট তাকে একাডেমিতে যোগদানে প্ররোচিত করার জন্য জুরিখে যান, পাশাপাশি কাইজার ভিলহেল্ম ইনস্টিটিউট ফর ফিজিক্সে পরিচালক পদও প্রদান করেছিলেন, যা শীঘ্রই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। [৬৭] একাডেমির সদস্যপদের সুবিধা হিসেবে বেতন এবং বার্লিনের হাম্বল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ছাড়াই অধ্যাপকত্ব অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২৪ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে একাডেমিতে নির্বাচিত হওয়ার পরের বছরই তিনি বার্লিনে চলে আসেন। তার বার্লিনে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তটির পিছনে তার চাচাত বোন এলসার কাছাকাছি থাকার প্রত্যাশার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল, কারণ এলসার সাথে তার একটি প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। তিনি ১৯১৪ সালের ১ এপ্রিল একাডেমী এবং বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] যোগদান করলেও [৬৮] ওই একই বছর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে কাইজার ভিলহেল্ম ইন্সটিটিউট ফর ফিজিক্সের পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছিল। ইনস্টিটিউটটি ১৯১৭ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর পরিচালক ছিলেন আইনস্টাইন। [৬৯] ১৯১৬ সালে আইনস্টাইন জার্মান ফিজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি (১৯১৬-১৯১৮) নির্বাচিত হন । [৭০]
আইনস্টাইন ১৯১১ সালে তার সাধারণ আপেক্ষিকতার নতুন তত্ত্ব ব্যবহার করে তার গণনা অনুযায়ী অন্য একটি নক্ষত্রের আলো সূর্যের মাধ্যাকর্ষণের কারণে বেঁকে যাওয়া উচিত। ১৯১৯ সালের ১৯ মে এর সূর্যগ্রহণের সময় এই গণনাটি স্যার আর্থার এডিংটন নিশ্চিত করেছিলেন। এই পর্যবেক্ষণগুলি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছিল, যা আইনস্টাইনকে বিশ্বখ্যাত করে তুলেছিল। ১৯১৯ সালের নভেম্বরে শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টাইমস একটি ব্যানার শিরোনাম ছাপায় যেটিতে লেখা ছিল: "Revolution in Science – New Theory of the Universe – Newtonian Ideas Overthrown" (বিজ্ঞানের বিপ্লব - মহাবিশ্বের নতুন তত্ত্ব - নিউটনিয় ধারণা নিপাতিত)। [৭১]
১৯২০ সালে তিনি রয়্যাল নেদারল্যান্ড একাডেমী অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর একজন বিদেশী সদস্য হন। [৭২] ১৯২২ সালে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদান এবং বিশেষত আলোক তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কিত সুত্র আবিষ্কারের জন্য ১৯২১ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। [৭৩] যদিও আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বটি তখনও কিছুটা বিতর্কিত হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। এমনকি আলোক তড়িৎ সম্পর্কিত উদ্ধৃত গবেষণাকে ব্যাখ্যা হিসেবে বিবেচনা না করে শুধুমাত্র একটি সূত্রের আবিষ্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এর কারণ ১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসু কর্তৃক প্ল্যাঙ্ক স্পেকট্রাম আবিষ্কারের পূর্বে ফোটনের ধারণাকে উদ্ভট মনে করা হতো এবং এর সর্বজনীন স্বীকৃতি ছিল না। আইনস্টাইন ১৯২১ সালে রয়্যাল সোসাইটির বিদেশি সদস্য (ForMemRS) নির্বাচিত হন।[৭৪] এছাড়া তিনি ১৯২৫ সালে রয়েল সোসাইটি থেকে কপলি পদকও পেয়েছিলেন। [৭৪]
১৯২১–১৯২২: বিদেশ ভ্রমণ
[সম্পাদনা]আইনস্টাইন ১৯২১ সালের ২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো নিউইয়র্ক শহর সফর করেছিলেন। সেখানের মেয়র জন ফ্রান্সিস হিলান তাকে সরকারীভাবে স্বাগত জানান এবং তারপরে তিন সপ্তাহ বিভিন্ন বক্তৃতা এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি হন। তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। এছাড়া ওয়াশিংটনে তিনি ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সের প্রতিনিধিদের সাথে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন। ইউরোপে ফিরে তিনি লন্ডনে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং দার্শনিক ভিসকাউন্ট হালদেনের অতিথি হন। সেখানে তিনি বেশ কয়েকজন নামী বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন এবং কিংস কলেজ লন্ডনে একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন।[৭৫][৭৬]
১৯২১ সালের জুলাই মাসে তিনি "মাই ফার্স্ট ইম্প্রেশন অফ দ্য ইউএসএ" নামের একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যেখানে তিনি সংক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিনীদের বৈশিষ্ট বর্ণনা করার চেষ্টা করেন। [৭৭] আইনস্টাইন তার কিছু পর্যবেক্ষণে স্পষ্টভাবে অবাক হয়েছিলেন: " একজন দর্শনার্থীর কাছে আকর্ষণের বিষয় হলো আনন্দময়, ইতিবাচক মনোভাব...মার্কিনীরা বন্ধুত্বপূর্ণ, আত্মবিশ্বাসী, আশাবাদী এবং তাদের মধ্যে হিংসা নেই।"[৭৮]
১৯২২ সালে ছয় মাসের ভ্রমণ এবং বক্তৃতা সফরের অংশ হিসাবে তিনি এশিয়া ও পরে ফিলিস্তিনে ভ্রমণ করেন। তিনি সিঙ্গাপুর, সিলন এবং জাপানে গিয়েছিলেন এবং কয়েক হাজার জাপানীদের কয়েকটি ধারাবাহিক বক্তৃতা দিয়েছিলেন। প্রথম বক্তৃতার পরে তিনি ইম্পেরিয়াল প্রাসাদে সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞীর সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। সেখানে হাজার হাজার মানুষ তাকে দেখতে এসেছিল। ছেলেদের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে তিনি জাপানিদের সম্পর্কে নিজের ধারণা ব্যক্ত করতে গিয়ে তাদের বিনয়ী, বুদ্ধিমান, বিবেচ্য এবং শিল্পের প্রতি সত্য অনুভূতি থাকার কথা বর্ণনা করেছিলেন।[৭৯] ১৯২২-২৩ সালের এশিয়ার সফর সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব ভ্রমণ ডায়েরিতে তিনি চীনা, জাপানি এবং ভারতীয় জনগণের সম্পর্কে কিছু মতামত প্রকাশ করেছেন, যা ২০১৮ সালে পুনরায় আবিষ্কারের পর জেনোফোবিক এবং বর্ণবাদী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।[৮০]
১৯২২ সালের ডিসেম্বরে স্টকহোমে ব্যক্তিগতভাবে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল গ্রহণ করতে পারেননি কারণ তিনি সুদূর প্রাচ্যে ভ্রমণরত ছিলেন। একজন জার্মান কূটনীতিক তার জায়গায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি আইনস্টাইনকে কেবল একজন বিজ্ঞানী হিসাবেই নয়, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী কর্মী হিসাবেও প্রশংসা করেছিলেন। [৮১]
