ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিহাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
২৬ নং লাইন: | ২৬ নং লাইন: | ||
খৃঃ পূঃ ৮ম শতাব্দীতে [[বৌধায়ন]] ''বৌধায়ন সুলবা সূত্রে''র সৃষ্টি করেন। এই সূত্রে সাধারণ পিথাগোরীয় সংখ্যাত্রয়ের উদাহরণ পাওয়া যায়, যেমন, (৩, ৪, ৫), (৫, ১২, ১৩), (৮, ১৫, ১৭), (৭, ২৪, ২৫), এবং (১২, ৩৫, ৩৭)।<ref name=joseph229>Joseph, 229</ref> শুধু তাই নয় বর্গক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক [[পিথাগোরাসের উপপাদ্য|পিথাগোরাসের উপপাদ্যে]]র একটি বক্তব্যও পাওয়া যায়: "বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল পূর্বের বর্গক্ষেত্রের দ্বিগুণ হবে।"<ref name=joseph229/> সুলবা সূত্রে পিথাগোরাসের উপপাদ্যের আয়তক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক বক্তব্যও পাওয়া যায়: "আয়তক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল আয়তক্ষেত্রের উল্লম্ব ও অনুভূমিক বাহু থেকে উদ্ভুত বর্গক্ষেত্রদ্বয়ের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান।"<ref name=joseph229/> বৌধায়ন [[২-এর বর্গমূল|দুই-এর বর্গমূলে]]র সূত্রও দিয়েছেন সুলবা সূত্রে।<ref name=cooke200>Cooke, 200</ref> এই সময় [[মেসোপটেমিয়া]]র প্রভাব ছিল বলে মনে করা হয়।<ref name="Boyer 1991 loc=China and India p. 207">{{Harv|Boyer|1991|loc="China and India" p. 207}}</ref> |
খৃঃ পূঃ ৮ম শতাব্দীতে [[বৌধায়ন]] ''বৌধায়ন সুলবা সূত্রে''র সৃষ্টি করেন। এই সূত্রে সাধারণ পিথাগোরীয় সংখ্যাত্রয়ের উদাহরণ পাওয়া যায়, যেমন, (৩, ৪, ৫), (৫, ১২, ১৩), (৮, ১৫, ১৭), (৭, ২৪, ২৫), এবং (১২, ৩৫, ৩৭)।<ref name=joseph229>Joseph, 229</ref> শুধু তাই নয় বর্গক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক [[পিথাগোরাসের উপপাদ্য|পিথাগোরাসের উপপাদ্যে]]র একটি বক্তব্যও পাওয়া যায়: "বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল পূর্বের বর্গক্ষেত্রের দ্বিগুণ হবে।"<ref name=joseph229/> সুলবা সূত্রে পিথাগোরাসের উপপাদ্যের আয়তক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক বক্তব্যও পাওয়া যায়: "আয়তক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল আয়তক্ষেত্রের উল্লম্ব ও অনুভূমিক বাহু থেকে উদ্ভুত বর্গক্ষেত্রদ্বয়ের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান।"<ref name=joseph229/> বৌধায়ন [[২-এর বর্গমূল|দুই-এর বর্গমূলে]]র সূত্রও দিয়েছেন সুলবা সূত্রে।<ref name=cooke200>Cooke, 200</ref> এই সময় [[মেসোপটেমিয়া]]র প্রভাব ছিল বলে মনে করা হয়।<ref name="Boyer 1991 loc=China and India p. 207">{{Harv|Boyer|1991|loc="China and India" p. 207}}</ref> |
||
প্রাচীনতম [[ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা]] সম্পর্কিত পুঁথি খৃঃ পূঃ ১৪০০-১২০০ সময়কালে ''লাগাধ'' বিরচিত ''বেদাঙ্গ জ্যোতিষ''কে মনে করা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কিত গ্রন্থ।<ref name=Cosmic>{{en}}{{ |
প্রাচীনতম [[ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা]] সম্পর্কিত পুঁথি খৃঃ পূঃ ১৪০০-১২০০ সময়কালে ''লাগাধ'' বিরচিত ''বেদাঙ্গ জ্যোতিষ''কে মনে করা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কিত গ্রন্থ।<ref name=Cosmic>{{en}}{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Subbarayappa|প্রথমাংশ=B. V.|সম্পাদক=Biswas, S. K. |editor2=Mallik, D. C. V. |editor3=C. V. Vishveshwara |শিরোনাম=Cosmic Perspectives|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=PFTGKi8fjvoC&pg=FA25|তারিখ=14 September 1989|প্রকাশক=Cambridge University Press|আইএসবিএন=978-0-521-34354-1|পাতাসমূহ=25–40|অধ্যায়=Indian astronomy: An historical perspective}}</ref> এতে বিভিন্ন সামাজিক এবং ধর্মীয় কাজের সময় নির্ধারণের জন্য জ্যোতির্বিদ্যা ব্যবহারের বর্ণনা আছে। এতে জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত গণনা, পঞ্জিকা প্রণয়ন এবং গবেযণামূলক পর্যবেক্ষণের নিয়মগুলিও বিশদে বলা আছে।<ref name= Subbaarayappa>Subbaarayappa, 25-41</ref> যদিও ''বেদাঙ্গ জ্যোতিষ'' একটি ধর্মীয় গ্রন্থ, এতে [[ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা]] সম্পর্কিত অনেক বিষয় আছে, যেমন, সময় ও কাল বিষয়ক চর্চা, চান্দ্রমাস, সৌরমাস, এমনকি অধিবর্ষের নিষ্পত্তির জন্য চান্দ্র-অধিমাস বা ''অধিকামাসে''র বর্ণনাও আছে।<ref name=Tripathi08>Tripathi, 264-267</ref> ''ঋতু'' ও ''যুগে''র উল্লেখও পাওয়া যায় এই গ্রন্থে।<ref name=Tripathi08/> ত্রিপাঠীর মতে, "সাতাশটি নক্ষত্রপুঞ্জ, গ্রহণ, সাতটি গ্রহ এবং রাশিচক্রের বারোটি রাশিও সেই যুগে ভারতীয়দের জানা ছিল।"<ref name=Tripathi08/> |
||
[[মিশর|মিশরীয়]] ''কাহুনের প্যাপিরাস'' (খৃঃ পূঃ ১৯০০) এবং ভারতে [[বৈদিক যুগ|বৈদিক যুগে]]র বিভিন্ন গ্রন্থের থেকে জানা যায় সেই প্রাচীন যুগেই পশু চিকিৎসার প্রচলন ছিল।<ref>Thrusfield, 2</ref> কেয়ার্নস ও ন্যাশ (২০০৮) বলেছেন খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীর ''সুশ্রুত সংহিতা''য় [[কুষ্ঠ]] রোগের উল্লেখ পাওয়া যায়। সুশ্রুত সংহিতা একটি [[আয়ুর্বেদ|আয়ুর্বেদিক]] গ্রন্থ। এই গ্রন্থে ১৮৪টি অধ্যায়ে ১১২০টি রোগের বর্ণনা আছে; এছাড়া ৭০০টি আয়ুর্বেদিক উদ্ভিদ, পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরস্থানের বর্ণনা, ৬৪টি খনিজ পদার্থ থেকে ও ৫৭টি প্রাণীজ পদার্থ থেকে ঔষধ বানানোর পদ্ধতি বিবরণ পাওয়া যায়।<ref name=Dwivedi&Dwivedi07>Dwivedi & Dwivedi (2007)</ref><ref name=k&n08>Kearns & Nash (2008)</ref> তবে, ''The |
[[মিশর|মিশরীয়]] ''কাহুনের প্যাপিরাস'' (খৃঃ পূঃ ১৯০০) এবং ভারতে [[বৈদিক যুগ|বৈদিক যুগে]]র বিভিন্ন গ্রন্থের থেকে জানা যায় সেই প্রাচীন যুগেই পশু চিকিৎসার প্রচলন ছিল।<ref>Thrusfield, 2</ref> কেয়ার্নস ও ন্যাশ (২০০৮) বলেছেন খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীর ''সুশ্রুত সংহিতা''য় [[কুষ্ঠ]] রোগের উল্লেখ পাওয়া যায়। সুশ্রুত সংহিতা একটি [[আয়ুর্বেদ|আয়ুর্বেদিক]] গ্রন্থ। এই গ্রন্থে ১৮৪টি অধ্যায়ে ১১২০টি রোগের বর্ণনা আছে; এছাড়া ৭০০টি আয়ুর্বেদিক উদ্ভিদ, পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরস্থানের বর্ণনা, ৬৪টি খনিজ পদার্থ থেকে ও ৫৭টি প্রাণীজ পদার্থ থেকে ঔষধ বানানোর পদ্ধতি বিবরণ পাওয়া যায়।<ref name=Dwivedi&Dwivedi07>Dwivedi & Dwivedi (2007)</ref><ref name=k&n08>Kearns & Nash (2008)</ref> তবে, ''The |
||
৩৩ নং লাইন: | ৩৩ নং লাইন: | ||
খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে সুশ্রুত ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি জানতেন।<ref name=finger66>Finger, 66</ref> ''জবামুখী শলাকা'' নামের একটি বিশেষ অস্ত্রের সাহায্যে ছানির অস্ত্রোপচার করা হত। এটি একটি বাঁকা সূঁচ, যা দিয়ে ছানিগ্রস্ত মণিকে আলগা করে দৃষ্টিসীমার বাইরে সরিয়ে দেওয়া হত।<ref name=finger66/> অস্ত্রোপচারের পর চোখকে উষ্ণ মাখনে ভিজিয়ে পটি বেঁধে দেওয়া হত।<ref name=finger66/> যদিও এই পদ্ধতি যথেষ্ট সফল ছিল, তবুও সুশ্রুত শুধুমাত্র একান্ত প্রয়োজনেই এই শল্যচিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।<ref name=finger66/> ভারত থেকেই চীনে ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি পরিচিতি পায়।<ref>Lade & Svoboda, 85</ref> |
খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে সুশ্রুত ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি জানতেন।<ref name=finger66>Finger, 66</ref> ''জবামুখী শলাকা'' নামের একটি বিশেষ অস্ত্রের সাহায্যে ছানির অস্ত্রোপচার করা হত। এটি একটি বাঁকা সূঁচ, যা দিয়ে ছানিগ্রস্ত মণিকে আলগা করে দৃষ্টিসীমার বাইরে সরিয়ে দেওয়া হত।<ref name=finger66/> অস্ত্রোপচারের পর চোখকে উষ্ণ মাখনে ভিজিয়ে পটি বেঁধে দেওয়া হত।<ref name=finger66/> যদিও এই পদ্ধতি যথেষ্ট সফল ছিল, তবুও সুশ্রুত শুধুমাত্র একান্ত প্রয়োজনেই এই শল্যচিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।<ref name=finger66/> ভারত থেকেই চীনে ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি পরিচিতি পায়।<ref>Lade & Svoboda, 85</ref> |
||
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীতে, ব্যাকরণবিদ [[পাণিনি]] [[ধ্বনিবিজ্ঞান]], [[ধ্বনিতত্ত্ব]], এবং [[রূপমূলতত্ত্ব|রূপমূলতত্ত্বে]] অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন।<ref name=Ivic>Encyclopædia Britannica (2008), ''Linguistics''.</ref> [[পাণিনি]]র রূপমূলতত্ত্বের ব্যাখ্যা বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত সমবিষয়ক পশ্চিমি তত্ত্বের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল।<ref>{{ |
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীতে, ব্যাকরণবিদ [[পাণিনি]] [[ধ্বনিবিজ্ঞান]], [[ধ্বনিতত্ত্ব]], এবং [[রূপমূলতত্ত্ব|রূপমূলতত্ত্বে]] অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন।<ref name=Ivic>Encyclopædia Britannica (2008), ''Linguistics''.</ref> [[পাণিনি]]র রূপমূলতত্ত্বের ব্যাখ্যা বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত সমবিষয়ক পশ্চিমি তত্ত্বের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল।<ref>{{বই উদ্ধৃতি | শেষাংশ১ = Staal | প্রথমাংশ১ = Frits | শিরোনাম = Universals: studies in Indian logic and linguistics | প্রকাশক = University of Chicago Press | বছর = 1988 | পাতাসমূহ = 47 }}</ref> |
||
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীর আগেই ভারতে [[ধাতু]]জাত [[মুদ্রা]]র প্রচলন ছিল।<ref name=Dhavalikar>Dhavalikar, 330-338</ref><ref name=sellwood2008>Sellwood (2008)</ref> খৃঃ পূঃ ৪০০ অব্দ থেকে ১০০ খৃষ্টাব্দ সময়কালের মূলতঃ [[রূপা]] বা [[তামা]]র মুদ্রা তৈরী হত, যাতে নানা রকম পশু ও উদ্ভিদের চিহ্ণ থাকত।<ref name=EBAllan&Stern>Allan & Stern (2008)</ref> |
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীর আগেই ভারতে [[ধাতু]]জাত [[মুদ্রা]]র প্রচলন ছিল।<ref name=Dhavalikar>Dhavalikar, 330-338</ref><ref name=sellwood2008>Sellwood (2008)</ref> খৃঃ পূঃ ৪০০ অব্দ থেকে ১০০ খৃষ্টাব্দ সময়কালের মূলতঃ [[রূপা]] বা [[তামা]]র মুদ্রা তৈরী হত, যাতে নানা রকম পশু ও উদ্ভিদের চিহ্ণ থাকত।<ref name=EBAllan&Stern>Allan & Stern (2008)</ref> |
||
[[রাজস্থান|রাজস্থানে]] [[উদয়পুর|উদয়পুরে]]র কাছে জাওয়ার [[দস্তা]] খনি খৃঃ পূঃ ৪০০ সালেও ব্যবহার হত।<ref name=Craddock>Craddock (1983)</ref><ref>Arun Kumar Biswas, The primacy of India in ancient brass and zinc metallurgy, Indian J History of Science, 28(4) (1993) page 309-330 and Brass and zinc metallurgy in the ancient and medieval world: India’s primacy and the technology transfer to the west, Indian J History of Science, 41(2) (2006) 159-174</ref> বিভিন্ন ধরনের হাতলযুক্ত বিভিন্ন রকমের তরবারি পাওয়া গেছে বর্তমান [[উত্তর প্রদেশ|উত্তর প্রদেশে]]র ফতেগড়ে।<ref>F.R. Allchin, 111-112</ref> এই তরবারিগুলি খৃঃ পূঃ ১৭০০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে তৈরী করা হয়েছে বলে মনে করা হয়, তবে সম্ভবতঃ তরোয়ালের বহুল ব্যবহার শুরু হয় খৃঃ পূঃ প্রথম সহস্রাব্দে।<ref name=Allchin114>Allchin, 114</ref> বর্তমান [[উত্তর প্রদেশ|উত্তর প্রদেশে]]র মলহার, ডাদোপুর, রাজা নালা কা টিলা ও লাহুরাদেওয়া প্রত্নস্থলগুলিতে লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে খৃঃ পূঃ ১৮০০ ও খৃঃ পূঃ ১২০০ সময়কালের।<ref name=Tewari>Tewari (2003)</ref> রেডিও কার্বন ডেটিং পদ্ধতির সাহায্যে ভারতে পাওয়া লৌহ সামগ্রীর বয়স নির্ধারণ করা যায় খৃঃ পূঃ ১৪০০ সময়কালের।<ref name=Ceccarelli>Ceccarelli, 218</ref> কিছু বিশেষজ্ঞের মতে খৃঃ পূঃ ১৩শ শতাব্দীতেই ভারতে লৌহ বিগলনের পদ্ধতি বহুল পরিচিত ছিল, সুতরাং এটা মনে করা যেতেই পারে লৌহ বিগলন পদ্ধতির উন্মেষ আরও অনেক আগেই হয়েছে।<ref name=Tewari/> [[দক্ষিণ ভারত| |
[[রাজস্থান|রাজস্থানে]] [[উদয়পুর|উদয়পুরে]]র কাছে জাওয়ার [[দস্তা]] খনি খৃঃ পূঃ ৪০০ সালেও ব্যবহার হত।<ref name=Craddock>Craddock (1983)</ref><ref>Arun Kumar Biswas, The primacy of India in ancient brass and zinc metallurgy, Indian J History of Science, 28(4) (1993) page 309-330 and Brass and zinc metallurgy in the ancient and medieval world: India’s primacy and the technology transfer to the west, Indian J History of Science, 41(2) (2006) 159-174</ref> বিভিন্ন ধরনের হাতলযুক্ত বিভিন্ন রকমের তরবারি পাওয়া গেছে বর্তমান [[উত্তর প্রদেশ|উত্তর প্রদেশে]]র ফতেগড়ে।<ref>F.R. Allchin, 111-112</ref> এই তরবারিগুলি খৃঃ পূঃ ১৭০০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে তৈরী করা হয়েছে বলে মনে করা হয়, তবে সম্ভবতঃ তরোয়ালের বহুল ব্যবহার শুরু হয় খৃঃ পূঃ প্রথম সহস্রাব্দে।<ref name=Allchin114>Allchin, 114</ref> বর্তমান [[উত্তর প্রদেশ|উত্তর প্রদেশে]]র মলহার, ডাদোপুর, রাজা নালা কা টিলা ও লাহুরাদেওয়া প্রত্নস্থলগুলিতে লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে খৃঃ পূঃ ১৮০০ ও খৃঃ পূঃ ১২০০ সময়কালের।<ref name=Tewari>Tewari (2003)</ref> রেডিও কার্বন ডেটিং পদ্ধতির সাহায্যে ভারতে পাওয়া লৌহ সামগ্রীর বয়স নির্ধারণ করা যায় খৃঃ পূঃ ১৪০০ সময়কালের।<ref name=Ceccarelli>Ceccarelli, 218</ref> কিছু বিশেষজ্ঞের মতে খৃঃ পূঃ ১৩শ শতাব্দীতেই ভারতে লৌহ বিগলনের পদ্ধতি বহুল পরিচিত ছিল, সুতরাং এটা মনে করা যেতেই পারে লৌহ বিগলন পদ্ধতির উন্মেষ আরও অনেক আগেই হয়েছে।<ref name=Tewari/> [[দক্ষিণ ভারত|দাক্ষিণাত্যে]] (আজকের [[মহীশূর]]) খৃঃ পূঃ ১১শ থেকে ১২শ শতাব্দীতেই লোহার ব্যবহার শুরু হয়।<ref name=UCP/> এত প্রাচীন লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ায় এটা বোঝা যাচ্ছে যে দাক্ষিণাত্যে লোহার ব্যবহার দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের থেকে স্বাধীন ভাবেই হয়েছে। কারণ ঐ সময় দাক্ষিণাত্যের সাথে সিন্ধু সভ্যতার সম্ভবতঃ কোনো যোগাযোগ ছিল না।<ref name=UCP>Drakonoff, 372</ref> |
