আবদুল গফুর (বীর প্রতীক)
আবদুল গফুর | |
---|---|
জন্ম | ১৯৪৫ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() ![]() |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
- একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আবদুল গফুর (দ্ব্যর্থতা নিরসন)।
আবদুল গফুর (জন্ম: ১৯৪৫ ) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১]
জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]
আবদুল গফুরের জন্ম টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামের চরপাড়ায়। তার বাবার নাম গজনভী মিয়া এবং মায়ের নাম বাছাতন বেগম। তার স্ত্রীর নাম লাইলি বেগম। তাদের দুই মেয়ে, চার ছেলে। [২]
কর্মজীবন[সম্পাদনা]
আবদুল গফুর চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসে। সে সময় ছুটিতে বাড়িতে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। পরে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হলে এতে যোগ দেন। তাকে একটি দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়। ভূঞাপুর, ধলাপাড়া, দেওপাড়া, বল্লাসহ আরও কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেন। আবদুল গফুর স্বাধীনতার পর সেনাবাহিনীর চাকরিতে আর যোগ দেননি।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]
১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি বা তার কয়েক দিন পর টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার মাকড়াইয়ে সকালবেলায় আবদুল গফুরের অবস্থান। ধলাপাড়ার কাছাকাছি তখন গোলাগুলির শব্দ। তিনি বুঝতে পারলেন আশেপাশে কোথাও পাকিস্তানি সেনারা এসেছে। আবদুল গফুরের সঙ্গে আছেন ৪০-৪৫ জন সহযোদ্ধা। দলনেতা তিনি নিজেই। ভাবলেন পাকিস্তানিদের অতর্কিতে আক্রমণের সুযোগ পাওয়া গেছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। খোঁজ নিয়ে আবদুল গফুর জানতে পারলেন, পাকিস্তানি সেনারা তার অবস্থানের উত্তর দিকের রাস্তা দিয়ে সামনের দিকে গেছে। কয়েক মাইল পর ওই রাস্তা শেষ। পাকিস্তানিদের আবার ফিরে আসতে হবে ওই রাস্তা দিয়েই। সেটা বুঝে তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে অবস্থান নিলেন ওই রাস্তায়। ধলাপাড়ার কাছে মাকড়াইয়ে। সেখানে তিনি অপেক্ষা করতে থাকলেন শত্রুদের জন্য। খবর পেলেন শত্রু সেনারা ওই পথ ধরে ফিরে আসছে। কোথাও কোনো বাধা না পেয়ে পাকিস্তানি সেনারা বেশ নিশ্চিন্ত মনেই আসছে। তিনি সংকেত দেওয়ার আগে কেউ যেন গুলি না করেন সে ব্যাপারে বলে দিলেন সহযোদ্ধাদের। অল্পক্ষণের মধ্যে শত্রু পাকিস্তানি সেনা আর রাজাকাররা আবদুল গফুরের দলের মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের আওতায় চলে এল। তিনি সংকেত দেওয়া মাত্র তার সহযোদ্ধারা একযোগে গুলি শুরু করলেন। নিমিষে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার। বাকিরা ছোটাছুটি শুরু করে দিল। রাজাকাররা দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যে যেদিকে পারে পালিয়ে যায়। পাকিস্তানি সেনারা পজিশন নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। শুরু হয়ে গেল তুমুল যুদ্ধ। ঘটনাচক্রে কাদেরিয়া বাহিনীর সামরিক প্রধান আবদুল কাদের সিদ্দিকীও কয়েকজন সহযোদ্ধাসহ সেদিন মাকড়াইয়ের কাছাকাছি ছিলেন। তিনিও ওই যুদ্ধে অংশ নেন। সেদিন মাকড়াইয়ের যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কয়েকজন নিহত ও অনেক আহত হয়। প্রায় এক ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলে। এরপর পাকিস্তানি সেনারা নিহত ব্যক্তিদের ফেলে এবং আহতদের নিয়ে পালিয়ে যায়। [৩]
পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ১৩-০৫-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৬৩৬। আইএসবিএন 9789843351449।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ১৬৫। আইএসবিএন 9789849025375।