ফিরতি ভ্রমণে তিনি ফিলিস্তিনে ১২ দিন কাটিয়েছিলেন। সেখানে তাকে এমনভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যেন তিনি কোনো পদার্থবিদ নন বরং কোনো দেশের রাষ্ট্রপতি। হাই কমিশনার স্যার হারবার্ট স্যামুয়েল এর বাসায় পৌঁছানোর পরে তাকে সামরিক অভিবাদন জানানো হয়েছিল। তাকে সংবর্ধনা জানানোর সময় ভবনটিতে তাকে দেখা এবং তার কথা শোনার জন্য মানুষের ভীর হয়ে গিয়েছিল। দর্শকদের সাথে আলাপকালে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন যে ইহুদি জনগণ বিশ্বে একটি শক্তি হিসাবে স্বীকৃতি পেতে শুরু করেছে।[৮২]
১৯২৩ সালে দুই সপ্তাহের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে স্পেনে ভ্রমণ করেছিলেন যেখানে তিনি রাজা দ্বাদশ আলফোনসোর কাছ থেকে ডিপ্লোমা গ্রহণ করেছিলেন এবং তাকে স্প্যানিশ একাডেমী অফ সায়েন্সেস এর সদস্যপদ প্রদান করা হয়েছিল।[৮৩]
১৯২২ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত আইনস্টাইন জেনেভায় লীগ অফ নেশনস এর বুদ্ধিজীবী সহযোগিতা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ছিলেন (১৯২৩–১৯২৪ সালে কয়েক মাসের বিরতি সহ)।[৮৪] এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষক, শিল্পী এবং বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিনিময় প্রচার করা।[৮৫] মূলত সুইস প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করার কথা থাকলেও সেক্রেটারি-জেনারেল এরিক ড্রামন্ডকে ক্যাথলিক কর্মী ওসকার হেলেকি এবং জিউসেপ মোত্তা জার্মান প্রতিনিধি হওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিলেন যেকারণে গনজাগে ডি রেনল্ড সুইস প্রতিনিধির স্থান গ্রহণ করেছিলেন এবং সেখান থেকে তিনি সনাতনবাদী ক্যাথলিক মূল্যবোধ প্রচার করেছিলেন।[৮৬] আইনস্টাইনের প্রাক্তন পদার্থবিজ্ঞান অধ্যাপক হেনড্রিক লরেঞ্জ এবং পোলিশ রসায়নবিদ মেরি কুরিও এই কমিটির সদস্য ছিলেন।
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
[সম্পাদনা]আইনস্টাইন তার জীবনে শত শত বই এবং গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। [৮৭][৮৮] তিনি তিন শতাধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং ১৫০ টি অবৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন।[৮৮][৮৯] ২০১৪ সালের ৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংরক্ষণাগারগুলি ঘোষণা করেছিল যে আইনস্টাইনের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে ৩০,০০০ এরও বেশি অনন্য নথি রয়েছে।[৯০][৯১] আইনস্টাইনের বুদ্ধিগত কৃতিত্ব এবং মৌলিকত্ব "আইনস্টাইন" শব্দটিকে "প্রতিভা" শব্দের সমার্থক করে তুলেছে।[৬] নিজে যা যা করেছিলেন সেগুলো ছাড়াও তিনি বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান, আইনস্টাইন রেফ্রিজারেটর সহ বিভিন্ন প্রকল্পে অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সহযোগিতা করেছিলেন।[৯২][৯৩]
১৯০৫ - অ্যানাস মিরাবিলিস এর গবেষণাপত্র
[সম্পাদনা]অ্যানাস মিরাবিলিস এর গবেষণাপত্র হল ১৯০৫ সালে আইনস্টাইনের প্রকাশিত চারটি গবেষণাপত্র। এগুলো হলো আলোক তড়িৎ ক্রিয়া, ব্রাউনীয় গতি, বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং E = mc2 যা বৈজ্ঞানিক সাময়িকী Annalen der Physik এ প্রকাশিত হয়েছিল। এই চারটি গবেষণাপত্র আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি গঠনে যথেষ্ট অবদান রেখেছিল এবং স্থান, সময় এবং পদার্থ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়। চারটি গবেষণাপত্র হলো:
শিরোনাম (অনুবাদিত) | মূল বিষয়বস্তু | গৃহীত | প্রকাশিত | তাৎপর্য |
---|---|---|---|---|
"হিউরিস্টিক দৃষ্টিভঙ্গীতে আলোর উৎপাদন এবং রূপান্তর সংক্রান্ত"[৯৪] | আলোক তড়িৎ ক্রিয়া | ১৮ মার্চ | ৯ জুন | এই ধারণা প্রবর্তিত হয় যে, শক্তির বিনিময় কেবলমাত্র নির্দিষ্ট পরিমানেই (কোয়ান্টায়) হয়ে থাকে। [৯৫] এই ধারণাটি কোয়ান্টাম তত্ত্বের প্রাথমিক বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।[৯৬] |
"তাপের আণবিক গতিতত্ত্ব অনুযায়ী স্থির তরলে নিমজ্জিত ক্ষুদ্র কণার গতি সম্পর্কিত"[৯৭] | ব্রাউনীয় গতি | ১১ মে | ১৮ জুলাই | পরিসংখ্যান পদার্থবিজ্ঞানের প্রয়োগকে সমর্থন করে পারমাণবিক তত্ত্বের জন্য পরীক্ষামূলক প্রমাণ ব্যাখ্যা করে। |
"গতিশীল বস্তুর তড়িৎচুম্বকত্ব সম্পর্কিত"[৯৮] | বিশেষ আপেক্ষিকতা | ৩০ জুন | ২৬ সেপ্টেম্বর | বলবিদ্যায় কিছু পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে বলবিদ্যার সূত্রগুলির সাথে বিদ্যুৎ এবং চৌম্বকীয়তা সম্পর্কিত ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণগুলির মিলনসাধন করে। ফলস্বরূপ, বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রমাণ করা যায় যে আলোর গতি পর্যবেক্ষকের গতি থেকে স্বতন্ত্র।[৯৯] "আলোকিত ইথার" এর ধারণাটিকে বাতিল করে দেয়। [১০০] |
"কোনো বস্তুর জড়তা কি এর শক্তির উপর নির্ভর করে?"[১০১] | ভর-শক্তি সমতা | ২৭ সেপ্টেম্বর | ২১ নভেম্বর | ভর এবং শক্তির সমতা, E = mc2 (এর সাথে মাধ্যাকর্ষণের কারণে আলোর বেঁকে যাওয়া জড়িত), "স্থির ভর" এর অস্তিত্ব, এবং পারমাণবিক শক্তির ভিত্তি। |
পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা
[সম্পাদনা]তাপগতীয় অস্থিরতা এবং পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা
[সম্পাদনা]আইনস্টাইনের প্রথম গবেষণাপত্রটি [৫৪][১০২] ১৯০০ সালে Annalen der Physik সাময়িকীতে জমা দেয়েছিলেন। এই পত্রটি ছিল কৈশিক ক্রিয়ার উপর। এটি ১৯০১ সালে "Folgerungen aus den Capillaritätserscheinungen" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল, যাকে অনুবাদ করলে "কৈশিকতা ঘটনার উপসংহার" হয়। ১৯০২-১৯০৩ সালে তার প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্রের (থার্মোডায়নামিক্স) মাধ্যমে পারমাণবিক ঘটনাকে একটি পরিসংখ্যানগত দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই গবেষণাপত্রগুলি ছিল ব্রাউনীয় গতি সম্পর্কিত ১৯০৫ সালের গবেষণাপত্রের ভিত্তি, যা দেখিয়েছিল যে ব্রাউনীয় গতিকে অণু পরমাণুর অস্তিত্বের দৃঢ় প্রমাণ হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। তাঁর ১৯০৩ এবং ১৯০৪ সালের গবেষণা মূলত পরমাণুর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার উপর সীমাবদ্ধ পারমাণবিক আকারের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল।[১০২]
বিশেষ আপেক্ষিকতা
