বিষয়বস্তুতে চলুন

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বেফাক, বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ
গঠিতএপ্রিল ১৯৭৮; ৪৬ বছর আগে (1978-04)
ধরনবেসরকারি শিক্ষা বোর্ড
আইনি অবস্থাচালু
উদ্দেশ্যবাংলাদেশের কওমি মাদরাসা সমূহের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, উন্নয়ন এবং সনদ প্রদান ইত্যাদি।
অবস্থান
  • কাজলা, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা-১২৩৬
যে অঞ্চলে কাজ করে
 বাংলাদেশ
সদস্যপদ
২০,০০০ + কওমি মাদরাসা[]
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা, আরবি
সভাপতি
মাহমুদুল হাসান
মহাসচিব
মাহফুজুল হক
মহাপরিচালক
উবায়দুর রহমান খান
মূল ব্যক্তিত্ব
মাহমুদুল হাসান
প্রধান অঙ্গ
মজলিসে শূরা, মজলিসে আমেলা
ওয়েবসাইটwww.wifaqbd.org

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ( স.: বেফাক ) হলো বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাসমূহের সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড, যা বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড নামেও পরিচিত। [] [] বেফাক ছাড়াও বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাসমূহের আরো ৫টি শিক্ষা বোর্ড আছে। বেফাক তার নিবন্ধিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, উন্নয়ন, স্তরভেদে পরীক্ষা গ্রহণ এবং সনদ প্রদানের কাজ করে। ২০১২ খ্রিস্টাব্দের রিপোর্ট অনুযায়ী, বেফাকের অধীনে সারাদেশে ২০ হাজারেরও অধিক কওমি মাদরাসা রয়েছে। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত বেফাকের অফিস ছিল জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ, ঢাকা। ১৯৯৪ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ছিল নয়া পল্টন, ঢাকা-১০০০। সবশেষে ২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা–১২০৪ এর যাত্রাবাড়ি, কাজলায় ( ভাঙ্গা প্রেস ) জায়গা ক্রয় করে বেফাকের বর্তমান কার্যালয় স্থাপন করা হয়।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বেফাকের সভাপতি শাহ আহমদ শফী মৃত্যুবরণ করলে পদটি শূন্য হয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ফলশ্রুতিতে ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর মজলিসে আমেলার ১২৫ সদস্যের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে সভাপতি পদে মাহমুদুল হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নূর হুসাইন কাসেমী এবং মহাসচিব পদে মাহফুজুল হক নিয়োগ লাভ করে। []

রূপরেখা

[সম্পাদনা]

৮ম শ্রেণি পর্যন্ত দ্বীন-বিজ্ঞানসহ ও বাকি ৮ বছর অর্থাৎ মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত শুধু ধর্মীয় শিক্ষা।

ধর্মীয় শিক্ষার বিষয় সমূহ:

[সম্পাদনা]
  1. আরবি ভাষা, নহব, সরফ, বালাগাত ও আরুয।
  2. ফিকহ ও উছুলে ফিকহ।
  3. তাফসির ও উছুলে তাফসির।
  4. হাদীস ও উছুলে হাদীস।
  5. তাজবীদ।
  6. ফারাইয
  7. ইসলামের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সিরাত।
  8. ইসলামের অর্থনীতি।
  9. ইসলামের সমাজ বিজ্ঞান ও সিরাত।
  10. ইসলামের দর্শন।
  11. পরিবার বিজ্ঞান।

বৈষয়িক জ্ঞান-বিজ্ঞান সমূহ:

[সম্পাদনা]
  1. বাংলা ভাষা এবং বাংলা ব্যাকরণ
  2. ইংরেজি এবং ইংরেজি ব্যাকরণ
  3. উর্দূ ও উর্দূ কাওয়ায়েদ।
  4. ফারসি ও ফারসি কাওয়ায়েদ।
  5. গণিতজ্যামিতি
  6. ইতিহাস
  7. ভূগোল
  8. বিজ্ঞান
  9. যুক্তিবিদ্যা
  10. মুনাযারা
  11. পাশ্চাত্য দর্শন

