হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক
হিড়বাঁধ | |
---|---|
সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°০৩′৪৮″ উত্তর ৮৬°৪৮′০৮″ পূর্ব / ২৩.০৬৩৩৮৫৯° উত্তর ৮৬.৮০২২৯১৯° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | বাঁকুড়া |
আয়তন | |
• মোট | ২১৫.৬০ বর্গকিমি (৮৩.২৪ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১২৩ মিটার (৪০৪ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৮৩,৮৩৪ |
• জনঘনত্ব | ৩৯০/বর্গকিমি (১,০০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• সরকারি | বাংলা, সাঁওতালি, ইংরেজি |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
পিন | ৭২২১৭১ (হিড়বাঁধ) |
দূরাভাষ/এসটিডি কোড | ০৩২৪৩ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | আইএন- ডাব্লিউবি |
যানবাহন নিবন্ধন | ডাব্লিউ বি-৮৭, ডাব্লিউ বি-৮৮ |
স্বাক্ষরতার হার | ৬৪.১৮% |
ওয়েবসাইট | bankura |
হিড়বাঁধ হল একটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, যা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাঁকুড়া জেলার খাতড়া মহকুমারএকটি প্রশাসনিক বিভাগ।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]বিষ্ণুপুর রাজ্য থেকে ব্রিটিশ শাসন
[সম্পাদনা]প্রায় সপ্তম শতাব্দী থেকে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা পর্যন্ত, প্রায় এক হাজার বছর ধরে বাঁকুড়া জেলার ইতিহাস বিষ্ণুপুরের হিন্দু রাজাদের উত্থান ও পতনের সঙ্গে সম্পর্কিত। ১৭শ শতকের শেষের দিকে বিষ্ণুপুর রাজারা শিখরে পৌঁছালেও, ১৮শ শতকের প্রথমার্ধে তাদের পতন শুরু হয়। প্রথমে বর্ধমানের মহারাজা ফতেপুর মহল দখল করেন এবং পরবর্তীতে মারাঠাদের আক্রমণে এলাকা ধ্বংস হয়ে যায়। [১]
১৭৬০ সালে বিষ্ণুপুরকে বর্ধমান চাকলার সঙ্গে ব্রিটিশদের কাছে সমর্পণ করা হয়। ১৭৮৭ সালে বিষ্ণুপুরকে বীরভূমের সঙ্গে যুক্ত করে একটি পৃথক প্রশাসনিক ইউনিট গঠন করা হয়। ১৭৯৩ সালে এটি বর্ধমান কালেক্টরেটে স্থানান্তরিত হয়। ১৮৭৯ সালে, বর্তমান জেলার আকার গঠিত হয় যখন খাতড়া এবং রাইপুর থানা এবং সিমলাপাল পোস্ট মানভূম থেকে বাঁকুড়ায় যুক্ত হয়। একইসঙ্গে সোনামুখী, কোতুলপুর এবং ইন্দাস থানাগুলি বর্ধমান থেকে বাঁকুড়ায় স্থানান্তরিত হয়। [১]
ভূগোল
[সম্পাদনা]হিড়বাঁধের ভৌগোলিক অবস্থান ২৩°০৩′৪৮″ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬°৪৮′০৮″ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে।
হিড়বাঁধ ব্লক বাঁকুড়া জেলার পশ্চিম অংশে অবস্থিত এবং এটি কঠিন শিলার অঞ্চলের অন্তর্গত। [২]
হিড়বাঁধ ব্লকের সীমানা হল: উত্তরে ইন্দপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, পূর্বে ও দক্ষিণের একাংশে খাতড়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, দক্ষিণের বাকি অংশে রানিবাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক, পশ্চিমে পুরুলিয়া জেলার মানবাজার-১ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক আছে।[৩] [৪]
হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মোট এলাকা ১৯০.৯৭ বর্গকিলোমিটার। এই ব্লকে রয়েছে: ১টি পঞ্চায়েত সমিতি, ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৫৯টি গ্রাম সংসদ, ১২১টি মৌজা, ১১৬টি বসতিপূর্ণ গ্রাম বর্তমান। হিড়বাঁধ থানাটি এই ব্লকের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করে।[৫] এই ব্লকের সদর কার্যালয় হিড়বাঁধে অবস্থিত। [৬]
হিড়বাঁধ ব্লকের/পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত গ্রাম পঞ্চায়েতসমূহ হল: বহরামুড়ি, গোপালপুর, হিড়বাঁধ, মালিয়ান, মশিয়াড়া। [৭]