[সম্পাদনা]আইনস্টাইনের গবেষণাপত্র "Zur Elektrodynamik bewegter Körper" [৯৮] (গতিশীল বস্তুর তড়িৎগতিবিজ্ঞান সম্পর্কিত) ১৯০৫ সালের ৩০ জুন সংগ্রহ হরা হয়েছিল এবং একই বছর ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল। এটি বলবিদ্যার সুত্রে কিছু পরিবর্তন সাধন করার মাধ্যমে ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণসমূহ (বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বকীয়তার সূত্র) এবং নিউটনীয় বলবিদ্যার সূত্রগুলোর মধ্যে বিরোধের মীমাংসা করে।[১০৩] পর্যবেক্ষণমূলকভাবে, এই পরিবর্তনগুলির প্রভাব উচ্চ গতিসম্পন্ন (আলোর গতিবেগের নিকটে) বস্তুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পষ্ট বুঝা যায়। এই গবেষণাপত্রে বিকশিত তত্ত্ব পরে আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। আইনস্টাইনের লেখা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলেভা মেরিক এই গবেষণাপত্রে তাকে সহযোগিতা করেছিলেন।[১০৪]
এই গবেষণাপত্র অনুযায়ী, আপেক্ষিকভাবে চলমান পর্যবেক্ষকের কাঠামো থেকে যখন পরিমাপ করা হয়, তখন একটি চলন্ত বস্তুতে বহন করা একটি ঘড়ি ধীরে চলবে এবং বস্তুটি নিজেও তার গতির দিক বরাবর দৈর্ঘ্য সংকুচিত হবে। এই ঘটনা দুইটিকে সাধারণত কাল দীর্ঘায়ন এবং দৈর্ঘ্য সংকোচন বলে অভিহিত করা হয়। এছাড়া বেগ বৃদ্ধির সাথে সাথে বস্তুটির ভর বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এই গবেষণাপত্রে এই যুক্তিও দেওয়া হয়েছিল যে লুমিনিফেরাস ইথার (তৎকালীন পদার্থবিজ্ঞানে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক সত্তা) এর ধারণা অনাবশ্যক ছিল।[১০৫]
ভর-শক্তির সমতুল্যতার বিষয়ে তাঁর গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন তাঁর বিশেষ আপেক্ষিকতা সমীকরণের ফলস্বরূপ E = mc2 সমীকরণটির প্রবর্তন করেছিলেন।[১০৬] আইনস্টাইনের ১৯০৫ সালের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনেক বছর ধরেই বিতর্কিত থেকে গেলেও, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এর মাধ্যমে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় পদার্থবিদরা তার এই তত্ত্বকে গ্রহণ করেছিলেন।[১০৭][১০৮]
আইনস্টাইন মূলত গতিবিদ্যার (চলমান বস্তুর অধ্যয়ন) পদগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতার প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯০৮ সালে হারমান মিনকোভস্কি জ্যামিতিক ক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতাকে স্থান-কালের তত্ত্ব হিসাবে পুনরায় ব্যাখ্যা করেছিলেন। আইনস্টাইন তাঁর ১৯১৫ সালের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে মিনকোভস্কির ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছিলেন।[১০৯]
সাধারণ আপেক্ষিকতা
[সম্পাদনা]সাধারণ আপেক্ষিকতা এবং সমতা নীতি
[সম্পাদনা]সাধারণ আপেক্ষিকতা একটি মহাকর্ষ তত্ত্ব যা আইনস্টাইন ১৯০৭ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে বিকাশ করেছিলেন। সাধারণ আপেক্ষিকতা অনুসারে, কোনো ভরের কারণে সৃষ্ট মহাকর্ষীয় বলের ফলে ওই ভর কর্তৃক স্থান-কাল বেঁকে যায়। সাধারণ আপেক্ষিকতা আধুনিক জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যায় একটি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হিসাবে বিকাশ লাভ করেছে। এটি কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে বর্তমান বোধগম্যতার ভিত্তি প্রদান করে, যেখানে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল এতই শক্তিশালী যে সেখান থেকে আলো পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারে না।
আইনস্টাইন পরবর্তীতে বলেছিলেন যে, সাধারণ আপেক্ষিকতা বিকাশের কারণ বিশেষ আপেক্ষিকতায় গতির বিষয়টি সন্তোষজনক ছিল না এবং এমন একটি তত্ত্ব যা গোড়া থেকেই গতির কোনও অবস্থা উপস্থাপন করে না (এমনকি ত্বরিত বস্তুরও) তা অধিক সন্তোষজনক ছিল।[১১০] ফলস্বরূপ ১৯০৭ সালে তিনি বিশেষ আপেক্ষিকতার অধীনে ত্বরণ সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। "আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং এর থেকে প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত" (অনুবাদিত) শিরোনামের এই গবেষণাপত্রে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুক্ত পতন একধরনের অন্তর্বর্তী গতি (inertial motion) এবং মুক্তভাবে পতনশীল পর্যবেক্ষকের ক্ষেত্রেও আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব প্রযুক্ত হবে এবং এই যুক্তিকেই সমতা নীতি বলা হয়। একই গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন মহাকর্ষীয় সময় প্রসারণ, মহাকর্ষীয় লোহিত সরণ এবং আলোর অবনমনের ঘটনাও গণনা করেছিলেন।[১১১][১১২]
১৯১১ সালে আইনস্টাইন "আলোর বিস্তারের উপর মহাকর্ষের প্রভাব সম্পর্কিত" নামে আরেকটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন যেখানে তিনি ১৯০৭ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু সম্প্রসারিত করে বৃহৎ বস্তু কর্তৃক আলোর অবনমনের পরিমাণ অনুমান করেন। সুতরাং এভাবে সাধারণ আপেক্ষিকতার তাত্ত্বিক গণনা প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে পরীক্ষা করা যেতে পারে।[১১৩]
মহাকর্ষীয় তরঙ্গ
[সম্পাদনা]১৯১৬ সালে আইনস্টাইন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ গণনা করেছিলেন,[১১৪][১১৫] স্থান-কালের বক্রতায় উৎপন্ন ঢেউ যা তরঙ্গ হিসাবে বিস্তার লাভ করে এবং এর উৎস থেকে বাইরের দিকে সরে যাওয়ার সময় মহাকর্ষীয় বিকিরণ হিসেবে শক্তি পরিবহন করে। সাধারণ আপেক্ষিকতার অধীনে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব লরেন্টজ আগ্রাসনের কারণে সম্ভব যা মহাকর্ষের ভৌত মিথস্ক্রিয়া প্রচারের সসীম গতির ধারণা বহন করে।
১৯৭০ এর দশকে ঘনিষ্ঠভাবে ঘুরে বেড়ানো একজোড়া নিউট্রন তারকা (পিএসআর বি১৯১৩+১৬) পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সর্বপ্রথম পরোক্ষভাবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করা গিয়েছিল।[১১৬] তাদের কক্ষপথ ক্ষয়ের ব্যাখ্যা ছিল তাদের মধ্য থেকে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নির্গত হওয়া।[১১৬][১১৭] আইনস্টাইনের এই তত্ত্বটি ২০০৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিশ্চিত হয়েছিল যখন লিগো-এর গবেষকরা মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রথম পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছিলেন যা এই তত্ত্বটি প্রকাশের প্রায় একশত বছর পর ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে শনাক্ত করা হয়েছে।[১১৬][১১৮][১১৯][১২০][১২১]
