ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং
২১ ডিসেম্বর ২০২৩ অনুযায়ী শীর্ষ ২০ দল[১] | |||
অবস্থান | পরিবর্তন | দল | পয়েন্ট |
---|---|---|---|
১ | আর্জেন্টিনা | ১৮৫৫.২ | |
২ | ফ্রান্স | ১৮৪৫.৪৪ | |
৩ | ইংল্যান্ড | ১৮০০.০৫ | |
৪ | বেলজিয়াম | ১৭৯৮.৪৬ | |
৫ | ব্রাজিল | ১৭৮৪.০৯ | |
৬ | নেদারল্যান্ডস | ১৭৪৫.৪৮ | |
৭ | পর্তুগাল | ১৭৪৫.০৬ | |
৮ | স্পেন | ১৭৩২.৬৪ | |
৯ | ইতালি | ১৭১৮.৮২ | |
১০ | ক্রোয়েশিয়া | ১৭১৭.৫৭ | |
১১ | উরুগুয়ে | ১৬৬৫.৯৯ | |
১২ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ১৬৬৫.২৭ | |
১৩ | মরক্কো | ১৬৬১.৬৯ | |
১৪ | ১ | কলম্বিয়া | ১৬৫৫.২৯ |
১৫ | ১ | মেক্সিকো | ১৬৫২.৭ |
১৬ | জার্মানি | ১৬৩১.২২ | |
১৭ | জাপান | ১৬২০.১৯ | |
১৮ | সুইজারল্যান্ড | ১৬১৩.৪৪ | |
১৯ | ডেনমার্ক | ১৬০১.৩১ | |
২০ | সেনেগাল | ১৫৯৪.৩১ | |
*৩০ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ হতে পরিবর্তিত অবস্থান | |||
ফিফায় পূর্ণ র্যাঙ্কিং |
ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যেখানে পুরুষদের জাতীয় ফুটবল দলগুলোকে একত্রিত করে মূল্যায়ণের মাধ্যমে বৈশ্বিক অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। ফিফা.কম-এ প্রকাশিত ৬ এপ্রিল, ২০২৩ তারিখের সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়ে আর্জেন্টিনা শীর্ষস্থান দখল করে আছে।[২] বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে রয়েছে ফিফা। সদস্যভূক্ত দেশগুলোর অবস্থানকে উল্লেখযোগ্য ফলাফলের মাধ্যমে সর্বাপেক্ষা সফলতম দলকে শীর্ষস্থানে উপবিষ্ট করা হয়। র্যাঙ্কিং পদ্ধতিটি ডিসেম্বর, ১৯৯২ সালে ফিফা কর্তৃক প্রবর্তন করা হয়।ঐ র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ৮টি দল ছিল - আর্জেন্টিনা, বেলজিয়াম,ব্রাজিল, ফ্রান্স,জার্মানি ইতালি, নেদারল্যান্ডস এবং স্পেন । তন্মধ্যে ব্রাজিল সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রথম স্থানে ছিল।
পয়েন্ট পদ্ধতিতে ফিফা সদস্যভূক্ত সকল দেশের মধ্যেকার পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলার ফলাফলকে মূল্যায়ন করা হয়। ব্যবহৃত পদ্ধতিতে একটি দলের গত চার বছরের ফলাফলসহ সর্বশেষ ফলাফলকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ণের মাধ্যমে বর্তমানের র্যাঙ্কিংয়ে প্রতিফলন ঘটানো হয়।
সেপ্টেম্বর ২০১৭ তে ফিফা ঘোষণা করে যে তারা র্যাংকিং সিস্টেম টা পর্যালোচনা করছে[৩] এবং জুলাই ২০১৮ তে নতুন নিয়ম প্রবর্তনের ঘোষণা দেয়। যা ১৬ আগস্ট ২০১৮ থেকে কার্যকর হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ডিসেম্বর, ১৯৯২ সালে ফিফা তার সদস্যভূক্ত দেশগুলোর দলের শক্তিমত্তা নিয়ে প্রথমবারের মতো র্যাঙ্কিং পদ্ধতি প্রকাশ করে। পরবর্তী বছরের আগস্ট থেকে প্রতি মাসেই এই তালিকা আরও নিখুঁতভাবে প্রকাশ করতে থাকে।[৪] জানুয়ারি, ১৯৯৯ সালে র্যাঙ্কিং পদ্ধতির মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটে। জুলাই, ২০০৬ সালে পুনরায় পরিবর্তন ঘটানো হলে এ পদ্ধতির বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়।[৫] র্যাঙ্কিংয়ের ঐতিহাসিক রেকর্ডগুলো ফিফা.কমে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এতে হিসাব-নিকাশগুলো ঐ সময়ে ব্যবহৃত তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে দাঁড় করানো আছে। জুলাই, ২০০৬ সালের পূর্বেকার র্যাঙ্কিংয়ে তা প্রতিফলিত হয়নি। ফিফার সদস্য সংখ্যা ১৬৭ থেকে ২০৮টি হয়েছে। কিন্তু একটি সদস্য রাষ্ট্র সাঁউ তুমি ও প্রিন্সিপির জাতীয় ফুটবল দলটি গত আট বছরের মধ্যে ফিফা স্বীকৃত কোন আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলায় অংশ নেয়নি। দলটি ২০০৩ সালের সর্বশেষ খেলায় ৮ - ০ গোলে লিবিয়ার জাতীয় ফুটবল দলের কাছে পরাজিত হয়েছিল।
