ভারতে পরমাণু শক্তি
পরমাণু শক্তি ভারতে চতুর্থ বৃহত্তম বিদ্যুতের উৎস। পরমাণু শক্তির স্থান এদেশে তাপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ ও পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎশক্তির ঠিক পরেই।[১] ২০১০ সালের হিসেব অনুযায়ী, ভারতে মোট ১৯টি পারমাণবিক চুল্লি রয়েছে, যা থেকে মোট ৪,৫৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। অতিরিক্ত ২,৭২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরও চারটি পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের কাজ চলছে।[২] এছাড়াও আইটিইআর প্রকল্পে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ফিউসন রিঅ্যাক্টরগুলির উন্নয়নের কাজেও ভারত জড়িত।
১৯৯০-এর দশকের প্রথম পাদ থেকে ভারতের পরমাণু জ্বালানির প্রধান উৎস রাশিয়া।[৩] দেশের আভ্যন্তরিণ ইউরেনিয়াম সঞ্চয়ের পরিমাণ কমে আসায়[৪] ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে ভারতে উৎপাদিত পরমাণু বিদ্যুতের হার কমে গিয়ে হয় ১২.৮৩ শতাংশ।[৫] ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার গ্রুপের কাছ থেকে অনুমতি পেয়ে ভারত আন্তর্জাতিক পরমাণু বাণিজ্যের জগতে প্রবেশ করে।[৬] এরপর ফ্রান্স,[৭] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,[৮] যুক্তরাজ্য,[৯] কানাডা,[১০] কাজাকস্তান [১১] প্রভৃতি দেশের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে আবদ্ধ হয় ভারত। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ২০০০ টন পরমাণু জ্বালানি সরবরাহের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তিতে সাক্ষর করে ভারত।[১২][১৩]
আগামী ২৫ বছরে সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্রে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনের হারকে ৪.২ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ভারত।[১৪] ২০১০ সালে ভারতের দেশীয় পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ৬,০০০ মেগাওয়াট।[১৫] ২০০৯ সালের হিসেব অনুযায়ী, কার্যকরী পরমাণু চুল্লির সংখ্যার বিচারে ভারতের স্থান বিশ্বে নবম। আরও নয়টি চুল্লি নির্মীয়মান। তার মধ্যে দুটি ফ্রান্সের আরেভা নির্মিত দুটি ইপিআর-ও রয়েছে।[১৬] দেশীয় পরমাণু চুল্লিগুলির মধ্যে রয়েছে টিএপিএস-৩ ও -৪; দুটিই ৫৪০ মেগাওয়াটের চুল্লি।[১৭] ২০১০ সালের মধ্যে ভারতের ৭১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফাস্ট ব্রিডার রিঅ্যাক্টর প্রকল্পটি চালু হয়ে যাওয়ার কথা।[১৮]





পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র[সম্পাদনা]
পারমাণবিক বিরোধী বিক্ষোভ[সম্পাদনা]
২০১১ সালের মার্চ মাসে জাপানে ফুকুশিমা পারমাণবিক বিপর্যয়ের পরে, প্রস্তাবিত ভারতীয় এনপিপি স্থানের আশেপাশের জনগণ বিক্ষোভ শুরু করে, যা সারা দেশে অনুরণন পায়।[২০] ফ্রান্স সমর্থিত মহারাষ্ট্রের ৯,৯০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার জৈতাপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং রুশ সমর্থিত তামিলনাড়ুর ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার কুড়ানকুলাম পরমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রাথমিকভাবে হরিপুরের নিকটে প্রস্তাবিত ৬,০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন প্রত্যাখ্যান করে, যা ৬ টি রুশ চুল্লি দ্বারা চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।[২০][২১][২২] তবে স্থানীয়দের তীব্র প্রতিরোধের পরে, হরিপুরে প্রস্তাবিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অন্ধ্র প্রদেশের কাভালিতে স্থানান্তরিত করা হয়।[২৩] মজার বিষয় হচ্ছে, অন্ধ্রপ্রদেশের কোভভাদায় পরিকল্পনা করা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গুজরাটের মিঠি বিড়ি থেকে স্থানান্তরিত হওয়ার পরে পশ্চিমা রাজ্যের স্থানীয়রাও প্রতিরোধ দেখায়।[২৪]
সুপ্রিম কোর্টে (পিআইএল) সরকারের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে একটি নাগরিক জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয়। পিআইএল-এ বিশেষভাবে বলা হয় "প্রস্তাবিত সকল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়, যতক্ষণ না সন্তোষজনক সুরক্ষা ব্যবস্থা ও ব্যয়-সুবিধা বিশ্লেষণগুলি স্বাধীন সংস্থাগুলি দ্বারা সম্পন্ন না হয়"।[২৫][২৬] তবে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে এটি পারমাণবিক দায় ইস্যুতে সরকারকে নির্দেশ জারি করা জন্য পারমাণবিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ বা বিশেষজ্ঞ সংস্থা ছিল না।[২৭]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১০।
- ↑ http://www.reuters.com/article/marketsNews/idUSDEL16711520080818
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১০।
- ↑ http://www.livemint.com/2008/06/30222448/Uranium-shortage-holding-back.html
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৮ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১০।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১০।
- ↑ http://www.rediff.com/news/2008/jan/25france.htm
- ↑ http://www.livemint.com/2008/10/09005930/Bush-signs-IndiaUS-nuclear-de.html?d=1
- ↑ [১]
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩০ নভেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১০।
- ↑ http://timesofindia.indiatimes.com/Business/Kazakh_oil_deals_hang_in_balance/articleshow/4019306.cms
- ↑ http://news.bbc.co.uk/2/hi/south_asia/7883223.stm
- ↑ NTPC, Nuclear Power to Spend $3 Billion on India Atomic Plants
- ↑ http://www.business-standard.com/india/news/slowdown-not-to-affect-indias-nuclear-plans/19/57/53400/on
- ↑ Nuclear power generation to touch 6,000 Mw by next year
- ↑ http://www.reuters.com/article/rbssIndustryMaterialsUtilitiesNews/idUSL360076520090203
- ↑ (http://www.npcil.nic.in/PlantsInOperation.asp ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে
- ↑ "India's fast breeder reactor nears second milestone"। ১০ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১০।
- ↑ Southern power grid begins drawing power from Kudankulam
- ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;nukeindia
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Fiona Harvey (৮ মার্চ ২০১২)। "Dramatic fall in new nuclear power stations after Fukushima"। The Guardian। London।
- ↑ The proposed project is part of an India-Russia agreement for cooperation in the nuclear energy sector., The West Bengal government has ruled out the nuclear power plant at Haripur in the State's Purba Medinipur district. (১৭ অগাস্ট ২০১১)। "West Bengal government rules out Haripur nuclear project"। www.thehindu.com। দ্য হিন্দু। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;:2
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Gujarat's Mithivirdi nuclear power plant to be shifted to Andhra Pradesh due to delay in land acquisition - Firstpost"। www.firstpost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-০১।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;insideclimatenews1
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Siddharth Srivastava (২৭ অক্টোবর ২০১১)। "India's Rising Nuclear Safety Concerns"। Asia Sentinel। ৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১১।
- ↑ "SC steers clear of PIL on N-liability"। The Ttimes of India। ৬ ডিসেম্বর ২০১১। ২১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০২০।