আবদুল হক (বীর প্রতীক)
আবদুল হক | |
---|---|
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
- একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আবদুল হক।
আবদুল হক (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১]
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
[সম্পাদনা]আবদুল হকের জন্ম কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে । তার বাবার নাম আলতাফ আলী এবং মায়ের নাম জুলেখা বিবি। তার স্ত্রীর নাম ফজিলাতুন্নেছা। তাদের তিন ছেলে। [২]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতেন আবদুল হক। ১৯৭১ সালের মার্চ-এপ্রিলে এই ব্যাটালিয়নের পশ্চিম পাকিস্তানে বদলি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এর আগে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ইউনিটের অর্ধেক সৈনিক ছুটিতে এবং বাকিরা শীতকালীন প্রশিক্ষণে দিলেন। আবদুল হক সে সময় ছুটিতে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। নিজ এলাকায় প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেওয়ার পর তিনি ভারতে গিয়ে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যোগ দেন। কামালপুর যুদ্ধের পর জেড ফোর্সের অধীনে কুড়িগ্রাম জেলার কোদালকাটিসহ আরও কয়েকটি যুদ্ধে তিনি অংশ নেন। কোদালকাটির যুদ্ধে তিনি আহত হন। তার পায়ে গুলি লাগে। সুস্থ হওয়ার পর তিনি আবার যুদ্ধে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালের ৩১ জুলাই জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কামালপুরে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্তিশালী একটি প্রতিরক্ষা অবস্থান। ৩১ জুলাই ভোরে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে এখানে। এই আক্রমণে কাট অব পার্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মুক্তিবাহিনীর অপর একটি দল। এই দলে ছিলেন আবদুল হক। আক্রমণের নির্ধারিত সময় ছিল গভীর রাতে। সন্ধ্যার পর মুক্তিযোদ্ধারা কামালপুরে যাত্রা করেন। সেদিন হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি ও ঘোর অন্ধকার উপেক্ষা করে আবদুল হকসহ একদল মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন মাহবুবের নেতৃত্বে সময়মতোই সীমান্ত অতিক্রম করেন। তারা অবস্থান নেন কামালপুর-বকশীগঞ্জ সড়কের কামালপুরের এক মাইল দক্ষিণে কামালপুর-শ্রীবর্দী সড়ক জংশনে এবং উঠানীপাড়ায়। কামালপুর বিওপিতে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের সংবাদ শুনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বকশীগঞ্জ কোম্পানি হেডকোয়ার্টার থেকে তিনটি সেনাভর্তি লরি কামালপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। লরিগুলো রাত আনুমানিক সাড়ে চারটা বা পাঁচটার দিকে সেখানে উপস্থিত হয়। উঠানীপাড়া এলাকার সড়কে স্থাপন করা মাইনের বিস্ফোরণে দুটি লরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবদুল হকেরা সঙ্গে সঙ্গে তাদের ওপর আক্রমণ শুরু করেন। পাকিস্তানি সেনারাও দ্রুত পাল্টা আক্রমণ করে। তমুল যুদ্ধ চলতে থাকে। এই যুদ্ধে আবদুল হকসহ কয়েকজন যথেষ্ট সাহস প্রদর্শন করেন। তাদের সাহসিকতায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আটজন নিহত ও ১০-১১ জন আহত হয়। মুক্তিবাহিনীর একজন শহীদ ও দুই-তিনজন আহত হন। যুদ্ধশেষে মুক্তিযোদ্ধারা পশ্চাদপসরণ করে সীমান্ত এলাকায় চলে যান। [৩]
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ০২-১২-২০১১"। ২০২০-০২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-২২।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884।