আবু তাহের (বীর প্রতীক)
আবু তাহের | |
---|---|
জন্ম | ২০ জুলাই ১৯৪২ মতলব,চাঁদপুর |
মৃত্যু | ৬ জানুয়ারি ২০০৮ সাভার ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতাল | (বয়স ৬৫)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | [বীর প্রতীক] |
সন্তান | [এক ছেলে, দুই মেয়ে ] |
- একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আবু তাহের (দ্ব্যর্থতা নিরসন)।
আবু তাহের (২০ জুলাই ১৯৪২-৬ জানুয়ারি ২০০৮) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [১][২]
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
[সম্পাদনা]আবু তাহেরের পৈতৃক বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার বড় হলদিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম গোলাম আহমেদ সিকদার এবং মায়ের নাম আমেনা বেগম। তার স্ত্রীর নাম ফাতেমা বেগম। তাদের এক ছেলে মোঃআরিফুর রহমান,দুই মেয়ে আফিফা,আফরোজ।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]আবু তাহের পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকুরি করতেন। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ২৫ মার্চ তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মোতায়েন ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে তেলিয়াপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, দাউদকান্দিসহ বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীনের পরে নিয়মিত সেনা বাহিনীতে যোগদান করে। জুনিয়র কমিশন অফিসার হিসেবে সর্বোচ্চ পদে সেনা বাহিনীর চাকরি শেষে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এ চাকরি করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ভারতের সোনামুড়া থেকে নির্ভয়পুর হয়ে একদল মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশ অভিমুখে রওয়ানা দেন। এর মধ্যে একটি উপদলের দলনেতা ছিলেন আবু তাহের। তাদের সার্বিক নেতৃত্বে ছিলেন আইন উদ্দিন (বীর প্রতীক)। এ দলের লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব কুমিল্লা শহর দখল করা। মুক্তিযুদ্ধের সময় কুমিল্লা শহর ছিল ২ নম্বর সেক্টরের কেন্দ্রবিন্দু। যৌথবাহিনীর দাউদকান্দি ও চাঁদপুরমুখী যেকোনো অভিযান পরিচালনার জন্য কুমিল্লাই ছিল একমাত্র পথ। আবু তাহের ও মুক্তিযোদ্ধাদের দল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে ৩ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের চিওড়া পৌঁছান। ৫ ডিসেম্বর কুমিল্লা শহরের পূর্ব পাশে বালুতুফা পৌঁছান। বালুতুফার অদূরেই ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শক্ত প্রতিরক্ষা অঞ্চল। দুর্ভেদ্য সে প্রতিরক্ষাকে ভেঙ্গে মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় সেখানে আক্রমণ চালান মুক্তিযোদ্ধারা। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের এবং মিত্রবাহিনীর বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। এমন অবস্থায় শহরের পেছন দিক দিয়ে অগ্রসর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আবু তাহের। ৬ ডিসেম্বর আবু তাহেরসহ মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের প্রায় একরকম বোকা বানিয়ে এবং কোনো যুদ্ধ না করেই কুমিল্লা শহরে ঢুকে পড়েন। মিত্রবাহিনীর একটি দলের সঙ্গে যৌথভাবে কুমিল্লা বিমানবন্দরে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ করেন। তখন সেখানে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে আবু তাহের যথেষ্ট বীরত্ব প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া ও আবু তাহের ১৯৭১ সালে ছোট বড়ো ২৭টি যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়ে ছিলেন এবং ২,৩,৫ নাম্বার সেক্টার এ যুদ্ধ করেন এবং একটি যুদ্ধে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তিনি একটি বেকআপ প্লাটুন এর দলনেতা ছিলেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ২৫-১০-২০১২"। ২০১৯-১২-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।