হোল আর্গুমেন্ট এবং এন্টওয়ার্ফ তত্ত্ব
[সম্পাদনা]সাধারণ আপেক্ষিকতা বিকাশের সময়, আইনস্টাইন তত্ত্বের গেজ আগ্রাসন সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি একটি যুক্তি গঠন করেছিলেন যার ফলে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে একটি সাধারণ আপেক্ষিক ক্ষেত্র তত্ত্ব অসম্ভব। তিনি সম্পূর্ণরূপে সাধারণ সমবায় টেনসর সমীকরণের সন্ধান পরিত্যাগ করেন এবং এমন সমীকরণের সন্ধান করেন যা কেবল সাধারণ রৈখিক রূপান্তরের অধীনে অদম্য হবে।
১৯১৩ সালের জুনে প্রকাশিত এন্টওয়ার্ফ ('খসড়া') তত্ত্বই এই তদন্তগুলির ফলাফল ছিল। এর নাম আনুসারেই এটি একটি তত্ত্বের নকশা ছিল, যা সাধারণ আপেক্ষিকতার তুলনায় কম মার্জিত এবং এর থেকে আরও কঠিন ছিল। দুই বছরেরও বেশি নিবিড় পরিশ্রমের পরে আইনস্টাইন বুঝতে পেরেছিলেন যে হোল আর্গুমেন্ট একটি ভুল ছিল[১২২] এবং ১৯১৫ সালের নভেম্বরে তত্ত্বটি ত্যাগ করেছিলেন।
ভৌত বিশ্বতত্ত্ব
[সম্পাদনা]১৯১৭ সালে আইনস্টাইন মহাবিশ্বের সামগ্রিক কাঠামোর সাথে আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব প্রয়োগ করেছিলেন[১২৩] এবং এর মাধ্যমে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে মহাবিশ্ব গতিশীল এবং এটি সংকুচিত বা প্রসারিত হচ্ছে। গতিশীল মহাবিশ্ব সম্পর্কে পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণ না থাকায় তত্ত্বটি যেন স্থির মহাবিশ্বের গণনা করে এজন্য আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণে মহাজাগতিক ধ্রুবকের ব্যবহার করেছিলেন। মাকের নীতি সম্পর্কে আইনস্টাইনের ধারণা অনুযায়ী পরিবর্তিত ক্ষেত্র সমীকরণটি বদ্ধ বক্রতার স্থির মহাবিশ্বের পূর্বাভাস দিয়েছিল। এই মডেলটি আইনস্টাইন মহাবিশ্ব বা আইনস্টাইনের স্থির মহাবিশ্ব হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল।[১২৪][১২৫]
১৯২৯ সালে এডউইন হাবল নীহারিকার মন্দা আবিষ্কার করলে আইনস্টাইন মহাবিশ্বের স্থির মডেলটি ত্যাগ করেন এবং ১৯৩১ সালে ফ্রিডম্যান-আইনস্টাইন মহাবিশ্ব[১২৬][127][127][১২৭] এবং ১৯৩২ সালে আইনস্টাইন-ডি সিটার মহাবিশ্ব নামের দুটি গতিশীল মডেল প্রস্তাব করেছিলেন।[১২৮][১২৯] উভয় মডেলে আইনস্টাইন মহাজাগতিক ধ্রুবকের ব্যবহার ত্যাগ করেছিলেন এবং এটিকে "তাত্ত্বিকভাবে অ-সন্তোষজনক" বলে দাবি করেছিলেন।[১২৬][১২৭][১৩০]
আইনস্টাইনের অনেক জীবনীগ্রন্থে দাবি করা হয় যে আইনস্টাইন পরবর্তী বছরগুলিতে মহাজাগতিক ধ্রুবকে তাঁর "বৃহত্তম ভুল" বলে উল্লেখ করেছিলেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানী মারিও লিভিও সম্প্রতি এই দাবির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন যে এটি অতিরঞ্জিত হতে পারে।[১৩১]
২০১৩ সালের শেষদিকে আইরিশ পদার্থবিদ করম্যাক ও'রাইফার্টেঘ এর নেতৃত্বে একটি দল প্রমাণ পেয়েছে যে নীহারিকা মন্দার বিষয়ে হাবলের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে জানার পরপরই আইনস্টাইন মহাবিশ্বের একটি স্থির-অবস্থা মডেল বিবেচনা করেছিলেন।[১৩২][১৩৩] ১৯৩১ সালের প্রথম দিকে লেখা আপাতদৃষ্টিতে অবহেলিত একটি পাণ্ডুলিপিতে আইনস্টাইন প্রসারিত হওয়া মহাবিশ্বের এমন একটি মডেল আবিষ্কার করেছিলেন যেখানে পদার্থের ক্রমাগত সৃষ্টির কারণে পদার্থের ঘনত্ব স্থির থাকে। এই প্রক্রিয়াটিকে তিনি মহাজাগতিক ধ্রুবকের সাথে যুক্ত করেছিলেন।[১৩৪][১৩৫] যেমনটি তিনি গবেষণাপত্রে বলেছিলেন, "এরপরে আমি সমীকরণের (১) এমন একটি সমাধানের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যা হাবলের মূল বিষয়গুলির কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবে, এবং যেখানে সময়ের সাথে ঘনত্ব স্থির থাকে "..." যদি ভৌতভাবে সীমাবদ্ধ একটি আয়তন বিবেচনা করা হয় তবে পদার্থের কণা অবিচ্ছিন্নভাবে এটি ছেড়ে চলে যাবে। ঘনত্ব স্থিতিশীল থাকার জন্য আয়তনটিতে মহাশুন্য থেকে অবিরত পদার্থের নতুন কণা গঠিত হতে হবে। "
দেখা যায় যে আইনস্টাইন হয়েল, বন্ডি এবং গোল্ডের বহু বছর আগে প্রসারিত হতে থাকা মহাবিশ্বের একটি স্থির-অবস্থা মডেল বিবেচনা করেছিলেন।[১৩৬][১৩৭] তবে আইনস্টাইনের স্থির-অবস্থা মডেলটিতে একটি মৌলিক ত্রুটি ছিল এবং একারণে তিনি দ্রুত এই ধারণাটি ত্যাগ করেছিলেন।[১৩৪][১৩৫][১৩৮]
শক্তি ভরবেগ সিউডোটেনসর
[সম্পাদনা]সাধারণ আপেক্ষিকতায় স্থানকাল গতিশীল থাকায় কীভাবে সংরক্ষিত শক্তি এবং গতিবেগ শনাক্ত করা যায় তা দেখা মুশকিল। নোয়েথারের উপপাদ্য মাধ্যমে ট্রান্সলেশন ইনভ্যারিয়েন্সসহ এই পরিমাণগুলি ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান থেকে নির্ধারিত করা যায়, তবে সাধারণ কোভ্যারিয়েন্স ট্রান্সলেশন ইনভ্যারিয়েন্সকে কিছুটা গেজ প্রতিসাম্য করে তোলে। এই কারণে নোয়েথারের উপপাদ্য অনুযায়ী সাধারণ আপেক্ষিকতায় উদ্ভূত শক্তি এবং ভরবেগ একটি সত্যিকারের টেনসর তৈরি করে না।
আইনস্টাইন যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি একটি মৌলিক কারণে সত্য এবং তা হলো, নির্দিষ্ট বিকল্প স্থানাঙ্কের মাধ্যমে মহাকর্ষ ক্ষেত্র বিলুপ্ত করা যায়। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন যে, প্রকৃতপক্ষে অ-সমবায় শক্তি ভরবেগ সিউডোটেনসরই মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে শক্তি ভরবেগের বণ্টনের সর্বোত্তম ব্যাখ্যা। এই পদ্ধতিটি লেভ ল্যান্ডো এবং এভজেনি লিফশিটস অনুরণিত করেছিলেন এবং এটি একটি মানদণ্ডে পরিণত হয়েছে।
১৯১৭ সালে এরভিন শ্রোডিঙার এবং অন্যরা সিউডোটেনসরের মতো অ-সমবায় বস্তুর ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
ক্ষুদ্রবিবর
[সম্পাদনা]১৯৩৩ সালে আইনস্টাইন নাথান রোসেনের সাথে একটি ওয়ার্মহোলের মডেল তৈরি করেছিলেন, যা প্রায়শই আইনস্টাইন-রোসেন ব্রিজ নামে পরিচিত।[১৩৯][১৪০] তাঁর অনুপ্রেরণা ছিল গবেষণাপত্রে বর্ণিত "মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র কি প্রাথমিক কণিকাগুলি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে?" বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র সমীকরণের সমাধান হিসাবে প্রাথমিক কণাগুলির মডেল উপস্থাপন করা। এই সমাধানগুলি দুটি শূন্যস্থানের দুটি স্থানে ছিদ্র করে শোয়ার্জচাইল্ড কৃষ্ণগহ্বরের সাহায্যে যুক্ত করে একটি ব্রিজ তৈরি করেছিল।[১৪১]
যদি ক্ষুদ্রবিবরের এক প্রান্ত ধনাত্মক চার্জসম্পন্ন হয় তবে অপর প্রান্ত ঋণাত্মক চার্জসম্পন্ন হবে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই আইনস্টাইন বিশ্বাস করেছিলেন যে এভাবে কণা এবং বিপরীত কণার জোড়াও ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
