সুজানগর উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৫′৮″ উত্তর ৮৯°২৬′৬″ পূর্ব / ২৩.৯১৮৮৯° উত্তর ৮৯.৪৩৫০০° পূর্ব / 23.91889; 89.43500
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুজানগর
উপজেলা
মানচিত্রে সুজানগর উপজেলা
মানচিত্রে সুজানগর উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৫′৮″ উত্তর ৮৯°২৬′৬″ পূর্ব / ২৩.৯১৮৮৯° উত্তর ৮৯.৪৩৫০০° পূর্ব / 23.91889; 89.43500 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাপাবনা জেলা
আয়তন
 • মোট৩৩৪.৩৪ বর্গকিমি (১২৯.০৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০০১)[১]
 • মোট২,৫১,১৯২
 • জনঘনত্ব৭৫০/বর্গকিমি (১,৯০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৬.৬৮%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৭৬ ৮৩
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

সুজানগর বাংলাদেশের পাবনা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

এই উপজেলার উত্তরে সাঁথিয়া উপজেলা, দক্ষিণে রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী সদর উপজেলাপাংশা উপজেলা, পূর্বে বেড়া উপজেলা, পশ্চিমে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলাপাবনা সদর উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

এই উপজেলার ইউনিয়ন সমূহ হচ্ছে -

১. ভায়না ইউনিয়ন

২. সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন

৩. মানিকহাট ইউনিয়ন

৪. নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন

৫. হাটখালী ইউনিয়ন

৬. সাগরকান্দি ইউনিয়ন

৭. রানীনগর ইউনিয়ন

৮. আহম্মদপুর ইউনিয়ন

৯. দুলাই ইউনিয়ন

১০.তাঁতিবন্দ ইউনিয়ন

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পদ্মা নদী বাহিত পলিদ্বারা সৃষ্ট প্লাবন সমভূমির উপর অবস্থিত এ জনপদের অনেক সমৃদ্ধ এবং রয়েছে অনেক ইতিহাস । সুজানগরের আদি নাম গোবিন্দগঞ্জ।

মুঘল সম্রাট শাহ্জাহানের রাজত্বকালের শেষভাগে তার পুত্রদের মধ্যে রাজ সিংহাসনের দখল নিয়ে যে বিরোধের সুত্রপাত হয় তার ধারাবাহিকতায় যুবরাজ শাহ সুজা আরাকানে পালিয়ে যান। তিনি আরাকান গমনকালে সুজানগরে ৩ রাত অবস্থান করেন। যুবরাজ শাহ সুজার এই অবস্থানকে চিরস্বরনীয় করে রাখার জন্য এতদঞ্চলের মানুষ এ জনপদের নামকরণ করেন সুজানগর ।

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

জনসংখ্যা=২,৭৮,০৯৬ জন(২০১১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী) পুরুষ=১,৩৮,৫৫৯জন(প্রায়) মহিলা=১,৩৯,৫৩৭ জন(প্রায়) লোক সংখ্যার ঘনত্ব=৮২১ (প্রতি বর্গকিলোমিটারে) মোট ভোটার সংখ্যা=১,৮৪,৪৯৮ জন পুরুষ ভোটার সংখ্যা=৮৫,৩৩৯ জন মহিলা ভোটার সংখ্যা=৮৬,৫৮৬জন বাৎসরিক জনসংখ্যা বৃদ্ধিরহার= ১.৬১%(২০১১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী)

শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

এই উপজেলাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা। কলেজসমূহঃ

  1. উলাট সিদ্দিকীয় সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রসা
  উপজেলা-সুজানগর,জেলা-পাবনা
  1. ডাঃ জহুরুল কামাল সরকারী কলেজ,
  2. নিজাম উদ্দিন আজগর আলী ডিগ্রি কলেজ,
  3. সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ,
  4. মালিফা কলেজ
  5. দুলাই উচ্চ বিদ্যালয়
  6. রাণীনগর স্কুল এন্ড কলেজ,ভাটিকয়া
  7. সুজানগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
  8. বনকোলা হাই স্কুল এন্ড কলেজ
  9. বনকোলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
  10. নাজিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ
  11. নুরুদ্দীনপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  12. কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়
  13. শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
  14. হাজী অজেল আলী উচ্চ বিদ্যালয়

ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ঐতিহ্য[সম্পাদনা]