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]ভারতের ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বিষ্ণুপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের মোট জনসংখ্যা ছিল ৮৩,৩৩৪, যা সম্পূর্ণরূপে গ্রামীণ। এর মধ্যে পুরুষ ছিলেন ৪২,৯১৭ (৫১%) এবং নারী ছিলেন ৪০,৯১৭ (৪৯%)। ০-৬ বছরের শিশু জনসংখ্যা ছিল ৯,৯৭৭। তফসিলি জাতির জনসংখ্যা ছিল ২২,৮২৭ (২৭.২৩%) এবং তফসিলি উপজাতির জনসংখ্যা ছিল ২৩,৮০৬ (২৮.৪০%)।[৮]
২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, হিড়বাঁধ ব্লকের মোট জনসংখ্যা ছিল ৭২,৪৯৯। এর মধ্যে পুরুষ ছিলেন ৩৭,২৩০ এবং মহিলা ছিলেন ৩৫,২৬৯। ১৯৯১-২০০১ সময়কালে এই ব্লকে জনসংখ্যার দশকীয় বৃদ্ধির হার ছিল ১৬.৫৩%, যা বাঁকুড়া জেলার ১৩.৭৯% বৃদ্ধির হারের তুলনায় বেশি।[৯] পশ্চিমবঙ্গে এই সময়ে বৃদ্ধির হার ছিল ১৭.৮৪%।[১০]
সাক্ষরতা
[সম্পাদনা]২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে মোট সাক্ষর মানুষের সংখ্যা ছিল ৪৭,৩৯৯। এটি ৬ বছরের ঊর্ধ্বে জনসংখ্যার ৬৪.১৮%। এর মধ্যে পুরুষদের সাক্ষরতার হার ছিল ৭৭.৮০% (২৯,৪৪৬ জন) এবং মহিলাদের ছিল ৪৯.৮৬% (১৭,৯৫৩ জন)। পুরুষ ও মহিলাদের সাক্ষরতার হার ব্যবধান ছিল ২৭.৯৪%।
আরও দেখুন – সাক্ষরতার হার অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের জেলার তালিকা
বাঁকুড়া জেলার সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকগুলির সাক্ষরতা হার |
---|
বাঁকুড়া সদর মহকুমা |
শালতোড়া – ৬১.৪৫% |
মেজিয়া – ৬৬.৮৩% |
গঙ্গাজলঘাটি – ৬৮.১১% |
ছাতনা – ৬৫.৭৩% |
বাঁকুড়া ১ – ৬৮.৭৪% |
বাঁকুড়া ২ – ৭৩.৫৯% |
বড়জোড়া – ৭১.৬৭% |
ওন্দা – ৬৫.৮২% |
বিষ্ণুপুর মহকুমা |
ইন্দাস – ৭১.৭০% |
জয়পুর – ৭৪.৫৭% |
পাত্রসায়ের – ৬৪.৮% |
কোতুলপুর – ৭৮.০১% |
সোনামুখী – ৬৬.১৬% |
বিষ্ণুপুর – ৬৬.৩০% |
খাতড়া মহকুমা |
ইন্দপুর – ৬৭.৪২% |
রানিবাঁধ – ৬৮.৫৩% |
খাতড়া – ৭২.১৮% |
হিড়বাঁধ – ৬৪.১৮% |
রাইপুর – ৭১.৩৩% |
সারেঙ্গা – ৭৪.২৫% |
সিমলাপাল – ৬৮.৪৪% |
তালডাংরা – ৭০.৮৭% |
সূত্র: ২০১১ সালের আদমশুমারি: সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক অনুযায়ী প্রাথমিক আদমশুমারি পরিসংখ্যান |
ভাষা ও ধর্ম
[সম্পাদনা]২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ৬৭,৮৮৯, যা মোট জনসংখ্যার ৮০.৯৮%। মুসলিমদের সংখ্যা ছিল ১,৯৪৫, যা মোট জনসংখ্যার ২.৩২%। অন্য ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ছিল ১৪,০০০, যা মোট জনসংখ্যার ১৬.৭০%।[১২] "অন্য" ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: আদি বসি, মারাং বোড়ো, সাঁওতাল, সরণাথ, সারি ধর্ম, সরনা, আলচচি, বিদিন, সন্ত, শৈবধর্ম, সেরান, সরণ, সরিন, খেরিয়া এবং অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়।[১৩] ২০০১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে, হিন্দুরা মোট জনসংখ্যার ৮১.৩৮%, মুসলিমরা ২.২৪%, এবং উপজাতীয় ধর্মাবলম্বীরা ১৬.১৭% ছিল।[১৪]
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, হিড়বাঁধ ব্লকের প্রধান ভাষাগুলি হল বাংলা : ৮১.৩৩%, সাঁওতালি: ১৮.১০%, অন্যান্য: ০.৫৭%[১৫]
গ্রামীণ দারিদ্র্যতা
[সম্পাদনা]২০০৭ সালে হিড়বাঁধ ব্লকের ৪৯.৯৫% পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত।[১৬] ২০০৫ সালের গ্রামীণ গৃহস্থালি সমীক্ষা অনুসারে, বাঁকুড়া জেলার মোট পরিবারের ২৮.৮৭% ছিল দরিদ্রসীমার নিচে। [১৭]
বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন ব্লকে, যেমন হিড়বাঁধ, খাতড়া, রানিবাঁধ, ইন্দপুর প্রভৃতি থেকে মানুষের মধ্যে স্থানান্তরের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই স্থানান্তরিত জনসংখ্যা এসসি বা এসটি গোষ্ঠীর। এরা মূলত খাদ্যের ঘাটতি মেটানোর জন্য বিভিন্ন সময়ে স্থানান্তরিত হয়, যা ১৫ দিন থেকে ৬-৮ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। স্থানান্তরিতরা সাধারণত বর্ধমান ও হুগলি জেলায় যায়, তবে কিছু মানুষ গুজরাট ও মহারাষ্ট্রেও নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে যায়। [১৬]