ধর্মীয় জ্ঞান - বিজ্ঞানের সাধারণ ধারা হচ্ছে দাওরায়ে হাদীস তথা মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত। তদুপরি রয়েছে ডিপ্লোমা কোর্স। যেমন: হাদীস, তাফসীর, ফিকহ, আরবি ভাষা, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মুকারানাতুল আদইয়ান প্রভৃতি।

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

বেফাক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থা তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্যায়: এ পর্যায়ে রয়েছে দু'টি স্তর।

  • প্রথম স্তর: প্রাথমিক শিক্ষা। কুরআন তিলাওয়াত ও ইসলামিয়াতসহ গণিত, বাংলা, ইংরেজি এ সমাজ বিজ্ঞান প্রভৃতি ৫ম শ্রেনীর মান পর্যন্ত। একে বলা হয় আল মারহালাতুল ইবতিদাইয়্যাহ বা কওমী প্রাইমারি/প্রাইমারি মাদরাসা।
  • দ্বিতীয় স্তর: এতে রয়েছে সাধারণ শিক্ষা সহ ইসলামিক শিক্ষা। অর্থাৎ আরবি ভাষা, আরবি ব্যাকরণ ও ফিকাহশাস্ত্র, গণিত, বাংলা, ইংরেজি এ সমাজ বিজ্ঞান। একে বলা হয় মারহালাতুল মুতাওয়াসসিতাহ। এর মধ্যে রয়েছেঃ- ৩ বছর। অর্থাৎ: ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি।

দ্বিতীয় পর্যায়: এপর্যায়ে রয়েছে ৪টি স্তর।

  • ১ম স্তর:- আল - মারহালাতুস সানাবিয়াতুল(মাধ্যমিক স্তর): এতে রয়েছে দু'বছর (৯ম-১০ম)
  • ২য় স্তর: আল - মারহালাতুস সানাবিয়াহ্ আল উলইয়া (উচ্চ মাধ্যমিক স্তর): এতে রয়েছে দু'বছর (একাদশ শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেণি)।
  • ৩য় স্তর: মারহালাতুল ফজিলাত (স্নাতক ডিগ্রি)। এতে রয়েছে দু'বছর (১৩শ শ্রেণি থেকে ১৪শ শ্রেনী)।
  • ৪র্থ স্তর:- মারহালাতুল তাকমিল (মাস্টার্স ডিগ্রি)। এতে রয়েছে দু'বছর। এ স্তরকে দাওরায়ে হাদীস বলা হয়।

তৃতীয় পর্যায়: এ পর্যায়ে রয়েছে বিষয়ভিত্তিক ডিপ্লোমা ও গবেষণামূলক শিক্ষা কোর্স। যথা: হাদীস, তাফসির, ফিকহ, ফতওয়া, তাজবিদ, আরবিসাহিত্য, বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি, উর্দূ ও ফারসি ভাষা, ইসলামের ইতিহাস, ও সীরাত, ইলমুল কালাম, ইসলামি দর্শন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পৌর বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের গবেষণামূলক শিক্ষা।

সভাপতি ও মহাসচিব

[সম্পাদনা]
সভাপতি
নং তালিকা কার্যকাল
হাজী মুহাম্মদ ইউনুস ১৯৭৮ ১৯৯২
হারুন ইসলামাবাদী ১৯৯২ ১৯৯৬
নূর উদ্দিন গহরপুরী ১৯৯৬ ২০০৫
শাহ আহমদ শফী ২০০৫ ২০২০
মাহমুদুল হাসান ২০২০ বর্তমান
মহাসচিব
নং তালিকা কার্যকাল
আজিজুল হক ১৯৭৮ ১৯৮২
আতাউর রহমান খান ১৯৮২ ১৯৯২
আবদুল জাব্বার জাহানাবাদী ১৯৯২ ২০১৭
আব্দুল কুদ্দুস ২০১৭ ২০২০
মাহফুজুল হক ২০২০ বর্তমান

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Information" (পিডিএফ)। befaq-bd.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১৪ 
  2. "What Do Bangladesh's Deobandi Qawmi Madrasas Want?"। wikileaks.org। ২৯ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৪ 
  3. "Hefazat-e-Islam: A united front for a divided lot"। ৮ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৪ 
  4. "বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি নূর হোসাইন কাসেমী, মহাসচিব মাহফুজুল হক"দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৩