আইনস্টাইন – কার্টান তত্ত্ব
[সম্পাদনা]ঘূর্ণনশীল বিন্দু কণার ক্ষেত্রে সাধারণ আপেক্ষিকতা প্রয়োগের জন্য একটি অপ্রতিসম অংশ দরকার ছিল। তবে এর জন্য অ্যাফাইন সংযোগকে সর্বজনীন করা প্রয়োজন। আইনস্টাইন এবং কার্টান ১৯২০ এর দশকে এই পরিবর্তনটি করেছিলেন।
গতির সমীকরণ
[সম্পাদনা]সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের একটি মৌলিক সূত্র হচ্ছে আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণ, যা স্থানের বেঁকে যাওয়া বর্ণনা করে। জিওডেসিক সমীকরণ, যা আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণের সাহায্যে কণাসমূহ কীভাবে স্থানান্তরিত হয় তা বর্ণনা করে।
যেহেতু সাধারণ আপেক্ষিকতার সমীকরণগুলি রৈখিক নয়, তাই কৃষ্ণগহ্বরের মতো খাঁটি মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রগুলি থেকে তৈরি প্রচুর পরিমাণে শক্তি একটি প্রক্ষেপণ পথের দিকে অগ্রসর হয় যা আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণগুলি দ্বারাই নির্ধারিত হয়, কোনও নতুন সূত্র দ্বারা নয়। তাই আইনস্টাইন প্রস্তাব করেছিলেন যে কৃষ্ণগহ্বরের মতো একক সমাধানের পথটি সাধারণ আপেক্ষিকতার থেকে জিওডেসিক হবে।
কৌণিক গতিবিহীন বিন্দু বস্তুর জন্য আইনস্টাইন, ইনফিল্ড এবং হফম্যান এবং ঘূর্ণনশীল বস্তুর জন্য রয় কের এটি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
পুরাতন কোয়ান্টাম তত্ত্ব
[সম্পাদনা]ফোটন এবং শক্তি কোয়ান্টা
[সম্পাদনা]১৯০৫ সালে[৯৪] আইনস্টাইন দাবি করেছিলেন যে আলো নিজেই স্থানীয়ীকৃত কণা (কোয়ান্টা) নিয়ে গঠিত। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এবং নিলস বোরসহ সকল পদার্থবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আলো কোয়ান্টা সার্বজনীনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। রবার্ট মিলিকানের আলোকতড়িৎ ক্রিয়ার উপর বিস্তারিত গবেষণা এবং কম্পটন ক্রিয়া পরিমাপের পর ১৯১৯ সালে সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত হয়েছিল।
আইনস্টাইন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে f কম্পাঙ্কবিশিষ্ট প্রত্যেক তরঙ্গ hf শক্তিবিশিষ্ট ফোটনের সমষ্টির সাথে সম্পর্কিত, যেখানে h হলো প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক। তিনি বেশি কিছু বলেন নি কারণ তরঙ্গের সাথে কণা কীভাবে সম্পর্কিত তা তিনি জানতেন না। তবে তার মতে এই ধারণাটি কিছু পরীক্ষামূলক ফলাফল ব্যাখ্যা করবে, বিশেষত আলোকতড়িৎ ক্রিয়া।[৯৪]
বসু-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান
[সম্পাদনা]তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা
[সম্পাদনা]পদার্থ তরঙ্গ
[সম্পাদনা]আইনস্টাইন লুই ডি ব্রগলির তত্ত্ব আবিষ্কারের পর তাঁর ধারণাকে সমর্থন করেছিলেন, যা প্রথমে সন্দেহজনকভাবে গৃহীত হয়েছিল। সেই যুগের অন্য একটি প্রধান গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন ডি ব্রগলি তরঙ্গগুলির জন্য একটি তরঙ্গ সমীকরণ দিয়েছেন, যা আইনস্টাইনের মতে বলবিদ্যার হ্যামিল্টন-জ্যাকোবি সমীকরণ ছিল। এই গবেষণাপত্রটি এরভিন শ্রোডিঙারকে তার ১৯২৬ সালের আবিষ্কারের জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল।
আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র ও মন্তব্য
[সম্পাদনা]উদ্ধৃতি
[সম্পাদনা]- ↑ Heilbron, John L., সম্পাদক (২০০৩)। The Oxford Companion to the History of Modern Science। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 233। আইএসবিএন 978-0-19-974376-6।
- ↑ Pais (1982), p. 301.
- ↑ Paul S. Boyer; Melvyn Dubofsky (২০০১)। The Oxford Companion to United States History। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 218। আইএসবিএন 978-0-19-508209-8।
- ↑ Charles., Dickens,। Hard Times For These Times। আইএসবিএন 978-3-95676-134-8। ওসিএলসি 922931092।
- ↑ Matin Durrani। "Physics: past, present, future"। Physics World, 1999-12-06। ২০০৭-১২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১১-২৭।
- ↑ ক খ Result of WordNet Search for Einstein, 3.1 (ইংরেজি ভাষায়), The Trustees of Princeton University, সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০১-০৪
- ↑ Wigner, Eugene Paul; Szanton, Andrew (২০১৩-১১-১১)। The Recollections of Eugene P. Wigner (ইংরেজি ভাষায়)। Springer। আইএসবিএন 978-1-4899-6313-0।
- ↑ "Albert Einstein – Biography" (ইংরেজি ভাষায়)। Nobel Foundation। ৬ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০০৭।
- ↑ Schilpp (Ed.), P. A. (১৯৭৯)। Albert Einstein - Autobiographical Notes। Open Court। পৃষ্ঠা 8–9।
- ↑ ক খ Warner, Charles Dudley; Warner, Charles Dudley (১৮৯৫)। My summer in a garden / by Charles Dudley Warner.। Boston :: Houghton, Mifflin,।
- ↑ Rosenkranz, Ze'ev (২০০৫), Albert Einstein — Derrière l'image, Editions NZZ, Zürich, পৃষ্ঠা 29, আইএসবিএন ৩-০৩৮২৩-১৮২-৭
- ↑ ব্যারি আর., পার্কার (২০০৩)। Einstein: The Passions of a Scientist। প্রমিথিউস বুকস। পৃষ্ঠা ৩১।
- ↑ Mehra, Jagdish। "Albert Einstein's first paper" (পিডিএফ)। ২০০৮-০৯-০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৩-০৪।
- ↑ Stachel (2008), vol. 1 (1987), p. 11.
- ↑ Fölsing (1997), pp. 36-37.
- ↑ Ibid.
- ↑ Fölsing (1997), p. ৪০.
- ↑ "Einstein's nationalities at einstein-website.de"। ২২ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০০৬।
- ↑ Stachel (২০০৮), vol. 1 (1987), 21-27.
- ↑ Highfield & Carter (1993), pp. 21, 31, 56-57.
- ↑ ক খ Gagnon, Pauline। "The Forgotten Life of Einstein's First Wife"। Scientific American Blog Network (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৪।
- ↑ Stachel (2008), vol ১ (1987), doc 67.
- ↑ Pais (1994), pp. 1-29.
- ↑ Stachel (2002), pp. 49–56.
- ↑ 1628-1688., Bunyan, John, ([approximately 2003])। The pilgrim's progress : from this world to that which is to come, delivered under the similitude of a dream in two parts। Old Paths Gospel Press। ওসিএলসি 53178023। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ J. Renn & R. Schulmann, Albert Einstein/Mileva Marić: The Love Letters, 1992, pp. 73–74, 78.
- ↑ Calaprice & Lipscombe (2005), pp. 22-23.
