কোটালীপাড়া পৌরসভা

স্থানাঙ্ক: ২২°৫৯′২৫″ উত্তর ৮৯°৫৯′৫৭″ পূর্ব / ২২.৯৯০২৮° উত্তর ৮৯.৯৯৯১৭° পূর্ব / 22.99028; 89.99917
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কোটালীপাড়া
পৌরসভা
কোটালীপাড়া পৌরসভা
প্রাতিষ্ঠানিক লোগো
প্রাতিষ্ঠানিক লোগো
কোটালীপাড়া বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
কোটালীপাড়া
কোটালীপাড়া
বাংলাদেশে কোটালীপাড়া পৌরসভার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৫৯′২৫″ উত্তর ৮৯°৫৯′৫৭″ পূর্ব / ২২.৯৯০২৮° উত্তর ৮৯.৯৯৯১৭° পূর্ব / 22.99028; 89.99917 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাগোপালগঞ্জ জেলা
উপজেলাকোটালীপাড়া উপজেলা
প্রতিষ্ঠাকাল৩০ মার্চ ১৯৯৭
সরকার
 • মেয়রমো‌ঃ কামাল হোসেন শেখ (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
আয়তন
 • মোট১০.৯৬ বর্গকিমি (৪.২৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১৮,০৯৪
 • জনঘনত্ব১,৭০০/বর্গকিমি (৪,৩০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৭৬.৮১%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৮১১০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

কোটালীপাড়া পৌরসভা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রথম শ্রেণীর (ক-শ্রেণী) পৌরসভা যা ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। কোটালীপাড়া পৌরসভার উপর দিয়ে ঘাঘর নদী প্রবাহিত হয়েছে।

পটভূমি[সম্পাদনা]

৩১৫ সালে সিংহবর্মণের পূত্র চন্দ্রবর্মণ প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের সামুদ্রিক বন্দর ও শাসন কেন্দ্র নব্যাবকাশিকার এ অঞ্চল জয় করে ৩০ ফুট উঁচু একটি দুর্গ বা কোট নির্মাণ করেন। এ প্রাচীরের পূর্ব-পশ্চিমে দৈর্ঘ্য ছিল ৪.৪৫ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে দৈর্ঘ্য ছিল ৩.০০ কিলোমিটার। এ মাটির দুর্গটিকে ‘চন্দ্রবর্মণ কোট’ বলা হতো। এ প্রাচীরের রক্ষক বা কর্মকর্তাকে বলা হতো ‘কোটপাল’। এ থেকে কোটালীপাড়া নামের উৎপত্তি।[১] স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ১৯৯৭ সালের ৩০শে মার্চ তৎকালীন কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ও ঘাঘর ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর (গ-শ্রেণী) কোটালীপাড়া পৌরসভায় রূপান্তরিত হয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। তখন এর আয়তন ছিল ২.০৬ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৯৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি প্রথম পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মো‌ঃ কামাল হোসেন শেখ কোটালীপাড়া পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।[২] ২০০৫ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় নির্বাচনে এইচ এম অহিদুল ইসলাম নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালে পৌরসভাটি দ্বিতীয় শ্রেণীতে (খ-শ্রেণী) উন্নীত হয়।[৩] ২০১১ সালের ১৭ই জানুয়ারি তৃতীয় নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো এইচ এম অহিদুল ইসলাম মেয়র নির্বাচিত হন। তৃতীয় দফা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে ঘাঘর ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভার অর্ন্তভুক্ত করা হয়।[২] ২০১৬ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণীর (ক-শ্রেণী) মর্যাদা লাভ করে। ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মো‌ঃ কামাল হোসেন শেখ মেয়র নির্বাচিত হন।[৩]

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোটালীপাড়া পৌর এলাকায় সর্বমোট (৬,৮৭৪+১১,২২০) ১৮,০৯৪ জন পৌর নাগরিক বসবাস করেন[৪] এবং প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৭০০ জন লোক বাস করে।

কোটালীপাড়া পৌরসভায় ১৬টি মসজিদ, ১টি ঈদগাহ, ৭টি মন্দির রয়েছে।[৫]

ভূগোল[সম্পাদনা]