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]জীবিকা
[সম্পাদনা]২০১১ সালে হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে মোট কর্মীর শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী, চাষির সংখ্যা ছিল ৫,৯৭৯ জন, যা মোট কর্মীর ১৫.৯৬%। কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ২৩,৪৭৯ জন, যা ৬২.৬৬%। গৃহশিল্পে নিযুক্ত কর্মীর সংখ্যা ছিল ১,০০০ জন, যা ২.৬৭%। অন্যান্য পেশায় নিযুক্ত কর্মীর সংখ্যা ছিল ৫,৮০১ জন, যা মোট কর্মীর ২৩.৯৬%।[১৮] মোট কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩৭,৪৭০ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৪৪.৭০%। অনাক্রম কর্মীর সংখ্যা ছিল ৪৬,৩৬৪ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৫৫.৩০%।[১৯]
দ্রষ্টব্য: জনগণনা অনুযায়ী, চাষি হিসেবে সেই ব্যক্তিদের গণ্য করা হয়, যারা নিজেদের বা সরকারের বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন জমি চাষ করেন বা তত্ত্বাবধান করেন। অন্যের জমিতে মজুরি বা ফসল ভাগে কাজ করা ব্যক্তিরা কৃষি শ্রমিক হিসেবে গণ্য। গৃহশিল্প হলো এমন একটি শিল্প যা পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য দ্বারা বাড়ি বা গ্রামে পরিচালিত হয় এবং যা কারখানা আইনের অধীনে নিবন্ধনযোগ্য নয়। অন্যান্য কর্মী বলতে সেই ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যারা চাষি, কৃষি শ্রমিক বা গৃহশিল্প কর্মী ব্যতীত অন্য কোনো অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নিযুক্ত, যেমন কারখানা, খনি, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন, শিক্ষা, শিল্পকলা ইত্যাদি। [২০]
পরিকাঠামো
[সম্পাদনা]২০১১ সালের জেলা জনগণনা হ্যান্ডবুক অনুযায়ী, হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের ১১৬টি বসতিপূর্ণ গ্রাম ছিল। এই গ্রামগুলির মধ্যে ১০০% গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে। ১৭টি গ্রামে (১৪.৬৬%) ডাকঘর আছে। ১০৮টি গ্রামে (৯৩.১০%) টেলিফোন সংযোগ (ল্যান্ডলাইন, পাবলিক কল অফিস এবং মোবাইল ফোন) রয়েছে। ৪১টি গ্রামে (৩৫.৩৪%) পাকা রাস্তা এবং ৩৩টি গ্রামে (২৮.৪৫%) পরিবহন ব্যবস্থা (বাস, রেল বা নৌপরিবহন) রয়েছে। ৪টি গ্রামে (৩.৪৫%) কৃষি ঋণ সমিতি এবং ৬টি গ্রামে (৫.১৭%) ব্যাংক রয়েছে।[২১]
কৃষি
[সম্পাদনা]হিড়বাঁধ ব্লকে ৩৩টি সার ডিপো, ৬টি বীজের দোকান এবং ৪০টি ন্যায্যমূল্যের দোকান ছিল। [২২]
২০১৩-১৪ সালে হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের মধ্যে বর্গাদার ছিলেন ১.৩৪%, পাট্টাধারী ছিলেন ১০.২৮%, ক্ষুদ্র কৃষক (১-২ হেক্টর জমি) ছিলেন ৭.১২%, প্রান্তিক কৃষক (১ হেক্টরের কম জমি) ছিলেন ২৩.৮১% এবং কৃষি শ্রমিক ছিলেন ৫৭.৪৫%।[২২]
২০০৩-০৪ সালে হিড়বাঁধ ব্লকে মোট ফসলি জমির পরিমাণ ছিল ১১,০৬২ হেক্টর এবং একাধিক ফসল উৎপাদনের জমি ছিল ২,৫৬১ হেক্টর।[২৩]
২০১৩-১৪ সালে হিড়বাঁধ ব্লকে মোট সেচযুক্ত জমির পরিমাণ ছিল ৩,২০৯ হেক্টর। এর মধ্যে খালের জল দ্বারা সেচ ছিল ৯২৯ হেক্টর, পুকুরের জল দ্বারা ১,০৫০ হেক্টর, নদীর জল উত্তোলন দ্বারা ৯৪০ হেক্টর, খোলা কূপের জল দ্বারা ৭০ হেক্টর এবং অন্যান্য পদ্ধতিতে সেচ ছিল ২২০ হেক্টর।[২২]
২০১৩-১৪ সালে এই ব্লকে ৭,৮২৯ হেক্টর জমি থেকে ১৯,২৮৫ টন আমন ধান উৎপাদিত হয়, যা এই এলাকার প্রধান শীতকালীন ফসল। এছাড়া ৫০ হেক্টর জমি থেকে ১০৭ টন গম এবং ৫৩ হেক্টর জমি থেকে ১,৪৩১ টন আলু উৎপাদিত হয়। পাশাপাশি ডাল এবং সরষেও উৎপন্ন হয়।[২২]
তাঁত ও মৃৎশিল্প
[সম্পাদনা]বাঁকুড়া জেলার সমস্ত ব্লকের মতো হিড়বাঁধ ব্লকেও হস্তচালিত তাঁতশিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। ২০০৪-০৫ সালে এখানে ৪০৭টি তাঁত চালু ছিল। [২৪]
