আব্দুস সুবহান
জাতীয় সংসদ-এর সদস্য মাওলানা আব্দুস সোবহান | |
|---|---|
![]() | |
| উত্তরসূরী | রফিকুল ইসলাম বকুল |
| ৫ম জাতীয় সংসদের সদস্য , পাবনা-৫ আসন আসনের সংসদ সদস্য | |
| কাজের মেয়াদ ১৯৯১ – ১৯৯৫ | |
| ৮ম জাতীয় সংসদের সদস্য , পাবনা-৫ আসন আসনের সংসদ সদস্য | |
| কাজের মেয়াদ ২০০১ – ২০০৬ | |
| ব্যক্তিগত বিবরণ | |
| জন্ম | ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯২৯ সুজানগর, পাবনা |
| মৃত্যু | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ (বয়স ৯০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল |
| সমাধিস্থল | পাবনা সদর আরিফপুর কবরস্থান |
| নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
| জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
| রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী |
| পিতামাতা | মুন্সী নাঈম উদ্দিন আহমেদ (পিতা) নুরানী বেগম (মাতা) |
| পেশা | রাজনীতি |
| যে জন্য পরিচিত | ইসলামী রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব |
| ধর্ম | ইসলাম |
মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুস সুবহান (১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯২৯[১] - ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০) ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি পাবনা-৫ আসন থেকে দু'বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২][৩] একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের সাথে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিচার চলছিলো।[৪]
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
[সম্পাদনা]আবদুস সোবহান ১৯২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলার সুজানগর থানার মানিকহাটি ইউনিয়নের তৈলকুণ্ডু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৫] তার পিতা মুন্সী নাঈম উদ্দিন আহমেদ একজন ইসলামী পণ্ডিত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তার পরিবার নিয়ে পাবনার নগরীর গোপালপুরের পাথরটোলা চলে আসেন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।[৬] তিনি রামচন্দ্রপুর মক্তব-এ ভর্তি হন। তারপরে তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা মণিখাত এবং মাছপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শেষ করেন। ১৯৪১ সালে তিনি উলাট সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ভর্তি হন এবং ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সেখানে অধ্যয়ন করেন এবং ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫০ সালে আলিম সনদ অর্জন করেন। ১৯৫২ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি একই মাদ্রাসা থেকে কামিল ডিগ্রি অর্জন করেন এবং মাদ্রাসা বোর্ডে প্রথম বিভাগে ৭ম স্থান অর্জন করেন।[৬]
পেশা
[সম্পাদনা]শিক্ষাদান
[সম্পাদনা]ফাজিল পড়াশোনা শেষ করে তিনি পাবনা আলিয়া মাদ্রাসায় যোগদান করেন। এরপরে তিনি গোপালচন্দ্র ইনস্টিটিউট, আরিফপুর উলাত সিনিয়র মাদ্রাসা এবং মাগুরা বারোরিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তার শিক্ষাজীবন ১৯৫২-১৯৬২ সাল পর্যন্ত ১০ বছর ব্যাপৃত ছিলো[৬]
রাজনীতি
[সম্পাদনা]আবদুস সোবহান ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের জমিয়তে তালাবা আরবিয়ার পাবনা জেলার সেক্রেটারি ছিলেন। ১৯৫১ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং সময়ের সাথে সাথে পাবনা জেলার আমির নিযুক্ত হন। তিনি কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা, কেন্দ্রীয় র্নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় নায়েবে-আমির দ্বায়িত্ব পালন করেন।[৬]
সংসদ সদস্য
[সম্পাদনা]১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং তার পরবর্তী মেয়াদে বিরোধী দলের জোষ্ঠ্য উপ-নেতার ভূমিকা পালন করেন।[৬] তিনি ১৯৯১ সালে পাবনা -৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সংসদে তিনি জামায়াতের সংসদীয় দলের উপ-নেতা ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি আবার পাবনা -৫ আসন থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় ৫৬.৭৮% ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালে, তিনি মহিলাদের পড়াশুনা বাড়ানোর জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন। [৭]
গ্রেপ্তার এবং বিচার
[সম্পাদনা]আবদুস সোবহানকে ২০ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে ঢাকা থেকে পাবনা যাওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে ২০০৩ সালে দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে আদালতে হাজির করার জন্য তাকে পাবনায় নেওয়া হয়েছিল।[৮][৯]
গ্রেপ্তারের একদিন পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল।[১০] আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -২ (আইসিটি) এর নয়টি অভিযোগ গঠন করে ১৯ ৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে যুদ্ধকালীন অপরাধ।[১১][১২] সোবহান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন যে তিনি শান্তি কমিটিতে তার সময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর তিল হিসাবে কাজ করেছিলেন।[১৩]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]আবদুস সুবহান ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ কারাবন্দী অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যুবরণ করেন।[১৪] পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ইং তারিখে পাবনা সদর আরিফপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।[১৫]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Nation awaits disposal of four pending appeals | Daily Sun"। daily-sun। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত।
- ↑ "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত।
- ↑ "কে এই আবদুস সোবহান?"। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "যুদ্ধাপরাধী সুবহানের প্রাণদণ্ড"। ২২ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- 1 2 3 4 5 "Chairman's Corner, Imam Gazzali Trust, Pabna, Bangladesh"। ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্টt। ১৫ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ Shehabuddin, Elora (২০১২)। Reshaping the Holy: Democracy, Development, and Muslim Women in Bangladesh (2 সংস্করণ)। Columbia University Press। পৃ. ১৩৫। আইএসবিএন ০২৩১৫১২৫৫৪।
- ↑ "Jamaat leader Abdus Sobhan detained"। Financial Express Bangladesh। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ "Jamaat leader Sobhan arrested"। Daily Sun। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪। ১৫ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ "Next report against Abdus Sobhan on July 14"। ঢাকা ট্রিবিউন। ১৪ জুন ২০১৩। ১৫ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ "Charges framed against Jamaat leader Maulana Abdus Sobhan-trial start on Jan 28"। BdChronicle। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩। ১৫ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ "Charges pressed against Maulana Sobhan"। ঢাকা ট্রিবিউন। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩। ১৫ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ "Sobhan Trial: Tribunal rejects indictment review"। The Bangladesh Chronicle। ২৭ মার্চ ২০১৪। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুস সুবহানের মৃত্যু"। আমাদের সময়। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "জামায়াত নেতা আব্দুস সুবহানের দাফন সম্পন্ন"। daily inqilab। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