||
==মহা জনপদের পরবর্তীকাল—পূর্ণ মধ্য যুগ== |
==মহা জনপদের পরবর্তীকাল—পূর্ণ মধ্য যুগ== |
||
৫০ নং লাইন: | ৫০ নং লাইন: | ||
খৃষ্টীয় ২য় শতাব্দীতেই ভারতে [[ধুনুরি]] জাতীয় যন্ত্রের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।<ref name=Baber57>Baber, 57</ref> [[হীরক|হীরা]]র খনি ও রত্ন হিসাবে হীরার ব্যবহার ভারত থেকেই শুরু হয়।<ref name=Wenk1>Wenk, 535-539</ref> প্রাচীন ভারতে গোলকুন্ডায় একটি গুরুত্বপূর্ণ হীরার খনি ছিল।<ref name=Wenk1/> এখানের হীরা সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হত।<ref name=Wenk1/> বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষার প্রাচীন গ্রন্থে হীরার উল্লেখ পাওয়া গেছে।<ref name=Encarta11>{{en}}MSN Encarta (2007), [http://encarta.msn.com/encyclopedia_761557986/Diamond.html ''Diamond'']. [https://www.webcitation.org/5kwqi0eX3 Archived] 2009-10-31.</ref> ভারতে হীরক ব্যবসার উল্লেখ পাওয়া যায় ''[[অর্থশাস্ত্র (গ্রন্থ)|অর্থশাস্ত্রে]]''।<ref name=lee1>Lee, 685</ref> গুপ্ত সম্রাট [[দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত]] বা বিক্রমাদিত্যের সময়কালে (৩৭৫-৪১৩), স্থাপিত [[দিল্লির লৌহস্তম্ভ|দিল্লির লৌহস্তম্ভে]] আজ প্রায় ২০০০ বছর পরেও কোনো মরচে ধরেনি।<ref>Balasubramaniam, R., 2002</ref> খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর ''রসরত্নসমুচ্চয়'' গ্রন্থে দস্তার দুটি আকরিকের কথা বলা আছে। একটি থেকে দস্তা ধাতু নিষ্কাশন সম্ভব, অন্যটি শুধুমাত্র ঔষধি প্রস্তুতে ব্যবহার করা যায়।<ref name=Craddock2>Craddock, 13</ref>[[File:Ship compartments.jpg|thumb|left|পূমবাহুর সৈকত থেকে ১৯ মাইল দূরে সমুদ্রের মধ্যে পাওয়া [[চোল সাম্রাজ্য|চোল সাম্রাজ্যে]]র সময়কালের (২০০-৮৪৮) জাহাজের ধংসাবশেষের ভিত্তিতে [[ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ|ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে]]র বানানো কাঠামো। এটি থিরুনেভেলির সংগ্রহালয়ে সংরক্ষিত আছে।]] |
খৃষ্টীয় ২য় শতাব্দীতেই ভারতে [[ধুনুরি]] জাতীয় যন্ত্রের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।<ref name=Baber57>Baber, 57</ref> [[হীরক|হীরা]]র খনি ও রত্ন হিসাবে হীরার ব্যবহার ভারত থেকেই শুরু হয়।<ref name=Wenk1>Wenk, 535-539</ref> প্রাচীন ভারতে গোলকুন্ডায় একটি গুরুত্বপূর্ণ হীরার খনি ছিল।<ref name=Wenk1/> এখানের হীরা সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হত।<ref name=Wenk1/> বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষার প্রাচীন গ্রন্থে হীরার উল্লেখ পাওয়া গেছে।<ref name=Encarta11>{{en}}MSN Encarta (2007), [http://encarta.msn.com/encyclopedia_761557986/Diamond.html ''Diamond'']. [https://www.webcitation.org/5kwqi0eX3 Archived] 2009-10-31.</ref> ভারতে হীরক ব্যবসার উল্লেখ পাওয়া যায় ''[[অর্থশাস্ত্র (গ্রন্থ)|অর্থশাস্ত্রে]]''।<ref name=lee1>Lee, 685</ref> গুপ্ত সম্রাট [[দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত]] বা বিক্রমাদিত্যের সময়কালে (৩৭৫-৪১৩), স্থাপিত [[দিল্লির লৌহস্তম্ভ|দিল্লির লৌহস্তম্ভে]] আজ প্রায় ২০০০ বছর পরেও কোনো মরচে ধরেনি।<ref>Balasubramaniam, R., 2002</ref> খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর ''রসরত্নসমুচ্চয়'' গ্রন্থে দস্তার দুটি আকরিকের কথা বলা আছে। একটি থেকে দস্তা ধাতু নিষ্কাশন সম্ভব, অন্যটি শুধুমাত্র ঔষধি প্রস্তুতে ব্যবহার করা যায়।<ref name=Craddock2>Craddock, 13</ref>[[File:Ship compartments.jpg|thumb|left|পূমবাহুর সৈকত থেকে ১৯ মাইল দূরে সমুদ্রের মধ্যে পাওয়া [[চোল সাম্রাজ্য|চোল সাম্রাজ্যে]]র সময়কালের (২০০-৮৪৮) জাহাজের ধংসাবশেষের ভিত্তিতে [[ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ|ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে]]র বানানো কাঠামো। এটি থিরুনেভেলির সংগ্রহালয়ে সংরক্ষিত আছে।]] |
||
চরকার উৎপত্তি নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে, তবে ভারতকে একটি সম্ভাব্য উৎস হিসাবে মনে করা হয়।<ref>Britannica Concise Encyclopedia (2007), ''spinning wheel''.</ref><ref>Encyclopeedia Britnnica (2008). ''spinning''.</ref> খৃষ্টীয় ১৪শ শতাব্দীতে এটি ভারত থেকেই ইউরোপে গিয়েছিল।<ref>MSN Encarta (2008), [http://encarta.msn.com ''Spinning'']. [https://www.webcitation.org/query?id=1256962101378386 Archived] 2009-10-31.</ref>যান্ত্রিক উপায়ে তুলা বীজ থেকে তুলা ছাড়ানোর উপায় ভারতেই উদ্ভাবিত হয়, - কাঠের তৈরি এই যন্ত্রের নাম ছিল ''চরখি''।<ref name="Baber57">Baber, 57</ref> বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই যন্ত্র হস্তচালিত হলেও কোনো কোনো এলাকায় জলশক্তিতেও এই যন্ত্র চালানো হত।<ref name="Baber57"/> [[অজন্তা গুহাসমূহ|অজন্তা গুহাচিত্র]] থেকে প্রমাণিত হয় খৃষ্টীয় ৫ম শতাব্দীতেও ভারতে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হত।<ref name=Babergin>Baber, 56</ref> পরবর্তী পর্যায়ে পদচালিত তুলা ছাড়ানোর যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়।<ref name=Babergin/> বিভিন্ন প্রাচীন চীনা নথি থেকে জানা যায়, ৬৪৭ সাল থেকে শুরু করে, ভারতে কমপক্ষে দুটি অভিযান হয়েছিল চিনি পরিশোধনের প্রযুক্তি আহরণের জন্য।<ref name=Kieschnick11>Kieschnick, 258</ref> কিন্তু, প্রতিটি অভিযানই চিনি পরিশোধনের বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য নিয়ে ফেরে।<ref name=Kieschnick11/> |
চরকার উৎপত্তি নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে, তবে ভারতকে একটি সম্ভাব্য উৎস হিসাবে মনে করা হয়।<ref>Britannica Concise Encyclopedia (2007), ''spinning wheel''.</ref><ref>Encyclopeedia Britnnica (2008). ''spinning''.</ref> খৃষ্টীয় ১৪শ শতাব্দীতে এটি ভারত থেকেই ইউরোপে গিয়েছিল।<ref>MSN Encarta (2008), [http://encarta.msn.com ''Spinning'']. [https://www.webcitation.org/query?id=1256962101378386 Archived] 2009-10-31.</ref> যান্ত্রিক উপায়ে তুলা বীজ থেকে তুলা ছাড়ানোর উপায় ভারতেই উদ্ভাবিত হয়, - কাঠের তৈরি এই যন্ত্রের নাম ছিল ''চরখি''।<ref name="Baber57">Baber, 57</ref> বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই যন্ত্র হস্তচালিত হলেও কোনো কোনো এলাকায় জলশক্তিতেও এই যন্ত্র চালানো হত।<ref name="Baber57"/> [[অজন্তা গুহাসমূহ|অজন্তা গুহাচিত্র]] থেকে প্রমাণিত হয় খৃষ্টীয় ৫ম শতাব্দীতেও ভারতে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হত।<ref name=Babergin>Baber, 56</ref> পরবর্তী পর্যায়ে পদচালিত তুলা ছাড়ানোর যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়।<ref name=Babergin/> বিভিন্ন প্রাচীন চীনা নথি থেকে জানা যায়, ৬৪৭ সাল থেকে শুরু করে, ভারতে কমপক্ষে দুটি অভিযান হয়েছিল চিনি পরিশোধনের প্রযুক্তি আহরণের জন্য।<ref name=Kieschnick11>Kieschnick, 258</ref> কিন্তু, প্রতিটি অভিযানই চিনি পরিশোধনের বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য নিয়ে ফেরে।<ref name=Kieschnick11/> |
||
সঙ্গীত বিশারদ পিঙ্গল (খৃঃ পূঃ ৩০০-২০০) [[সংস্কৃত ভাষা]]য় ছন্দশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে প্রমাণ পাওয়া যায়, বিভিন্ন মাত্রার সমন্বয়ের গণনা করতে গিয়ে, পিঙ্গল [[প্যাস্কেলের ত্রিভূজ]] ও দ্বিপদ গুণাঙ্ক (Binomial coefficient) আবিষ্কার করেছিলেন। যদিও তিনি দ্বিপদ তত্ত্ব (Binomial theorem) জানতেন না।<ref name=fowler96>Fowler, 11</ref><ref name=singh36>Singh, 623-624</ref> পিঙ্গলের লেখায় [[বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি]]র ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়।<ref>Sanchez & Canton, 37</ref> গুণের চিহ্নের ব্যবহার পদ্ধতি ভারতীয়দের সৃষ্টি। ঋণাত্বক সংখ্যা ও বিয়োজ্য সংখ্যা খৃঃ পূঃ ২য় শতাব্দী থেকেই পূর্ব এশিয়ায় ব্যবহৃত হত, আর খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দী থেকে ভারতীয় গাণিতিকেরা ঋণাত্বক সংখ্যা জানতেন,<ref name=Smith>Smith (1958), page 258</ref> এবং ঋণের গণনার ক্ষেত্রে এই সংখ্যার ব্যবহারও বুঝতেন।<ref name=bourbaki49>Bourbaki (1998), page 49</ref> যদিও ভারতীয়রা বিয়োজ্য সংখ্যার ব্যবহার প্রথম শুরু করেননি, তবে তাঁরা ধণাত্বক ও ঋণাত্বক সংখ্যার গুণের ক্ষেত্রে "চিহ্নের ব্যবহারে"র নিয়মাবলী প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যাপারটা পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন লেখায় ১২৯৯ সালের আগে দেখা যায় না।<ref name=Smith2>Smith (1958), page 257-258</ref> ঋণাত্মক সংখ্যা সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সঠিক যে নিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা আরবীয়দের মাধ্যমে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।<ref name=bourbaki49/> |
সঙ্গীত বিশারদ পিঙ্গল (খৃঃ পূঃ ৩০০-২০০) [[সংস্কৃত ভাষা]]য় ছন্দশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে প্রমাণ পাওয়া যায়, বিভিন্ন মাত্রার সমন্বয়ের গণনা করতে গিয়ে, পিঙ্গল [[প্যাস্কেলের ত্রিভূজ]] ও দ্বিপদ গুণাঙ্ক (Binomial coefficient) আবিষ্কার করেছিলেন। যদিও তিনি দ্বিপদ তত্ত্ব (Binomial theorem) জানতেন না।<ref name=fowler96>Fowler, 11</ref><ref name=singh36>Singh, 623-624</ref> পিঙ্গলের লেখায় [[বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি]]র ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়।<ref>Sanchez & Canton, 37</ref> গুণের চিহ্নের ব্যবহার পদ্ধতি ভারতীয়দের সৃষ্টি। ঋণাত্বক সংখ্যা ও বিয়োজ্য সংখ্যা খৃঃ পূঃ ২য় শতাব্দী থেকেই পূর্ব এশিয়ায় ব্যবহৃত হত, আর খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দী থেকে ভারতীয় গাণিতিকেরা ঋণাত্বক সংখ্যা জানতেন,<ref name=Smith>Smith (1958), page 258</ref> এবং ঋণের গণনার ক্ষেত্রে এই সংখ্যার ব্যবহারও বুঝতেন।<ref name=bourbaki49>Bourbaki (1998), page 49</ref> যদিও ভারতীয়রা বিয়োজ্য সংখ্যার ব্যবহার প্রথম শুরু করেননি, তবে তাঁরা ধণাত্বক ও ঋণাত্বক সংখ্যার গুণের ক্ষেত্রে "চিহ্নের ব্যবহারে"র নিয়মাবলী প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যাপারটা পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন লেখায় ১২৯৯ সালের আগে দেখা যায় না।<ref name=Smith2>Smith (1958), page 257-258</ref> ঋণাত্মক সংখ্যা সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সঠিক যে নিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা আরবীয়দের মাধ্যমে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।<ref name=bourbaki49/> |
||
অন্ততঃ খৃঃ পূঃ ৩০০০ অব্দ থেকেই [[ |
অন্ততঃ খৃঃ পূঃ ৩০০০ অব্দ থেকেই [[মিশরীয় চিত্রলিপি]]তে [[দশমিক পদ্ধতি]]র ব্যবহার ছিল,<ref>Georges Ifrah: ''From One to Zero. A Universal History of Numbers'', Penguin Books, 1988, {{ISBN|0-14-009919-0}}, pp. 200-213 (Egyptian Numerals)</ref> পরবর্তী পর্যায়ে আধুনিক সংখ্যা ব্যবস্থা তৈরীর সময় প্রাচীন ভারতে দশমিক পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়।<ref name=irfah346>Ifrah, 346</ref> খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দীর মধ্যে, হিন্দু-আরবী সংখ্যা পদ্ধতি ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।<ref name="Wigelsworth">{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Jeffrey Wigelsworth|শিরোনাম=Science And Technology in Medieval European Life|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=VPDqnGGHpHYC&pg=PA18|তারিখ=1 January 2006|প্রকাশক=Greenwood Publishing Group|আইএসবিএন=978-0-313-33754-3|পাতা=18}}</ref> শুধুমাত্র পৃথক করার চিহ্ন হিসাবে নয়, বরং সংখ্যা হিসাবে [[০ (সংখ্যা)|০]]-এর ধারণার উদ্ভব ভারতে হয়েছিল বলে মনে করা হয়।<ref name=bourbaki46>Bourbaki, 46</ref> খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দী থেকেই ভারতে অন্যান্য সংখ্যার মতই ব্যবহারিক গণিতে, এমনকি বিভাজনেও, শূন্যের প্রচলন ছিল। <ref name=bourbaki46/><ref name=ebcal>Britannica Concise Encyclopedia (2007). ''algebra''</ref> [[ব্রহ্মগুপ্ত]] (৫৯৮–৬৬৮) [[পেল সমীকরণ|পেল সমীকরণে]]র সমাধান করেছিলেন।<ref name=sw101>Stillwell, 72-73</ref> [[দ্বিতীয় ভাস্কর]] ১১৫০ সালে চিরস্থায়ী গতিশীল যন্ত্রের খসড়া বানিয়েছিলেন। তিনি একটি চিরস্থায়ী ঘুর্ণনশীল চাকার বর্ণনা করেছিলেন।<ref>Lynn Townsend White, Jr.</ref> |
||
খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর শেষ ভাগে [[আর্যভট্ট]] [[ত্রিকোণমিতি]]র [[সাইন]] ও ভেরসাইনের ব্যবহার জানতেন। এর সাহায্যে সহজেই যে কোসাইন নির্ণয় করা যায় সেটাও তিনি জানতেন।<ref>O'Connor, J. J. & Robertson, E.F. (1996)</ref><ref>"Geometry, and its branch trigonometry, was the mathematics Indian astronomers used most frequently. In fact, the Indian astronomers in the third or fourth century, using a pre-Ptolemaic Greek table of chords, produced tables of sines and versines, from which it was trivial to derive cosines. This new system of trigonometry, produced in India, was transmitted to the Arabs in the late eighth century and by them, in an expanded form, to the Latin West and the Byzantine East in the twelfth century" - Pingree (2003) ["ভারতীয় জ্যোতির্বিদেরা জ্যামিতি ও তার শাখা ত্রিকোণমিতির নিয়মিত ব্যবহার করতেন। ভারতীয় জ্যোতির্বিদরা খৃষ্টীয় তৃতীয় অথবা চতুর্থ শতাব্দীতেই [[টলেমি]]র পূর্ববর্তী সময়ের বৃত্তের [[জ্যা]]য়ের গ্রীক সারণীর ভিত্তিতে সাইন ও ভেরসাইনের সারণী নির্মাণ করেন। ভারতীয় এই নতুন ত্রিকোণমিতির পদ্ধতি আরবদের কাছে যায় খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর শেষের দিকে, তারপর তারা এর পরিবর্ধিত সংস্করণ ছাড়ে ইউরোপীয় ও বাইজ্যান্টাইন সভ্যতার কাছে দ্বাদশ শতাব্দীর সময়কালে।" - পিংগ্রী (২০০৩)।]</ref> আজকের "রোলের উপপাদ্য" নামের [[কলনবিদ্যা]]র উপপাদ্যটি খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতেই ভারতীয় গণিতজ্ঞ [[দ্বিতীয় ভাস্কর]] বর্ণনা করেছিলেন।<ref>Broadbent, 307–308</ref> |
খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর শেষ ভাগে [[আর্যভট্ট]] [[ত্রিকোণমিতি]]র [[সাইন]] ও ভেরসাইনের ব্যবহার জানতেন। এর সাহায্যে সহজেই যে কোসাইন নির্ণয় করা যায় সেটাও তিনি জানতেন।<ref>O'Connor, J. J. & Robertson, E.F. (1996)</ref><ref>"Geometry, and its branch trigonometry, was the mathematics Indian astronomers used most frequently. In fact, the Indian astronomers in the third or fourth century, using a pre-Ptolemaic Greek table of chords, produced tables of sines and versines, from which it was trivial to derive cosines. This new system of trigonometry, produced in India, was transmitted to the Arabs in the late eighth century and by them, in an expanded form, to the Latin West and the Byzantine East in the twelfth century" - Pingree (2003) ["ভারতীয় জ্যোতির্বিদেরা জ্যামিতি ও তার শাখা ত্রিকোণমিতির নিয়মিত ব্যবহার করতেন। ভারতীয় জ্যোতির্বিদরা খৃষ্টীয় তৃতীয় অথবা চতুর্থ শতাব্দীতেই [[টলেমি]]র পূর্ববর্তী সময়ের বৃত্তের [[জ্যা]]য়ের গ্রীক সারণীর ভিত্তিতে সাইন ও ভেরসাইনের সারণী নির্মাণ করেন। ভারতীয় এই নতুন ত্রিকোণমিতির পদ্ধতি আরবদের কাছে যায় খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর শেষের দিকে, তারপর তারা এর পরিবর্ধিত সংস্করণ ছাড়ে ইউরোপীয় ও বাইজ্যান্টাইন সভ্যতার কাছে দ্বাদশ শতাব্দীর সময়কালে।" - পিংগ্রী (২০০৩)।]</ref> আজকের "রোলের উপপাদ্য" নামের [[কলনবিদ্যা]]র উপপাদ্যটি খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতেই ভারতীয় গণিতজ্ঞ [[দ্বিতীয় ভাস্কর]] বর্ণনা করেছিলেন।<ref>Broadbent, 307–308</ref> |
||
[[File:The Defeat of Baz Bahadur of Malwa by the Mughal Troops, 1561, Akbarnama.jpg|thumb|সপ্তদশ শতাব্দীতে লেখা আকবরনামা গ্রন্থের চিত্র—[[মুঘল সাম্রাজ্য|মোগল]] সেনার সাথে ১৫৬১ সালের যুদ্ধে মালওয়ার বাজ বাহাদুরের পরাজয়ের চিত্র। মোগলরা ভারতে সেনাবাহিনীর ব্যবহার্জ্য ধাতব অস্ত্র ও বর্মের ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছিল।]] |
[[File:The Defeat of Baz Bahadur of Malwa by the Mughal Troops, 1561, Akbarnama.jpg|thumb|সপ্তদশ শতাব্দীতে লেখা আকবরনামা গ্রন্থের চিত্র—[[মুঘল সাম্রাজ্য|মোগল]] সেনার সাথে ১৫৬১ সালের যুদ্ধে মালওয়ার বাজ বাহাদুরের পরাজয়ের চিত্র। মোগলরা ভারতে সেনাবাহিনীর ব্যবহার্জ্য ধাতব অস্ত্র ও বর্মের ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছিল।]] |
||
রঞ্জক হিসাবে নীলের (''ইন্ডিগোফেরা টিঙ্কটোরিয়া'' বা [[ইংরাজি ভাষা|ইংরাজি]]: ''Indigofera tinctoria'') বহুল ব্যবহার ভারতে প্রচলিত ছিল।<ref name=k&c>Kriger & Connah, 120</ref> [[রেশম পথ]] ধরে রঞ্জক হিসাবে নীল [[প্রাচীন গ্রিস|গ্রীক]] ও [[প্রাচীন রোম|রোমান]]দের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল এক মহার্ঘ্য ভোগ্য বস্তু হিসাবে।<ref name=k&c/> কাশ্মীরে [[পশমিনা]] [[শাল (বস্ত্র)|শাল]] হাতে তৈরী করা হত।<ref>Encyclopædia Britannica (2008), ''cashmere''.</ref> [[কাশ্মীর]] অঞ্চলের পশমের শালের উল্লেখ বিভিন্ন লেখায় খৃঃ পূঃ ৩য় শতাব্দী থেকে খৃষ্টীয় ১১শ শতকের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।<ref name=ebpasm>Encyclopædia Britannica (2008), ''Kashmir shawl''.</ref> [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত যুগে]] চিনির ব্যবহার শুরু হয়,<ref name=Adas>Shaffer, 311</ref> এবং প্রাচীনতম [[মিছরি]]র ব্যবহারের উল্লেখ ভারতেই পাওয়া যায়।<ref name=Kieschnick1>Kieschnick (2003)</ref> [[পাট]] চাষ ভারতেই হত।<ref name=ebjute>Encyclopædia Britannica (2008), ''jute''.</ref> [[ইরাক|ইরাকে]]র [[মসুল]] শহরে প্রথমবার এই কাপড় ইউরোপীয়রা দেখতে পেয়েছিল বলে নাম হয়েছিল [[মসলিন]], কিন্তু এই কাপড় তৈরী হত বর্তমান [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশে]]র [[ঢাকা]]য়।<ref>{{ |
রঞ্জক হিসাবে নীলের (''ইন্ডিগোফেরা টিঙ্কটোরিয়া'' বা [[ইংরাজি ভাষা|ইংরাজি]]: ''Indigofera tinctoria'') বহুল ব্যবহার ভারতে প্রচলিত ছিল।<ref name=k&c>Kriger & Connah, 120</ref> [[রেশম পথ]] ধরে রঞ্জক হিসাবে নীল [[প্রাচীন গ্রিস|গ্রীক]] ও [[প্রাচীন রোম|রোমান]]দের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল এক মহার্ঘ্য ভোগ্য বস্তু হিসাবে।<ref name=k&c/> কাশ্মীরে [[পশমিনা]] [[শাল (বস্ত্র)|শাল]] হাতে তৈরী করা হত।<ref>Encyclopædia Britannica (2008), ''cashmere''.</ref> [[কাশ্মীর]] অঞ্চলের পশমের শালের উল্লেখ বিভিন্ন লেখায় খৃঃ পূঃ ৩য় শতাব্দী থেকে খৃষ্টীয় ১১শ শতকের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।<ref name=ebpasm>Encyclopædia Britannica (2008), ''Kashmir shawl''.</ref> [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত যুগে]] চিনির ব্যবহার শুরু হয়,<ref name=Adas>Shaffer, 311</ref> এবং প্রাচীনতম [[মিছরি]]র ব্যবহারের উল্লেখ ভারতেই পাওয়া যায়।<ref name=Kieschnick1>Kieschnick (2003)</ref> [[পাট]] চাষ ভারতেই হত।<ref name=ebjute>Encyclopædia Britannica (2008), ''jute''.</ref> [[ইরাক|ইরাকে]]র [[মসুল]] শহরে প্রথমবার এই কাপড় ইউরোপীয়রা দেখতে পেয়েছিল বলে নাম হয়েছিল [[মসলিন]], কিন্তু এই কাপড় তৈরী হত বর্তমান [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশে]]র [[ঢাকা]]য়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Karim |প্রথমাংশ=Abdul |বছর=2012 |অধ্যায়=Muslin |অধ্যায়ের-ইউআরএল=http://en.banglapedia.org/index.php?title=Muslin |সম্পাদক১-শেষাংশ=Islam |সম্পাদক১-প্রথমাংশ=Sirajul |সম্পাদক২-শেষাংশ=Jamal |সম্পাদক২-প্রথমাংশ=Ahmed A. |শিরোনাম=Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh |সংস্করণ=Second |প্রকাশক=[[Asiatic Society of Bangladesh]]}}</ref><ref name=Muslin>Ahmad, 5–26</ref> খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দীতে, সুলেমান নামক [[ইসলামী অর্থনীতির ইতিহাস|আরব ব্যবসায়ী]] লিখেছেন এই কাপড়ের উৎস হল [[বঙ্গ]] ([[আরবি ভাষা]]য় ''রুহমল'')।<ref name=Muslin/> |
||
ইউরোপীয় পন্ডিত ফ্রান্সেস্কো লোরেঞ্জো পুলি একাধিক ভারতীয় মানচিত্র নকল করেছিলেন তাঁর ''লা কার্টোগ্রাফিয়া অ্যাণ্টিকা ডেল ইন্ডিয়া'' নামে মহাগ্রন্থে।<ref name=Sircar2>Sircar 328</ref> এই মানচিত্রগুলির মধ্যে, দুটি নকল করা হয়েছিলএকাদশ শতাব্দীর [[কাশ্মীর|কাশ্মীরী]] পণ্ডিত ক্ষেমেন্দ্র রচিত গ্রন্থ ''লোকপ্রকাশ'' থেকে নেওয়া হয়েছিল।<ref name=Sircar2/> এছাড়া, ''সমগ্র'' গ্রন্থ থেকেও অনেক মানচিত্র নকল করা হয়েছিল পুলির গ্রন্থে।<ref name=Sircar2/> |
ইউরোপীয় পন্ডিত ফ্রান্সেস্কো লোরেঞ্জো পুলি একাধিক ভারতীয় মানচিত্র নকল করেছিলেন তাঁর ''লা কার্টোগ্রাফিয়া অ্যাণ্টিকা ডেল ইন্ডিয়া'' নামে মহাগ্রন্থে।<ref name=Sircar2>Sircar 328</ref> এই মানচিত্রগুলির মধ্যে, দুটি নকল করা হয়েছিলএকাদশ শতাব্দীর [[কাশ্মীর|কাশ্মীরী]] পণ্ডিত ক্ষেমেন্দ্র রচিত গ্রন্থ ''লোকপ্রকাশ'' থেকে নেওয়া হয়েছিল।<ref name=Sircar2/> এছাড়া, ''সমগ্র'' গ্রন্থ থেকেও অনেক মানচিত্র নকল করা হয়েছিল পুলির গ্রন্থে।<ref name=Sircar2/> |
||
১১শ শতাব্দীর রাজা ভোজের লেখা ''সমরাঙ্গণ সূত্রধারা'' নামক [[সংস্কৃত ভাষা]]র গ্রন্থে একটি অধ্যায়ে যান্ত্রিক মৌমাছি ও পাখি, মানবাকৃতির ও পশু আকৃতির ঝরণা এবং যান্ত্রিক নারী-পুরুষ পুতুল (যে গুলি তৈলপ্রদীপে তেল ভরা থেকে শুরু করে নৃত্য পরিবেশন, বাদ্যযন্ত্র বাদন, এমনকি বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক দৃশ্যের অভিনয় করতে সক্ষম ছিল) প্রভৃতি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বানাবার কথা বলা আছে। <ref>{{ |
১১শ শতাব্দীর রাজা ভোজের লেখা ''সমরাঙ্গণ সূত্রধারা'' নামক [[সংস্কৃত ভাষা]]র গ্রন্থে একটি অধ্যায়ে যান্ত্রিক মৌমাছি ও পাখি, মানবাকৃতির ও পশু আকৃতির ঝরণা এবং যান্ত্রিক নারী-পুরুষ পুতুল (যে গুলি তৈলপ্রদীপে তেল ভরা থেকে শুরু করে নৃত্য পরিবেশন, বাদ্যযন্ত্র বাদন, এমনকি বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক দৃশ্যের অভিনয় করতে সক্ষম ছিল) প্রভৃতি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বানাবার কথা বলা আছে। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Varadpande|প্রথমাংশ=Manohar Laxman|বছর=1987|শিরোনাম=History of Indian Theatre, Volume 1|পাতা=68|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=SyxOHOCVcVkC&pg=PA68}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ= Wujastyk|প্রথমাংশ=Dominik|বছর=2003|শিরোনাম=The Roots of Ayurveda: Selections from Sanskrit Medical Writings|পাতা=222|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=TaZCwjtmzZYC&pg=PA222&dq=automata#v=onepage&q=automata&f=false}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Needham|প্রথমাংশ=Joseph|বছর=1965|শিরোনাম=Science and Civilisation in China: Volume 4, Physics and Physical Technology Part 2, Mechanical Engineering|পাতা=164|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=SeGyrCfYs2AC&pg=PA164&dq=bhoja+automata}}</ref> |
||
==মধ্য যুগের শেষভাগ== |
==মধ্য যুগের শেষভাগ== |
||
[[File:Jantar Mantar, Delhi, 1826.jpg|thumb|left|[[দিল্লী]]র '''যন্তর মন্তর'''—[[জয়পুর|জয়পুরে]]র রাজা দ্বিতীয় জয় সিংহ ১৭২৪ সালে ১৩টি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক স্থাপত্যের সূচনা করেন।]] |
[[File:Jantar Mantar, Delhi, 1826.jpg|thumb|left|[[দিল্লী]]র '''যন্তর মন্তর'''—[[জয়পুর|জয়পুরে]]র রাজা দ্বিতীয় জয় সিংহ ১৭২৪ সালে ১৩টি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক স্থাপত্যের সূচনা করেন।]] |
||
সঙ্গমাগ্রামের মাধব (খৃষ্টীয় ১৩৪০ - ১৪২৫) ও তাঁর কেরালার জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত বিদ্যালয় [[গাণিতিক বিশ্লেষণ|গাণিতিক বিশ্লেষণে]]র প্রতিষ্ঠা ও উন্নতি সাধন করে।<ref>{{ |
সঙ্গমাগ্রামের মাধব (খৃষ্টীয় ১৩৪০ - ১৪২৫) ও তাঁর কেরালার জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত বিদ্যালয় [[গাণিতিক বিশ্লেষণ|গাণিতিক বিশ্লেষণে]]র প্রতিষ্ঠা ও উন্নতি সাধন করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |
||
| |
|প্রকাশক = School of Mathematics and Statistics University of St Andrews, Scotland |
||
| |
|কর্ম = Biography of Madhava |
||
| |
|লেখক১ = J J O'Connor |
||
| |
|লেখক২ = E F Robertson |
||
| |
|ইউআরএল = http://www-gap.dcs.st-and.ac.uk/~history/Biographies/Madhava.html |
||
| |
|শিরোনাম = Mādhava of Sangamagrāma |
||
| |
|সংগ্রহের-তারিখ = 2007-09-08 |
||
|আর্কাইভের-ইউআরএল = https://web.archive.org/web/20060514012903/http://www-gap.dcs.st-and.ac.uk/~history/Biographies/Madhava.html |
|আর্কাইভের-ইউআরএল = https://web.archive.org/web/20060514012903/http://www-gap.dcs.st-and.ac.uk/~history/Biographies/Madhava.html |
||
|আর্কাইভের-তারিখ = ২০০৬-০৫-১৪ |
|আর্কাইভের-তারিখ = ২০০৬-০৫-১৪ |
||
৮৭ নং লাইন: | ৮৭ নং লাইন: | ||
৯৯৮ হিজরি সালে (খৃঃ ১৫৮৯-৯০) কাশ্মীরে আলি কাশ্মীরী ইবন লাকমান জোড়হীন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক গোলকের উদ্ভাবন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে, মুঘল শাসনকালে [[লাহোর]] ও কাশ্মীরে আরও কুড়িটি অনুরূপ গোলক তৈরী হয়।<ref name=Emilie/> ১৯৮০-এর দশকে এই গোলকগুলির পুনরাবিষ্কারের আগে, আধুনিক ধাতুবিদেরা, যাবতীয় আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্বেও, জোড়হীন ধাতব গোলক বানানো অসম্ভব বলে মনে করতেন।<ref name=Emilie/> এই মুঘল ধাতুবিদেরা ভারেওয়া পদ্ধতি<ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=BHAREWA art – Cast in Bronze: Ancient Technology of Lost Wax Casting |ইউআরএল=http://www.academia.edu/30052423/BHAREWA_art_Cast_in_Bronze_Ancient_Technology_of_Lost_Wax_Casting |প্রকাশক=Aakanksha Roychowdhury |সংগ্রহের-তারিখ=৮ জানুয়ারি ২০১৯}}</ref> বা ''হৃতমোম ঢালাই'' ([[ইংরাজি ভাষা|ইংরাজি]]:''lost-wax casting'') পদ্ধতিতে পথিকৃত ছিলেন।<ref name=Emilie>Savage-Smith (1985)</ref>[[File:Mir Sayyid Ali - Portrait of a Young Indian Scholar.jpg|thumb|left|১৫৫০ খৃষ্টাব্দে মির সৈয়দ আলি কৃত জনৈক তরুণ ভারতীয় বিদ্যার্থীর [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] ক্ষুদ্র চিত্র।]] |