বাঁকুড়া জেলা তার মৃৎশিল্পের নান্দনিক উৎকর্ষের জন্য প্রসিদ্ধ, যেখানে বিখ্যাত বাঁকুড়ার ঘোড়ার মূর্তিও অন্তর্ভুক্ত। মৃৎশিল্পের পণ্যগুলিকে নিম্নলিখিত বিভাগে ভাগ করা যায়: গৃহস্থালির উপকরণ, টেরাকোটা এবং অন্যান্য সজ্জাসামগ্রী, এবং ছাদ টাইলস ও অন্যান্য ভারী মৃৎপণ্য। ২০০২ সালে জেলায় প্রায় ৩,২০০টি পরিবার মৃৎশিল্প তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিল। এর মধ্যে হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ৯৫টি পরিবার মৃৎশিল্পে নিযুক্ত ছিল।[২৫]
ব্যাংকিং
[সম্পাদনা]২০১৩-১৪ সালে হিড়বাঁধ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে ১টি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং ৩টি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখা ছিল।[২২]
অনগ্রসর অঞ্চল অনুদান তহবিল
[সম্পাদনা]বাঁকুড়া জেলা একটি অনগ্রসর অঞ্চল হিসেবে তালিকাভুক্ত এবং অনগ্রসর অঞ্চল অনুদান তহবিল (Backward Regions Grant Fund) থেকে আর্থিক সহায়তা পায়। এই তহবিলটি ভারতের সরকার দ্বারা তৈরি করা হয়েছে, যা উন্নয়নের আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করার জন্য পরিকল্পিত। ২০১২ সালের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশের ২৭২টি জেলা এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিল। এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের ১১টি জেলা অন্তর্ভুক্ত। [২৬] [২৭]
পরিবহন
[সম্পাদনা]২০১৩-১৪ সালে হিড়বাঁধ ব্লকে ৬টি বাস রুট ছিল। ব্লক সদর থেকে নিকটবর্তী রেল স্টেশন ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।[২২]
রাজ্য সড়ক ২, যা বাঁকুড়া থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মালঞ্চা পর্যন্ত এবং রাজ্য সড়ক ৪, যা পুরুলিয়া জেলার ঝালদা থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা পর্যন্ত বিস্তৃত, এই ব্লকের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে।[২৮]
শিক্ষা
[সম্পাদনা]২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে, হিড়বাঁধ ব্লকে ৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬,১২১ জন ছাত্রছাত্রী, ৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১,৩৪২ জন ছাত্রছাত্রী, ৬টি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪,৪২৪ জন ছাত্রছাত্রী এবং ৭টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪,৫৮১ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। হিড়বাঁধ ব্লকে বিশেষ ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য ৭৮টি প্রতিষ্ঠান ছিল, যেখানে ৩,১০০ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করত। [২৯]
আরও দেখুন – ভারতে শিক্ষা
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, হিড়বাঁধ ব্লকের ১১৬টি বসবাসকারী গ্রামের মধ্যে ২৪টি গ্রামে কোনো বিদ্যালয় ছিল না, ২১টি গ্রামে দুটি বা তার বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল, ২০টি গ্রামে অন্তত ১টি প্রাথমিক ও ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল এবং ১৪টি গ্রামে অন্তত ১টি মাধ্যমিক ও ১টি উচ্চ বিদ্যালয় ছিল।[৩০]
স্বাস্থ্যসেবা
[সম্পাদনা]২০১৪ সালে, হিড়বাঁধ সিডি ব্লকে ১টি গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল, যার মোট ৪৪টি শয্যা এবং ৬টি ডাক্তার ছিল। এখানে ১৮টি পরিবার কল্যাণ উপকেন্দ্র এবং ১টি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ছিল। হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং উপকেন্দ্রগুলিতে ২,৯৯১ জন রোগী ভেতরে চিকিৎসা পেয়েছিলেন এবং ১,৭১,০৪৬ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা পেয়েছিলেন।[৩১]
