আবদুল বাতেন খান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আবদুল বাতেন খান (বীর প্রতীক)
জন্ম
গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের আড়াল (মিয়াবাড়ি) গ্রামে।
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
দাম্পত্য সঙ্গীহেনা বেগম
সন্তানবড় মেয়ে মোসাঃ মুক্তা খানম, ছোট মেয়ে মোসাঃ হীরা খানম, বড় ছেলে মোঃ আরিফ খান এবং ছোট ছেলে মোঃ আয়ুব খান

আবদুল বাতেন খান (বীর প্রতীক) (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [১][২]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

আবদুল বাতেন খানের পৈতৃক বাড়ি গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার আড়াল (মিয়াবাড়ি) গ্রামে। তার বাবার নাম সামসুদ্দিন খান এবং মায়ের নাম হাসুনি বেগম। তার স্ত্রীর নাম হেনা বেগম। তাদের দুই ছেলে, দুই মেয়ে।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

আবদুল বাতেন খান চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। এর অবস্থান ছিল কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি তার ইউনিটের সঙ্গে শমশেরনগরে ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন সালদা নদী এলাকায় ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা। নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পাকিস্তানিরা একপর্যায়ে সালদা রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘাঁটি তৈরি করে। রেলস্টেশন এলাকার চারদিকে ছিল মাইন ফিল্ড এবং পর্যবেক্ষণ পোস্ট। মুক্তিযুদ্ধকালে সালদা এলাকায় অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা কয়েক দিন পরপর পাকিস্তানিদের আক্রমণ করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি তারা বড় ধরনের আক্রমণ চালান মুক্তিযোদ্ধারা। চূড়ান্ত আক্রমণের আগে পাকিস্তানিদের সব প্রতিরক্ষায় মুক্তিবাহিনীর মুজিব ব্যাটারির কামান দিয়ে অসংখ্য গোলা ছোড়া হয়। এর ফলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষার বিশেষত কয়েকটি বাংকারের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিভিন্ন স্থানে মাটির ওপরে ও নিচে ছিল পাকিস্তানিদের তিন স্তরের বাংকার। সালদা নদী রেলস্টেশনের বাংকারগুলো ছিল রেলের বগি দিয়ে তৈরি এবং ওপরের স্তর ছিলো যুদ্ধের জন্য। মধ্যম স্তর গোলাবারুদ রাখাসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য আর নিচের স্তর ছিল বিশ্রামের জন্য। এক রাতে আবদুল বাতেন খান ও তার সহযোদ্ধারা নিঃশব্দে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করেন এবং ক্ষিপ্রগতিতে এগিয়ে যান সামনে। তাদের লক্ষ্য তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঘাঁটি। অন্ধকারে পাকিস্তানিদের মাইন ফিল্ডে পড়ে তার কয়েকজন সহযোদ্ধা আহত হন তবে তিনি দমে যাননি বা মনোবল হারাননি মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করেন এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীও প্রতিরোধ শুরু করে। তুমুল যুদ্ধ চলতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পাকিস্তানি সেনারা পেছন দিকে সরে যায় এবং নতুন স্থানে তারা অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে বিরাট এলাকা। পরে পাকিস্তানি সেনারা নতুন শক্তি সঞ্চয় করে আবার পাল্টা আক্রমণ চালায়। সাহসিকতার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের পাল্টা আক্রমণ মোকাবিলা করেন। পাকিস্তানিরা তাদের অবস্থানে ব্যাপক হারে গোলা ছোড়ে। বিস্ফোরিত গোলার ছোট-বড় স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন তার কয়েকজন সহযোদ্ধা।

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

এই নিবন্ধে দৈনিক প্রথম আলোতে ২৩-১০-২০১২ তারিখে প্রকাশিত তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না প্রতিবেদন থেকে লেখা অনুলিপি করা হয়েছে। যা দৈনিক প্রথম আলো ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার-এলাইক ৩.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সে উইকিপিডিয়ায় অবমুক্ত করেছে (অনুমতিপত্র)। প্রতিবেদনগুলি দৈনিক প্রথম আলোর মুক্তিযুদ্ধ ট্রাস্টের পক্ষে গ্রন্থনা করেছেন রাশেদুর রহমান (যিনি তারা রহমান নামেও পরিচিত)।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ২৩-১০-২০১২"। ২০১৩-০৮-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩ 
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449