৯৯৮ হিজরি সালে (খৃঃ ১৫৮৯-৯০) কাশ্মীরে আলি কাশ্মীরী ইবন লাকমান জোড়হীন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক গোলকের উদ্ভাবন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে, মুঘল শাসনকালে [[লাহোর]] ও কাশ্মীরে আরও কুড়িটি অনুরূপ গোলক তৈরী হয়।<ref name=Emilie/> ১৯৮০-এর দশকে এই গোলকগুলির পুনরাবিষ্কারের আগে, আধুনিক ধাতুবিদেরা, যাবতীয় আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্বেও, জোড়হীন ধাতব গোলক বানানো অসম্ভব বলে মনে করতেন।<ref name=Emilie/> এই মুঘল ধাতুবিদেরা ভারেওয়া পদ্ধতি<ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=BHAREWA art – Cast in Bronze: Ancient Technology of Lost Wax Casting |ইউআরএল=http://www.academia.edu/30052423/BHAREWA_art_Cast_in_Bronze_Ancient_Technology_of_Lost_Wax_Casting |প্রকাশক=Aakanksha Roychowdhury |সংগ্রহের-তারিখ=৮ জানুয়ারি ২০১৯}}</ref> বা ''হৃতমোম ঢালাই'' ([[ইংরাজি ভাষা|ইংরাজি]]:''lost-wax casting'') পদ্ধতিতে পথিকৃত ছিলেন।<ref name=Emilie>Savage-Smith (1985)</ref>[[File:Mir Sayyid Ali - Portrait of a Young Indian Scholar.jpg|thumb|left|১৫৫০ খৃষ্টাব্দে মির সৈয়দ আলি কৃত জনৈক তরুণ ভারতীয় বিদ্যার্থীর [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] ক্ষুদ্র চিত্র।]] |
||
ভারতে মঙ্গোল আক্রমণের মাধ্যমে বারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্রের আমদানি হয়েছিল।<ref name="Kn">{{ |
ভারতে মঙ্গোল আক্রমণের মাধ্যমে বারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্রের আমদানি হয়েছিল।<ref name="Kn">{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Iqtidar Alam Khan|শিরোনাম=Gunpowder And Firearms: Warfare In Medieval India|বছর=2004|প্রকাশক=Oxford University Press|আইএসবিএন=978-0-19-566526-0}}</ref><ref name="kn2"/> [[দিল্লি সালতানাত|দিল্লির সুলতান]] [[আলাউদ্দিন খিলজি]] মঙ্গোলদের পরাজিত করায়, কিছু মঙ্গোল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে উত্তর ভারতে পাকাপাকিভাবে থেকে যায়।<ref name="kn2">{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Iqtidar Alam Khan|শিরোনাম=Historical Dictionary of Medieval India|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=pzZFUcDpDzsC&pg=PA157|তারিখ=25 April 2008|প্রকাশক=Scarecrow Press|আইএসবিএন=978-0-8108-5503-8|পাতা=157}}</ref> 'তারিখ-ই ফিরিস্তা''য় (১৬০৬–১৬০৭) লেখা আছে ১২৫৮ খৃষ্টাব্দে মঙ্গোল শাসক [[হালাকু খান|হালাকু খানে]]র দূতকে স্বাগত জানাতে [[দিল্লি]]তে আতসবাজির প্রদর্শনী করা হয়।<ref name="khan 9 10">Khan, 9-10</ref> [[তৈমুর লং|তৈমুরীয়]] শাসক শাহ রূখের (১৪০৫-১৪৪৭) ভারতীয় দূতাবাসের আব্দ অল-রাজ্জাক বলেছেন হাতির পিঠে বসে ন্যাপথা ছুঁড়ে নানা ধরনের আতসবাজির প্রদর্শনী দেখানো হত।<ref name=GF2>Partington, 217</ref> ১৩৬৬ সালে [[বিজয়নগর সাম্রাজ্য|বিজয়নগর সাম্রাজ্যে]] ''তোপ-ও-তুফাক'' নামে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হত।<ref name="khan 9 10"/> এই সময় থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের যুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্রের বহুল ব্যবহার শুরু হয়। ১৪৭৩ সালে বেলগাঁও-এ [[বাহমানি সালতানাত|বাহমানি]] [[সুলতান]] মুহম্মদ শাহ বাহমনির অবরোধের মত সমরকৌশল, যা মধ্যযুগে আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধের অন্যতম অভিজ্ঞান, প্রায়শঃই দেখা যেতে শুরু করে।<ref name="khan 10">Khan, 10</ref> |
||
জেমস রিডিক পার্টিংটন তাঁর ''গ্রীক আগুন ও বারুদের ইতিহাস'' (''A History of Greek Fire and Gunpowder'', [[বাংলা ভাষা]]য় আ হিস্টোরি অফ গ্রীক ফায়ার অ্যান্ড গানপাউডার) গ্রন্থে ১৬শ ও ১৭শ শতাব্দীর [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] ভারতে আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধের বর্ণনা করেছেন, এবং লিখেছেন যে, "ইউরোপে ব্যবহার করার আগে ভারতীয় যুদ্ধ রকেটগুলি ভয়ঙ্কর অস্ত্র ছিল। বাঁশের লাঠিতে লোহার ছুঁচালো মাথাযুক্ত রকেটগুলি বাঁধা থাকত। সলতেয় অগ্নিসংযোগ করে লক্ষ্যবস্তুর দিকে তাক করে চালনা করা হত, তবে গতিপথ অনিশ্চিত ছিল ... আকবর ও জাহাঙ্গীরের আমলে বিস্ফোরক মাইন ও পাল্টা-মাইন ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়।"<ref name=partingtonquote>Partington, 226</ref> ভারতে এই রকেটগুলি ''তীর-এ-হাওয়াই'' বা ''অগ্নি বাণ'' নামেও পরিচিত ছিল।<ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি |লেখক1=H. M. Iftekhar Jaim |শিরোনাম=Jaim H.M.I., Jaim J. (2014) War Rockets in India. In: Selin H. (eds) Encyclopaedia of the History of Science, Technology, and Medicine in Non-Western Cultures. Springer, Dordrecht|লেখক2=Jasmine Jaim |ইউআরএল=https://link.springer.com/referenceworkentry/10.1007%2F978-94-007-3934-5_10216-1 |প্রকাশক=Springer, Dordrecht |সংগ্রহের-তারিখ=৯ জানুয়ারি ২০১৯ | |
জেমস রিডিক পার্টিংটন তাঁর ''গ্রীক আগুন ও বারুদের ইতিহাস'' (''A History of Greek Fire and Gunpowder'', [[বাংলা ভাষা]]য় আ হিস্টোরি অফ গ্রীক ফায়ার অ্যান্ড গানপাউডার) গ্রন্থে ১৬শ ও ১৭শ শতাব্দীর [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] ভারতে আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধের বর্ণনা করেছেন, এবং লিখেছেন যে, "ইউরোপে ব্যবহার করার আগে ভারতীয় যুদ্ধ রকেটগুলি ভয়ঙ্কর অস্ত্র ছিল। বাঁশের লাঠিতে লোহার ছুঁচালো মাথাযুক্ত রকেটগুলি বাঁধা থাকত। সলতেয় অগ্নিসংযোগ করে লক্ষ্যবস্তুর দিকে তাক করে চালনা করা হত, তবে গতিপথ অনিশ্চিত ছিল ... আকবর ও জাহাঙ্গীরের আমলে বিস্ফোরক মাইন ও পাল্টা-মাইন ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়।"<ref name=partingtonquote>Partington, 226</ref> ভারতে এই রকেটগুলি ''তীর-এ-হাওয়াই'' বা ''অগ্নি বাণ'' নামেও পরিচিত ছিল।<ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি |লেখক1=H. M. Iftekhar Jaim |শিরোনাম=Jaim H.M.I., Jaim J. (2014) War Rockets in India. In: Selin H. (eds) Encyclopaedia of the History of Science, Technology, and Medicine in Non-Western Cultures. Springer, Dordrecht|লেখক2=Jasmine Jaim |ইউআরএল=https://link.springer.com/referenceworkentry/10.1007%2F978-94-007-3934-5_10216-1 |প্রকাশক=Springer, Dordrecht |সংগ্রহের-তারিখ=৯ জানুয়ারি ২০১৯ |ডিওআই=10.1007/978-94-007-3934-5_10216-1 |তারিখ=৪ অক্টোবর ২০১৪}}</ref> |
||
১৬শ শতাব্দী থেকেই, ভারতে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বানানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাঞ্জোর, [[ঢাকা]], বিজাপুর ও [[মুর্শিদাবাদ|মুর্শিদাবাদে]], বিশেষ করে, বড় বড় কামান দেখা যেতে শুরু করে।<ref name=GF3>Partington, 225</ref> [[কোঝিকোড়|কালিকট]] (১৫০৪) ও [[দিউ]] (১৫৩৩) থেকে ব্রোঞ্জের কামান পাওয়া গেছে।<ref name="partingtonquote">Partington, 226</ref> ১৭শ শতাব্দীতে [[গুজরাট]] থেকে ইউরোপে শোরা রপ্তানি করা হত আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।<ref name=IndiaBritannica>Encyclopædia Britannica (2008), ''India.''</ref> [[বাংলা]] ও মালওয়াতে শোরা প্রস্তুত করা হত।<ref name=IndiaBritannica/> ইংরেজ, ফরাসি, ওলন্দাজ ও পর্তুগীজেরা [[ছাপরা]]কে কেন্দ্র করে শোরা পরিশোধন করত।<ref>Encyclopædia Britannica (2008), ''Chāpra.''</ref> |
১৬শ শতাব্দী থেকেই, ভারতে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বানানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাঞ্জোর, [[ঢাকা]], বিজাপুর ও [[মুর্শিদাবাদ|মুর্শিদাবাদে]], বিশেষ করে, বড় বড় কামান দেখা যেতে শুরু করে।<ref name=GF3>Partington, 225</ref> [[কোঝিকোড়|কালিকট]] (১৫০৪) ও [[দিউ]] (১৫৩৩) থেকে ব্রোঞ্জের কামান পাওয়া গেছে।<ref name="partingtonquote">Partington, 226</ref> ১৭শ শতাব্দীতে [[গুজরাট]] থেকে ইউরোপে শোরা রপ্তানি করা হত আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।<ref name=IndiaBritannica>Encyclopædia Britannica (2008), ''India.''</ref> [[বাংলা]] ও মালওয়াতে শোরা প্রস্তুত করা হত।<ref name=IndiaBritannica/> ইংরেজ, ফরাসি, ওলন্দাজ ও পর্তুগীজেরা [[ছাপরা]]কে কেন্দ্র করে শোরা পরিশোধন করত।<ref>Encyclopædia Britannica (2008), ''Chāpra.''</ref> |
||
১১৩ নং লাইন: | ১১৩ নং লাইন: | ||
১৮শ শতাব্দীর শেষে ভারতীয় ডাক ব্যবস্থা অতীব দক্ষ হয়ে ওঠে।<ref name=Peabody1/> যেমন, টমাস ব্রোটনের বক্তব্য অনুযায়ী, [[যোধপুর]] মহারাজা তাঁর রাজধানী থেকে ৩২০ কি.মি. দূরে নাথাদেওরার মন্দিরে প্রত্যেক দিন তাজা ফুলের অর্ঘ্য পাঠাতেন, যা পরের দিন সূর্য্যোদয়ের সাথে সাথে ঠিক প্রথম [[ষড়দর্শন|দর্শনে]]র সময় পৌঁছে যেত।<ref name=Peabody1>Peabody, 71</ref> পরবর্তী পর্যায়ে [[ব্রিটিশ রাজ]] আসার সঙ্গে ডাক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হয়।<ref name=Lowe/> ১৮৩৭ সালের ১৭তম পোস্ট অফিস আইন (''The Post Office Act XVII of 1837'') বলে [[ভারতের গভর্নর-জেনারেল]] [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]]র এলাকার যে কোনো স্থানে ডাক মাধ্যমে সংবাদ পাঠাতে পারতেন।<ref name=Lowe/> কিছু আধিকারিকের এই বিনামূল্যে ডাক ব্যবস্থা ব্যবহার করার সুবিধা, পরের দিকে বিতর্কের সৃষ্টি করে।<ref name=Lowe/> ১লা অক্টোবর ১৮৩৭ সালে ভারতীয় পোস্ট অফিস পরিষেবার সূচনা হয়।<ref name=Lowe>Lowe, 134</ref> কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্রিটিশেরা ভারতে এক সুবিশাল [[রেল পরিবহন]] ব্যবস্থা গড়ে তোলে।<ref>Seaman, 348</ref> |
১৮শ শতাব্দীর শেষে ভারতীয় ডাক ব্যবস্থা অতীব দক্ষ হয়ে ওঠে।<ref name=Peabody1/> যেমন, টমাস ব্রোটনের বক্তব্য অনুযায়ী, [[যোধপুর]] মহারাজা তাঁর রাজধানী থেকে ৩২০ কি.মি. দূরে নাথাদেওরার মন্দিরে প্রত্যেক দিন তাজা ফুলের অর্ঘ্য পাঠাতেন, যা পরের দিন সূর্য্যোদয়ের সাথে সাথে ঠিক প্রথম [[ষড়দর্শন|দর্শনে]]র সময় পৌঁছে যেত।<ref name=Peabody1>Peabody, 71</ref> পরবর্তী পর্যায়ে [[ব্রিটিশ রাজ]] আসার সঙ্গে ডাক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হয়।<ref name=Lowe/> ১৮৩৭ সালের ১৭তম পোস্ট অফিস আইন (''The Post Office Act XVII of 1837'') বলে [[ভারতের গভর্নর-জেনারেল]] [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]]র এলাকার যে কোনো স্থানে ডাক মাধ্যমে সংবাদ পাঠাতে পারতেন।<ref name=Lowe/> কিছু আধিকারিকের এই বিনামূল্যে ডাক ব্যবস্থা ব্যবহার করার সুবিধা, পরের দিকে বিতর্কের সৃষ্টি করে।<ref name=Lowe/> ১লা অক্টোবর ১৮৩৭ সালে ভারতীয় পোস্ট অফিস পরিষেবার সূচনা হয়।<ref name=Lowe>Lowe, 134</ref> কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্রিটিশেরা ভারতে এক সুবিশাল [[রেল পরিবহন]] ব্যবস্থা গড়ে তোলে।<ref>Seaman, 348</ref> |
||
ভারতে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থা মূলতঃ স্থানীয় জন সমাজ থেকে পুর ও প্রশাসনিক চাকরির যোগ্য প্রার্থী তৈরী করার উদ্দেশ্যে চালু হলেও, এর ফলে ভারতীয় ছাত্রদের কাছে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা খুলে যায়।<ref name=Rajendran>Raja (2006)</ref> [[জগদীশ চন্দ্র বসু| |
ভারতে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থা মূলতঃ স্থানীয় জন সমাজ থেকে পুর ও প্রশাসনিক চাকরির যোগ্য প্রার্থী তৈরী করার উদ্দেশ্যে চালু হলেও, এর ফলে ভারতীয় ছাত্রদের কাছে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা খুলে যায়।<ref name=Rajendran>Raja (2006)</ref> [[জগদীশ চন্দ্র বসু|স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু]] (১৮৫৮–১৯৩৭), [[প্রফুল্ল চন্দ্র রায়|আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়]] (১৮৬১-১৯৪৪), [[সত্যেন্দ্রনাথ বসু]] (১৮৯৪–১৯৭৪), [[মেঘনাদ সাহা]] (১৮৯৩–১৯৫৬), [[প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ]] (১৮৯৩–১৯৭২), [[চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন|স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন]] (১৮৮৮–১৯৭০), [[সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর]] (১৯১০–১৯৯৫), [[হোমি জাহাঙ্গীর ভাভা]] (১৯০৯–১৯৬৬), [[শ্রীনিবাস রামানুজন]] (১৮৮৭–১৯২০), [[উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী]] (১৮৭৩–১৯৪৬), বিক্রম সারাভাই (১৯১৯–১৯৭১), [[হর গোবিন্দ খোরানা]] (১৯২২–২০১১), হরিশ চন্দ্র (১৯২৩–১৯৮৩), এবং [[আবদুস সালাম (পদার্থবিজ্ঞানী)|আবদুস সালাম]] (১৯২৬-১৯৯৬) হলেন এই সময়ের কিছু উল্লেখযোগ্য কৃতি বিজ্ঞানী।<ref name=Rajendran/> |
||
ঔপনিবেশিক যুগে স্থানীয় ও ঔপনিবেশিক বিজ্ঞান গবেষণার গভীর আদান-প্রদান ছিল।<ref name=Arnold211>Arnold, 211</ref> পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের প্রভাবকে শুধুমাত্র ঔপনিবেশিক সত্তা হিসাবে দেখা হত না বরং ভারতীয় জাতি গঠনে এর উপযোগিতা,<ref name=Arnold212/> বিশেষ করে কৃষি ও বাণিজ্যে পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য ছিল।<ref name=Arnold211/> ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েন।<ref name=Arnold212>Arnold, 212</ref> ভারতের স্বাধীনতার সময় ঔপনিবেশিক যুগে গড়ে ওঠা ভারতীয় বিজ্ঞান সারা বিশ্বে সমাদৃত হতে শুরু করে। |
ঔপনিবেশিক যুগে স্থানীয় ও ঔপনিবেশিক বিজ্ঞান গবেষণার গভীর আদান-প্রদান ছিল।<ref name=Arnold211>Arnold, 211</ref> পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের প্রভাবকে শুধুমাত্র ঔপনিবেশিক সত্তা হিসাবে দেখা হত না বরং ভারতীয় জাতি গঠনে এর উপযোগিতা,<ref name=Arnold212/> বিশেষ করে কৃষি ও বাণিজ্যে পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য ছিল।<ref name=Arnold211/> ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েন।<ref name=Arnold212>Arnold, 212</ref> ভারতের স্বাধীনতার সময় ঔপনিবেশিক যুগে গড়ে ওঠা ভারতীয় বিজ্ঞান সারা বিশ্বে সমাদৃত হতে শুরু করে। |
||
