বিষয়বস্তুতে চলুন

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা
আয়োজকদক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন
প্রতিষ্ঠিত১৯৯৩; ৩২ বছর আগে (1993)
সার্ক গোল্ড কাপ হিসেবে
অঞ্চলদক্ষিণ এশিয়া
দলের সংখ্যা
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত (৯ম শিরোপা)
সবচেয়ে সফল দল ভারত (৯টি শিরোপা)
ওয়েবসাইটsaffederation.org

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ (সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপ) অথবা দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপ নামে পরিচিত) হচ্ছে একটি প্রাথমিক ফুটবল প্রতিযোগিতা, যেখানে দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশনের (সাফ) সদস্যপ্রাপ্ত পুরুষদের জাতীয় ফুটবল দলগুলো প্রতিযোগিতা করে। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল দক্ষিণ এশীয় চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে। এই প্রতিযোগিতাটি প্রথম আসর ১৯৯৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি মূলত সার্ক গোল্ড কাপ নামে পরিচিত ছিল, অতঃপর ১৯৯৫ সালে দক্ষিণ এশীয় গোল্ড কাপ, ১৯৯৭ সালে সাফ গোল্ড কাপ এবং ২০০৮ সালে বর্তমান নামে পরিবর্তন করা হয়েছে।

এপর্যন্ত ১৩টি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ৫টি জাতীয় দল শিরোপা জয়লাভ করেছে: ভারত ৮টি করে শিরোপা জয়লাভ করেছে, মালদ্বীপ ২টি এবং বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা একটি করে শিরোপা জয়লাভ করেছে। আজ পর্যন্ত, ভারত এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে টানা দুইবার শিরোপা জয়লাভ করেছে; ভারত প্রথমবার ১৯৯৭ সালে শিরোপা জয়লাভ করার পর পুনরায় ১৯৯৯ সালে শিরোপা জয়লাভ করেছিল, অতঃপর ভারত ২০০৯ সালে শিরোপা জয়লাভ করার পর পুনরায় ২০১১ সালে শিরোপা জয়লাভ করার মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো টানা দুইবার শিরোপা জয়লাভ করেছিল।

সর্বশেষ আসরটি ২০২৩ সালে ভারতে আয়োজন করা হয়েছে। বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা ফুটবল স্টেডিয়ামে আয়োজিত ফাইনালে ভারত কুয়েতকে ১–১ গোলে ড্র করে ট্রাইব্রেকারে কুয়েতকে ৪-৫ ব্যবধানে পরাজিত করে ২০২১ সালের পর প্রথম, এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে নবমবারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছিল।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

বর্তমানে যে সকল দেশ এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে, তারা হলো: বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা। এই প্রতিযোগিতাটি প্রতি দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়।[] আফগানিস্তান ২০০৫ সালে সাফে যোগদান করেছিল, তবে ২০১৫ সালে তারা দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন ত্যাগ করে মধ্য এশীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (সিএএফএ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েছে।

১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের লাহোরে দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) চ্যাম্পিয়নশিপ তার যাত্রা শুরু করেছে, যা তার অগ্রদূত দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) গোল্ড কাপে বিবর্তিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে, এই দ্বিবার্ষিক প্রতিযোগিতা খেলার আঞ্চলিক উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান ফুটবল প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। ফিফা থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বরখাস্তের কারণে ২০০১ সালের অক্টোবর/নভেম্বর মাস থেকে ২০০২ সালের জানুয়ারি/ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০০১ স্থগিত করা হয়েছিল; অবশেষে ২০০৩ সালে প্রতিযোগিতার উক্ত আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারীর কারণে এই প্রতিযোগিতার ২০২১ সালের আসরটি দুইবার স্থগিত করা হয়েছিল, যা পরবর্তীকালে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আয়োজনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।[]

