লোথাল
![]() লোথাল শহরের প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ | |
অবস্থান | সারগয়ালা,গুজরাত,ভারত |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২২°১৯′ উত্তর ৭২°০৮′ পূর্ব / ২২.৩১° উত্তর ৭২.১৪° পূর্ব |
ধরন | বসতি |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠিত | আনুমানিক ৩৭০০ খ্রিষ্টপূর্ব |
সংস্কৃতি | সিন্ধু সভ্যতা |
স্থান নোটসমূহ | |
খননের তারিখ | ১৯৫৫-১৯৬০ |
অবস্থা | ধ্বংসপ্রাপ্ত |
মালিকানা | পাবলিক |
ব্যবস্থাপনা | আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া |
জনসাধারণের প্রবেশাধিকার | হ্যাঁ |
লোথাল প্রাচীন সিন্ধ সভ্যতার দক্ষিণতম স্থানগুলির মধ্যে একটি ছিল,[১] যা অধুনা গুজরাত রাজ্যের ভাল অঞ্চলে অবস্থিত। শহরটির নির্মাণ কাজ প্রায় ২২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়।[২]
প্রাচীন নিদর্শন সংরক্ষণকারী দাপ্তরিক ভারতীয় সরকারি সংস্থা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ১৯৫৪ সালে লোথালের আবিষ্কার করেছিল। লোথালে খনন কাজ ১৯৫৫ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৬০ সালের ১৯শে পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার মতে, তর্কাতীতভাবে লোথাল বিশ্বের প্রাচীনতম পরিচিত ডক ছিল, যা শহরটিকে বাণিজ্য পথে সবরমতী নদীর প্রাচীন প্রবাহের সঙ্গে সংযুক্ত করেছিল। এই বাণিজ্য পথটি সিন্ধুর (পাকিস্তান) হরপ্পা শহর ও সৌরাষ্ট্র উপদ্বীপের মধ্যে বিস্তৃত ছিল, যেখানে বর্তমান কচ্ছ মরুভূমি আরব সাগরের একটি অংশ ছিল। কিন্তু অনেক প্রত্নতাত্ত্বিকগণ এ বিষয়ে সহমত পোষণ করেন না। তাদের মতে লোথাল নিছকই একটা ছোট শহর ছিল আর যে পোতাশ্রয়ের কথা বলা হচ্ছে সেটা আসলে একটা সেচের জলাধার ছিল।[৩]
প্রাচীন এশিয়া ও আফ্রিকার দূরবর্তী কোণগুলিতে মণি, রত্ন এবং মূল্যবান অলঙ্কারের ব্যবসা নিয়ে পৌঁছানোর জন্য প্রাচীন যুগে লোথাল একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। গুটিকা তৈরির জন্য এবং ধাতব পদার্থের জন্য তারা যে কৌশল ও সরঞ্জামগুলি তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল, তা ৪০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। [৪]
লোথাল আহমেদাবাদ জেলার ধোলকা তালুকার সারগওয়ালা গ্রামের কাছে অবস্থিত। এটি আহমেদাবাদ-ভাবনগর রেলপথের লোথাল-ভুরুখী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছয় কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটি আহমেদাবাদ (৮৫ কিলোমিটার / ৫৩ মাইল), ভাবনগর, রাজকোট এবং ধোলকা শহরগুলির সমস্ত আবহাওয়াতে ব্যবহারের উপযোগি সড়ক দ্বারা সংযুক্ত। স্থানটির নিকটতম শহর ধোলকা এবং বড়োদরা। ১৯৬১ সালে খনন পুনরায় শুরু করা হলে প্রত্নতাত্ত্বিকরা নদীটির উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ভাঁজগুলি খনন করে নদী দিয়ে ডক সংযোগকারী ইনলেট চ্যানেল এবং নুলা ("র্যাভিন" বা "গুলি") খুজে পায়। ফলাফল স্থানটি একটি ঢিবি, একটি শহর, একটি বাজার, এবং বন্দর দ্বারা গঠিত। খননকৃত অঞ্চলের পাশে অবস্থিত প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর, যেখানে ভারতে সিন্ধু-যুগের প্রাচীনতম কিছু বিশিষ্ট সংগ্রহ প্রদর্শিত হয়।
লোথালকে ইউনেস্কোর কাছে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে মান্যতা দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে এবং তা ইউনেস্কো-র বিচারাধীন।
প্রত্নতত্ত্ব[সম্পাদনা]
১৯৪৭ সালে যখন ভারত ভাগ হল, তখন বেশিরভাগ হরপ্পা ও মহেঞ্জদর সভ্যতার অবশিষ্টাংশই পাকিস্তান-এ চলে যায়। তারপর আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া নিজেদের উদ্যোগে নতুন করে খননকার্য ও অনুসন্ধান শুরু করে। ভারতের উত্তর-পশ্চিম ভাগে নতুন নতুন প্রত্নক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়।১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে কচ্ছ (মূলত ধোলাভিরা) ও সৌরাষ্ট্র উপকূলে হরপ্পা সভ্যতার ৫০০ কিলোমিটার বিস্তৃত নতুন প্রত্নক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। লোথালের অবস্থান হল সিন্ধ প্রদেশের মহেঞ্জোদারো প্রত্নক্ষেত্র থেকে ৬৭০ কিলোমিটার (৩১০ মেইল) দূরে। [৫]
'লোথাল' কথার স্থানীয় গুজরাতি ভাষায় নাকি অর্থ - "মৃতের স্তুপ", ঠিক যেমন মহেঞ্জোদারো কথার অর্থ ঐ একই। ওখানকার স্থানীয় লোকজনদের কথাতেও শোনা যায় যে এখানে নাকি প্রাচীন শহর ও মানবজীবনের অস্তিত্ব ছিল। ১৮৫০ সালেও এখান থেকে নদী পথে জিনিসপত্র পরিবহন হত। এ থেকেই এখানকার প্রাচীন নৌ যোগাযোগের প্রমাণ মেলে।[৬]
ব্যবসা বাণিজ্য[সম্পাদনা]
সিন্ধু সভ্যতার ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই বন্দর শহরের অবদান অপরিসীম। এই বন্দর দ্বারাই সিন্ধু সভ্যতার মানুষ সুমেরীয়, মিশরীয় অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য করত।
আরো দেখুন[সম্পাদনা]
টীকা[সম্পাদনা]
- ↑ "Where does history begin?"। ১৯ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ কুলকে, হারম্যান (২০০৪)। History of India। Routledge। পৃষ্ঠা ২৫। আইএসবিএন 9780415329200।
- ↑ Leshnik, Lawrence S. (১৯৬৮)। "The Harappan "Port" at Lothal: Another View"। American Anthropologist। 70 (5): 911–922।
- ↑ "Excavations – Important – Gujarat"। Archaeological Survey of India। ১১ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১১।
- ↑ W., Bradnock, Robert (২০০১)। Rajasthan & Gujarat handbook। Bath: Footprint। আইএসবিএন 190094992X।
- ↑ S. R. Rao, Lothal (published by the Director General, Archaeological Survey of India, 1985)
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- S. P. Gupta (ed.) "The Lost Sarasvati and the Indus Civilization" (1995, Kusumanjali Prakashon, Jodhpur