- ↑ ক খ Gagnon, Pauline। "The Forgotten Life of Einstein's First Wife"। Scientific American Blog Network (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ Smith, Dinitia (১৯৯৬-১১-০৬)। "Dark Side of Einstein Emerges in His Letters (Published 1996)"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ Stachel (2002), p. 50.
- ↑ Neffe (2007), p. 203.
- ↑ Wüthrich, Urs (১১ এপ্রিল ২০১৫)। "Die Liebesbriefe des untreuen Einstein" [The love letters of the unfaithful Einstein]। BZ Berner Zeitung (German ভাষায়)। Bern, Switzerland। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৫।
Ich denke in innigster Liebe an Dich in jeder freien Minute und bin so unglücklich, wie nur ein Mensch es sein kann.
- ↑ ক খ Calaprice & Lipscombe (2005), p. 50.
- ↑ Highfield & Carter (1993), p. ২১৬.
- ↑ "Einstein's theory of fidelity"। The Telegraph (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ Overbye, Dennis (২০১৭-০৪-১৭)। "'Genius' Unravels the Mysteries of Einstein's Universe (Published 2017)"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ TV, NatGeo। "GENIUS ALBERT EINSTEIN'S THEORY OF INFIDELITY"। www.natgeotv.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ "Getting up close and personal with Einstein"। The Jerusalem Post | JPost.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ "Einstein secret love affairs out!"। Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৬-০৭-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ "New letters shed light on Einstein's love life"। NBC News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ "Albert Einstein may have had the IQ, but he needed to work on his EQ"। The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ Pruitt, Sarah। "Einstein Had No Clue His Lover Was a Suspected Russian Spy"। HISTORY (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ Pogrebin, Robin (১৯৯৮-০৬-০১)। "Love Letters By Einstein At Auction (Published 1998)"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ "Einstein's letters show affair with spy"। The Independent (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৯৮-০৬-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৫।
- ↑ "Marcel Grossmann - Biography"। Maths History (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৬।
- ↑ Isaacson (2007), p. 63.
- ↑ Break Up the Anthropocene। University of Minnesota Press। ২০১৯-০৫-২৯। পৃষ্ঠা 41–50।
- ↑ "Einstein at the patent office" (official website)। Berne, Switzerland: Swiss Federal Institute of Intellectual Property, IGE/IPI। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। ৩০ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "FAQ about Einstein and the Institute" (official website)। Berne, Switzerland: Swiss Federal Institute of Intellectual Property, IGE/IPI। ২৭ মে ২০১৪। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মার্চ ২০১৫।
- ↑ ক খ Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter; Skylar peter, Skylar peter (২০১১-১১-১৩)। "Muscle Labs USA Supplements.for Bodybuilders"। SciVee। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২১।
- ↑ Highfield & Carter (1993), pp. 96–98.
- ↑ ক খ Galison, Peter (২০০৩)। Einstein's Clocks, Poincaré's Maps: Empires of Time। New York: W.W. Norton। আইএসবিএন 0393020010।
- ↑ E.g. Pais, Abraham (১৯৮২), Subtle is the Lord. The Science and the Life of Albert Einstein, Oxford University Press, পৃষ্ঠা 17, আইএসবিএন ০-১৯-৫২০৪৩৮-৭
- ↑ ক খ Einstein (1901).
- ↑ Galison, Peter (২০০৩)। Einstein's Clocks, Poincaré's Maps: Empires of Time। New York: W. W. Norton। আইএসবিএন 978-0-393-02001-4।[পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
- ↑ ক খ Einstein (1905b), "Meinem Freunde Herr Dr. Marcel Grossmann gewidmet (Dedicated to my friend, Dr. Marcel Grossmann)".
- ↑ Einstein (1926b), chap. "A New Determination of Molecular Dimensions".
- ↑ author., Eliot, George, 1819-1880,। The mill on the Floss। আইএসবিএন 978-1-84749-742-0। ওসিএলসি 1124857622।
- ↑ Pais, Abraham (১৯৮২), Subtle is the Lord. The Science and the Life of Albert Einstein, Oxford University Press, পৃষ্ঠা 522, আইএসবিএন ০-১৯-৫২০৪৩৮-৭
- ↑ "Associate Professor at the University of Zurich und professor in Prague (1909–1912)" (digital library)। Einstein Online (German and English ভাষায়)। Bern, Switzerland: ETH-Bibliothek Zurich, ETH Zürich, www.ethz.ch। ২০১৪। ২১ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ Isaacson (2007), p. 164.
- ↑ von Hirschhausen, Ulrike (২০০৭)। "Von imperialer Inklusion zur nationalen Exklusion:Staatsbürgerschaft in Österreich- Ungarn 1867–1923" (পিডিএফ) (WZB Discussion Paper)। ZKD – Veröffentlichungsreihe der Forschungsgruppe, "Zivilgesellschaft, Citizenship und politische Mobilisierung in Europa" Schwerpunkt Zivilgesellschaft, Konflikte und Demokratie, Wissenschaftszentrum Berlin für Sozialforschung। Berlin, Germany: WZB Social Science Research Center Berlin। পৃষ্ঠা 8। আইএসএসএন 1860-4315। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১৫।
Eine weitere Diskontinuität bestand viertens darin, dass die Bestimmungen der österreichischen Staatsbürgerschaft, die in den ersten Dritteln des Jahrhunderts auch auf Ungarn angewandt worden waren, seit 1867 nur noch für die cisleithanische Reichshälfte galten. Ungarn entwickelte hingegen jetzt eine eige-ne Staatsbürgerschaft.
- ↑ "Professor at the ETH Zurich (1912–1914)" (digital library)। Einstein Online (German and English ভাষায়)। Zurich, Switzerland: ETH-Bibliothek Zurich, ETH Zürich, www.ethz.ch। ২০১৪। ২১ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ Levenson, Hanna (১৯৭২)। "Levenson Locus of Control Scales"। PsycTESTS Dataset। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২১।
- ↑ Einstein, Albert (১৯১১)। "On the Influence of Gravity on the Propagation of Light"। Annalen der Physik। 35: 898–908। (also in Collected Papers Vol. 3, document 23)
- ↑ "A New Physics, Based on Einstein"। The New York Times। ২৫ নভেম্বর ১৯১৯। পৃষ্ঠা 17।
- ↑ Stachel (2002), p. 534.
- ↑ Weinstein (2015), pp. 18–19.
- ↑ "Director in the attic"। Max-Planck-Gesellschaft, München। ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৭।
- ↑ Calaprice & Lipscombe (2005), "Timeline", p. xix.
- ↑ Andrzej, Stasiak (২০০৩)। "Myths in science"। EMBO Reports। 4 (3): 236। ডিওআই:10.1038/sj.embor.embor779 । পিএমসি 1315907 ।
- ↑ "Albert Einstein (1879–1955)"। Royal Netherlands Academy of Arts and Sciences। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "The Nobel Prize in Physics 1921"। Nobel Prize। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৬।
- ↑ ক খ Whittaker, E. (১ নভেম্বর ১৯৫৫)। "Albert Einstein. 1879–1955"। Biographical Memoirs of Fellows of the Royal Society। 1: 37–67। জেস্টোর 769242। ডিওআই:10.1098/rsbm.1955.0005 ।
- ↑ Hoffmann (1972), pp. 145–148.
- ↑ Fölsing (1997), pp. 499–508.
- ↑ "As Einstein Sees American" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে, Einstein's World, a 1931 reprint with minor changes, of his 1921 essay.
- ↑ Holton (1984), p. 20.
- ↑ Isaacson (2007), pp. 307–308.
- ↑ Flood, Alison (১২ জুন ২০১৮)। "Einstein's travel diaries reveal 'shocking' xenophobia"। The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৮।
- ↑ "The Nobel Prize in Physics 1921"। NobelPrize.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২১।
- ↑ Isaacson (2007), p. 308.