সারাংশ

[সম্পাদনা]
পাদটীকা
অতিরিক্ত সময়ে ফলাফল নির্ধারণ
পেনাল্টি শুট-আউটের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ
বছরআয়োজকফাইনালতৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ/
সেমি-ফাইনালে পরাজিত দল[]
শীর্ষ গোলদাতা
চ্যাম্পিয়নফলাফলরানার-আপতৃতীয় স্থানফলাফলচতুর্থ স্থান
১৯৯৩ পাকিস্তান ভারতরা-র শ্রীলঙ্কা   নেপালরা-র পাকিস্তানভারত ইনিভালাপ্পিল মণি বিজয়ন (৩)
১৯৯৫ শ্রীলঙ্কা শ্রীলঙ্কা১–০
(অ.স.প.)
 ভারত বাংলাদেশ এবং    নেপালশ্রীলঙ্কা মুহাম্মদ আমানুল্লা (৩)
১৯৯৭   নেপাল ভারত৫–১ মালদ্বীপ পাকিস্তান১–০ শ্রীলঙ্কাভারত ইনিভালাপ্পিল মণি বিজয়ন (৬)
১৯৯৯ ভারত ভারত২–০ বাংলাদেশ মালদ্বীপ২–০ পাকিস্তাননেপাল নরেশ যোশি (৩)
ভারত বাইচুং ভুটিয়া (৩)
বাংলাদেশ মিজানুর রহমান (৩)
মালদ্বীপ মুহাম্মদ ওয়াইল্ডহ্যান (৩)
২০০৩ বাংলাদেশ বাংলাদেশ১–১ (অ.স.প.)
(৫–৩ পে.)
 মালদ্বীপ ভারত২–১ পাকিস্তানপাকিস্তান সরফরাজ রাসুল (৪)
২০০৫ পাকিস্তান ভারত২–০ বাংলাদেশ মালদ্বীপ এবং  পাকিস্তানমালদ্বীপ ইব্রাহিম ফাজিল (৩)
মালদ্বীপ আলি আশফাক (৩)
মালদ্বীপ আহমদ সুরিক (৩)
২০০৮ মালদ্বীপ
 শ্রীলঙ্কা
 মালদ্বীপ১–০ ভারত ভুটান এবং  শ্রীলঙ্কাআফগানিস্তান হারেজ হাবিব (৪)
২০০৯ বাংলাদেশ ভারত০–০ (অ.স.প.)
(৩–১ পে.)
 মালদ্বীপ বাংলাদেশ এবং  শ্রীলঙ্কাবাংলাদেশ এনামুল হক (৪)
মালদ্বীপ আহমদ সুরিক (৪)
শ্রীলঙ্কা চান্না এদিতি বান্দানাগে (৪)
২০১১ ভারত ভারত৪–০ আফগানিস্তান মালদ্বীপ এবং    নেপালভারত সুনীল ছেত্ৰী (৭)
২০১৩   নেপাল আফগানিস্তান২–০ ভারত মালদ্বীপ এবং    নেপালমালদ্বীপ আলি আশফাক (১০)
২০১৫ ভারত ভারত২–১ (অ.স.প.) আফগানিস্তান মালদ্বীপ এবং  শ্রীলঙ্কাআফগানিস্তান খৈবর আমানি (৪)
২০১৮ বাংলাদেশ মালদ্বীপ২–১ ভারত   নেপাল এবং  পাকিস্তানভারত মনবীর সিং (৩)
২০২১ মালদ্বীপ ভারত৩–০   নেপালভারত সুনীল ছেত্রী (৫)
২০২৩ভারত
ভারত
 ভারত১–১ (অ.স.প.)
(৫–৪ পে.)
 কুয়েত বাংলাদেশ এবং  লেবাননভারত সুনীল ছেত্রী (৫)
টীকা
  1. ২০০৩ সালের পর থেকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলা অনুষ্ঠিত হয় না।

পরিসংখ্যান

[সম্পাদনা]
২০০৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা হাতে মালদ্বীপীয় ফুটবলার ইব্রাহিম ফাজিল

দল অনুযায়ী

[সম্পাদনা]
দলচ্যাম্পিয়নরানার-আপ
 ভারত (১৯৯৩, ১৯৯৭, ১৯৯৯, ২০০৫, ২০০৯, ২০১১, ২০১৫, ২০২১, ২০২৩) (১৯৯৫, ২০০৮, ২০১৩, ২০১৮)
 মালদ্বীপ (২০০৮, ২০১৮) (১৯৯৭, ২০০৩, ২০০৯)
 বাংলাদেশ (২০০৩) (১৯৯৯, ২০০৫)
 আফগানিস্তান (২০১৩) (২০১১, ২০১৫)
 শ্রীলঙ্কা (১৯৯৫) (১৯৯৩)
   নেপাল (২০২১)
 কুয়েত (২০২৩)

