জামিয়া ইসলামিয়া ইব্রাহিমিয়া উজানি মাদ্রাসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল জামিয়া ইসলামিয়া ইব্রাহীমিয়া উজানী
অবস্থান
তথ্য
ধরনবেসরকারি
প্রতিষ্ঠাকাল১৯০১
প্রতিষ্ঠাতাক্বারী ইব্রাহীম (র.)
কর্তৃপক্ষকওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড
অধ্যক্ষমাওলানা মাহবুবে এলাহী
কর্মকর্তা৭০+
অনুষদ১৫
শিক্ষার্থী সংখ্যা২০০০+
ভাষাবাংলা, আরবি, উর্দু, ফার্সি, ইংরেজিহিন্দি
ডাকনামউজানী মাদরাসা
অন্তর্ভুক্তি

আল জামিয়া ইসলামিয়া ইব্রাহীমিয়া উজানী মাদ্রাসা, কচুয়া, চাঁদপুর, বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর প্রতিষ্ঠাতা উপমহাদেশের বিখ্যাত বুযূর্গ রশিদ আহমদ গাঙ্গুহীর রহ. এর অন্যতম খলিফা সুলতানুল আউলিয়া ক্বারী ইব্রাহিম সাহেব রহ.।

অবস্থান[সম্পাদনা]

চাঁদপুর জেলার অন্তর্গত কচুয়া থানার উত্তর-পূর্ব প্রান্ত ঘেঁষে অবস্থিত উজানি গ্রামে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলোক বিস্তৃত এক ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

যাতায়াত[সম্পাদনা]

ঢাকা থেকে কুমিল্লার মাধাইয়া নেমে সি এন জি করে উজানী মাদ্রাসায় যাওয়া সহজ।এছাড়াও গুলিস্তান সায়েদাবাদ থেকে অনির্বান বাসে করে উজানী মাদ্রাসা যাওয়া যায় আরও সহজ।

চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর কচুয়া থানার সামনে থেকে সি এন জি করে উজানী মাদ্রাসায় যাওয়া সহজ।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯০১ সালে ভারত উপমহাদেশের কুরআন শিক্ষার প্রাণ পুরুষ অলিয়ে কামেল হযরত মাওলানা ক্বারী ইব্রাহীম (র.) এর হাতে এই প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়।ব্র্যান্ডিং জেলা চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় রয়েছে ঐতিহাসিক বখতিয়ার খাঁ মসজিদ, বেহুলার পাটা এবং নেয়ামত শাহ্(রঃ)এর দরগা। উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে উজানী গ্রাম। বর্তমানে এ গ্রামে আছে একটি বিখ্যাত মাদ্রাসা। মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে আছে একটি দিঘি। তার পশ্চিম পাড়ে আছে এক গম্বুজ বিশিষ্ট একটি সুদৃশ্য মসজিদ। এটি বক্তার খাঁ শাহী মসজিদ নামে খ্যাত। এক সময় উজানী গ্রামটি বনজঙ্গলে আচ্ছাদিত ছিলো। উজানীর পীর ক্বারী ইব্রাহিম সাহেব বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে এখানে বসবাস করতে শুরু করেন। তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত কামেল পুরুষ। তিনি এ মসজিদটিকে ব্যবহার্য করে তোলেন। মসজিদে প্রাপ্ত একটি শিলালিপিতে আছে, ‘‘পরম দয়ালু আল্লাহ্তায়ালার নামে আরম্ভ করিতেছি। আল্লাহ্ এক, তাহার কোনো শরীক নাই। মোহাম্মদ তাহার রাসূল। বাদশাহ বাহাদুর শাহ্ গাজীর শাসনামলে খাদেম আবুল হোসেন খাঁর পুত্র ইলিয়াস খাঁর পৌত্র’’। এই উজানী গ্রামেই আছে হযরত নেয়ামত শাহের দরগাহ।এটি উজানি বাজারের পশ্চিম পাশেই। যিনি হযরত শাহজালাল (রঃ)-এর একজন সঙ্গী ছিলেন। উজানী গ্রামে একজন বিখ্যাত ফৌজদার ছিলেন। তার নাম ছিলো বখতিয়ার খাঁ। তিনি বখতিয়ার খাঁ মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। নির্মাণ সাল ১৭৭২। উজানী একটি প্রাচীন গ্রাম। এ গ্রামের নাম পাওয়া যায় মধ্যযুগের মনসামঙ্গল কাব্যে ‘উজানী নগর’ হিসেবে। বেহুলা লখিন্দরের লোহার তৈরি বাসরঘর এ গ্রামে ছিলো। যা মাটির নিচে ডেবে গেছে। বেহুলার শীল নোড়ার কথিত অংশবিশেষ এখনো এ গ্রামে রয়ে গেছে। লোকজন এখনো এগুলো দেখতে আসে। কিন্তু এখন পাটা/পাথর কিছুই নাই। মানুষ ঘর-বাড়ি করে ফেলেছে। পদ্মপুরাণে বর্ণিত রয়েছে চাঁদ সওদাগরের পুত্রবধু বেহুলার পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুর জেলাধীন কচুয়া উপজেলার উজানী গ্রামে (তৎকালীণ উজানী নগরে)। উত্তরাংশে বেহুলার পৈত্রিক রাজবাড়ী অর্থাৎ বেহুলার পিতার নামানুসারে রাজবাড়ীটি নামকরণ করা হয়েছে। রাজবাড়ীর দক্ষিণাংশে রয়েছে বেহুলার দিঘীর নামে পরিচিত বেহুলার দিঘী। বেহুলার দিঘীর উত্তর পাড়ে রাজবাড়ী হতে প্রায় ৫০ মিঃ দক্ষিণে বেহুলার ছোটবেলার খেলনার সামগ্রী পুরানো পাথরের নির্মিত শিলা পাথরটি (আঞ্চলিক ভাষায় বেহুলার পাটা) আংশিক বিদ্যমান আছে। দৈর্ঘ্য ৩২ ইঞ্চি ও প্রস্থ ২৬ ইঞ্চি বিশিষ্ট এ শিলাটির ওজন প্রায় ২৫০ কেজি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এ শিলাটি আদি অবস্থার আংশিক মাত্র। কয়েক বছর পূর্বে জনৈক ধোপা এই শিলায় খারাপ কাপড় ধোয়ার সময় শিলা পাটাটি বিকট শব্দে স্থানান্তরিত হয়ে উজানী গ্রামের দুধখাঁর দিঘীতে পতিত হয়। শিলা পাটাটি পানির ওপর ভেসে উঠে বলে জনশ্রম্নতি আছে। তবে যেখানে ছিল সেখানে কিছু ভাঙা ইটের টুকরো এখন দেয়া যায়। এছাড়া এখন বেহুলার পাটা বলে কিছুই নেই এখানে। স্থানীয়দের ঐতিহ্য বিমুখতা দেখে অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরতে হয়।

ব্যবস্থাপনা[সম্পাদনা]

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত, মাদরে ইলম দারুল উলুম দেওবন্দ এর অনুকরণে সম্পূর্ণ জনগণের সাহায্য ও সহযোগীতায় আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করে প্রতিষ্ঠানটি যুগযুগ ধরে দ্বীনের খিদমত করে আসছে। একটি মজলিশে শূরা এবং একটি মজলিশে আমেলার মাধ্যমে মুহতামিম তথা প্রিন্সিপালের নেতৃত্বে কার্য সম্পাদন হয়।

শিক্ষা কার্যক্রম[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠানটিতে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর অধিনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। নূরানী, নাযেরা, হিফজ ও কেরাত বিভাগসহ কিতাব বিভাগ (তাকমিল ফিল হাদিস) এবং ফতোয়া বিভাগ রয়েছে। অত্র প্রতিষ্ঠানটি কেরাত বিভাগের জন্য সারাদেশে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছে।[১]

উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী[সম্পাদনা]

শায়খুত তাফসির আল্লামা খুরশিদ আলম কাসেমী ও মুফতি আবু সাঈদ এবং ইমরান মাযহারী হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী অত্র মাদ্রাসার ছাত্র

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "কচুয়ার উজানীর বার্ষিক মাহফিল শুরু"DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-৩০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]