জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
![]() | |
নীতিবাক্য | শিক্ষা, ঈমান, শৃঙ্খলা |
---|---|
ধরন | পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিত | ২০ অক্টোবর ২০০৫ |
অধিভুক্তি | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ |
উপাচার্য | অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান[১] |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ৯৬০ |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ৮৫০ |
শিক্ষার্থী | ১৭,১৩৪ |
অবস্থান | , ২৩°৪২′৩৭″ উত্তর ৯০°২৪′৪০″ পূর্ব / ২৩.৭১০২৮° উত্তর ৯০.৪১১১১° পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৩°৪২′৩৭″ উত্তর ৯০°২৪′৪০″ পূর্ব / ২৩.৭১০২৮° উত্তর ৯০.৪১১১১° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | ঢাকা (শহুরে) |
ওয়েবসাইট | www |
![]() |

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষিপ্ত রূপ জবি) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। জগন্নাথ কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৮৫৮ সালে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশ করার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বনাম জগন্নাথ কলেজ। এই নামেই বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় জুড়ে পরিচিত ছিল। ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে এর প্রতিষ্ঠা হয়। ১৮৭২ সালে এর নাম বদলে জগন্নাথ স্কুল করা হয়। বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী তার বাবার নামে জগন্নাথ স্কুল নামকরণ করেন।[২]
১৮৮৪ সালে এটি একটি দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজে ও ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর কলেজে পরিণত হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শুরু হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গ্রন্থাগারের বই পুস্তক, জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। পুরানো ঢাকার নারী শিক্ষায় বাধা দূর করতে ১৯৪২ সালে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে ১৯৪৯ সালে আবার এ কলেজে স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় কো-এডুকেশন চালু করেন। ১৯৬৮ সালে এটিকে সরকারীকরণ করা হয়, কিন্তু পরের বছরেই আবার এটি বেসরকারী মর্যাদা লাভ করে। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে এটি পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে মোট ছয়টি অনুষদের অধীনে ৩৬ টি বিভাগের ও ২টি ইন্সিটিউটের মাধ্যমে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ২০শে অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।
অনুষদসমূহ[সম্পাদনা]
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট ছয়টি অনুষদে ৩৬ টি বিভাগ ও ০২ টি ইনস্টিটিউট রয়েছে।
প্রাণ ও ধরিত্রী বিজ্ঞান অনুষদ[সম্পাদনা]
- ফার্মেসী বিভাগ
- অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ
- প্রাণরসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ
- জিনতত্ত্ব প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
- উদ্ভিদ বিজ্ঞানবিভাগ
- ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
বিজ্ঞান অনুষদ[সম্পাদনা]
- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ
- গণিত বিভাগ
- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ
- পরিসংখ্যান বিভাগ
- মনোবিজ্ঞান বিভাগ
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ[সম্পাদনা]
- হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- অর্থসংস্থান বিভাগ
- মার্কেটিং বিভাগ
- ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ[সম্পাদনা]
- গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
- অর্থনীতি বিভাগ
- চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগ
- নৃবিজ্ঞান বিভাগ
- সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ
- সমাজকর্ম বিভাগ
- লোক প্রশাসন বিভাগ
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
কলা অনুষদ[সম্পাদনা]
- বাংলা বিভাগ
- ইংরেজি বিভাগ
- নৃবিজ্ঞান বিভাগ
- দর্শন বিভাগ
- ইতিহাস বিভাগ
- ইসলামি শিক্ষা বিভাগ
- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
- চারুকলা ও গ্রাফিক্স বিভাগ
- নাট্যকলা
- সংগীত বিভাগ
আইন অনুষদ[সম্পাদনা]
- আইন বিভাগ
- ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ
ইন্সটিটিউট[সম্পাদনা]
- আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইন্সটিটিউট (IML)
- শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (IER)
উপাচার্য[সম্পাদনা]
নং | নাম | থেকে | পর্যন্ত |