ফরাসি জ্যোতির্বিদ, পিয়ের জ্যানসেন ১৮ই আগস্ট ১৮৬৮ সালের সূর্যগ্রহণ নিরীক্ষা করে হিলিয়াম গ্যাস আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ রাজ্যের [[গুন্টুর]] থেকে।<ref name=Arnold212/> ১৮৯৭ সালে [[রোনাল্ড রস|স্যার রোনাল্ড রস]] প্রথমে সেকেন্দ্রাবাদে ও পরে [[কলকাতা]]য় গবেষণা করে আবিষ্কার করেন ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ মশক-বাহিত।<ref>{{en}}{{ |
ফরাসি জ্যোতির্বিদ, পিয়ের জ্যানসেন ১৮ই আগস্ট ১৮৬৮ সালের সূর্যগ্রহণ নিরীক্ষা করে হিলিয়াম গ্যাস আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ রাজ্যের [[গুন্টুর]] থেকে।<ref name=Arnold212/> ১৮৯৭ সালে [[রোনাল্ড রস|স্যার রোনাল্ড রস]] প্রথমে সেকেন্দ্রাবাদে ও পরে [[কলকাতা]]য় গবেষণা করে আবিষ্কার করেন ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ মশক-বাহিত।<ref>{{en}}{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Ross|প্রথমাংশ=R|শিরোনাম=On some Peculiar Pigmented Cells Found in Two Mosquitos Fed on Malarial Blood|সাময়িকী=British Medical Journal|বছর=1897|খণ্ড=2|সংখ্যা নং=1929|পাতাসমূহ=1786–8|pmid=20757493| pmc=2408186|ডিওআই=10.1136/bmj.2.1929.1786}}</ref><ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Sinden|প্রথমাংশ=Robert E|শিরোনাম=Malaria, mosquitoes and the legacy of Ronald Ross|ইউআরএল=http://www.who.int/bulletin/volumes/85/11/04-020735/en/|প্রকাশক=World Health Organization|সংগ্রহের-তারিখ=31 January 2014}}</ref> এই কাজের জন্য তিনি নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।<ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Ronald Ross – Facts|ইউআরএল=https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/1902/ross-facts.html|প্রকাশক=Nobel Media AB|সংগ্রহের-তারিখ=31 January 2014}}</ref> |
||
{{about||[[ভারত|স্বাধীন ভারতে]] বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির|ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি}} |
{{about||[[ভারত|স্বাধীন ভারতে]] বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির|ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি}} |
||
১২৫ নং লাইন: | ১২৫ নং লাইন: | ||
==টিকা== |
==টিকা== |
||
{{সূত্র তালিকা|3}} |
|||
{{Reflist|3}} |
|||
==তথ্যসূত্র== |
==তথ্যসূত্র== |
২২:৫৪, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
ভারতের ইতিহাস |
---|
ধারাবাহিকের একটি অংশ |
ভারতীয় উপমহাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিহাস প্রাগৈতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকে বিদ্যমান।[১] আধুনিক কালে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন ক্ষেত্রে, যথা, গাড়ী প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি, যোগাযোগ, মহাকাশ, মেরু ও আণবিক প্রযুক্তিতে ভারত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির পরিচয় দিয়েছে।
প্রাকঐতিহাসিক
খৃঃ পূঃ ৫৫০০ সালের সময় মেহেরগড়ের মত আরও বসতি গড়ে উঠছিল, যা পরে ক্যালকোলিথিক সংস্কৃতির পূর্বসুরি ছিল।[২] এই অঞ্চলের অধিবাসীদের পশ্চিম এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল।[২]
৪৫০০ খৃ: পূ: সালে সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা সেচের উদ্ভাবন করে।[৩] এই উদ্ভাবনার ফলে অনেক পরিকল্পিত বসতি গড়ে ওঠে যেখানে পয়ঃপ্রণালী ছিল। ফলে সিন্ধু সভ্যতার ব্যপ্তি ও সমৃদ্ধি বেড়ে গিয়েছিল, যা পরবর্তী পর্যায়ে নিকাশি ও পয়ঃপ্রণালীর ব্যবহার করে আরও পরিকল্পিত বসতি স্থাপন করতে সাহায্য করে।[৩] ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তৈরী করা গিরনারের কৃত্রিম জলাধার গুলি এবং ২৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সেচখাল ব্যবস্থা সিন্ধু সভ্যতার পরিশীলিত সেচ ও জল সংরক্ষণ ব্যবস্থার উজ্বল নিদর্শন।[৪] খৃষ্টপূর্বাব্দ ৫ম-৪র্থ শহস্রাব্দেই এই অঞ্চলে তুলা চাষ প্রচলিত ছিল।[৫] আখ মূলত গ্রীষ্মমন্ডলীয় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফসল।[৬] তবে আখের বিভিন্ন প্রজাতি সম্ভবত বিভিন্ন স্থানে উদ্ভুত হয়েছে; যেমন এস. বারবেরি (S. barberi) ভারতে, এবং এস. এডুল (S. edule) ও এস. অফিসিনারুম(S. officinarum) এসেছে নিউ গিনি থেকে।[৬]
সিন্ধু উপত্যকার অধিবাসীরা ওজন ও পরিমাপের ব্যবহারে প্রমিতিকরণের একটি পদ্ধতি গড়ে তোলেন, যা সিন্ধু উপত্যকায় বিভিন্ন খনন থেকে সুস্পষ্ট।[৭] এই প্রযুক্তিগত মানক থাকায় পরিমাপের যন্ত্রগুলি কৌনিক পরিমাপ ও নির্মাণের পরিমাপে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছিল।[৭] কিছু যন্ত্রের ক্ষেত্রে একাধিক উপবিভাগের পাশাপাশি পরিমাপের যন্ত্রে ক্রমাঙ্কনও পাওয়া যায়।[৭] এই অঞ্চলের প্রাচীনতম বন্দরগুলির মধ্যে একটি লোথালে (খৃঃপূঃ ২৪০০) এমনভাবে মূল স্রোতের থেকে দূরে তৈরী করা হয়েছিল যাতে বন্দরে পলি জমা এড়ানো যায়।[৮] আধুনিক সমুদ্রবিজ্ঞানীদের মতে হরপ্পা অধিবাসীদের নিশ্চয়ই জোয়ার-ভাঁটা, জললেখচিত্রবিদ্যা ও সামুদ্রিক প্রকৌশল সম্পর্কে গভীর জ্ঞান ছিল। না হলে, নিয়ত-পরিবর্তনশীল সবরমতি নদী নদীখাতে এরকম বন্দর নির্মাণ করা সম্ভব ছিল না।[৮]
অধুনা পাকিস্তানের বালাকোটের উৎখনন থেকে সেখানে চুল্লীর (খৃঃপূঃ ২৫০০-১৯০০) উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়।[৯] সম্ভবতঃ চীনামাটির সামগ্রী প্রস্তুত করতে এই চুল্লীর ব্যবহার হত।[৯] সিন্ধু সভ্যতার পরিণত পর্য্যায়ের (খৃঃ পূঃ ২৫০০-১৯০০) রান্নার উনুনও এই বালাকোটেই পাওয়া গেছে।[৯] এছাড়াও কালিবঙ্গা প্রত্নতাত্তিক স্থলে অনেক পাত্র আকৃতির রান্নার চুলার অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যা মাটির উপরে ও নিচে উভয় ক্ষেত্রেই দেখা গেছে।[১০] কালিবঙ্গাতে ভাটিখানারও সন্ধান পাওয়া গেছে।[১০]
প্রত্নতাত্তিক ও পাঠ্য প্রমাণের ভিত্তিতে, আমেরিকার মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক জোসেফ ই. স্বোয়ার্টজবার্গের (২০০৮) মতে, ভারতে মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যার জন্ম হয় খৃঃ পূঃ ২৫০০-১৯০০ সময়কালে সিন্ধুসভ্যতার হাত ধরে।[১২] বৈদিক যুগের (খৃঃ পূঃ ২য় - ১ম সহস্রাব্দ) ভারতে বৃহদাকার নির্মাণ পরিকল্পনা, মহাকাশবিদ্যা সংক্রান্ত অঙ্কণ, এবং মানচিত্রনির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার প্রচলিত ছিল।[১২] অধিকাংশ প্রমাণ জলবায়ুর কারণে ধ্বংশ হয়ে গেছে, তবুও, উৎখননের থেকে পাওয়া অনেক জরীপের যন্ত্র ও পরিমাপ দন্ড প্রাচীনকালে মানচিত্র নির্মান সংক্রান্ত কার্যকলাপ বিশ্বাসযোগ্য ভাবে প্রমাণ করেছে।[১৩] স্বোয়ার্টজবার্গ (২০০৮)—টিকে থাকা মানচিত্রের বিষয়ে—আরও বলেছেন: 'যদিও অসংখ্য নয়, প্রস্তর যুগের হাজার হাজার ভারতীয় গুহা চিত্রগুলির মধ্যে মানচিত্রের মতো নক্সা উপস্থিত রয়েছে; এবং অন্তত একটি জটিল মেসোলিথিক চিত্রকে মহাবিশ্বের প্রতিকৃতি বলে মনে করা হয়।'[১৪]
প্রত্নতাত্বিক প্রমাণ থেকে জানা যায় সিন্ধু সভ্যতার সময়ে (খৃঃ পূঃ ২৫০০) পশু-কর্ষিত হালের ব্যবহার ছিল।[১৫] হরপ্পা অঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত তামার সবচেয়ে প্রাচীন তরোয়ালটি খৃঃ পূঃ ২৩০০ সময়কালের।[১৬] ভারতের গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চলে প্রত্নতাত্বিক অনুসন্ধান থেকে ব্রোঞ্জের তরোয়াল পাওয়া গেলেও তামার তরোয়ালই বেশি পাওয়া গেছে।[১৬]
প্রাচীন রাজ্য
বৈদিক যুগের বিভিন্ন লেখা থেকে বৃহৎ সংখ্যা ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া।[২০] যজুর্বেদসংহিতার (খৃঃ পূঃ ১২০০-৯০০) সময় থেকেই ১০১২ মত বড় সংখ্যার উল্লেখ বিভিন্ন লেখায় পাওয়া যেতে শুরু করে।[২০] যেমন, অশ্বমেধ যজ্ঞে অন্নহোমের শেষে সূর্য্যোদয়ের সময়ে যে মন্ত্রোচ্চারণ করা হত তাতে দশের শত গুণ থেকে দশ সহস্রের ত্রিঘাত গুণ পর্য্যন্ত শক্তির উন্মেষ হত।[২০] খৃঃ পূঃ ৯ম শতাব্দীর শতপথ ব্রাহ্মণে সুলবা সূত্রের মত কিছু ধর্মীয় জ্যামিতিক গঠনের নিয়মাবলী পাওয়া যায়।[২১]
খৃঃ পূঃ ৮ম শতাব্দীতে বৌধায়ন বৌধায়ন সুলবা সূত্রের সৃষ্টি করেন। এই সূত্রে সাধারণ পিথাগোরীয় সংখ্যাত্রয়ের উদাহরণ পাওয়া যায়, যেমন, (৩, ৪, ৫), (৫, ১২, ১৩), (৮, ১৫, ১৭), (৭, ২৪, ২৫), এবং (১২, ৩৫, ৩৭)।[২২] শুধু তাই নয় বর্গক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক পিথাগোরাসের উপপাদ্যের একটি বক্তব্যও পাওয়া যায়: "বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল পূর্বের বর্গক্ষেত্রের দ্বিগুণ হবে।"[২২] সুলবা সূত্রে পিথাগোরাসের উপপাদ্যের আয়তক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক বক্তব্যও পাওয়া যায়: "আয়তক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল আয়তক্ষেত্রের উল্লম্ব ও অনুভূমিক বাহু থেকে উদ্ভুত বর্গক্ষেত্রদ্বয়ের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান।"[২২] বৌধায়ন দুই-এর বর্গমূলের সূত্রও দিয়েছেন সুলবা সূত্রে।[২৩] এই সময় মেসোপটেমিয়ার প্রভাব ছিল বলে মনে করা হয়।[২৪]
প্রাচীনতম ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কিত পুঁথি খৃঃ পূঃ ১৪০০-১২০০ সময়কালে লাগাধ বিরচিত বেদাঙ্গ জ্যোতিষকে মনে করা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কিত গ্রন্থ।[২৫] এতে বিভিন্ন সামাজিক এবং ধর্মীয় কাজের সময় নির্ধারণের জন্য জ্যোতির্বিদ্যা ব্যবহারের বর্ণনা আছে। এতে জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত গণনা, পঞ্জিকা প্রণয়ন এবং গবেযণামূলক পর্যবেক্ষণের নিয়মগুলিও বিশদে বলা আছে।[২৬] যদিও বেদাঙ্গ জ্যোতিষ একটি ধর্মীয় গ্রন্থ, এতে ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কিত অনেক বিষয় আছে, যেমন, সময় ও কাল বিষয়ক চর্চা, চান্দ্রমাস, সৌরমাস, এমনকি অধিবর্ষের নিষ্পত্তির জন্য চান্দ্র-অধিমাস বা অধিকামাসের বর্ণনাও আছে।[২৭] ঋতু ও যুগের উল্লেখও পাওয়া যায় এই গ্রন্থে।[২৭] ত্রিপাঠীর মতে, "সাতাশটি নক্ষত্রপুঞ্জ, গ্রহণ, সাতটি গ্রহ এবং রাশিচক্রের বারোটি রাশিও সেই যুগে ভারতীয়দের জানা ছিল।"[২৭]
মিশরীয় কাহুনের প্যাপিরাস (খৃঃ পূঃ ১৯০০) এবং ভারতে বৈদিক যুগের বিভিন্ন গ্রন্থের থেকে জানা যায় সেই প্রাচীন যুগেই পশু চিকিৎসার প্রচলন ছিল।[২৮] কেয়ার্নস ও ন্যাশ (২০০৮) বলেছেন খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীর সুশ্রুত সংহিতায় কুষ্ঠ রোগের উল্লেখ পাওয়া যায়। সুশ্রুত সংহিতা একটি আয়ুর্বেদিক গ্রন্থ। এই গ্রন্থে ১৮৪টি অধ্যায়ে ১১২০টি রোগের বর্ণনা আছে; এছাড়া ৭০০টি আয়ুর্বেদিক উদ্ভিদ, পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরস্থানের বর্ণনা, ৬৪টি খনিজ পদার্থ থেকে ও ৫৭টি প্রাণীজ পদার্থ থেকে ঔষধ বানানোর পদ্ধতি বিবরণ পাওয়া যায়।[২৯][৩০] তবে, The Oxford Illustrated Companion to Medicine বই বলছে, খৃঃ পূঃ ১৫০০-১২০০ সময়কালে রচিত হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থ অথর্ববেদে কুষ্ঠ রোগের ও সেই রোগের ধর্মীয় পদ্ধতিতে উপশমের উল্লেখ পাওয়া যায়।[৩১]
খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে সুশ্রুত ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি জানতেন।[৩২] জবামুখী শলাকা নামের একটি বিশেষ অস্ত্রের সাহায্যে ছানির অস্ত্রোপচার করা হত। এটি একটি বাঁকা সূঁচ, যা দিয়ে ছানিগ্রস্ত মণিকে আলগা করে দৃষ্টিসীমার বাইরে সরিয়ে দেওয়া হত।[৩২] অস্ত্রোপচারের পর চোখকে উষ্ণ মাখনে ভিজিয়ে পটি বেঁধে দেওয়া হত।[৩২] যদিও এই পদ্ধতি যথেষ্ট সফল ছিল, তবুও সুশ্রুত শুধুমাত্র একান্ত প্রয়োজনেই এই শল্যচিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।[৩২] ভারত থেকেই চীনে ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি পরিচিতি পায়।[৩৩]
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীতে, ব্যাকরণবিদ পাণিনি ধ্বনিবিজ্ঞান, ধ্বনিতত্ত্ব, এবং রূপমূলতত্ত্বে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন।[৩৪] পাণিনির রূপমূলতত্ত্বের ব্যাখ্যা বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত সমবিষয়ক পশ্চিমি তত্ত্বের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল।[৩৫]
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীর আগেই ভারতে ধাতুজাত মুদ্রার প্রচলন ছিল।[৩৬][৩৭] খৃঃ পূঃ ৪০০ অব্দ থেকে ১০০ খৃষ্টাব্দ সময়কালের মূলতঃ রূপা বা তামার মুদ্রা তৈরী হত, যাতে নানা রকম পশু ও উদ্ভিদের চিহ্ণ থাকত।[৩৮]
রাজস্থানে উদয়পুরের কাছে জাওয়ার দস্তা খনি খৃঃ পূঃ ৪০০ সালেও ব্যবহার হত।[৩৯][৪০] বিভিন্ন ধরনের হাতলযুক্ত বিভিন্ন রকমের তরবারি পাওয়া গেছে বর্তমান উত্তর প্রদেশের ফতেগড়ে।[৪১] এই তরবারিগুলি খৃঃ পূঃ ১৭০০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে তৈরী করা হয়েছে বলে মনে করা হয়, তবে সম্ভবতঃ তরোয়ালের বহুল ব্যবহার শুরু হয় খৃঃ পূঃ প্রথম সহস্রাব্দে।[৪২] বর্তমান উত্তর প্রদেশের মলহার, ডাদোপুর, রাজা নালা কা টিলা ও লাহুরাদেওয়া প্রত্নস্থলগুলিতে লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে খৃঃ পূঃ ১৮০০ ও খৃঃ পূঃ ১২০০ সময়কালের।[৪৩] রেডিও কার্বন ডেটিং পদ্ধতির সাহায্যে ভারতে পাওয়া লৌহ সামগ্রীর বয়স নির্ধারণ করা যায় খৃঃ পূঃ ১৪০০ সময়কালের।[৪৪] কিছু বিশেষজ্ঞের মতে খৃঃ পূঃ ১৩শ শতাব্দীতেই ভারতে লৌহ বিগলনের পদ্ধতি বহুল পরিচিত ছিল, সুতরাং এটা মনে করা যেতেই পারে লৌহ বিগলন পদ্ধতির উন্মেষ আরও অনেক আগেই হয়েছে।[৪৩] দাক্ষিণাত্যে (আজকের মহীশূর) খৃঃ পূঃ ১১শ থেকে ১২শ শতাব্দীতেই লোহার ব্যবহার শুরু হয়।[৪৫] এত প্রাচীন লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ায় এটা বোঝা যাচ্ছে যে দাক্ষিণাত্যে লোহার ব্যবহার দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের থেকে স্বাধীন ভাবেই হয়েছে। কারণ ঐ সময় দাক্ষিণাত্যের সাথে সিন্ধু সভ্যতার সম্ভবতঃ কোনো যোগাযোগ ছিল না।[৪৫]
মহা জনপদের পরবর্তীকাল—পূর্ণ মধ্য যুগ
কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে বাঁধ ও সেতু বানানোর কথা বলা আছে।[৪৬] ৪র্থ শতাব্দীর সময়কাল থেকে বাখারি ও লোহার শিকল দিয়ে প্রস্তুত ঝুলন্ত সেতুর ব্যবহার দেখা যায়।[৪৭] প্যাগোডা ও তোরীর পূর্বসূরী, বৌদ্ধ স্তুপের নির্মাণ খৃঃ পূঃ ৩য় শতক থেকেই শুরু হয়ে গেছিল।[৪৮][৪৯] ভারতের শুষ্ক অঞ্চলে পাথর কেটে ধাপ-কূপ তৈরী করা শুরু হয় ২০০-৪০০ খৃষ্টাব্দ থেকে।[৫০] পরবর্তী পর্যায়ে, ধাপ-কুয়ো বা ধাপ-পুকুর আরও বিভিন্ন স্থানে তৈরী করা হয়, যেমন, ধাঁক (৫০০-৬২৫ খৃষ্টাব্দ) ও ভিনমাল (৮৫০-৯৫০ খৃষ্টাব্দ)[৫০]
খৃঃ পূঃ ১ম সহস্রাব্দে বৈশেষিক পরমাণুবাদের সূচনা হয়। এই তত্ত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবক্তা ছিলেন ভারতীয় দার্শনিক কণাদ (খৃঃ পূঃ ৬০০)।[৫১] এই তত্ত্ব অনুসারে পরমাণু অবিনশ্বর ও অবিভাজ্য,[৫২] এবং প্রতিটি পরমাণুর বিশেষ স্বাতন্ত্র বর্তমান।[৫৩] বৈশেষিক পরমাণুবাদের আরও প্রসার হয় বৌদ্ধ পরমাণুবাদে। ৭ম শতাব্দীর ধর্মকীর্তি ও দিগনাগ ছিলেন এই তত্ত্বের প্রধান প্রবক্তা। এঁরাই প্রথম বলেন পরমাণু বিন্দু আকৃতির, কালহীন, এবং শক্তি দিয়ে সৃষ্ট।[৫৪]
খৃষ্টীয় ১ম শতাব্দীর শুরুর দিকেই গহনা ও পাত্র হিসাবে কাঁচের ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছিল।[৫৫] ইউরোপীয় গ্রেকো-রোমান সভ্যতার সংস্পর্শে আসার দরুণ নতুন নতুন পদ্ধতি আত্মিকরণ হতে শুরু করে। ফলে স্থানীয় কারিগরেরা কাঁচের ঢালাই করা, নক্সা করা ও নানা রকম রং মেশানোর পদ্ধতি আয়ত্ত করে ফেলে খৃষ্টীয় প্রথম কয়েকটি শতাব্দীতেই।[৫৫] The সাতবাহন সাম্রাজ্যের সময় দেখা যায় মিশ্র কাঁচের ছোট ছোট চোঙ, যার কোনো কোনোটিতে হলুদ ও সবুজ রঙের সুন্দর ব্যবহার দেখা যায়।[৫৬] খৃষ্টীয় প্রথম কিছু শতাব্দীতে ভারতেই উটজ-এর প্রথম ব্যবহার শুরু হয়।[৫৭] ইউরোপ, চীন ও আরব অঞ্চলে উটজ রপ্তানী করা হত। আরবে এটি দামাস্কাস ইস্পাত নামে প্রসিদ্ধ ছিল। প্রত্নতাত্ত্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায় দক্ষিণ ভারতে উটজ বানানোর পদ্ধতি জানা ছিল খৃষ্টের জন্মেরও আগে।[৫৮][৫৯]
খৃষ্টীয় ২য় শতাব্দীতেই ভারতে ধুনুরি জাতীয় যন্ত্রের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।[৬০] হীরার খনি ও রত্ন হিসাবে হীরার ব্যবহার ভারত থেকেই শুরু হয়।[৬১] প্রাচীন ভারতে গোলকুন্ডায় একটি গুরুত্বপূর্ণ হীরার খনি ছিল।[৬১] এখানের হীরা সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হত।[৬১] বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষার প্রাচীন গ্রন্থে হীরার উল্লেখ পাওয়া গেছে।[৬২] ভারতে হীরক ব্যবসার উল্লেখ পাওয়া যায় অর্থশাস্ত্রে।[৬৩] গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বা বিক্রমাদিত্যের সময়কালে (৩৭৫-৪১৩), স্থাপিত দিল্লির লৌহস্তম্ভে আজ প্রায় ২০০০ বছর পরেও কোনো মরচে ধরেনি।[৬৪] খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর রসরত্নসমুচ্চয় গ্রন্থে দস্তার দুটি আকরিকের কথা বলা আছে। একটি থেকে দস্তা ধাতু নিষ্কাশন সম্ভব, অন্যটি শুধুমাত্র ঔষধি প্রস্তুতে ব্যবহার করা যায়।[৬৫]
চরকার উৎপত্তি নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে, তবে ভারতকে একটি সম্ভাব্য উৎস হিসাবে মনে করা হয়।[৬৬][৬৭] খৃষ্টীয় ১৪শ শতাব্দীতে এটি ভারত থেকেই ইউরোপে গিয়েছিল।[৬৮] যান্ত্রিক উপায়ে তুলা বীজ থেকে তুলা ছাড়ানোর উপায় ভারতেই উদ্ভাবিত হয়, - কাঠের তৈরি এই যন্ত্রের নাম ছিল চরখি।[৬০] বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই যন্ত্র হস্তচালিত হলেও কোনো কোনো এলাকায় জলশক্তিতেও এই যন্ত্র চালানো হত।[৬০] অজন্তা গুহাচিত্র থেকে প্রমাণিত হয় খৃষ্টীয় ৫ম শতাব্দীতেও ভারতে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হত।[৬৯] পরবর্তী পর্যায়ে পদচালিত তুলা ছাড়ানোর যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়।[৬৯] বিভিন্ন প্রাচীন চীনা নথি থেকে জানা যায়, ৬৪৭ সাল থেকে শুরু করে, ভারতে কমপক্ষে দুটি অভিযান হয়েছিল চিনি পরিশোধনের প্রযুক্তি আহরণের জন্য।[৭০] কিন্তু, প্রতিটি অভিযানই চিনি পরিশোধনের বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য নিয়ে ফেরে।[৭০] সঙ্গীত বিশারদ পিঙ্গল (খৃঃ পূঃ ৩০০-২০০) সংস্কৃত ভাষায় ছন্দশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে প্রমাণ পাওয়া যায়, বিভিন্ন মাত্রার সমন্বয়ের গণনা করতে গিয়ে, পিঙ্গল প্যাস্কেলের ত্রিভূজ ও দ্বিপদ গুণাঙ্ক (Binomial coefficient) আবিষ্কার করেছিলেন। যদিও তিনি দ্বিপদ তত্ত্ব (Binomial theorem) জানতেন না।[৭১][৭২] পিঙ্গলের লেখায় বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়।[৭৩] গুণের চিহ্নের ব্যবহার পদ্ধতি ভারতীয়দের সৃষ্টি। ঋণাত্বক সংখ্যা ও বিয়োজ্য সংখ্যা খৃঃ পূঃ ২য় শতাব্দী থেকেই পূর্ব এশিয়ায় ব্যবহৃত হত, আর খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দী থেকে ভারতীয় গাণিতিকেরা ঋণাত্বক সংখ্যা জানতেন,[৭৪] এবং ঋণের গণনার ক্ষেত্রে এই সংখ্যার ব্যবহারও বুঝতেন।[৭৫] যদিও ভারতীয়রা বিয়োজ্য সংখ্যার ব্যবহার প্রথম শুরু করেননি, তবে তাঁরা ধণাত্বক ও ঋণাত্বক সংখ্যার গুণের ক্ষেত্রে "চিহ্নের ব্যবহারে"র নিয়মাবলী প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যাপারটা পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন লেখায় ১২৯৯ সালের আগে দেখা যায় না।[৭৬] ঋণাত্মক সংখ্যা সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সঠিক যে নিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা আরবীয়দের মাধ্যমে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।[৭৫]
অন্ততঃ খৃঃ পূঃ ৩০০০ অব্দ থেকেই মিশরীয় চিত্রলিপিতে দশমিক পদ্ধতির ব্যবহার ছিল,[৭৭] পরবর্তী পর্যায়ে আধুনিক সংখ্যা ব্যবস্থা তৈরীর সময় প্রাচীন ভারতে দশমিক পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়।[৭৮] খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দীর মধ্যে, হিন্দু-আরবী সংখ্যা পদ্ধতি ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।[৭৯] শুধুমাত্র পৃথক করার চিহ্ন হিসাবে নয়, বরং সংখ্যা হিসাবে ০-এর ধারণার উদ্ভব ভারতে হয়েছিল বলে মনে করা হয়।[৮০] খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দী থেকেই ভারতে অন্যান্য সংখ্যার মতই ব্যবহারিক গণিতে, এমনকি বিভাজনেও, শূন্যের প্রচলন ছিল। [৮০][৮১] ব্রহ্মগুপ্ত (৫৯৮–৬৬৮) পেল সমীকরণের সমাধান করেছিলেন।[৮২] দ্বিতীয় ভাস্কর ১১৫০ সালে চিরস্থায়ী গতিশীল যন্ত্রের খসড়া বানিয়েছিলেন। তিনি একটি চিরস্থায়ী ঘুর্ণনশীল চাকার বর্ণনা করেছিলেন।[৮৩]
খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর শেষ ভাগে আর্যভট্ট ত্রিকোণমিতির সাইন ও ভেরসাইনের ব্যবহার জানতেন। এর সাহায্যে সহজেই যে কোসাইন নির্ণয় করা যায় সেটাও তিনি জানতেন।[৮৪][৮৫] আজকের "রোলের উপপাদ্য" নামের কলনবিদ্যার উপপাদ্যটি খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতেই ভারতীয় গণিতজ্ঞ দ্বিতীয় ভাস্কর বর্ণনা করেছিলেন।[৮৬]
রঞ্জক হিসাবে নীলের (ইন্ডিগোফেরা টিঙ্কটোরিয়া বা ইংরাজি: Indigofera tinctoria) বহুল ব্যবহার ভারতে প্রচলিত ছিল।[৮৭] রেশম পথ ধরে রঞ্জক হিসাবে নীল গ্রীক ও রোমানদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল এক মহার্ঘ্য ভোগ্য বস্তু হিসাবে।[৮৭] কাশ্মীরে পশমিনা শাল হাতে তৈরী করা হত।[৮৮] কাশ্মীর অঞ্চলের পশমের শালের উল্লেখ বিভিন্ন লেখায় খৃঃ পূঃ ৩য় শতাব্দী থেকে খৃষ্টীয় ১১শ শতকের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।[৮৯] গুপ্ত যুগে চিনির ব্যবহার শুরু হয়,[৯০] এবং প্রাচীনতম মিছরির ব্যবহারের উল্লেখ ভারতেই পাওয়া যায়।[৯১] পাট চাষ ভারতেই হত।[৯২] ইরাকের মসুল শহরে প্রথমবার এই কাপড় ইউরোপীয়রা দেখতে পেয়েছিল বলে নাম হয়েছিল মসলিন, কিন্তু এই কাপড় তৈরী হত বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায়।[৯৩][৯৪] খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দীতে, সুলেমান নামক আরব ব্যবসায়ী লিখেছেন এই কাপড়ের উৎস হল বঙ্গ (আরবি ভাষায় রুহমল)।[৯৪]
ইউরোপীয় পন্ডিত ফ্রান্সেস্কো লোরেঞ্জো পুলি একাধিক ভারতীয় মানচিত্র নকল করেছিলেন তাঁর লা কার্টোগ্রাফিয়া অ্যাণ্টিকা ডেল ইন্ডিয়া নামে মহাগ্রন্থে।[৯৫] এই মানচিত্রগুলির মধ্যে, দুটি নকল করা হয়েছিলএকাদশ শতাব্দীর কাশ্মীরী পণ্ডিত ক্ষেমেন্দ্র রচিত গ্রন্থ লোকপ্রকাশ থেকে নেওয়া হয়েছিল।[৯৫] এছাড়া, সমগ্র গ্রন্থ থেকেও অনেক মানচিত্র নকল করা হয়েছিল পুলির গ্রন্থে।[৯৫]
১১শ শতাব্দীর রাজা ভোজের লেখা সমরাঙ্গণ সূত্রধারা নামক সংস্কৃত ভাষার গ্রন্থে একটি অধ্যায়ে যান্ত্রিক মৌমাছি ও পাখি, মানবাকৃতির ও পশু আকৃতির ঝরণা এবং যান্ত্রিক নারী-পুরুষ পুতুল (যে গুলি তৈলপ্রদীপে তেল ভরা থেকে শুরু করে নৃত্য পরিবেশন, বাদ্যযন্ত্র বাদন, এমনকি বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক দৃশ্যের অভিনয় করতে সক্ষম ছিল) প্রভৃতি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বানাবার কথা বলা আছে। [৯৬][৯৭][৯৮]
মধ্য যুগের শেষভাগ
সঙ্গমাগ্রামের মাধব (খৃষ্টীয় ১৩৪০ - ১৪২৫) ও তাঁর কেরালার জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত বিদ্যালয় গাণিতিক বিশ্লেষণের প্রতিষ্ঠা ও উন্নতি সাধন করে।[৯৯] মাধব প্রথম π-এর অসীম ক্রমের কথা বলে. তিনি ক্রমের সম্প্রসারণ ব্যবহার করে -এর যে অসীম ক্রমের উপস্থাপনা করেন, তা আজ মাধব-গ্রেগরি ক্রম নামে পরিচিত। এই ক্রমের সীমিত সমষ্টির চ্যুতির যুক্তিসঙ্গত আসন্নমানের যে গনণা তাঁরা করেছিলেন তা বিশেষ আগ্রহের বিষয়। তাঁরা এই চ্যুতিকে এমন কৌশলে ব্যবহার করেছিলেন যাতে -এর একটি দ্রুততর অভিসারী ক্রম পাওয়া যায়। তাঁরা এই উন্নত ক্রম ব্যবহার করে ১০৪৩৪৮/৩৩২১৫ অঙ্কটি নির্ণয় করেন যা -এর নবম দশমিক স্থান পর্যন্ত সঠিক মান নির্ণয় করতে সক্ষম ছিল, যথা, ৩.১৪১৫৯২৬৫৩ (-এর আরও নিখুঁত মান হল ৩.১৪১৫৯২৬৫৩৫৮৯৭...)।[১০০] ১৫শ শতাব্দীতে কেরালার গণিত বিদ্যালয়ের গণিতজ্ঞেরা ত্রিকোণমিতিক অপেক্ষকের (সাইন, কোসাইন ও আর্ক ট্যানজেন্ট) জন্য বিভিন্ন ধরণের গাণিতিক ক্রমের প্রভুত উন্নতি সাধন করেন।[১০১] ইউরোপে কলনবিদ্যা উদ্ভাবনের দুই শতাব্দী আগেই তাঁরা যা কাজ করেছিলেন তা আজ ঘাত শ্রেণীর (গুণোত্তর শ্রেণী ব্যতিরেকে) প্রাচীনতম উদাহরণ হিসাবে পরিচিত।[১০১]
শের শাহ ইসলামি চিহ্ন সম্বলিত রৌপ্য মুদ্রার প্রচলন করেছিলেন, যা পরে মুঘল সাম্রাজ্য অনুকরণ করে।[৩৮] চৈনিক ব্যবসায়ী মা হুয়ান (১৪১৩-৫১) কোচিতে দেখেছিলেন ফানম নামের স্বর্ণমুদ্রা। চৈনিক ওজনের হিসাবে এই মুদ্রার ওজন ছিল মোট এক ফেন ও এক ইল-এর সমতুল্য।[১০২] উচ্চমানের এই স্বর্ণমুদ্রাগুলির বিনিময়ে চীনে চার ইল ওজনের ১৫টি রৌপ্যমুদ্রা সহজেই পাওয়া যেত।[১০২]
কেরালার জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত বিদ্যালয়ের নীলকন্ঠ সোময়াজি খৃষ্টীয় ১৫০০ শতাব্দীতে তাঁর তন্ত্রসংগ্রহ গ্রন্থে আর্যভট্টের বুধ ও শুক্রগ্রহের উপবৃত্তাকার কক্ষপথ সংক্রান্ত ধারণার পরিমার্জন করেছিলেন। এই গ্রহগুলির কেন্দ্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাঁর সমীকরণ ১৭শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় জ্যোতির্বিদ জোহানেস কেপলারের আগমনের আগে পর্যন্ত সবথেকে সঠিক গণনা পদ্ধতি ছিল।[১০৩]
৯৯৮ হিজরি সালে (খৃঃ ১৫৮৯-৯০) কাশ্মীরে আলি কাশ্মীরী ইবন লাকমান জোড়হীন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক গোলকের উদ্ভাবন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে, মুঘল শাসনকালে লাহোর ও কাশ্মীরে আরও কুড়িটি অনুরূপ গোলক তৈরী হয়।[১০৪] ১৯৮০-এর দশকে এই গোলকগুলির পুনরাবিষ্কারের আগে, আধুনিক ধাতুবিদেরা, যাবতীয় আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্বেও, জোড়হীন ধাতব গোলক বানানো অসম্ভব বলে মনে করতেন।[১০৪] এই মুঘল ধাতুবিদেরা ভারেওয়া পদ্ধতি[১০৫] বা হৃতমোম ঢালাই (ইংরাজি:lost-wax casting) পদ্ধতিতে পথিকৃত ছিলেন।[১০৪]
ভারতে মঙ্গোল আক্রমণের মাধ্যমে বারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্রের আমদানি হয়েছিল।[১০৬][১০৭] দিল্লির সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি মঙ্গোলদের পরাজিত করায়, কিছু মঙ্গোল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে উত্তর ভারতে পাকাপাকিভাবে থেকে যায়।[১০৭] 'তারিখ-ই ফিরিস্তায় (১৬০৬–১৬০৭) লেখা আছে ১২৫৮ খৃষ্টাব্দে মঙ্গোল শাসক হালাকু খানের দূতকে স্বাগত জানাতে দিল্লিতে আতসবাজির প্রদর্শনী করা হয়।[১০৮] তৈমুরীয় শাসক শাহ রূখের (১৪০৫-১৪৪৭) ভারতীয় দূতাবাসের আব্দ অল-রাজ্জাক বলেছেন হাতির পিঠে বসে ন্যাপথা ছুঁড়ে নানা ধরনের আতসবাজির প্রদর্শনী দেখানো হত।[১০৯] ১৩৬৬ সালে বিজয়নগর সাম্রাজ্যে তোপ-ও-তুফাক নামে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হত।[১০৮] এই সময় থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের যুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্রের বহুল ব্যবহার শুরু হয়। ১৪৭৩ সালে বেলগাঁও-এ বাহমানি সুলতান মুহম্মদ শাহ বাহমনির অবরোধের মত সমরকৌশল, যা মধ্যযুগে আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধের অন্যতম অভিজ্ঞান, প্রায়শঃই দেখা যেতে শুরু করে।[১১০]
জেমস রিডিক পার্টিংটন তাঁর গ্রীক আগুন ও বারুদের ইতিহাস (A History of Greek Fire and Gunpowder, বাংলা ভাষায় আ হিস্টোরি অফ গ্রীক ফায়ার অ্যান্ড গানপাউডার) গ্রন্থে ১৬শ ও ১৭শ শতাব্দীর মুঘল ভারতে আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধের বর্ণনা করেছেন, এবং লিখেছেন যে, "ইউরোপে ব্যবহার করার আগে ভারতীয় যুদ্ধ রকেটগুলি ভয়ঙ্কর অস্ত্র ছিল। বাঁশের লাঠিতে লোহার ছুঁচালো মাথাযুক্ত রকেটগুলি বাঁধা থাকত। সলতেয় অগ্নিসংযোগ করে লক্ষ্যবস্তুর দিকে তাক করে চালনা করা হত, তবে গতিপথ অনিশ্চিত ছিল ... আকবর ও জাহাঙ্গীরের আমলে বিস্ফোরক মাইন ও পাল্টা-মাইন ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়।"[১১১] ভারতে এই রকেটগুলি তীর-এ-হাওয়াই বা অগ্নি বাণ নামেও পরিচিত ছিল।[১১২]