অমঝুরি (হিড়বাঁধ) গ্রামীণ হাসপাতাল, হিড়বাঁধে অবস্থিত ৩০টি শয্যা নিয়ে, হিড়বাঁধ ব্লকের প্রধান সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। এখানে মসিয়াড়া (ধরমপুর) (৪টি শয্যা) এবং মলিয়ান (শ্যামনগর) (১০টি শয্যা) প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে।।[৩২] [৩৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ O’Malley, L.S.S.। "Bengal District Gazetteers: Bankura"। Bankura District Authorities। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "District Census Handbook Bankura" (পিডিএফ)। pages 13-17। Directorate of Census Operations West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "District Census Handbook Bankura, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Map on fifth page। Directorate of census Operations V, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "Puruliya Tehsil Map"। Maps of India। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "District Statistical Handbook 2014 Bankura"। Tables 2.1, 2.2। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০২০।
- ↑ "District Census Handbook: Bankura" (পিডিএফ)। Map of Bankura with CD Block HQs and Police Stations (on the fifth page)। Directorate of Census Operations, West Bengal, 2011। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Directory of District, Subdivision, Panchayat Samiti/ Block and Gram Panchayats in West Bengal"। Bankura - Revised in March 2008। Panchayats and Rural Development Department, Government of West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "C.D. block Wise Primary Census Abstract Data(PCA)"। 2011 census: West Bengal – District-wise CD blocks। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "Provisional population totals, West Bengal, Table 4, Bankura District"। Census of India 2001। Census Commission of India। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "Provisional Population Totals, West Bengal. Table 4"। Census of India 2001। Census Commission of India। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Table C-01 Population by Religion: West Bengal"। censusindia.gov.in। Registrar General and Census Commissioner of India। ২০১১।
- ↑ "C1 Population by Religious Community"। West Bengal। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "ST-14 A Details Of Religions Shown Under 'Other Religions And Persuasions' In Main Table"। West Bengal। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "Table C01 Population by Religious Community: West Bengal"। Registrar General and Census Commissioner of India। ২০০১।
- ↑ ক খ "Table C-16 Population by Mother Tongue: West Bengal"। www.censusindia.gov.in। Registrar General and Census Commissioner of India।
- ↑ ক খ "District Human Development Report: Bankura" (পিডিএফ)। April 2007. Page 27, Pages 237-244। Development & Planning Department, Government of West Bengal। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "West Bengal Summary"। Rural Household Survey 2005। Department of Panchayat & Rural Development, Government of West Bengal। ১৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "District Census Handbook Bankura, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Table 33: Distribution of Workers by Sex in Four Categories of Economic Activity in Sub-district 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "District Census Handbook Bankura, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Table 30: Number and percentage of Main workers, Marginal workers and Non workers by Sex, in Sub-districts, 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "District Census Handbook Bankura, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Census Concepts and Definitions, Page 27। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "District Census Handbook, Bankura, 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Page 83, Table 36: Distribution of villages according to availability of different amenities, 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal.। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "District Statistical Handbook 2014 Bankura"। Tables 8.2, 17.2, 18.2, 18.1, 20.1, 21.2, 4.4, 3.1, 3.3 – arranged as per use। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০২০।"District Statistical Handbook 2014 Bankura". Tables 8.2, 17.2, 18.2, 18.1, 20.1, 21.2, 4.4, 3.1, 3.3 – arranged as per use. Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal. Archived from the original on 21 January 2019. Retrieved 15 May 2020.
- ↑ "District Human Development Report: Bankura" (পিডিএফ)। April 2007. Page: 58। Development & Planning Department, Government of West Bengal। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "District Human Development Report: Bankura" (পিডিএফ)। April 2007. Page: 85। Development & Planning Department, Government of West Bengal। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "District Human Development Report: Bankura" (পিডিএফ)। April 2007. Pages: 83-84। Development & Planning Department, Government of West Bengal। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "Backward Regions Grant Funds: Programme Guidelines" (পিডিএফ)। Ministry of Panchayati Raj, Government of India। ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "Backward Regions Grant Fund"। Press Release, 14 June 2012। Press Information Bureau, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "List of State Highways in West Bengal"। West Bengal Traffic Police। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ "District Statistical Handbook 2014 Bankura"। Tables 4.4। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০২০।
- ↑ "District Census Handbook, Bankura, 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Page 1293, Appendix I A: Villages by number of Primary Schools and Appendix I B: Villages by Primary, Middle and Secondary Schools। Directorate of Census Operations, West Bengal.। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "District Statistical Handbook 2014 Bankura"। Tables 3.1, 3.2, 3.3। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০২০।
- ↑ "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)। Health Statistics – Rural Hospitals। Government of West Bengal। ৮ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)। Health Statistics – Primary Health Centres। Government of West Bengal। ২১ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০।