---|---|---|---|
১ | অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম খান | ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ | ২৬ জুলাই ২০০৮ |
২ | অধ্যাপক ড. আবু হোসেন সিদ্দিক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) | ২৭ জুলাই ২০০৮ | ২৫ অক্টোবর ২০০৮ |
৩ | অধ্যাপক ড. আবু হোসেন সিদ্দিক | ২৬ অক্টোবর ২০০৮ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ |
৪ | অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ |
৫ | অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান | ২০ মার্চ ২০১৩ | ১৯ মার্চ ২০২১ |
৬ | অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ (দায়িত্বপ্রাপ্ত) | ২০ মার্চ ২০২১ | --বর্তমান-- |
উল্লেখযোগ্য সংগঠন[সম্পাদনা]
- উদীচী
- বিএনসিসি
- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
- জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা
- বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
- বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব (২০১৪)
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (২০ জুন,২০০৬)
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি (২০২০)
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি (জেএনইউডিএস)
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
- বাঁধন
আবাসিক হল[সম্পাদনা]
ছাত্রদের থাকার সুবিধার্থে ডিসেম্বর, ২০১১ইং তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ১০টি হল বা ছাত্রাবাস রয়েছে; তন্মধ্যে ১টি ছাত্রীদের হল। উল্লেখ্য এই সবগুলো হলই বেদখল হয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ব থেকেই।[৩] হলগুলো হলো:
- বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল
- ড. হাবিবুর রহমান হল
- বাণী ভবন হল
- আব্দুর রহমান হল
- শহীদ আনোয়ার শফিক হল
- সাইদুর রহমান হল
- রউফ মজুমদার হল
- শহীদ আজমল হোসেন হল
- বজলুর রহমান হল
- নজরুল ইসলাম খাঁন হল
- শহীদ শাহাবুদ্দিন হল।
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও শরীরচর্চা কেন্দ্র[সম্পাদনা]
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই ধুপখোলায় অবস্থিত।[৪]
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষক[সম্পাদনা]
শিক্ষার্থী[সম্পাদনা]
- তাজউদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
- রফিকউদ্দিন আহমদ, ভাষা শহীদ
- দীনেশচন্দ্র সেন, মৈয়মনসিংহ গীতিকার লেখক
- যোগেশচন্দ্র ঘোষ, প্রখ্যাত আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বিশারদ এবং শিক্ষাবিদ
- আনিসুজ্জামান, শিক্ষাবিদ
- মানকুমার বসু ঠাকুর, ব্রিটিশবিরোধী নৌ বিদ্রোহের শহীদ
- শওকত আলী (রাজনীতিবিদ), ভাষা আন্দোলনের নেতা
- ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় অভিনয়শিল্পী
- সৈয়দ শামসুল হক, সাহিত্যিক
- এটিএম শামসুজ্জামান, অভিনেতা
- ইমদাদুল হক মিলন, লেখক , সম্পাদক
- জুয়েল আইচ, যাদুকর)
- প্রবীর মিত্র, অভিনেতা
- মীর সাব্বির, অভিনেতা
- ফকির আলমগীর (মুক্তিযোদ্ধা ও বিখ্যাত শিল্পী)
- আবদুল হালিম চৌধুরী জুয়েল (বীর বিক্রম)
- এম হামিদুল্লাহ খান (বীর প্রতীক
- মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম
- আতাউর রহমান খান (সাবেক প্রধানমন্ত্রী)
- শেখ ফজলুল হক মনি
- মোহাম্মদ নাসিম (স্বাস্থ্যমন্ত্রী)
- আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী)
- কাজী আরেফ আহমেদ (মুজিব বাহিনীর গোয়েন্দা প্রধান)
শিক্ষক[সম্পাদনা]
- ড. আবুল কালাম আজাদ, গণিত বিভাগ (শহীদ বুদ্ধিজীবী)
- মমতাজউদদীন আহমদ, বাংলা বিভাগ (নাট্য আন্দোলনের পথিকৃৎ)
- মুনীর চৌধুরী[৫]
- হাসান হাফিজুর রহমান, বাংলা বিভাগ (কবি ও সাংবাদিক)
- আলাউদ্দিন আল আজাদ, বাংলা বিভাগ (ঔপন্যাসিক)
- শওকত আলী, বাংলা বিভাগ (কথাসাহিত্যিক)
- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, বাংলা বিভাগ (কথাসাহিত্যিক)
- সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য, ইতিহাস বিভাগ (শহীদ বুদ্ধিজীবী)
- সৈয়দ আব্দুল হাদী, বাংলা বিভাগ (সঙ্গীত শিল্পী)
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Jagannath University। "JAGANNATH UNIVERSITY"।
- ↑ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ১৪০, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ দৈনিক প্রথম আলো, বিশেষ প্রতিবেদন, মুদ্রিত সংস্করণ, ২১ ডিসেম্বর, ২০১১ইং
- ↑ রাশেদ হোসাইন (২ জানুয়ারি ২০১৯)। "বেহালদশায় জবির খেলার মাঠ"। বাংলাদেশ প্রতিদিন।
- ↑ শামসুজ্জামান খান সম্পাদিত, বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা লক্ষ্মীপুর, বাংলা একাডেমি,ঢাকা,জুন ২০১৪, পৃষ্ঠা ৪৬, আইএসবিএন ৯৮৪-০৭-৫৩২৩-১