১৬শ শতাব্দী থেকেই, ভারতে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বানানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাঞ্জোর, ঢাকা, বিজাপুর ও মুর্শিদাবাদে, বিশেষ করে, বড় বড় কামান দেখা যেতে শুরু করে।[১১৩] কালিকট (১৫০৪) ও দিউ (১৫৩৩) থেকে ব্রোঞ্জের কামান পাওয়া গেছে।[১১১] ১৭শ শতাব্দীতে গুজরাট থেকে ইউরোপে শোরা রপ্তানি করা হত আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।[১১৪] বাংলা ও মালওয়াতে শোরা প্রস্তুত করা হত।[১১৪] ইংরেজ, ফরাসি, ওলন্দাজ ও পর্তুগীজেরা ছাপরাকে কেন্দ্র করে শোরা পরিশোধন করত।[১১৫]
জল সরবরাহ নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির বর্ণনা পাওয়া যায় বিভিন্ন আরবি ও ফার্সি ভাষার গ্রন্থে।[১১৬] মধ্যযুগে, ভারতীয় ও পারসিক সেচ প্রযুক্তির আদান-প্রদানের কারণে এক উন্নত সেচ ব্যবস্থার প্রচলন হয়, ফলে অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে জনজীবনে সামগ্রিক উন্নতিও দেখা যায়।[১১৬] কাশ্মীরের ১৫শ শতাব্দীর শাসক, জায়ন-উল-আবিদিনকে পশমিনা শিল্পের জনক বলে মনে করা হয়। তিনি মধ্য এশিয়া থেকে বয়নশিল্পীদের এনে এই শিল্পের পত্তন করেন।[৮৯]
উত্তর প্রদেশের জৌনপুরের পন্ডিত সাদিক ইস্ফাহানি বিশ্বের কিছু অংশের মানচিত্রের এক সঙ্কলন করেছিলেন, যা তাঁর মতে 'মানব জীবনের জন্য উপযুক্ত'।[১১৭] ৩২পাতার এই সঙ্কলন—সেই যুগের ইসলামী সংস্কৃতির সাথে সাযুয্য রেখে দক্ষিণমুখী—ইস্ফাহানি করেছিলেন ১৬৪৭ সালে এক বৃহৎ শিক্ষামূলক গ্রন্থের অংশ হিসাবে।[১১৭] জোসেফ ই. স্বোয়ার্টজবার্গের মতে (২০০৮): 'বৃহত্তম ভারতীয় মানচিত্রটি প্রাক্তন রাজপুত রাজধানী অম্বরের প্রতিটি বাড়ির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ সম্বলিত ছিল আর তার আয়তন ছিল ৬৬১ × ৬৪৫ সে.মি. (২৬০ × ২৫৪ ইঞ্চি, বা প্রায় ২২ × ২১ ফুট)।'[১১৮]
ঔপনিবেশিক যুগ
-
মহীশূরের সুলতান হায়দর আলির সৈন্যবাহিনী এক ধরনের রকেট ব্যবহার করত, যাতে কাগজের বদলে ধাতব খোলসে বারুদ ঠাসা হত।
-
১৮৭১ সালে ভারতীয় রেল পরিবহন ব্যবস্থার ব্যাপ্তি; নির্মাণ শুরু হয় ১৮৫৬ সালে।
-
১৯০৯ সালে ভারতীয় রেল পরিবহন ব্যবস্থা।
-
জগদীশ চন্দ্র বসু ভারতীয় উপমহাদেশে পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের ভিত গড়ে তোলেন।[১১৯] তাঁকে বেতার বিজ্ঞানের অন্যতম জনক বলে মনে করা হয়।[১২০]
-
পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু ১৯২০-এর দশকে বসু-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান বিষয়ক গবেষণার জন্য পরিচিত।
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনুসারে দ্রাবিড় জাতি স্বাভাবিক কারণে সমুদ্রগামী হওয়ায় মানচিত্র নির্মাণ করত।[১২১] এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকাতে (২০০৮), স্টিফেন অলিভার ফট ও জন এফ. গিলমার্টিন, জুনিয়ার ১৮শ শতাব্দীতে মহীশূরের বারুদ প্রযুক্তির বিশদ বর্ণনা করে বলেছেন:[১২২]
মহীশূরের সুলতান হায়দার আলী, যুদ্ধ রকেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করেন: বিস্ফোরক বহনকারী পাত্র হিসাবে ধাতুর চোঙ ব্যবহার করেন। যদিও পেটানো নরম লোহার এই নলগুলির গুণগত মান অত্যন্ত সাধারণ ছিল, তবে আগের কাগজের চোঙের তুলনায় বিস্ফোরক শক্তি অনেক বেশি ছিল। ফলে এই অতিরিক্ত অভ্যন্তরীণ চাপ রকেটগুলিকে দ্রুততর গতিতে অধিক দূরত্বে নিক্ষেপ করতে সাহায্য করত। রকেটের চোঙটি চামড়ার ফিতা দিয়ে লম্বা বাঁশের লাঠিতে বাঁধা থাকত। সম্ভবত এক মাইলের তিন চতুর্থাংশ (এক কিলোমিটারেরও বেশি) পর্যন্ত রকেটের পাল্লা ছিল। যদিও পৃথকভাবে দেখলে এই রকেটগুলির লক্ষ্য খুব একটা স্থির ছিলনা, তবে অনেক সংখ্যক রকেটের যুগপত আক্রমণের সময় নিখুঁত লক্ষ্যের প্রয়োজন পড়ত না। এই রকেটগুলি বিশেষ করে ঘোড়সওয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশি কার্যকর ছিল। ব্যবহার করার দুটি পদ্ধতি ছিল, - হাতে ধরে সলতেয় অগ্নিসংযোগ করে হাওয়ায় নিক্ষেপ করে, অথবা, শক্ত, শুকনো মাটিতে শুইয়ে সলতেয় অগ্নিসংযোগের ফলে মাটিতে ঘষটে রকেটগুলি ধাবিত হত। হায়দার আলীর ছেলে, টিপু সুলতান, রকেট অস্ত্র ব্যবহারের বিকাশ ও সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছিলেন ও রকেট পরিচালনকারী সেনার সংখ্যা ১,২০০ থেকে বাড়িয়ে ৫,০০০ করেন। ১৭৯২ এবং ১৭৯৯ সালের শ্রীরঙ্গপত্তনের যুদ্ধে এই রকেটগুলি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে।
১৮শ শতাব্দীর শেষে ভারতীয় ডাক ব্যবস্থা অতীব দক্ষ হয়ে ওঠে।[১২৩] যেমন, টমাস ব্রোটনের বক্তব্য অনুযায়ী, যোধপুর মহারাজা তাঁর রাজধানী থেকে ৩২০ কি.মি. দূরে নাথাদেওরার মন্দিরে প্রত্যেক দিন তাজা ফুলের অর্ঘ্য পাঠাতেন, যা পরের দিন সূর্য্যোদয়ের সাথে সাথে ঠিক প্রথম দর্শনের সময় পৌঁছে যেত।[১২৩] পরবর্তী পর্যায়ে ব্রিটিশ রাজ আসার সঙ্গে ডাক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হয়।[১২৪] ১৮৩৭ সালের ১৭তম পোস্ট অফিস আইন (The Post Office Act XVII of 1837) বলে ভারতের গভর্নর-জেনারেল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এলাকার যে কোনো স্থানে ডাক মাধ্যমে সংবাদ পাঠাতে পারতেন।[১২৪] কিছু আধিকারিকের এই বিনামূল্যে ডাক ব্যবস্থা ব্যবহার করার সুবিধা, পরের দিকে বিতর্কের সৃষ্টি করে।[১২৪] ১লা অক্টোবর ১৮৩৭ সালে ভারতীয় পোস্ট অফিস পরিষেবার সূচনা হয়।[১২৪] কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্রিটিশেরা ভারতে এক সুবিশাল রেল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলে।[১২৫]
ভারতে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থা মূলতঃ স্থানীয় জন সমাজ থেকে পুর ও প্রশাসনিক চাকরির যোগ্য প্রার্থী তৈরী করার উদ্দেশ্যে চালু হলেও, এর ফলে ভারতীয় ছাত্রদের কাছে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা খুলে যায়।[১২৬] স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু (১৮৫৮–১৯৩৭), আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (১৮৬১-১৯৪৪), সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪–১৯৭৪), মেঘনাদ সাহা (১৮৯৩–১৯৫৬), প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ (১৮৯৩–১৯৭২), স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন (১৮৮৮–১৯৭০), সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর (১৯১০–১৯৯৫), হোমি জাহাঙ্গীর ভাভা (১৯০৯–১৯৬৬), শ্রীনিবাস রামানুজন (১৮৮৭–১৯২০), উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী (১৮৭৩–১৯৪৬), বিক্রম সারাভাই (১৯১৯–১৯৭১), হর গোবিন্দ খোরানা (১৯২২–২০১১), হরিশ চন্দ্র (১৯২৩–১৯৮৩), এবং আবদুস সালাম (১৯২৬-১৯৯৬) হলেন এই সময়ের কিছু উল্লেখযোগ্য কৃতি বিজ্ঞানী।[১২৬]
ঔপনিবেশিক যুগে স্থানীয় ও ঔপনিবেশিক বিজ্ঞান গবেষণার গভীর আদান-প্রদান ছিল।[১২৭] পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের প্রভাবকে শুধুমাত্র ঔপনিবেশিক সত্তা হিসাবে দেখা হত না বরং ভারতীয় জাতি গঠনে এর উপযোগিতা,[১২৮] বিশেষ করে কৃষি ও বাণিজ্যে পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য ছিল।[১২৭] ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েন।[১২৮] ভারতের স্বাধীনতার সময় ঔপনিবেশিক যুগে গড়ে ওঠা ভারতীয় বিজ্ঞান সারা বিশ্বে সমাদৃত হতে শুরু করে।
ফরাসি জ্যোতির্বিদ, পিয়ের জ্যানসেন ১৮ই আগস্ট ১৮৬৮ সালের সূর্যগ্রহণ নিরীক্ষা করে হিলিয়াম গ্যাস আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ রাজ্যের গুন্টুর থেকে।[১২৮] ১৮৯৭ সালে স্যার রোনাল্ড রস প্রথমে সেকেন্দ্রাবাদে ও পরে কলকাতায় গবেষণা করে আবিষ্কার করেন ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ মশক-বাহিত।[১২৯][১৩০] এই কাজের জন্য তিনি নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।[১৩১]
আরও দেখুন
টিকা
- ↑ (ইংরেজি)http://www.assemblage.group.shef.ac.uk/issue7/chauhan.html#distribution ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে Distribution of Acheulian sites in the Siwalik region]
- ↑ ক খ Kenoyer, 230
- ↑ ক খ Rodda & Ubertini, 279
- ↑ Rodda & Ubertini, 161
- ↑ Stein, 47
- ↑ ক খ Sharpe (1998)
- ↑ ক খ গ Baber, 23
- ↑ ক খ Rao, ২৭–২৮
- ↑ ক খ গ Dales, 3–22 [10]
- ↑ ক খ Baber, 20
- ↑ Finger, 12
- ↑ ক খ "We now believe that some form of mapping was practiced in what is now India as early as the Mesolithic period, that surveying dates as far back as the Indus Civilization (ca. 2500–1900 BCE), and that the construction of large-scale plans, cosmographic maps, and other cartographic works has occurred continuously at least since the late Vedic age (first millennium BCE)" — Joseph E. Schwartzberg, 1301. ["আমরা এখন বিশ্বাস করি যে সুপ্রাচীন মেসোলিথিক যুগ থেকেই আজকের ভারতে কিছুটা হলেও মানচিত্র নির্মাণ করা হত, এটাও বিশ্বাস করি যে জরীপের কাজ খৃঃ পূঃ ২৫০০-১৯০০ সময়কালে সিন্ধু সভ্যতার সময় প্রচলিত ছিল, এবং বৃহদাকার নির্মাণ পরিকল্পনা, মহাকাশবিদ্যা সংক্রান্ত অঙ্কণ, মানচিত্রনির্মাণ সংক্রান্ত কাজ নিয়মিত হত অন্ততঃ বৈদিক যুগের শেষের দিকে (খৃঃ পূঃ প্রথম সহস্রাব্দ)।"— জোসেফ ই. স্বোয়ার্টজবার্গ, ১৩০১"]
- ↑ Schwartzberg, 1301-1302
- ↑ Schwartzberg, 1301
- ↑ Lal (2001)
- ↑ ক খ Allchin, 111-112
- ↑ Banerji, 673
- ↑ Sircar, 62
- ↑ Sircar, 67
- ↑ ক খ গ Hayashi, 360-361
- ↑ Seidenberg, 301-342
- ↑ ক খ গ Joseph, 229
- ↑ Cooke, 200
- ↑ (Boyer 1991, "China and India" p. 207)
- ↑ (ইংরেজি)Subbarayappa, B. V. (১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯)। "Indian astronomy: An historical perspective"। Biswas, S. K.; Mallik, D. C. V.; C. V. Vishveshwara। Cosmic Perspectives। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 25–40। আইএসবিএন 978-0-521-34354-1।
- ↑ Subbaarayappa, 25-41
- ↑ ক খ গ Tripathi, 264-267
- ↑ Thrusfield, 2
- ↑ Dwivedi & Dwivedi (2007)
- ↑ Kearns & Nash (2008)
- ↑ Lock etc., 420
- ↑ ক খ গ ঘ Finger, 66
- ↑ Lade & Svoboda, 85
- ↑ Encyclopædia Britannica (2008), Linguistics.
- ↑ Staal, Frits (১৯৮৮)। Universals: studies in Indian logic and linguistics। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 47।
- ↑ Dhavalikar, 330-338
- ↑ Sellwood (2008)
- ↑ ক খ Allan & Stern (2008)
- ↑ Craddock (1983)
- ↑ Arun Kumar Biswas, The primacy of India in ancient brass and zinc metallurgy, Indian J History of Science, 28(4) (1993) page 309-330 and Brass and zinc metallurgy in the ancient and medieval world: India’s primacy and the technology transfer to the west, Indian J History of Science, 41(2) (2006) 159-174
- ↑ F.R. Allchin, 111-112
- ↑ Allchin, 114
- ↑ ক খ Tewari (2003)
- ↑ Ceccarelli, 218
- ↑ ক খ Drakonoff, 372
- ↑ Dikshitar, pg. 332
- ↑ Encyclopædia Britannica (2008), suspension bridge.
- ↑ Encyclopædia Britannica (2008), Pagoda.
- ↑ Japanese Architecture and Art Net Users System (2001), torii.
- ↑ ক খ Livingston & Beach, xxiii
- ↑ Oliver Leaman, Key Concepts in Eastern Philosophy. Routledge, 1999, page 269.
- ↑ Chattopadhyaya 1986, পৃ. 169–70
- ↑ (ইংরেজি)Radhakrishnan 2006, পৃ. 202
- ↑ (Stcherbatsky 1962 (1930). Vol. 1. P. 19)
- ↑ ক খ Ghosh, 219
- ↑ "Ornaments, Gems etc." (Ch. 10) in Ghosh 1990.
- ↑ Srinivasan & Ranganathan
- ↑ Srinivasan (1994)
- ↑ Srinivasan & Griffiths
- ↑ ক খ গ Baber, 57
- ↑ ক খ গ Wenk, 535-539
- ↑ (ইংরেজি)MSN Encarta (2007), Diamond. Archived 2009-10-31.
- ↑ Lee, 685
- ↑ Balasubramaniam, R., 2002
- ↑ Craddock, 13
- ↑ Britannica Concise Encyclopedia (2007), spinning wheel.
- ↑ Encyclopeedia Britnnica (2008). spinning.
- ↑ MSN Encarta (2008), Spinning. Archived 2009-10-31.
- ↑ ক খ Baber, 56
- ↑ ক খ Kieschnick, 258
- ↑ Fowler, 11
- ↑ Singh, 623-624
- ↑ Sanchez & Canton, 37
- ↑ Smith (1958), page 258
- ↑ ক খ Bourbaki (1998), page 49
- ↑ Smith (1958), page 257-258
- ↑ Georges Ifrah: From One to Zero. A Universal History of Numbers, Penguin Books, 1988, আইএসবিএন ০-১৪-০০৯৯১৯-০, pp. 200-213 (Egyptian Numerals)
- ↑ Ifrah, 346
- ↑ Jeffrey Wigelsworth (১ জানুয়ারি ২০০৬)। Science And Technology in Medieval European Life। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 18। আইএসবিএন 978-0-313-33754-3।
- ↑ ক খ Bourbaki, 46
- ↑ Britannica Concise Encyclopedia (2007). algebra
- ↑ Stillwell, 72-73
- ↑ Lynn Townsend White, Jr.
- ↑ O'Connor, J. J. & Robertson, E.F. (1996)
- ↑ "Geometry, and its branch trigonometry, was the mathematics Indian astronomers used most frequently. In fact, the Indian astronomers in the third or fourth century, using a pre-Ptolemaic Greek table of chords, produced tables of sines and versines, from which it was trivial to derive cosines. This new system of trigonometry, produced in India, was transmitted to the Arabs in the late eighth century and by them, in an expanded form, to the Latin West and the Byzantine East in the twelfth century" - Pingree (2003) ["ভারতীয় জ্যোতির্বিদেরা জ্যামিতি ও তার শাখা ত্রিকোণমিতির নিয়মিত ব্যবহার করতেন। ভারতীয় জ্যোতির্বিদরা খৃষ্টীয় তৃতীয় অথবা চতুর্থ শতাব্দীতেই টলেমির পূর্ববর্তী সময়ের বৃত্তের জ্যায়ের গ্রীক সারণীর ভিত্তিতে সাইন ও ভেরসাইনের সারণী নির্মাণ করেন। ভারতীয় এই নতুন ত্রিকোণমিতির পদ্ধতি আরবদের কাছে যায় খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর শেষের দিকে, তারপর তারা এর পরিবর্ধিত সংস্করণ ছাড়ে ইউরোপীয় ও বাইজ্যান্টাইন সভ্যতার কাছে দ্বাদশ শতাব্দীর সময়কালে।" - পিংগ্রী (২০০৩)।]
- ↑ Broadbent, 307–308
- ↑ ক খ Kriger & Connah, 120
- ↑ Encyclopædia Britannica (2008), cashmere.
- ↑ ক খ Encyclopædia Britannica (2008), Kashmir shawl.
- ↑ Shaffer, 311
- ↑ Kieschnick (2003)
- ↑ Encyclopædia Britannica (2008), jute.