- ↑ Montes-Santiago, J. (১৬ জুলাই ২০১৭)। "[The meeting of Einstein with Cajal (Madrid, 1923): a lost tide of fortune]"। Revista de Neurología। 43 (2): 113–117। আইএসএসএন 0210-0010। পিএমআইডি 16838259।
- ↑ Grandjean, Martin (২০১৮)। Les réseaux de la coopération intellectuelle. La Société des Nations comme actrice des échanges scientifiques et culturels dans l'entre-deux-guerres [The Networks of Intellectual Cooperation. The League of Nations as an Actor of the Scientific and Cultural Exchanges in the Inter-War Period] (ফরাসি ভাষায়)। Lausanne: Université de Lausanne। pp. 296–302
- ↑ Grandjean, Martin (২০১৭)। "Analisi e visualizzazioni delle reti in storia. L'esempio della cooperazione intellettuale della Società delle Nazioni"। Memoria e Ricerca (2): 371–393। ডিওআই:10.14647/87204। See also: French version (PDF) and English summary.
- ↑ Shine, Cormac (২০১৮)। "Papal Diplomacy by Proxy? Catholic Internationalism at the League of Nations' International Committee on Intellectual Cooperation"। The Journal of Ecclesiastical History। 69 (4): 785–805। ডিওআই:10.1017/S0022046917002731।
- ↑ "Albert Einstein - Biography"। web.archive.org। ২০০৭-০৩-০৬। Archived from the original on ২০০৭-০৩-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৬।
- ↑ ক খ Paul Arthur Schilpp, সম্পাদক (১৯৫১)। Albert Einstein: Philosopher-Scientist। II। New York: Harper and Brothers Publishers (Harper Torchbook edition)। পৃষ্ঠা 730–746।. His non-scientific works include: About Zionism: Speeches and Lectures by Professor Albert Einstein (1930), "Why War?" (1933, co-authored by Sigmund Freud), The World As I See It (1934), Out of My Later Years (1950), and a book on science for the general reader, The Evolution of Physics (1938, co-authored by Leopold Infeld).
- ↑ "Scientific Background on the Nobel Prize in Physics 2011. The accelerating universe" (পিডিএফ)। Nobel Media AB। পৃষ্ঠা 2। ১৬ মে ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ Stachel et al. (2008).
- ↑ Overbye, Dennis (৪ ডিসেম্বর ২০১৪)। "Thousands of Einstein Documents Are Now a Click Away"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Einstein archive at the Instituut-Lorentz". Instituut-Lorentz. 2005. Retrieved on 21 November 2005.
- ↑ Pietrow, Alexander G.M. (২০১৯)। "Investigations into the origin of Einstein's Sink"। Studium। 11 (4): 260–268। arXiv:1905.09022 । এসটুসিআইডি 162168640। ডিওআই:10.18352/studium.10183। বিবকোড:2019Studi..11E...1P।
- ↑ ক খ গ Einstein (1905a).
- ↑ Das, Ashok (২০০৩)। Lectures on quantum mechanics। Hindustan Book Agency। পৃষ্ঠা 59। আইএসবিএন 978-81-85931-41-8।
- ↑ Spielberg, Nathan; Anderson, Bryon D. (১৯৯৫)। Seven ideas that shook the universe (2nd সংস্করণ)। John Wiley & Sons। পৃষ্ঠা 263। আইএসবিএন 978-0-471-30606-1।
- ↑ Einstein (1905c).
- ↑ ক খ Einstein (1905d).
- ↑ Major, Fouad G. (২০০৭)। The quantum beat: principles and applications of atomic clocks (2nd সংস্করণ)। Springer। পৃষ্ঠা 142। আইএসবিএন 978-0-387-69533-4।
- ↑ Lindsay, Robert Bruce; Margenau, Henry (১৯৮১)। Foundations of physics। Ox Bow Press। পৃষ্ঠা 330। আইএসবিএন 978-0-918024-17-6।
- ↑ Einstein (1905e).
- ↑ ক খ Kuepper, Hans-Josef। "List of Scientific Publications of Albert Einstein"। Einstein-website.de। ৮ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ Fölsing (1997), pp. 178–198.
- ↑ Gagnon, Pauline। "The Forgotten Life of Einstein's First Wife"। Scientific American Blog Network (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;aBfxO
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Stachel (2002), pp. vi, 15, 90, 131, 215.
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;sBl2q
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Pais (1982), pp. 382–386.
- ↑ Pais (1982), pp. 151–152.
- ↑ Einstein (1923).
- ↑ Pais (1982), pp. 179–183.
- ↑ Stachel et al. (2008), pp. 273–274, vol. 2: The Swiss Years: Writings, 1900–1909.
- ↑ Pais (1982), pp. 194–195.
- ↑ Einstein (1916).
- ↑ Einstein (1918).
- ↑ ক খ গ "Found! Gravitational Waves, or a Wrinkle in Spacetime"। Nadia Drake। National Geographic। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Gravity investigated with a binary pulsar-Press Release: The 1993 Nobel Prize in Physics"। Nobel Foundation। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Gravitational Waves: Ripples in the fabric of space-time"। LIGO | MIT। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Scientists make first direct detection of gravitational waves"। Jennifer Chu। MIT News। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ Ghosh, Pallab (১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "Einstein's gravitational waves 'seen' from black holes"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ Overbye, Dennis (১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "Gravitational Waves Detected, Confirming Einstein's Theory"। The New York Times। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ van Ruiten, J.T.A.G.M.; van Ruiten, J.T.A.G.M.; van Ruiten, J.T.A.G.M.; van Ruiten, J.T.A.G.M.; Luyten, J.; van Ruiten, J.T.A.G.M.; van Ruiten, J.T.A.G.M.; van Ruiten, J.T.A.G.M.; van Ruiten, J.T.A.G.M. (1997-01)। "Boekbesprekingen"। Bijdragen। 58 (3): 330–355। আইএসএসএন 0006-2278। ডিওআই:10.1080/00062278.1997.10739680। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Einstein (1917a).
- ↑ Pais (1994), pp. 285–286.
- ↑ North, J.D. (১৯৬৫)। The Measure of the Universe: A History of Modern Cosmology। New York: Dover। পৃষ্ঠা 81–83।
- ↑ ক খ Einstein (1931).
- ↑ ক খ O'Raifeartaigh, C; McCann, B (২০১৪)। "Einstein's cosmic model of 1931 revisited: An analysis and translation of a forgotten model of the universe" (পিডিএফ)। The European Physical Journal H। 39 (2014): 63–85। arXiv:1312.2192 । এসটুসিআইডি 53419239। ডিওআই:10.1140/epjh/e2013-40038-x। বিবকোড:2014EPJH...39...63O। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ Einstein & de Sitter (1932).
- ↑ Nussbaumer, Harry (২০১৪)। "Einstein's conversion from his static to an expanding universe"। Eur. Phys. J. H। 39 (1): 37–62। arXiv:1311.2763 । এসটুসিআইডি 122011477। ডিওআই:10.1140/epjh/e2013-40037-6। বিবকোড:2014EPJH...39...37N।
- ↑ Nussbaumer and Bieri (২০০৯)। Discovering the Expanding Universe। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 144–152।
- ↑ Zimmer, Carl (৯ জুন ২০১৩)। "The Genius of Getting It Wrong"। The New York Times।
- ↑ Castelvecchi, Davide (২০১৪)। "Einstein's lost theory uncovered"। Nature News & Comment। 506 (7489): 418–419। এসটুসিআইডি 205080245। ডিওআই:10.1038/506418a । পিএমআইডি 24572403। বিবকোড:2014Natur.506..418C।
- ↑ "On His 135th Birthday, Einstein is Still Full of Surprises"। Out There। ১৪ মার্চ ২০১৪। ১৮ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ ক খ O'Raifeartaigh, C.; McCann, B.; Nahm, W.; Mitton, S. (২০১৪)। "Einstein's steady-state theory: an abandoned model of the cosmos" (পিডিএফ)। Eur. Phys. J. H। 39 (3): 353–369। arXiv:1402.0132 । এসটুসিআইডি 38384067। ডিওআই:10.1140/epjh/e2014-50011-x। বিবকোড:2014EPJH...39..353O। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ ক খ Nussbaumer, Harry (২০১৪)। "Einstein's aborted attempt at a dynamic steady-state universe"। arXiv:1402.4099 [physics.hist-ph]।
- ↑ Hoyle (১৯৪৮)। "A New Model for the Expanding Universe"। MNRAS। 108 (5): 372। ডিওআই:10.1093/mnras/108.5.372 । বিবকোড:1948MNRAS.108..372H।
- ↑ Bondi; Gold (১৯৪৮)। "The Steady-State Theory of the Expanding Universe"। MNRAS। 108 (3): 252। ডিওআই:10.1093/mnras/108.3.252 । বিবকোড:1948MNRAS.108..252B।
- ↑ Amir Aczel (৭ মার্চ ২০১৪)। "Einstein's Lost Theory Describes a Universe Without a Big Bang"। The Crux। ১৯ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ Einstein & Rosen (1935).
