বুলাবুলি
সিলেটের সংস্কৃতি |
---|
বিষয় সম্পর্কিত ধারাবাহিক |
বুলাবুলি (বা ভোলাভুলি নামেও অভিহিত) হচ্ছে সুরমা-কুশিয়ারা উপত্যকা তথা সিলেট অঞ্চলের একটি প্রাচীন লোক উৎসব।[১]
উদযাপন
[সম্পাদনা]হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ভোলাভুলিকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান মনে করা হলেও এটি হিন্দু-মুসলিম সবাই সমানভাবে পালন করে থাকেন।[২] ভোলাভুলির অন্যতম আকর্ষণ ছিল- এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে গিয়ে কলা গাছের পাছল (পাতা ছড়ানো ডাল) দিয়ে মানুষের ভোলা ছাড়ানো। তখন ভোলা ছাড়ানোর সময় সিলেটি ভাষায় কিছু ছড়া গাওয়া হতো, যা লোকমুখে এখনো প্রচলিত:
ভোলা ছাড়, ভুলি ছাড়
বার মাইয়া পিছা ছাড়। ভাত খাইয়া লড়চড় পানি খাইয়া পেঠ ভর। খাইয়া না খাইয়া ফোল
হাজার টাকার মূল।
আবার বাঁশ ও খড় দিয়ে মানুষের মত একটি ‘ভোলা’ তৈরি করে সন্ধ্যায় ছেলে-মেয়েরা একত্রিত হয়ে এই ভোলায় আগুন ধরিয়ে দিত। এ সময় বলা হতো-
ভোলা পুড়, ভুলি পুড়
মশা মাছি বাইর-হ টাকা পয়সা ঘর-ল
সংসারের জঞ্জাল দূর-হ!
ভোলাভুলি সম্পর্কে বিশিষ্ট লোক গবেষক কামিনী কুমার রায়ের উদ্বৃতি দিয়ে ড. ওয়াকিল আহমদ বলেন- "কার্তিক সংক্রান্তির সন্ধ্যায় খড়কুটা দিয়ে মানুষের মত একটা মূর্তি তৈয়ার করিয়া উহার মাথায় ধূপ, সরিষা, শুকনা পাটপাতা ও কয়েকটা মশা-মাছি রাখিয়া আগুন ধরাইয়া দেওয়া হয়। তার পর একজন সেই জ্বলন্ত মূর্তিটিকে লইয়া চতুর্দিকে দৌঁড়ায়, আর চিৎকার করিয়া বলে-
'ভালা আইয়ে- বুরা যায়,
মশা-মাছির মুখ পোড়া যায়।
দো! দো! দো!"
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সিলেটের হারিয়ে যাওয়া উৎসব 'বুলাবুলি'"। banglavashi.com। ৩০ নভেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রু ২০২২।
- ↑ ক খ "বিলুপ্ত প্রায় গ্রাম-বাংলার 'ভোলাভুলি"। bd-journal.com। ১৭ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রু ২০২২।
- ↑ "হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি ও মুমূর্ষু ভোলা সংক্রান্তি : রফিকুল নাজিম"। provatferi.com.au। ২১ নভেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রু ২০২২।