- ↑ Karim, Abdul (২০১২)। "Muslin"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh।
- ↑ ক খ Ahmad, 5–26
- ↑ ক খ গ Sircar 328
- ↑ Varadpande, Manohar Laxman (১৯৮৭)। History of Indian Theatre, Volume 1। পৃষ্ঠা 68।
- ↑ Wujastyk, Dominik (২০০৩)। The Roots of Ayurveda: Selections from Sanskrit Medical Writings। পৃষ্ঠা 222।
- ↑ Needham, Joseph (১৯৬৫)। Science and Civilisation in China: Volume 4, Physics and Physical Technology Part 2, Mechanical Engineering। পৃষ্ঠা 164।
- ↑ J J O'Connor; E F Robertson। "Mādhava of Sangamagrāma"। Biography of Madhava। School of Mathematics and Statistics University of St Andrews, Scotland। ২০০৬-০৫-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০৮।
- ↑ Roy, 291-306
- ↑ ক খ Stillwell, 173
- ↑ ক খ Chaudhuri, 223
- ↑ Joseph, George G. (2000), The Crest of the Peacock: Non-European Roots of Mathematics, Penguin Books, আইএসবিএন ০-৬৯১-০০৬৫৯-৮.
- ↑ ক খ গ Savage-Smith (1985)
- ↑ (ইংরেজি)"BHAREWA art – Cast in Bronze: Ancient Technology of Lost Wax Casting"। Aakanksha Roychowdhury। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ Iqtidar Alam Khan (২০০৪)। Gunpowder And Firearms: Warfare In Medieval India। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-566526-0।
- ↑ ক খ Iqtidar Alam Khan (২৫ এপ্রিল ২০০৮)। Historical Dictionary of Medieval India। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 157। আইএসবিএন 978-0-8108-5503-8।
- ↑ ক খ Khan, 9-10
- ↑ Partington, 217
- ↑ Khan, 10
- ↑ ক খ Partington, 226
- ↑ (ইংরেজি)H. M. Iftekhar Jaim; Jasmine Jaim (৪ অক্টোবর ২০১৪)। "Jaim H.M.I., Jaim J. (2014) War Rockets in India. In: Selin H. (eds) Encyclopaedia of the History of Science, Technology, and Medicine in Non-Western Cultures. Springer, Dordrecht"। Springer, Dordrecht। ডিওআই:10.1007/978-94-007-3934-5_10216-1। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ Partington, 225
- ↑ ক খ Encyclopædia Britannica (2008), India.
- ↑ Encyclopædia Britannica (2008), Chāpra.
- ↑ ক খ Siddiqui, 52–77
- ↑ ক খ Schwartzberg, 1302
- ↑ Schwartzberg, 1303
- ↑ Chatterjee, Santimay and Chatterjee, Enakshi, Satyendranath Bose, 2002 reprint, p. 5, National Book Trust, আইএসবিএন ৮১-২৩৭-০৪৯২-৫
- ↑ (ইংরেজি)Sen, A. K. (১৯৯৭)। "Sir J.C. Bose and radio science"। Microwave Symposium Digest। IEEE MTT-S International Microwave Symposium। Denver, CO: IEEE। পৃষ্ঠা 557–560। আইএসবিএন 0-7803-3814-6। ডিওআই:10.1109/MWSYM.1997.602854।
- ↑ Sircar 330
- ↑ Encyclopædia Britannica (2008), rocket and missile system.
- ↑ ক খ Peabody, 71
- ↑ ক খ গ ঘ Lowe, 134
- ↑ Seaman, 348
- ↑ ক খ Raja (2006)
- ↑ ক খ Arnold, 211
- ↑ ক খ গ Arnold, 212
- ↑ (ইংরেজি)Ross, R (১৮৯৭)। "On some Peculiar Pigmented Cells Found in Two Mosquitos Fed on Malarial Blood"। British Medical Journal। 2 (1929): 1786–8। ডিওআই:10.1136/bmj.2.1929.1786। পিএমআইডি 20757493। পিএমসি 2408186 ।
- ↑ (ইংরেজি)Sinden, Robert E। "Malaria, mosquitoes and the legacy of Ronald Ross"। World Health Organization। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ (ইংরেজি)"Ronald Ross – Facts"। Nobel Media AB। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৪।
তথ্যসূত্র
- Allan, J. & Stern, S. M. (2008), coin, Encyclopædia Britannica.
- Allchin, F.R. (1979), South Asian Archaeology 1975: Papers from the Third International Conference of the Association of South Asian Archaeologists in Western Europe, Held in Paris edited by J.E.van Lohuizen-de Leeuw, Brill Academic Publishers, আইএসবিএন ৯০-০৪-০৫৯৯৬-২.
- Ahmad, S. (2005), "Rise and Decline of the Economy of Bengal", Asian Affairs, 27 (3): 5–26.
- Arnold, David (2004), The New Cambridge History of India: Science, Technology and Medicine in Colonial India, Cambridge University Press, আইএসবিএন ০-৫২১-৫৬৩১৯-৪.
- Baber, Zaheer (1996), The Science of Empire: Scientific Knowledge, Civilization, and Colonial Rule in India, State University of New York Press, আইএসবিএন ০-৭৯১৪-২৯১৯-৯.
- Balasubramaniam, R. (2002), Delhi Iron Pillar: New Insights, Indian Institute of Advanced Studies, আইএসবিএন ৮১-৭৩০৫-২২৩-৯.
- BBC (2006), "Stone age man used dentist drill".
- Bourbaki, Nicolas (1998), Elements of the History of Mathematics, Springer, আইএসবিএন ৩-৫৪০-৬৪৭৬৭-৮.
- Broadbent, T. A. A. (1968), "Reviewed work(s): The History of Ancient Indian Mathematics by C. N. Srinivasiengar", The Mathematical Gazette, 52 (381): 307–308.
- Ceccarelli, Marco (2000), International Symposium on History of Machines and Mechanisms: Proceedings HMM Symposium, Springer, আইএসবিএন ০-৭৯২৩-৬৩৭২-৮.
- Chaudhuri, K. N. (1985), Trade and Civilisation in the Indian Ocean, Cambridge University Press, আইএসবিএন ০-৫২১-২৮৫৪২-৯.
- Craddock, P.T. etc. (1983), Zinc production in medieval India, World Archaeology, 15 (2), Industrial Archaeology.
- Cooke, Roger (2005), The History of Mathematics: A Brief Course, Wiley-Interscience, আইএসবিএন ০-৪৭১-৪৪৪৫৯-৬.
- Coppa, A. etc. (2006), "Early neolithic tradition of dentistry", Nature, 440: 755-756.
- Dales, George (1974), "Excavations at Balakot, Pakistan, 1973", Journal of Field Archaeology, 1 (1-2): 3–22 [10].
- Dhavalikar, M. K. (1975), "The beginning of coinage in India", World Archaeology, 6 (3): 330-338, Taylor & Francis.
- Dikshitar, V. R. R. (1993), The Mauryan Polity, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৮১-২০৮-১০২৩-৬.
- Drakonoff, I. M. (1991), Early Antiquity, University of Chicago Press, আইএসবিএন ০-২২৬-১৪৪৬৫-৮.
- Fowler, David (1996), "Binomial Coefficient Function", The American Mathematical Monthly, 103 (1): 1-17.
- Finger, Stanley (2001), Origins of Neuroscience: A History of Explorations Into Brain Function, Oxford University Press, আইএসবিএন ০-১৯-৫১৪৬৯৪-৮.
- Ghosh, Amalananda (1990), An Encyclopaedia of Indian Archaeology, Brill Academic Publishers, আইএসবিএন ৯০-০৪-০৯২৬২-৫.
- Hayashi, Takao (2005), "Indian Mathematics", The Blackwell Companion to Hinduism edited by Gavin Flood, pp. 360–375, Basil Blackwell, আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০৫১-৩২৫১-০.
- Hopkins, Donald R. (2002), The Greatest Killer: Smallpox in history, University of Chicago Press, আইএসবিএন ০-২২৬-৩৫১৬৮-৮.
- Ifrah, Georges (2000), A Universal History of Numbers: From Prehistory to Computers, Wiley, আইএসবিএন ০-৪৭১-৩৯৩৪০-১.
- Joseph, G. G. (2000), The Crest of the Peacock: The Non-European Roots of Mathematics, Princeton University Press, আইএসবিএন ০-৬৯১-০০৬৫৯-৮.
- Kearns, Susannah C.J. & Nash, June E. (2008), leprosy, Encyclopædia Britannica.
- Kenoyer, J.M. (2006), "Neolithic Period", Encyclopedia of India (vol. 3) edited by Stanley Wolpert, Thomson Gale, আইএসবিএন ০-৬৮৪-৩১৩৫২-৯.
- Khan, Iqtidar Alam (1996), Coming of Gunpowder to the Islamic World and North India: Spotlight on the Role of the Mongols, Journal of Asian History 30: 41–5 .
- Kieschnick, John (2003), The Impact of Buddhism on Chinese Material Culture, Princeton University Press, আইএসবিএন ০-৬৯১-০৯৬৭৬-৭.
- Kriger, Colleen E. & Connah, Graham (2006), Cloth in West African History, Rowman Altamira, আইএসবিএন ০-৭৫৯১-০৪২২-০.
- Lade, Arnie & Svoboda, Robert (2000), Chinese Medicine and Ayurveda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৮১-২০৮-১৪৭২-X.
- Lal, R. (2001), "Thematic evolution of ISTRO: transition in scientific issues and research focus from 1955 to 2000", Soil and Tillage Research, 61 (1-2): 3–12 [3].
- Lee, Sunggyu (2006), Encyclopedia of Chemical Processing, CRC Press, আইএসবিএন ০-৮২৪৭-৫৫৬৩-৪.
- Livingston, Morna & Beach, Milo (2002), Steps to Water: The Ancient Stepwells of India, Princeton Architectural Press, আইএসবিএন ১-৫৬৮৯৮-৩২৪-৭.
- Lock, Stephen etc. (2001), The Oxford Illustrated Companion to Medicine, Oxford University Press, আইএসবিএন ০-১৯-২৬২৯৫০-৬.
- Lowe, Robson (1951), The Encyclopedia of British Empire Postage Stamps, 1661–1951 (vol. 3).
- MSNBC (2008), "Dig uncovers ancient roots of dentistry".
- Nair, C.G.R. (2004), "Science and technology in free India", Government of Kerala—Kerala Call, Retrieved on 2006-07-09.
- O'Connor, J. J. & Robertson, E.F. (1996), "Trigonometric functions".
- O'Connor, J. J. & Robertson, E. F. (2000), "Paramesvara".
- Partington, James Riddick & Hall, Bert S. (1999), A History of Greek Fire and Gunpowder, Johns Hopkins University Press, আইএসবিএন ০-৮০১৮-৫৯৫৪-৯.
- Peabody, Norman (2003), Hindu Kingship and Polity in Precolonial India, Cambridge University Press, আইএসবিএন ০-৫২১-৪৬৫৪৮-৬.
- Peele, Stanton & Marcus Grant (1999), Alcohol and Pleasure: A Health Perspective, Psychology Press, আইএসবিএন ১-৫৮৩৯১-০১৫-৮.
- Piercey, W. Douglas & Scarborough, Harold (2008), hospital, Encyclopædia Britannica.
- Pingree, David (2003), "The logic of non-Western science: mathematical discoveries in medieval India", Daedalus, 132 (4): 45-54.
- Raja, Rajendran (2006), "Scientists of Indian origin and their contributions", Encyclopedia of India (Vol 4.) edited by Stanley Wolpert, আইএসবিএন ০-৬৮৪-৩১৫১২-২.
- Rao, S. R. (1985), Lothal, Archaeological Survey of India.
- Rodda & Ubertini (2004), The Basis of Civilization—Water Science?, International Association of Hydrological Science, আইএসবিএন ১-৯০১৫০২-৫৭-০.
- Roy, Ranjan (1990), "Discovery of the Series Formula for by Leibniz, Gregory, and Nilakantha", Mathematics Magazine, Mathematical Association of America, 63 (5): 291-306.
- Sanchez & Canton (2006), Microcontroller Programming: The Microchip PIC, CRC Press, আইএসবিএন ০-৮৪৯৩-৭১৮৯-৯.
- Savage-Smith, Emilie (1985), Islamicate Celestial Globes: Their History, Construction, and Use, Smithsonian Institution Press, Washington, D.C.
- Schwartzberg, Joseph E. (2008), "Maps and Mapmaking in India", Encyclopaedia of the History of Science, Technology, and Medicine in Non-Western Cultures (2nd edition) edited by Helaine Selin, pp. 1301–1303, Springer, আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০২০-৪৫৫৯-২.
- Seaman, Lewis Charles Bernard (1973), Victorian England: Aspects of English and Imperial History 1837-1901, Routledge, আইএসবিএন ০-৪১৫-০৪৫৭৬-২.
- Seidenberg, A. (1978), The origin of mathematics, Archive for the history of Exact Sciences, 18: 301-342.
- Sellwood, D. G. J. (2008), coin, Encyclopædia Britannica.
- Shaffer, Lynda N., "Southernization", Agricultural and Pastoral Societies in Ancient and Classical History edited by Michael Adas, pp. 308–324, Temple University Press, আইএসবিএন ১-৫৬৬৩৯-৮৩২-০.
- Sharpe, Peter (1998), Sugar Cane: Past and Present, Southern Illinois University.
- Siddiqui, I. H. (1986), "Water Works and Irrigation System in India during Pre-Mughal Times", Journal of the Economic and Social History of the Orient, 29 (1): 52–77.
- Singh, A. N. (1936), "On the Use of Series in Hindu Mathematics", Osiris, 1: 606-628.
- Sircar, D.C.C. (1990), Studies in the Geography of Ancient and Medieval India, Motilal Banarsidass Publishers, আইএসবিএন ৮১-২০৮-০৬৯০-৫.
- Smith, David E. (1958). History of Mathematics. Courier Dover Publications. আইএসবিএন ০-৪৮৬-২০৪৩০-৮.
- Srinivasan, S. & Griffiths, D., "South Indian wootz: evidence for high-carbon steel from crucibles from a newly identified site and preliminary comparisons with related finds", Material Issues in Art and Archaeology-V, Materials Research Society Symposium Proceedings Series Vol. 462.
- Srinivasan, S. & Ranganathan, S., Wootz Steel: An Advanced Material of the Ancient World, Bangalore: Indian Institute of Science.
- Srinivasan, S. (1994), "Wootz crucible steel: a newly discovered production site in South India", Institute of Archaeology, University College London, 5: 49-61.
- Stein, Burton (1998), A History of India, Blackwell Publishing, আইএসবিএন ০-৬৩১-২০৫৪৬-২.
- Stillwell, John (2004), Mathematics and its History (2 edition), Springer, আইএসবিএন ০-৩৮৭-৯৫৩৩৬-১.
- Subbaarayappa, B.V. (1989), "Indian astronomy: an historical perspective", Cosmic Perspectives edited by Biswas etc., pp. 25–41, Cambridge University Press, আইএসবিএন ০-৫২১-৩৪৩৫৪-২.
- Teresi, Dick etc. (2002), Lost Discoveries: The Ancient Roots of Modern Science—from the Babylonians to the Maya, Simon & Schuster, আইএসবিএন ০-৬৮৪-৮৩৭১৮-৮.
- Tewari, Rakesh (2003), "The origins of Iron Working in India: New evidence from the central Ganga plain and the eastern Vindhyas", Antiquity, 77 (297): 536–544.
- Thrusfield, Michael (2007), Veterinary Epidemiology, Blackwell Publishing, আইএসবিএন ১-৪০৫১-৫৬২৭-৯.
- Tripathi, V.N. (2008), "Astrology in India", Encyclopaedia of the History of Science, Technology, and Medicine in Non-Western Cultures (2nd edition) edited by Helaine Selin, pp. 264–267, Springer, আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০২০-৪৫৫৯-২.
- Wenk, Hans-Rudolf etc. (2003), Minerals: Their Constitution and Origin, Cambridge University Press, আইএসবিএন ০-৫২১-৫২৯৫৮-১.
- White, Lynn Townsend, Jr. (1960), "Tibet, India, and Malaya as Sources of Western Medieval Technology", The American Historical Review 65 (3): 522-526.
- Whish, Charles (1835), Transactions of the Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland.
আরও পড়ুন
- Alvares, Claude A. (1991). Decolonizing history: Technology and culture in India, China and the West 1492 to the present day. New York, USA: Apex Press. (review)
- Dharampal, Indian Science and Technology in the Eighteenth Century: Some Contemporary European Accounts (with a foreword by Dr. D.S..Kothari and Introduction by Dr. William A.Blanpeid), Impex India, Delhi, 1971; reprinted by Academy of Gandhian Studies, Hyderabad 1983.
- Anant Priolkar, The printing press in India, its beginnings and early development; being a quarter-centenary commemoration study of the advent of printing in India (in 1556). xix, 364 S., Bombay: Marathi Samshodhana Mandala, 1958, ডিওআই:10.1017/S0041977X00151158
- History of Science and Technology in Ancient India: The Beginnings by Debiprasad Chattopadhyaya with a foreword by Joseph Needham.
- Project of History of Indian Science, Philosophy and Culture, Volume 4. Fundamental Indian Ideas in Physics, Chemistry, Life Sciences and Medicine
- Project of History of Indian Science, Philosophy and Culture, Monograph series, Volume 3. Mathematics, Astronomy and Biology in Indian Tradition edited by D. P. Chattopadhyaya and Ravinder Kumar
- Shinde, V., Deshpande, S. S., Sarkar, A., & Indus-Infinity Foundation,. (2016). Chalcolithic South Asia: Aspects of crafts and technologies.
- In Hāṇḍā, O. (2015). Reflections on the history of Indian science and technology.New Delhi : Pentagon Press in association with Indus-Infinity Foundation, 2015.
বহিঃসংযোগ
- Our Science and Technology Heritage gallery for the National Science Centre in Delhi
- A brief introduction to technological brilliance of Ancient India (Indian Institute of Scientific Heritage)
- Science and Technology in Ancient India
- India: Science and technology, U.S. Library of Congress.
- Pursuit and promotion of science: The Indian Experience, Indian National Science Academy.
- India: Science and technology, U.S. Library of Congress.
- Indian National Science Academy (2001), Pursuit and promotion of science: The Indian Experience, Indian National Science Academy,
- Presenting Indian S&T Heritage in Science Museums, Propagation : a Journal of science communication Vol 1, NO.1, January 2010, National Council of Science Museums, Kolkata, India, by S.M Khened, [১].
- Presenting Indian S&T Heritage in Science Museums, Propagation : a Journal of science communication Vol 1, NO.2, July, 2010, pages 124-132, National Council of Science Museums, Kolkata, India, by S.M Khened,[২].
- History of Science in South Asia (hssa-journal.org). HSSA is a peer-reviewed, open-access, online journal for the history of science in India.