এই এলাকার ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে,সুজানগর উপজেলার সভ্যতা বহুপ্রাচীন। পদ্মা নদী বিধৌত এই এলাকায় রয়েছে সবুজের সমারহ চর । বর্ষা মৌসুমে সমগ্র চর অঞ্চল থৈ,থৈ পানি আবার শরৎকালে কাশবন ফুল ফুলে সাদা হয়ে উঠে দেখে বিশ্ব কবির সেই কবিতাটি মনে পড়ে চিকচিক করে বালি কোথাও নেই কাঁদা, দুই ধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা। । মাঝে বিলগাজনা ও গন্ডহস্তি বিল, বর্ষায় এর অপরূপ সৌন্দর্য নিজে চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না যে, কি অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি।

বিল গাযনার মাছের ঐতিহ্য রুপ-রস

                                                            মোতালিব রানু

গাযনা বিলের বোয়াল মাছ

রামার বিলের কৈ

মতের বিলের বাইম মাছ

কাটাজোলার স্বরপুটি আর রুই ।।


দেবের ঘোনার বাচা মাছ ,

আহা সেগুলো কি আর আছে আজ

হাতিগাড়ার খয়েরশালা-চাপিলা

মন কেবলি করে উতালা ।।


ডোহার বিলের শোল –কাতলা

আহা কি স্বাদ রে শালা

কাটায় নেমে  মাজায় হালি রাখ

বাউতের কাছে শুনেই দেখ ।।


কালিদহের কাঁকিলা বাউস

পোড়া বরণ ধানের ভাতে বেহুশ

সাথে মাটিকাটার ভেদা-নয়না

আহা কি স্বাদ প্রানে সয়না ।।


পুটিগাড়ার ম্যাটে দাউন

শোল চ্যাং,টাকি ধরে কাউন কাউন

ছোটথালীর গরুপিয়ালী ধরতে আড়ী

পদ্মবিলের খলসে কয় পড়ছি শাড়ী।।


গাযনা বিলের ছোটমাছ থেতে খেতে নাভিশ্বাস

সুয়ামী কয় বউরে- লাইলী

বাজান কইছে সবই রাধবি

সাথে শাপলার মোথা আর লাইল চড়চড়ি।।


রুকসি বিলের বেজি ব্যালে, গ্যাজের বিলেরপুটি –চিংড়ি

ঢেলা-মলা আর টাটকিনিতে দুবল্যেগাড়ী

গ্যারকা-ব্যায়শ্যার ওড়ক্যো নওলা,রাম টেংড়ায় বিলভাদুড়ী

স্বাদে-গন্ধে পেট ভরে যায়,রাধূনীরকি বাহাদুরী।।


হাপাড়ে লাউ ঠেলা,বিল পাড় দিতে কষ্ট মেলা

জিয়লগাড়ীর  জিয়ল শিং,বরদমখালীর পানা কচুরী

জীবন জ্বালায় কয় বউ-শ্বাশুড়ী

লউয়ে উঠা বড় সুখ,যদি বয়পরের পুত।।


পুবেন বাও উত্তর পশ্চিম টানে

বাদাম তুলে দে বাড়ির পানে

বাদাই, পোড়াডাংগা লালডাঙ্গী,কামালপুর

শাড়িরভিটা,রানীনগর,নাখারাজ আর মধুপুর ।।


খয়রান ,দুর্গাপুর,রাইশিমুল,বগাজানি

বনকোলা ,পাইকপাড়া,বস্তাল আর বামুন্দী

কয়া, ভুরকুল্যে.বিলদিয়া,ভাতসোলা,বাঘুলপুর

বর্ষায় গ্রামগুলিতে সুখের উপর আধহাত, উলাটচন্ডীপুর ।।



প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসাবে রয়েছে-

১.তাঁতিবন্দ বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর জমিদার বাড়ী

২.দুলাই আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ী

৩.সাগরকান্দি হযরত শাহ মাহতাব উদ্দিন আউলিয়ার মাজার শরিফ।

৪.নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট

৫.গাজনার বিল

৬.সাতবাড়ীয়ার কাঞ্চনপার্ক

৭.খয়রান ব্রিজ

৮. নুরুদ্দীনপুর ব্রিজ

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি[সম্পাদনা]

বিবিধ[সম্পাদনা]

গাজনা বিল

গাজনার বিল হচ্ছে সুজানগরের একটি প্রসিদ্ধ স্থান। এই উপজেলায় বিশেষ করে বাড়ইপাড়া,মধুপুর,মথুরাপুর,উদয়পুর,কামার দুলিয়া,ক্রোড়দুলিয়া,দূগাপুর,কামালপুর,নুরুদ্দীনপুর,ভাদুরভাগ এলাকায় পিঁয়াজ উৎপাদনে শীর্ষ। যা দেশের বিভিন্ন এলাকায় পিঁয়াজের চাহিদা পূরণ করে থাকে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে সুজানগর উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]