সাতগাছিয়া গায়েবানা মসজিদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাতগাছিয়া গায়েবানা মসজিদ
সাতগাছিয়া আদিনা মসজিদ
সাতগাছিয়া গায়েবানা মসজিদ
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
জেলাঝিনাইদহ জেলা
উৎসবঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা
যাজকীয় বা
সাংগঠনিক অবস্থা
মসজিদ
মালিকানাবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
অবস্থাসংরক্ষিত
অবস্থান
অবস্থানসাতগাছিয়া, কালীগঞ্জ উপজেলা, ঝিনাইদহ জেলা
পৌরসভাবারোবাজার
দেশ বাংলাদেশ
স্থাপত্য
ধরনমসজিদ
স্থাপত্য শৈলীতুঘলকি নির্মাণশৈলী
বিনির্দেশ
সম্মুখভাগের দিকপূর্বদিক
দৈর্ঘ্য২৪.২৫ মিটার
প্রস্থ১৮.৫৫ মিটার
উচ্চতা (সর্বোচ্চ)১.৮৫ মিটার
গম্বুজসমূহ৩৫

সাতগাছিয়া গায়েবানা মসজিদ বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। এটি কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়ন থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে সাতগাছিয়া গ্রামে অবস্থিত।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৮৩ সালে স্থানীয় জনগণ বিরাট আকারের ঢিবির কিছু অংশ খনন করে। খননের ফলে ১৬টি থাম ও পোড়ামাটির নকশাসহ ৫টি মেহরাব বিশিষ্ট এই মসজিদ আবিষ্কার করে। পরে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ১৯৯০ সালে খনন করে ৩৫ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির ধংসাবশেষের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। মসজিদটি খান জাহান আলী নির্মিত ষাট গম্বুজ মসজিদ ও তুঘলকি স্থাপত্যশৈলী অনুরূপ।[২] প্রত্নতত্ত্ববিদরা ধারণা করেন পঞ্চদশ শতাব্দীতে খান জাহান আলী তার অনুচরদের নিয়ে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে বাংলায় আসেন। সেই সময়েই তার কোন অনুচর কর্তৃক এই মসজিদ নির্মিত হয়েছিল, যা পরবর্তীতে মাটি চাপা পরে।[৩]

অবকাঠামো[সম্পাদনা]

সাত গাছিয়া ৩৫ গুম্বুজ আদিনা মসজিদ

সাতগাছিয়া গায়েবানা আদিনা মসজিদটি আয়তাকৃতির। উত্তর-দক্ষিণে ২৪.২৫ মিটার দীর্ঘ ও পূর্ব-পশ্চিমে ১৮.৫৫ মিটার প্রশস্ত।[৪] দেয়াল ১.৬০ মিটার পুরু এবং ভূমি থেকে ১.৮৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু উদ্ধার করা হয়েছে। উত্তরে ৩টি, দক্ষিণে ৫টি, পূর্বে ৭টি ও পশ্চিমে ১টি দরজা রয়েছে। পশ্চিম দিকের দরজাটি স্থানীয় জনগণ বন্ধ করে দিয়েছে। পূর্বদিকে সর্বাধিক ৭টি দরজা থাকার কারণে এইদিককেই মসজিদের সম্মুখ ভাগ হিসেবে ধরা হয়। দরজাগুলো ১.৩০ মিটার চওড়া এবং উপরে সরু খিলামের বক্র রয়েছে। খিলামগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গেছে। দুই দরজার মধ্যে তলদেশ থেকে দেয়ালে রয়েছে খাড়া খাজ কাটা দিগন্ত রেখাকৃতির বাঁধন। খাজগুলি ০.৬৫ মিটার চওড়া এবং ০.১৩ মিটার গভীর। খাজের উপরের বাঁধনে আছে বুটিদার নকশার দিগন্ত রেখার সারি। নিচের বাঁধনগুলো সমান। মসজিদের পশ্চিম দিকের কেবলা দেয়ালে নকশা সমৃদ্ধ ৬টি মেহরাব আছে। মেহরাবে ফুল, ফুলের কুঁড়ি, পাতা, বৃক্ষ, ঘণ্টা, চেইন আঁকা রয়েছে। কেন্দ্রীয় মেহরাবের উত্তরে ১টি মেহরাবের পরিবর্তে রয়েছে একটি বন্ধ দরজা। মেঝে তিনটি প্লাটফর্মে বিভক্ত। কেবলা দেয়ালের সঙ্গে সংযুক্ত দক্ষিণ পাশে রয়েছে একটি পিটানো কংক্রিটের প্লাটফর্ম।[২] মসজিদের ভিতরে ৪৮টি পিলার রয়েছে।[৫]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বিমল সাহা (২২ জুলাই ২০১৪)। "হযরত খান জাহান আলীর বিলুপ্ত নগরী বারোবাজার"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৬ 
  2. জাহিদুর রহমান (ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫)। "ঝিনাইদহের আরেক ঐতিহ্য সাতগাছিয়া আদিনা মসজিদ !!"প্রাইম নিউজ। ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৬ 
  3. আব্দুর রহমান মিল্টন (৩০ এপ্রিল ২০১৬)। "গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র : বিলুপ্ত নগরী বারোবাজারে প্রত্নতাত্ত্বিক মসজিদ"ভোরের কাগজ। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৬ 
  4. শফিকুল আলম। "বারোবাজার"বাংলাপিডিয়া। ২৬ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৬ 
  5. মুস্তাফিজ মামুন (১৯ ডিসেম্বর ২০১৪)। "প্রাচীন শহর মোহাম্মদাবাদ"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২৫ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]