দেলোয়ার হোসেন বীর প্রতীক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দেলোয়ার হোসেন
মৃত্যু২০১০
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

দেলোয়ার হোসেন (জন্ম: অজানা — মৃত্যু: ২০১০) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

দেলোয়ার হোসেনের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার নিলাখাদ গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হাই এবং মায়ের নাম রোকেয়া বেগম। তার স্ত্রীর নাম শাহানা বেগম। এ দম্পতির দুই ছেলে ও তিন মেয়ে।[২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে দেলোয়ার হোসেন চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। সে সময়ে তিনি কুমিল্লা সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরের গঙ্গাসাগর সাবসেক্টরে। পরে তাকে নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর নবম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চন্দ্রপুর যুদ্ধের কয়েক দিন আগে কালাছড়া চা-বাগান আক্রমণেও তিনি অংশ নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। দেলোয়ার হোসেন স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেই চাকরি করেন। ১৯৯৩ সালে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে আইন পেশায় যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার অন্তর্গত চন্দ্রপুর এলাকা। এর অবস্থান কসবা রেলস্টেশন থেকে তিন মাইল উত্তরে। এখানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্ত এক প্রতিরক্ষা অবস্থান। ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর এ অবস্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থান বেশ সুবিধাজনক স্থানে ছিলো। সেখানে আক্রমণ চালানোর উদ্যোগও বেশ বিপজ্জনক ছিলো। আক্রমণ করলে মুক্তিযোদ্ধাদেরই ক্ষয়ক্ষতি হতো বেশি। তার পরও মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালালেন। তুমুল যুদ্ধ চলতে থাকল। মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক দলের মধ্যে একটিতে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। আক্রমণ চালিয়েও তারা ব্যর্থ হলেন। পাকিস্তানিদের আক্রমণে শহীদ ও আহত হলেন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা। এ যুদ্ধের পরিকল্পনা শুরু হয় ১৮ নভেম্বর। ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে এ আক্রমণ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশ বাহিনীর কোম্পানি পরিচালনা করেন খন্দকার আবদুল আজিজ (বীর বিক্রম), (প্রকৃত নাম খন্দকার আজিজুল ইসলাম)। পরিকল্পনা মোতাবেক বাংলাদেশ বাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী যৌথভাবে আক্রমণ করে। চন্দ্রপুরে দেলোয়ার হোসেন যুদ্ধ করেন। তার চোখের সামনে শহীদ হন কয়েকজন সহযোদ্ধা। তিনি নিজেও যুদ্ধে একপর্যায়ে আহত হন। আহত অবস্থায়ও যুদ্ধ চালিয়ে যান। একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। সহযোদ্ধারা তাকে ফিল্ড হাসপাতালে পাঠান।[৩]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২৭-০৩-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪০৬। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা পৃ ২৪২। আইএসবিএন 9789849025375 

পাদটীকা[সম্পাদনা]

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]