১৯৯৯ সালের হালনাগাদকরণ
[সম্পাদনা]র্যাঙ্কিং পদ্ধতি প্রবর্তনের সূচনালগ্নে একটি দলকে ফিফা কর্তৃক স্বীকৃত খেলায় বিজয়ী হলে ৩ পয়েন্ট এবং ড্র করলে ১ পয়েন্ট প্রদান করা হতো। কিন্তু খুব দ্রুত ফিফা কর্তৃপক্ষ অনুধাবন করলেন যে, এ ধরনের পদ্ধতির ফলে আন্তর্জাতিক খেলাগুলোয় অনেকগুলো নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নিরপেক্ষ এবং প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা পার্থক্যের বিবেচনায় এনে পুনরায় র্যাঙ্কিং পদ্ধতিকে হালনাগাদ করা হয়। ফলে, নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলো র্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে আনা হয়:
- পয়েন্ট র্যাঙ্কিংয়ে ১০কে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়
- পদ্ধতির গণনা কার্যক্রমে নিচের বিষয়গুলোকে আনা হয়ঃ
- কতটি গোল হয়েছে অথবা গোল হজম করেছে
- খেলাটি কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে – নিজ মাঠে না-কি প্রতিপক্ষের মাঠে
- খেলার গুরুত্ব ও উপযোগিতা কতটুকু অথবা প্রতিযোগিতামূলক কি-না
- আঞ্চলিক শক্তিমত্তা
- জয় কিংবা ড্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট পয়েন্টের ব্যবস্থা রাখা হয়নি
- পরাজিত দলও পয়েন্ট অর্জনের যোগ্যতার দাবীদার
এ পরিবর্তনের ফলে র্যাঙ্কিং পদ্ধতি আরও বেশি জটিলতার মুখোমুখি হয়। কিন্তু সামগ্রীকভাবে পূর্বের তুলনায় পদ্ধতিটির সঠিকতা যাচাইয়ে বেশ সহযোগিতা করেছে।
২০০৬ সালের র্যাঙ্কিং পদ্ধতির হালনাগাদ
[সম্পাদনা]ফিফা পূর্বেই ঘোষণা করেছিল যে, ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের পর র্যাঙ্কিং পদ্ধতিকে পুনরায় হালনাগাদ করবে। পর্যবেক্ষণের সময়সীমা আট বছর থেকে কমিয়ে চার বছরে নিয়ে আসা হবে এবং র্যাঙ্কিংয়ের হিসাব-নিকাশে এ ব্যবস্থার প্রয়োগ করা হবে।[৬] নিজ মাঠ কিংবা প্রতিপক্ষের মাঠে গোল করার সুবিধা রাখা হয়নি। ১২ জুলাই, ২০০৬ সালে র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা গুছানো হয় এবং হিসাব-নিকাশের চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটানো হয়। এছাড়াও, হিসাব-নিকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকারের খেলাও পুনরায় মূল্যায়ন করা হয়।
র্যাঙ্কিং পদ্ধতির অংশবিশেষের পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়। অনেক ফুটবল সমালোচকই এ ব্যবস্থাকে অন্যান্য র্যাঙ্কিং পদ্ধতির তুলনায় অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছিলেন। এবং তা দলগত অবস্থানের সামগ্রিক অগ্রগতি-অবনতির প্রতিফলন ঘটেনি বলে মন্তব্য করেন।
র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানীয় দল
[সম্পাদনা]যখন এ পদ্ধতির প্রবর্তন করা হয়, জার্মানির জাতীয় ফুটবল দল শীর্ষস্থানে অভিষিক্ত হয়। দলটি তাদের পূর্ববর্তী সময়কালে একচ্ছত্র প্রাধান্য বজায় রেখেছিল। তন্মধ্যে তারা ৩টি ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে ও একটিতে জয়লাভ করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ব্রাজিলের জাতীয় ফুটবল দলটি ১৯৯৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ জয়ী হয়ে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে আসীন হয়। দলটি ৯টি খেলার মধ্যে ১টিতে পরাজিত ও বাকীগুলোতে জয়ী হয়। প্রতিপক্ষের জালে ২০টি গোল করে ও মাত্র ৪টি গোল হজম করে। ইতালির জাতীয় ফুটবল দল বিশ্বকাপের সফলতায় অল্প সময়ের জন্য শীর্ষস্থানে আসে। এরপরই পুনরায় জার্মানি শীর্ষস্থানে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে।