কোটালীপাড়া পৌরসভা ভৌগোলিক অবস্থান ২২°৫৯′২০″ উত্তর ৮৯°৫৯′৫৯″ পূর্ব / ২২.৯৮৮৮৭৩৯° উত্তর ৮৯.৯৯৯৮৪১৮° পূর্ব / 22.9888739; 89.9998418। গোপালগঞ্জ জেলার উত্তর প্রান্তে কোটালীপাড়া পৌরসভার অবস্থান। এর মোট আয়তন ২৭০৮ একর (১০.৯৬ বর্গ কিলোমিটার)।[৩] জেলা সদর থেকে এ পৌরসভার দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। এ পৌরসভার উত্তরে রাধাগঞ্জ ইউনিয়ন, পূর্বে আমতলী ইউনিয়ন, দক্ষিণে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে হিরণ ইউনিয়ন অবস্থিত।

প্রশাসন[সম্পাদনা]

১৯৯৭ সালে কোটালীপাড়া পৌরসভা গঠন করা হয়। ১৯৯৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি প্রথম পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কোটালীপাড়া পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ড ও ১২ট মহল্লা রয়েছে। বর্তমানে শেখ কামাল হোসেন পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পৌরসভাটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথম শ্রেণীর (ক-শ্রেণী) পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃত।

কোটালীপাড়া পৌরসভার প্রশাসনিক কার্যক্রম কোটালীপাড়া উপজেলার আওতাধীন। এটি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২১৭নং নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জ-৩ এর অংশ।[৬]

শিক্ষা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী কোটালীপাড়া পৌর এলাকার সাক্ষরতার হার ৭৬.৮১%।[৪] এ পৌরসভায় ১টি সরকারি কলেজ, ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[৫]

স্বাস্থ্য[সম্পাদনা]

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হার তুলনামূলক কম হলেও এটি মূলত দারিদ্র্যতার সাথে সম্পর্কিত হওয়ায়, এর উন্নতির সাথে সাথে বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোটালীপাড়া অঞ্চলে অপুষ্টি, পরিবেশগত স্যানিটেশন সমস্যা, ডায়াবেটিস, সংক্রামক রোগ প্রভৃতি বেশি দেখা যায়। এ পৌরসভায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি সরকারি হাসপাতালের সাথে সাথে ৩টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এছাড়াও ১টি পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক রয়েছে।[৭]

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

কোটালীপাড়ায় কোনো জাতীয় বা আঞ্চলিক মহাসড়ক নেই। জেলা সড়ক জেড৮৪৩০ (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া সড়ক) টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সাথে এবং জেলা সড়ক জেড৮০৩১ (গৌরনদী-পয়সারহাট-কোটালীপাড়া-গোপালগঞ্জ সড়ক) কোটালীপাড়াকে জাতীয় মহাসড়ক এন৮ এর গৌরনদী থেকে কোটালীপাড়া হয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। এছাড়া কোটালীপাড়া-রাজৈর সড়ক কোটালীপাড়ার সাথে রাজৈর ও জাতীয় মহাসড়ক এন৮ এর সংযোগ স্থাপন করেছে।

কোটালীপাড়া থেকে গোপালগঞ্জ হয়ে ঢাকাগামী অধিকাংশ বাস সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, গুলিস্থান ও গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে থামে। কোটালীপাড়া জিরো পয়েন্ট থেকে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের দূরুত্ব ২০ কিলোমিটার, রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার।

২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী এ পৌরসভায় ১০ কিলোমিটার পাকারাস্তা, ১৩ কিলোমিটার আধা-পাকারাস্তা ও ১১ কিলোমিটার কাঁচারাস্তা রয়েছে।[৫] এ পৌরসভায় কোন রেললাইন বা ট্রেন যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হতে পয়সারহাট লঞ্চ টার্মিনালে নৌপথ নিয়মিত নৌযাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. খান, শামসুজ্জামান (জুন ২০১৩)। বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা : গোপালগঞ্জ। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ২৫। আইএসবিএন 984-07-5316-9 
  2. "কোটালীপাড়া পৌর নির্বাচন ২৯ মার্চ"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০১৮-০২-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০৭ 
  3. হাসানাত, এইচএম মেহেদী (২০১৯-০৯-০৫)। "দৃষ্টিনন্দন পৌরসভা উপহার দেয়াই আমার লক্ষ্য: কোটালীপাড়া পৌরসভার মেয়র"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬ 
  4. COMMUNITY REPORT: GOPALGANJ (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। জুলাই ২০১৩। আইএসবিএন 978-984-90056-7-4। ২০১৭-০৯-২৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬ 
  5. "এক নজরে কোটালীপাড়া পৌরসভা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬ 
  6. "জাতীয় সংসদের ৩০০টি নির্বাচনি এলাকার সীমানার প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ"বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-৩১ 
  7. জেলা পরিসংখান ২০১১ (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ডিসেম্বর ২০১৩। ৩ মে ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]