আবদুর রাজ্জাক (বীর প্রতীক)
আবদুর রাজ্জাক | |
---|---|
মৃত্যু | ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
আবদুর রাজ্জাক (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১]
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
[সম্পাদনা]আবদুর রাজ্জাকের জন্ম নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার ছয়ানী টগবা গ্রামে। তার বাবার নাম জবেদউল্লা ভুঁইয়া এবং মায়ের নাম রোকেয়া বানু। তার স্ত্রীর নাম রোকেয়া বেগম। তার দুই ছেলে, চার মেয়ে। [২]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৃতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতেন আবদুর রাজ্জাক। ১৯৭১ সালে এই রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল সৈয়দপুর সেনানিবাস। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে দেন। প্রতিরোধ যুদ্ধশেষে ভারতে যান। পরে জেড ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালের ১৪ অক্টোবর সিলেট জেলার অন্তর্গত টেংরাটিলার পার্শ্ববর্তী ছাতকে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্ত একটি প্রতিরক্ষা অবস্থান। সুরমা নদীর তীরে ছাতক সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ১২ অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর প্রধান এম এ জি ওসমানী নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর তৃতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টকে ছাতকে আক্রমণের নির্দেশ দেন। তার নির্দেশ পেয়ে প্রয়োজনীয় রেকি ও পরিকল্পনা ছাড়াই তারা আক্রমণ করেন। মূল আক্রমণকারী দল হিসেবে থাকে আলফা ও ব্রাভো কোম্পানি। আক্রমণের সময় দোয়ারাবাজার হয়ে ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ধরে যাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোনো রি-এনফোর্সমেন্ট না আসতে পারে সে জন্য টেংরাটিলা নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে চার্লি কোম্পানিকে কাট অব পার্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। এই কোম্পানিতে ছিলেন আবদুর রাজ্জাক। তারা ১৩ অক্টোবর রাতে সীমান্তের ওপারের বাঁশতলা ক্যাম্প থেকে রওনা হন। বাঁশতলা ক্যাম্প ছিল মুক্তিবাহিনীর ৫ নম্বর সেক্টরের শেলা সাব সেক্টরের অধীন। ওই সাব সেক্টরের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী সেদিন সকাল পর্যন্ত টেংরাটিলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ছিল না। নৌকায় করে ভোরে টেংরাটিলায় যাওয়ামাত্র পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে পড়েন মুক্তিযোদ্ধারা। পাকিস্তানিরা সব কয়টি নৌকার ওপর একযোগে গুলি করতে থাকে। এমন পরিস্থিতির জন্য মুক্তিযোদ্ধারা প্রস্তুত ছিলেন না। চারদিকে গভীর পানি থাকায় বেশির ভাগ নৌকা ডুবে যায়। অনেক মুক্তিযোদ্ধা সাঁতার জানতেন না। অস্ত্র ফেলে অনেকে সাঁতরে নিরাপদস্থানে যেতে থাকেন। চরম প্রতিকূলতার মধ্যে আবদুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন ভয় না পেয়ে পানির মধ্যে থেকেই পাল্টা গুলি করেন। ওই সুযোগে অনেক মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদস্থানে যেতে সক্ষম হন। সেদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আকস্মিক আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ২৫-২৬ জন আহত হন। [৩]
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ০৬-১২-২০১১[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884।