র্যাঙ্কিংয়ের ব্যবহার[সম্পাদনা]র্যাঙ্কিং পদ্ধতিটি প্রণীত হয়েছে ফিফা কর্তৃক তার সদস্য দেশগুলোর জাতীয় ফুটবল দলের উত্তরণ এবং বর্তমান সক্ষমতাকে চিত্রিত করার জন্য। এবং ফিফা দাবী করছে যে তারা নির্ভরযোগ্য পরিমাপক হিসেবে জাতীয় পর্যায়ের প্রধান দলের তুলনা করার জন্যই এটি তৈরী করেছে।[৪] তারা হিসাব-নিকাশের অংশ বিশেষ প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে বাছাই প্রতিযোগিতায় ব্যবহার করছে। ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্যতা নির্ধারণী খেলার ফলাফল র্যাঙ্কিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে কনকাকাফ, আফ্রিকান কাপ এবং ইউরোপীয়ান ফুটবল কাপে অনুষ্ঠিত খেলাগুলোর ফলাফল নভেম্বর, ২০০৭ সালের র্যাঙ্কিংয়ে স্থগিত রেখেছিল। অক্টোবর, ২০০৯ সালের র্যাঙ্কিংয়ে ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বের খেলাগুলোর ফলাফল র্যাঙ্কিংয়ে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন করা হয়েছিল।[৮] মার্চ, ২০১১ সালে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে ২০১২ সালের পুরুষদের আফ্রিকান অঞ্চলের প্রাক-অলিম্পিক টুর্ণামেন্টের উত্তরণ পর্বের ফলাফল ব্যবহার করা হয়।[৯] জয়, ড্র কিংবা পরাজয়[সম্পাদনা]পূর্বের বছরগুলোয় পয়েন্ট বরাদ্দে বেশ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা, হারের ব্যবধানের ফলেও দূর্বল দলগুলোকে পয়েন্ট অর্জন করতে পারে। যদি শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে দূর্বল দল খেলার আয়োজন বা মুখোমুখি হতে সক্ষম হয়, কেবল তখনই পয়েন্ট অর্জন করা সম্ভব। নতুন পদ্ধতি অনুসৃত হওয়ায় পয়েন্ট প্রদানের পদ্ধতিকে আরও বেশি সহজতর করেছেঃ জয়ে তিন পয়েন্ট, ড্রয়ে এক পয়েন্ট এবং পরাজয়ে শূন্য পয়েন্ট বরাদ্দ রাখা হয়। এ পয়েন্ট বরাদ্দ ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী অধিকাংশ লীগ পদ্ধতিতেই প্রচলিত আছে। কোন কারণে খেলার ফলাফল যদি পেনাল্টি শ্যুট আউটের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, তাহলে বিজয়ী দল দুই পয়েন্ট পাবে এবং এর বিপরীতে পরাজিত দল এক পয়েন্ট অর্জন করবে।
দুর্বলতম দেশ[সম্পাদনা]
অঞ্চলভিত্তিক র্যাঙ্কিং[সম্পাদনা]দক্ষিণ এশিয়া (সার্কভূক্ত) অঞ্চল[সম্পাদনা]
এশীয় অঞ্চল (এএফসি)[সম্পাদনা]
কনকাকাফ অঞ্চল[সম্পাদনা]
আফ্রিকা অঞ্চল (সিএএফ)[সম্পাদনা]
ইউরোপীয় অঞ্চল (উয়েফা)[সম্পাদনা]
র্যাঙ্কিংয়ের সময়সূচী[সম্পাদনা]সাধারণত প্রতি মাসের বুধবার দিনকে ঘিরে র্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়ে থাকে। র্যাঙ্কিং প্রকাশের শেষ সময় হিসেবে এর পূর্বের বৃহস্পতিবারকে ধার্য্য করা হয়। কিন্তু ঐদিনের পরেও যদি বড় ধরনের প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলা অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে ঐ ফলাফলও যুক্ত করা হয়।[১২]
পুরস্কার[সম্পাদনা]প্রতি বছর ফিফা তার সদস্যভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে দু'টি পুরস্কার প্রদান করে। র্যাঙ্কিংয়ে তাদের ফলাফলকে মূল্যায়ন করা হয়। সেগুলো হলো -
বছরের সেরা দল[সম্পাদনা]ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে যে দল বছর শেষে শীর্ষস্থানে থাকে সে দলকে ‘বছরেরর সেরা দল’ পুরস্কার দেয়া হয়। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন স্পেন দল ধারাবাহিকভাবে ছয় বছর যাবৎ বছরের সেরা দল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। কিন্তু ব্রাজিল দল ১৯৯৪-২০০০ পর্যন্ত একাধারে সাতবার বছরের সেরা দল হিসেবে রেকর্ড গড়েছে। এছাড়াও দলটি এখন পর্যন্ত ১২বার শীর্ষস্থান দখল করে আছে। নিচের ছকে প্রতি বছরের সেরা ৩টি দলের তালিকা দেখানো হল।[১৩] সেরা উদীয়মান দল[সম্পাদনা]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা] |
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "note" নামক গ্রুপের জন্য <ref>
ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="note"/>
ট্যাগ পাওয়া যায়নি