সর্বকালের পয়েন্ট তালিকা

[সম্পাদনা]
অবদলঅংশগ্রহণম্যাচজয়ড্রহারস্বগোবিগোগোপাপয়েন্ট
 ভারত১৩৫৭৩৭১২৯৯৩৬+৬৩১২৩
 মালদ্বীপ১১৪৭২৪১১১২৯৫৪৮+৪৭৮৩
 বাংলাদেশ১২৪২১৬১২১৪৪৬৪২+৪৬০
 শ্রীলঙ্কা১৩৪১১৩২১৪৮৬৫−১৭৪৬
 পাকিস্তান১১৩৬১২১৬৩২৪২−১০৪৪
 আফগানিস্তান২৭১২১১৪৮৪২+৬৪০
   নেপাল১৩৪৩১৩২৩৪৯৬৩−১৪৪৬
 ভুটান২৪২২১৩৯৩−৮০
  •   বর্তমানে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে না।

আসর অনুযায়ী

[সম্পাদনা]
পাদটীকা
দল পাকিস্তান
১৯৯৩
শ্রীলঙ্কা
১৯৯৫
নেপাল
১৯৯৭
ভারত
১৯৯৯
বাংলাদেশ
২০০৩
পাকিস্তান
২০০৫
মালদ্বীপশ্রীলঙ্কা
২০০৮
বাংলাদেশ
২০০৯
ভারত
২০১১
নেপাল
২০১৩
ভারত
২০১৫
বাংলাদেশ
২০১৮
মালদ্বীপ
২০২১
ভারত
২০২৩
 বাংলাদেশ×সেমিগ্রুপরাচ্যারাগ্রুপসেমিগ্রুপগ্রুপগ্রুপগ্রুপগ্রুপসেমি
 ভুটানসাফের সদস্য নয়গ্রুপগ্রুপসেমিগ্রুপগ্রুপগ্রুপগ্রুপগ্রুপ×গ্রুপ
 ভারতচ্যারাচ্যাচ্যা৩য়চ্যারাচ্যাচ্যারাচ্যারাচ্যাচ্যা
 মালদ্বীপ××রা৩য়রাসেমিচ্যারাসেমিসেমিসেমিচ্যাগ্রুপঅংশগ্রহণ
   নেপাল৩য়সেমিগ্রুপ৪র্থগ্রুপগ্রুপগ্রুপগ্রুপসেমিসেমিগ্রুপসেমিরাগ্রুপ
 পাকিস্তান৪র্থগ্রুপ৩য়গ্রুপ৪র্থসেমিগ্রুপগ্রুপগ্রুপগ্রুপ×সেমিঅনুত্তীর্ণগ্রুপ
 শ্রীলঙ্কারাচ্যা৪র্থগ্রুপগ্রুপগ্রুপসেমিসেমিগ্রুপগ্রুপসেমিগ্রুপগ্রুপঅনুত্তীর্ণ
সাবেক দল
 আফগানিস্তান[]সাফের সদস্য নয়গ্রুপগ্রুপগ্রুপগ্রুপরাচ্যারাসাফের সদস্য নয়
আমন্ত্রিত অতিথি
 লেবানন[]সাফের সদস্য নয় সেমি
 কুয়েত[]সাফের সদস্য নয়রা
টীকা
  1. ১৯৯৫ এবং ২০০৩ সালের পর থেকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলা অনুষ্ঠিত হয় না।
  2. ২০১৫ সালে দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন ছেড়ে মধ্য এশীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে যোগদান করেছে।
  3. আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে।
  4. আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "From SAARC Gold Cup to SAFF Championship"Givemegoal.com.np। ১৩ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪
  2. "We Will Try Our Best To Host SAFF 2021 Matches In Pokhara"Goal Nepal। ২৭ জুলাই ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০২১

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]