- ↑ "2015 – General Relativity's Centennial"। American Physical Society। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ Lindley, David (২৫ মার্চ ২০০৫)। "Focus: The Birth of Wormholes"। Physics। 15। ডিওআই:10.1103/physrevfocus.15.11।
উদ্ধৃত কাজ
[সম্পাদনা]- Calaprice, Alice; Lipscombe, Trevor (২০০৫)। Albert Einstein: A Biography। Greenwood Publishing Group। আইএসবিএন 978-0-313-33080-3।
- Calaprice, Alice; Kennefick, Daniel; Schulmann, Robert (২০১৫)। An Einstein Encyclopedia। Princeton University Press।
- Clark, Ronald W. (১৯৭১)। Einstein: The Life and Times। New York: Avon Books। আইএসবিএন 978-0-380-44123-5।
- Fölsing, Albrecht (১৯৯৭)। Albert Einstein। Osers, Ewald কর্তৃক অনূদিত। Abridged by Ewald Osers। New York: Penguin Viking। আইএসবিএন 978-0-670-85545-2।
- Fine, Arthur (২০১৭)। "The Einstein-Podolsky-Rosen Argument in Quantum Theory"। Stanford Encyclopedia of Philosophy। Metaphysics Research Lab, Stanford University।
- Glick, Thomas F., সম্পাদক (১৯৮৭)। The Comparative Reception of Relativity। Kluwer Academic Publishers। আইএসবিএন 90-277-2498-9।
- Highfield, Roger; Carter, Paul (১৯৯৩)। The Private Lives of Albert Einstein। London: Faber and Faber। আইএসবিএন 978-0-571-17170-5।
- Hoffmann, Banesh (১৯৭২)। Albert Einstein: Creator and Rebel'। with the collaboration of Helen Dukas। London: Hart-Davis, MacGibbon। আইএসবিএন 978-0-670-11181-7।
- Isaacson, Walter (২০০৭)। Einstein: His Life and Universe। New York: Simon & Schuster Paperbacks। আইএসবিএন 978-0-7432-6473-0।
- Isaacson, Walter (২০০৮)। Einstein: His Life and Universe। New York: Simon & Schuster। আইএসবিএন 978-1-8473-9589-4।
- Neffe, Jürgen (২০০৭)। Einstein: A Biography। Frisch, Shelley কর্তৃক অনূদিত। Farrar, Straus and Giroux। আইএসবিএন 978-0-374-14664-1।
- Pais, Abraham (১৯৮২)। Subtle is the Lord: The Science and the Life of Albert Einstein। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-853907-0।
- Pais, Abraham (১৯৯৪)। Einstein Lived Here। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-280672-7।
- Penrose, Roger (২০০৭)। The Road to Reality। Vintage Books। আইএসবিএন 978-0-679-77631-4।
- Rowe, David E.; Schulmann, Robert, সম্পাদকগণ (২০০৭)। Einstein on Politics: His Private Thoughts and Public Stands on Nationalism, Zionism, War, Peace, and the Bomb। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-0-691-12094-2।
- Rowe, David E.; Schulmann, Robert, সম্পাদকগণ (২০১৩)। Einstein on Politics: His Private Thoughts and Public Stands on Nationalism, Zionism, War, Peace, and the Bomb। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-1-4008-4828-7।
- Stachel, John J. (১৯৬৬)। Albert Einstein and Mileva Marić (পিডিএফ)। ৭ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৬।
- Stachel, John J. (২০০২)। Einstein from 'B' to 'Z'। Einstein Studies। 9। Birkhäuser। আইএসবিএন 978-0-8176-4143-6। ওসিএলসি 237532460।
- Weinstein, G. (২০১৫)। General Relativity Conflict and Rivalries: Einstein's Polemics with Physicists। Newcastle upon Tyne (UK): Cambridge Scholars Publishing। আইএসবিএন 978-1-4438-8362-7।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- অনলাইনে আইনস্টাইন আর্কাইভ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ আগস্ট ২০১১ তারিখে
- "আইনস্টাইন: ভাবমূর্তি ও প্রভাব", পদার্থ বিজ্ঞানের ইতিহাসে। ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে "AIP Center for the History of Physics" site: biography, audio and full site as downloadable PDF for classroom use. American Institute of Physics
- "এমিলিও সেগ্রী ভিজ্যুয়াল আর্কাইভ: আলবার্ট আইনস্টাইন", আমেরিকান ইনিষ্টিটউট অব ফিজিক্স
- "ম্যাক টিউটর গণিত আর্কাইভের ইতিহাস": আলবার্ট আইনস্টাইন সেইন্ট অ্যান্ড্রিউ বিশ্ববিদ্যালয়, গণিত ও পরিসংখ্যান স্কুল (huge bibliography for further reading)
- "আইনস্টাইনের বৃহত চিন্তাচেতনা" NOVA television documentary series website, Public Broadcasting Service (preview available online)
- নোবেল প্রাইজ সংস্থা:১৯২১ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার
- Mathematics Genealogy Project:আলবার্ট আইনস্টাইন, Mathematics Genealogy Project (a service of the NDSU Department of Mathematics, in association with the American Mathematical Society)
- আলবার্ট আইনস্টাইনের ছায়া বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে আইনস্টাইনের অবদানর উপর ৪ পর্বের ধারাবিহিক: বিবিসি রেডিও
- আলবার্ট আইনস্টাইন
- ১৮৭৯-এ জন্ম
- ১৯৫৫-এ মৃত্যু
- নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী
- মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী
- জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী
- সুইজারল্যান্ডীয় পদার্থবিজ্ঞানী
- মার্কিন নোবেল বিজয়ী
- জার্মান নোবেল বিজয়ী
- সুইজারল্যান্ডীয় নোবেল বিজয়ী
- মার্কিন ইহুদি
- জার্মান ইহুদি
- সুইজারল্যান্ডীয় ইহুদি
- তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী
- বিশ্বতত্ত্ববিদ
- মানবতাবাদী
- ইহুদি দার্শনিক
- ইহুদি বিজ্ঞানী
- মাক্স প্লাংক পদক বিজয়ী
- রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি
- বিজ্ঞানের দার্শনিক
- ইউএসএসআর-এর বিজ্ঞান একাডেমির সম্মানিত সদস্য
- মার্কিন অজ্ঞেয়বাদী
- আইনস্টাইন পরিবার
- জার্মান সমাজতন্ত্রী
- জ্যোতির্বিজ্ঞানী
- জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী
- ইহুদি অজ্ঞেয়বাদী
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন লেখক
- মার্কিন চিঠি লেখক
- মার্কিন শান্তিবাদী
- মার্কিন বিজ্ঞান লেখক
- জার্মান মানবতাবাদী
- রয়্যাল নেদারল্যান্ডস কলা ও বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য
- বিজ্ঞানের দর্শন
- কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী
- কপলি পদক বিজয়ী
- মাতেউচি পদক বিজয়ী
- জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- জার্মান নাগরিকত্ব হারানো ব্যক্তি